রহস্যময়ী লেডি কিলার পর্ব-৫+৬

0
248

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৫

“আকাশের বডিগার্ডটা কলেজের ভিতরে প্রবেশ করে আকাশের কাছে আছে। তারপর আকাশের কাছে এসে আকাশের কানে কানে কিছু একটা বলে, যেটা শুনে আকাশ পুরোপুরি শকট হয়ে যায়! এবং সাথে তার সারা শরীরে কাঁপুনি দিয়ে উঠে! কারন মুজাহিদ তাকে যা শুনিয়েছে এখন, সেটা শুনবার জন্য আকাশ কখনোই প্রস্তুত ছিলো না! মুজাহিদ আকাশকে বলে, মিনিস্টার সাহেবকে নাকি তার শুভাকাঙ্ক্ষীদের মতন করে গায়েব করে ফেলেছে কে যেনো। তার উপরে রাজ নাকি সকাল বেলায় আকাশ কলেজে আসার পর কয়েকজনকে সাথে নিয়ে লেডি কিলারের তালাশ করতে বেরিয়েছে। তারপর থেকে নাকি তাঁদের সবার ফোন বন্ধ। মুজাহিদ নাকি অনেক কয়বার রাজকে ফোন করেছে। কিন্তু কোনো ভাবেই রাজের সাথে সে কলে কানেক্ট হতে পারেনি। আকাশ রাজের কথা শুনেই শকট খেয়ে আছে! কারন রাজ তার খুব কাছের ছোট ভাই। রাজের যদি একবার কিছু হয়, তাহলে সে একটা ছোট ভাই হারাবে। তাই আকাশ নিজেকে কিছুটা সামলে নিয়ে মুজাহিদকে বলে,

–মুজাহিদ তারাতাড়ি গাড়ি স্টার্ট করতে বল ড্রাইভারকে গিয়ে। আর রাজের ফোনের লাস্ট লোকেশন ট্রাক করার ট্রাই কর কাউকে দিয়ে। তারপর ছেলেপেলে সহ আমি সেখানে যাবো।

–ঠিক আছে ভাই।
.
মুজাহিদ আকাশের কথা মতন কেউ একজনকে ফোন করে রাজের ফোন ট্রাক করতে বলে। তারপর আকাশের সামনে থেকে হেঁটে গাড়ির কাছে চলে যায়। আকাশ ও মুজাহিদদের পিছন পিছন গিয়ে গাড়িতে উঠে। তারপর সর্বপ্রথম তারা নিজের বাসায় যায়। তারা নিজের বাসায় পৌঁছাতে পৌঁছাতেই রাজের শেষ লোকেশন কোথায়, সেই খবর মুজাহিদ পেয়ে যায়। মুজাহিদ যাকে ফোন করে রাজের লোকেশন বের করতে বলেছে, সে কিছু সময়ের মধ্যেই রাজের লোকেশন বের করে মুজাহিদকে বলে। তাই আকাশ মুজাহিদ এবং সাথে অনেক কয়জন ছেলেপেলে নিয়ে সেখানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার জন্য তৈরী হয়। কারন রাজের লাস্ট লোকেশনে গেলেই হয়তো তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাবে। সেই মোতাবেক সবাই মিলে ঘর থেকে বেরিয়ে গাড়িতে উঠবে, তখনি রাজ আকাশের বাংলোতে ফিরে আসে। যেটা দেখে সবাই খুশি হয়ে যায়। কিন্তু আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে রাজের সঙ্গী সাথী সবাই গায়েব! আকাশ রাজকে দেখে জিজ্ঞাস করে,

–এই তুই এতো সময় কোথায় ছিলি রে?
আর তোর সাথের লোকজন কোথায়?

–ভাই আমি কিছুই জানি না তারা কোথায়!
কারন আমি লেডি কিলারের বিষয়ে সামান্য কিছুটা সন্ধান পেয়েছি। তাই আপনি কলেজে যেতেই আমি কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যাই। কিন্তু আমি সেখানেই যেতেই আমাদের সাথে অদ্ভুত একটা কান্ড ঘটে। হুট করেই আমাদের গাড়ির সামনে কোথা থেকে যেনো একটা কুকুর চলে আসে। যাকে কিনা আমরা গাড়ির নিচে পিষে ফেলেছি। তাই আমরা গাড়ি সাইড করে কুকুরটাকে দেখার জন্য গাড়ি থেকে নিচে নামবো, এমন সময় কেউ একজন আমাদের গাড়ির জানালা দিয়ে এক জাতীয় গ্যাস ছুঁড়ে মেরেছে। যার ফলে সাথে সাথে সবাই বেহুঁশ হয়ে যাই। পরবর্তীতে যখন আমার জ্ঞান ফিরে আসে, তখন আমি নিজেকে আবিষ্কার করি গাড়ির সিটের মধ্যে আধমরার মতন পড়ে আছি। আর আমার সঙ্গী সাথী কেউ নাই। সবাই আমাকে ফেলে রেখে কোথায় যেনো গায়েব হয়ে গেছে।

–কিহহ!

