মানহা পর্ব-০৪ এবং শেষ পর্ব

0
358

#মানহা
#মেঘাদ্রিতা_মেঘা
#পর্ব_৪ (শেষ)
হ্যালো!যার ফোন থেকে আমি কল দিয়েছি আপনি কি তার ওয়াইফ বলছেন?আপনার নাম্বার টা তার ফোনে “বউপাখি” নামে সেভ করা।সেই জন্য বলছি।
_জ্বী আমি তার ওয়াইফ বলছি।
_আপনি এই মুহূর্তে হসপিটালে চলে আসুন।
আপনার বর বাইক এক্সি ডেন্ট করেছে।
তার অবস্থা খুবই খারাপ।

ফোন টা পাওয়ার সাথে সাথে আমি যেন আর কোন কিছু ভাবতে পারছিলাম না।
কি হলো এটা।

আমি মা এবং মানহাকে নিয়ে চলে গেলাম হসপিটালে।
যিনি আমাকে ফোন দিয়েছেন তিনি বললেন,
ডাক্তার বলেছেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
এখন ট্রিটমেন্ট চলছে।

আমরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছি।
আর দোয়া করছি ওর যেন কিছু না হয়।
মনে পড়ছিলো আমাদের দুই বছরে ঘটে যাওয়া সমস্ত স্মৃতি।

মানুষ টা জানতো আমি মন প্রাণ উজাড় করে কল্পকে ভালবেসেছি।
তবুও আমার প্রতি ছিলো তার অগাধ বিশ্বাস।
কোন দিন এমন কোন কথা বলেনি যাতে আমি আঘাত পাই।
আমার একটু ঠান্ডা বা জ্বর হলে পাগল হয়ে যায় এই মানুষ টা।
ওর একটা ছেলে বাবুর অনেক শখ।ও সব সময় বলে,মানহা তো আছেই,আমাদের মেয়ে।এখন আমাদের একটা ছেলে চাই আমি।
তাহলেই আমাদের পরিবার কমপ্লিট।

কল্প যখন আমাকে ধোকা দিয়ে বিয়ে করে ফেলেছিলো।
তখন আমি দিন রাত শুধু কান্না করতাম।
মানুষ টা আমাকে আগলে রেখেছিলো তখন।
ও না থাকলে হয়তো কোন একদিন আমি সুই*সাই*ড ই করে ফেলতাম।এতটা ভালবেসেছি আমি কল্পকে।

সেই যে কষ্টের সময় হাত টা ধরেছে,আর ছাড়েনি।
এখন ছেড়ে দিলে আমি আর মানহা কি করবো?
আর ওর মা?
ওর মা তো পাগল হয়ে যাবে।
স্বামী হারা মানুষ টা এক মাত্র সন্তান হারানোর শোক সে সইতে পারবেনাতো।

আমাকে আর আমার মেয়েকে কে আগলে রাখবে?

ডাক্তার কিছু ক্ষণ পর এসে বললেন,পেসেন্ট আপনার কি হয়?পেসেন্টের রক্ত লাগবে।
বিয়ের এত গুলো দিন হয়ে গেছে,অথচ আমি ওর রক্তের গ্রুপ টাই জানিনা।
কখনো জিজ্ঞেস করাও হয়নি।

আমি তড়িঘড়ি করে বললাম,পেসেন্ট আমার হাজবেন্ড।
ওর রক্তের গ্রুপ কি ডাক্তার?

_ডাক্তার বললেন O+

আমি ডাক্তারকে বললাম,আমার রক্তের গ্রুপও O+ যত রক্ত লাগে আপনি আমার থেকে নিন।
তবুও আপনি ওকে ভালো করে দিন।
প্লিজ ডাক্তার।

ডাক্তার বললেন,ঠিক আছে।
আপনার ব্লাড টেস্ট করে দেখছি।
আসুন।

এরপর আমি রক্ত দেই।আর দোয়া করতে থাকি আদ্রিশ এর যেন কিচ্ছু না হয়
ও যেন সুস্থ হয়ে যায়।

