শত ডানার প্রজাপতি পর্ব-০১

0
7085

#শত ডানার প্রজাপতি
পার্ট :১
#urme prema (sajiana monir )

বোনের সুখের জন্য নিজের প্রাণ প্রিয় বান্ধবীর বাগদত্তাকে বিয়ে করেছি । আর এখন বউ সেজে বাসর ঘরে অপেক্ষা করছি । অদ্ভুদ তাই না ? হ্যা অদ্ভুত !
চারদিক বাহারি ফুলেরগন্ধে মো মো করছে ।বাসর ঘরে নববধূর চোখে থাকে হাজারো স্বপ্ন জল্পনা কল্পনা । কিন্তু আমার ? আমার চোখে রয়েছে ভয় আর আতঙ্ক । এই বিয়ে আমার জীবনে কাল নিয়ে আসবে তা আমি বেশ বুঝতে পারছি । পরবর্তী দিন গুলো কতটা ভয়ংকর আর কষ্টদায়ক হবে তা আন্দাজ করেই রুহ কেঁপে উঠছে ।

আমি হুর । পুরোনাম হামিয়া হুর ।আমার পরিচয় আমি অনাথ ।আমার জন্মের পূর্বে বাবা এক এক্সিডেন্টে মারা যায় । আর জন্মের সাথে সাথে মা কে হারাই ।ছোট থেকে মামার সংসারে বড় হয়েছি । পরিবার বলতে তাদেরকে জানি ।মামা মামীই বাবা মায়ের অভাব পূরন করেছে । নিজেদের সন্তানের মত স্নেহ ভালোবাসা দিয়ে বড় করেছে ।
আতেফ খাঁন অগ্নি । আমার স্বামী যার সাথে কয়েক ঘন্টা পূর্বে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছি । যদিও বিয়েটা আমার জন্য একপ্রকার বাধ্যতা ।

হ্ঠাৎই দরজা খোলার আওয়াজে ভাবনায় ছেদ পরে । সঙ্গে সঙ্গে কলিজাটা কেপেঁ উঠে ।নিশ্চয়ই অগ্নি ভাইয়া এসেছেন ।
আমি ঠাই বিছানায় বসে আছি ।কারণ অগ্নি ভাইয়ার সামনে দাড়ানোর মত সাহস আমার নেই । আজ আমি তার চোখে সবচেয়ে বড় অপরাদী ।
উনি আমার কাছে এসে আমার মুখের উপর কয়েক বান্ডিল টাকা আর পেপারস ছুড়েঁ মারে ।আমি মাথা তুলে উনার দিকে অবাক চোখে তাকাতেই দেখি । উনার চোখজোড়া ভয়ংকর লাল বর্ন ধারন করেছে ।চোখে মুখে ভয়ংক্র রাগ ।আমি কিছু বলবো তার আগেই উনি কর্কশ গলায় বললেন ,

– এই কন্ট্রাক্ট পেপারসে সাইন কর । এখানে দশ লক্ষ টাকা আছে যদি কম পড়ে তাহলে চেকে টাকার এমাউন্ট বসিয়ে নিও ।

আমি অবাক চোখে তাকিয়ে প্রশ্ন করলাম ,

– কিসের কন্ট্রাক্ট ? আর কিসের টাকা ?

– তুমি কি ভাবছিলে আমি সারাজীবন তোমার সাথে থাকবো ? নো ওয়ে ।আমি সুপ্তিকে ভালোবাসি আর সবসময় তাকেই ভালোবাসবো । মায়ের চাপে পড়ে তোমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছি । কন্ট্রাক্ট মেরেজ বুঝো? এই পেপারস এক বছরের কন্ট্রাক্ট মেরেজের । তুমি আমার এক বছরের নাম মাত্র বউ থাকবে । এক বছর পর তুমি আমার জীবন থেকে বিদায় হবে ।
আর টাকার কথা শুনে চমকাচ্ছ কেন ?
এই টাকার লোভেই তো আমাকে বিয়ে করেছো । তাই না ? তোমার এতই লোভ যে নিজের বেস্টফেন্ডের হবু বর কে বিয়ে করে নিলে । তুমি জানতে আমি সুপ্তি কে কতটা ভালোবাসি ।বলো জানতে না ?

