লালগোলাপ?
Part-28
Writer-Moon Hossain
-বুঝি আমি।
-তা কি বুঝ?
-আপনি ঠিক বলেছেন। আমার প্রয়োজন নেই।
ফুরিয়েছে। আমাকে আর ভালো লাগেনা।
শুধু ব্যবহার করেছেন আমাকে। এখন ব্যবহার করা শেষ।
-সব ভুল।
-তাহলে কোনটা সঠিক বলুন?
-আমি একটা বদ্দ উন্মাদ। আগে ছিলাম অবুঝ গর্দভ পাগল, এখন চালাক চতুর সাইকো। আমার কাছে কেউ নিরাপদ না।
আমি কাউকে সহ্য করতে পারিনা। আমার সাথে থাকতে পারবে না তুমি।
যতটা সুখ তুমি ডিজার্ভ করো ততটা আমি তোমাকে দিতে পারব না। আমি এক ব্যার্থ লোক৷
তুমি চলে যাও প্লিজ। এতো কষ্ট, অপমান কেন সহ্য করছো? লিভ মি প্লিজ।
-কথা শেষ হয়েছে?
-ইয়েস। তুমি চলে যাও। তোমার বাড়ি।
-একটা কথা কান খুলে শুনে রাখুন।
-বলো?
-আমি এটা আমার বাড়ি।
আমি এখান থেকে যাব না।
-আমার আপত্তি নেই। বাপ-দাদার এই বাড়িটা তোমার কাছে রেখে দাও।আমি তাহলে নিশ্চিন্তে থাকব।
-এবং আপনার লাইফ থেকেও যাব না। আপনার সাথে থাকব। আপনি যেখানে সেখানেই আমি।
রাজ উঠে দাঁড়ালো।
শীতল রাজের হাত ছাড়লো না।
রাজ এক হাত দিয়ে নিজের মাথার চুলে হাত দিলো।
-আবারও এক কথা! কোন ভাবেই সত্যিটা আর ভালোটা বুঝতে পাচ্ছোনা কেন?
-আবারও আপনিও এক কথা বলছেন। সত্যিটা আর ভালোটা বুঝতে পাচ্ছেন না?
-উফফ, শীতল।
এমন করোনা।
-উফফ, আপনি। এমন করবেন না।
-আমার কিন্তু খুব রাগ লাগছে।
-আমারও কিন্তু খুব রাগ লাগছে।
-আহা!
-আহা!
-তোমাকে মারব এবার।
-আমিও আপনাকে মারব এবার।
-হোয়াট?
শীতল জিহ্বা কামড় দিয়ে চোখ বন্ধ করলো।
এটা কি বললো সে!
ইচ্ছে করে বলেনি। অনুকরণ করতে গিয়ে বলে ফেলেছে।
হাসান রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে। আজ কয়েক মিনিট লেট হয়েছে ক্লাস থেকে আসতে। বন্ধুরা এতো সহজে ছাড়তে চায়না।
রাফিয়ার গাড়ি এসে পড়েছে নাকি! ঐ তো রাফিয়া দাড়িয়ে আছে সাদা বোরখা পড়ে।
-আসসালামু আলাইকুম!
রাফিয়া হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়ালো।
হাসান অন্যদিনের থেকে আজ বেশি হাঁপাচ্ছে।
আজকাল একটু হাঁটলেই হাপানো শুরু হয়ে যায়।
রাফিয়া জিজ্ঞেস করবে নাকি একবার।
-রাফিয়া রিকশা ঠিক করে দিচ্ছি। চলে যাও।
আজ মনে হয় গাড়ি আসবেনা।
-তাই মনে হচ্ছে।
-এই রিকশা! এই রিকশা!
