#মেঘের_পালক_চাঁদের_নোলক
#পর্ব_০৬
#অধির_রায়
শাওন নিধিকে আইডিয়াল গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে ভর্তি করে দেয়৷ নিধির ছোট থেকেই ইচ্ছা সে ডাক্তার হবে৷ সেজন্য নিধিকে নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি করে দেয়৷ শাওনের প্রতি যতটা রাগ ছিল সব উধাও হয়ে যায়৷ তবুও চোখের সামনে ভেসে উঠে শাওন একজন চরিত্রহীন লোক৷ মন থেকে কিছুতেই সিংহের মতো ঝাঁপিয়ে পড়া রুপ যাচ্ছে না। তার থেকে সব সময় দূরে থাকতে হবে৷ নিধি চরিত্রহীন লোকদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে৷ এসব চরিত্রহীন লোকের জন্য সমাজে মেয়েদের সম্মান নেই৷ অথচও যার কারণে মেয়েরা সম্মান হারালো তাকে সমাজের মানুষ মাথায় তুলে থাকে৷ সমাজের মানুষের দোষ দেওয়া রসিকতা। মূলত সমাজটাই বেহায়া। ছেলেদের দোষ দেখে না৷ সব দোস নারী জাতির৷
শাওন বই, খাতা, কলম, লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজনী সামগ্রী, স্কুল ব্যাগ, স্কুল ড্রেস কিনে দিল৷ নিধি মুগ্ধ নয়নে সবকিছু দেখে যাচ্ছে৷ চোখের কোণায় জল চিকচিক করছে৷ এই দিনটার জন্য কত অপেক্ষা করেছে! শাওন মুগ্ধ নয়নে নিধির দিকে তাকায়৷ এসব হাতে পেয়ে যেন বাচ্চাদের মতো লাফাচ্ছে৷ মনের চিলেকোঠারে আনন্দের উল্লাস বাসা বেঁধেছে। যা শাওনের দৃষ্টিকে আটকে রেখেছে৷ শাওন ডান হাত বুকের পা পাশে রেখে বিরবির করে বলল,
“পিচ্চি নিধি আমার মনে রয়ে গেছো৷ তোমাকে আমার মনের রানী করে রাখব৷ খোলা হওয়ায় মুগ্ধ নয়নে তোমায় দেখে তৃষ্ণা মেটাব৷ তুমিময় সঙ্গী হয়ে সারাজীবন কাটাব৷ সৃষ্টিকর্তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। উনি নিজ হাতে আমায় কাছে তোমাকে পাঠিয়েছেন৷”
নিধি একে একে সবকিছু বুঝে নিল৷ এত পরিমাণে উত্তেজিত কথা বলতে পারছে না৷ তবুও আনন্দের সাথে ধীর গলায় বলে উঠল,
“আমি কি আজ থেকেই ক্লাস করব?”
শাওন প্যান্টের পকেটে হাত গুছে ছোট করে জবাব দিল,
“না। কাল থেকে ক্লাস করবে৷ আমি তোমাকে বাড়িতে ছেড়ে অফিসে যাব৷ আর হ্যাঁ কাল থেকে সকাল আটটার আগে ঘুম থেকে উঠতে হবে৷”
নিধি কিঞ্চিৎ রাগ নিয়ে বলল,
“আমার কর্ণে মুয়াজ্জিনের কন্ঠের পবিত্র ধ্বনি আযান আসতেই ওঠে পড়ি৷ সালাত আদায় করি৷ কুরআন তেলওয়াত করি৷ আল্লাহকে স্মরণ করে নতুন দিনে পা রাখি। কাজ ছিল না সেজন্য ঘুমিয়ে ছিলাম৷ এখন আর ঘুমাব না৷ পড়তে বসব৷”
শাওন চৌধুরী মুচকি হেঁসে জবাব দিল,
“আচ্চা বাবা যাওয়া যাক৷ অফিসে অনেক কাজ আছে৷”
শাওন নিধিকে বাড়ির গেইটে পৌঁছে দেয়৷ নিধি চোখের আড়াল না হওয়া অব্দি তার দিকে অবাধ্য নেত্রদ্বয় নিবন্ধ করে রাখে৷ নিধি সদর দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে৷ মুগ্ধ শিস বাজিয়ে নামছে৷ চোখে চশমা, হাতে গোলাপ ফুলের তোরা৷ নিধিকে সামনে পেয়ে শিস বাজানো বন্ধ করে৷ মুচকি হেঁসে বলল,
“তোমার ভাবির সাথে দেখা করতে যাচ্ছি৷ যাবে আমার সাথে?”