মনে পড়ে গেলো আদ্রিশের সাথে কাটানো কিছু মুহূর্তের কথা।
কল্প আমাকে ছেড়ে যাবার পর আমি পড়ালেখাই বন্ধ করে দিয়েছিলাম।
কলেজেও যেতাম না।

একদিন আদ্রিশ আমাকে ফোন দিয়ে বল্লো,
আজ কলেজে চলে এসো।
দেখবে ভালো লাগবে।
আর কত গৃহবন্দী হয়ে থাকবে বলো তো?
আমি বললাম,ভালো লাগছেনা।
কলেজে আসলে ওর স্মৃতি মনে পড়বে।
ওর স্মৃতি আমায় আরো কষ্ট দিবে।
আদ্রিশ আমাকে বল্লো,তুমি যদি না আসো তাহলে আমিও আর কোন দিন কলেজে পা রাখবোনা।
এক্সামও দিবোনা।
দেখে নিও।

ওর জেদের কাছে হার মেনে আমি কলেজে যাই সেদিন।
গিয়ে দেখি ও আমাদের ছাত্র ছাত্রী মিলনায়তন কক্ষ টাকে পুরো বেলুন দিয়ে সাজিয়ে ফেলেছে।
এত্ত সুন্দর করে সাজিয়েছে।
আর দেয়ালে বড় করে বিভিন্ন রঙের কাগজ দিয়ে লিখা Happy Birthday Megha!

আমাদের সব বন্ধু বান্ধবী উপস্থিত ছিলো।
আমি কক্ষে ঢুকতেই সবাই এক সাথে বলে উঠে হ্যাপী বার্থডে মেঘা।
ছেলেটা আমার মন ভালো করার জন্য কত কিছুইনা করেছে।
সব সময় চেয়েছে আমি যেন হাসি খুশি থাকি।

স্মৃতি গুলো চোখের সামনে ভাসছে।
আমি চিৎকার করে কাঁদছি।
কল্প আমার প্রথম ভালবাসা হলেও এই মানুষ টার জন্য কখন যে আমার মনে এত মায়া জন্মেছে আমি তা টেরও পাইনি।
আজ এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন না হলে হয়তো বুঝতেও পারতাম না কোন দিন,আদ্রিশ আমাকে কতটা মায়ায় বেঁধেছে।

আমি কাঁদছি তো কাঁদছিই।
মা আমার মাথায় হাত রেখে শান্তনা দিচ্ছেন।
কান্না করোনা মা!
আদ্রিশের কিচ্ছু হবেনা।
আমাদের দোয়া আল্লাহ বিফলে যেতে দিবেন না।

৫ বছর পর…

মা ও মা,কই তুমি?

_এই তো আমি রান্না ঘরে।
_তুমি এখানে?আমি সব ঘরে তোমাকে খুঁজতেছি।
_আজ এত তাড়াতাড়ি স্কুল থেকে চলে এলি যে?
_আজ তাড়াতাড়ি স্কুল ছুটি হয়ে গেছে।
_ওহ,আচ্ছা যা ফ্রেশ হয়ে নে।
আমি খাবার নিয়ে আসছি।
_আচ্ছা মা বলোতো আমি কার মত দেখতে হয়েছি?
_কেন?আজ হঠাৎ এই কথা।
_আরে জানোনা,ক্লাসের সবাই আমাকে বলে আমি নাকি তোমার,পাপার কারো মতই হইনি।
তাহলে আমি কার মত হয়েছি মা?
_তুই কল্পর মত হয়েছিস।
_কার মত?
_না মানে,আমার কল্পনার মত।
আমি সব সময় চাইতাম আমার তোর মত একটা মেয়ে হোক,তাই আল্লাহ তোকে আমার বুকে পাঠিয়েছেন।
তুই কারো মত হোস নি,তুই তোর মত হয়েছিস।
এর পর থেকে কেউ যদি বলে,তাহলে তাকে বলবি,আমি আমার মত হয়েছি।

