মাফিয়া ক্রাশ বর পর্ব-১২

0
2297

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা : মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ১২

অভিদ রুহিকে কোলে তুলে বাইরে বেড়িয়ে যায়। রায়হান সব বডিগার্ড নিয়ে বেড়িয়ে আসে। অভিদ রুহিকে নিয়ে পেছনে বসে আর রায়হান ড্রাইভিং সিটে বসে।

আশিক অস্থির হয়ে বলে
” স্যার আপনাকে হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। উঠুন। ”

আখিল দাতে দাত বলে
” কোথাও যাবো না আমি। আমার রুহিকে চাই। রুহিকে যে করেই হোক চাই। ”
বলে হনহন করে বেড়িয়ে গেলো। আশিকও অসহায়ের মতো পেছন পেছন গেলো।

অভিদ খাটে হেলান দিয়ে বসে আছে। তার তার দৃষ্টি এখন খাটের মাঝে অচেতন হয়ে শুয়ে থাকা মেয়েটার উপর। রুহিকে হসপিটালে না নিয়ে অভিদ ফ্যামিলি ডক্টরকে বাসায় ডেকে নিয়েছে। ডক্টর রুহির মাথায় ব্যান্ডেজ করে দিয়েছে। মারার কারণে গালে আর ঠোটের কোণ ফুলে গিয়েছে। ডক্টর গালের ব্যাথার জন্য, মাথার ক্ষতটার জন্য কয়েকটা মেডিসিন দিয়েছে। আর বলেছে কয়েকদিন রেস্টে থাকতে যাতে মাথার ক্ষত টা ঠিক হয়ে যায়।

এখন রাত তিনটা বাজে। অভিদ রুহিকে বাসায় এনেই মিশুকে ফোন করে বলে দিয়েছে যে রুহিকে পেয়েছে। অভি বসে বসে কি যেন ভাবছিলো ভাবনার মাঝেই খেয়াল করলো রুহি চোখ খোলার চেষ্টা করছে। অভিদ সোজা হয়ে উঠে বসে।

রুহি চোখ খুলে পাশে অভিদকে বসে থাকতে দেখে সব মনে পরে যায়। রুহি তাড়াহুড়ো করে উঠতে নিলেই অভিদ রুহিকে ধরে ধমক দিয়ে বলে
” এভাবে লাফাচ্ছো কেনো চুপ করে শুয়ে থাকো। ”
রুহি শুয়ে ঢুকরে কেদে দেয়। অভিদ রুহিকে হালকা উঠিয়ে রুহির মাথাটা নিজের বুকের সাথে ঠেকিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।

রুহিকে সান্তনা দিয়ে বলে
” অনেক হয়েছে আর কেদো না। তুমি এখন আমার কাছে নিরাপদ আছো। বেশি কাদলে কিন্তু অসুস্থ হয়ে যাবে। অসুস্থ হয়ে গেলে কালকে আর আমাদের বিয়ে হবে না। ”

হঠাৎ করে রুহি অভিদকে হালকা ধাক্কা দিয়ে নিজের থেকে দূড়ে সরিয়ে দিয়ে কান্না করে বলে
” করবো না আমি আপনাকে বিয়ে। আপনি খুব খারাপ। আপনি আমাকে ভালোবাসেন না শুধু রুপের মোহে পরে বিয়ে করছেন। খুব খারাপ আপনি। মাফিয়ারা কখনো ভালো হয় না।”

অভিদের রাগে মাথার রগ ফুলে উঠেছে। অভিদ নিজেকে কন্ট্রোল করার জন্য উল্টো ঘুরে কপালে আঙুল ঘষতে থাকে। রুহি কান্না করতে করতে
বলে
” আপনি খুব খারাপ তাই তো আমাকে বলে ছিলেন আমি বিয়েতে রাজি না হলে আমার পরিবারকে আপনি শেষ করে দেবেন। একটা পাষাণ আপনি !! আপনি আমাকে ভালোই বাসেন না।

অভিদ রেগে তেরে এসে রুহির মুখ চেপে ধরে। রুহি ব্যাথায় আহ করে উঠতেই অভিদ রুহির মুখ ছেড়ে দিয়ে দেয়ালে ঘুষি মারে। রুহি কেপে উঠে। অভিদ অসহায় গলায় বলে
” আমার ভালোবাসা কেনো বোঝোনা তুমি ?? আমি তোমাকে ভালোবাসি। i love you. I love you very much. ” রুহি অভিদের দিকে তাকিয়ে দেখে অভিদের চোখ থেকে পানি পরছে।