নিধি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল সে যাবে না৷ মুগ্ধ নিধিকে প্রদক্ষিণ করে বলল,
“লেখাপড়ায় খুব মনোযোগী হতে হবে৷ আমার মতো হলেই চলবে৷ আমি সব সময় শাওনের টা দেখে লিখতাম৷ আমার লেখাপড়া ভালো লাগে না৷ কাজও তেমন ভালো লাগে না৷ শাওন সারাদিন কাজ করে আর রাত হলে…”
মুগ্ধ বলতে গিয়েও থেমে গেল৷ নিধি পরেরটুকু জানার জন্য অধীর আগ্রহে তাকিয়ে থাকে মুগ্ধর দিকে৷ নিধি ঠোঁট প্রসারিত করে বলল,
“শাওন চৌধুরী রাত হলেই কি করে ভাইয়া? উনি কি রাতের বেলাও কাজ করেন?”
মুগ্ধ নিধির প্রশ্নেই উত্তর পেয়ে গেল৷ নিধির কাঁধে হাতে দিয়ে সোফায় বসিয়ে দিল৷ মিহি কন্ঠে বলল,
“অনেক কাজ করে৷ তুমি ধীরে ধীরে সব জানতে পারবে৷ আমি চললাম৷ তোমার ভাবী রাগ করবে দেরি হলে৷”
মুগ্ধ আর এক মুহুর্ত দাঁড়াল না৷ দ্রুত পায়ে চলে গেল৷ নিধি সোফায় বলে ভাবতে থাকল,
“মুগ্ধ ভাইয়া কি বুঝাতে চেয়েছেন? আমি কি জানতে পারব?”
________________________
নিধি গরম তেল নিয়ে চলে আসল শায়লা চৌধুরীর রুমে৷ নিধি নিজের কাজ ভুলে যায়নি৷ নিধির বর্তমানে উদ্দেশ্য হলো শায়লা চৌধুরীকে সুস্থ করা৷ একজন সঙ্গীর অভাবে তিনি পা ফেলতে পারেন না৷ ডাক্তার উনাকে বলেছেন হাঁটার চেষ্টা করতে৷ কিন্তু হাঁটার জন্য কাউকে পাননি৷ যার উপর নির্ভর করে হাঁটবেন৷ নিধি গরম তেল পায়ে মালিশ করে বলল,
“ম্যাম আপনাকে হাঁটার চেষ্টা করবে হবে৷ আপনি নিজে থেকে চেষ্টা না করলে হেরে যাবেন৷ সবার আগে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে৷”
শায়লা চৌধুরী নিধির মাথায় হাত রেখে উৎফুল্ল কন্ঠে বললেন,
“আমার এত খেয়াল রেখে তোমার কি হবে? তোমার এখন লেখাপড়া করা, স্কুলে, খেলার মাঠে ছুটাছুটি করার বয়স৷ কিন্তু তুমি আমার সেবা করছো কেন?”
শায়লা চৌধুরীর কথা শুনে চুপসে যায় নিধি৷ তবুও পিছপা হয়নি৷ মলিন কন্ঠে জবাব দিল,
“আমার কর্তব্য আপনাকে সুস্থ করা৷ আমি মুগ্ধ ভাইয়াকে কথা দিয়েছি, আপনাকে নিজ পায়ে হাঁটাব। সেজন্য আপনার সকল ওষুধ বুঝিয়ে নিছি৷ কখন কি লাগবে? যারা আমাকে এতকিছু দিচ্ছে তার কাছে এটা তুচ্ছ মাত্র। বোনের মতো ভালোবাসা পাচ্ছি৷ আজ বড় ভাই থাকলে নিশ্চয় এভাবে ভালো বাসত৷”
শায়লা চৌধুরী নিধির কথা শুনে খুশী হলেন৷ নিধি শায়লা চৌধুরীর হাত ধরে বলল,
“আমাকে ধরে উঠার চেষ্টা করেন৷ আর কত এভাবে শুয়ে থাকবেন৷ সার্ভেন্টের উপর নির্ভর করে আর কত চলবেন৷ যারা মেরুদন্ডহীন তারা অন্যের উপর নির্ভর করে৷”
শায়লা চৌধুরী আফসোসের সহিত বললেন,
“এভাবে ভেবে দেখিনি। কেউ আমাকে হাঁটার জন্য উৎসাহ করেনি৷ প্রতিটি সার্ভেন্টের চাওয়া আমি যেন এভাবে সারা জীবন শুয়ে থাকি৷ আমি উঠে দাঁড়ালেই তাদের মহাবিপদ৷ কাজে ফাঁকি দিতে পারবে না৷ এখন মন যা চাচ্ছে তাই করতে পারছে৷”
“এখন কথা না বাড়িয়ে উঠার চেষ্টা করেন৷”
শায়লা চৌধুরী নিধির হাত ধরে অনেক কষ্টে উঠে বসল। কষ্টে মাটিতে পা রাখে৷ কিন্তু পায়ে শক্তি দিতে পারছে না৷ মনের জোড়ের কাছে পায়ের জোড় হেরে যাচ্ছে৷ পায়ে একটু শক্তি পেতেই চিৎকার করে উঠল৷ সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে পড়ল৷ নিধি সযত্নে পা বিছানায় তুলে বলল,
