মুগ্ধতায় তুমি পর্ব-১+২

0
1591

#মুগ্ধতায়_তুমি
#পর্বঃ১
#Saiyara_Hossain_Kayanat

দীর্ঘ দুইবছর পর প্রক্তনের সামনাসামনি হলাম। এতো দিন পর ভালোবাসার মানুষকে চোখের সামনে দেখে মনে হচ্ছে হৃদপিণ্ডে কেউ যেন হাতুড়ি পেটাচ্ছে। পুরনো সব কথা মনে পরতেই তিক্ততা যেন সব অনুভূতি গুলোকে চাপা দিয়ে পরক্ষণেই রাগ আর ঘৃণায় পরিনত করলো সকল অনুভূতি।

প্রাক্তনকে দেখেও না দেখার মতো করে পিছন ঘুরে উল্টো পথে হাটা শুরু করলাম। পিছন থেকে তার ডাক শুনতে পেয়েও পা থামালাম না রাগে দ্রুত হেটে যাচ্ছি বাসের দিকে। প্রচন্ড রাগ হচ্ছে এই মুহূর্তে। খুব ভালো একটা মুড নিয়ে বাসা থেকে বের হয়েছিলাম মামুর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে।এই প্রথম একা একা জার্নি করে মামুর বাসায় যাবো ভেবেই মন খুশিতে নেচে উঠেছিল। কিন্তু আমার খুশি তো আবার বেশিক্ষণ আমার সাথে থাকতে নারাজ তাই রাস্তায় প্রাক্তনের সামনে পরে মুডের বারোটা বেজে গেলো। আর পুরনো স্মৃতি গুলোও যেন মনের দরজায় কড়া নাড়ছে।

হাটতে হাটতে বাসের সামনে এসে পরলাম। বাসে উঠে টিকিট নাম্বার অনুযায়ী জানালার পাশে বসে পরালাম। ভাইয়াকে আগেই বলে দিয়েছিলাম জানালার পাশের সিটই আমার লাগবেই আর না হলে এই বাসে যাবো না। যাক সয়তান ভাইটা তাহলে এবার আমার কথা সুন্দর মতো রাখলো।

কিছুক্ষণ বাহিরে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে রইলাম। চোখের সামনে পুরনো সব কথা ভেসে উঠছে। ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে পাওয়া কষ্ট, অবহেলা, ধোকা সব মনে পরে যাচ্ছে নিজেকে খুব দুর্বল মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে। অসহায় হয়ে পরছি নিজের অতীতের সব বিষাক্ত স্মৃতির কাছে। এতো দিন ধরে নিজেকে শক্ত করে রেখেছি এখন এমন দুর্বল হয়ে পরলে চলবে না কোনো ভাবেই।

অতীত নিয়ে ভাবা বন্ধ করে চুপ করে চোখ বন্ধ করে কানে হেডফোন গুঁজে দিলাম।একটু পর মনে হলো কেউ আমার পাশের সিটে বসলো কিন্তু এই মুহূর্তে চোখ মেলে তাকে দেখার কোনো ইচ্ছেই আমার হচ্ছে না। তাই আগের মতো করেই সিটে শরীর এলিয়ে দিয়ে বসে আছি। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠার ফলে চোখে ঘুম নেমে এলো খুব দ্রুত।

হঠাৎ করেই মাথায় প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করায় ঘুম যেন ফুরুত করেই উধাও হয়ে গেল। চোখ মেলে তাকাতেই সামনে এক বিশাল আকারের পুরুষালী মাথা দেখতে পেলাম। হ্যাঁ….. চুল দেখে তো মনে হচ্ছে পুরুষই কিন্তু এভাবে ঝুঁকি আছে কেন আমার দিকে!! আমার ভাবনা শেষ হওয়ার আগেই লোকটি নিজের জায়গায় চলে গেলেন। আমি চোখ মুখ কুচকে মাথায় হাত ঘষতে ঘষতে কিছু বলার জন্য মুখ খুলবো তার আগেই অচেনা লোকটি এক নাগাড়ে বলা শুরু করলেন….

