ভালোবাসি বুঝে নাও ২ পর্ব-২০+২১+২২

0
349

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২০_পর্ব
.
মাহি কেবলি একটা ঘড়ি নিয়ে শুভর দিকে দিবে তখনি কেউ ঝড়ের গতিতে এসে মাহির গালে ঠাস করে একটা চড় মারল মাহি গালে হাত দিয়ে পিছনে তাকিয়ে দেখে মেহরাব রাগী দৃষ্টিতে দিকে তাকিয়ে আছে।

আরে আপনি,,,(শুভ কে কিছু বলতে না দিয়ে মেহরাব মাহির হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো,, তারপর গাড়িতে বসিয়ে সোজা বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে মেহরাব চলে গেলো এটুকু সময়ে কেউ কারো সাথে কথা বলেনি,,, মাহিও মন খারাপ করে বাসার ভিতর চলে গেলো,,, সেদিন আর মাহি পরতে যায়নি আর মেহরাব ও মাহিকে কিছু বলিনি এভাবেই রাতটা কেটে গেলো।

পরদিন শুক্রবার সকাল সকাল উঠে মাহি বসার ঘরে গিয়ে সোফায় বসে পরল, কারো সাথে কোনো রকম কথা না বলে খেয়ে রুমে গিয়ে একটা লম্বা ঘুম দিলো দুপুরে মাহির আব্বু আর মনির নামাজ শেষে বাড়ি ফিরলে ওদের সাথে মেহরাব ও আসলো ,, ওরা সবাই বসার ঘরে বসে গল্প করছে, মেহরাব এর চোখ মুখ কেমন ফোলা ফোলা চোখটাও কেমন লাল,, মাহি ঘুম থেকে উঠে গোসল করে মেহরাব এর দেওয়া সেই শাড়িটা নিয়ে ওর মায়ের কাছে গেলো।

আম্মু এই শাড়িটা পরিয়ে দাও তো।

সেকিরে তুই শাড়ি পেলি কোথায় আর এখন শাড়ি পরেই বা কি করবি(আম্মু)

ওফফ এতো প্রশ্ন করো না তো, আমার একটা দাওয়াত আছে তুমি পরিয়ে দিবে কিনা বলো।

আচ্ছা আয়,,,তারপর মাহির মা সুন্দর করে মাহিকে শাড়ি পরিয়ে দিলো, তারপর মাহি একটু সেজে বেরিয়ে গেলো,,বসার রুমে মাহির বাবা আর মেহরাব কথা বলছিলো তখন মাহিকে বাইরে যেতে দেখে মাহির বাবা জিগাস করল।

কিরে এই সময় কোথায় যাস??

একটু কাজ আছে আব্বু আমি সন্ধ্যার আগেই ফিরে আসব,, এই বলে ওর বাবাকে আর কিছু বলতে না দিয়ে মাহি বেরিয়ে গেলো,, কেননা ওখানে দেরি করলে পরে আর ওর বাবা ওকে যেতে দেবে না,,, মেহরাব এর কেমন যেনো সন্দেহ হলো তাই কোনো রকমে মাহির বাবার থেকে বিদায় নিয়ে মাহির পিছু নিলো। যেহেতু নামাজ পরে ওভাবেই এসেছে মেহরাব এর গায়ে পাঞ্জাবি ছিলো, ওটা পরেই বেরিয়ে গেলো

মাহি রিক্সা নিয়ে সোজা একটা পার্কে গেলো,, মেহরাব ও ওর পিছে যাচ্ছিলো কিন্তু হঠাৎই পার্কের ভিতর ঢুকে মাহি হারিয়ে গেলো মেহরাব চারিদিকে মাহিকে খুঁজতে লাগল তখনি পিছন থেকে কেউ বলল।

ভাও (মেঘ+মেঘলা)

তোরা?? এখানে কি করছিস??(মেহরাব পিছনে তাকিয়ে বলল,,)

