শর্তনামা পর্ব-০৩

0
213

#শর্তনামা
#সাইয়্যারা_খান
#পর্বঃ৩

রাত প্রায় ২ টা। নিশাকে জড়িয়ে ধরে আরামে ঘুমাচ্ছে ওয়াসিফ। নিশাও মনোযোগ দিয়ে দেখতে লাগলো ঘুমন্ত ওয়াসিফকে। ঠোঁটের নিচের তিলটা ওকে আকর্ষণ করতেই টুপ করে একটা চুমু খেল নিশালা। পরপরই লজ্জায় সরে গেল। পরে আবার ভাবলো লজ্জার কি আছে? তার নিজের বিয়ে করা জামাই এটা। একবার না, দুইবার না পরপর তিনবার কবুল বলে বিয়ে করেছে ও। তাহলে কেন লজ্জা পাবে? নো লজ্জা। ভেবেই আরেকটা জোরে চুমু খেল। ওয়াসিফ ওকে আরেকটু জড়িয়ে ধরে বললো,

— আমার ঘুমের সুযোগ নিচ্ছো?

নিশা লজ্জায় হাসফাস করতে লাগলো। হঠাৎ করে দুশমনি করে লজ্জাগুলো জেঁকে ধরলো ওকে।
ওয়াসিফ ওকে দেখতে লাগলো। এই মেয়েকে আজ প্রথম লজ্জা পেতে দেখেছে ওয়াসিফ। আস্তে করে নিশার কপালে চুমু খেয়ে বললো,

— আমার নিশু যে লজ্জাও পায় তা তো জানতাম না?

— কি বলতে চাইছেন আমি বেশরম?

— আল্লাহ আল্লাহ কি বলো নিশু? আমি ঐ ভাবে বলি নি তো?

— হু হু বুঝলাম।

— যাক আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।

বলেই শ্বাস নিলো। নিশা আস্তে করে ডাকলো,

— ওয়াসিফ?

ওয়াসিফ মুখ তুলে তাকালো। এই প্রথম তার নিশু তাকে তার নাম ধরে ডেকেছে। ওয়াসিফের কোন হেলদুল না দেখে নিশা দিলো ওকে জোরে এক ধাক্কা। হকচকিয়ে গেল ওয়াসিফ। কোন মতে উঠে বসে জিজ্ঞেস করলো,

— ধাক্কা কেন মারলা নিশু?

— ক্ষুধা লেগেছে?

— এত তারাতাড়ি। ৪ ঘন্টার মধ্যে?

নিশা চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে বললো,

— শর্তনামায় যে লিখা ছিলো রাতে আমার যতবার ক্ষুধা লাগবে ততবারই খাওয়াতে হবে ভুলে গেলেন?

ওয়াসিফ মুখটা সিরিয়াস করে বললো,

— এই এই ভুলি নাই। এখনই নিয়ে আসছি।

বলেই দৌড়ে চলে গেল। এইদিকে নিশা দাঁত কটমটিয়ে হাসলো। ওয়াসিফ কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফিরে এলো হাত ভর্তি খাবার নিয়ে। নিশা অবাক চোখ করে বললো,

— এগুলো কে খাবে?

— তুমি।

— আমি কি রাক্ষস?

— হ্যাঁ আরে মানে চার ঘন্টার ব্যবধানে ক্ষুধা লাগলো তাই ভাবলাম হয়তো বেশি ক্ষুধা লেগেছে।

— এত কে ভাবতে বলেছে আপনাকে? শর্তনামা পরেন নি? আর তখন আমি খেতে পারি নি ঠিক মতো তাই এখন ক্ষুধা লেগেছে।

ওয়াসিফ আর কিছু বললো না। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তার নিশুর খাওয়া দেখতে লাগলো। নিশা বিরক্ত হয়ে বললো,

— এই এভাবে তাকান কেন হ্যাঁ? পেট ব্যাথা করলে খবর আছে আপনার।

ওয়াসিফ তারাতাড়ি মুখ ঘুরিয়ে রাখলো। না জানি নিশু আবার কখন ধমকে দেয়। নিশার খাওয়া শেষ হতেই ওয়াসিফ সব রেখে আসলো। রুমে আসতেই দেখলো তার নিশু ঘুমে কাঁদা। একটু হেসে আঙুল দিয়ে ওর গাল দিয়ে ছুঁয়ে দিলো। মেয়েটাকে একটু বেশিই ভালোবাসে ওয়াসিফ।

_______________

সকাল সকাল ঘুম ভাঙলো নিশার। মুখে কারো উষ্ণ নিশ্বাস পরতেই বাকি ঘুমটুকুও উড়ে গেল। মনে পরলো নিজের অবস্থান। আপাতত ওয়াসিফের পেশিবহুল বাহুতে আটকে আছে ও। মাথাটা উঁচু করে একটু দেখার চেষ্টা করলো। বন্ধ চোখটা ঘন বড় পাপড়িতে ভরা। লোকটা একটু বেশিই সুন্দর। কিন্তু এমন সুন্দর তো মেয়েরা হয়। ভাবতেই আঙুল দিয়ে নেড়ে দিলো ওয়াসিফের ঘন পল্লব। একটু নড়েচড়ে উঠলো ওয়াসিফ। নিশা খুব মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো ওয়াসিফকে। হঠাৎ করে জেগে উঠলো ওয়াসিফ। নিশাকে আরেকটু জড়িয়ে ধরে গলায় চুমু খেয়ে বললো,