“এভাবে হেরে গেলে চলবে না৷ আজ থেকে আপনাকে রেগুলার চেষ্ঠা করতে হবে৷ তার আগে আপনার পা রেগুলার নাড়াতে হবে৷ যার ফলে পায়ের পেশিগুলো সতেজ হবে৷ ক্রমে ক্রমে শক্তি পাবে৷”
শায়লা চৌধুরীর চোখে পানি টলমল করছে৷ তবুও ঠোঁটের কোণে হাসি৷ তার জন্য কেউ এত ভাবতে পারে কোনদিন ভাবেনি৷ মনে মনে বললেন,
“আমার শাওন হিরা চিনতে ভুল করেনি৷ লক্ষী একটা মেয়ে৷ সবার জন্য কত চিন্তা। আমার ঘর আলোয় আলোকিত করে রাখবে৷”
___________________
নিধি টেবিলেই মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে৷ বই যেখানে সেখানে ছড়িয়ে রাখা৷ শাওন নিধিকে জাগানোর চেষ্টা করছে৷ ঘুমে অনেক বিভোর থাকায় শাওনের ধ্বনি নিধির কর্ণধারে যাচ্ছে না৷ মুগ্ধ রুমে প্রবেশ করতে করতে বলল,
“নিধিকে ছেড়ে দাও৷ আর হ্যাঁ তুমি ডিনার করে শুয়ে পড়ো৷ আমি বাহির থেকে ডিনার করেই এসেছি৷ তিথির কাছ থেকে জানতে পেরেছি নিধি ডিনার করেনি৷ যদি জাগাতে পারো রাতে খেয়ে নিতে বলবে৷”
শাওন নিধির দিকে তাকিয়ে বলল,
“এভাবে ঘুমাবে পিচ্চিটা৷ আর সে খাইনি৷ না খেয়ে ঘুমালে মাঝ রাতে জেগে ক্ষুধায় ছটফট করবে৷ নিজেও খাবে না৷ কাউকে কিছু বলতেও পারবে না।”
“হুম তুমি ঠিক বলেছো। আমি জাগানোর চেষ্টা করি৷ এভাবে ডাকলে উঠবে না৷ কোন চিন্তা নেই৷ সেজন্য তার ঘুম গভীর৷”
মুগ্ধ আরও কিছু বলতে যাবে তার আগেই মুগ্ধর ফোনে বেজে উঠে৷ মুচকি হেঁসে সেখান থেকে চলে যায়৷ শাওন বুঝে যায় এখন গার্লফ্রেন্ড সময় দিবে৷ শাওন ছোট করেই নিধির গালে থাপ্পড় দিল৷ নিধি ঘুম ঘুম নয়নে একবার তাকিয়ে আবার চোখ বুঝে নিল৷ শাওন নিধির গালে দুই হাতে রেখে উঁচু স্বরে বলল,
“নিধি! নিধি!”
শাওনকে সামনে দেখতে পেয়ে চট করেই উঠে পড়ল৷ আমতা আমতা করে বলল,
“আপনাকে বলছি আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না৷ কারণে অকারণে আমায় স্পর্শ করা আমি মোটেও পছন্দ করিনা৷”
শাওন অপরাধী কন্ঠে বলল,
“যার জন্য করলাম চু/রি সে বলে চো/র। রাতে খেয়ে তারপর ঘুমাও৷ টেবিলে কেউ ঘুমায় না৷ আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি৷”
শাওনের কথা নিধি বুঝতে পারল না৷ নিধি ওয়াসরুম থেকে মুখে পানির ছিঁটা দিয়ে বের হয়৷ শাওন নিধির জন্য খাবার নিয়ে বসে আছে৷ নিধির দিকে এক পলক তাকিয়ে ক্ষোভ নিয়ে বলল,
“দাঁড়িয়ে না থেকে খেতে আসো৷ আমি পিচ্চিকে নিজ হাতে খাইয়ে দিব৷”
নিধি অবাক দৃষ্টিতে শাওনের দিকে তাকায়৷ মিহি কন্ঠে বলল,
“আমার হাত আছে। আমি অন্যের হাতে মানে শাওন চৌধুরীর হাতে খাব না৷”
শাওন রাগ নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“আমি অন্ধ নয়৷ আমি দেখতে পারছি তোমার হাত আছে৷ তবে আমার হাতেই রাতে খেয়ে হবে৷ এই বাড়িতে থাকতে হলে আমার কথা মেনে চলতে হবে৷”
নিধি কথা বাড়াল না৷ চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে। শাওন এখনও অফিসের পোশাক পড়ে আছে৷ একবার বলতে ইচ্ছা করল আপনি খেয়েছেন৷ কিন্তু অদৃশ্য বাঁধার জন্য বলা হলো না৷ কথা না বলে থাকা যায়৷ ভয়ে ভয়ে বলল,
“আপনি কি রাতে বের হবেন? না মানে এখনও এসব পোশাক পড়ে আছেন?”