হাসান ভাড়া ঠিক করলো।
রাফিয়া হাসানের ঠিক করা রিকশা দিয়ে বাসায় যাবে। এটা যে কতদিনের সপ্ন ছিলো। আজ পূরণ হলো।
রাফিয়া রিকশায় উঠে বসলো।
হাসান একটু অবাক হলো। রাফিয়া আজ অপমান করেনি। একটু নরম হয়েছে।
-এতো হাটাহাটি করবেন না। শরীর খারাপ করবে।
রিকশা চলে গেলো।
হাসান নিজের বুকে হাত রাখলো। রাফিয়ার কেয়ারনেস কথা সোজা হাসানের হৃদয় বিধস্ত করেছে।
রাফিয়া আজ নরম স্বরে কথা বলেছে তার সাথে।
এটাই অনেক হাসানের জন্য। হাসান চায় শুধু একটু স্নেহ, ভালোবাসা, যত্ন।
আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করলো হাসান।
.
-ডোর ওপেন করো?
ওয়াশরুম থেকে কোন আওয়াজ নেই।
শীতল রাজের সামনে আসছেনা সেই সকাল থেকেই।
শীতলকে দেখলেই রাজ গাল বাড়িয়ে বলে – মার আমাকে!
-না। ভুল করে বলে ফেলেছি। মহান আল্লাহ তায়ালা শাক্ষ্যি।
-ভুল করেছো এর মাশুল দেবে।
-গালে একটা কষে থাপ্পড় দাও।
-মাফ চাই।
-ওহ, কামান হিট মি।
-তারচেয়ে আমাকে একটা থাপ্পড় দিন।
শীতল ওয়াশরুমে বসে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
রাজ আসলেই একটা সাইকো। মাথায় যেটা ঢুকে সেটা বের করতে পারেনা।
জোহরের নামাজের সময় হয়েছে। রাজ মসজিদে যাচ্ছে না। এদিকে শীতলও বের হয়ে নামাজ পড়তে পাচ্ছেনা।
– আমি থ্রি পর্যন্ত কাউন্ট করব।
যদি বের না হও তবে ডোর ভেঙে ফেলতে খুব একটা কষ্ট হবেনা।
ডোরে একটা লাথি দিতেই ওপেন হয়ে গেলো।
শীতল দুই হাত দিয়ে মুখ ঢেকে রেখেছে ভয়ে।
শীতলের হাত ধরে রুমে নিয়ে এলো রাজ।
-মুখ ঢাকার কি হলো? মনে হচ্ছে বাসর ঘরে ঢুকেছো।
আমি নতুন জামাই।
-উফফ, আমার ভয় লাগছে।
-এখনো সময় আছে চলে যাও।আমার মাথা গরম।
মাথায় কিছু ঢুকলে বের হয়না।
-কখনো না।
-তাহলে আমার গালে থাপ্পড় দাও।
-এটা কি বলছেন?পাপ লাগবে। আপনি আমার স্বামী।
বরং আমার অন্যায়ের জন্য আপনি থাপ্পড় দিন আমাকে।
-থাপ্পড় দাও।
-না।
রাজ শীতলের হাত নিয়ে নিজের গালে নিজেই থাপ্পড় দিতে চাইলো।
-দাও থাপ্পড়, মার আমাকে, হিট মি। প্লিজ।
এমন জোড়াজুড়িতে শীতল ঠাস করে রাজের গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলো।
এক গালে নয় দুই গালেই থাপ্পড় বসিয়ে দিলো শীতল।
রাজ হতভম্ব!
দুই গালে হাত দিয়ে তাকিয়ে রইলো।
শীতল নিজেও হতভম্ব!
নিজের দু-হাত পেছনে লুকিয়ে রাখলো।
-তুমি, তুমি, তুমি আমায় মারলে? থাপ্পড় দিতে পারলে?
ডেলিভারি হয়ে যাক এরপর মুনাফা সহ থাপ্পড় ফেরত পাবে। রাজ কখনো কারও দেনা রাখেনা।
-আমি ইচ্ছে করে থাপ্পড় দিইনি। আমার আল্লাহ তায়ালা জানে। একটু বিবেচনা করে মাফ করার কথা ভেবে দেখবেন।
বলে শীতল দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলো।
.