–হুম ভাই সত্যি বলছি আমাদের সাথে এমনটাই ঘটেছে।

–ইন্না-লিল্লাহ!
আমাদের উপরে কোন বিপদ আসতে চলেছে আল্লাহ জানে! এই তোরা সবাই সাবধানে থাক। আর যে যেখানেই যাবি না কেন, মনিটর রুমে লোকেশন দিয়ে তারপর যাবি। আর রাজ তুই লেডি কিলারের বিষয়ে কি তথ্য পেয়েছিস?

–ভাই ফরেস্ট কলোনীতে নাকি লেডি কিলারকে দেখা গেছে বেশ কয়বায়। সেখানের একজন লোক আমায় ফোন করে তার বিষয়ে কিছু তথ্য দিবে বলেছে। কিন্তু আমি সেই লোকের কাছে যাওয়ার আগেই আমাদের সাথে এমন কান্ড ঘটে গেছে।

–কে সেই লোক?
তুই কি চিনিস তাকে?

–আমি চিনি না। তবে আমাদের শহরের এক ছেলে আছে। যে কিনা আমাদের টিমের হয়ে কাজ করে। তার কেমন যেনো পরিচিত লাগে সেই লোক। পরে সেই ছেলের থেকে নাম্বার নিয়ে ঐ লোকের সাথে যোগাযোগ করেছি আমি।

–আচ্ছা ঠিক আছে। তুই ঘরের ভিতরে গিয়ে রেস্ট কর।
বাকিটা আমরা দেখছি।

–আচ্ছা ভাই।
.
রাজ আকাশের কথা মতন রেস্ট করতে চলে যায়।
রাজ চলে যেতেই আকাশ মুজাহিদকে বলে,

–মুজাহিদ আমাদের দলের কোন ছেলের পরিচিত লাগে, তাকে ফোন করে আন্ডারগ্রাউন্ডে আসতে বল। কারন বাংলোতে আনা যাবে না। আর তাছাড়া তোরা কয়জন বাদে তো আমায় এখন পর্যন্ত ভালো করে কেউ দেখেনি। তাই তাঁদের সামনে যাওয়াও যাবে না। আর আমার এই লোকেশন তো ভুলেও দেওয়া যাবে না।

–হুম ভাই ঠিক বলেছেন।
আপনি কারোর সামনে না যাওয়াই ভালো।

–হুম যা সেই ছেলেকে নিয়ে আয় আন্ডারগ্রাউন্ডে।
তারপর আমিও আসছি সেখানে।

–আচ্ছা ভাই।
.
তারপর মুজাহিদ সেই ছেলের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে তাকে আন্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে আসে। আর আকাশ রাজকে ঘরে রেখে সেও আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়। আকাশ আন্ডারগ্রাউন্ডে পৌঁছানোর আগে মুখে মাক্স পড়ে নিয়েছে। কারন যার তার সামনে গেলে সমস্যা আছে। আকাশ আন্ডারগ্রাউন্ডে গিয়ে সেই ছেলেকে জিজ্ঞাস করে,

–এই তুই রাজকে যার সাথে দেখা করতে বলেছিস, সেই লোক কে? আর রাজ সেখানে যেতেই তাঁদের উপরে হামলা হলো কেন?

–ভাই বিশ্বাস করেন আমি এসবের বিষয়ে কিছুই জানি না! আর যেই লোকের সন্ধান আমি রাজ ভাইকে দিয়েছি, সে হচ্ছে আমার এলাকার লোক।
আগে সে এই শহরেই ছিলো। কিন্তু বর্তমানে সে ফরেস্ট কলোনীতে থাকে। রাজ ভাই যখন আমাকে লেডি কিলারের বিষয়ে বলে, আমি আমার সমস্ত পরিচিত লোকদেরকে সেই লেডি কিলারের কথা বলি। আর এটাও বলি যে কোনো মেয়ের উপরে সন্দেহ হলে বা কোনো মেয়ের মধ্যে অদ্ভুত কোনো আচরণ দেখলে আমাকে ফোন করে জানাতে। আজ সকালে আমার সেই পরিচিত লোকটা আমায় ফোন দিয়ে বলে, তার এলাকায় নাকি রাতের বেলায় বেশ কয়দিন ধরে একটা মেয়ে কালো রেইনকোট পড়ে যাতায়াত করছে। এবং সেই এলাকার একটা মানুষের সাথে নাকি রেইনকোট পরিধান করা মেয়েটা কথাবার্তা বলে।
তাই আমি রাজ ভাইকে বলেছি সম্ভব হলে ফরেস্ট কলোনীতে গিয়ে আমার পরিচিত লোকটার সাথে কথাবার্তা বলতে। তাহলে হয়তো কিছু জানতে পারবে তিনি।