— কি দেখো নিশু? আমি তো তোমারই।

— হুম দেখছি আপনি কিছুটা মেয়েদের মতো।

হঠাৎ এমন কথায় কথার খেই হারিয়ে ফেলে ওয়াসিফ। ভয়ংকর ভাবে অবাক হয়ে বললো,

— কাল রাতের পরও তুমি এমন কথা কিভাবে বলো নিশু? রাতে না আদর করলাম। ভুলে গেলা নাকি? আমি কি আরেকবার প্রমাণ করব?

নিশা বিরক্ত হয়ে সরে উঠে বসলো। ওয়াসিফের দিকে তাকিয়ে বললো,

— এই আমি কি ঐ ভাবে বলেছি?

— তাহলে কোন ভাবে বলেছো?

— আমি বলেছি আপনি মেয়েদের মতো সুন্দর। এই যে চোখের পাপড়ি, ঠোঁটের নিচে তিল, ফর্সা চেহারা এগুলো তো মেয়েদের থাকে।

ওয়াসিফ একটু দুষ্ট হেসে নিশাকে টান দিয়ে বুকে ফেলে বললো,

— তুমি আমাকে এতটা গভীর ভাবে দেখেছো?

— ছাড়ুন।

ওয়াসিফ ওকে আরেকটু জড়িয়ে ধরলো। মুখ এগিয়ে আনতে নিলেই নিশা হাত দিয়ে ওয়াসিফের ঠোঁট চেপে ধরে রাগী কন্ঠে বললো,

— এই আপনি না মাত্র ঘুম থেকে উঠলেন? যান ব্রাশ করুন খাচ্চর।

— এই কি বল্লা? আমি খাচ্চর?

— আবার কেন বলতে হবে? একবারে শুনেন নি?

বলেই নিশা উঠে পরলো। উঠার সাথে সাথেই আবার বসে পরলো। ওয়াসিফ তারাতাড়ি ওকে ধরে বললো,

–ঠিক আছো?

নিশা আর যাই হোক নিজেকে দূর্বল প্রমাণ হতে কি আর দিবে? কখনোই নয়। তাই আবারও উঠে দাঁড়িয়ে আস্তে করে যেতে নিলেই ওয়াসিফ পেছন থেকে ওকে জড়িয়ে ধরে কোলে তুলে নিলো। নিশা আর তর্ক করলো না কেমন জানি শরীর খারাপ লাগছে ওর। একটু বিরিয়ানি খেলে হয়তো ভালো লাগতো। ওয়াসিফ ওকে ফ্রেশ করিয়ে নিজেও ফ্রেশ হলো।
ওয়াসিফকে রেখেই নিশা রুম থেকে বেরিয়ে গেল। হুট করে বিয়ে হওয়াতে তেমন কেউ ই জানে না তাই কোন সাজসজ্জা নেই। কিচেন থেকে কথার আওয়াজ আসছে। কিছু না ভেবে ঐ দিকেই পা বাড়ালো নিশা। হুট করেই দুই তিনটা বাচ্চা ওকে জড়িয়ে ধরে ডাকতে লাগলো,

— চাচিম্মু চাচিম্মু।

নিশা তাকালো। একটা ছেলে আর দুটো মেয়ে। মেয়ে দুটো জমজ। নাম ইনি আর মিনি আর ছেলেটা অর্ণব। এগুলো ওয়াসিফের ভাইয়ের বাচ্চা। সবচেয়ে ছোট মেয়েটাকে কোলে তুলে বাকিদের ও আদর করে দিলো নিশা। তখনই কিচেন থেকে আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বেরিয়ে এলো ওর বড় জা। হা হয়ে গেল বেচারী। বিয়ের পর প্রথম দিন সকালে কোন মেয়ে যে জিন্স আর ফতুয়া পড়ে ভেজা চুল নিয়ে শশুর বাড়ী ঘুরঘুর করে এই বিরল দৃশ্য দেখে বেচারী টাস্কি খেল। কি বলবে বুঝতে পারলো না। তখনই মেজো জা ও বেরিয়ে এসে বড় জা কে এমন হাবলার মতো তাকিয়ে থাকতে দেখে খোঁচা মেরে জিজ্ঞেস করলো,

— কি হয়েছে বড় আপা?

— সামনে তাকা।

বড় জায়ের ইশারাতে সামনে তাকাতেই আতঁকে উঠলেন তিনিও। জোরে ডেকে উঠলেন,

— আম্মা দেখে যান।

ওনার এহেন ডাকে কিচেনের কাজ ফেলে ছুটে এলো ওয়াসিফের মা। একটু সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিশাও চমকে তাকালো। কি হয়েছে ভাবার আগেই ওয়াসিফ দৌড়ে এসে নিশার কোল থেকে মিনিকে নামিয়ে ওর হাত ধরে টেনে নিতে নিতে বললো,

— নিশু তুমি আমাকে রেখে বের হলে কেন?

