ভিলেন পর্ব-০৪

0
750

#গল্পঃ_ভিলেন

লেখিকাঃ আদিবা ইসলাম আঁখি

পর্বঃ ০৪

———————★★———————-

আমি: এটা কি ( হা করে তাকিয়ে)

লোকটা: আমি জানতাম আপনি সকালে উঠে দোষ টা আমাকেই দিবেন তাই ভিডিও টা করতে বাধ্য হয়েছি

আমি: তাই বলে আপনি ভিডিও করবেন

লোকটা: না করলে তো আপনি আবার আমায় খারাপ ভাবতেন,,,,তবে যায় বলেন না কেন ভিডিওটা কিন্তুু জোসস একদম বাচ্চাদের মতো লাগছে

কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁত চেপে পাইচারি করতে লাগলাম,,,,,

লোকটা: আরে সম্পূর্ন ভিডিও টা তো দেখেন কত কিউট লাগছে একদম গুলুগুলু ( হেসে দিলো)

আমি: শয়তান লোক!! আপনার ভিডিও আপনিই দেখেন !!

লোকটা: আরে শুনেন ভিডিও টা ভাইরাল হলে কিন্তুু মন্দ হবে না কি বলেন!! ( হেসে হেসে)

আমি: শয়তান!! পেটে এতো শয়তানি বুন্ধি আগে জানতাম না তো রাক্ষস

বক বক করতে করতে নিচে আসতেই কাজের বুয়ার সাথে ধাক্কা খেলাম,,,

বুয়া: ক্ষমা করেন বউমনি বুঝতে পারিনি

আমি: না না ক্ষমা চাইতে হবে না ইটিস ওকে ( মুচকি হেসে)

বুয়া: বউমনি আপনাকে ডাকতেই যাচ্ছিলাম নিচে সবাই ওয়েট করছে,,,

আমি: ঠিক আছে এসো,,,,

বুয়া: চলেন,,,,

নিচে নামতেই শাশুড়ি মা এসে সামনে দাড়ালো,,,,

শাশুড়িমা: এতো দেরি

আমি: সরি আন্টি আসলে

শাশুড়িমা: পাগলি ঠিক আছে রাগ করিনি

আমি: হুমমম

শাশুড়িমা: বাট আন্টি কেনো বললেন

আমি: ইসসস সরি মা

মা: পাগলি এবার ঠিক আছে ( হেসে)

আশা: ভাবি কেমন কাঁটলো হুম

আমি: কি কেমন কাঁটলো

আশা: ওই যে বাসসসসসসর ( কাঁধে গুতো দিয়ে)

আমি: এইইই

মা: আশা দুষ্টুমি না

আশা: হিহি!! ভাবি বাট আমি দেখে ফেলছি

আমি: কি দেখছো

আশা: তোমাদের ইনজয়ের চিহৃ বা ফল যেটাই বলো,,,,

আমি: পাগল নাকি!! কোন ইনজয় হয়নি তোমার ভাই তো একটা বাঁজে লোক ( ঠোঁট বাঁকা করে)

আশা: জানি জানি বলতে লজ্জা পাচ্ছো

আমি: সিরিয়াসলি!! আসল কথা হলো আমি ঘুমালে বার বার হাত,পা ছিটাছিটি, নাক,মুখ, ঘষাঘষি করি আরে এটা ছোট বেলার অভ্যস!!! কিন্তুু আমি বুঝতে পারিনি এই অভ্যসটা এই মানুষটার সামনে পড়বে
আর দেখো তোমার ভাই এতো শয়তান সেইটা ভিডি করে রেখে দিছে ভাবো কত বড় শয়তান,,,,,

আশা: সত্যি

আমি: হুমম

আশা দৌড়ে যেতেই হাত টেনে ধরলাম

আমি: কয় যাও

আশা: ভিডিও দেখতে

আমি: এই না প্লিজজ আশা শোন

কে শোনে কার কথা আশা দৌড়ে উপরে চলে গেলো,,,,,,

মা: আদিবা

আমি: যায় মা,,,,

তাড়াতাড়ি করে রান্নাঘরে আসলাম,,,

মা: আজ নিজের হাতে সবাইকে খাবার বেরে দিবে কেমন

আমি: ঠিক আছে মা,,,,,

একটু পর সবাইকে খাবার বেরে দিলাম,,,,,সবাই নিজের মতো খাচ্ছে আর আমি লোকটার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছি,,,,,

