মিথ্যা_অপবাদ পর্ব-৬+৭

0
1707

#মিথ্যা_অপবাদ
#ফারজানা_আফরোজ
#পর্ব_৬

কথা বলতে বলতে সোনালীর গায়ে রঙ দেওয়া পানি ঢাললো। পানির সাথে শরীর চুলকানো ওষুধ দিয়েছিলো আরিয়ান। সোনালীর মাথায় বোতলের সব রঙ দেওয়া পানি ঢেলে দেয় আরিয়ান। মুহুর্তের মধ্যে সোনালী পাগলের মত ছুটাছুটি করা শুরু করে দেয় তা দেখে আরিয়ান জোড়ে জোড়ে হাসতে থাকে…….

সোনালী কিছুক্ষণ দৌঁড়াতে দৌঁড়াতে বাথরুমের ভিতরে ঢুকে পড়ে। আরিয়ান বাহিরে দাঁড়িয়ে কান্নার আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে……

—-” পানি ঢালতে থাকো তাহলে কমবে হাহাহা।”

সোনালী পানি ছেড়ে দিয়ে প্রায় আধা ঘন্টার বেশি বাথরুমে বসে আছে। আরিয়ান কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে আসে রুমে। কিছুক্ষণ ফোন ঘাঁটাঘাঁটি করে আবারো যায় বাথরুমের কাছে……

—-” সোনালী আমার কথা কি শুনতে পাচ্ছো তুমি?”

কোনো সাড়া শব্দ নেই শুধু পানির শব্দ ছাড়া……

—” তোমার দোষের শাস্তি পাচ্ছো তুমি । দোষ করার আগে মনে ছিলো না কার পিছনে লেগেছো এখন বুঝো।”

আরিয়ান কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করলো কিন্তু সোনালী কোনো রেসপন্স পেলো না। হটাৎ পিছন থেকে হৃদয় এসে বললো……

—-” ব্রো কি হয়েছে? এইভাবে দাঁড়িয়ে আছিস কেনো? ভাবী কোথায়?”

—” ও ওয়াশরুমে গিয়েছে।”

—” বাব্বাহ বউ পাগল হয়ে গেছিস। বউ ওয়াশরুমে আর তুই পাহারা দিচ্ছিস বাহ ব্রো বাহ।”

—-” আরেহ ও প্রায় চল্লিশ মিনিট ধরে ওয়াশরুমে এখনও আসছে না সেই কখন থেকে ডাকছি কিন্তু কিছু বলছে না।”

—-” হোয়াট? সোনালী এতক্ষণ ধরে বাথরুমে।”

ইতি চেঁচিয়ে উঠলো। বাথরুমের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে বললো…..

—” বাবু দেখ আমি এসেছি ভয় পাস না দরজাটা খুল বেবি।”

ইতিও বেশ কিছুক্ষণ ডাকার পরও সোনালী দরজা খুললো না। হৃদয় এইবার ভয় পেয়ে বললো……

—” ব্রো দরজা ভাঙতে হবে।”

—” কিন্তু সোনালী যে ভিতরে?”

হৃদয় এইবার ইতিকে ধমক দিয়ে বললো……

—-” ভাবী যদি ভিতরে না থাকতো তাহলে কি আর দরজা ভাঙতে হতো। পাগল ছাগলের মত কথা বার্তা।”

ইতি সাইডে দাঁড়িয়ে পড়লো। আরিয়ান ও হৃদয় দরজা ভাঙার চেষ্টা করছে। অবশেষে তারা সফল হলো। ইতি সোনালীকে দেখে ভয়ে চিৎকার করে উঠলো…..

—” সোনালী বেবি চোখ খুল আর তোর শরীলে এইসব কি হয়েছে?”

সোনালীর পুরো শরীর লাল হয়ে আছে। আসলে এইসব চুলকানির ওষুধ দেওয়ার পর যদি সাথে সাথে পানি দেওয়া হয় তাহলে শরীল লাল হয়ে যায়। আরিয়ান আবার রঙের পানিতে মিশিয়ে দিয়েছে।

—-” কি করেছেন আপনি সোনালীর সাথে বলুন?”

আরিয়ান ইতিকে পাশ কাটিয়ে সোনালীকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। ফ্লোরে শুইয়ে দিয়ে সোনালীর পরে আসা জামাগুলো ইতির হাতে দিয়ে বললো…….

