মাফিয়া ক্রাশ বর পর্ব-৪৩

0
1720

#মাফিয়া_ক্রাশ_বর
#লেখিকা :মার্জিয়া রহমান হিমা
#পর্ব : ৪৩

অভিদ রুহির দুই কাধে হাত রেখে রুহির কুপালে চুমু দিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যায়। অভিদ যেতেই অনি রুহিকে নিয়ে ভেতরে ঢোকে। দুজন ভেতরে ঢুকতেই মিশু আর নিলা ওদের কাছে আসে। মিশু, নিলা দুজন রুহিকে জড়িয়ে।রুহি হেসে বলে
” আরে ছাড় আর কতোক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকবি ?” মিশু রুহিকে ছেড়ে খুশি হয়ে বলে
” যতোক্ষণ ইচ্ছে ততোক্ষণ থাকবো তুই শুধু চুপ করে থাকবি বুঝলি ??” রুহি মাথা নেড়ে বলে
” হুম সব বুঝেছি। এখন চল ভার্সিটি ঘুরে দেখি। কতোদিন পরে এসেছি।” নিলা মুখ গোমড়া করে বলে
” আর ভার্সিটি ঘোরা। প্রতিদিনই তো একই জায়গা বারবার ঘুরি।” রুহি হেসে বলে
” তুই কি প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে চাস নাকি ?? তাহলে তোকে প্রতিদিন ভার্সিটি চেঞ্জ করতে হবে। এখন চলতো নাহলে ক্লাস শুরু হয়ে যাবে।” তিনজন মাথা নেড়ে হ্যা বলে রুহিকে নিয়ে ভার্সিটির চারপাশে ঘুরতে থাকে। ভার্সিটির ঘন্টা পড়তেই চারজন তাদের ক্লাসে চলে যায়।
রুহি আর মিশু তিনটা ক্লাস করলো। তিন ক্লাসে রুহিকে কোনো টিচার কোনো প্রশ্ন করে যে এতোদিন কেনো আসেনি। টিচাররা এসে রুহির সাথে সুন্দর করে কথা বললো, পা নিয়ে কেয়ারফুল ভাবে চলাফেরা করতে বললো কোনো প্রবলেম হলে টিচারদের জানাতে বললো।সব স্টুডেন্টরা বসে বসে শুধু টিচারদের কাজকর্ম দেখলো। প্রিন্সিপ্যাল স্যার এসে রুহির খোজ নিলো।সাথে যেই টিচার সবাইকে একটু এদিক থেকে সেদিক হলেই কান ধরিয়ে দার করিয়ে রাখে সেও রুহিকে মাথা হাত বুলিয়ে সুন্দর করে পড়া বুঝিয়ে আরো অনেক কিছু বললো সব স্টুডেন্ট হা করে দেখেছে। মিশু আর রুহি শুধু মিটমিট করে হেসেছে। রুহির চতুর্থ ক্লাসের মাঝে অভিদের কল আসে। রুহি ফোন হাতে নিয়ে বসে আছে। একবার ফোনের দিকে তাকায় তো একবার স্যারের দিকে। স্যারের ক্লাসে৪ মাঝখানে চলে যাওয়ার সাহস হলো না রুহির। রুহি অভিদের নাম্বারে ” ami ektu pore aschi. Ekhon sir class koracche. Apni wait korun please.” লিখে মেসেজ সেন্ড করে দেয়। অভিদ মেসেজ সিন করে আর কিছু বললো না দেখে রুহি ফোন রেখে ক্লাসে মনোযোগ দিলো।