শাওন কোন জবাব দিল না৷ নিধি অধীর আগ্রহে জবাবের আশায় বসেছিল৷ শাওন ঘরে থেকে প্রস্থানের সময় বলল,
“আমি কোথাও যাব না৷ এখন আমার ঘরেই পূর্ণিমার চাঁদ আছে৷ পূর্ণিমার জ্যােংসায় আমার ঘর আলোকিত। বাহিরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই৷”
শাওন চৌধুরী চলে যেতেই নিধি ঘৃণার সাথে বিরবির করে বলল,
“ছি! শাওন চৌধুরী এত খারাপ। এখন বাড়িতে মেয়ে মানুষ নিয়ে আসেন৷ চরিত্রহীন ছেলে।
_______________________
শাওনের প্রতিদিনের রুটিন হলো নিধিকে স্কুলে পৌঁছে দেওয়া৷ স্কুল থেকে নিয়ে আসে বাড়ির অন্য গাড়ি৷ কিন্তু কেউ তাকে স্কুলে দিয়ে আসতে পারবে না৷ শাওন চৌধুরী কড়া গলায় সবাইকে জানিয়ে দিয়েছেন৷ মানুষটা চরিত্রহীন হলেও নিধিকে অনেক সম্মান করে৷ নিধির ভালো মন্দ সব বিষয়ে খেয়াল রাখে৷ প্রায় পনেরো দিন হয়ে গেল নিধি শাওনের পূর্ণিমার চাঁদের সন্ধান পেল না৷ অফিস থেকে আসার পর পূর্নিমার চাঁদের কথা জানতে চাইলে এড়িয়ে যান শাওন চৌধুরী। নিধি আজ ঠিক করেছে সে জেনেই ছাড়বে৷ মেয়ে মানুষ বাড়িতে নিয়ে আসা নিধি কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না৷ একজন মানুষ এত নিচ কিভাবে হতে পারে৷
সবায় যখন গভীর তন্দ্রায় তখন নিধি চুপি চুপি শাওন চৌধুরীর ঘরের সামনে আসে৷ কিন্তু শাওন চৌধুরীর ঘর ভিতর থেকে লক করা৷ নিধি জানবে কিভাবে ঘরে কে আছে? হঠাৎ কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে কেঁপে উঠল৷ পিছনে তাকিয়ে মুগ্ধকে দেখতে পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিল৷ মুগ্ধর হাত ধরে টানতে টানতে ছাঁদে নিয়ে আসে৷ রাতের বেলা ছাঁদে একা আসতে ভয় লাগে৷ কিন্তু মুগ্ধ ভাইয়া ছাঁদে বসে অনেকক্ষণ কথা বলে৷ নিধি ফিসফিস করে বলল,
“ভাইয়া আপনাকে একটা কথা বলার আছে৷ আপনার চক্ষুর আড়ালে অনেক কিছু হচ্ছে৷”
মুগ্ধ কাশি দিয়ে গলা পরিষ্কার করে নিল৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে বলল,
“এখানে কেউ নেই৷ এভাবে ফিসফিস করে কথা বলতে হবে না৷ আমার চক্ষুর আড়ালে কি হচ্ছে?”
“শাওন চৌধুরীর চরিত্র ভালো নয়৷”
নিধির কথা শুনে মুগ্ধর গলায় যেন কাটা গেঁথে গেল৷ বিস্ময়ে ভাবতে থাকল নিধি কি সব জেনে গেছে? ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করল?
“তুমি শাওনের নামে কি কি জানো?”
