মিথ্যা_অপবাদ পর্ব-২+৩

0
2365

#মিথ্যা_অপবাদ
#ফারজানা_আফরোজ
#পর্ব_২

কথাটা বলে হৃদয় আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে দু পা পিছিয়ে নিলো…….

আরিয়ান বসে থাকা চেয়ার লাত্থি মেরে ফেলে দিলো। সিগারেটের প্যাকেট ছুড়ে মারলো। রাগে তার পুরো শরীর জ্বলে যাচ্ছে। রাগ কমানোর কোনো কিছু না পেয়ে সোজা বাথরুমে চলে গেলো। হৃদয় আরিয়ানের রুমে বসে থাকার রিক্স না নিয়ে নিজের রুমে চলে যায়। আরিয়ান প্রায় আধা ঘন্টা পর্যন্ত ঝর্না ছেড়ে দাঁড়িয়ে থাকে………

পরেরদিন সকালে…….

সোনালী বাসা থেকে বের হয়ে ইতিকে ফোন দিলো…..

—-” কোথায় তুই কলেজ আসবি না?”

—-” আজ আসবো না রে শরীল ভালো লাগছে না।”

—-” কি হয়েছে তোর?”

—-” সারারাত আরিয়ানের সব কমেন্ট পড়তে পড়তে এখন খুব ক্লান্ত আমি। খুব ঘুম পাচ্ছে বায়।”

ইতি ফোন কেটে দিলো। সোনালী এখন ভীষণ ঝামেলায় পড়লো। বাসায় চলে গেলে আম্মুর একশো প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে তাই মন খারাপ নিয়ে একা একাই যেতে লাগলো……

—-” এই মাইয়াটা যে কি করে সব সময় কিছু না কিছু ঝামেলা করেই যাবে।”

সোনালী সামনে আরিয়ানকে দেখে ভয়ে পা পিছিয়ে ফেললো……

—–” এই উজবুক এইখানে কেনো? ধরে ফেলেছে নাকি আমাকে?”

আরিয়ান এদিক ওদিক তাকিয়ে কিছু একটা খুঁজছে। আরিয়ানের ডান পাশে দাঁড়িয়ে আছে সোনালী। সোনালী এক পা এক পা পিছিয়ে পড়তে লাগলো…….

ধপাসসসসসসসসস………

আরিয়ান দেখলো কেউ একজন খুলা ড্রেনে পরে গেছে। আশে পাশে কেউ না দেখেই আরিয়ান নিজে গেলো দেখতে……

—-” আম্মুউউউউ বাঁচাও ওয়াক থু ছিঃ কি বিশ্রী গন্ধ। ওয়াক বাঁচাও কেউ প্লিজ।”

ড্রেনের ভিতর থেকে চিৎকার করছে সোনালী। আরিয়ান একজন মেয়ের কণ্ঠ শুনে বললো……

—-” আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন মিস?”

—-” শুনতে পাচ্ছি প্লিজ বাঁচান আমায়। কি ভয়নকর বিশ্রী গন্ধ প্লিজ হেল্প করুন।”

আরিয়ান তার গাড়ি থেকে একটি শক্ত রশি বের করে আনলো। গাড়ির সাথে বেঁধে তা ড্রেনের ভিতর ফেলে দিলো। অনেকটা গভীর ড্রেনটা…….

—-” আপনি রশিটা শক্ত করে ধরে থাকুন।”

—-” হ্যাঁ আমি ধরেছি তাড়াতাড়ি উঠান আমায়।”

আরিয়ান রশি টেনে সোনালীকে ড্রেন থেকে বের করলো। সোনালীর পুরো শরীলে ময়লে আবর্জনা ভরে আছে তাই আরিয়ান সোনালীকে চিনতে পারলো না। মুখে টিস্যু চেপে বললো…..

—-” তাড়াতাড়ি বাসায় চলে যান কেউ আপনাকে এইভাবে দেখলে ভাববে ড্রেনের ভিতর থেকে কোনো পেত্নী বের হয়ে এসেছে।”

সোনালী তো আরিয়ানকে দেখে এমনি ভয়ে মুখ থেকে কথা বের হচ্ছে না। আরিয়ানের কথা শোনে এক দৌড়ে চলে গেলো……

—-” একটা ধন্যবাদও দিলো না। অকৃতজ্ঞ মেয়ে। ভাগ্যিস গাড়িতে সব সময় দড়ি রাখি তানাহলে আজ এই মেয়ে একটুর জন্য টাটা বায় বায় হয়ে যেতো।”

আরিয়ান এইখানে তার এক ফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে এসেছিল গতকালের বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য। অনেক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর ওর ফ্রেন্ড আসলো……

—-” সরি দোস্ত, আজ একটা ইম্পর্টেন্ট ক্লাস মিটিং ছিলো তাই তোকে দাঁড় করিয়ে রাখতে হয়েছে।”

আরিয়ান হাঁসি দিয়ে বললো…..

