মুখোশের_আড়ালে পর্ব-০৮

0
3241

#মুখোশের_আড়ালে
#Writerঃতাসনিম_রাইসা(আরিয়ানা)
#Partঃ8

রাই এখন নিজেকে সামলাতে চেষ্টা করছে,তাকে যে এখন শক্ত থাকতেই হবে,রিতু আপুর আর আমার যে এত বড় সর্বনাশ করেছে তাকে তো শাস্তি পেতেই হবে
এদিকে রাজ আর নীরব মিলে থানায় গিয়ে তাদের চেনা এক পুলিশ এর কাছে সব ঘটনা খুলে বলে আর তাদের প্ল্যানের কথা বলে দিয়ে আসে,রাজ আর নীরব বাসায় ফিরে সবাইকে সবটা জানিয়ে দেয় আর তৈরি থাকতে বলে,সন্ধ্যার দিকে রহিম চাচা এসে রাইয়ের আম্মুকে দুধ দিয়ে যায়,রাজের কথা অনুযায়ী রাইয়ের আম্মু দুধ রেখে রাতে খাওয়া দাওয়া করে,প্ল্যান অনুযায়ী রাই ওর মা বাবার সাথে আলাদা রুমে আছে,আর মিমি রাইয়ের পোশাক পরে রাইয়ের বিছানায় শুয়ে পরে,নীরব আর রাজ রাইয়ের রুমের বারান্দায় গিয়ে লুকিয়ে পরে যেন কেও টের না পায় যে ওরা ওখানে আছে,ওরা এমন জায়গায় দাঁড়িয়েছে যেখান থেকে রাইয়ের রুমের কিছু অংশ দেখা যায়
এদিকে রাই খুব চিন্তা হচ্ছে মিমির জন্য,ওর জন্য না জানি মিমির কোন ক্ষতি হয়,মিমির কিছু হলে ও মিমির মা বাবাকে কি জবাব দেবে,রাইয়ের ভেতর ভয় কাজ করছে,ওর মিমির কাছে যেতে ইচ্ছে করছে বাট পারছে না যেতে,এই দিকে মিমিরও একি অবস্থা ওর মনের ভেতর ভয় কাজ করছে যদি রাইয়ের মত ওর সাথে খারাপ কিছু হয়,তাও মিমি চায় শয়তানটার শাস্তি হোক যে ওর কলিজার দোস্তের সাথে এমন করেছে,মিমি চুপ চাপ শুয়ে আছে,কখন যে ওর চোখ লেগে এসেছে বুঝতেই পারে নি
রাত প্রায় ২টার কাছাকছি রাই রুমে ক্রমাগত পাইচারি করে যাচ্ছে টেনশনে ওর মাথা ধরে আছে ঘুম আসছে না,এইদিকে ওর মা বাবা ঠিকই নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে,ওর খুব রাগ হচ্ছে বাট কিছু বলতে পারছে না,হঠাৎ রাই ওদের ফ্ল্যাটের দরজা খুলার শব্দ পেল,রাই কিছুটা ভয় পেয়ে যায়,এত রাতে ওদের ফ্ল্যাটের দরজা কে খুলবে,রাজ ভাইয়া নাকি নীরব ভাইয়া রাই ভাবতে থাকে,রাই ওর মা বাবাকে আস্তে আস্তে ডাক দেয়,ওনারা চোখ কচলাতে কচলাতে রাইয়ের দিকে তাকিয়ে দেখে রাইয়ের চোখে মুখে ভয় আর চিন্তার ছাপ

আব্বুঃরাই মা কি হয়েছে তোর?? এরকম ভয় পাচ্ছিস কেন??
.
রাইঃআ_আ_আব্বু কে জানি আমাদের ফ্ল্যাটের দরজা খুলেছে
.
আম্মুঃএত রাতে কে দরজা খুলবে,নীরব আর রাজ তো তোর ঘরে,কিছু হলে তো জানাতো

ওরা ৩জনই চিন্তায় পরে যায়,কে খুলবে এতো রাতে দরজা??ওদের পরিবারের কার তো এতো রাতে দরজা খোলার কথা না তাহলে কে দরজা খুলল,রাইয়ের মিমির জন্য খুব চিন্তা হচ্ছে,ওর কিছু হল নাতো,ও আর কিছু না ভেবে ওর আব্বুকে বলল,

রাইঃআব্বু চলো মিমির কাছে আমার খুব চিন্তা হচ্ছে মিমির জন্য
.
আব্বুঃকিন্তু রাজ নীরব তো কিছু জানাল না,যাওয়াটা কি ঠিক হবে
.
রাইঃআমি যাবো আব্বু প্লিজ

রাইয়ের জেদের কাছে রাইয়ের আব্বু আম্মুকে হার মানতে হল,তারা আস্তে আস্তে রুমের দরজা খুলে,বাহিরে বেরিয়ে দেখে দরজা বন্ধ কেও নেই,ওরা রাইয়ের রুমের দিকে এগিয়ে যাবে এমন সময় মিমির চিৎকার শুনতে পায়,রাই দৌড়ে ওর রুমের কাছে গিয়ে দেখে ভেতর থেকে দরজা অফ করা,রাই ভয় পেয়ে যায় ও মিমিকে ডাকতে থাকে,ও বুঝতে পারছে না কি করবে??ভেতর থেকে ক্রমাগত মিমির চিৎকার আসছে,রাই ওকে ডাকছে বাট কোন সারা পাচ্ছে না,রাইয়ের বাবা নীরব আর রাজকে ডাকছে বাট ওদেরও সারা পাচ্ছে না,কিছু হল না তো ওদের,রাইয়ের বাবা আর কিছু না ভেবেই পুলিশকে কল করে আসতে বলে,রাই মিমিকে ডাকতেই থাকে ভেতর থেকে শুধু মিমির চিৎকার ছাড়া কিছুই আসছে না,হঠাৎ মিমির চিৎকার অফ হয়ে যায়,রাই ভয় পেয়ে যায়,বার বার দরজা ধাক্কা দিতে থাকে বাট ভেতর থেকে লক করা,ওর চাবির কথা মনে পরতেই দৌড়ে ওর আম্মুর রুমে যায় গিয়ে চাবি খুঁজে পায়নি,হঠাৎ মনে পরে চাবি ওর রুমে,রাই আর ভাবতে পারছে না,কান্নায় ভেঙ্গে পরে,আজ ওর জন্য মিমির এই অবস্থা,ভয়ে ওর হাতপা কাঁপছে
কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে দরজা ভেঙ্গে ভেতরে এমন কিছু দেখল যা ওরা কল্পনাও করতে পারে নি,রাই সেখানেই মিমি বলে চিৎকার দিয়ে বসে পরল,মিমির দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছে,গায়ে কোন কাপড় নেই,পুরো ঘরে রক্তে ভরা নীরব আর রাজ রক্তাত্ত অবস্থায় নিচে পরে আছে,

চলবে___