–ঠিক আছে আমি দেখছি এই বিষয়টা। কিন্তু তোর সেই লোকটা যদি এসবের সাথে কোনো ভাবে জড়িত থাকে, তাহলে কিন্তু সে আমার হাতে মারা পড়বে।

–ভাই সে যদি কিছু করে থাকে, তাহলে তাকে মেরে ফেললে আমার কিছু বলার থাকবে না। অবশ্য এমনিতেও আপনাকে আমার কিছু বলার ক্ষমতা নাই। কারন এখানে এসে ইতি মধ্যেই বুঝে নিয়েছি আপনি কে। আর আমি যার জন্য কাজ করি, তিনিই আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভাই বিশ্বাস করেন আমার জীবনের অনেক বড় স্বপ্ন ছিলো আপনাকে কোনোদিন সামনাসামনি দেখবো। যেটা কিনা আজ পূরণ হয়েছে। অবশ্য যদিও আপনার চেহারা দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু তাতে আমার বিন্দু পরিমাণ আফসোস নাই। কারন আপনার একদম সম্মুখে এসে তো দাঁড়িয়েছি। আর তাতেই আমার স্বপ্ন পূরণ হয়ে গেছে।

–এই হয়েছে এবার থাম।
আর শোন একটু সাবধানে থাকবি।

–আচ্ছা ভাই।

–এই মুজাহিদ তুই ওকে বাহিরের লোকালয় পর্যন্ত পৌঁছে দিয়ে আয়।

–ঠিক আছে ভাই।
.
মুজাহিদ আকাশের কথা মতন সেই ছেলেটার চোখে কালো কাপড় বেঁধে দিয়ে তাকে লোকালয়ে এনে নামিয়ে দেয়। কারন আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পর্কে কেউ জানে জানে না। আর ছেলেটার চোখে মুজাহিদ এজন্যই কালো কাপড় বেঁধেছে, যাতে করে সে এই জায়গায় আসার রাস্তা সম্পর্কে জানতে না পারে। আকাশের এই আন্ডারগ্রাউন্ডটা একদম মাটির নিচে। পরিচিত কয়েকজন ছাড়া এই আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পর্কে কাকপক্ষীও জানে না। মুজাহিদ সেই ছেলেটাকে লোকালয়ে পৌঁছে দিয়ে আবার আন্ডারগ্রাউন্ডে ফিরে আসে। আকাশ তার সঙ্গী সাথী মিলে আন্ডারগ্রাউন্ডে বসে বস সেই লেডি কিলারের ব্যাপারে কথপোকথন করছে। এর মাঝেই দুপুর হয়ে গিয়েছে। মানে আকাশ এই সময় কলেজে থাকলে কলেজ ছুটি হতো। কিন্তু সে কলেজ করা বাদ দিয়ে রেখে আন্ডারগ্রাউন্ডে বসে নিজের লোকদের সাথে কথাবার্তা বলছে। “অপরদিক কলেজ ছুটি হতেই অবনী ক্লাস থেকে বেরিয়ে আকাশের তালাশ করতে থাকে। অবনী আকাশের তালাশ করতে করতে সেই জায়গাটায় এসে দাঁড়ায়, যেখানে কিনা কয়েক ঘন্টা আগে আকাশ আর অবনী মিলে রোমান্স করেছিলো। তখনি দ্বিতীয় বর্ষের একটা ছেলে অবনীর কাছে এসে তাকে বলে,

–এই যে আপনার নাম কি?

–কেন ভাই আমার নাম দিয়ে কাজ কি আপনার?

–কাজ বলতে আপনি না হেব্বি কিউট। আপনাকে প্রথম দেখাতেই আমার ভালো লেগে গেছে।
তাই আপনার সাথে পরিচিত হতে চাই।

–ভাইয়া আপনি আমাকে প্রথম দেখাতে ভালো লাগলেও আপনাকে কিন্তু আমার একদম ভালো লাগেনি। আর তাছাড়া আপনার সাথে পরিচিত হবার ও কোনো ইচ্ছে নেই আমার।

–কিন্তু কেন?
আমার মাঝে কিসের কমতি আছে?
.
ছেলেটা অবনীর কাছে নিজের কমতি সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই সেখানে তুহিন নামক ছেলেটা এসে হাজির হয়। তারপর সে হাজির হয়ে অবনীকে বলে,

–ভাবী অসংখ্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে, যে আপনি আমাকে সকাল বেলায় অনেক বড় বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন। না হয়তো এতো সময়ে আমি সক্ষম অবস্থায় চলাফেরা করতে পারতাম না।
.
তুহিনের মুখে এমন কথাবার্তা শুনে অবনীকে পছন্দ করা সেই ছেলেটা তুহিনকে বলে উঠে,

–এই তুই উনাকে ভাবী ডাকছিস কেন? তুই কি উনাকে চিনিস নাকি? আর কোন বিপদের কথা বলছিস তুই?