_আর আমার নাম টা কে রেখেছে মা?
_তোর মা রেখেছে।
মানে আমি রেখেছি।
_মা মানহা মানে কি?
_মানহা মানে হচ্ছে আল্লাহর উপহার।
তুই আমার আল্লাহর দেয়া শ্রেষ্ঠ উপহার।
তাই আমি তোর নাম রেখেছি মানহা।

_আচ্ছা মা আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি।লাভ ইউ মা।
আর শোনো মা।কাল আমাকে মার্কেটে নিয়ে যাবে ঠিক আছে?
আমি দুটো ড্রেস কিনবো।

_লাভ ইউ টু মা।
কাল না মা,অন্য দিন।
কাল আমরা এক জায়গায় যাবো কেমন?
_কোথায় যাবো মা?
_কালকে গেলেই দেখোনে।
_আচ্ছা।

মানহা এখন অনেকটা বড় হয়েছে।
স্কুলে পড়ে ও।
দেখতে ঠিক কল্পর মত হয়েছে।
সেই চোখ সেই হাসি।

পরের দিন সকালে,

_আদ্রিশ এই আদ্রিশ ওঠো।
সকাল হয়ে গেছে।
তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নাও।
আমি নাস্তা দিচ্ছি।
তারপর তো বের হতে হবে।
_হ্যাপী ম্যারেজ এ্যানিভার্সারি মেঘা।
_হুম।
ওঠো তাড়াতাড়ি।
_মন খারাপ লাগছে নাহ?
কান্না করোনা।
তুমি যাও আমি আসছি।

আমি নাস্তা দিলাম,মানহা,মা, আদ্রিশ নাস্তা করে নিলো।
ও হ্যাঁ আমাদের একটা ছেলে হয়েছে।দুই বছর বয়স ওর।ওর নাম রেখেছি আমি রাজ্য।
যখন কল্প আমার জীবনে এসেছিলো।তখন আমি ভেবে রেখেছিলাম আমার যদি ছেলে হয় তাহলে ওর নাম আমি রাজ্য রাখবো।
তবে আমার ইচ্ছে ছিলো আমাদের প্রথম সন্তান মেয়ে হবে।

যাইহোক,

সবার নাস্তা খাওয়া শেষ হলে রাজ্যকে ওর দাদুর কাছে রেখে আদ্রিশ আর মানহাকে নিয়ে আমি বেড়িয়ে পরলাম।

আমার পা যেন কোন ভাবেই চলছেনা।
_মেঘা!
ঠিক আছো তুমি?
_হুম চলো।

আমরা একটা রিক্সা করে চলে আসলাম।
এইতো এসে গেছি আমরা।
এসে গেছি আমরা কল্পর কাছে।
এইতো কল্প শুয়ে আছে ওখানে।
গভীর নিদ্রায় মগ্ন ও মাটির ঘরে।

আমার বুকের ভেতর টা কেমন যেন করছে।
দু চোখ বেয়ে পানি পড়ছে অঝোরে।

_মা আমরা এখানে কেন এসেছি?

আমি কোন কথা বলতে পারছিনা।
দম বন্ধ হয়ে আসছে আমার।

_মা আমরা আজ তোমার বাবার কাছে এসেছি।(আদ্রিশ)
_বাবা?কোথায় বাবা?তুমিই তো আমার পাপা।
_হ্যাঁ মা আমি তোমার পাপা।আর এখানে যিনি শুয়ে আছেন তিনি তোমার বাবা।
_আমার বাবা কি ম*রে গেছে পাপা?তাই এখানে শুয়ে আছে?
_হ্যাঁ মা আল্লাহ তোমার বাবাকে নিয়ে গেছেন তার কাছে।
আরেকটু বড় হও তারপর তুমি আরো সব বুঝতে পারবে।

এখন তুমি তোমার মায়ের সাথে এখানে থাকো।
দোয়া করো তোমার বাবার জন্য।
আমি কাছে গিয়ে দোয়া করে আসি।
আদ্রিশ কল্পর কবর জিয়ারত করছে।