আগে বল তুই এখানে কেনো??(মেঘ)

মেহরাব কিছু বলতে যাবে ,তখনি দেখলো মাহি আর শুভ কথা বলতে বলতে এদিকেই আসছে,, ওদেরকে দেখে মেহরাব দ্রুত ওদের কাছে গিয়ে মাহিকে টেনে নিজের কাছে নিয়ে নিলো

আরে ভাই আস্তে বাচ্চা মেয়ে তো, আর আমি তোর বউকে নিয়ে নেবো না,, আমারও বউ আছে (শুভ)

মানে??( মেহরাব কিছু বুঝতে না পেরে বলল)

মানে আবার কি শুধু তোর নয় বউ আমারও আছে হে বেশ কি বল মেঘ?? (শুভ)

হুম সেটাই তো,, মনে হচ্ছে খালি বউ ওরই আছে আর আমাদের নেই(মেঘ)

মেহরাব ওদের কথার আগা মাথা কিছু বুঝতে না পেরে মাহির দিকে তাকিয়ে দেখলো মাহি দাঁত কেলিয়ে ওর হাত জরিয়ে ধরে আছে।

এসব কি হচ্ছে এখানে??আর তোরা এখানে কি করছিস?? আর এনি (শুভকে উদ্দেশ্য করে) আমাকে তুই করে বলছে কেনো,?? আর তুই (মাহি) আমার হাত ছাড়(রেগে বলল মেহরাব)

আরে এতো রাগ করছিস কেনো,, আর তুই শুভকে চিনতে পারছিস না?? আর চিনবেই বা কামনে প্রথমে দেখে তো আমিও চিনতে পারছিলাম না,, আরে ও হলো আজাদ স্যার এর ছেলে শুভ,, সেই আজাদ স্যার যায় কাছে আমরা ইংরেজি পড়তে যেতাম আর তুই তো শুভকে দেখতেই পারতি না,, কেননা তোরা দুজনই পড়াই খুব ভালো ছিলি আর দুজন দুজনার সাথে পাল্লা দিয়ে পরতি। (মেঘ)

আচ্ছা এবার বাকিটা আমি বলি,, আসোলে হয়েছে কি তুই তো ছোট বেলায় আমাকে অনেক জ্বালিয়েছিস তো আমিও ভাবলাম আমিও একটু তোকে জ্বালায়, তো মেঘের সাথে দেখা হওয়ার পর যখন তোর কথা জিগাস করলাম তখন ও বলল,, তোর আর মাহির কথা, তোরা দুজন দুজনকে ভালোবাসিস কিন্তু কেউ কাউকে বলছিস না,, আচ্ছা মাহিকে বাদ দিলাম ওতো মেয়ে ওর লজ্জা বেশি ও আগে কেনো বলবে বলবি তো তুই কিন্তু তুই নাকি বলছিস না, (শুভ)

হুম ও শুধু বলে #ভালোবাসি_বুঝে_নাও আরে গাধা মাহি কামনে বুঝে নেবে তুই না বললে,, তাই সেদিন রাতে আমরা মানে আমি,মেঘলা,শুভ,মাহি,আর শুভর বউ মিলে এই প্লান বানিয়েছি,, তুই যেহেতু শুভ কে চিনিস না তাই ওকে দিয়ে তোকে জেলাস ফিল করানো আর তুই যাতে মাহিকে হারানোর ভয়ে ওকে তোর ভালোবাসার কথা বলেদিস, কিন্তু তুই তাও বললি না উল্টে মাহিকে চড় মারলি,, তাই মাহি কাল রাতে আমায় ফোন করে বলল তোকে সব বলে দিতে নইলে তোর হাতে নাকি আরো চড় থাপ্পর খাওয়ার সম্ভবনা আছে (মেঘ)

এই ভাইয়া আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই, সব প্লান এই মেঘ আর শুভ ভাইয়ের(মেঘলা)

একিরে মীর জাফর এখন আমাকে ফাঁসাচ্ছো কেনো?? তুমি তো সব জানতে আর আমাদের সাহায্য ও করেছো (মেঘ)

আমি বার বার নিষেধ ও করেছি ওকে কিন্তু আপনিরা শুনেননাই।

মেহরাব আমার কিন্তু কোনো দোষ নেই সব দোষ শুভ আর মেঘলার (মেঘ)

এই সালা আমি কি করলাম তোরাই তো আমাকে এই সব করতে বললি (শুভ).