—-” তুমি এই জামা কাপড় ওকে পড়িয়ে দেও। অনেক্ষণ ধরে ভিজে আছে। আমি আর হৃদয় পাশের রুমে আছি।”

আরিয়ান আর হৃদয় চলে যায়। ইতি একা একা সোনালীর ভেজা শাড়ি এইসব ছাড়িয়ে সোনালীর আগের জামা কাপড় পড়িয়ে দিয়ে আরিয়ান ও হৃদয় কে ডাক দেয়। আরিয়ান আবারো সোনালীকে কোলে নিয়ে খাটে শুইয়ে দিয়ে কম্বল দিয়ে অন্য পাশে গিয়ে বললো……..

—-” জানি তোমার প্রশ্ন কি? তোমার ফ্রেন্ডের সাথে কি হয়েছে এইসব তো তাহলে শুনো।”

আরিয়ান সব কথা বললো তখন ইতি কাঁদতে কাঁদতে বললো…….

—-” সব দোষ আমার। আজ আমার জন্যই সোনালী কষ্ট পাচ্ছে। ওইদিন ওর ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে ওকে দিয়ে আমি এইসব কাজ করিয়েছি। শাস্তি তো আমার পাওয়া উচিত।”

—” ব্রো দোষ যেই করুক তাই বলে তুই এমন কিছু করবি আমি বুঝতে পারেনি।”

—-” তুই তো খুব ভালো করেই জানিস মিথ্যাকে আমি ঘৃনা করি। আর এই দুই মেয়ে আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে তা কি করে মানবো। হুম জানি ওষুধের পরিমাণ বেশি দিয়ে ফেলেছি আমি। তখন আমার কোনো হুস ছিলো না।”

ইতি তখন বললো……

—” হুম মানলাম দোষ আমরা করেছি কিন্তু আপনিও তো করেছেন দোষ আমাদের সাথে।”

—” কি করেছি আমি?”

—-” ওই দিন রাস্তায় সবার সামনে চড় মেরেছেন আপনি সোনালীকে মনে নাই আপনার?”

—” ওর দোষ ছিল তার জন্যইতো মেরেছি।”

—” ওইদিন ওর কোনো দোষ ছিল না। শুনুন কি হয়েছিল ওইদিন………”

রাস্তায়…….

সোনালী ও ইতি হেঁটে হেঁটে যাচ্ছে তখন কিছু ছেলে ওদের দুজনকে বিরক্ত করছে। সোনালী ও ইতি গিয়ে ছেলেদের কড়া জবাব দিয়ে আসে। তখন একটি ছেলে সোনালীর ব্যাগে একটি ফুল আটকিয়ে দেয়। যেহেতু পরিস্থিতির ভালো না তাই ইতি সোনালীকে টেনে নিয়ে আসে। রাস্তায় না দেখেই যখন সোনালী ফুল ছুড়ে মারে যা আরিয়ানের উপর পরে। সোনালী তখন বলছিলো……

—-” এইসব কুকুররা কোনোদিন ঠিক হবে না। ওদের ঠিক করার জন্য একটা ভালো আইন দরকার।”

আরিয়ান ভেবেছিলো এইসব তাকে বলা হচ্ছে তাই রেগে গিয়ে সবার সামনে থাপ্পড় মারে সোনালীকে……….

সেইদিন ওদের ঝগড়া হয় এইসব নিয়ে……….

বর্তমান……..

আরিয়ান তো ইতির কথা শুনে সোনালীর দিকে তাকিয়ে আছে। না জেনে শুনেই ভুল করেছে ও। কিন্তু এই ভুলের জন্য সোনালী ও ইতি যা করেছে তা একদম ঠিক না……..

হৃদয় ফোন দিয়ে ডক্টর আনলো। যেহেতু জঙ্গলের ভিতর তাই ডক্টর আসতে দেরি হলো। সোনালীর এলার্জির প্রবলেম ছিলো তাই রিয়্যাকশন বেশি হয়ে গেছে। এইসব লাল দাগ গুলো যেতে সময় লাগবে জানিয়েছে ডক্টর।

ইতি ওর বাসায় ফোন দিয়ে বললো আজও ও সোনালীর বাসায় থাকবে আর সোনালীর বাসায় ফোন দিয়ে বললো আজ সোনালী ওদের বাসায় থাকবে………

।।

।।

।।

সোনালীর রাতে জ্ঞান ফিরেনি। ডক্টর ঘুমের ওষুধ দিয়েছে। ইতি সোনালীর সাথে শুয়ে আছে। অন্য রুমে হৃদয় ও আরিয়ান শুয়ে আছে। হৃদয় খাবার এনে ইতিকে ডেকেছিল কিন্তু ইতি খায়নি…….