–ভাবী ডাকছি কারন আছে। আর তিনাকে আমি না শুধু, সময় হলে পুরো কলেজ তিনার ব্যাপারে জেনে যাবে।

–মানে কি তুহিন?

–মানে হলো উনি আমাদের কলেজে যেই বাঘ আছে আকাশ ভাই। উনি হচ্ছেন সেই বাঘের ভালোবাসার মানুষ। আর কিছু জানার আছে তোর?

–না না আমার আর কিছু জানার নাই।
ভাবী ক্ষমাপ্রার্থী আপনার কাছে। আপনি প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন। আমি আপনার সম্পর্কে সত্যিই জানতাম না। আপনি প্লিজ আমার কথা গুলো ভাইয়ের কানে দিয়েন না। না হয়তো আমার অবস্থা খারাপ করে দিবে উনি।

–আচ্ছা ঠিক আছে বলবো না। কারন মানুষ মাত্রই ভুল।

–ধন্যবাদ ভাবী।
.
তারপর ছেলেটা সেখান থেকে কেটে পড়ে। কারন সে এতো সময় না জেনে বাঘের গুহায় ঢুকবার জন্য যাত্রাপথ শুরু করেছিলো। কিন্তু শিয়াল মামা সময় থাকতে এসে তাকে প্রাণপণে বাঁচিয়ে দিয়েছে। ছেলেটা চলে যেতেই অবনী তুহিনকে বলে,

–ভাইয়া ধন্যবাদ দেওয়ার কিছুই নেই। কারন মানুষটা অনেক গরম মেজাজের। তাই আমার দায়িত্ব কর্তব্যের মধ্যে পড়ে উনাকে শান্তশিষ্ট রাখা। আমি বলতে গেলে এক প্রকার তিনার রাগ টাকে দমিয়েছি। কিন্তু এতে করে আপনার উপকার হয়ে গেছে। তাই এই কাকতালীয় ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই।

–তাও ভাবী ধন্যবাদ দিয়ে কৃতজ্ঞতা শিকার করাটা আমার কর্তব্য। কারন যে ভাবেই হোক না কেন আপনার জন্য ভাইয়ের হাত থেকে বেঁচে গেছি আমি।

–আরে ভাইয়া ছাড়ুন তো এসব। আচ্ছা আপনি কি আমার উনাকে দেখেছেন কোথাও? উনাকে না আমি অনেকক্ষন ধরে খুঁজছি। কিন্তু কোথাও পাচ্ছি না।

–না ভাবী দেখি নি। আর উনি হয়তো চলে গেছেন। কারন মাঝেমধ্যে উনি বাসায় চলে যান।

–ওহ আচ্ছা। বদরাগীটা হয়তো আমায় ফেলে রেখে বাসায় চলে গেছে। তাই তো তিনাকে খুঁজে পাচ্ছি না।

–এটাই হবে ভাবী।

–আচ্ছা তাহলে আমিও বাসায় চলে গেলাম।

–আচ্ছা।
.
অবনী তুহিনের সাথে কথা বলে বসায় দিকে রওয়ানা হয়। “অন্যদিকে আকাশ এখনো আন্ডারগ্রাউন্ডে বসে বসে তার কাছের ছোট ভাই ব্রাদারের সাথে কথাবার্তা বলছে। তখনি আকাশের বাংলো থেকে একজন গার্ড আকাশকে ফোন দিয়ে বলে,

–আকাশ ভাই রাজ ভাইয়ের শরীরে কেমন যেনো
ইলেকট্রিকের বৈদ্যুতিক আলোর ন্যায় কিছু একটা জ্বলজ্বল করছে। যা দেখে আমাদের কেন জানি মনে হচ্ছে উনি আমাদের রাজ ভাই না! মনে হচ্ছে যেনো রাজ ভাইয়ের ছদ্মবেশে কেউ একজন আমাদের বাংলোতে প্রবেশ করছে।
.
গার্ডের মুখে এমন কথা শুনে আকাশের মাথায় বিজলী বর্ষণ হয়েছে মতন অবস্থা হয়েছে তার!
রাজ যখন দীর্ঘক্ষণ যাবৎ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে তাঁদের কাছে ফিরে এসে সবাইকে বলে, যে এমন এমন এমন ঘটেছে। যার ফলে সে একাই গাড়িতে বেহুঁশ হয়ে পড়ে ছিলো। আর তার সঙ্গী সাথী সবাই কোথায় যেনো গায়েব হয়ে গেছে। তখনি আকাশের কেমন যেনো সন্দেহ হয়েছিলো রাজের উপরে। তাই আকাশ তখন রাজকে ঘরের ভিতরে পাঠিয়ে দেয় রেস্ট করার জন্য। আর মুজাহিদকে আন্ডারগ্রাউন্ডের কথা বলে। তার সেই সন্দেহ কিনা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তাই সে মুজাহিদকে জোরে আওয়াজ দিয়ে বলে,