অভিদ রুহির মেসেজ দেখে গাড়ি থেকে নেমে ভার্সিটির প্রিন্সিপ্যাল এর রুমে হাটা ধরলো। চারপাশে গার্ড ঘিরে আছে। প্রিন্সিপ্যাল স্যার এর রুমে সামনে আসতেই দরজার সামনে দাঁড়ানো দারোয়ান মাথা নিচু করে দরজা খুলে দেয়। অভিদ ভেতরে ঢুকে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের টেবিলের সামনে দাঁড়ায়। প্রিন্সিপ্যাল স্যার অভিদকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে বলে
” স্যার দাঁড়িয়ে আছেন কেনো ?? বসুন না প্লিজ!!” অভিদ চেয়ার টেনে বসতেই প্রিন্সিপ্যাল স্যার সার্ভেন্টকে ডেকে বলে
” স্যারের জন্য কিছু স্নেক্স আর কফি নিয়ে এসো।” সার্ভেন্ট চলে যেতে নিলেই অভিদ হাতের ইশারা করে থামিয়ে দিয়ে প্রিন্সিপ্যাল স্যারের দিকে তাকিয়ে গম্ভীর গলায় বলে
” আমি এখানে বসে থাকতে আসিনি। আমি রুহি আর মিশুকে নিতে এসেছি কিছু ইম্পরট্যান্ট কাজ আছে।কালকে থেকে সব ক্লাস করবে। কাদের কথা বলেছি চিনতে পেরেছেন তো ??” প্রিন্সিপ্যাল স্যার জোড়ে জোরে মাথা নেড়ে বলে
” জি স্যার অনার্স থার্ড ইয়ার আপনার একমাত্র স্ত্রী, আমাদের ম্যাম। আপনি এখানে বসুন স্যার আমি স্যারকে বলে ওদের নিয়ে আসছি।”
অভিদ চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলে
“নাহ আমিও আপনার সাথে যাচ্ছি। আমি ওদের নিয়ে চলে যাবো। ” প্রিন্সিপ্যাল স্যার মাথা নেড়ে অভিদকে নিয়ে রুহির ক্লাস রুমের দিকে পা বাড়ায়। রুহির ক্লাসের সামনে আসতেই প্রিন্সিপ্যাল স্যার ভেতরে ঢুকে গেলো। অভিদও সাথে ভেতরে ঢুকলো।
প্রিন্সিপ্যাল স্যারকে দেখেই সবাই দাঁড়িয়ে সালাম দিলো। রুহি স্যারের পাশে অভিদকে দেখে অবাক হয়ে গেলো। পাশ থেকে স্টিক নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। প্রিন্সিপ্যাল স্যার রুহির ক্লাসের স্যারের উদ্দেশ্যে বলে
“মিসেস রুহি আর মিস মিশু তোমরা চলে যাও। পরে নোট নিয়ে নিও।” রুহি আর মিশু একে অপরের দিকে তাকিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে অভিদের কাছে এসে দাঁড়াল। অভিদ প্রিন্সিপ্যাল স্যারকে বলে
” থ্যাংকস, ওরা কালকে থেকে ক্লাসে এটেন্ড থাকবে।” প্রিন্সিপ্যাল স্যার মাথা নেড়ে ঠিকাছে বলে।অভদ রুহি আর মিশুকে নিয়ে বেড়িয়ে গেলো। গাড়িতে উঠতেই রুহি বলে
” ক্লাস শেষেই তো আসতামই যাওয়ার কি দরকার ছিলো ??” অভিদ শক্তগলায় বলে
” কেনো গিয়েছি বলে কি তোমার কোনো ক্ষতি হয়েছে নাকি??” রুহি ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলে
” ক্ষতি !! এখানে ক্ষতির কি আছে ?? আমার কি ক্ষতি হবে ?? কিন্তু আমরা যাবোটা কোথায় ??”
মিশু বিরক্ত হয়ে বলে
” উফফ তুইও না !! বেশি কথা বলিস। ভাইয়া যখন আমাদের ক্লাসের মাঝখান থেকে নিয়ে এসেছে তাহলে নিশ্চিই দরকারি কোথাও নিয়ে যাচ্ছে !! তুই এতো প্রশ্ন কেনো করছিস ?? চুপচাপ বসে থাক।” রুহি মুখ ফুলিয়ে বাইরে তাকায়। অভিদ হেসে বলে
” বাহ শালিকা তুমি তো দেখি খুবই বুদ্ধিমান আর ধৈর্যশীল মেয়ে। কিন্তু তোমার ফ্রেন্ডকে দেখো !! প্রশ্নর উপর প্রশ্ন করে যাচ্ছে। একটু শান্তিতে বসতে পারে না।” রুহি নাক ফুলিয়ে অভিদের দিকে তাকায়। অভিদ গলা ঝেড়ে সামনে দিকে তাকায়।