.
রাজ তার বাবার নামে মসজিদ, মাদ্রাসার নকশা করতে আর্কিটেক্ট এর কাছে গিয়েছে।
ময়মনসিংহের গ্রামের বাড়িতে দুটো স্কুল করারও প্ল্যান করে রেখেছে সে।
আল্লাহ তায়ালার নাম নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে গত সপ্তাহেই।
রাজ সুস্থতার জন্য শীতল আল্লাহর কাছে কত যে দোয়া করেছে। কত দান খয়রাত করেছে।
রাজ সুস্থ হওয়ার পর থেকেই শীতল প্রতিদিন দান খয়রাতে মশগুল থাকে।
শীতলের ধারণা এতোদিনে তার শশুর বাড়ির সম্পদ অর্ধেক হয়ে যাবার কথা কিন্তু আল্লাহ তায়ালার দয়ায় সম্পদ আরও দ্বিগুন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আজও শীতল গ্রামের বাড়ি থেকে আসা তিন জনের ছেলের অপারেশনের টাকা দিয়েছে।
চাঁচি বলল- শেষ সব শেষ।
দু-দিন পর বাড়ির ছেলেমেয়েরা মানুষের বাড়ি বাড়ি সাহায্য চাইবে।
ফুলি তোমাদের পরের মাস থেকে আর এই বাড়িতে কাজ করতে হবেনা।
-জ্বি। কোন ভুল হয়েছে?
-আমরাই তো মানুষের বাড়ি কাজ করতে যাব।
যেভাবে খরচ করতে শুরু করেছে তাতে কাজ না করে উপায় নেই।
তোমাদের চেনাজেনা বাসাবাড়ি থাকলে আমাদের একটু ঢুকিয়ে দিও। খেয়ে পরে বাঁচতে হবে তো।
কাজের লোকেরা হতভম্ব!
দুপুরে শীতল নিচে নামতেই আবারও চাঁচি তার কথার আক্রমণ করলো।
-এতো দান, সদকা দিয়ে কি হবে? ফিউচারের জন্য তো কোন প্রোপার্টি থাকবেনা।
-চাঁচি দান, সদকা হলো পরকালের সমপত্তি। প্রতিদিন অল্প পরিমাণে হলেও দান-সাদাকাহ করুন, এটি আপনাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাবে ইনশাআল্লাহ।
———————————
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,
“তোমাদের মধ্যে প্রতিটি ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলার সাথে সরাসরি কথা বলবে। কোন দোভাষী বা মধ্যস্থ থাকবে না। মানুষ তখন তার ডান দিকে তাকাবে, দেখতে পাবে শুধু তাদের প্রেরিত কর্ম। আর বাম দিকে তাকাবে দেখবে শুধু নিজ কৃত কর্ম। সামনের দিকে তাকাবে দেখবে শুধু জাহান্নামের আগুন। কাজেই তোমরা আগুন থেকে সাবধান হও। নিজেদের বাঁচাও– যদি একটি খেজুরের টুকরা দান করার বিনিময়েও হয়।”
[সহিহ বুখারি, হাদিস নং ৬০৯৬]
-উফফ শীতল ছাড় আমাকে।
অফিসে কি করো তুমি?
-দুদিন পর ডিভোর্স হবে এখনো সবাইকে ও মনে করছিস?
-শাকিলা তুই?
