ভালোবেসে থাকবো পাশে পর্ব-০৭

0
612

#ভালোবেসে_থাকবো_পাশে💝
#পর্ব_০৭
#লেখিকা_ইসরাত_জাহান_ইমা

পরপর তিনটা গান হওয়ার পর আরিয়া আর আহিল গান গাওয়ার জন্য স্টেজে গেলো। এরই মাঝে আরিয়া আর আহিল গান ধরলো_____

কতটা হাত বাড়িয়ে দিলে
তোমার মন ধরা যায়
কতটা পথ পাড়ি দিলে
তোমার প্রেম ছোঁয়া যায়(২ বার)

পাব কি পাব না জানি না
তোমাকে তো বুঝিনা(২ বার)

তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)

মনযে কেন মানে না
তুমি ছাড়া কিছু বুঝেনা
আর যাতনা সহে না সহে না(২ বার)

তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)

মেলেছি ইচ্ছেডানা
ভালোবাসতে নেই মানা
শেষ ঠিকানা জানি না,জানি না(২ বার)

তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)

কতটা হাত বাড়িয়ে দিলে
তোমার মন ধরা যায়
কতটা পথ পাড়ি দিলে
তোমার প্রেম ছোয়াঁ যায়
পাব কি পাব না জানি না
তোমাকে তো বুঝিনা(২ বার)

তবু তোমার প্রেমে আমি পড়েছি
বেচেঁ থেকেও যেন মরেছি
তোমার নামে বাজি ধরেছি,ধরেছি(২ বার)

গান শেষ হতেই তালির বর্ষণ শুরু হলো। আশেপাশে আরিয়া আর আহিলের নাম গুজতে শুরু করলো। আরিয়া ও আহিল এসে অপরের দিকে তাকিয়ে হাই-ফাইভ দিলো। ছোঁয়া আর অন্তু তো লাফাতে লাফাতে অস্থির। নিচে নামতেই অন্তু, ছোঁয়া আর সায়ান এসে ওদের জড়িয়ে ধরলো। প্রতিযোগিতার শেষমেশ আরিয়া আর আহিল জয়ী হয়!

আরিয়া রাতুল, ছোঁয়ার আর জয়ের দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিলো।

রাতুল, ছোঁয়া, জয় তো অবাক ওরা জানলো কী করে এসব!

আর কেউ একজন তো তার প্রেয়সীকেই দেখতে ব্যস্ত। সে জানতো আরিয়া গান গাইতে পারে কিন্তু এতো ভালো গাইতে পারে সেটা সে ভাবতেও পারেনি।

কিছুক্ষণ পর আরিয়া আর আহিলের স্টেজে ডাক পড়লো।

মাইকে এনাউন্সমেন্ট করা হলো আজকের বিজয়ী আরিয়া আর আহিলের হাতে প্রাইজ তুলে দিবে আমাদের বিশেষ অতিথি শিশির আহমেদ তূর্য।

স্টেজে ওঠার পর আহিল ও তূর্য একে অপরের দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।

প্রাইজ নিয়ে নিচে এসে দাঁড়াতেই কেউ একজন আরিয়ার কানে কানে ফিসফিসিয়ে বলে গেলো কংগ্রাচুলেশনস আরুপাখি।
আরিয়া তাড়াতাড়ি করে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিল। কিন্তু সে হতাশ তেমন কাউকেই দেখতে পেল না। আজকেও কেউ একজন আরুপাখি বলল! কিন্তু কে সে? আর কী চাই!

__এই ফারিয়া আরু আর আহুকে কংগ্রেস জানাবি নাহ্?(ছোঁয়া)

অপমান করতে আসছিস এখানে?

না না অপমান কেন করব! এত বড় একটা শিল্পীরে কী আমরা অপমান করতে পারি এই তোরাই বল!

সবাই একসাথে মাথা নেড়ে বলে উঠলো না না।

তখন আরিয়া বলে উঠলো,, দেখলি ফারু তোর নিজের প্রতিই কোন বিশ্বাস নাই। কী হলো আমাদের গান টা চুরি করে? সেই আমরাই জয়ী হলাম। সবসময় যে অশুভ শক্তি জিতে যাবে সেটা ভাবিস না।

হুম ফারিয়া তোদের লাগি এক বালতি সমবেদনা!(অন্তু)

তোদের অপমান করা শেষ হয়ছে?