আমি বলছি কার দোষ আছে আর কার দোষ নেই,, আজ সব কটাকে মেরে আলু ভর্তা বানাবো দাঁড়া ,, এই বলে মেহরাব শুভ আর মেঘকে দৌড়রানি দিলো,মেঘ দৌড়ে মেঘলার পিছনে গিয়ে বলল।

এই তোমার ভাইকে সামলাও নয়ত কিন্তু তুমি বিয়ের আগেই বিধবা হবা বুঝলে (মেঘ)

ওরে ভাই থাম ঘাট হয়েছে আর দৌড়াতে পারছি না (শুভ দূরে গিয়ে ঘাসের উপর গিয়ে বসে বলল)

একবার দুটোকে হাতের কাছে পায় তারপর বোঝাবো মজা, আমার সাথে বিটলামি করা না?? তখনি মাহি মেহরাব এর পিছনে গিয়ে বলল।

এই এখন প্রোপোজ করেন আমায় (দাঁত কেলিয়ে মেহরাব এর হাত জড়িয়ে ধরে বলল)

একটা চড় খেয়ে হয়নি আরো লাগবে??হাত ছাড় আমার (মেহরাব)

ও মেঘ ভাইয়া দাখেন প্রোপোজ করছে না (মাহি)

কিরে ভাই বাচ্চা মেয়ে প্রোপোজ করে দিলেই তো পারিস (মেঘলার পিছন থেকে মাথা বের করে বলল মেঘ)

সালা তুই কোনো কথা বলবি না (মেহরাব)

এই মেহরাব মেঘ তোর সালা হয় নাকি?? দাঁড়া হিসেব করি তোর ছোট বোনের বর তোর কি হয় (দূরে ঘাসের উপর বসে বলল শুভ)

আমার কাছে আয় আমি তোকে খুব ভালো করে বুঝিয়ে বলছি (মেহরাব)

না ভাই আমি এখানেই ঠিক আছি( ঢোক গিলে বলল শুভ)

কি হলো করুন প্রোপোজ (মেহরাব এর হাত ধরে বলল মাহি)

তোকে তো,,, এই বলে মেহরাব মাহিকে এক ঝটকায় কাঁধে তুলে নিয়ে হাঁটতে লাগল।

এই ছাড়ুন আমায় গুন্ডা একটা বাঁচা ও,, এই মেঘ ভাইয়া শুভ ভাইয়া আপনার বন্ধুকে থামান,, ওরে নিয়ে গেলো আমায় এবার আমার কি হবে বাঁচাও আমি যাবো না (মেহরাব এর পিঠে মারতে মারতে বলল মাহি)

পাগল না মাথা খারাপ তোমায় বাঁচাতে গিয়ে নিজের বউকে বিধবা করবো নাকি?? (শুভ)

ভাইয়া তো মাহিকে নিয়ে গেলো এখন কি হবে??(মেঘলা)

কি আর হবে যা হওয়ার তাই হবে তোমার ভাই মাহির সাথে বাসর করবে,,এখন চলো আমরাও যাই (মেঘ)

কোথায়??

