#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_১৩ #(হলুদ_সন্ধ্যা_স্পেশাল🥰😍)
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
,,,হলুদ ,,সন্ধ্যাই,
সবাই সাজুগুজু করছে আর মাহি একটা হলুদ শাড়ি হাতে নিয়ে বসে আছে। মেঘলাকে একটা হলুদ শাড়ি এরা করে পরায়ে ফুলের গয়না দিয়ে সাজিয়ে আগেই স্টেজ এ বসিয়ে রাখা হয়েছে,, আর এখন বাকি সবাই সাজুগুজু করছে।
কেউ আমায় শাড়িটা পরায়ে দাওরে,, আর কতক্ষণ বসে থাকবো (মাহি)
আমি দিচ্ছি দাড়া কাজলটা দিয়ে নেই চোখে। (চোখে কাজল দিতে দিতে বলল ইশিতা)
তারপর ইশিতা নিজের সাজটা কমপ্লিট করে মাহিকে সাজাতে বসলো, প্রথমে মাহিকে হলুদ শাড়ি টা এরা করে পরিয়ে দিলো তারপর কমরে একটা সুন্দর বিছা পরিয়ে দিলো চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে নাকে একটা লম্বা নলক দিয়ে দিলো কপালে একটা টিকলি চোখে কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক মাহি এমনিতেই সাদা ফর্সা তাই ওর মেকাপ না করলেও চলে,,, গলায় একটা চওড়া হাড় আর কানে টানা করে দুল পরিয়ে দিলো পায়ে নপুর আর হাত ভর্তি মেহরাব এর দেওয়া কাঁচের চুড়ি ব্যাস সাজ কমপ্লিট।
ওরে জাব্বা তোকে তো হেব্বি লাগছে যেনো মনে হচ্ছে মেঘলা না আজ তোর গায়ে হলুদ (ইশিতা বলল)
হুট কি যে বলো না আপু,, তোমাকেও অনেক সুন্দর লাগছে।
হুম আপনার থেকে কম,, এখন চল নিচে চল,, তারপর ওরা আর বাকি মেয়েরা সবাই বাগানে চলে গেলো কেননা ওখানেই স্টেজটা করা হয়েছে,,, সন্ধ্যে হয়ে গেছে তাই চারিদিকে লাইটিং করা হয়েছে লাল নীল নানা রকমের মরিচ বাতি জলছে পুরোবাড়ি জুড়ে বাড়ি ছাড়াও আরো অনেকটা দূর পযন্ত মরিচ বাতি আর লাইটিং করা হয়েছে,, আর বাড়ির সামনে থেকে শুরু করে একেবারে রাস্তা পযন্ত অনেক সুন্দর করে আলপনা করা হয়েছে।
ওদিকে,,,
মেহরাব একটা হলুদ পাঞ্জাবি পরে আর একটা সাদা লুঙ্গি হাতে নিয়ে বিছানায় বসে আছে,, কেননা ছেলেদের হলুদ পাঞ্জাবি আর সাদা লুঙ্গি প্লাস লাল গামছা পরতে হবে। গামছাটা কমরে বাধতে হবে
আমি এটা পরতে পারবো না,, (মেহরাব)
সবাই তো পরছে তুইও পরে ফেল একদিনই তো কিছু হবে না বন্ধু (মেঘ)
হুম তোর তো আর পরা লাগছে না তাই বলছিস যদি তোর পরা লাগতো তাহলে বুঝতি,, আরে ভাই হলুদে লুঙ্গি পরা লাগবে এই নিয়ম কে করছিলোরে,,?? সবাই কি আর লুঙ্গি পরতে পারে?? আমি পরে এক পা হাটলেই তো খুলে যাবে (মেহরাব)
ওহ তাহলে তো অনেক সুন্দর হবে এতোদিন মেয়েরা তোকে দেখে ক্রাশ খেতো আজ না হয় তোর অন্য কিছু দেখে ক্রাশ খাবে (এটা বলে মেঘ হাসতে লাগল)
সালা হাসি বন্ধ কর,, আমি এটা কখনো পরবো না,, এই বলে মেহরাব লুঙ্গি টা বিছানায় রেখে একটা সাদা পাজামা পরে নিলো।
কিরে ভাই দুজনেরই তো সেম পোশাক হয়ে গেলো,, তা হলুদ টা কার আমার নাকি তোর আর মাহির হুম??