উনার ধমকে কেপেঁ উঠি ।উনার কথা গুলো বুকে ছুড়ি আঘাত করছে ।জলে চোখ চিকচিক করছে । উনি আমার বাহু শক্ত করে ধরে । বিছানা থেকে টেনে নামায়। নিজের সামনে দাড় করিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলেন ,

– একদম ন্যাকা কান্না করবে না হুর । আমার মায়ের মত আমি তোমার ন্যাকা কান্নায় গোলছি না । এইসব ন্যাকামি করেই আমার মায়ের মন ভুলিয়েছো তাই না ?
আমি তোমাকে আগেই বারবার বলেছি বিয়ের প্রপোজাল
রিজেক্ট করতে । কিন্তু তারপরও কেন রাজি হলে ? বলো কেন?

উনার ধমকে আর নিজের কান্না ধরে রাখতে পারিনা । শব্দ করে কান্না করে দেই ।কান্না করতে করতে বলি ,

– বিশ্বাস করুন ! আমি বিয়েটা নিজের ইচ্ছায় করিনি । আমি বাধ্য ছিলাম ।বিয়েটা না করলে আমার বোনের জীবন শেষ হয়ে যেত ।

অগ্নি ভাইয়া আমার কোনো কথা কানে নিচ্ছে না । আমাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেয় । আমার কপাল দেয়ালে লেগে কিছুটা কেটে যায় । কিন্তু সে দিকে তার কোনো খেয়াল নেই । উনি সব কিছু ভাংচুর করছে আর চিৎকার করে বলছে,

– সব মিথ্যা । সব মিথ্যা ! এসব তুমি ইচ্ছে করে করেছো । এত বড় বাড়ির বউ হবার লোভ সামাল দিতে পারনি তাই রাজি হয়েছো । তোমারদের মত মিডল ক্লাস মেয়েদের থেকে এরচেয়ে বেশি কি আশা করা যায় ? কোনো সুযোগ হাত ছাড়া করোনা ।তোমার মামাতো বোন আমার ভাইকে ফাসিয়েছে আর তুমি আমাকে ফাসাতে চাচ্ছো তাই না ?
কিন্তু মনে রেখ আমি তোমাকে বউ মানি না আর না কোনদিন মানবো ।রুপের মোহ তে পড়ার মত ছেলে আমি না।আমি জাস্ট তোমাকে ঘৃণা করি । শুধুই ঘৃণা ।
আচ্ছা একটা কথা বলো তোমার মামা মামী ও কি এই পুরো প্লানে সামিল ? হতেও পারে । টাকার লোভ কার নেই?

উনার সব কথা চুপচাপ হজম করলেও শেষের কথা গুলো হজম করতে পারলাম না ।মাথাটা গরম হয়ে যায় । উনার প্রতি যা সম্মান ছিলো নিমিষেই তা শেষ হয়ে গেল । খুব ঘৃণা হচ্ছে তাকে । আমার প্রতি আমার পরিবারের প্রতি তার এমন নিম্ন ধারনা ?
এতটা নিচ ভাবে আমাদের ?
আমার কাছে মামা মামীর সম্মান সবার প্রথম । তার পর সব । উনাদের সম্মানের উপর কেউ আঙুল তুলবে তা আমি সয্য করবোনা । আমি রেগে উনার কলার চেপে ধরি । চিৎকার করে বলি ,

– মি. আতেফ খাঁন অগ্নি কি ভাবেন নিজেকে ? আপনি ধনী বলে আপনার আত্নসম্মান আছে আর আমরা মিডল ক্লাস বলে আমারদের কোন আত্নসম্মান নাই ? টাকার গরম দেখাচ্ছেন? আমার মামা আপনার বাড়িতে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসিনি আপনার মা এসেছিলো আমাদের বাড়িতে ।
আর আপনি আমাকে কি ছাড়বেন ! আমি নিজেই আপনার মত লো মেন্টালিটির মানুষের সাথে থাকতে পারবোনা ।আমার না আপনাকে প্রয়োজন না আপনার টাকা ।এই পেপারসে সাইন লাগবে তাই তো ?