প্রেম করতে, বাসর তো করতে পারবো না, বিয়ে হয়নি তো তাই চলো (এই বলে মেঘ মেঘলাকে কোলে তুলে নিয়ে চলে গেলো)

লে ও ওর বউকে নিয়ে চলে গেলো, আর এ এর বউ কে নিয়ে চলে গেলো তো হুদাই আমি একা এখানে বসে আছি কেনো যাই আমিও আমার বউ এর কাছে যায়,, বউ ও বউ কই তুমি আমি তোমাকেই খুঁজছি (এই বলে শুভও চলে গেলো)

চলবে,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২১_পর্ব
.
পড়ন্ত বিকেলে নরম ঘাসের উপর বসে প্রিয় মানুষের কাঁধে মাথা রাখাটা যে কতটা শান্তি সেটা এখন বুঝতেছি।কতটা সুখ লাগছে নিজেকে ভিষণ সুখী লাগছে।

এই যে ম্যাডাম এভাবে বসে থাকলেই হবে বাড়ি যাওয়া লাগবে না??(মেহরাব)

ওমমম হুম(চোখ বন্ধ করে বলল মাহি)

কি হুম হুম করছিস?

আচ্ছা আপনি আমায় সত্যি ভালোবাসেন??(মেহরাব এর কাঁধ থেকে মাথা উঠিয়ে বলল মাহি)

কে বলল বলছে?? আমার কি মাথা খারাপ নাকি যে তোকে ভালোবাসতে যাবো (মেহরাব)

হুট মজা করবেন না তো বলেন প্লিজ।

মেহরাব মাহির মুখটা নিজের হাতে মধ্যে নিয়ে বলল,,এতো সুন্দর মায়াবী আর পবিত্র মুখ টাকে ভালো না বেসে কি থাকা যায়??(মেহরাব)

তাহলে বলেন না কেনো??

সব কিছুই কি বলে দিতে হয়,, কিছু কিছু কথা বুঝেও নিতে হয় বুঝলি।

হুম বুঝলাম,, মেহরাব এর বুকে মাথা রেখে।

আউচ,,কামড় দিস কেনো (মেহরাব বুক ডলতে ডলতে বলল)

বেশ করেছি কামড় দিয়েছি,, আমার মনে আছে আপনি কালকে সবার সামনে আমায় চড় মেরে ছিলেন এটা তার শোধ আজকে আপনাকে কামড়ে খেয়েই ফেলবো (আবার কামড় দিয়ে)

আউচ,আহ,,আরে বেথ্যা পাই তো,,

বেথ্যা পাওয়ার জন্যই তো কামড় দিচ্ছি।

মেহরাব বসা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে,, পাগল হয়ে গেছিস এভাবে রাক্ষসীর মতো কামড় দেওয়া বন্ধ কর ওফ,,

এই দাঁড়ান আজকে আপনার খবর আছে আমাকে চড় মারা না,, এবার বোঝাবো মজা,, তারপর মাহি মেহরাব কে ধরতে গেলে মেহরাব দৌড় দেয় আর মাহি মেহরাব এর পিছু পিছু দৌড়াচ্ছে।

এই দাঁড়ান বলছি (মাহি)

পাগল না মাথা খারাপ,, আমার এতো শীঘ্রই মরার সখ নেই,,,এই মেহরাব আবার দৌড়াতে লাগল মাহিও মেহরাব এর পিছনে ওকে ধরার চেষ্টা করছে,, মেহরাব দৌড়ে এসে ঘুরে মাহির কমর জরিয়ে ধরে উঁচু করে ফেলল।

আরে কি করেন পড়ে যাবো তো নামান।

ওমমম আমি পরতে দিলে তো পড়বি,,, মাহিকে নামিয়ে দুহাতে মাহির মুখ ধরে বলল।

ভালোবাসি অনেক বেশি ভালোবাসি বউ,, মাহির কপালে চুমো দিয়ে বুকে জরিয়ে ধরে বলল।

আমিও আপনাকে অনেক ভালোবাসি, মিষ্টার লম্বার উপর খাম্বা, মেহরাব এর বুকে একটা কামড় দিয়ে।