–এই মুজাহিদ আন্ডারগ্রাউন্ডের অস্ত্রাগার থেকে দুইটা বড় বড় মেশিন বের কর। আজ মুখোশধারীর মুখোশ উপড়ে ফেলবো। আজ আমিও দেখতে চাই, যে ইবলিশ শয়তানের কাছে এসে কে শয়তানি করবার মতন দুঃসাহস করেছে….

চলবে….

#রহস্যময়ী_লেডি_কিলার
#লেখক_আকাশ_মাহমুদ
#পর্ব_৬

–“এই মুজাহিদ আন্ডারগ্রাউন্ডের অস্ত্রাগার থেকে দুইটা বড় বড় মেশিন বের কর। আজ মুখোশধারীর মুখোশ উপড়ে ফেলবো। আজ আমিও দেখতে চাই, যে ইবলিশ শয়তানের কাছে এসে কে শয়তানি করবার মতন দুঃসাহস করেছে। আর তোরা যারা বাংলোর মধ্যে আছিস। সবাই মিলে ছদ্মবেশী রাজকে রুমের মধ্যে আঁটকে রাখ।

–ভাই সেই কাজ আমরা আগেই করে নিয়েছি।
কারন একজন গার্ড কি প্রয়োজনে যেনো রাজ ভাইয়ের রুমে যায়। রাজ ভাইয়ের রুমের দরজাটা তখন কিছুটা খোলা ছিলো। তখনি সেই খোলা অংশ দিয়ে গার্ড রাজ ভাইয়ের আসল রূপটা দেখে নেয়। যার পরে সেই গার্ড বাহির থেকে দরজা আঁটকে দিয়ে আমাদের খবর দেয়। পরে আমরা সবাই এসে রুমের বাহিরে পাহারায় লাগি। এখন সেই ছদ্মবেশী রাজ রুমের ভিতরেই আছে। আর আমরা তার পাহারায়। আপনি তারাতাড়ি এসে এই ছদ্মবেশীর কিছু একটা করেন।

–হুম আমি আসছি।
তারপর ফোন রেখে দিয়ে অস্ত্রাগার থেকে দুইটা বড় বড় অস্ত্র বের করে আনালাম মুজাহিদকে দিয়ে। পরে সবাই মিলে আমার বাংলোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়েছি। বাংলোয় ফিরে এসে দেখি সবাই কেমন যেনো ঘাবড়ে আছে। তাই গার্ডদেরকে উদ্দেশ্য করে বললাম, এই বাংলোর যে কয়জন গার্ড আছিস, তোরা সবাই মিলে বাংলোর আশপাশটা ভালো করে পাহারা দে। আর বাকি সবাই আমার সাথে ভিতরে চল। আর মুজাহিদ মেশিন একটা আমার হাতে দিয়ে তুই লাইফ জ্যাকেট পড়ে নে। তারপর ঐ হারামিকে দেখছি।

–ভাই আমি অস্ত্রাগার থেকে আগেই লাইফ জ্যাকেট পড়ে এসেছি। আপনি অস্ত্রটা নিন। আমি আমার ফুল প্রিপারেশনে আছি।

–ঠিক আছে তাহলে ভিতরে চল।
রাজের রুমের একদম সামনে এসে বাকি যারা আছে আমার সাথে, তাঁদের সবাইকে রুমের বাহিরে দাঁড়াতে বলে আমি আর মুজাহিদ রাজের রুমে প্রবেশ করলাম। রুমে প্রবেশ করতেই দেখি রাজ বিজলীর গতিতে রুমের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করছে। তার দৌড়ের গতি এতো বেশি যে তার উপস্থিতিটাই শুধু আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। তার শরীরের আকৃতি দেখা যাচ্ছে না। যা দেখে পুরোপুরি শকট হয়ে গেলাম! কারন আকাশে যখন বিজলী গর্জন দেয়, তখন সেকেন্ড কয়েকের জন্য হলেও একটা সীমারেখা দেখা যায় আকাশে। কিন্তু এই রাজের উপস্থিতি ছাড়া কোনো কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আমরা শুধু জানি সে এই রুমে আছে। আর সে বাতাসের মতন অদৃশ্য হয়ে রুমে ছুটাছুটি করছে। তাই মুজাহিদকে ইশারায় বললাম, তার পাশে দুইটা সুইচ আছে। সেখান থেকে যেটা বন্ধ আছে সেটাকে অন করে দিতে। আর যেটা অন আছে। সেটাকে বন্ধ করে দিতে। মুজাহিদ আমার কথা মতন সুইচ দুইটা অন-অফ করে দিলো। আর সাথে সাথেই রুমের বাতি বন্ধ হয়ে গিয়ে রেড লাইট জ্বলে উঠলো। যার কিছুক্ষণ পরেই রাজের ছোটাছুটি বন্ধ হয়ে গেছে। আর সে এক জায়গায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে পড়েছে। তবে তার শরীরে এখনো বৈদ্যুতিক রশ্মি ঝলকাচ্ছে। যা দেখে মুজাহিদ আমায় জিজ্ঞাস করলো,