“প্রতি রাতে বাসায় কেউ না কেউ আসে৷ এখন শাওন চৌধুরী রাতে বাহিরে যান না৷ কারণ জানতে চাইলে উনির উত্তর দেন পূর্ণিমার চাঁদ উনার ঘরে আছে৷ মানে পূর্ণিমার নামের মেয়ের সাথে রাত কাটায়৷”
নিধির কথা শুনে খিলখিল করে হেঁসে উঠল মুগ্ধ। হাসি থামিয়ে বলল,
“শাওন বাহিরে যায় না৷ তার পিছনে অন্য কারণ আছে৷ শাওন পিচ্চি মেয়ের প্রেমে পড়েছে৷ সেজন্য বাহিরে রাত কাটানো, ড্রিংক্স করা বন্ধ করে দিছে৷”
নিধি ভেংচি কেটে বলল,
“এমন অসভ্য ছেলের সাথে কোন মেয়ে প্রেম করতে যাবে৷ নিধি গোয়েন্দা ফেল করে গেছে৷ নিধির ঘুম পাচ্ছে৷ কাল ক্লাস আছে৷ ঘুম ভাঙতে দেরি হলেই শাওন চৌধুরী অগ্নিমূর্তি ধারণ করবে৷”
নিধি নিজের বোকামির জন্য লজ্জা পেল। কথা না বাড়িয়ে চলে আসল৷ মুগ্ধ নিধির যাওয়ার পথে তাকিয়ে বিরবির করে বলল,
“নিধি যেদিন তুমি জানবে শাওন তোমার প্রেমে পড়ছে৷ সেদিন তুমি কি তাকে তাড়িয়ে দিবে?”
মুগ্ধ দীর্ঘ শ্বাস ফেলে রুমে চলে যায়৷ নিধি নিজের রুমের দরজা খুলে লাইট অন করতেই শাওনকে দেখতে পেল৷ ভয়ে নিধির প্রাণ যায় যায় অবস্থা৷ এত রাতে শাওন চৌধুরী নিধির ঘরে কি করছে? এভাবে অগ্নিমূর্তির ন্যায় বসে আছে কেন? নিধিকে দেখে ধীরে পায়ে শাওন চৌধুরী নিধির দিকে এগিয়ে আসতে থাকে।
চলবে….
#মেঘের_পালক_চাঁদের_নোলক
#পর্ব_০৭
#অধির_রায়
নিধিকে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রাগান্বিত চাপা স্বরে শাওন বলল,
“এত রাতে ছাঁদে কি করছিলে? তুমি একজন গোয়েন্দা গিন্নি হয়ে গেছো! আমার বিষয়ে তোমার এত পরিমাণ ইন্টারেস্টি কেন?”
নিধি শাওনের চোখের দিকে তাকাতে পারছে না৷ শাওনের অগ্নি দৃষ্টির দিকে তাকানো মানেই সেই অগ্নিতে নিধিকে জ্বালানি দিবে৷ নিধি মাথা নিচু করে সবকিছু সহ্য করে যাচ্ছে৷ নিধিও আজ ছেড়ে কথা বলবে না৷ কেন নিধির প্রতি উনার এত অধিকার? আজ সব জেনেই নিবে৷ সব সময় ভয়ে ভীতু হয়ে থাকবে না৷ নিধি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“আমি মুগ্ধ ভাইয়ার সাথে কথা বলছিলাম। আমার ঘুম আসছিল না৷ আমি দোষের কিছু দেখছি না৷ আর আমার উপর কেন এত অধিকার দেখান?
শাওন নিধির চোখে চোখ রেখে রাগী গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“পিচ্চি নিধি তুমি এতটাও বড় হওনি যে মিথ্যা বলবে? তোমার বয়স আমি পার করে এসেছি৷ ছাঁদে কেন ছিলে এত রাতে?”