আউচ,,বদ মাইয়া একটা।

,,,,,রাতে,,,,

মেহরাব মাহিকে অংক বোঝাচ্ছে আর মাহি মেহরাব এর সামনে বসে ওর চুল নিয়ে খেলা করছে,,, কি হচ্ছে কি মাহি অংকটা ভালো করে বোঝ কালকে না তোর অংক পরিক্ষা।(মেহরাব)

ও আপনি যতই ভালো করে বোঝান না কেনো অংক আমার মাথায় ঢুকবে না (মেহরাব এর চুল নাড়তে নাড়তে বলল মাহি)

মাথায় ঢুকে না বলে কি চেষ্টা করাও যাবে না নাকি,, আর এটা কি করছিস (চুলের থেকে হাত সরিয়ে) চুপ করে বসে থাকবি শুধু অকাম, যা বোঝাবো ভালো করে বুঝবি ওকে(মেহের)

আপনি একটা কিউট বাচ্চা (মাহি)

কিহ???(থতমত খেয়ে বলল মেহরাব)

আরে না সরি কি বলে ফেললাম,, বলছি যে আপনি আমার মামি মণির বাচ্চা মানে ছেলে,,,মামি মণির কাছে জিগাস করতে হবে যে আপনি পেটে থাকা কালীন মামি মণি কি খেয়েছিলো যে আপনি এতো কিউট হলেন,,, আমিও খাবো তাহলে আমার বেবিও আপনার মতো কিউট হবে (দাঁত কেলিয়ে বলল মাহি)

পড়াশুনা বাদ দিয়ে মাথায় শুধু আজেবাজে চিন্তা, মেরে একদম গাল লাল করে দেবো চুপচাপ পড়তে বস (ধমক দিয়ে বলল মেহরাব)

আনরোমান্টিক এর বস্তা,,লম্বার উপর খাম্বা লোক এটা, (বিরবির করে বলল মাহি)

,,,সকালে,,,

এই যে কাঁদা সুন্দরী কি খবর আজকাল দেখায় যায় না যে (নেহাল)

মীরা ভার্সিটীতে কেবলি ঢুকছিলো তখনি নেহাল ওর চুল টেনে বলল কথাটা।

এই তো ভালো (মুচকি হেসে চুল ঠিক করে বলল মীরা)

কি বেপার সূর্য আজ কোনদিকে উঠেছে, এ আজ আমার সাথে এতো ভালো করে কথা বলছে,, না বেপারটা সুবিধার লাগছে না নিশ্চয়ই কোনো ঘাপলা আছে নেহাল সাবধান এটা কিন্তু একদম ধানি লংকা (মনে মনে বলল নেহাল)

আমি যায়??(মীরা)

কেনো ভয় পেয়েছো?? শোনো এখন থেকে আমাকে এভাবেই ভয় পাবে বুঝলে ভিতুর ডিম একটা।(নেহাল)

জি স্যার,, আপনি যান আপনি তো আমার সিনিয়র তাই আপনার সামনে দিয়ে যাওয়া আমার মোটেও ঠিক হবে না আপনি যান (মীরা)

এই তো লাইন এ আসছো গুড ভেরি গুভ,,, এই সবাই চল।

এই বলে কেবলি নেহাল ওর বন্ধু সাথে ওখান থেকে ক্লাসের দিকে যাবে তখনি মীরা পা দিয়ে নেহাল কে একটা ল্যাং মারলো আর নেহাল ধপাস করে মাটিতে পড়ে গেলো, আর সারা গায়ে মাটিতে মাখামাখি,, মুখ ধুবরে পড়লে যা হয় আর কি,,, মীরা নেহাল এর সামনে বসে বলল।

আগেই বলেছিলাম এই মীরার সাথে পাঙ্গা নিতে আসবেন না এখন দাখেন কেমন লাগে মিষ্টার ধুলো কুমার,, বাই বাই (এই বলে মীরা চলে গেলো)

কাঁদা সুন্দরী তোমাকে দেখে নেবো,, আমাকে ফেলে দেওয়া এর মাসুল তো তোমাকে দিতেই হবে।

কি ভাই আজকে আবার তোর বউয়ের সাথে কথা বললে কি মারবি নাকি(মজা করে বলল শুভ)