কন্ট্রাক্ট পেপার্সে সাইন করে উনার মুখের উপর ছুড়েঁ মেরে কঠোর গলায় বলি ,

– এই নিন পেপারস । আজ থেকে আমার মুক্তির প্রহর গুনা শুরু করলাম । আমি ওয়াদা করছি । যেদিন সুপ্তি ফিরবে ঠি ক সেদিনই আপনার জীবন থেকে আর এই বাড়ি থেকে চলে যাবো ।যদি তা আগামীকাল হয় তবে তাই ই ।

আমার কথায় উনি ভয়ংকর রেগে গেছে । কিন্তু আমি সেদিকে আমি কোনো তেক্কার করিনা । তাচ্ছিল্যর হাসি দিয়ে বললাম ,

– আর একটা কথা । এই যে আপনি বার বার সুপ্তি কে ভালোবাসি ভালোবাসি বলে চিৎকার করছেন ।এ আপনার কেমন ভালোবাসা ? যে বিয়ের সপ্তাহ খানেক আগে আপনার ভালোবাসার মানুষ আপনাকে রেখে পালিয়েছে । নিশ্চই সুপ্তি আপনার ভালোমানুষি মুখোশের আড়ালে কুৎসিত রুপ দেখে নিয়েছিলো তাই পালিয়েছে ।
যাক বেচারি বেচেঁ গেছে !

আমি আর কিছু বলবো তার আগেই আমার গালে সজোরে থাপ্পড় পরে আমি গালে হাত দিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে উনার দিকে তাকিয়ে থাকি । টলটল করে আমার চোখ থেকে জল ঝড়ছে । উনি আমার মুখ শক্ত করে চেপে ধরে বললেন ,

– তোমার সাহস কি করে হয় আমার ভালোবাসা নিয়ে কথা বলার ? খবরদার এরপর এমন কিছু বললে তোমাকে খুন করে ফেলবো ।

আমি চুপ করে নিজের চোখের জল ফেলছি । অগ্নি ভাইয়া আহত গলায় বললেন,

– বাবার থাকাটা খুব দরকার ছিলো । আজ যদি বাবা বেচেঁ থাকতো। তো মা এই ভাবে ব্লাকমেইল করতে পারতো না । কথায় কথায় বাবার দোহাই দিতে পারতোনা ।
শুধু মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে তোমাকে বিয়ে করতে রাজি হয়েছি না হয় কোনো দিন রাজি হতাম না ।

বলেই উনি দ্রুত পায়ে রুম থেকে বেড়িয়ে পড়ে । আমি থম মেরে নিচে বসে পড়ি । চোখ থেকে অঝোর ধারায় জল ঝড়ছে । এমন আমার সাথেই কেন হলো ? কি দোষ ছিলো আমার ?
আজ বিয়ের মত পবিত্র বন্ধন আমার জন্য একটা চুক্তিনামা হয়ে গেলো ।স্বপ্ন ছিলো কারো বউ হবো । আমার বর আমাকে অনেক ভালোবাসবে ।আমারও একটা ছোট্ট সংসার হবে। একটা পরিবার হবে । কিন্তু কি থেকে কি হয়ে গেল ! বউ তো হয়েছি কিন্তু তা শুধু একবছরের জন্য । আমার ভাগ্যে সুখ নেই । মানুষ ঠি কই বলে আমি পোড়াকপালি ।তাই তো আমার জীবন আজ এমন মোড় নিয়েছে।

রাগের মাথায় তখন উনার সুপ্তির প্রতি ভালোবাসা নিয়ে কটুক্তি করলেও ,সত্য তো এটাই যে উনি সুপ্তি কে খুব ভালোবাসে । এতটা ভালোবাসে যা শব্দে ব্যাখ্যা করা সম্ভব না।
তাদের মাঝে আমার আসাটা কি খুব প্রয়োজন ছিলো ?
কেন এমনটা হলো ? আমি তো তাদের মাঝে আসতে চাইনি নিয়তি কেন আমাকে তাদের মাঝে এনে দাড় করিয়ে দিলো !
চোখের সামনে জলজল করে অতীত ভেসে উঠে ।