–ভাই বান্দর’টা তো লাফালাফি বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু তার শরীরে এখনো বিজলীর আলোর ন্যায় কিছু একটা ঝলকাচ্ছে।

–মুজাহিদ সেটাও একটু পর থেমে যাবে।
.
আকাশের কথা মতন কিছুক্ষন সময় পেরোতেই রাজের শরীর থেকে সমস্ত বৈদ্যুতিক রশ্মি গায়েব হয়ে গেছে। যেটা দেখে আকাশ রাজকে বলে,

–কিরে ছদ্মবেশী, কেমন বোধ করছিস এখন?

–বাহ তাহলে তুই আমায় ধরে ফেলেছিস।

–হুম ধরা খেয়ে গেছিস তুই।

–কিন্তু তুই তো আমায় বেশি সময় আঁটকে রাখতে পারবি না। কারন আমি বিজলীর গতিতে দৌড়ে তোর বাংলোর ইলেক্ট্রিসিটির মাধ্যমে নিজেকে আরো শক্তিশালী বানিয়ে নিয়েছি।
.
রাজের মুখে এমন কথা শুনে আকাশ একটা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে রাজকে বলে,

–ছদ্মবেশী রাজ, তুই যদি শয়তান হয়ে থাকিস, তাহলে আমি তোর বংশের আদি-পিতা। কারন তোদের চালচলন আমি অনেক আগেই বুঝে গিয়েছি। এই পর্যন্ত তোদেরকে নিয়ে বহু কিছুই দেখেছি এবং শুনেছি। যার পর আমার বুঝতে বাকি নেই যে তোদের কাছে সুপারন্যাচারাল কোনো শক্তি আছে আছে। এবং তোদের সেই শক্তিটা কোনো না কোনো ভাবে ইলেক্ট্রিসিটির সাথে কানেক্টেড। তাই রুমের লাইট বন্ধ করে দিয়ে রেড লাইট জ্বালিয়ে দিয়েছি। আর এই রেড লাইটের কাজ হলো ইলেকট্রিক্যাল পাওয়ার কে দমন করা। এবং তার সাথে অশুভ কিছু রুমের মধ্যে প্রবেশ করলে সেটার ইঙ্গিত দেওয়া। তাই তুই হাজারো শক্তিশালী হলেও এই রুমের মধ্যে তোর শক্তি কাজ করবে না। এবার দেখি তুই তোর শক্তির প্রদর্শন কর।

–আকাশ তুই কিন্তু কাজটা ভালো করলি না।
তুই কিন্তু অনেক বড় বিপদের মুখে পড়বি বলে দিলাম। তাই ভালো চাস তো রুমের লাইট জ্বালিয়ে দে। আমি চুপচাপ এখান থেকে চলে যাবো। কারন আমার যা তথ্য নেওয়ার, সব টুকুই আমি নিয়ে নিয়েছি।
.
রাজের কথা শুনে আকাশ মেশিনটা রাজের দিকে নিশানা করে তাকে বলে,

–এই তুই কোনোদিন ও শুনেছিস, যে আজরাইল মানুষের জান কবজ করতে এসে ভয়ে তার জান কবজ না করে ফিরে গেছে? আশা করি শুনিস নি। শোন আমি হলাম তোদের মতন নরাধমের জন্য আজরাইল। একবার এসে গেছি তো মনে কর তোদের প্রাণ নিয়েই কাহিনীর সমাপ্তি করবো। তারপর কথা বলা অফ করে ঝাঁজরা করে ফেললাম রাজের শরীর গুলি করে। রাজ ফ্লোরের উপরে লুটে পড়েছে। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো তার শরীরে এতো গুলা গুলি করার পরেও একফোঁটা রক্ত বের হয়নি। তবে সে কিন্তু আধমরার মতন ফ্লোরের উপরে লেপ্টে পড়েছে।
আর এই লেপ্টে পড়া অবস্থাতে ফ্লোরের উপরে শুয়ে শব্দ করে করে হাসছে। যা দেখে তাকে জিজ্ঞাস করলাম,

–কিরে এখনো তোর হাসি পাচ্ছে?
কিছুক্ষণ পর তো সত্যিকারত্বে আজরাইল এসে তোর প্রাণ নিয়ে যাবে। তখনি রাজ আমায় বলে উঠে,