গায়েস তোরাই বল আমরা এখানে অপমান করলাম কখন এরে। সে যদি এমন টা ভাবে আমরা কী বলব বল! কিছুটা হতাশ ভঙ্গিতে বলল ছোঁয়া।

ধ্যাত তোদের সাথে কথা বলাই ভুল বলেই ফারিয়া চলে গেলো।

এদিকে সবাই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা।

অনেক হয়ছে আরু এখন বলতো তোরা কেমনে জানলি তোদের গানটা ওরা চুরি করে গাইবে?(ছোঁয়া)

আমি কিছু জানি না আহু আমাকে পরশু রাতে ফোন দিয়া বললো যে আমাদের গান নাকি ফারিয়ারা গাইবে।

হুম আমিই আরুকে ফোন দিয়া বলছিলাম। তারপর আরুই আমাদের জন্য এই গানটা সিলেক্ট করে তোদের সারপ্রাইজ দিবে বলে।(আহিল)

বুঝলাম। কিন্তু আহু তুই কেমনে জানলি এটা?

আমাকে ভাইয়া বলল!

সবাই একসাথে চিল্লিয়ে বললো,, তোর ভাইয়া? কবে কোথা থেকে আসলো? তুই তো আমাদের বললি না তোর ভাইয়া আসছে!

আরে রিলাক্স। সবাই একসাথে এতো প্রশ্ন করলে কারে রেখে কারে আনসার দিমু তোরাই ক!(আহিল)

আচ্ছা দোস্ত এটা বল তোর ভাইয়া কবে আসছে দেশে?(ছোঁয়া)

ভাইয়া আসছে ১ মাস হবে।

তো আমাদের লগে দেখা করাস নি কেন? আমরা কী তোর ভাইয়ারে খেয়ে ফেলতাম নাকি?(অন্তু)

আরে পেটুক আগে তো জানতাম তুই শুধু অতিরিক্ত খাবার খাস এখন তো দেখি মানুষও খাইতে পারস!(আহিল)

আরে আজব আমি কখন কইলাম আমি মানুষ খাইতে পারি? আর তুই আমারে পেটুক কইলি কেন?

তুই তো পেটুক-ই!

দেখ একদম ফালতু কথা কইবি না।

আরে থাম তোরা। দুইটা একসাথে হলেই ঝগড়া শুরু করস। এখন বল ভাইয়ার সাথে মিট করাস নি কেন? আর তুই তো বললি ও না যে ভাইয়া আসছে।

মিট করায় নি কারণ ভাইয়া ব্যবসা নিয়া বিজি ছিল। আর আমি বলতে পারি নি সময় ছিলো না।

সময় ছিলো না নাকি মনে ছিলো না কোনটা?

আহিল চুল চুলকিয়ে বলল,, দুইটাই।

ভাইয়াকে তো দেখাইলি না অত্যন্ত তার পিক তো দেখা!(ছোঁয়া)

কাছে থাকতে পিক দেখাবো কেন?(আহিল)

কী আমাদের কাছেই আছে? কই সে? (আরিয়া)

আহিল হাত দিয়ে ইশারা করতেই সবাই পেছনে তাকিয়ে অবাক! সেখানে তূর্য প্যান্টের পকেটে হাত দিয়া স্টাইল মেরে তাদের দিকেই তাকিয়ে আছে।

ছোঁয়া কিছুটা উত্তেজিত হয়ে বলল,, কী এই শিশির আহমেদ তূর্য তোর ভাই?😱

হুম মেরা ভাই। এটাও তোদের সবার লাগি একটা সারপ্রাইজ ছিলো৷ তো বল কেমন লাগলো আমার সারপ্রাইজ!

আরিয়া বিরবির করে বলল,, জঘন্য! সেই কখন থেকেই লক্ষ করছি আমার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে জীবনে মনে হয় মেয়ে দেখে নি। লুচু বেডা একটা!

কী বিরবির করছিস আরু?