অতীত___________________________

ভার্সিটির সদর দরজায় দাড়িয়ে আছি আমি আর আমার বেস্টফ্রেন্ড শেফা । সুপ্তির জন্য অপেক্ষা করছি। আজ ভার্সিটিতে এডমিশন নিতে এসেছি ।
এই ভার্সিটি আমার অচেনা নয় ।ভার্সিটির কলেজ শাখায় উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেছি । এখানকার আঙিনার সাথে আমার বেশ নিবিড় সম্পর্ক । এখানে যেমন সুখকর স্মৃতি রয়েছে তেমনি বিষাদময় স্মৃতিও রয়েছে ।
হ্ঠাৎই ফোনটা বেজে উঠে । তাকিয়ে দেখি সুপ্তি ফোন করেছে । রিসিভ করে জানতে পারি মেডাম আগের থেকেই ভিতরে আছে ।আমি দ্রুত পায়ে ভিতরে যেতেই নেই ওমনি ঘটে অঘটন । বড় বিদুৎ খাম্বার মত কিছুর সাথে সজোরে ধাক্কা খেয়ে নিচে পরে যাই ।
ও মা গো ! আমার কমোড় বুঝি এবার গেলো ।এখন আমার কি হবে ? আমার তো এখনো বিয়ে হয়নি । কমোড় ভাঙা পাত্রীকে কে বিয়ে করবে ! ওমা ,আমার কি তবে বিয়ে হবে না ?
এসব ভেবেই নাক টেনে টেনে কান্না করে দেই ।
হ্ঠাৎ ই আমার ভাবনায় ছেদ পরে কারো কর্কশ গলায় । সামনে তাকিয়ে দেখি কালো জেকেট পড়নে বেশ উচা লম্বা এক সুদর্শন পুরুষ দাড়ানো ।ছয় ফুট তো হবেই । গায়ের রং বিদেশীদের মত ধবধবে সাদা। তার ফর্সা চেহারায় খোচাঁ খোচাঁ দাড়ি ।অসম্ভব সুন্দর চোখ।। লম্বা সরু নাক । নাকের ডগাটা আপাতত লাল হয়ে আছে । কিন্তু তা কেন ? যে কারণেই হোক না কেন বেশ লাগছে । সব মিলিয়ে লোকটির উপর যে কেউ ক্রাশ খাবে। আমি একদফা অলরেডি ক্রাশ খেয়ে গিলে বসে আছি । কিন্তু তা মুখ পর্যন্ত আনলাম না হজম করে নিলাম । কারণ তার আগেই সামনের লোকটা ধমক দিয়ে বলে ,

– চোখ খুলে কি বাড়িতে রেখে এসেছো ? চোখে দেখো না ?

উনার চোখে মুখে বিরক্তির ছাপ । ভেবেছিলাম সরি বলবো কিন্তু এখন আর বলবোনা । মুডটাই নস্ট করে দিলো । আমি নিচ থেকে উঠতে উঠতে জবাব দিলাম ,

– চোখ তো আপনার ও আছে । আপনি দেখতে পাননি ? নাকি বাড়ি তে রেখে এসেছেন ? হুহ

উনি ঝাঁঝালো কন্ঠে বললো ,

– খুব অসভ্য তো তুমি ! দোষ তোমার কোথায় সরি বলবে তা না করে ঝগড়া করছো ?

– হুহ আপনি নিজে মনে হয় ভদ্রতার দেবতা ? কি ভাবে কথা বলতে হয় তা জানেননা আবার ভদ্রতা শেখাচ্ছেন ?

– ও হ্যালো ! দোষ তোমার অকে । যদি দেখে চলাচল করতে না পারো তাহলে কেন বাড়ি থেকে বের হও ?

– সেম টু ইউ ! কথা বলার ভদ্রতা না থাকলে কেন মুখ খুলেন ভাই ?

আমার কথায় উনি আরো বেশি রেগে যায় । এতসময় ধরে শেফা সব কিছু হা হয়ে দেখছিলো । পরিস্থিতী খারাপ দিকে যেতে দেখে । আমার কানের কাছে এসে কাদো কাদো চাপা গলায় বলল,

– হুর বইন এবার অফ যা । তুই জানিসনা এটা কে !