অচেনা – সরি মিস অর মিসেস যাইহোক…. আসলে জানালা দিয়ে ধুলোবালি আসায় জানালা বন্ধ করার জন্য চেষ্টা করছিলাম আর ঠিক সেই মুহূর্তেই বাস ব্রেক কষলো যার ফলাফল সরূপ আপনার ঘুম ভেঙে গেল। I am extremely sorry for thet.. Soo sorry.
(এক নিশ্বাসে কথা গুলো বলে বড় একটা শ্বাস নিলেন অচেনা লোকটা)

আমি – It’s okay. এতো উত্তেজিত হতে হবে না। আমি বুঝতে পেরেছি ব্যাপারটা।

অচেনা- মাথায় কি বেশি ব্যথা লেগেছে না-কি!!!

আমি- না ঠিক আছে।

অচেনা – আচ্ছা। তো কোথায় যাচ্ছেন আপনি?

আমি – বাস তো একটা নির্দিষ্ট জায়গাতেই যাচ্ছে তাই আমি আলাদা করে নতুন কোনো জায়গায় তো যেতে পারবো না তাই না!!

অচেনা – ওহহ তাই তো.. আসলে খেয়াল ছিলো না।

আমি কিছু না বলে চুপ করে বসে আছি। বিরক্ত লাগছে কাঁচা ঘুম ভাঙার কারনে। এমনিতেই ঠিকঠাক ঘুম না হলে আমার মাথায় যন্ত্রণা শুরু হয়। আবার কিছুক্ষণ পরেই অচেনা লোকটা ল্যাপটপে ভিডিও কলে হয়তো অফিসের কোনো কথা বলছে। ওনাদের কথাবার্তায় যেন আমার বিরক্ত লাগা হাজার গুণ বেরে গেল তরতর করেই। প্রচন্ড বিরক্ত হয়ে নিজের কান থেকে হেডফোনটা খুলে ওনার কাছে দিলাম।

আমি- এটা নিন আর আস্তে আস্তে কথা বলুন।
(এতো টুক বলেই মুখ ফিরিয়ে জানালার বাহিরে দৃষ্টি দিলাম।)

লোকটি কথা শেষে হেডফোন আমাকে ফিরে দিয়েলেন।

অচেনা- আসলে খুবই জরুরি কল ছিলো তাই বাসেই কথা বলতে হলো। আপনি নিশ্চয়ই বিরক্ত হয়েছেন।

আমি- নাহ ঠিক আছে। (বিরক্ত হয়েও ভদ্রতার জন্য তা প্রকাশ করলাম না)

অচেনা- আপনার কি মুড অফ নাকি সবসময় এভাবেই কথা বলেন??

আমি- এভাবে মানে কিভাবে? কি বুঝাতে চাচ্ছেন??

অচেনা- মানে এইতো কম কথা বলেন আর যতটুকু বলেন মনে হয় খুব বিরক্ত হয়ে বলেন।

আমি- না আসলে একটু মাথা ব্যথা তাই আরকি…

অচেনা- ওহহ

আবার দু’জন চুপ করে নিজেদের মতো ব্যস্ত হয়ে পরলাম। আমি বাহিরের প্রকৃতি অনুভব করতে ব্যস্ত আর উনি ফোন স্ক্রোল করতে।
বাস থেমে গেল কিছু সময় বিরতির নেয়ার জন্য। প্রায় সবাই নেমে গেলেন যে যার প্রয়োজনে।

অচেনা – বাস থেকে নামবেন না?? মানে কিছু খেতে যাবেন না???

আমি- না.. ভালো লাগছে না। এখানেই ঠিক আছি।

অচেনা- ওহহ কিছু লাগলে আমাকে বলতে পারেন নিয়ে আসবো।

আমি- না আপনার কষ্ট করতে হবে না।

লোকটা নেমে গেলেন বাস থেকে। আর আমি চোখ বুজে সিটে হেলান দিয়ে বসে আছি। চোখ মেলে তাকাতেই আমি হতবাক বাহিরে অন্ধকার হয়ে গেছে। তার মানে আমি বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘুমিয়ে কাটালাম!!! ভাগ্যিস বাস পৌঁছাতে আরও পথ বাকি আছে নাহলে আমাকে একা বাসেই থাকতে হতো।

পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখলাম লোকটা ঘুমিয়ে আছে। এতোক্ষন তাকে ভালো করে খেয়াল না করলেও এখন খেয়াল করলাম। লোকটা দেখতে বেশ ফর্সা এতোটা ফর্সা ছেলেদের আমার একদমই ভালো লাগে কেমন যেনো সাদা বিড়াল মিনে হয়। গালে হাল্কা ছোটো ছোট খোচা দাঁড়ি, চুল গুলো একদম সিল্ক কপালের সামনে এসে পরে আছে। নাহ…. একটা অচেনা লোককে এভাবে পর্যবেক্ষন করা একদমই উচিত না। চোখ ফিরিয়ে নিব তার আগেই উনি চোখ মেলে তাকালেন আর চোখাচোখি হয়ে গেল।

চলবে….

#মুগ্ধতায়_তুমি
#পর্বঃ২
#Saiyara_Hossain_Kayanat

দুজনের চোখাচোখি হতেই লজ্জায় আমি অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে ফেললাম। ইসসস লোকটা কি ভাববে এখন আমার এভাবে তাকিয়ে থাকা নিয়ে!!!

অচেনা- সরি ঘুমিয়ে পরে ছিলাম তাই বুঝতে পারিনি বাস থেমে গেছে।

আমি- হুম
(মনে মনে আল্লাহকে অনেকে ধন্যবাদ দিলাম। ভাগ্য ভালো বাস থেমে গেছিলো না হয় আমাকে কতোটা-ই না লজ্জায় পরতে হতো।)

লোকটা সিট থেকে উঠে দাড়াতেই আমিও সিট থেবে বের হয়ে গেলাম। বাস থেকে নামতে গিয়েই পরলাম আরেক ঝামেলায় বাহিরে খুব ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। এক হাতে লাগেজ আরেক হাতে ছাতা নিয়ে হাটা শুরু করলাম। কোনো রিকশা বা সিএনজি কিছুই দেখা যাচ্ছে না দূর দুরান্ত পর্যন্ত।
রিকশা খুজতে খুজতে আনমনে হাটছিলাম হঠাৎ কেউ একজন আমার হাতে হেচকা টান দিয়ে কিছুটা দূরে নিয়ে গেলেন। আমার মস্তিষ্ক কিছু একটা ভাবার আগেই আমার পাশ দিয়ে দ্রুত স্পিডে একটি গাড়ি চলে গেল। আরেকটু হলেই হয়তো গাড়ির ধাক্কায় আমার প্রান পাখি উড়াল দিয়ে আকাশে চলে যেত। লোকটা আমার জান বাচিঁয়ে দিল। ধন্যবাদ বলার জন্য তার দিকে তাকাতেই দেখলাম উনি তো বাসের সেই অচেনা লোকটা।

অচেনা- রাস্তায় কি দেখাশুনে হাটতে পারেন না। আরেকটু হলেই তো মরে লাশ হয়ে যেতেন যদি আমি না থাকতাম।

আম- ধন্যবাদ। আসলে গাড়ি খুজতে খুজতে কখন রাস্তায় এসে পরেছি খেয়াল করিনি।

বৃষ্টিতে উনি পুরো ভিজেই গেছে তাই আমার ছাতাটা ওনার মাথায় দিলাম। দুজনেই রিকশার খোজার জন্য চুপচাপ এক ছাতার নিচে পাশাপাশি হেটে চলছি। কারও মুখেই কোনো শব্দ নেই শুধু বৃষ্টির শব্দ আর বিদ্যুৎ চমকানোর শব্দ শোনা যাচ্ছে।
অবশেষে একটা রিকশা পাওয়া গেলো। তবে দ্বিধায় পরে গেলাম এক রিকশায় কে উঠবে আমি না-কি ওই অচেনা লোক!!! পরক্ষণেই উনি বলে উঠলেন…

অচেনা – কি এতো ভাবছেন আপনি উঠে পরুন। অনেক রাত হয়ে যাচ্ছে বাহিরে থাকা আপনার জন্য সেফ না।

আমি- কিন্তু আপনি?