মাহির কথায় মেহরাব এর মনে পড়ল,, আজকে ওর অবুঝ পরী কে কেমন লাগবে হলুদ শাড়ি তে নিশ্চয়ই একদম পরীই লাগবে,, ইস কখন যে দেখবো, এই ভেবে মেঘকে বলল।
এই চলতো তোর আর সাজা লাগবে না চল চল,, অনেক দেরি হয়ে গেছে,, তারপর মেহরাব মেঘকে নিয়ে বাগানে চলে গেলো।তারপর মেঘকে স্টেজ এ বসিয়ে দিয়ে ওর পাশে বসলো,, ওদের ঠিক সামনে একটু দূরে মেঘলার স্টেজ সাজানো হয়েছে,, মেহরাব সেদিকে তাকাতেই দেখলো তার মাহিকে,, যেন সর্গের কোন এক অপ্সরা ভুল করে পৃথিবীতে নেমে এসেছে, মেহরাব ড্যাব ড্যাব করে মাহির দিকে তাকিয়ে তাকলো যেনো এ দেখার কোনো শেষ নেই।
ওদিকে,,
মাহি শুধু মনে মনে ভাবছে তার মেহরাব ভাই কে লুঙ্গি আর পাঞ্জাবি পরলে কেমন দেখাবে ও তো ভেবেই রেখেছে মেহরাব যতই রাগ করুক না কেনো ওর ওই অবস্থায় মাহি মেহরাব এর একটা ছবি তুলবেই,, এসব ভাবতেই মাহি সামনে তাকাতেই দেখলো সামনের স্টেজ এ মেঘ এর পাশে মেহরাব বসে আছে, হলুদ পাঞ্জাবি আর সাদা পাজামা পরে কই ওনি তো লুঙ্গি পরেননি তবুও এই পোশাকে ওনাকে কত সুন্দর লাগছে এরকম হলুদ রাজ্যের রাজকুমার আচ্ছা হলুদ রাজ্য কি আদৌও আছে?? নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করলো মাহি,, কি জানি হয়ত আছে।
মেহরাবকে মাহির দিকে ওভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে মেঘ বলল।
,,
রাজাকো রানিছে পেয়ার হো গায়া,,
কি ভাই ওভাবে সবার সামনে দেখিস না নজর লেগে যাবে (মেঘ মেহরাবকে ধাক্কা দিয়ে বলল)
হুট চুপ থাক বেশি কথা না বলে।
তারপর একে একে সবাই এসে মেঘলা আর মেঘ কে পায়েস আর সেমাই খাইয়ে দিয়ে গেলো। মীরা এসে মেহরাব এর সামনে দাড়িয়ে বলল।
মেহরাব দাখোতো আমায় কেমন লাগছে।??
মেহরাব মীরার দিকে না তাকিয়েই বলল,, ভালো,।
আরে তুমি তো না দেখেই বলছো,,, আমার দিকে তাকিয়ে বলো।
কানের কাছে প্যান প্যান না করে যা তো।
ছীড়া আপু তোমাকে না ময়দার গোডাউন লাগছে (পাশ থেকে রকি বলল)
রকির কথা শুনে মেহরাব সহ বাকি সবাই হেসে উঠল।
তুই চুপ কর বিয়াদপ ছেলে আর এগুলো ময়দা না এগুলোকে মেকাপ বলে অশিক্ষিত একটা। (মীরা)
এসব কি হচ্ছে কি মীরা বাচ্চাদের সাথে কেউ এভাবে কথা বলে?? যা এখান থেকে।
মেহরাব এর কথাশুনে মীরা মুখ বাকিয়ে ওখান থেকে চলে গেলো। আর মেঘলারদের পাশে গিয়ে একটা চেয়ার নিয়ে বসে পরল কেননা স্টেজ বসার আর কোনো জায়গা নেই মীরা সাজতে সাজতে অনেক দেরি করে ফেলেছে তাই স্টেজ সবাই বসে পরেছে মীরার আর বসার জায়গা নেই এই জন্য চেয়ারে বসে পড়ল।
একে একে সবাই মেঘ আর মেঘলাকে খাইয়ে দিয়ে চলে গেলো,, এখন আর খাওয়ানোর মানুষ নেই সবাই বসে আছে তখনি মাহির নানু এসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল।
কিহ নাতনি আর নাতিরা তোমরা এমন চুপচাপ বসে আছো কেনো?? নাচ গান করো? আমি তো জোয়ান বয়সে তোমাগো নানীর লগে কত নাচুন কুদুন করছি,, অহনি তো এসব করার বয়স।
জি নানু তোমার নাতনিরা আমাদের সাথে বাজি ধরেছে আমাদের মাঝে প্রশ্ন উত্তর খেলা হবে যারা হারবে তারা অপর পক্ষের সব কথা শুনবে (মেঘ বলল)
তা দাদু তোমার নাতনিদের একটু স্টেজ থেকে নেমে খেলার ময়দানে আসতে বলো নাকি ওনারা ভয় পেয়েছে(মেহরাব)
মোটেও না আমরা ভয় পাই না আপনারা ভয় পান এই জন্যই তো এখনো ওখানে ঘাপটি মেরে বসে আছেন (মাহি)