—-” তোর এই দেরি করার জন্য একটি মেয়ের প্রাণ বেঁচে গেছে। এইজন্যই বলি কোনো কিছু ঘটার আগে তার কোনো কারণ থাকে। এখন চল আমার কথা গুলো বলি।”

—-” হুম চল।”

।।

।।

।।

।।

বাসায় আসা মাত্রই সোনালীর আম্মু ঝাড়ু নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে……

—” আম্মু আমি বাথরুমে যাবো যেতে দাও তাড়াতাড়ি।”

—” খবরদার এই পঁচা শরীল নিয়ে একদম বাসার ভিতরে আসবি না। তুই বাগানে যা আমি পানি দিচ্ছি।”

—-” আম্মু তুমি বুঝতে পারছো না আমার অবস্থা।”

—-” বেশি পকপক করলে এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাক।”

কোনো উপায় না পেয়ে সোনালী বাগানে দাঁড়িয়ে রইলো। বাগানে পানি দেওয়া পাইপ ধরে দাঁড়িয়ে আছে সোনালীর আম্মু। বিশ মিনিট এইভাবে থাকার পর…..

—-” আম্মু এখন তো ময়লা নেই এখন যেতে পারি বাসায়?”

—-” এই জামা পরে ওয়াশরুমে গিয়ে ভালোভাবে গোসল করে আমার সামনে আসবি।”

সোনালীর আম্মু জামা কাপড় সোনালীর হাতে দিয়ে চলে গেলো।

—-” এই মহিলা কি আমার মা নাকি কোনো সিরিয়ালের ভিলেন মা বুঝতে পারি না।”

।।

।।

।।

।।

পাঁচদিন পর……

—-” ভাইয়া মেয়েটার আইডি অফ করে দেওয়া হয়েছে তাই আর মেয়েটার খুঁজ নেওয়া সম্ভব না।”

আরিয়ান হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো কিছু বললো না……

—-” আমি অনেক চেষ্টা করেছি ভাইয়া কিন্তু …”

—-” তোকে কি আমি জবাব দিহিতা করতে বলেছি?”

—-” নাহ ভাইয়া। কিন্তু যে তোর সাথে এমন করেছে তাকে শাস্তি না দেওয়া পর্যন্ত শান্তি হবে না আমার।”

—-” সময় হলেই সব সমাধান করা হবে। এখন আয় আজ দুই ভাই মিলে কোথাও ঘুরে আসি।”

হৃদয় খুশি হয়ে আরিয়ানকে জড়িয়ে ধরলো…..

—-” তোকে এইভাবেই খুব ভালো লাগে ভাইয়া।”

।।।

।।

।।।

ইতি আর সোনালী এসেছে কিছু শপিং করার জন্য। শপিং করা শেষ হলে সোনালী ও ইতি রাস্তায় দাঁড়িয়ে বাদাম খাচ্ছিলো। সেই রাস্তা দিয়ে হৃদয় আর আরিয়ান যাচ্ছে। হৃদয় সোনালীকে দেখে আরিয়ানকে বললো…..

—-” ব্রো ওই মেয়েটা না যাকে তুই পাবলিক প্লেসে চড় মেরেছিলি?”

আরিয়ান হৃদয়ের কথায় মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললো……

—-” অসভ্য মেয়ে। কার সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় শিখেনি। রাস্তা ঘাটে কিভাবে হাঁটতে হয় এখনো পারে না।”

—-” ওইদিন মেয়েটার কোনো দোষ ছিলো না। তুই না বুঝেই মেয়েটিকে”

—” তোকে ওই মেয়ের চামচা বানানোর জন্য আমার চাচা চাচী তোকে জন্ম দেয় নাই ওকে।”

আরিয়ানের কথায় হাসতে থাকে হৃদয়। দুইভাই বড় এক রেস্টুরেন্টের ভিতর ঢুকে পড়ে। অন্যদিকে সোনালী বাদাম খাচ্ছিলো তখন একটা বড় গাড়ি আসলো দুইটা লোক বের হলো সোনালীর মুখে কিছু একটা স্প্রে করলো। চোখের পলকে ওরা সোনালীকে নিয়ে চলে গেলো। ইতি সব দেখেই যাচ্ছে কোনো কথা বলতে পারছে না। সব কিছু এত তাড়াতাড়ি ঘটে যাবে বুঝতেই পারছে না কেউ। ইতি এইবার জোড়ে জোড়ে চিৎকার দিতে লাগলো। খুব স্পিডে গাড়ির ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে নিমিষেই চোখের আড়াল হয়ে গেলো…….