রাত দুটো…….

—” আমি তো ক্ষুদা সহ্য করতে পারি না। এখন পেটের ভিতর তেলাপোকা দৌড়াদৌড়ি করছে কি করবো আমি।”

ইতি ধীরে ধীরে হেঁটে রুমের বাহিরে গেলো দেখলো আরিয়ানের রুম লক করা । ইতি বারান্দায় গিয়ে দেখলো খাবারের প্যাকেট ওইখানে রাখা হয়েছে। ইতি ফ্লোরে বসে খেতে লাগলো……..

—-” স্মাইল প্লিজ।”

ইতি খাবার মুখে দিয়েই কাশতে লাগলো। হৃদয় পানির বোতল হাতে দিয়ে বললো…..

—-” আগেই বলেছিলাম খাওয়ার জন্য কিন্তু খেলে না এখন এসেছো চুরি করে খাওয়ার জন্য চুন্নি।”

—-” আমি জানতাম আপনি এইভাবে বলবেন তাইতো খেতে চাইনি। আমি না খেয়ে থাকতে পারি না তার জন্য আর কি খাচ্ছিলাম যদি জানতাম তাহলে জীবনেও খেতাম না।”

ইতি কাঁদতে কাঁদতে বললো তখন হৃদয় বললো…..

—” আচ্ছা তোমাদের মেয়েদের চোখে কি কান্না ছাড়া আর কিছু নেই। কিছু হতে না হতে চোখের পানি নাকের পানি এক করে ফেলো। আমার মনে হয় মহান আল্লাহ তায়ালা তোমাদের চোখে সাগর দিয়ে রেখেছে।”

—-” খাবারের সময় কথা বলতে নেই।”

—-” ওকে বলবো না খাও।”

ইতি খেতে লাগলো আবারো। খাওয়া শেষ করে পেটে হাত দিয়ে বললো……

—- এইবার শান্তি হয়েছে তোর? বাব্বাহ সেই কখন থেকে শুধু কেঁদেই যাচ্ছিস খাওয়ার জন্য এই খেলাম এখন শান্তি তো?”

হৃদয় ইতির কথা শুনে ইতির পেটের দিকে তাকিয়ে বললো……..

—-” কয়মাস?”

—-” আরেহ বেশিদিন না মাত্র এক মাস হলো।”

—” ওহহ একমাস হয়েছে। শুনো এই সময় কেয়ারফুল থাকবে। আমাকে আগে বললে তো তোমাকে এইভাবে নিয়ে আসতাম না। বাই দা ওয়ে কি করে বাচ্চার আব্বু?”

হৃদয়ের কথা শুনে ইতি জোড়ে জোড়ে কাশতে থাকে……

—” এই নেও পানি এই সময় এইভাবে কাশতে নেই। বাচ্চার ক্ষতি হতে পারে।”

—-” রাখেন আপনার পানি। কার বাচ্চা কিসের বাচ্চা?”

—” তোমার বাচ্চা।”

—-” হোয়াট? ওই মিয়া আমি নিজেই বাচ্চা আর আপনি বলছেন আমার বাচ্চার কথা, বলি চোখে কি আরশোলা ঢুকেছে?”

—” তুমিই না একটু আগে, কথা বললে তোমার পেট ধরে তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম কত মাস তুমি বললে একমাস।”

—” আরেহ গাধা এতক্ষণ ধরে আমার পেট বলছিলো কিছু খা কিছু খা তাই খেয়ে ওকে স্বান্তনা দিলাম। আর মাস বলতে আমার জামাটার বয়স এক মাস চলছে।”

হৃদয় ইতির কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে অন্য হাতে বোতল থেকে পানি মাথায় দিতে থাকলো……..

হটাৎ করেই আরিয়ানের চিৎকার শুনে ইতি ও হৃদয় দৌড় দিলো…….

চলবে…..