কি এত বড় কথা,, নাতিরা তোদের এত বড় কথা কইলো এখনো তোরা চুপচাপ বসে আছিস নাম স্টেজ থেকে আর যা ময়দানে।
তারপর মেহরাব মেঘ ইমরান (ইমরান হলো ইশিতার প্রমিক ওদের বাড়িও এই গ্রামে ও এই গ্রামের মোড়ল এর ছেলে এবার মাষ্টার্স শেষ করে জবের জন্য চেষ্টা করছে,, ওদের কেউ দাওয়াত করা হয়েছে তাই ও আসছে আর এসেই মেহরাবদের সাথে অনেক ভাব হয়ে গেছে) আরো গ্রামের বাকি ছেলেরা একপাশে দাঁড়ালো,,, মেঘ মেহরাব আর ইমরান আর বাকি সব ছেলেরা পিছনে। আর মীরা চেয়ারে বসে আছে ওর মতে এসব ঢং ওর ভালো লাগে না কোথায় কাপল ডান্স হবে তা না করে এসব কী নেকামি করছে। কোথায় ও ভাবলো মেহরাব এর সাথে কাপল ডান্স করবে তা আর হলো না,, তাই চুপ করে বসে আছে।
আর ওদিকে মাহি মেঘলা আর ইশিতা আগে আর বাকি সব মেয়েরা পিছনে,, মেহরাব মাহির সামনে মেঘ মেঘলার সামনে আর ইশিতা ইমরান এর সামনে। দাড়িয়ে আছে। মেঘ সবার চোখের আড়ালে মেঘলাকে চোখ মারলো আর মেঘলা তো লজ্জায় শেষ,
ইমরান ও ইশিতাকে হাত দিয়ে একটা উরন্ত কিস দিলো,, ইশিতা লজ্জায় চোখ নিচে নামিয়ে নিলো। আর মেহরাব দুহাত বুকে গুজে মাহির দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,, আর মাহি চুরি চুরি করে মেহরাবকে দেখছে কেননা মেহরাব এর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকার সাধ্য ওর নেই। মেহরাব এর চোখের দিকে তাকালে যেনো মনে হয় ও চোখে ওর মরন আছে,, কি গভীর দৃষ্টি যেনো মন চাই ডুবে যাই ও চোখের গভীরে।
কি হলো নাতিরা প্রশ্ন করো।
না দাদু আগে তোমার নাতনিরাই প্রশ্ন করুক কেননা লেডিস ফাস্ট (মেহরাব)
হ্যাঁ হ্যাঁ করো করো প্রশ্ন করো আমরা উত্তর দেওয়ার জন্য রেডি(মেঘ)
হুম করছি পরে উওর না দিতে পারলে দেখবো এতো এ্যাটেটিউড কই যায়।এই মাহি প্রশ্ন কর তো (মেঘলা)
আচ্ছা,করছি মেঘলা আপু।, বলেন তো কোন গরু ঢুস মারে না (মাহি মেহরাবদের উদ্দেশ্য করে বলল)
মাহির প্রশ্ন শুনে মেহরাব এর তো কান গরম হয়ে কান দিয়ে ধুয়া বার হচ্ছে,, এ আবার কেমন প্রশ্ন তবে মেহরাব আগে থেকেই জানতো মাহি প্রশ্ন করলে ছেলে মানুষি প্রশ্নই করবে, তাই বলে এই প্রশ্ন??? আর ওদিকে মেঘ চোখ বড় বড় করে হা করে ভাবছে ঢুস মানে কি।
আসোলে এই প্রশ্নটা মাহি গ্রামের কিছু পিচ্চিদের কাছ থেকে শুনেছে ওরা খেলছিলো আর একজন অপর জনকে বলছিলো সেখান থেকেই মাহি শুনেছে,, তারপর নানুর কাছ থেকে ঢুস মানে কি এটা জেনেছে।
আচ্ছা এক মিনিট আগে এটা বলো এই ঢুস মানে কি??(মেঘ)
হ্যাঁ মাহি এই ঢুস মানে কি??(মেঘলা)
আরে আপু তুমিও জানো না?? ঢুস মানে হলো ওই যে গুরুর সামনে গেলে গরু মাথা দিয়ে মারতে আসে না?? ওটাকেই ঢুস বলে বুঝেছো?? (মাহি)
হুম বুঝলাম।
তো এখন বলেন আপনারা,,,কোন গরু ঢুস মারে না (মাহি মেহরাবদের উদ্দেশ্য বলল)
কী ভাই এমন প্রশ্ন আমি জীবনেও শুনিনী তার এর উওর জানবো কীভাবে?? এ আাবার কেমন প্রশ্ন,, তোর বউ এসব কি বলেরে (মেঘ মেহরাব এর কানে কানে বলল)
আহ তুই চুপ থাক তো ভাবতে দে (মেহরাব)
কি হলো বলেন বলেন,, হার মেনে নিলেন নাকি??(মাহি)
আমরা কখনো হার মানি না হার মানলে তোরা মানবি,,, একটু ভাবতে তো দিবি নাকি?? (মেহরাব)
ওকে ভাবেন ভাবেন ভেবে কোনো লাভ হবে না হম?? জিতবো আমরাই।
চলবে,,,,,,???
(আপনারাও ভাবেন কি হতে পারে,, আমিও ভাবি)