চুপ সালা,, তুই আর মেঘ মিলে তো ভালোই ড্রামা করলি, বাবা কি প্লান একেবারে বউ চুরির প্লান (মেহরাব)

এতোদিন ওনাকে সয্যই করতে পারতো না আর এখন এই গরমে আমাকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে প্রাণের বন্ধুর সাথে গল্প করছে অসভ্য লোক একটা, উফফ কি গরম (রেগে বলল মাহি)

এখন কোথায় যাবি (গাড়িতে এসে বসে বলল মেহরাব)

জাহান্নামে।

বাবা মেডাম তো দেখছি খুব রেগে আছে হাওয়া গরম দেখছি,, হায় গারমী,,,

মজা করা বাদ দেন, আর আসলেন কেনো, একে বারে বন্ধুর সাথে ওনার বাড়ি চলে যেতেন তারপর ওনার সাথে মন প্রাণ খুলে গল্প করতেন।

হুমম গুড আইডিয়া কিন্তু আজকে না অন্য একদিন যাবো।

মাহি শুরু রেগে মেহরাব এর দিকে তাকালো কোনো কথা বললো না।

চলবে,,,,,,??

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও-2🍁🍁
#সুমাইয়া_সুলতানা_সুমী( writer)
#২২_পর্ব
.
দেখতে দেখতে মাহির পরিক্ষা শেষ হয়ে গেলো,,আর মেঘলার বিয়ের দিনও ঘনিয়ে আসছে, সত্যি সময় যে কখন কীভাবে চলে যায় বোঝায় যায় না,, আর যাই হোক সময় কে তো আর বেঁধে রাখা যায় না, কাল বাদে পরশো দিন মেঘলার গায়ে হলুদ মাহি তো সেই ৭ দিন আগে এসে বসে আছে, আর আসবেই না কেনো যতই হোক বাড়ির বড় বউ বলে কথা,,আর মাহির মায়ের তো শান্তি নেই একবার এ বাড়ি তো একবার ও বাড়ি,, একমাএ ভাইয়ের মেয়ে বলে কথা কোনো কমতি রাখা যাবে না, দুটো বাড়ি কাছাকাছি হওয়াই মাহির মা একবার এখানে তো আবার রাতে বাড়ি চলে যায়।
বাড়িতে আত্মীয় এসে গিজগিজ করছে, আরো আসা বাকি, আর মেহরাব এর তো দেখা পাওয়াই দায়, একমাএ বোনের বিয়ে কতকাজ তার দম ফেলার জো নেই।

হারে শুনলাম তোর বরের জন্য নাকি মেহরাব রাজকীয় শেরওয়ানি বানিয়েছে তাও আবার অর্ডার দিয়ে,, তা কই দেখি আমাদের ও দেখা (মেঘলা এক চাচি)

আরে বানাবে না যতই হোক ওনার একমাএ বোন বলে কথা সব কিছু একদম পারফেক্ট হওয়া চাই(মাহি)

মাহি ভাইয়ার রুমে মেঘের শেরওয়ানী টা রাখা আছে নিয়ে আয় (মেঘলা)

ঠিক আছে মেঘলা আপু।

এই বলে মাহি মেহরাব এর রুমে গেলো,, রুমের সামনে গিয়ে দেখলো দরজা হালকা চাপানো, সব রুমে মেহমান থাকলেও এরুমে কারু প্রবেশ নিষিদ্ধ কেননা মেহরাব ভাই আবার তার রুমে কারো প্রবেশ এলাও করে না, আর অগুছানো জিনিস তো দেখতেই পারে না।
আমি চুপিচুপি দরজাটা হাত দিয়ে হালকা খুলে ভিতরে গেলাম, বাথরুম থেকে পানির আওয়াজ আসছে মনে হয় ওনি শাওয়ার নিচ্ছে,,, আমি সারা রুম খুঁজতে লাগলাম কিন্তু পেলাম না,