গাড়ি মিশুদের বাড়ির সামনে এসে থামতেই রুহি মিশি দুজন অবাক হয়ে গেলো। মিশু বাড়ির দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে বলে
” ভাইয়া আমরা আমার বাড়িতে কেনো এসেছি ?? এখানে আপনার কিসের কাজ!!” অভিদ গাড়ি থেকে বের হয়ে কোট ঠিক করে বলে
” আছে, আছে অনেক দরকারি কাজ আছে। তোমরা ভেতরে চলো।” বলে বাড়ির দিকে যেতে থাকলো। রুহি মিশুর দিকে তাকিয়ে বলে
” আচ্ছা এখানে কি করবে ??” মিশু নক কামরাতে কামরাতে বলে
” আমি কি করে বলবো !! আমাকে কি বলেছে নাকি ?? বলার কথা তো তোকে !!” রুহি দ্রুত দুই দিকে মাথা নেড়ে বলে
” সত্যি বলছি আমিও জানি না। আমাকে কিছুই বলেনি।” মিশু চিন্তিত হয়ে আর কিছু বলার আগেই অভিদ পেছনে ঘুরে ওদের দিকে তাকিয়ে বলে
” কি হলো এখনো এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো ?? ভেতরে যাবে না নাকি ??” রুহি মাথা নেড়ে মিশুকে নিয়ে এগিয়ে যায়। দরজার সামনে দাঁড়িয়ে একবার কলিংবেল বাজাতেই দরজা খুলে যায়। রুহির বাবা বাদে মিশু,রুহির মা, বাবা, মিশুর চাচা চাচি সবাই দাঁড়িয়ে আছে। রুহি মিশু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে সবাইকে এক সাথে দেখে। কারণ এরা কেউই এই টাইমে বাড়িতে থাকে না। তার সাথে রুহির মাও রয়েছে তাই আরো অবাক হলো। মিশুর মা উৎফুল্ল কন্ঠে অভিদকে বলে
” এসো এসো বাবা ভেতরে এসো। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকলে হবে নাকি।” অভিদ হাসি মুখে বাড়ির ভেতরে ঢুকলো। মিশুর বাবা রুহি আর মিশুকে বলে
” কিরে তোরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো ?? ভেতরে ঢোক !!” রুহি আর মিশুও বাড়ির ভেতরে পা রাখলো। মিশুর মা বাবা সবাই অভিদ আর রুহির আপ্পায়ন করতে ব্যস্ত হয়ে উঠে।মিশুর বাড়ির সবাই ছোট থেকেই রুহিকে খুবই বেশি ভালোবাসে। রুহিকে আদর করে মাথায় করে রাখে। আর মিশু শুধু বসে বসে রুহিকে আদর করা দেখতো।
সবাইকে এতো ব্যস্ত হতে দেখে অভিদ সবাইকে থামিয়ে বলে
” এসব পরে হবে। আমি আগে আসল কথা বলে নেই। আংকেল আন্টি আপনারা বসুন। ” মিশুর মা, বাবা অভিদের সামনের সোফায় বসে পড়লো। মিশুর বাবা বিব্রত বোধ করে বলে
” তুমি কি বলবে বাবা !!” অভিদ কোনোদিকে না তাকিয়ে বলে উঠে
” আসলে আপনাদের সাথে জরুরি কিছু কথা ছিলো তাই এভাবে হুট করেই এসে পরেছি। কাউকে জানাইনি আর আপনাদের কারো নাম্বার ছিলো না এতো তাড়াতাড়ি নাম্বার জোগাড় না করে আম্মুকে বলেছি আপনাদের বলতে যে আমি আসছি। আপনাদের নিশ্চিই অসুবিধায় ফেলেছি এভাবে হুট করে চলে আসায়” মিশুর বাবা হন্তদন্ত হয়ে বলে
” কি বলছো বাবা আমরা কেনো অসুবিধায় পরতে যাবো ?? অসুবিধা তোমার তোমার হচ্ছে। আসলে তুমি আমাদের বাড়িতে প্রথম এসেছো আর এই কয়েক ঘন্টায় বেশি আমরা বেশি কিছু করতে পারলাম না। যাই করেছি ভাবি আমাদের সাহায্য করেছে। আমাদের আগে জানালে ভালো হতো। সব কিছু রেডি রাখতে পারতাম এই আরকি !! ” অভিদ কোট টা টেনে বলে
” honestly বলতে আমি এখানে আসবো আমি জানতাম না। রাতেই হঠাৎ করে ঠিক করলাম তাই কিছু বলতে পারিনি। আপনাদের কাছে একটা প্রপোজাল নিয়ে এসেছি। আপনারা রাজি হলে খুশি হবো আর না রাজি হলে… পরেরটা পরে দেখবো। আগে আমি কথাটা বলি ” মিশুর মা আগ্রহ নিয়ে বলে
” হ্যা বাবা কি বলবে নিশ্চিন্ত হয়ে বলো। কোনো সমস্যা নেই।” অভিদ মাথা নেড়ে মিশুর দিকে তাকিয়ে আবার মিশুর মা বাবার দিকে তাকায়।
রুহি সিঙ্গেল সোফায় বসে অভিদের দিকে তাকিয়ে আছে আর মিশু রুহির সোফা ধরে পেছনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে অভিদ কি বলতে পারে সেটা চিন্তা করছে দাঁত দিয়ে নক কাটছে।অভিদ আর সবাইকে অপেক্ষায় না রেখে বলে উঠে
” আমি আমার বন্ধু রায়হানের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে এসেছি। আমি রায়হান আর মিশুর বিয়ের ঠিক করতে চাইছি। ওরা দুজন দুজনকে পছন্দ করে। এখন ওরা আপনাদের মতামতের জন্য অপেক্ষা করছে। যদিও ওদের কেউ জানে না আমি আজকে এখানে এসেছি বা কেনো এসেছি। আমি কাউকে না জানিয়েই এসেছি। আপনাদের অনুমতি আর মতামত জানার জন্য।” অভিদের কথা শুনে রুহির মা বাদে সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকলো। রুহি, মিশুও অবাক কারণ অভিদ এই কথা বলতে এসেছে সেটা ওরা ভেবেই দেখেনি। মিশির মা বাবা অবিশ্বাসও ভাবে মিশু আর অভিদের দিকে তাকাচ্ছে। অভিদ রায়জাদার বাড়ির ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক হবে সেটা ওদের স্বপ্নের ভাবনার বাইরে। রুহির সাথেও এমনি হয়েছিলো। হুট করে এসে বলেছিলো বিয়ে করবে সেটাও রুহির মা বাবার জন্য স্বপ্ন দেখার মতো বিষয় ছিলো।