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন।

#মিথ্যা_অপবাদ
#ফারজানা_আফরোজ
#পর্ব_৭(রোমান্টিক পর্ব 🙈)

হটাৎ করেই আরিয়ানের চিৎকার শুনে ইতি ও হৃদয় দৌড় দিলো…….

ইতি ও হৃদয় গিয়ে দেখলো সোনালী খাটে নেই ফ্লোরে শুয়ে আছে…..

—” লেখক ভাইয়া সোনালী ফ্লোরে কেনো?”

—” আমি এসে দেখি ও খাটে নেই ফ্লোরে শুয়ে আছে তাইতো চিৎকার দিলাম।”

ইতি আর আরিয়ান সোনালীর দিকে তাকিয়ে আছে আর হৃদয় হেসেই যাচ্ছে। হৃদয় হাসতে হাসতে সোনালীর কাছে বসে পরলো। হাঁসি থামাতে পারছে না হৃদয় তাই পেট ধরে বসে আছে।

হাঁসির শব্দ শুনে সোনালীর ঘুম ভেংগে যায়। ঘুম থেকে উঠে দেখে ইতি আর আরিয়ান দাঁড়িয়ে হৃদয় ওর পাশে বসে হাসছে।

—” তুই কখন আসলি এইখানে? আমার কি হয়েছে এইভাবে শুয়ে আছি কেনো?”

ইতিকে জিজ্ঞাসা করলো সোনালী।

আরিয়ান খুব কষ্ট হাসি থামিয়ে রেখেছিলো কিন্তু সোনালীর কথা শুনে এখন আর হাঁসি থামাতে না পেরে হেঁসে দিলো। সোনালী আরিয়ানের হাঁসির দিকে তাকিয়ে আছে…….

—-” মারাত্মক হাঁসি। হাসলে যে এই ভিলেনটাকে এত সুন্দর লাগে জানতাম না তো। এই হাসিটা যেকোনো মেয়ে দেখলে আমি সিউর ক্রাশ খাবে।”

সোনালী আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে রইলো আর মনে মনে বললো। সোনালী যখন উঠতে যাবে…..

—-” আহহ। আমার শরীল এমন লাল হয়ে আছে কেনো? শরীলে খুব ব্যাথা পাচ্ছি কেনো আমি?”

—-” তোকে এই লেখক ভাইয়া চুলকানির ওষুধ লাগিয়ে দিয়েছিল তার জন্য এই অবস্থা তোর।”

সোনালী আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বললো……

—-” এই মানুষটার বাহিরে যত সুন্দর মন থেকে তার তিনগুণ খারাপ। বাজে লোক একটা। আমি তো এইটার প্রতিশোধ নিয়েই ছাড়বো।”

ইতি আর আরিয়ান মিলে সোনালীকে খাটে শুইয়ে দেয়। হৃদয় কিছুক্ষন গল্প করে চলে যায়। সোনালী ও ইতি জেগে জেগে কথা বলছে। অন্যরুমে আরিয়ান ও হৃদয় শুয়ে আছে…….

—-” হৃদয় ভাইয়া কিন্তু খুব ভালো আর মিশুক তাই না ইতি?”

—” ঘোড়ার ডিম। জানিস আজ সারাদিন আমার সাথে ঝগড়া করছে আস্ত একটা বজ্জাত। লেখক ভাইয়ার মত।”

—” লেখক আরিয়ানের থেকে অনেক ভালো হৃদয় ভাইয়া। একটু আকটু ওই আরিয়ানের মত স্বভাব কজ ছোট থেকে তো একসাথে আছে।”

—” ওই বজ্জাত গুলার কথা বাদ দে এখন বল তোর শরীল কেমন?”

—” হুম মোটামুটি ভালোই আছি। আমার জন্য আজ তোরও সমস্যা হচ্ছে তাই না? বাসায় না জানি কি হচ্ছে সবার।”

সোনালী চিন্তিত সুরে বললো তখন ইতি বললো…..

—” বাসার সব আমি ম্যানেজ করে ফেলেছি। আর তোর জন্য আমি শাস্তি পাচ্ছি না। ওই আকাম দুইজন করছি তাই শাস্তি পাচ্ছি।”

—” দেখিস আমি ওই আরিয়ান নাকি চারিয়ান ওকে ঠিক দেখে নিবো জানে না কার পিছনে লেগেছে ও।”

—” আগে দোয়া কর যেনো আমরা বেঁচে যাই পরে না হয় ওদের কথা ভাববো। শুয়ে পড় সকাল হতে এখনও তিন ঘণ্টা বাকি।”

—” হুম।”

ইতি সোনালীকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে।

।।

।।

।।

।।

অন্যদিকে…….