রুহি কাঁদোকাঁদো গলায় বলে
” তাহলে আপনি আমাকে ওই পেপারে সাইন করতে কেনো বলেছিলেন ?? ওটা বিয়ের কাগজ ছিলো সেটা জেনেও আপনি কিছু করেন নি। আরও আমাকে সাইন করতে বলেছিলেন ” রুহির কথা শুনে অভিদ কিছুক্ষণ অবাক হয়ে তাকিয়ে থেকে পরে ফিকফিক করে হেসে দেয়।

রুহি ভ্রু কুচকে বলে
” পাগল হয়ে গিয়েছেন নাকি ?? হাসছেন কেনো। ”
অভিদ হাসি থামিয়ে রুহির পাশে বসে রুহির কপালে চুমু দিয়ে বলে
” বুদ্ধু !! ওটা বিয়ের কাগজ ছিলো না। ওটা একটা
অপ্রয়োজনীয় কাগজ ছিলো। তাইতো আমি তোমাকে সাইন করতে বলেছি। নাহলে তোমার কি মনে হয় আমার রুহিকে কেউ আমার কাছ থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবে আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো ?? ”

রুহি অবাক হয়ে বলে
” মানে ?? ওটা তো বিয়ের কাগজই ছিলো। আপনি দেখেন নি ভালো করে। ”

অভিদ হালকা হেসে বলে
” না ওটা বিয়ের কাগজ ছিলো না। আখিল যখন বলেছিলো ও তোমাকে বিয়ে করবে এখনি, তখন রায়হান চুপিসারে বডিগার্ডকে ইশারা করতেই সে বাইরে থেকে কিছু কাগজ এনে রায়হানের হাতে দেয়। আর রায়হান কাগজ গুলো বিয়ের কাগজের জায়গায় রেখে বিয়ের কাগজ গুলো সরিয়ে বডিগার্ডের কাছে দিয়ে দেয়। আশিক রা সবাই আখিলের দিকে তাকয়ে থাকায় কেউ খেয়াল করেনি তবে উকিল আর হুজুর টা দেখেছিলো রায়হান তাদের গান দিয়ে ভয় দেখিয়েছে। ”

রুহি হা করে তাকিয়ে আছে। অভিদ রুহিকে কাছে এনে হালকা করে জড়িয়ে ধরে।রুহি ঘাপটি মেরে বসে থাকে। কিছুক্ষণ পরে অভি রুহিকে সোজা করে বসিয়ে বলে
” একটু বসো আমি তোমার খাবার নিয়ে আসছি। তোমার খাবার খেয়ে মেডিসিন নিতে হবে। ” অভি উঠতে নিলেই রুহি পেছন থেকে হাত ধরে ফেলে।

অভি পেছন ঘুরে রুহির দিকে তাকাতেই রুহি বলে
” খাবার আনবেন না। আমার মুখ ব্যাথা করছে এখন খেতে পারবো না আমি। ”

অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” তুমি চুপ করে বসো আমি আসছি ” রুহি অভিদের হাত ছেড়ে দেয়। অভিদ রুম থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণ পরে অভি আসে আর একজন মেয়ে সার্ভেন্ট খাবার নিয়ে আসে। সার্ভেন্ট খাবার রেখে চলে যায়।

অভিদ রুহিকে বলে
” তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো ” অভিদ রুহিকে ওয়াসরুম পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসে। রুহি ফ্রেশ হয়ে আসতেই অভিদ আবার রুহিকে এনে বসিয়ে দেয়। রুহিকে খাটে হেলান দিয়ে বসিয়ে সুপের বাটি নিয়ে রুহিকে আস্তে আস্তে খাইয়ে দিতে থাকে। রুহিকে খাবার খাইয়ে মেডিসিন খাইয়ে দিয়ে বাইরে যায়।

কিছুক্ষণ পরে এসে রুহির পাশে বসতেই রুহি মিনমিন করে বলে
” আমাকে বাসায় দিয়ে আসবেন কখন ?? ”
অভিদ গম্ভীর গলায় বলে
” বাড়ি যেতে হবে না আজকে। এখানেই থাকবে।”