নিধির ভীষণ রাগ হয়৷ ধাক্কা দিয়ে শাওনকে দূরে ঠেলে দেয়৷ রাগ নিয়ে কিছুটা উঁচু গলায় বলল,
“আমি কতবার বলব, আমার ঘুম আসছিল না৷ ছাঁদে মুগ্ধ ভাইয়া ছিল, উনার সাথে কিছু কথা বলছিলাম৷”
নিধির অবহেলা যেন শাওনের রাগকে দ্বিগুণ করে দিল৷ নিধির দিকে ফোন এগিয়ে দিল৷ ফোনের স্কিনে সিসি ক্যামেরার সকল কিছু দেখা যাচ্ছে৷ নিধি শাওনের ঘরে আঁড়ি পেতে রয়েছে৷ নিধি শুকনো ঠুক গিলে বলল,
“আমি পূর্ণিমাকে দেখতে গেছিলাম৷ আপনি তো বললেন আপনার ঘরে পূর্ণিমা আছে৷ পূর্ণিমায় আলোয় আলোকিত আপনার ঘর৷ আমি প্রথমে চাঁদ ভাবছিলাম৷ কিন্তু এখন অমাবস্যা৷ পূর্ণিমার জ্যােৎসা নেই৷ আলোকিত হয় কিভাবে? আমি ভেবেছিলাম আপনি প্রতি রাতে কাউকে না কাউকে বাসায় নিয়ে আসেন৷”
শাওন উদাস হয়ে বিছানায় বসে পড়ল৷ পিচ্চির ভাবনা এতোটা পা/গ/লের মতো হবে বুঝতে পারেনি৷ হাত মুষ্টিবদ্ধ করে নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণে করার আপ্রাণ চেষ্টা করল। নিজেকে শান্ত করে বলল,
“যদি জানতে আমি রেগুলার মেয়েদের সাথে শারীরিক চাহিদা মেটায় তাহলে আমায় ঘৃণা করতে৷”
“ঘৃণা করতাম মানে কি? আপনাকে সেদিন থেকেই ঘৃণা করি যেদিন আপনি আমার সম্মানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ছিলেন৷ আমি জানি আপনার নিষিদ্ধ পল্লীতে আসা যাওয়া লেগেই থাকে৷ ইদানীং নেই৷”
নিধির কথা শুনে শাওন কি জবাব দিবে বুঝতে পারছে না? সে নিষিদ্ধ পল্লীতে শারীরিক চাহিদা মেটানোর জন্য অনেক বার গিয়েছে৷ কিন্তু নিধি কিভাবে জানল? শাওন আমতা আমতা করে বলল,
“আমি অনেকবার গিয়েছি৷ কিন্তু এখন যেতে ইচ্ছা করে না৷ কারণ এখন আমি একজনকে খুব ভালোবাসি। তার মায়ায় নিজেকে বেঁধে রেখেছি৷ আল্লাহর কাছে একটাই চাওনা যেন সে আমার অতীত ভুলে আমায় ভালোবাসতে পারে৷”
শাওন চৌধুরী কোন কথা বাড়াল না৷ কথা বাড়ালে বিপরীত কিছু ঘটতে পারে। নিধি এক ধ্যানে ভাবতে থাকে শাওন চৌধুরী কার সাথে প্রেম করে৷ ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে।
_____________________
হাসিখুশি নিধির মুখে অন্ধকার নেমে এসেছে৷ বাংলার পাঁচ করে শায়লা চৌধুরী পায়ে গরম তেল মালিশ করছে৷ শায়লা চৌধুরী নিধির দিকে তাকিয়ে বলল,
“ক্লাসে কোন সমস্যা হয়েছে? স্কুল থেকে আসার পর থেকে মুখে কুলো পেটে বসে আছো৷”
শায়লা চৌধুরীর পায়ের অনেক উন্নতি হয়েছে৷ উনি এখন পা নাড়ালে পারেন৷ নিজে থেকে উঠে দাঁড়াতে পারেন৷ কিন্তু পা ফেলতে পারেন না৷ পায়ের উপর এখনও কোন শক্তি নেই৷ নিধি মলিন হাসার চেষ্টা করল৷ তবুও হাসি বিরল হয়ে গেল৷ মনমরা কন্ঠে বলল,
“শাওন চৌধুরী সব সময় আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন৷ আমাকে সহ্য করতেই পারেন না৷ আমার যেন কোন স্বাধীনতা নেই৷”
কথাটুকু বলেই নিধি কেঁদে ফেলল৷ শায়লা চৌধুরী বুঝতে পারল শাওন অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে৷ যার জন্য নিধি মনে বাজে ইফেক্ট পড়েছে৷ নিধিকে এক হাতে আলতো করে জড়িয়ে ধরে মায়াভরা কন্ঠে বলল,