ঘণ্টা দুয়েক এর মধ্য সোনালীর আব্বু পুলিশের কাছে চলে গেলো। পুলিশ ইতির বিবরণ শুনে কিছুই বুঝতে পারছে না। ইতি বলছে কালো রঙের গাড়ি কিন্তু গাড়ির নাম্বার দেখেনি সে। এমন গাড়ি অনেক আছে।পুলিশ তাদের সাধ্য মত কাজ করে যাচ্ছে……

।।।

।।।

।।

।।।

সোনালীর চোখ খুলে দেওয়া হলো। চারপাশে আলোর চিনে ফোঁটাও নেই। কারো পায়ের শব্দে সোনালী সামনে তাকালো। একটা অন্ধকার ছায়া মূর্তি ছাড়া কিছুই বুঝতে পারছে না সোনালী। ছায়াটা সোনালীর কাছে এসে সজোরে একটা থাপ্পড় মারে সোনালীর গালে। সোনালীর হাত চেপে ধরে হাতে কামড় দেয়…….

“আয়াআআআআআআআআআ”

চলবে……

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। গল্পটা রহস্যটা ভরপুর।

#মিথ্যা_অপবাদ
#ফারজানা_আফরোজ
#পর্ব_৩

সোনালীর চোখ খুলে দেওয়া হলো। চারপাশে আলোর চিনে ফোঁটাও নেই। কারো পায়ের শব্দে সোনালী সামনে তাকালো। একটা অন্ধকার ছায়া মূর্তি ছাড়া কিছুই বুঝতে পারছে না সোনালী। ছায়াটা সোনালীর কাছে এসে সজোরে একটা থাপ্পড় মারে সোনালীর গালে। সোনালীর হাত চেপে ধরে হাতে কামড় দেয়…….

“আয়াআআআআআআআআআ”

—-” এই মেয়ে এইভাবে চেঁচাচ্ছ কেনো? বেশি বকবক করলে গুলি করে মাথার খুলি উরিয়ে দিবো।”

—” তার মানে এতক্ষণ দিবা স্বপ্ন দেখছিলাম। ওহ আল্লাহ কি ভয়ানক স্বপ্নটা।”

সোনালী এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল। এখন ভালো করে খেয়াল করলো। রুমটা বেশ বড়, সব সাদা রুমের ভিতর। দেখে মনে হচ্ছে যার এই রুম তিনি খুব সৌখিন মানুষ।

—” এই যে মেম কি দেখছেন?”

সোনালী লোকটির কথা শুনে লোকটির দিকে তাকালো। লোকটি বেশি লম্বা না আবার খাটোও না। শ্যামলা গায়ের রঙ। হাতে বন্দুক দেখে গুন্ডা গুন্ডা লাগছে……

—-” আমায় এইখানে নিয়ে এসেছেন কেনো?”

—” আমি টাকা পেয়েছি আপনাকে কিডন্যাপ করার জন্য তাই এনেছি।”

—-” কে দিয়েছে টাকা?”

—-” আমি।”

দরজা খুলে একটি লোক ভিতরে আসলো আর বললো। সোনালী লোকটির দিকে তাকিয়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা। কেননা আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আরিয়ান চোখের ইশারায় লোকটিকে যেতে বললো। লোকটি চলে গেলো…….

—-” ডার্লিং, কি ভেবে ছিলে তোমায় আমি চিনতে পারবো না।”

—” ওনি কি বুঝে গেছে আমি ওনার সাথে এমন করেছি?”

সোনালী মনে মনে ভাবতে লাগলো তখন আরিয়ান সোনালীর পাশে বসে বললো……

—” কি হলো প্রিয়তমা? কিছু বলছো না কেনো?”

—” আম আমি কি করেছি?”

—-” তুমি কি করেছো জানো না তুমি?”

ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করলো আরিয়ান তখন সোনালী বললো……

—-” উহু। কি করেছি আমি।”

আরিয়ান থাপ্পড় মেরে সোনালী কে বললো…..