রুহি নাকচ করে বলে
” না আমি এখনি যাবো। আমাকে দিয়ে আসুন। কালকে বিয়ে আর আজকে আমাকে এই বাড়িতে কেউ দেখলে কি না কি মনে করবে ?? আমি এখানে থাকতে চাই না ”
অভিদ নিশ্বাস ফেলে বলে
” ঠিকাছে চলো। ”

বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে অভিদ রুহিকে বলে
” মিশুকে ফোন দিয়ে বলে দিয়েছি দরজা খুলে রাখতে। মিশু ওয়েট করছে।”

রুহি একবার বাড়ির দিকে তাকিয়ে অভিদ কে ভয়ে ভয়ে বলে
” ওরা জিজ্ঞেস করলে আমি কি বলবো। আর মা – বাবাকে কি বলবো আমি ”

অভি রুহির হাতের উপর হাত রেখে বলে
” চিন্তা করো না আমি সকালে আসবো সবার সাথে কথা বলবো আর তুমি এখন রুমে গিয়ে সোজা ঘুমিয়ে পরবে। ওকে ?? ”
রুহি মাথা মেড়ে হ্যা বলে গাড়ি থেকে নেমে পরে। অভিদ কিছুক্ষণ রুহির দিকে তাকিয়ে থেকে গাড়ি নিয়ে চলে যায়। অভিদের গাড়িটা চোখের অদৃশ্য হতেই রুহি ভেতরে যায়।

দরজার সামনে মিশুকে গালে হাত দিয়ে বসে থাকতে দেখে রুহি স্মিত হাতে। রুহি গিয়ে মিশুর সামনে দারায়। মিশু মাথা উঠিয়ে রুহির দিকে তাকিয়ে লাফিয়ে দাঁড়িয়ে পরে। অন্ধকারে রুহির মুখটা ভালো করে দেখতে পেলো না। মিশু টাইট করে রুহিকে জড়িয়ে ধরে।
রুহি দুষ্টুমি করে বলে
” আরে একটু আস্তে ধর নাহলে চাপা খেয়ে মারাই যাবো। ”

মিশু রুহিকে ছাড়িয়ে ধমক দিয়ে বলে
” একটা থাপ্পড় মারবো বেয়াদব মেয়ে। কোথায় চলে গিয়েছিলি আমাদের না বলে ?? জানিস আমরা কতো চিন্তা করছিলাম ?? অভিদ ভাইয়া ছিল বলে নাহলে আজকে সবাই চিন্তা করতে করতে মরেই জেতাম। ”

রুহি মিশুকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকে দরজা লাগিয়ে বলে
” আচ্ছা বাবা এখন আর চিন্তা করতে হবে না। মা – বাবা কোথায় ”

মিশু রুমের দিকে যেতে যেতে বলে
” ভাইয়া বলেছিলো কাউকে জানাতে না। জানালে চিন্তা করবে তাই আমরা ছাড়া এখন পর্যন্ত আর কেউ জানে না যে তুই হারিয়ে গিয়েছিলি তাই নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। ”

রুহি বুকে হাত দিয়ে শ্বাস ছেড়ে বলে
” উফফ ভালো করেছিস। আমি ভেবেছিলাম আমি আসতেই সবাই আমাকে ধরে বসবে। ”
রুহি আর মিশু রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দেয়। রুহি রুমের লাইট জালাতেই দেখে ওর খাটে সবাই বসে আছে। নিলা, নিলয়, জিহান, রাইমা ছাড়া আর কেউ নেই। রাইমা ঘুমিয়ে পরেছে।

রুমের লাইট জালানোতে সবাই হাতের মোবাইল রেখে দরজার দিকে তাকায়। সবাই রুহির দিকে তাকাতেই দেখতে পায়। রুহির মাথায় ব্যান্ডেজ, গাল দুটোতে অসংখ্য আগুলের ছাপ, লাল হয়ে ফুলে আছে, ঠোটের কোণা কাটা। সবাই রুহির এই অবস্থা দেখে আতকে উঠে। মিশু চিৎকার করতে গেলেই রুহি মুখ চেপে ধরে।

মিশু রুহির হাত ছাড়িয়ে ভয় নিয়ে বলে
” এসব কি রুহি !! তোর কি হয়েছে ?? এই অবস্থা কেনো তোর। “মিশু রুহির গালে হাত রাখতেই রুহির গাল জ্বলে উঠে আর রুহি মৃদু চিৎকার দিয়ে মিশুর হাত সরিয়ে দিয়ে চোখ কুচকে বলে
” ব্যাথা করে ধরিস না। ”

নিলা কাঁদোকাঁদো মুখ করে বলে
” এই অবস্থা কেনো তোর। ”

জিহান রুহির কাছে এসে রুহির কাধে হাত রেখে রেগে বলে
” কিরে কিছু বলছিস না কেনো ??? কিভাবে হয়েছে এসব !! তোকে এভাবে কোন জানোয়ার মেরেছে ??”