মা: আদিবা

আমি: হ্যাঁ মা

মা: তুমিও বসে যাও

আমি: না মা পরে আমি আর আপনি খেয়ে নিবো,,,,

মা: আচ্ছা ঠিক আছে

আয়শা: বাহহ ভারি লক্ষি তো বাই দ্যা ওয়েহ আদিবা ও সরি ভাবি তো আমার যার সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছি শুনলাম সে নাকি তোমার বোনের সাথে রিলেশন ছিলো,,,,( খেতে খেতে বললো)

মিঃ মাসুদ: আয়শা ( ধমক দিয়ে)

আয়শা: সরি পাপা,,,,,

মিঃ মাসুদ: কবে বুন্ধি হবে তোমার কোথায় কি বলতে হয় সেটাও দেখি জানো না,,,,,

আয়শা: সরি বললাম তো পাপা

মিঃ মাসুদ: নেক্সট টাইম এসব যেনো না শুনি ও তোমার বড় ভাবি হয় সম্মান না করতে পারলে অসম্মান করবে না তাহলে খুব খারাপ হবে মাইন্ড ইট,,,,,

আমি: থাক না বাবা বাদ দেন বয়স কম বড় হলে ঠিক বুঝবে,,,,,

আয়শা: ও হ্যালো তোমাকে জ্ঞান দিতে হবে না,,,,,,

আমি: সম্পর্কে আমি তোমার বড় ভাবি হয় তাই একটু তো জ্ঞান দিতেই হবে মাই ডেয়ার ননদীনি

মিঃ মাসুদ: এই তো চৌদুরি বাড়ির বউয়ের মতো কথা,,,,,

আয়শা: একদিনেই এতো পাকামু শুরু বাহহ বাহহ,,,,

আয়শা খাবারটা সেরে উঠে যেতেই হাতটা টেনে ধরলাম,,,

আমি: খাবারটা শেষ করো আগে

আয়শা: ওয়াট

আমি: বসো ( ধমক দিয়ে)

আযশা: বসছি,,,,,

আমি: চুপচাপ খেয়ে নাও,,,,,,,,

সবাই খেয়ে উঠে চলে গেলো,,,,,

মা: এভাবেই সবাইকে এক সাথে বেঁধে রাখে

আমি: চেষ্টা করবো,,,,,

মা: হুমম জানি তুমি পারবে ( গালে হাত দিয়ে)

আমি: দোয়া করবেন মা,,,,,

মা: হুমমমম,,,,,,

_____সন্ধার দিকে রুমে বসে আছি আশা সাঁজিয়ে দিচ্ছে,,,

মা: একটু তাড়াতাড়ি করো সবাই চলে আসবে,,,,,

আশা: আম্মু চিল হয়ে যাবে বেশি সময় লাগবে না,,,,

মা: হুমম তাড়াতাড়ি,,,,

মা চলে যেতেই আশার ফোনটা বেঁজে উঠলো,,,,

আশা: ২ মিনিট প্লিজ একটু আসছি,,,

আমি: হুম ( মাথা নাড়িয়ে,,,)

আশা চলে গেলো আমি দাড়িয়ে মাথায় খোঁপা টা আটকাতে লাগলাম

আমি: উফ হচ্ছে না কেন ধ্যাত

হঠাৎ তখনি লোকটা রুমে আসলো,,,,আমি গিয়ে লোকটা সামনে দাড়ালাম,,,,

লোকটা: কি হয়ছে,,,,

আমি: একটু লাগিয়ে দেন না

লোকটা: কিহহ আমি লাগাবো খোঁপা

আমি: তো!!! আপনি কোথাকার প্রেসিডেন্ট যে খোঁপা লাগাতে পারবেন না

লোকটা: ওয়াট,,,,আমি পারবো না এসব

আমি: ধ্যাত আপনি খুব অনরোমেন্টিক

লোকটা: এক্সিউজমি ম্যাম আমি অনরোমেন্টিক

আমি: না নয় তো কি

লোকটা: ওকে ফাইন আমি অনরোমেন্টিক হ্যাপি,,,,

লোকটা কিছু একটা খুঁজতে লাগলো আমিও পিছন পিছন দৌড়াচ্ছি

লোকটা: প্রবলেম কি

আমি: কিসের

লোকটা: এই যে পিছন পিছন হাঁটছেন

আমি: তো কি করবো এখন তো লাগিয়ে দেন নি,,,,

লোকটা: আপনি পড়ছেন খোঁপা নিয়ে আমার ফোনটা পাচ্ছি না

আমি: ফোন আমি খুঁজে দিবো তবে

লোকটা: তবে কি

আমি: একটা শর্ত এই যে খোঁপা এটা

লোকটা: ওরে খুদা রক্ষা করো,,,( বিড় বিড় করে)