কোথায় যে রাখছে কে জানে,, সেই কখন থেকে খুঁজছি পাচ্ছি না,, ওদিকে মেঘলা আপু তো আবার ডাকাডাকি করবে,,,

এসব ভাবছিলাম আর খুঁজছিলাম তখনি পিছন থেকে কেউ আমার কাঁধে হাত রাখল বাবা কি ঠান্ডা হাত,, আমি পিছন ঘুরে দেখলাম মেহরাব ভাই টাওয়াল পরে দাঁড়িয়ে আছে, আমি ওনাকে কিছু বলতে যাবো তখনি ওনি, আমার মাথার পিছনে হাত দিয়ে চুলগুলো মুঠো করে ধরে আরেক হাত দিয়ে আমার কমর চেপে ধরে আমার ঠোঁটে ওনার ঠোঁট মিলিয়ে দিলো।

কি সাংঘাতিক আমি ভাবতেও পারিনি ওনি এমনটা করবে,, সাধারণত কোনো ছেলে কোনো মেয়েকে কিস করলে মেয়েটা চোখ বন্ধ করে ফেলে কিন্তু আমার ক্ষেএে পুরাই আলাদা আমি চোখ গুলো বড় বড় করে ওনার চুল ধরে টানাটানি করছি কিন্তু ওনি ছাড়ছেন না,,
তখনি রুমের বাইরে মেঘলা আপুর গলা শুনলাম ওনি আমায় ডাকতে ডাকতে এদিকেই আসছে, কিন্তু এদিকে ওনার ছাড়ার কোনো নামই নেই, আল্লাহ মেঘলা আপু যদি এসে দাখে তাহলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে,, মেঘলা আপু রুমে ঢুকার একটু আগে মেহরাব ভাই আমায় ছেড়ে দিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

কিরে আমি তোকে সেই কখন পাঠিয়েছি এখনো এখানে কি করছিস??(রুমে এসে বলল মেঘলা আপু)

আমি কোনো কথা বললাম না শুধু চোখ দুটো বড় বড় করে তাকিয়ে আছি একদম সোজা হয়ে।

কিরে চোখগুলো ওরকম রসগোল্লার মতো করে রেখেছিস কেনো কি হয়েছে?? (মেঘলা)

কিরে তুই এ রুমে কিছু বলবি নাকি??(মেহরাব ওয়াশরুম থেকে মাথা মুছতে মুছতে বের হয়ে বলল,, ওনার পরনে এখন একটা টাওজার আর গায়ে টির্শাট,,আমি ওনাকে দেখে আমার হাত দিয়ে ঠোঁট ঢেকে ফেললাম)

হা ভাইয়া মেঘ এর শেরওয়ানী টা নিতে আসলাম ওই চাচিরা দেখবে,, মাহিকে সে কখন পাঠিয়েছি কিন্তু দাখো এ এখানে এসে কেমন সং এর মতো দাঁড়িয়ে আছে যেনো আ্যাসেমবিলি করছে (মেঘলা)

আরে বাদ দে ওর কথা জানিস তো ও কেমন,,, আচ্ছা তুই দাঁড়া আমি বার করে দিচ্ছি (এই বলে মেহরাব আলমারি থেকে শেরওয়ানী টা বার করে মেঘলা আপুকে দিলো)

নে এখন চল সব সময় শুধু বাদরামো (এই বলে মেঘলা চলে গেলো)

আরো কিস নিবি নাকি এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো??তুই চাইলে আমি দিতেই পারি আমার কোনো সম্যসা নেই(মাহির কানে কানে বলল মেহরাব)

মেহরাব এর কথা শুনে মাহি মুখে হাত দিয়ে এক দৌড়ে ওখান থেকে চলে আসলো,, তারপর বাইরে দাঁড়িয়ে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগল।

বাপরে একটুর জন্য বেঁচে গেলাম (মাহি)