৫ বছর আগে সেদিনের সেই এক্সিডেন্টে আদ্রিশ বেঁচে গেলেও,
দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে সেদিন চলে যায় কল্প।

হ্যাঁ সেদিন আদ্রিশ আমার জন্য সারপ্রাইজ প্ল্যান করেছিলো।
ও চেয়েছিলো সেদিন সারাদিন আমাদের এ্যানিভার্সারির কথা ভুলে থাকার অভিনয় করে রাতের বেলা ও আমাকে সারপ্রাইজ দিবে।

তাই গিয়েছিলো কিছু ফুল, কেক আর অন্যান্য সব আনতে।
তখনই রাস্তায় আদ্রিশের সাথে কল্পর দেখা।
কল্প আদ্রিশকে উইশ করে।
আদ্রিশ কল্পকে বলে,চল আমাদের বাসায় আজ।
আমি একটু সারপ্রাইজ প্ল্যান করেছি মেঘার জন্য।
এক সাথে সবাই মিলে কেক কাটবোনে।
আর মানহাকেও দেখে আসিস নে।
তাছাড়া বাইকে করে আমার কেক আর ফুল গুলোও একা নিতে কষ্ট হবে।
তুই গেলে ভালোই হবে।

কল্প রাজি হয়।
আদ্রিশ বাইক চালায়।
কল্প কেক আর ফুল নিয়ে ওর পেছনে বসে।

কিছু দূর আসতেই হঠাৎ একটা ট্রাক সব কিছু শেষ করে দেয়।

আদ্রিশ একদিকে পড়ে যায়,আর কল্প আরেক দিকে।
আদ্রিশের ফোন টা কিভাবে যেন ছুটে গিয়ে কল্পর পাশে গিয়ে পড়ে।

তাই আদ্রিশের ফোন থেকে যে কল করেছিলেন সে ভেবেছিলেন কল্পর ফোন ওটা।
আর তাই তিনি ফোনে জানিয়েছিলেন আপনার বরের অবস্থা খুব খারাপ।

রক্ত কল্পরই লেগেছিলো।
আমিই রক্ত দিয়েছিলাম।
ট্রিটমেন্ট ও চলছিলো,তখনও আমরা জানতাম না ওটা আদ্রিশ নয় ওটা কল্প।

যখন নাকি ডাক্তার শেষ পর্যায়ে এসে আমাকে ডেকে বললেন,সরি আমরা পারলাম না।
উনার হাতে বেশি সময় নেই।
চাইলে আপনারা তার সাথে দেখা করতে পারেন।

তখন আমি দৌড়ে কল্পর বুকে গিয়ে পড়ি।
ও বেডে শুয়ে আছে।আমি কান্না করতে করতে বলতে থাকি,আদ্রিশ এ কি হয়ে গেলো তোমার।তোমার কিছু হয়ে গেলে আমাকে আর মানহাকে কে আগলে রাখবে।
আমি তখন ওর মুখ টাও খেয়াল করিনি।
সেই মুহূর্তে কল্প আমার মাথায় হাত রেখে বল্লো,
কলিজা!
আদ্রিশ ই তোমাদের দেখে রাখবে।
ওর কিছু হবেনা।

হঠাৎ আমি চমকে উঠলাম।
কল্প আমাকে কলিজা বলে ডাকে।
আমি ভালো মত এবার তাকাতেই দেখি ও আদ্রিশ না কল্প।