আমি: দেন না প্লিজ প্লিজ (করুনা সরে)

লোকটা: দিচ্ছি চুপটি করে দাড়ান,,,

আমি: সত্যি থ্যাংক ইউ হিহি,,,,

লক্ষি মেয়ের মতো দাড়ালাম লোকটা সুন্দর করে খোঁপাটা লাগিয়ে দিলো,,,,

আমি: শেষ

লোকটা: হুম,,,,

আমি: থ্যাংক ইউ ( হাত ধরে)

লোকটা: এটা কি হলো

আমি: সরি সরি ( জিব্বাই কামড় দিয়ে)

হঠাৎ লোকটা ক্রমগত আমার দিয়ে এগিয়ে আসলো গলাই হাত রাখতেই চোখ বন্ধ করে নিলাম,,,,

লোকটা: বক বক ভালোই করতে পারেন গলার হারটা যে উল্টে ঝুলে আসে হুস নাই

আমি: এই এটা কি হলো,,,,

লোকটা: কি হলো আবার,,,

আমি: ধ্যাত আমি ভাবলাম কিস করবেন কিন্তুু আপনি তো হার নিয়ে পড়লেন ধ্যাত অনরোমেন্টিক একজন মানুষ ভাল্লাগে না,,,,

লোকটা আমার দিকে হা করে তাকিয়ে রয়লো আমি কাঁদো কাঁদো মুখ বানিয়ে আয়নার সামনে দাড়ালাম,,,,,,তখনি আশা রুমে আসলো

আশা: সরি সরি ভাবি লেট হয়ে গেলো,,,,

আমি: ঠিক আছে

আশা: ভাইয়া তুমি এখানে

লোকটা: এমনি,,,,

লোকটা গিয়ে সোয়ায় বসে ফোন টিপতে লাগলো,,,,,

আশা: খোঁপা টা কে লাগালো,,,,

আমি: উনি ( ইশারা করে)

আশা: বাহহ বাহহ

আমি: হুমম,,,,

একটু পর বুয়া এসে ডেকে গেলো নিজে সবাই চলে আসছে,,,,,

আশা: চলো এবার,,,,

আমি: হুমম চলো,,,,

শাড়ির কুচি গুলো মোঠো করে হাঁটা দিতেই লোকটা সামনে পড়লো হা করে লোকটার দিকে তাকিয়ে রয়লাম,,,,,

আশা: ভাবি

আমি: উয়াও

আশা: হা হা,,,,,

আশা হাসতে হাসতে রুম থেকে চলে গেলো,,,,আমি হা করে তাকিয়ে আছি লোকটা হালকা ধাক্কা মেরে পাশ কাঁটিয়ে চলে যেতেই পড়েতে লাগলাম তখনি লোকটা ধরে ফেললো,,,,,,

লোকটা: পাগল নাকি আপনি….

আমি: সরি সরি

লোকটা: সাবধানে চলবেন তো

আমি: হুমমম,,,( লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম)

লোকটা রুমে ডুকতেই ডাক দিলাম

আমি: এই যে শুনছেন

লোকটা: আবার কি

আমি: নিচে যাবেন না

লোকটা: যাবো আপনি যান,,,,

আমি: ঠিকক আছে,,,,বাই দ্যা ওয়েহ

লোকটা: আবার কিহহ,,,,,

আমি: আমাদের তো বিয়ে হয়েছে তাই না

লোকটা: কেন সন্দেহ আছে নাকি

আমি: একদম না,,,তাহলে তো আমরা কাপাল তাই তো

লোকটা: হুম তো

আমি: তো কি আমি যাবো নাকি

লোকটা: হ্যাঁ যাবেন

আমি: আমি যাবো না আপনি ও সঙ্গে যাবেন চলুন,,,,

লোকটার হাতটা শক্ত করে ধরে হাঁটা দিলাম!!! লোকটা আমার কান্ড দেখে হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,,

( চলবে)