হৃদয় এক পা আরিয়ানের উপর রেখে শুয়ে আছে। আরিয়ানও তার এক পা হৃদয়ের উপর। হৃদয় তখন বললো……

—-” ব্রো তোর মনে কি ভাবির জন্য কোনো ফিলিংস নাই। নাকি শুধু প্রতিশোধের জন্য এমন করছিস?”

—-” আমি জানি না। ওর প্রতি মাঝে মাঝে আমার এক অন্যরকম অনুভুতি সৃষ্টি হয় কিন্তু প্রতিশোধটা বেশি। ”

—-” প্রতিশোধ ছাড়া আর কিছু হবে নাকি তোর? সব সময় তো খুন ছাড়া গল্প লিখতে পারিস না তাহলে মনে কেমনে রোমান্টিক কিছু থাকবে। কত করে বলছি একটা রোমান্টিক গল্প লেখ কিন্তু না যখনই একটু রোমান্টিক মুড হয় তখনই তোর গুলি, ছুরি এইগুলো দিয়ে শেষ করে ফেলিস। আস্ত আনরোমান্টিক তুই।”

—” হয়তো ভালোবাসার কেউ আসে নাই তাই রোমান্টিকতার ছোঁয়া পাই নি।”

—” হো বুঝছি ঘুমা এখন।”

—” তুইও ঘুমা।”

।।

।।

।।

।।

সকাল সাড়ে নয়টা। আরিয়ান হৃদয় শুয়ে আছে। সোনালী দেখলো ইতিও ঘুমিয়ে আছে তাই না ডেকে ও রুম থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে বসে রইলো…….

—-” শরীলটা বড্ড খারাপ লাগছে। কেউ কারো সাথে এমন কিভাবে করে একটুও কি কষ্ট হয় নি। মানছি আমি দোষ করেছি এর জন্য তো ক্ষমা আমি চেয়েছি তাই বলে এমন করবে। গল্প যেমন লিখে বাস্তবে তার একশো গুন খারাপ।”

—-” আমি জানি আমি খারাপ মাইক লাগিয়ে বলতে হবে না।”

সোনালী পিছন ফিরে দেখলো আরিয়ান দাঁড়িয়ে আছে। আরিয়ানকে দেখে সোনালীর খুব লজ্জা লাগছে কেননা আরিয়ান সেন্টু গেঞ্জি পরে আছে আর প্যান্ট।

—” আপনি এইভাবে এসেছেন কেনো?”

আরিয়ান একটা বোতল বের করে পানি পান করে বললো……

—-” কিভাবে এসেছি আমি?”

—-” ওই যে সেন্টু গেঞ্জি পরে চলে আসছেন।”

—-” আর বলো না কি গরম তাই এইটা পরেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। বাই দা ওয়ে তোমার শরীল এখন কেমন?”

—” শরীলের কথা আপনাকে জানতে হবে না। আপনি যেমন চেয়েছিলেন তেমন হয়েছে ।”

—” অ্যাকচুয়ালি আমি বুঝতে পারেনি ওষুধের পরিমাণ এতটা বেশি হয়ে যাবে।”

—” তার মানে লেখক আরিয়ান চৌধুরী ক্ষমা চাচ্ছে আমার কাছে?”

—” আমি কি একবারও বলেছি আমি ক্ষমা চাচ্ছি?”

—” নাহ বলেন নি বাট ভুল তো স্বীকার করেছেন।”

—” ভুল স্বীকার করা আর ক্ষমা চাওয়া এক নয়।”

—” এইসব কথা আপনার কাছ থেকেই মানায়।”

সোনালী চলে যেতে নিলে আরিয়ান সোনালীর হাত ধরে ফেলে…..

—” আমাকে টাচ্ করার অধিকার কে দিয়েছে আপনাকে?”

—-” তুমি আমার বিয়ে করা বউ তোমাকে টাচ্ করার সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে।”

—-” আমি মানি না এই বিয়ে।”

—” মানা না মানা তোমার ইচ্ছা। আমি বিয়ে করেছি তাই আমার বউয়ের সাথে যা ইচ্ছা আমি করবো তুমি বলার কে?”