“যাকে বেশি ভালোবাসে তাকে শাসনে রাখা কোন অন্যায় নয়৷ শাওন তোমাকে অনেক ভালোবাসে সেজন্য তোমাকে একটু বকাবকি করে৷ শাওন কোনদিন কোন মেয়েকে ভালো নজরে দেখে না৷ সেখানে তোমার অনেক খেয়াল রাখে৷ কখন কি করছো সব কিছু জানা লাগবে? ঠিকভাবে খাবার খাচ্ছো কিনা? তোমার পছন্দ অপছন্দের খেয়াল রাখে৷ তোমার জন্য তো শাওন বাজে স্বভাব থেকে ফিরে এসেছে৷ এজন্য আল্লাহকে হাজার হাজার শুকরিয়া জানায়৷”
নিধি তবুও কিছু বুঝতে পারল না৷ শাওনের মনের ভিতর লুকিয়ে থাকা সুপ্ত অনুভূতি নিধির মনে সাড়া ফেলল না৷ নিধি অভিমানী কন্ঠে বলল,
“মুগ্ধ ভাইয়াও আমাকে অনেক ভালোবাসেন। তিনি কখনও আমায় বকা দেননি৷ আপনিও শাওন চৌধুরীর মতো। মুগ্ধ ভাইয়ার বিষয় নিয়ে ভাবেন না৷ ভাইয়ার খেয়াল রাখেন না৷ ভাইয়া প্রতিদিন বিরহে থাকে সেদিকে খেয়াল নেই৷”
শায়লা চৌধুরী ব্রো কুঁচকিয়ে বলল,
“আমি মুগ্ধর বিষয়ে খেয়াল রাখি না৷ আমি মুগ্ধকে অনেক ভালোবাসি। তার প্রতিটি বিষয়ে খেয়াল রাখি৷”
“ভাইয়ার বিষয়ে খেয়াল রাখলে এতদিন মাধবী ভাবীর সাথে বিয়ে হতো৷ ছলে বলে নানা কৌশলে মাধবী ভাবীর বিয়ে ভেঙে দিচ্ছে৷ একটা মেয়ের কত আশা নিয়ে বসে আছে৷ ভাইয়া প্রায় ক্লান্ত হয়ে গেছে৷ আপনাকে বলার সাহস নেই৷ আপনি তো গম্ভীর শাওন চৌধুরীকে নিয়ে পড়ে থাকেন৷”
শায়লা চৌধুরী নিধির কথা শুনে নিজেকে অপরাধী ভাবল৷ সত্যিই তো মুগ্ধ মুখ ফুটিয়ে অনেকবার বিয়ের কথা বলেছে৷ সত্যিই মাধবী তার জন্য কত অপেক্ষা করবে? শায়লা চৌধুরী অপরাধী কন্ঠে বলল,
“আজ রাতে আমি মুগ্ধর সাথে কথা বলব৷ তাদের বিয়ে খুব দ্রুত দেওয়ার চেষ্টা করব৷ মুগ্ধ, শাওন দু’জন অফিস থেকে ফিরলে আমায় কাছে নিয়ে আসবি৷”
নিধি খুশিতে শায়লা চৌধুরীকে জড়িয়ে ধরল৷ নিধির খুশি দেখে কে? মাধবীকে এবার নিজের চোখে দেখতে পারবে৷ দৌড়ে নিজের রুমে আসে৷ মুগ্ধকে ফোন দিয়ে বলল,
“ভাইয়া তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে৷ রাতে বাসায় আসলে তোমাকে সারপ্রাইজ দিব৷”
______________________
রুমের মাঝে কোন কথা নেই৷ চোখাচোখি কিছু কথা হচ্ছে৷ মুগ্ধ তো রীতিমতো ঘেমে একাকার। তার জন্য সভা বসেছে৷ কোন অন্যায় কাজ করেনি তো৷ অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে শায়লা চৌধুরী বললেন,
“আমি মুগ্ধর বিয়ে ঠিক করেছি৷ তবে আমার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে হবে৷ মাধবীকে আমার পছন্দ নয়৷”
মুগ্ধর চোখের কোণায় জল চিকচিক করছে। মাধবীকে সে ভীষণ ভালোবাসে৷ বসা থেকে দাঁড়িয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“আমি কখনও তোমার অবাধ্য হয়নি। আমি মাধবীকে ছাড়া অন্য কাউকে বিয়ে করতে পারব না৷”
শায়ল চৌধুরী কঠিন কন্ঠে বলল,
“আমি তোমার মতামত জানতে চাইনি৷ আমার কথা শেষ হওয়ার আগে কোন কথা বলতে মানা করছি৷”
নিধিকে উদ্দেশ্য করে বলল,
“নিধি ওই মেয়েকে নিয়ে আসো৷ যার সাথে আমি মুগ্ধর বিয়ে ঠিক করেছি৷”
নিধি মাথা নাড়িয়ে ঘোমটা দেওয়া একটা মেয়েকে নিয়ে আসে৷ এদিকে মুগ্ধ রাগে ফুসফুস করছে৷ যেন তার ধম বন্ধ হয়ে আসছে৷ কিছুতেই মাধবীর সাথে অন্যায় করতে পারবে না৷ মুগ্ধর দৃষ্টি নিচের দিকে নিবন্ধ। মুগ্ধর অগ্নি দৃষ্টি যেন ফ্লোর জ্বালানি ছারখার করে দিবে৷ মুগ্ধর এমন কান্ড দেখে সবাই মিটমিট করে হাসছে৷ শায়লা চৌধুরী গম্ভীর কণ্ঠে বলল,
“মুগ্ধ উপরের দিকে তাকাও৷”