-লাঞ্চ করতে চলে এলাম।
-আজ কাজের চাপ প্রচন্ড।
-তা বললে হবেনা।
কাজ হলো কাজের জায়গায়। আর আপনজন দের সাথে একসাথে লাঞ্চ করা আরেক ব্যাপার।
আজ তোর সাথে লাঞ্চ করব। বিকেলে অফিস শেষে তোকে নিয়ে ঘুরতে যাব। ময়মনসিংহ শহর তো দেখিনি।
-আজ হবে নারে। লাঞ্চ করে চলে যা। অন্য কোনদিন।
-নো নো নো। আজ তোর সাথে কোথাও সময় কাটাবো বলে প্ল্যান করেছি।
আমার মন ভেঙে দিসনা প্লিজ।
রাজের হাত ধরে শাকিলা কথাটা বলল।
রাজ হাত ছাড়িয়ে নিলো।
ফোন হাতে নিয়ে বলল,
-ওকে। বল কি খাবি? বাসা থেকে কি মেনু আনতে বলব?
-বাসার খাবার খেতে ভালো লাগেনা।এক ঘেয়ো লাগছে।
– চায়নিজ ?
– দৌড়াবে।
শীতল লাঞ্চ নিয়ে অফিসে এলো।
আজ প্রথমবার অফিসে স্বামীর জন্য খাবার নিয়ে এলো টিফিনবাক্সে।
অনুভূতিটা অন্যরকম।
শীতলের স্বাদ ছিলো। তার স্বামী যখন কোথাও যাবে কাজ করতে তখন সে খাবার নিয়ে যাবে নিজ হাতে রান্না করে।
রাজ সুস্থ হলে অফিসে এলে শীতল রান্না করে নিয়ে আসবে। তারপর দুজন মিলে একসাথে কেবিনে লাঞ্চ করবে।
সকাল থেকে শীতল রাজের পছন্দ মতো রান্না করেছে।
একটু তেল ছিটকে গলা হালকা লাল হয়েছে। জ্বলছে বেশ। তাতে কি!
স্বামীর জন্য এইটুকু সহ্য করতে পারবেনা সে।
রাজ তৃপ্তি নিয়ে খাওয়ার সময় সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে।
শীতলকে কেউ চেনেনা।
তাই লিফটে শীতল ঢুকতে পারলোনা। শীতলের কাছে কোন কার্ড নেই রাজের।
যাদের কাছে কার্ড আছে তারাই লিফটে যেতে পারবে।
শীতল রাজের স্ত্রীর পরিচয় দিলো না। রাজ যখন শীতলকে এগিয়ে দিতে আসবে নিচে গাড়িতে তখন সবাই বুঝে যাবে, হয়ত রাজ বলবে, শি ইজ মাই ওয়াইফ।
শীতল ছয়তলা সিঁড়ি ভেঙে উঠলো। ক্লান্তিতে শরীর ভেঙে পড়েছে। হাঁপিয়ে উঠেছে। তবুও মনে শান্তি লাগলো রাজের সাথে অফিসে প্রথম লাঞ্চ করবে বলে।
-ম্যাডাম কেবিনে ঢোকা যাবেনা।
-আমি ঢুকব।
-স্যার এইসময় কাউকে ঢুকতে নিষেধ করেছেন।
-আমার জরুরি কাজ আছে।
-যত জরুরি থাক স্যারের নিষেধ আছে।
ভেতরে একজন মেহমান আছেন স্যারের।
-কোন মেহমান? নাম টা বলা যাবে?
-সরি ম্যাডাম। অফিস রুল। পার্সোনালি কাউকে কিছু বলা যাবেনা।
– জ্বি! আচ্ছা। দেখুন আমাকে দেখলে আপনার স্যার খুশি হবেন।
-স্যার এর অনুমতি ছাড়া সম্ভব না।
-অনুমতি নিতে গেলে সারপ্রাইজ নষ্ট হয়ে যাবে।
আমাকে দেখলে আপনার স্যার খুশি হবে অনেক বললাম তো।
-আপনি কি হন স্যারের?