আমি শেফা কে ধমক দিয়ে বললাম,

– চুপ যা তুই ।সে যেই হোক আমার কি ? আমি কাউকে ভয় পাইনা ।

সামনের লোকটি দাতেঁ দাতঁ চেপে বললেন ,

– তুমি জানোনা আমি কে ?

– কেন ভাই ? আপনি কি নিজের নাম ভুলে গেছেন ? পুলিশের কাছে রিপোর্ড করবো ?

উনি আমাকে কিছু বলবে তার আগেই উনার ফোন চলে আসে । উনি ফোন কেটে আমার দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাকিয়ে বললেন ,

– তোমার মত ইরিটেটিং মেয়ের সাথে কথা বলে নষ্ট করার মত সময় আমার নেই ।

আমি একগাল প্লাস্টিক হাসি দিয়ে জবাব দেই,

– সেম টু ইউ ভাইয়া । আমাদের চিন্তা ধরণার কত মিল । যাক দোয়া করি আপনার কপালে যেন একটা নাগিন বউ জুটে ।

– নাগিন বউ জুটলেও চলবে। কিন্তু তোমার মত ঝগড়াটে মেয়ে ? নো ওয়ে।!

উনি উনার কথা শেষ করে আমাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায় । আমি তার কথায় থ মেরে রইলাম । কি বললো এই শয়তান লোক ? আমি ঝগড়ুটে ? মাথা আবার গরম হয়ে যায় ।
আমি পিছন থেকে চিৎকার করে বললাম,

– দোয়া করেন আমি আপনার বউ হয়ে আপনার জীবন তেজপাতা করে দেই !

উনি পিছনে ফিরে । সরু চোখে তাকিয়ে প্রতিউত্তরে আঙুল দেখিয়ে ইশারা করলো আমাকে সে দেখে নিবে।
বাট হু কেয়ার্স ? এই হুর কাউ কে ভয় পায়না হুহ ।আপন মনে বিরবির করে যেই পাশে তাকাই শেফার ক্রুদ্ধদৃষ্টি দেখতে পাই ।আমি সেদিকে তাক্কার না করে ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে পানি খেতে লাগি । শয়তান ব্যাটার সাথে ঝগড়া করতে যেয়ে গলা শুকিয়ে গেছে।
শেফা ক্রুদ্ধ গলায় বলল,

– তুই এতক্ষণ যার সাথে ঝগড়া করছিলি জানিস সে কে ?

আমি মুখে পানি রেখে মাথা না বোধক দুলালাম। মানে জানিনা । শেফা উত্তরে বলল,

– আমাদের সিনিয়র আতেফ খাঁন অগ্নি । রাজনীতিবিদ । এবার ফাইনাল ইয়ারের স্টুডেন্ট ।

শেফার কথা শুনে পানি নাকে মুখে উঠে যায় । জোরে জোরে কাশতে লাগি । বিশ্বাস করেন রাসেল ভাই । এমন কিছুর শুনার জন্য মটেও প্রস্তুত ছিলাম না।!
কিন্তু শেফা এখানেই থেকে নেই । এর পর যা শুনলাম তা শুনেভহাত পা কাপাঁকাপি শুরু হয়ে যায় ।
শেফা বলল,

– উনার মা এই ভার্সিটির ট্যাস্টি প্লাস কমিটির সভাপতি । ভাবতে পারছিস ব্যপারটা উনার কানে গেলে কি হতে পারে ?

শেফার কথা শুনে খুব কান্না আসছে । সব কেন উনার ফেমিলিতেই হতে গেল?
ইচ্ছে করছে গলা ছেড়ে ভ্যা ভ্যা করে কান্না করি। খুব তো বড় মুখ করে বলেছিলাম । হুর কাউকে ভয় পায় না ! এবার আমার কি হবে । এই রাক্ষস লোক তো বাটে পেলে আমাকে কাচাঁ চিবিয়ে খাবে ।
আয়ায়ায়ায়ায়ায়া ! আমার এবার কি হবে ?

সেদিন বিয়ের কথাটা যে পাই পাই করে সত্যি হয়ে যাবে আমার তা জানা ছিলো না । এমন কিছু হবে জানলে কোনো দিন উনার সাথে কথাই বলতাম না ।

চলবে ………❤️