মুগ্ধ রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে উপরে দিকে দৃষ্টি মেলে তাকায়৷ নিধি ঘোমটা সরিয়ে দেয়। ঘেমটার আড়ালে মাধবীকে দেখে চোখে ভালোভাবে ঠলে নিল৷ সে ভুল দেখছে না তো৷ শাওন মুগ্ধর পীঠস্থানে থাপ্পড় বসিয়ে বলল,
“ভুল নয়৷ এটা তোমার ভালোবাসার মানুষ মাধবী৷ এখনও রাগ করে থাকবে। এবার নিজের ভালোবাসা আগলে রাখার চেষ্টা কর৷”
মাহির আহমেদ মুগ্ধ মাধবীর দিকে অপলক দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে আছে৷ নারীকে শাড়ীতে এত সুন্দর লাগে বুঝাতে পারবে না৷ মুগ্ধর মনে কবি প্রীতি জেগে উঠল৷ মাধবীকে নিয়ে কল্পনায় উপন্যাস রচনা করে ফেলল৷ নিধি হালকা কাশি দিয়ে বলল,
“ভাইয়া হবু বউয়ের দিকে এভাবে তাকিয়ে থাকতে নেই৷ নজর লেগে যাবে৷”
নিধির কথায় মুগ্ধ, মাধবী দু’জনই লজ্জা পেল৷ শায়লা চৌধুরী গম্ভীর কন্ঠে বলল,
“কাল মাধবীর মা বাবার সাথে কথা বলে তোমাদের বিয়ের কথা ফাইনাল করব৷ শাওন নিধি বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবে মাধবীদের বাড়িতে৷ বিয়ের আগে কেউ কারো সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারবে না৷ শাওন তুমি মাধবীকে বাড়িতে দিয়ে আসো৷”
মুগ্ধর মুখটা চুপসে গেল। তবুও কিছুই বলল না৷ কিছুদিন পরেই তো সারাজীবনের জন্য কাছে পাবে৷ প্রাণ ভরে দেখে নিবে৷ ডাইনিং রুমে এসে শাওন মুগ্ধর হাতে চাবি দিয়ে বলল,
“চালিয়ে যাও কয়েক মুহুর্তের ছোট ভাই৷ তবে নিজেকে সংযত রাখবে৷ বেশি বাড়াবাড়ি করলে মাকে সব বলে দিব৷”
মুগ্ধ শাওনকে জড়িয়ে ধরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করল৷
________________
নিধি নিজের লেখাপড়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে৷ রাত এগারোটা বাজে৷ মনে হচ্ছে একজোড়া চোখ নিধিকে প্রাণ ভরে দেখে যাচ্ছে৷ কারো উপস্থিতি বুঝতে পেরে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“কে আপনি? আমি ভুত দেখে ভয় পাইনা৷ সাহস থাকলে সামনে আসেন।”
শাওন অট্টহাসি দিয়ে রুমে প্রবেশ করে৷ হাসিতে ঝর্ণার শব্দ ভেসে আসছে৷ নিধি আয়াতুল্লাহ কুরসি পড়ে বুকে ফুঁ দিল৷ রাগান্বিত কন্ঠে বলল,
“এভাবে ভুতের মতো দাঁড়িয়ে ছিলেন কেন? আমি ভুতে ভয় পাইনা৷ আমি অনেক সাহসী৷”
শাওন আচমকা নিধিকে হেঁচকা টান দিল৷ নিধি টাল সামলাতে না পেরে শাওনের বুকে লুটে পড়ে৷ অদ্ভুত অনুভূতির ঝড় বয়ে গেল৷ নিধি সরে যেতে নিলে শাওন শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কানে ফিসফিস করে বলল,
“পিচ্চি বিয়ে করে নাও। ভুতে ভয় পাবে না৷ তোমায় আমি আগলে রাখব৷ মুগ্ধ নয়নে তোমায় দেখে যাব সারাজীবন।”
নিধি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না৷ অসভ্য লোক কোন মতলবে এখানে এসেছেন। নিধি ছটফট করছে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য। শাওন আরও শক্ত করে নিধিকে জড়িয়ে ধরে কানের কাছে নেশা ভরা কন্ঠে বলল,
“এই পিচ্চি একটু শান্ত হয়ে থাকো না৷ আমার অক্সিজেন যে তোমার মাঝে৷ তোমায় ছাড়া আমি শূন্য৷ তুমিময় শাওন চৌধুরী। তুমিময় আসক্ত আমি। কেন তুমি বুঝতে পারো না আমার মনের অনুভুতি৷ আমি কি এতই খারাপ? আমাকে ভালোবাসার সুযোগ দেওয়া যাবে না৷ তোমায় ভালোবাসায় কোন অভিযোগ রাখব না পিচ্ছি৷”
চলবে……