কেনো কি হয়েছে (মেঘলা)

আ,,আরে কিছু না, তুমি এখানে ওনাদের সব কিছু দেখানো হয়ে গেছে??(মাহি)

হুম,, আচ্ছা শোন আমি একটু শপিংয়ে যাবো তুই রেডি হয়ে নে আমি তুই মীরা আর ভাইয়া যাবো,, (মেঘলা)

ওনি মানে মেহরাব ভাই কেনো যাবে ওনি না গেলে হয় না??(আমি ওনার সামনে যাবো কি করে ইস কত লজ্জা লাগছে আমার)

না হয় না আরে গাধা ভাইয়া না গেলে আমাদের গাইড করবে কে শুনি,, চুপচাপ যা রেডি হয়ে নে,, আমি যায় দেখি আসি মীরা আবার কোথায় গেলো।এই বলে মেঘলা চলে গেলো।

ওনার যাওয়ার কি দরকার ছিলো আমি এখন ওনার সামনে যাবো কি করে আমি তো লজ্জায় তাকাতেই পারবোনা ওনার দিকে.

বিকেলের দিকে মাহিরা গেলো তবে মেহরাব ওদের সাথে যায়নি ওর নাকি কি কাজ আছে তাই, তবে ওখানে মেঘ আসবে মেহরাব মেঘকে বলে দিয়েছে আর মাহিকে শাসিয়ে দিয়েছে যাতে সব সময় যেনো মেঘলার সাথে থাকে, আর ওখানে গিয়ে কোনো রকম দুষ্টটামি যাতে না করে।

মেঘলা মাহি আর মীরা ওখানে পৌঁছে গেলে দেখলো মেঘ ওখানে দাঁড়িয়ে আছে।

আরে চলে এসেছো তোমরা তা কেমন আছো সবাই(মেঘ)

ভালো আপনি কেমন আছেন ভাইয়া(মাহি)

হুম আমিও ভালো।

তা আপনি একাই এসেছেন নাকি জিজু(মীরা)

আরে না আমার সাথে আমার ভাইও আসছে,, ওর নাকি রোদে দাঁড়িয়ে থাকলে ত্বক নষ্ট হয়ে যাবে তাই ভিতরে গেছে,, আর কি যেনো কিনবে তাই (মেঘ)

বাবা কি ঢং আপনার ভাই তো দেখি মেয়েদের থেকেও বেশি ত্বকের যত্ন নেয়, তা আপনার ভাইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবেন না??(মীরা)

দিবো আগে ভিতরে তো চলো।

তারপর ওরা সবাই ভিতরে চলে গেলো,, মেঘ আর মেঘলা কে একটু সময় দেওয়ার জন্য মীরা আর মাহি ওদের থেকে একটু দূরে গেলো, মাহি একা একাই সব কিছু দেখছিলো আর মীরাও।
মীরা হাত দিয়ে জামা নাড়ছিলো আর দেখতে দেখতে হাঁটছিলো তখনি সামনে কারো সাথে ধাক্কা লাগল।

ওহ আম স,,,,আপনি?? (রেগে বলল মীরা)

আরে কাঁদা সুন্দরী যে, তা এখানে কি করো কাঁদায় মাখামাখি করতে আসছো নাকি?? কিন্তু এখানে তো কাঁদা নেই (নেহাল)

আপনি সত্যি একটা গাধা কেননা আপনি এটাও জানেন না যে মানুষ এখানে কি করতে আসে (মীরা)

জানি তো কিন্তু মানুষ আর তুমি তো আলাদা।

মানে??

কিছু না সামনে থেকে সরো তোমার সাথে কথা বলার মুড নেই আমার,, অনেক কাজ আছে, সাইড প্লিজ (এই বলে নেহাল পকেটে হাত দিয়ে শিস বাজাতে বাজাতে চলে গেলো)

চরম অসভ্য লোক একটা যত্তসব। (রেগে বলল মীরা)

চলবে,,,,,,???