অভিদ ওদের নিশ্চুপ দেখে আবার বলে উঠে
” রায়হানের মা-বাবা নেই। আমরা এক সাথেই বড় হয়েছি। বাইরে পরা লেখা করেছি, বিজনেস করছি। এই বিজনেস টাও একার আমার পরিশ্রমে হয়নি !! এটা আমার আর রায়হানের তৈরি। রায়হান আমাকে অনেক সাহায্য করেছে সব কাজে। রায়হান খুন ভালো ছেলে। যে হাজবেন্ড হিসেবে পাবে সে সত্যিই ভাগ্যবান। এখন বাকিটা আপনাদের উপর নির্ভর করছে। দেখুন আমি আমার বন্ধুর কোনো কষ্ট দেখতে পারবো না। আপনারা রাজি না হলেও মিশির সাথে রায়হানের বিয়ে দেবো আমি। তখন হয়তো সবার মাঝে মনমালিন্য হবে তাই বলছি ভেবে চিন্তে আপনারা ডিসিশন নিন। আমার কথা গুলো হুমকি হিসেবে নিবেন না আমি আমার বন্ধু আর মিশুর সুখের জন্য আপনাদের কাছে এক প্রকার অনুরোধ করছি।” মিশুর মা বাবা চুপ করে রইলো। কিছুক্ষণ সময় ড্রইংরুমে নিস্তব্ধতা বিরাজ করলো। মিশুর বাবা রুহির দিকে তাকিয়ে বলে
” রুহি মা তুই এসব জানতি ??” রুহি মিশুর বাবার কথায় থতমত খেয়ে গেলো। মিশুর সব কথায় মিশু থাকলেও প্রত্যেকবার মিশুর মা বাবা আগে রুহির সাথে কথা বলে নেয় কারণ রুহি কোনো সময় উল্টোপাল্টা কাজে রাজি হয় না।মিশু মাঝেমাঝে ভুলভাল কাজ করে তাই ওরা আগে রুহির সাথে কথা বলে। এই কথায়ও যে রুহিকে জড়াবে রুহি বুঝতে পারেনি। অভিদ রুহির অবস্থা বুঝে বলে
” রুহি কি বলবে রুহিই তো ওদের সাহায্য করেছে। রুহি তো আগে থেকেই বিয়েতে রাজি।” মিশুর বাবা উৎসাহ নিয়ে রুহির দিকে তাকায়। রুহি এবার চুপ না থেকে বলে
” হ্যা আংকেল আমি সবই জানতাম। আর রায়হান ভাইয়া খুবই ভালো একজন মানুষ তার সাথে মিশু সারাজীবনই খুশি থাকবে।” মিশুর মা বাবা ২ মিনিট চুপ থেকে বলে
” আচ্ছা তাহলে আমরা আর কি বলবো। অভিদ আর রুহি যখন বলেছে আমরাও রাজি।” মিশুর বাবার কথা শুনে সবাই খুশি হয়ে গেলো।মিশু কিছুক্ষণের জন্য স্তব্ধ হয়ে রইলো। এতো সহজে ওরা মেনে নিয়েছে আর ওরা অযথাই আগে ভয় পাচ্ছিলো। মিশু হঠাৎ খুশিতে লাফিয়ে উঠে রুহি আর অভিদকে জড়িয়ে ধরে। মিশুর মা বাবা মেয়েকে খুশি দেখে আরো খুশি হয়ে গেলো। সবাই মিষ্টি মুখ করে অভিদের আপ্পায়ন করতে উঠে পরে লাগলো।