_কল্প তুমি?
_হ্যাঁ আমি।
আমার হাতে তো বেশি সময় নেই।
শেষ বারের মত একটা কথা বলে যেতে চাই,
আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি কলিজা।
আর সেদিন আমার কোন দোষ ছিলোনা।
আমি তোমার কাছে আসতেছিলাম,ঠিক সেই মুহূর্তে বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েন।
আর তিনি বলেন,আমি যদি তার বন্ধুর মেয়েকে বিয়ে না করি,তাহলে সে ডাক্তারের কাছে যাবেন না।
আর তার অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যাচ্ছিলো।
তাই আমি বাধ্য হয়ে তাকে কথা দেই।
আর সেই কথা মত আমি বিয়ে করি।
সন্তান হয়ে জন্মদাতা পিতাকে মৃত্যুর মুখে কিভাবে ঠেলে দেই বলো?
কিন্তু কি কপাল আমার দেখো,বিয়ের পরপরই বাবা মারা যান।
আর তোমাকেও আমি চিরদিনের মত হারিয়ে ফেলি।
তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও।
আর আমার মানহাকে দেখে রেখো।
তোমার অনেক ইচ্ছে ছিলোনা,আমাদের প্রথম সন্তান মেয়ে হবে।
আমি তোমায় মেয়ে দিয়ে গেলাম।
আমি আমার কথা রেখেছি দেখেছো?
সুখে থাকো তোমরা।

আমি কল্পর হাত ধরে চিৎকার করে কাঁদতে থাকি।
আর বলতে থাকি কিচ্ছু হবেনা তোমার,কিচ্ছু হবেনা।

_আমার শেষ একটা ইচ্ছে পূরণ করবে মেঘা?
_বলো,
_আমাকে একটু জড়িয়ে ধরবে?

আমি কল্পকে সঙ্গে সঙ্গে জড়িয়ে ধরি।
_আমি সব সময় বলতাম না,আমার ম*রণ যেন তোমার বুকে হয়।
আল্লাহ হয়তো তা কবুল করেছেন।
ভালবাসি কলিজা।

_কল্প,কিচ্ছু হবেনা তোমার। কিচ্ছুনা বুঝছো?
কিচ্ছু হবেনা।
তুমি সুস্থ হয়ে যাবে দেখো।

কল্প!কথা বলছো না কেন তুমি?
এই কল্প!
কল্প।
কথা বলো।
কথা বলছোনা কেন তুমিইইইই?
কল্পঅঅঅঅঅ..
কল্প আর কথা বলেনা।
কল্প ঘুমিয়ে গেছে।
চিরদিনের মত ঘুমিয়ে গেছে।

আমি চিৎকার করে কল্পকে ডাকি।
কল্প আর ওঠেনা।
আমার আর ওকে বলা হয়না,কল্প!
আমিও যে তোমায় ভালবাসি।
ভীষণ ভালবাসি।

কিছুক্ষণ পর মা আর আদ্রিশ কল্পর এখানে আসে।

ডাক্তার যখন আমাকে পেসেন্টের সাথে দেখা করতে বলেছেন,
তখন মা মানহাকে নিয়ে দোকানে গিয়েছিলেন।মানহাকে কিছু খাবার কিনে দিতে।
যখন মা ওকে নিয়ে আসছিলেন,তখন একজন নার্স মাকে বলেন,বাইকে এক্সিডেন্ট করা রোগীর আত্মীয় কি আপনি?
উনার জ্ঞান ফিরেছে,চলুন।

মা মানহাকে নিয়ে যান।
গিয়ে দেখেন আদ্রিশ শুয়ে আছে।
ওর এত ক্ষণ জ্ঞান ছিলোনা।
এখন জ্ঞান ফিরেছে।

আদ্রিশ এসে দেখে কল্প আর নেই।
আদ্রিশ ও কান্না করতে থাকে।
কিন্তু কল্প আর ফিরে না।
ও যে না ফেরার দেশে চলে গেছে।
যেখানে গেলে কেউ আর কোন দিন ফিরে আসেনা।


আদ্রিশের কবর জিয়ারত করা শেষ।
প্রতি বছর এই দিনে আদ্রিশ আমাকে এখানে নিয়ে আসে।
আমরা বাসায় ফিরে যাচ্ছি।
আদ্রিশ আমাকে আর মানহাকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
আমি আবার পেছন ফিরে কল্পর কবরের দিকে তাকালাম।
মনে হলো,কল্প আমাকে ডেকে বলছে,
কলিজা!
ভালো থেকো হুম।
ভালবাসি।

(সমাপ্ত)

#কখনো কখনো সামান্য ভুল বুঝাবুঝিতেও সম্পর্কের মধ্যে অনেক দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়।
#ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।