অচেনা- আমাকে নিয়ে ভাবতে হবে না আমি কিছু একটা মেনেজ করে নিব।

আমি- আচ্ছা… তাহলে ছাতাটা রাখুন।

(ছাতাটা ওনার হাতে ধরিয়ে দিয়ে রিকশায় উঠে চলে আসলাম। মামুর বাসায় এসেই এতো গুলা বকা খেলাম। এখানে পৌঁছে কেন তাদেরকে ফোন দিলাম না। একা একা কেন আসতে গেলাম ব্লা ব্লা ব্লা…..)

সবার বকা খেয়ে রুমে গেলাম। মামুর বাসায় আমার জন্য আলাদা একটা রুম বরাদ্দ থাকে সময়ের জন্য। কারণ আমি কারও সাথে রুম শেয়ার করতে পারি না। আর আমি হলাম বাড়ির একমাত্র মেয়ে সবার খুব আদরের। আমার সব কাজিনই ছেলে। তাই সবাই আমাকে এতোটা আদর করে যে আমাকে কখনো কোনো কিছুতে কষ্ট পেতে দেয় না।

(আমি অনন্যা। অনার্সে ভর্তি হয়েছি কিছু দিন হলো। বাবা মায়ের দুই মাত্র সন্তানের মধ্যে ছোট সন্তান আমি। আমার তিন বছরের বড় ভাই শাকিল আস্ত এক সয়তান সারাদিন আমার পিছনে লেগে থাকাই ওর প্রধান কাজ। অর্ক ভাইয়ের বিয়ে উপলক্ষেই মামুর বাসায় আসা। তবে বিয়ের আরও অনেক সময় বাকি।)

কিছুক্ষণ পর ফ্রেশ হয়ে ড্রইংরুমে গেলাম। মামু, মামানি আর অর্ক ভাইয়ের সঙ্গে আড্ডা দিলাম বেশ অনেক সময় ধরে। ওদের সবার সাথেই আমার বন্ধুত্বসুলভ সম্পর্ক। (মামুর একমাত্র ছেলে অর্ক। আমার থেকে ৫ বছরের বড়। আর ভাই আমার দেখতে মাশাল্লাহ খুব হ্যান্ডসাম)

আড্ডা শেষে ডিনার করে রুমে এসে পরলাম। বোরিং লাগছে তাই ব্যালকনিতে চলে আসলাম বাহিরে এখনো ঝিরিঝিরি বৃষ্টি হচ্ছে। চারপাশ মুগ্ধতা ছেয়ে আছে। বৃষ্টির পর যেন প্রকৃতির রূপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

বৃষ্টি দেখতে দেখতে হঠাৎ করেই বাসের সেই অচেনা লোকটার কথা মনে পরে গেল। এতটা সময় একসাথে পথ জার্নি করার পরেও একজন আরেকজনের নামটাই জানতে চাইনি আমরা। কি অদ্ভুত ব্যাপার!!!

সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে ডাইনিং টেবিলে নাস্তার জন্য আসলাম।

আমি- গুড মর্নিং মামু।

মামু- গুড মর্নিং মামুনি বসো নাস্তা করবে।

আমি চেয়ারে বসতেই যাব তখনই অর্ক ভাইয়া এসে আমার মাথায় আস্তে একটা থাপ্পড় মেরে আমার চেয়ারে বসে পরলো।

অর্ক – কিরে পিচ্চি দাঁড়িয়ে আছিস কেন নাস্তা করবি না!!

আমি- বসতে আর দিলা কই তুমিই তো বসে পরলা আমার চেয়ারে। (রাগ দেখিয়ে বললাম)

অর্ক – ওহহহহহ তাই না-কি?? চেয়ারে কি তোর নাম লেখা আছে??