-সেটা স্যার বলবে আপনাদের। শীতল একটা হাসি দিলো।
কেবিন থেকে হালকা হাসির আওয়াজ আসছে।
শাকিলা রাজের প্লেটে খাবার তুলে দিচ্ছে। শুধু তুলে দিলে তাও হতো বাট হাত দিয়ে খাইয়েও দিচ্ছে।
রাজও একের পর এক লোকমা মুখে তুলে নিচ্ছে আর ফাইল দেখছে।
রাজ ফাইল দেখতে বিজি তাই কোনদিকে খেয়াল নেই।
শাকিলা এই সুযোগে অনেকটা ক্লোজ হয়েছে রাজের। সে রাজের গা ঘেঁষে সোফায় বসেছে। চুল গুলো বার বার রাজের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। রাজ চুল সরিয়ে দিতেই শাকিলার চোখে চোখ পড়লো। দুজন দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। শাকিলা হলো সেই ধরনের মেয়ে যাকে একবার দেখলে চোখ ফেরানো অসম্ভব।
শীতল কেবিনের বাহির থেকেই চোখ বন্ধ করলো।
কেউ মনে হয় তার গলা চেপে ধরেছে। হাতুড়ি দিয়ে কেউ তার মাথায় আঘাত করেছে মনে হচ্ছে।
সিড়ি দিয়ে উঠার জন্য পা খুব ব্যথা করছে।
ইতিমধ্যে পেট ব্যথাও শুরু হয়েছে।
রাজ চোখ বন্ধ করে শীতলকে অনুভব করলো।
শীতলের মুখের উপর চুল গুলো সরিয়ে দিলো।
শীতলকে আজ অন্যরকম লাগছে।
শীতলের গালে স্পর্শ করতেই রাজ চমকে গেলো। হাত সরিয়ে নিলো।
শীতল কোথায়? এটা তো শাকিলা।
শাকিলা লাজুক ভাবে একটা হাসি দিলো।
রাজের গলায় হাত দিয়ে খুব কাছে গেলো। জরিয়ে ধরলো।
-আজ আমি খুব খুশি।
-আজ আমিও খুব খুশি।
আসসালামু আলাইকুম!
-তুমি এখানে?
রাজ একটু সরে গেলো। নিজের ফাইলে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে বলল- ওয়ালাইকুম আসসালাম!
তুমি?
-আসতে পারিনা।
সেই অধিকার কি নেই আমার?
-না আসতে পারোনা। কিছুদিন পর তো অধিকার থাকবেনা।
শুধু শুধু অধিকারের মায়া বাড়িয়ে লাভ কি?
-এসব কথা থাক।
শীতল দেখলো শাকিলা রাজের মুখে খাবার তুলে দিচ্ছে। শীতল আসায় রাজের কোন ভাবান্তর হলো না।
রাজও চুপচাপ খাচ্ছে।
খুব কষ্ট হচ্ছে দাড়িয়ে থাকতে।
প্রায় আট মাস হতে চললো।
হাঁটতে কষ্ট হয়। বসে থাকতেও কষ্ট হয়।
আজ সে দুপুরে খায়নি। একসাথে খাবে বলে সকালে কিছু তেমন মুখে দেওয়ার সময়ও পায়নি।
রাফিয়া একটা সিদ্ধ ডিম খাইয়ে দিয়েছিলো।
শীতল তাকিয়ে আছে রাফিয়া হেঁসে হেঁসে খাইয়ে দিচ্ছে। রাজ ফাইলে কাজ করছে আর মুচকি হাসছে।
শাকিলা খানিকটা স্যুপ রাজের গালে ভরিয়ে দিলো। রাজ চোখ বড় বড় করে তাকালো। শাকিলা সে কি হাসি।
শীতল যেন উপস্থিত নয় এখানে। ওদের কোন সমস্যা হচ্ছে না শীতল থাকায়।
শীতলের যেন কোন অস্তিত্ব নেই।
রাজ হঠাৎ বলল- বসো শীতল। একটু জিরিয়ে তারপর যাও।
দেখছো তো বিজি আছি।
-জ্বি। আপনি বিজি।
শাকিলা বলল- অসময়ে বিরক্ত করার জন্য তুমি এক্সপার্ট।অসময়ে কারও জীবনে ঢুকে পড়তেও তুমি এরচেয়ে বেশি এক্সাপার্ট। মাঝখানে ঢুকতে তোমার খুব ভালো লাগে তাইনা?