—-” আমি মিথ্যাবাদীদের ঘৃনা করি। আরেকবার মিথ্যা কথা বললে খুন করে ফেলবো।”

সোনালী ডুকরে কেঁদে উঠলো…….

—” কেনো করেছো আমার সাথে এমন বলোতো?”

—-” আপনি ওইদিন সবার সামনে আমায় অপমান করেছেন তাই আমি রিভেঞ্জ নিলাম।”

আরিয়ান সোনালীর হাত চেপে ধরে বললো…….

—-” রিভেঞ্জ নেওয়ার জন্য এই রকম পথ বেছে নিলে। জানো তোমার এই মিথ্যা অপবাদের কারণে কি হয়েছে আমার সাথে? আমার এত দিনের তৈরি করা সম্মান এক নিমিষেই শেষ হয়ে গেছে।”

সোনালী কেঁদেই যাচ্ছে তখন আরিয়ান ধমক দিয়ে বললো……

—-” ভুল যেহেতু করেছো শাস্তিও তোমায় পেতে হবে মিস সোনালী।”

—–” কি কি করবেন আপনি?”

—-” বিয়ে করবে আমায়। পরে নিজের দোষ স্বীকার করবে তুমি? ”

—–” অসম্ভব। কিছুতেই আপনাকে বিয়ে করবো না আমি।”

—-” নিজের ভালো যদি বুঝো তাহলে যা বলবো তাই করবে তানাহলে তোমার মান সম্মান তোমার পরিবারের মান সম্মান কয়েক মুহূর্তে ধুলোয় মিশিয়ে দিবো আমি।”

সোনালী কেঁদেই যাচ্ছে। কেনো যে বাঘের সাথে লড়াই করতে নামলো। এখন নিজের পুরো জীবন দিয়ে সংশোধন করতে হবে।

—-” তার আগে শুনো তোমায় চিনলাম কিভাবে? তুমি এতটা বোকা আমার জানা ছিলো না। ফেক আইডি মানলাম কিন্তু ইনফরমেশন সব ঠিক ছিলো জাস্ট নাম ফেক ছিলো। ইনফরমেশনে তোমার কলেজ স্কুল এমনি বাসার অ্যাড্রেস দিয়ে রেখেছো। কলেজের নাম দেখে তোমার কলেজে যোগাযোগ করি। তোমার কলেজে আমার এক ফ্রেন্ড প্রফেসর। ওকে নিয়ে সব ক্লাসে নাম জিজ্ঞাসা করি তোমার এমনকি আইডি দেখাই। তুমি হয়তো ভুল ক্রমে তোমার এই আইডির কথা কিছু জনকে বলেছো ওরা আমায় তোমার আসল নাম বললো।”

আরিয়ান কিছুটা থেমে আবারো বলতে শুরু করলো আর সোনালী কেঁদেই যাচ্ছে…….

—-” আজ দেখলাম তুমি নিউ মার্কেটের সামনে দাঁড়িয়ে বাদাম খাচ্ছো তাই ফোন দিলাম আমার লোককে, ও আসলো তোমায় নিয়ে এইখানে চলে আসলো। প্ল্যান করছো ভালো কথা মাথায় একটু বুদ্ধি তো রাখতে পারতে।”

—-” আমার ভুল হয়ে গেছে আমি ক্ষমা চাচ্ছি প্লিজ আমায় ক্ষমা করে দিন। আপনি চাইলে আমি লাইভে গিয়ে সবাইকে সত্য কথা বলে দিবো তবু প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন।”

—-” তা আর হচ্ছে না স্টুপিড গার্ল। তোমার জন্য আমার সাতটা দিন কেমন কেটেছে শুধু আমি জানি। তুমি আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেছো তাহলে তো তোমায় আমার আসল চরিত্র দেখাতে হবে। তাই আজ এখন এই মুহূর্ত আমাকে বিয়ে করবে বুঝতে পেরেছো?”

—” আচ্ছা বিয়ে হলে কি আপনি আপনার সম্মান ফিরে পাবেন বলুন তাহলে কেনো এমন অন্যায় কথা বলছেন?”

—-” তা নিয়ে তোমায় ভাবতে হবে না। আমি প্ল্যান অলরেডি করে ফেলেছি। আমাদের বিয়ে হলে পরে বলবো আমরা এইসব মজা করেছি দেখার জন্য যে কার কেমন বিশ্বাস লেখক আরিয়ানের উপর। আরিয়ানকে কে কি ভাবে তা দেখার জন্যই এমন নাটক করেছি আমরা।”

সোনালী কান্না করছে আরিয়ান টিস্যু দিয়ে বললো…..