আমি রেগে মামু বলে চিৎকার দিতেই মামু অর্ক ভাইকে এক রামধমক দিয়ে চুপ করে দিলেন।

নাস্তা করে ফোন স্ক্রোল করতে করতে রুমে যাওয়ার পথে মনে হলো গেস্ট রুমের সামনে কেউ দাড়িয়ে আছে। কিছু দূর যেতেই থমকে দাঁড়িয়ে পরলাম মনে হলো বাসের সেই অচেনা লোকটাকে দেখতে পেলাম। মনের ভুল ভেবে যাওয়ার জন্য পা আগাতেই পিছন থেকে কারও কণ্ঠ ভেসে আসলো।

অচেনা – এইইই আপনি বাসের সেই মেয়েটা না!!! এখানে কি করছেন?? আর আমাকে দেখেও এভাবে চলে যাচ্ছিলেন কেন??

আমি অবাক হয়ে ওনার দিকে তাকিয়ে আছি। উনি কথা বলছেন এটা কি তাহলে মনের ভুল না!! আসলেই অচেনা লোকটা মামুর বাসায়!!!

অচেনা – আরে কিছু না বলে এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন??

আমি- না মানে আপনি এখানে কি করছেন???

অচেনা – আমিও একই প্রশ্ন আপনাকে করেছিলাম।

আমি – এটা আমার মামার বাসা আমি এখানে থাকাটাই স্বাভাবিক.. কিন্তু আপনি??

অচেনা- এটা আমার ফুপির বাসা মানে অর্কের মামাতো ভাই আমি।

আমি – ওহহহ কিন্তু আপনাকে আগে তো কখনো এ বাসায় দেখিনি….

অচেনা- আসলে আমি দেশের বাহিরে ছিলাম তাই কখনো এ বাসায় আসা হয়নি।

আমি- ওহহ

আর কিছু না বলে আমি চুপচাপ নিজের রুমে এসে পরলাম। রুমে আসতেই মনে পরল আমার এবারও একেঅপরের নাম জানতে চাইনি।

বিকেলে আমি আর অর্ক ভাই ছাদে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখনই অচেনা লোকটা ছাদে আসলেন। অর্ক ভাইয়া ওনাকে দেখে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন।

অর্ক – পিচ্চি ও হচ্ছে শুভ্র আমার মামাতো ভাই। (আমার মাথায় হাত রেখে) এই হচ্ছে আমাদের পিচ্চি মানে অনন্যা আমার ফুপির মেয়ে।

শুভ্র – আরে আমি এই মেয়েকে চিনি আমরা এক বাসেই ছিলাম… অনেক ঘুমকাতুরে মেয়ে। বাসে সারা পথ ঘুমিয়েই ছিলো। এতো ঘুমকাতুরে যে দেখে মনে হয় উনি দুনিয়ায়র মধ্যেই নেই।
এই অসভ্য লোকের কথা শুনে রাগে আমার পিত্তি জ্বলে উঠল। আমি এক প্রকার চেচিয়ে বলে উঠলাম….

আমি- এই আপনি কি বলছেন এইসব!!! না জেনে শুনে বেশি কথা বলতে আসবেন না।

শুভ্র – আমি নিজের চোখে দেখিছি আপনি মরার মতো পরে পরে ঘুমাচ্ছেন বাসে। আর আপনি তো রাস্তায় হাটার সময়ও ঘুমান তাই তো আশেপাশে গাড়ি চলছে কি না তা-ও দেখেন না।

ওনার কথা শুনে রাগের মাত্রা তরতর করে বেরে চলছে। আমি কিছু একটা বলতে নিব তার আগেই অর্ক ভাই বলা শুরু করলেন।

অর্ক – আরে কি শুরু করেছিস তোরা দুজন। প্রথম পরিচয়েই এই রকম নির্লজ্জের মতো ঝগড়া শুরু দিয়েছিস কেন আজব।

ভাইয়ার কথা শুনে রেগেমেগে ছাদ থেকে নিচে নেমে আসলাম। এই মুহূর্তে ওদের সাথে ঝগড়া করতে একদমই ইচ্ছে হচ্ছে না বিশেষ করে ওই অসভ্য লোকাটাকে তো দেখতেই ইচ্ছে করছে না। নামটা কি সুন্দর শুভ্র… আর কথাবার্তা একদম অসভ্যের মতো। একটা অচেনা মেয়ের সাথে কেও এভাবে ঝগড়া করে????

চলবে….