–হায়রে বোকা আকাশ। তুই সত্যিই অনেক বোকা। তুই যে কি করে এতো বড় মাফিয়া হয়েছিস তা আল্লাহ ভালো জানে! আচ্ছা তুই যে আমায় এতোগুলা গুলি করলি, কিন্তু আমার শরীর থেকে একফোঁটাও রক্ত বের হলো না। তা দেখে কি তোর কিছুই বুঝে আসছে না? অবশ্য বুঝে আসবে কি করে। কারন তুই তো একটা বোকা। আচ্ছা শোন আমিই তোকে বুঝিয়ে বলছি। তুই যে আমায় শেষ করে দাঁত কেলিয়ে হাসছিস, সেটা তোর সব চাইতে বড় বোকামী। কারন তুই ভেবেছিস যে আমায় মেরে খেল খতম করে দিয়েছিস। সত্যিকারত্বে কিন্তু এমনটা না। কারন আমি কোনো মানুষ না। আমি হলাম আমার মালিকের বানানো একটা ক্লোন। আমার মালিক আমায় বানিয়েছে। তুই আমায় শেষ করে কি হবে, আমার সেই মালিক তো এখনো বেঁচে আছে। যার শরীর কিনা মানুষের। তবে তার মধ্যে এতো ভয়ানক রকমের শক্তি আছে, যা দিয়ে কিনা তোকে মুহূর্তের মধ্যেই শেষ করে দিবে। তাই তুই রেডি থাক। এতো সময়ে হয়তো তোর লোকজনকে আমার মালিক মেরে ফেলেছে। বাকি আছিস তুই আর তোর এখানের সমস্ত সাঙ্গপাঙ্গ। চিন্তা করিস না। আমার মালিক সময় মতন এসে তোদেরকেও জমের দুয়ারে পাঠিয়ে দিবে। টা,টা।
.
ছদ্মবেশী রাজ মানে ক্লোনটা আকাশের সামনে অনেক কিছুর খোলাসা করে চুপচাপ হয়ে যায়। মানে সে শেষ। কিন্তু অপরদিকে আকাশ এসব কথাবার্তা শুনে ভাবুক হয়ে যায়! কারন সে কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না! কিসের ক্লোন আর কিসের শক্তি তার মালিকের! আকাশ এসব বিষয় নিয়ে ভাবছিলো, তখনি পাশ থেকে মুজাহিদ আকাশকে বলে,

–ভাই এই হারামির কথা শুনে এতো ভাবুক হয়ে লাভ নেই। আমার মতে এসব চিন্তাধান্তা ফেলে রেখে রাজ এবং বাকি সবার খোঁজ করতে যাওয়া উচিৎ।

–হুম ঠিক বলেছিস। তবে সেটা এখন না। কারন দেখলি না ছদ্মবেশী রাজ কি বলে গেলো। তাই আমাদের সব কিছু প্ল্যান মোতাবেক করতে হবে। না হয়তো হুটহাট করে কিছু করতে গেলে সবাই মারা পড়বো। আর তাছাড়া রাজ কোথায় আছে বা কি হালতে আছে, তা আমাদের কারোর এই জানা নেই।

–তো ভাই এখন কি করবো আমরা? রাজ ভাইদের তো খুঁজে বের করতে হবে। হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে তো হবে না।

–হুম রাজদেরকে খুঁজে বের করবো। তবে সেটা আগামীকাল। কারন সবে মাত্র ছদ্মবেশী টাকে শেষ করেছি। তাই আগামীকাল রাজের তালাশে বের হবো। তুই কালকে আরো ছেলেপেলে একত্রে করে রাখ। আমি কলেজ থেকে এগারোটা নাগাদ বের হয়ে তোদেরকে সাথে নিয়ে ফরেস্ট কলোনীতে যাবো।

–ঠিক আছে ভাই।

–আর শোন সেখানে যাওয়ার আগে সবার হাতে হাতে মেশিন ধরিয়ে দিবি। আর তোর সঙ্গে করে ছোট একটা রেড লাইট নিয়ে যাবি যে কোনো উপায়ে।

–আচ্ছা।
আর ভাই এখন এই বেটাকে কি করবো?