—-” চোখের পানি গুলো বাঁচিয়ে রাখো। কান্না এখনও শেষ হয় নি। আজ মাত্র শুরু। তোমাকে বুঝাবো মিথ্যা অপবাদের শাস্তি কেমন হতে পারে।”

সোনালী ভয়ে ভয়ে ঢোক গিলতে শুরু করলো। আরিয়ান সোনালীর এমন মুখ দেখে হাসতে হাসতে চলে গেলো…….

সোনালী বসে বসে ইতির চোদ্দ গোষ্ঠীর নাম উদ্ধার করছে…….

—-” আজ এই শাকচুন্নির জন্য আমার নিজেকে কুরবানী দিতে হচ্ছে। কেনো যে এই ডায়নীর কথা শুনতে গেলাম। আমার তিনটা বফের কি হবে এখন এ্যাঁ এ্যাঁ এ্যাঁ । ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না একবার বিষ পান করিয়ে কষ্ট তো পরে ভুগতে হবে তাই না। এখন মন চাচ্ছে ওই পেত্নীর সাথে ওই উজবুকের বিয়ে দিয়ে দেই। ওই কুত্তির কথা শুনে এখন আমি পইরা গেছি ভেজালের ঘাড়ে এ্যাঁ এ্যাঁ এ্যাঁ ।”

।।

।।

।।

।।

—-” স্যার আমার মেয়ের কোনো খুঁজ পেয়েছেন?”

—” দেখুন আমরা চেষ্টা করছি। আমরা তো কোনো জীন পরী না যে যখন যা বলবো দেখতে পারবো আমরাও আপনাদের মতো মানুষ। আমরা আমাদের সর্ব প্রচেষ্টা করছি।”

সোনালীর বাবা পুলিশের এমন কথা শুনে বাসায় ফিরে গেলো। সোনালীর বাবা একজন মধ্যবিত্ত শ্রেণীর লোক। তার সামর্থ্য অনুযায়ী সব কিছু করছেন ওনি। তার এক মাত্র মেয়েকে খুঁজার জন্য কোনো কিছুই বাদ রাখছেন না তিনি।

।।

।।

।।

।।

—-” এক কথা কতবার বললো তোকে ভালোই ভালো বলছি সাইন করে দে।”

আরিয়ান সোনালীকে মারছে। সোনালীর সামনে বিয়ের পেপার রাখা হয়েছিল সোনালী তা ছিড়ে ফেলছে তাই রাগের বশে মারতে লাগলো। হৃদয়কে ফোন দিয়ে আরেকটি পেপার বানিয়ে এনে সোনালীর সামনে রাখলো……

—-” রাগ উঠাবে না। ভালোই ভালো সাইন করে নিজের বাসায় যাও পরের বেবস্থা আমি করছি। যদি না শুনো তাহলে তোমার আর তোমার পরিবারের বেবস্থা এই আরিয়ান নিবে মনে রেখো।”

সোনালী কোনো উপায় না পেয়ে সাইন করে দিলো । আজ থেকে সোনালী আরিয়ানের বউ। আরিয়ান ডেভিল হাসি দিয়ে বললো…….

—” আজ থেকে বুঝবে মিথ্যা অপবাদ দেওয়ার কারণে তোমার জীবনে কি ঘটতে চলেছে হাহাহা।”

ঘর কাপানো হাঁসি দিলো আরিয়ান। সোনালী ভয়ে চুপসে রইলো। আরিয়ান হৃদয়ের কাছে গিয়ে বললো……

—-” যাহ ওকে বাসায় দিয়ে আয়। আর তোকে কি বলেছি মনে আছে তো? ওর বাবা মাকে কি বলতে হবে?”

—-” ইয়েস ব্রো সব মনে আছে। ব্রো তোর মাথায় এত বুদ্ধি কোথায় রাখিস আমাকেও কিছু ধার দিস তো মাঝে মাঝে।”

—-” ওকে দিবো নে । আর মিসেস চৌধুরী বাসায় এখন বিয়ের কথা বলতে হবে না। হৃদয় যা বলবে চুপচাপ শুনবে। আর আমাদের ফুলশয্যা তার কথা ভেবো না আমি নিজেই ঠিক করে নিবো হাহাহাহা।”

আরিয়ানের এমন কথা শুনে ভীষন লজ্জা পেলো সোনালী। কাদতে কাদতে চোখ একদম ফুলে গেছে সোনালীর কিন্তু আরিয়ানের কথায় লজ্জা পেয়ে মুখ লাল করে ফেলেছে এখন………

চলবে……

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।