সন্ধ্যায় অভিদ আর রুহি বাড়ি ফিরতেই দেখতে পেলো রায়হান হাত পা ছড়িয়ে সোফায় শুয়ে আছে। অভিদ রায়হানের কাছে গিয়ে রায়হানের পেটে ঘুষি মারলো। রায়হান পেটে হাত দিয়ে চেঁচিয়ে বলে উঠে
” আউউউ আব্বে কোন শয়তানরে !!” বলে চোখ খুলে তাকাতেই অভিদকে দেখতে পেলো। অভিদকে দেখে মুখ বাকিয়ে বলে
” তুই !! আমি ভাবলাম কে না কে !! আচ্ছা তুই দুপুর থেকে কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছিলি ?? আমাকে বলেও জাসনি পরে গার্ড বললো তুই রুহিকে নিয়ে বেরিয়েছিস।” অভিদ সোফায় বসে বলে
” একটা সিক্রেট কাজ ছিলো। পরে জানতে পারবি। তুই রুম রেখে এখানে শুয়ে আছিস কেনো ?? ” রায়হান আবার আগের মতো করে ধপ করে শুয়ে বলে
” কি আর করবো। আলসেমি লাগছে একটু আলসেমি কাটিয়ে নেই পরে রুমে যাবো।” অভিদ বিরক্তি মুখ করে তাকালো। রায়হান দাত কেলিয়ে চোখ বন্ধ করে নিলো। অভিদ রায়হামের পেটে আরেকটা ঘুষি দিয়ে উঠে পরলো। রায়হান পেটে হাত দিয়ে চোখ পাকিয়ে অভিদের দিকে তাকালো। অভিদ পাত্তা না ফিয়ে রুহিকে নিয়ে উপরে চলে গেলো। রুহি এতোক্ষণ ওদের খুনশুটি দেখে হাসছিলো।

রুহি, অনি ভার্সিটির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সাথে গার্ডরা রয়েছে। সবাই গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। গাড়ির নাকি সমস্যা হয়েছে তাই গাড়ি গ্যারেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এখন অন্য গাড়ি আসতে দেড়ি করছে। রুহি অপেক্ষা না করে অনিকে নিয়ে গেটের পাশের ঝালমুড়ি ওয়ালার সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। অনি বলে
” ভাবি এখানে কি করবে।” রুহি হেসে বলে
” একটু ঝালমুড়ি খাবো প্লিজ !!” অনিও আর না করলো না। দুজন ঝালমুড়ি অর্ডার করে কথা বলতে থাকলো। এরমাঝেই একটা লোক এসে রুহির হাত চেপে ধরে মাথায় কিছু ঠেকালো। রুহি চমকে গেলো এমন হঠাৎ কাজে। ঘাড় ঘুড়িয়ে পাশে তাকিয়েই ভয় পেয়ে গেলো। সিহাব রুহির মাথায় গান চেপে ধরে আছে।

চলবে…wait for next part….