#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_৯
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
১ সপ্তাহ পর.
আজকে মেঘদের আসার কথা,,মেঘরা ছাড়াও মেহরাব এর খালা আর খালাত বোনরাও আসবে,,, কেননা বিয়ের আর বেশিদিন বাকি নেই যদিও বলা হয়েছিলো একমাস পর বিয়ে হবে কিন্তু বিয়ের ডেট কয়েক দিন আগানো হয়েছে। সকাল থেকে সবাই ব্যাস্ত মাহি মেঘলা আর ইশিতা সব রুম গোছাচ্ছে আর মাহির মা আর মামীরা রান্না করায় ব্যাস্ত,, সোহান রকি রাকিব আর মুনিরকে পুরো বাড়ির বাইরের ঝুল আর যেখানে মেঘরা থাকবে সেখানে পরিষ্কার করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সবাই সবার কাজ করছে,, মেহরাব গেছে মেঘদের আনতে, মেঘরা গতকাল বিকেলের দিকে বার হয়ছিলো নাইট এ আসছে,, সকালে মেহরাব কে ফোন করে বলায় মেহরাব গাড়ি নিয়ে চলে গেছে ওদের আনতে। এরি মাঝে মেহরাব এর খালা খালু আর খালাত বোন মীরা চলে এসেছে।
বড় মামী তারাতারি আসো দাখো মীরা আপুরা চলে আসছে (মাহি গিয়ে মেহরাব এর মাকে বলল)
তাই নাকি কই কই। তারপর মেহরাব এর মা গিয়ে ওদের ভিতরে নিয়ে আসল।
খালা মনি তোমাদের এখানে অনুষ্ঠান করতে কে বলছে বলো তো?? উফ কি ধুলো চারিদিকে আর রাস্তার কথাতো বলবোই না ছি ইয়াক এমন অজপারা গায়ে কেউ এতো বড় অনুষ্ঠান করে??(নাক সিকটে বলল মীরা)
হ্যাঁ তোরা যে কি করিস এখানে বিয়েটা দিতে গেলি কেনো?? ঢাকা গিয়ে কোনো বড় সেন্টার এ করলেই তো ভালো হতো(মীরার মা,, রত্না)
আহা তুমি এতো কথা বলছো কেনো আপারা নিশ্চয়ই ভেবে চিন্তেই করছে, আর মেঘদের তো কোনো সম্যসা নেই (মীরার বাবা মহিন)
তুমি চুপ করো সবসময় এতো বেশি কথা বলো কেনো(রত্নার কথা শুনে মহিন একেবারে চুপ হয়ে গেলো)
আরে মেহরাব বললো তাই, আর আমার শশুর এর শরীল টাও ভালো নেই তাই,,, তা মীরা এটা তো গ্রাম এখানে অন্তত এমন পোশাক না পরে আসতি(মেহরাব এর মা রুপালী)
উফ খালামনি গ্রাম বলেই তো এতো বড় আর বাজে পোশাক পড়ে এসেছি নয়ত এমন লং পোশাক কেউ পরে??আচ্ছা বাদ তাও আগে বলো মেহরাব কোথায়??(মীরা)
আবার তুই ওর নাম ধরে ডাকছিস?? ও শুনলে তোর খবর আছে,,, মেহরাব মেঘদের আনতে গেছে,, এখন তোরা রুমে যা।
মীরা আপু আসো আমি তোমাকে তোমার রুমে নিয়ে যাচ্ছি (মাহি)
এই তুমি মাহি না??
জি।
এই সেই মাহি যাকে নিয়ে মেহরাব একটু বেশিই পসেসিভ (মনে মনে বলল)
তারপর ওখানে সবার সাথে কথা বলে মাহি মীরাকে মাহি মেঘলা আর ইশিতা যে রুমে থাকে সেই রুমে নিয়ে আসলো,, মেঘলা আর ইশিতা রুমেই ছিলো।
এই যে আমাদের রুম আমরা সবাই এখানেই থাকবো(মাহি)
হোয়াট??? ঠাসাঠাসি করে সবাই এক রুমে থাকবো?? তাও আবার এই গরমে?? নো ওয়ে আমি পারবো না(মীরা)
কেনো মীরা থাকো না অনেক মজা হবে সবাই একসাথে মজা করবো(মেঘলা)
তোমাদের থাকার হলে তোমরা থাকো আমি থাকবো না,,, আমি পাশের রুমে থাকবো (মীরা)
কিন্তু পাশের রুমে তো মেহরাব ভাইয়া থাকে(মাহি)
তো?? আমি ওই রুমেই থাকবো,, আর আমি জানি মেহরাব এতে কিছু বলবে না আমায় ওকে,, বাই আমি গেলাম উফ কি গরম, (এই বলে মীরা চলে গেলো)
এই এই মেয়ে কি সত্যি ভাইয়ার সাথে থাকবে?? বাবা কি অহংকার আর পোশাকের কি ছিড়ি(ইশিতা)
আরে না কি যে বলিস ভাইয়া এসে ওকে রুম থেকে বার করে দেবে দেখিস,, গায়ে পড়া মেয়ে (মেঘলা)
আপু কারো বিষয়ে এমন করে বলা ঠিক নয়(মাহি)
হুম তুই ছোট তো তাই বুঝিসনা,, আমার তো ওকে দেখে প্রথমেই পছন্দ হয়নি,, আর তুই চুপ করে থাকতো পুচকি।
প্রায় অনেকক্ষণ পর মেঘরা আসলো মর্হুতেই বাড়িটা খুশির আমেজে ভরে গেলো। মেঘ এসে সবার সাথে কথা বললো,, মেঘলা গিয়েও মেঘের মা বাবাকে সালাম দিলো মেঘ আর চোখে মেঘলা দিকে তাকালো মেঘলাও তাকালো তারপর মেঘলা লজ্জা পেয়ে চোখ সরিয়ে নিলো। মেঘদের জন্য যে দিকটা রাখা হয়েছে ওদের কে রুমে গিয়ে রেস্ট নিতে বলা হলো। সবাই যার যার রুমে চলে গেলো৷ মেহরাব চারিদিকে একবার চোখ বোলিয়ে মাহিকে খুজে না পেয়ে নিজের রুমে চলে গেলো। রুমে গিয়ে ফ্যান ছেড়ে দিয়ে বসতেই হুট করে মীরা ওর সামনে চলে এসে বলল।
সারপ্রাইজ (মীরা)
তুই?? কখন এলি?? খালামনিরা এসেছে সবাই??