—-” মামার বাড়ির আবদার পেয়েছেন নাকি?”

—-” উহু স্বামী হওয়ার আবদার।”

কথাটা বলেই সোনালীর হাত টান দিয়ে সোনালীকে বুকের সাথে মিশিয়ে নেয় আরিয়ান। সোনালীর চুলে নাক ডুবিয়ে বলতে থাকে……

—” একটু আগে হাত ধরেছিলাম তার জন্য কত কিছু বলেছো এখন যে কাছে টেনে নিলাম কিছু বলো?”

—-” এইটা কিন্তু ঠিক হচ্ছে না মিস্টার আরিয়ান।”

—-” তোমার সাথে আমার সম্পর্ক বৈধ সম্পর্ক সো যাই হবে অবশ্যই ঠিক হবে।”

—-” বিয়েটা আমার বিরুদ্ধে হয়েছে।”

—” যেভাবেই হোক হয়েছে তো?”

আরিয়ান সোনালীর চুলে নাক ডুবিয়ে যখন ঘাড়ের কাছে থুতনি রাখতে যাবে ঠিক তখনি হৃদয় এসে বললো……

—-” ব্রো কোথায় তুই?”

হৃদয় সামনে এমন একটি দৃশ্য দেখে সাথে সাথে উল্টো ঘুরে বললো……

—-” আমি কিছু দেখি নি।”

সোনালী যতই আরিয়ানকে ঘৃনা করুক এমন এক পরিস্থিতিতে যদি কারো সামনে পরে অবশ্যই লজ্জা পাওয়ার কথা। আরিয়ান সোনালী ছেড়ে দিলো সেও কিছুটা লজ্জা পেয়েছে।সোনালী তখন কিছুটা দূরে সরে গিয়ে মাটির দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বললো……

—-” হে আল্লাহ মাটি ফাঁক করো আমি ঢুকে পরি কি লজ্জা।”

—-” ব্রো রোমান্স করবি ভালো কথা বাট জায়গা বুঝে শুনে তো করবি।”

—” আরেহ ওইটা রোমান্স না ওইটা ছিলো!”

—” এত জবাবদিহিতা করতে হবে না। তুই তোর বউয়ের সাথে রোমান্স করবি এত কথা কিসের? শুন এখন কিন্তু ওদের বাসায় দিয়ে আসতে হবে। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে পর।”

হৃদয় আর পিছনে না ফিরেই চলে গেলো। আরিয়ান বোকার মতো দাঁড়িয়ে থেকে সোনালীকে বললো……

—” এইখানে যা আছে তোমার নিয়ে নেও এক্ষুনি বের হতে হবে আর নাস্তা রেস্টুরেন্টে করবো।”

সোনালী শুধু মাথা নাড়ালো। আরিয়ান চলে গেলো।

অন্যদিকে ইতি বসে বসে ফোনে গেমস খেলছিলো কিন্তু হটাৎ করেই ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেলো। তাই সোনালীকে ডাকতে গিয়ে ধাক্কা খেলো হৃদয়ের সাথে……

—-” এই কোন খাম্বারে এইভাবে কাক তাড়ুয়ার মতো দাঁড়িয়ে আছে?”

—” নিজের চোখ নেই আবার অন্যজনকে বলে খাম্বা, কাক তাড়ুয়া।”

ইতি মাথায় হাত দিয়ে চোখ ছোট করে বলে…..

—-” আমি জানতাম এমন অপদার্থের মত কাজ এই আপনি বলদ ছাড়া আর কেউ করবে না।”

হৃদয় যতই হাসি খুশি থাকুক রাগটা তার খুব বেশি। একদম আরিয়ানের মত। ইতি তাকে বলদ বলায় রেগে গিয়ে ইতিকে দেওয়ালের সাথে মিশে ধরে…….

চলবে……

বানান ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আমি রোমান্স মুহূর্ত লেখতে পারছি না। যা লিখেছি খুব কষ্ট লিখেছে অনেকবার ডিলেট পর্যন্ত দিয়েছি। আমার লজ্জা করছে এখন এমন পর্ব লেখার জন্য। তাই আগেই ক্ষমা চাচ্ছে 🙈