রুহি আস্তে করে এসে বিছানায় শুয়ে বলে
” আমার অনেক ঘুম পেয়েছে আমি ঘুমাচ্ছি। উনি বলেছেন সকালে এসে সবার সাথে কথা বলবে। তোমরা গিয়ে ঘুমিয়ে পরো। ”

নিলয় এসে রুহিকে টান দিয়ে উঠিয়ে বসিয়ে বলে
” মানে কি আমরা কি এতোক্ষণ ওয়েট করবো নাকি। কি হয়েছে, কে করেছে সেটা বল। কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলি তুই। ”

রুহি ঘুমে ঢুলু ঢুলু করছে। ঘুম ঘুম কন্ঠে বলে
” ভাইয়া গো। উনি বলেছেন বাসায় এসে আমাকে ঘুমিয়ে পরতে। ডক্টর আমাকে স্লিপিং পিল দিয়েছে আরও কতোগুলো মেডিসিন দিয়েছে। আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে। কালকে কথা বলবো। হুম ” বলে শুয়ে পরে, কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমে তলিয়ে যায়।
জিহানরা হাজারো কৌতূহল নিয়ে ঘুমাতে চলে যায়।

সকাল ৭ টায় বাড়িতে সবাই ছোটাছুটি করছে। এতো সকালে চেঁচামিচি শুনে রুহি বাদে সবাই উঠে গিয়েছে। জিহানরা ভোর রাতে ঘুমানোতে এখন সোফায় বসে ঝিমাচ্ছে।
রুহির মা রুহিকে ডাকতে আসে।রুমে এসে দেখে রুহি ব্ল্যাংকেটের ভেতরে ঢুকে আছে। রুহির আম্মু বিরক্ত হয়ে বলে
” উফফ কে বলবে আজকে এই মেয়েটার বিয়ে !! এমন ভাবে ঘুমাচ্ছে যে বাড়িতে এতো মানুষের চিৎকার পর্যন্ত কানে যাচ্ছে না। কিন্তু পাশের বাসার মানুষরা ঠিকই উঠে গিয়েছে। ”

রুহির আম্মু ব্ল্যাংকেট সরিয়ে দেখে রুহি উল্টো পাশ ফিরে শুয়ে আছে।চুল গুলোও অগোছালো হয়ে আছে যার কারনে ব্যান্ডেজ টা দেখতে পেলো না। রুমির আম্মু রুহির গায়ে হাত দিয়ে ডাক দিতেই খেয়াল করে রুহির শরীর গরম হয়ে আছে।

রুহির আম্মু চিন্তিত হয়ে বলে
” কি হলো রুহির শরীর এতো গরম কেনো। জ্বর উঠেছে নাকি। এমন একটা ভালো দিনেই অসুস্থ হতে হলো !! রুহি !! রুহি মা !!”

রুহি এবার সামনের অয়াশ হয়। রুহির আম্মু রুহিকে দেখে জোড়ে চিৎকার করে উঠে। চিৎকার শুনে বাড়ির সবাই যার যার কাজ ফেলে দৌড়ে আসে রুহির রুমে। রুহির আব্বু এসে রুহির আম্মুকে বলে
” কি হয়েছে এতো জোড়ে চিৎকার করলে কেনো।”
রুহির আম্মু রুহির দিকে ইশারা করে। রুহির আব্বু রুহিকে দেখে বুক কেপে উঠলো।

—————-
ড্রইংরুমে সবাই বসে আছে। পুরো ড্রইংরুম জুড়ে নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে। রুহির আম্মু বাদে সবাই চুপ করে আছে,রুহির আম্মু কান্না করছে মেয়ের অবস্থা দেখে । সামনে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে রাইমা, মিশু, নিলা, জিহান, নিলয়।
রুহির চাচা গম্ভীর গলায় বলে
” তোমরা এতো বড় হয়ে গিয়েছো যে। আমাদের জানানোর প্রয়োজন বলে মনে করলে না !! কালকে আমাদের একবার বলতে পারতে তো নাকি ”

জিহান মাথা নিচু করে বলে
” চাচু সরি ”