হুম সবাই এসেছে একটু আগেই এসেছি,, তোমার কি বেশি গরম লাগছে?? ফ্যানটা বাড়িয়ে দেবো?? মেহরাব।
এই তোকে না বলেছি আমার নাম ধরে ডাকবি না ভাইয়া বলবি, আর এখন আমার রুম থেকে যা আমি রেস্ট নেবো।
কোথায় যাবো?? আমি তো এই রুমেই থাকাবো আজ থেকে।
নো এটা আমার রুম তুই মাহিদের রুমে থাক।
না আমি সবার সাথে ওমন ঠাসাঠাসি করে থাকতে পারবো না,, আমার একলা একা রুম চাই তাই আমি এই রুমেই থাকবো।
বেশি কথা না বলে ব্যাগ নিয়ে অন্য কোনো রুমে যা,, অনেক জার্নি করে এসেছি ভালো লাগছে না যা(ধমক দিয়ে বলল মেহরাব)
মেহরাব এর ধমক শুনে মীরা কেঁপে উঠল যতই ও মেহরাব কে পছন্দ করুক কিন্তু ওকে ভয় ও পাই তাই ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছিলো তখনি দেখলো মাহি দরজার সামনে দাড়িয়ে হাসতেছে (কেননা মীরা তখন হেবি এ্যাটেটিউড নিয়ে কথাগুলো বলেছিলো,, কিন্তু এখন মাহি মেহরাব কে ডাকতে এসে মীরার এমন অবস্থা দেখে নিজের হাসিটা কন্ট্রোল করতে পারলো না তাই হেসে দিলো)
এই মেয়ে তুমি এমন হাসছো কেনো?? আর তোমার এখানে কি??(মীরা)
মাহি মীরার কথা শুনে হাসি থামিয়ে বলল।
আসোলে ভাইয়াকে ডাকতে এসেছিলাম নিচে কাজ আছে তো তাই (মাহি)
তুমি যাও আর গিয়ে বলো মেহরাব এখন নিচে যাবে না ও এখন রেস্ট নেবে (মীরা)
ওকে (মীরার কথা শুনে মাহি চলে যাচ্ছিলো তখনি মেহরাব বলল)
আমি তোকে বলেছি?? যে আমি নিচে যাবো না,, আমি তোকে যেতে বলেছি তুই যা আর তুই (মাহিকে উদ্দেশ্য করে) ভিতরে আয় কথা আছে।
মেহরাব এর কথা শুনে মীরা রেগে বোম হয়ে হনহন করে চলে গেলো,, আর মাহি গুটি গুটি পায়ে মেহরাব এর কাছে এসে দাঁড়ালো।
কোথায় ছিলি?? আসার পর থেকে তোকে কোথাও দেখলাম না।।
আসোলে মেঘ ভাইয়ারা আসবে তো তাই সব রুম গোছাচ্ছিলাম তাই দেখতে পাননি।
আচ্ছা এতো কাজ করা লাগবে না,, আনলার পড় আমার ওই জামাটা দে তো??
মাহি আনলার উপর থেকে জামাটা নিয়ে মেহরাব এর দিকে বারিয়ে দিলো।
আমি নিয়ে কি করবো?? জামার পকেটে হাত দে।
মাহি জামার পকেটে হাত দিয়ে দেখলো লাল রঙের দুই ডজন কাচের চুড়ি,, চুড়ি গুলো হাতে নিয়ে মাহির মুখটা খুশিতে চকচক করে উঠল।
এগুলো আমার??
তো কি আমি পরবো নাকি??? মেঘদের আনতে যাওয়ার সময় একটা দোকানে দেখলাম ঝুলানো রয়েছে তাই দেখে আমিও দু ডজন কিনে নিলাম আমার অবুঝ পরিটার জন্য,,, আচ্ছা সেই শাপলা ফুল গুলো কি করেছিস??
ওগুলো তো আমি কাঁচের বতলে পানি ভরে তার মধ্যে ফুলগুলো রেখে দিছি যাতে তাজা থাকে (চুড়ি গুলো দেখতে দেখতে বলল)
তাই নাকি?? মাহি আর মেহরাব কথা বলছিলো তখনি পাশের ঘর থেকে কিছু ভাঙার আওয়াজ হলো।
কিসের আওয়াজ হলো বলতো?? কিছু পড়লো মনে হয়৷ (মেহরাব)
চলেন তো দেখি কি ভাঙলো??
এর পর মাহি আর মেহরাব মাহিদের রুমে চলে গেলো তারপর ওখানে গিয়ে যা দেখলো তাতে মাহির চোখে পানি এসে গেলো। এতোক্ষণ যত খুশি ছিলো এখন ততটাই দুঃখে মনটা ভরে গেলো সব সময় ওর সাথেই এমন কেনো হয়৷,
চলবে,,,,,,??