–পুড়িয়ে ফেল ওকে।

–ওকে ভাই।

–তারপর রাজের রুম থেকে বেরিয়ে নিজের রুমে চলে আসলাম। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে মায়ের নাম্বারে ফোন লাগিয়েছি কথা বলার জন্য। কারন অনেকদিন যাবৎ মায়ের সাথে কথা হয় না। মা’কে ফোন দিয়ে আধঘন্টা নাগাদ মায়ের সাথে আর ছোট বোনের সাথে কথা বলে ফোন রেখে দিয়েছি। তারপর খাওয়া দাওয়া করে ঘুমিয়ে পড়লাম। সময় তার আপন গতিতে চলছে। বিকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে আগামীকালের বিষয় নিয়ে সবার সাথে একবার ভালো করে পরামর্শ করে নিলাম। এভাবেই রাতটা কেটে গেছে। “পরেরদিন সকাল বেলায় ঘুম থেকে উঠে কলেজে যেতেই অবনী আমার সামনে এসে হাজির। সে আমার সামনে এসে হাজির হয়ে জিজ্ঞাস করলো,

–এই এটা কি হলো? আপনি গতকাল আমায় না বলে বাসায় চলে গেছেন কেন?

–আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই চলে গেছি।

–আরে আজব আপনি আমায় না বলে হুট করে এভাবে চলে যেতে পারেন না। ম্যানার বলতে তো কিছু একটা আছে নাকি?

–এই মেয়ে কিসের ম্যানার হ্যাঁ? আর তোমাকে এতো কিছুর কৈফিয়ত দিতে যাবো কেন?

–কারন আপনি এখন আর একা নন। আপনার সাথে আমার জীবনের সুত্র জুড়ে গেছে। তাই কৈফিয়ত দিবেন।

–অবনীর কথা শুনে হুট করেই মাথার রগ চোটে গেছে। কারন এই জীবনে আমার মা-ছাড়া কেউ আমার থেকে কৈফিয়ত চায়নি। আর আমি দেই ও নি। আমি সব সময় আমার মতিগতি নিয়ে চলি। কারোর কাছে কৈফিয়ত দেওয়া বা কারোর ধার-ধারার সময় আমার নেই। কিন্তু এই মেয়ে হুট করে এভাবে কৈফিয়ত চেয়ে আমার মাথার রক্ত গরম করে দিয়েছে। তাই তাকে রেগে গিয়ে বললাম, এই মেয়ে সোজা ক্লাস করতে যা।

–আরে আপনি হটাৎ এভাবে রেগে যাচ্ছেন কেন?
আমি তো শুধু আপনার থেকে চলে যাওয়ার বিষটা জানতেই চেয়েছি।

–তোর জানার গুষ্টি মারি তুই ক্লাসে যা। আর শোন আমি কাউকে কৈফিয়ত দেওয়ার মতন পাবলিক না। আমার লাইফ আমার রুলস মোতাবেক চলে।
খামোখা আলগা কদর দেখাতে আসবি না আমাকে। যা এখন আমার সামনে থেকে।
.
আকাশের এমন কথায় অবনী এবার ভয় পেয়ে যায়। তাই সে চোখ মুখ কালো করে ক্লাসের জন্য চলে যায়। অবনী চলে যেতেই আকাশ ও নিজের ক্লাসে চলে যায়। তার মন-মেজাজ কেমন যেনো বিগড়ে আছে। কিন্তু সে নিজেকে সামলে নিয়ে দুইটা ক্লাস করে। পরে এগারোটা বাজতেই সে ক্লাস থেকে বেরিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ডে চলে যায়। কারন আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে মেশিন নিয়ে সবাই রাজকে খোঁজ করার মিশনে যাবে। সেখান গিয়ে বিশাল একটা বহর নিয়ে ফরেস্ট কলোনীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। সবাই মিলে ফরেস্ট কলোনীতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামে। তখনি বিশাল একটা দমকা হাওয়া শুরু হয়। যার ফলে চারপাশের ছোট ছোট জিনিস উড়তে শুরু করে। যেমন বালুকণা, পলিথিন, কাগজ ইত্যাদি। যার কারনে সবাই আবার গাড়ির ভিতরে ঢুকে বসে। গাড়ির ভিতরে ঢুকে বসতেই মুহুর্তের মধ্যে পুরো ফরেস্ট কলোনী বোমের মতন ব্লাস্ট হয়ে তসনস হয়ে যায়। আর সাথে জায়গায় জায়গায় আগুন জ্বলতে শুরু করে! যেটা দেখে সবাই তাজ্জব হয়ে যায়! এমন সময় মানুষ আকৃতির কিছু একটা হাওয়ায় উড়ে এসে সবার গাড়ির সামনে দাঁড়ায়। যার সারা শরীর থেকে কিনা জ্বলজ্বল করে আগুন জ্বলছে। আগুনের কারনে লোকটার চেহারার আকৃতি ঠিক ভাবে দেখা যাচ্ছে না। এই ভয়ানক দৃশ্য দেখে সবার চোখ কাপলে উঠে যায়! আর মুহাজিদ আকাশের কথা মতন পকেটে করে নিয়ে আসা ছোট রেড লাইট টাও জোরে জোরে শব্দ করে জ্বলতে আরম্ভ করে…

চলবে….

গল্পের ভুল ত্রুটি গুলো ক্ষমার নজরে দেখবেন।