কিছু না।

তাদের কথার মাঝেই তূর্য এগিয়ে আসলো।

হেই গায়েস আমি শিশির আহমেদ তূর্য। আহিলের বড় ভাই। আরিয়ার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,, কংগ্রেস আরিয়া।

আরিয়াও সৌজন্যতা বজায় রাখতে তূর্যের হাতের সাথে হাত মিলিয়ে দিয়ে বলল,, ধন্যবাদ ভাইয়া।

দু’মিনিট হয়ে গেলো এখনো আরিয়ার হাত ছাড়ার নাম নেই। একধ্যানে তাকিয়ে আছে। আশেপাশে যে কেউ তাদের দেখছে সেই খেয়াল টাই নেই তার।

আরিয়া মনে মনে বলছে, এ তো আস্ত একটা ফাজিল, অসভ্য, সবথেকে বড় লুচু। কখন থেকে হাত ধরে আছে এখনো ছাড়ছে না। আর কেমন করে তাকিয়ে আছে জীবনে কখনো মনে হয় মেয়ে দেখেনি!

আরিয়া কিছুটা বিরক্ত হয়ে চেচিয়ে বলল,, ভাইয়া হাত টা ছাড়ুন।

তূর্য হুশে ফিরে এলো! সাথে সাথেই আরিয়ার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল,, আমি তোমার কোন জন্মের ভাই হই?

আহিল যেহেতু আমার বেস্ট ফ্রেন্ড তাই আহিলের ভাই মানে তো আমারো ভাই। আর এতে এমন রিয়েক্ট করার কি আছে?

আসলে কী বলো তো সুন্দরী মেয়েরা ভাইয়া ডাকলে বুক টা ফেটে যায়। আর তোমার মুখে তো একদম মানায় না।

আরিয়া মুখ ফসকে বলেই উঠলো আপনি আসলেই একটা লুচু।

কী বললে?

ক….কই কিছু না। এই তোরা যাবি নাকি আমি একাই চলে যাবো।

যাবি মানে? আজ ট্রিট না দিয়া কোথাও যাইতে পারবি না।(অন্তু)

তোরে এমনে কী আর পেটুক কয়?

আহুর বাইচ্ছা!

বিয়ে করলাম না আবার বাচ্ছা কই পামু?

আহিল থাম! আজ আমিই তোদের ট্রিট দিমু চল!(তূর্য)

হঠাৎ আরিয়ার চোখ গেলো সামনের দিকে। ফারিয়া আর রাতুল দু’জন হাত ধরে বেরিয়ে যাচ্ছে।
আজ হয়তো আমিই থাকতাম ফারিয়ার জায়গায়। আমার ভাগ্য টা এমন কেন? ভাবতেই আরিয়ার চোখ ঘোলাটে হয়ে গেলো।

এই আমি যাবো না তোরাই যা। আমার ভালো লাগছে না!(আরিয়া)

ছোঁয়া কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলল,, আরু কী হয়ছে তোর? শরীল খারাপ লাগছে?

না দোস্ত!

তাহলে যাবি না কেন?

এমনি ভালো লাগছে না।

কিছু জানি না তোকে যেতেই হবে। না হলে ভাইয়া কিন্তু কষ্ট পাবে।

আরিয়া এবার আর কিছু না ভেবে রাজি হয়ে যায়।

কেউ লক্ষ না করলেও একজন আরিয়ার চোখে পানি দেখেছে। তার কারণ টাও সে দেখেছে। কী করে মেনে নেবে তার প্রেয়সীর চোখে অন্য কারো জন্য পানি।

এবার বলো কী খাবে তোমরা?

ফুসকা খাওয়ালেই হবে!

শুধু ফুসকা?

আরিয়া বলল,, হুম।

তূর্য মনে মনে ভাবছে মেয়ে গুলা এত্ত ফুসকা পাগল কেন হয়?

আচ্ছা চলো।

সবাই ফুসকা খাওয়ায় ব্যস্ত। অন্য জন তার প্রেয়সী কে দেখতে ব্যস্ত। ছোট ছোট জিনিস নিয়েই সে কত্ত খুশি৷ আর তার মনেই কি না এত কষ্ট ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।

ফুসকায় আরিয়া আর ছোঁয়া একটু বেশিই ঝাল নিয়েছিল। ছোঁয়া ঠিক থাকলেও আরিয়ার ঝালে অবস্থা খারাপ। নাক মুখ লাল হয়ে গেছে।

আরিয়ার এই অবস্থা দেখে কেউ একজন তাড়াতাড়ি আরিয়ার কাছে গিয়ে তার….

#চলবে..!!