রুহির আব্বু কপালে হাত রেখে বলে
” এখন সরি বললে কি সব ঠিক হয়ে যাবে??
আজকে মেয়েটার বিয়ে আর আজকেই এমন হতে হলো !! এখন অভিদকে কি বলবো ?? আর রুহিকে দেখেতো মনে হচ্ছে ওকে কেউ মেরেছে। অভিদ জানতে পারলে তাহলে কি যে করবে। ”

রুহির বড় মামা বলে
“কিন্তু এভাবে মারলো কে রুহিকে ?? তারউপর রুহিকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়েছিলো। ওকে কি করে নিয়ে গিয়েছে আর কে নিয়ে গিয়েছিলো।??

” ওকে কিডন্যাপড করা হয়েছিলো। ” সবাই দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে অভিদ, রায়হান দাঁড়িয়ে আছে। ওদের দেখে রুহির বাবারা সবাই দাঁড়িয়ে পরলো।

রুহির আব্বু অবাক হয়ে বলে
” তুমি এখানে কি করছো !! তোমাকে কে বলেছে এসব ”

মিশু মাথা চুলকে বলে
” ভাইয়াই তো কালকে রুহিকে খুজে নিয়ে ডক্টর দেখিয়ে তারপর বাসায় দিয়ে গিয়েছে। ”

রুহির আব্বু অবাক হয়ে বলে
” কি !! তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেনো ?? ভেতরে এসে বসো আর কি হয়েছে সেটা বলো। রুহিকে কে কিডন্যাপ করেছিলো। ” অভিদ, রায়হান ভেতরে এসে সামনের সোফায় বসতে বসতে বলে
” আংকেল আপনারাও বসুন ” রুহির আব্বুরা সবাই বসে।

অভিদ হালকা হেসে বলে
” আমি আপনাদের সাথে আলাদা ভাবেই বলতাম কিন্তু সবাই জেনে গিয়েছে তাই সবার সামনেই বলছি ” অভিদ কালকের ঘটনা পুরোটা রুহির আব্বুকে বলে।
রুহির আব্বু মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে।

অভিদ মিশুদের দিকে তাকিয়ে বলে
” ওদের আমিই বলেছিলাম কাউকে বলতে না। বললে সবাই চিন্তা করবে। তাই ওরা কাউকে বলেনি। রুহি কোথায় ?? এখন কেমন আছে ??”

এখন যদি পরিবেশটা নরমাল হতো তাহলে এতোক্ষণে সবাই অভিদকে হাসির পাত্র বানিয়ে ফেলতো কিন্তু আজকের পরিবেশটা অন্যরকম তাই কেউ আর সেই মুডে নেই।

রুহির চাচি মন খারাপ করে বলে
” রুহির জ্বর এসেছে। ঘুমিয়ে আছে এখনও। রুহিকে কোনোদিন কেউ মারেনি। মার খেয়ে আজকে রুহি অসুস্থ হয়ে পরে আছে। ”

অভিদ শুকনো মুখে বলে
” কালকে করা ডোজের স্লিপিং পিল দিয়েছিলো তাই এখনও উঠেনি। তবে ১১টার আগে উঠে পরবে। ”

রুহির আব্বু ইতস্ততবোধ করতে করতে বললো
” বলছিলাম আজকে বিয়ের কি হবে ”

অভিদ দাঁড়িয়ে গম্ভীর গলায় বলে
” বিয়ে আজকেই হবে। নাহলে বিয়ে পিছালেই আখিল আবার সুযোগ পাবে। তাই আমি কোনো রিস্ক নেবো না। আপনারা ধীরে সুস্থে সব করুন। রুহিকে ভালো করে খাবার খাইয়ে মেডিসিন দিয়ে দেবেন আর ওকে রেস্ট করতে বলবেন। বাকি সব যেভাবে হওয়ার কথা ছিলো সেভাবেই হবে। ”

রুহির চাচা অভিদের কাধে হাত রেখে বলে
” ঠিকাছে তুমি চিন্তা করো না। আমরা সব দেখে দেখছি।” অভিদ হালকা হেসে মাথা নাড়ালো।

অভিদ আরও কিছুক্ষণ থেকে চলে গেলো। রুহির সাথে দেখা করতে মন চাইলেও সবাই কি বলবে ভেবে আর দেখা করতে পারলো না। অভিদ রায়হানকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে।

চলবে… wait for next part….