-অসময়ে বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। জীবনে ঢোকার জন্যও দুঃখিত। মাফ করবেন পারলে।
শীতল বসে আছে রাজের অপজিটে।
কেবিনে শীতল যেন নেই।
অনেক্ক্ষণ পর রাজ বলল- তুমি এখানে কেন?
-একসাথে খাব বলে এসেছিলাম। কথাটা মাথা নিচু করে সল্প স্বরে বলল শীতল।যেন সে কোন অপরাধী।
-আমি তো খেয়ে নিয়েছি। দেখছো তো। কে বলেছে তোমাকে খাবার আনতে?
শীতল মাথানিচু করে আছে।
রাজ কাকে যেন ফোন করলো।
সিড়ি দিয়ে উঠার পর দেখা হওয়া মেয়েটি এলো।
-স্যার উনি আপনাকে সারপ্রাইজ দেবে বলে আমি ঢুকতে দিয়েছি। আপনার পরিচিত উনি। তাছাড়া আমি লিফটের সামনে ছিলাম। তাই দেখতে পায়নি সিঁড়ি দিয়ে কে এসেছে। প্রেগন্যান্ট সিচুয়েশনে উনি এতোগুলো সিঁড়ি পেরিয়েছে তাই পার্সোনালি খারাপ লাগছিলো। এজন্য আপনার রুমে পাঠিয়েছি। আই এম সরি।
-হোয়াট ননসেন্স।
লিফট কি জন্যে? সিঁড়ি দিয়ে কেন এসেছো?
আমার বেবির যদি কিছু হতো?
কখনো তোমাকে ক্ষমা করব না।
-আমার কাছে আপনার কার্ড নেই। আমি চেয়েছিলাম। আপনি দেননি। কার্ড ছাড়া লিফটে ঢোকার নিয়ম নেই।
-তাহলে তোমাকে কে আসতে বলেছিলো? কে রান্না করতে বলেছিলো?
ময়মনসিংহে কি রেস্টুরেন্ট কম ছিলো? তোমার হাতের খাবার খেতে আমার আর ভালো লাগেনা। লাগলে নিশ্চয়ই তোমাকে রান্না করতে বলতাম। এতোটুকুও বোঝও না। তোমাকে এবং তোমার ফেবারের কোন নিড নেই আমার।
শীতল একটা কথাও বলতে পারলো না। তার গলা যেন কেউ ধরে রেখেছে।
শাকিলা পায়ের উপর পা তুলে ফোনে ভিডিও গেইম খেলছে। তার গেইম খেলতে ভালো লাগে।
অফিসের মেয়েটি ভয়ে কাঁপছে।
-যত নষ্টের মূল এই খাবার।
দাড়াও দেখাচ্ছি। টিফিনবাক্স টা নিয়ে রাজ সোজা ছূরে মারলো ফ্লোরে।
আর কখনো আসবেনা অফিসে। আমাকে কোন ফেবার করবে না।
টিফিনবাক্স টা ভেঙে বিকট আওয়াজ হলো। ঝনঝন করে আওয়াজ হচ্ছে।
.
❤মহান আল্লাহ তায়ালার ৯৯টি নামের তিনটি নাম (আরবি,বাংলা)
❤৪০. ﺍﻟْﺤَﺴِﻴﺐُ আল-হ়াসীব মীমাংসাকারী
৪১. ﺍﻟْﺠَﻠِﻴﻞُ আল-জালীল গৌরবান্বিত।
৪২. ﺍﻟْﻜَﺮِﻳﻢُ আল-কারীম উদার, অকৃপণ❤
.
চলবে……..