নিশা ও কিছু না বুঝে ওয়াসিফের পেছন পেছন গেল। পিছনে রয়ে গেল হা হয়ে থাকা ৬ টি মুখ। এদের মধ্যে তিনটি মুখ হলো দুই জা আর শাশুড়ী যারা লজ্জায় হা হয়ে আছে আর বাকি তিনজন হলো ইনি,মিনি আর অর্ণব যারা বুঝলো না চাচ্চু কেন চাচিম্মুকে টেনে নিলো। ওর শাশুড়ী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে বললো,

— মেজো বউমা তুমি সবসময় এতোটা না চিল্লালেও পারো। কবে না জানি গলা ফাটিয়ে ফেলো।

বেচারী মাথা নিচু করে রাখলো। মিনমিন করে বললো,

— আমার কি দোষ মা। জিন্স আর ফতুয়া পড়া নতুন বউ প্রথম দেখলাম তাই আর কি।

ওর বড় জা মাঝখানে ফোড়ন কেটে বললো,

— আরে গলায় ওরনা ছিলো তো।

ওর শাশুড়ী গম্ভীর কণ্ঠে এই বিষয়ে কথা বাদ দিতে বলে স্বামীকে চা দিতে গেলেন।

রুমে ডুকেই দরজা লক করে দিলো ওয়াসিফ। মা আর ভাবীদের সামনে কি একটা পরিস্থিতিতে পরেছিলো ও। ভাবতেই ফর্সা চেহারাটার কান, নাকের ডগা লাল হয়ে গেল। নিশা ওর দিকে তাকিয়ে বললো,

— আপনি এমন করে লজ্জা পাচ্ছেন কেন? আমি কি আপনাকে টিজ করেছি?

ওয়াসিফের এখন মাথায় হাত। এই মেয়ে বলে কি? লজ্জায় ফেলার কি আর বাকি আছে? মুখ তুলে তাকিয়ে একটু গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

— এই ভাবে বাইরে কেন গিয়েছিলা নিশু?

নিশা ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করলো,

— কিভাবে?

— জিন্স, ফতুয়া আর ভেজা চুলে।

— তো কি হয়েছে?

— কাম অন নিশু, গ্রো আপ। অবুঝ নয় তুমি। বিয়ের প্রথম সকাল এই ভাবে কে বাইরে যায়? একটু তো নিজেকে গুছিয়ে যেতে।

নিশা এতক্ষণে বুঝলো। তবুও দোষের কিছু পেল না। স্বামীর সাথে থাকতে পারলে ভেজা চুলে কেন বের হতে পারবে না? অবৈধ তো নয় হালাল পবিত্র সম্পর্ক ওদের। তাই প্রতিবাদী কন্ঠে বললো,

— আপনি কি শর্তনামা ভুলে গিয়েছেন? আমার ড্রেস কোড আমি পরিবর্তন করব না। আর যেভাবে খুশি ঐ ভাবে চলবো।

দীর্ঘ শ্বাস ফেলে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো ওয়াসিফ। এই একদিনেই শর্তনামা নামক প্যারায় পরে ওর জান যায় যায় অবস্থা না জানি সামনে কি অপেক্ষা করছে। অনেক কষ্টে গলার স্বরে নমনীয়তা এনে নিশার হাত ধরে নিজের কাছে এনে টাওয়াল দিয়ে চুল মুছে দিতে দিতে বললো,

— তোমার স্বাধীনতা কেউ নিচ্ছে না নিশু। আমি জাস্ট রিকুয়েষ্ট করছি ড্রেসটা চেঞ্জ করে আজকের জন্য নাহয় শাড়ী পড়ো। আর চুল মুছে দিচ্ছি শুকিয়ে বেঁধে তারপর বের হবা ঠিক আছে? বাড়ীতে তো আমরা একা না আরো সদস্য আছে। তারা ও তো বিব্রত হতে পারে যেখানে কি না দুই ভাবি শাড়ী পড়ে।

এত সুন্দর করে বুঝানোর পর তো আর না বুঝে থাকা যায় না। নিশা ও মাথা নাড়লো মানে সে ভদ্র মেয়ের মতো সব বুঝেছে। কাঁধ অবদি চুল হওয়ায় তা তারাতাড়ি শুকিয়ে গেল। নিশা তা আচরে নিলো। ওয়াসিফ ততক্ষণে একটা শাড়ী বের করে বললো,

— এটা পড়বে নিশু?

— আচ্ছা।

বলে নিতেই ওয়াসিফ হাত সরিয়ে এক বুক আশা নিয়ে বললো,

— তুমি তো পড়তে পারবে না আমি পড়িয়ে দেই?

ওয়াসিফের আশায় এক বোল পানি ঢেলে পাষাণের মতো উত্তর দিলো নিশা,

— কে বলেছে পাড়ি না? দিন আমায় পড়ে আসি।

বলে শাড়ী নিয়ে ওয়াসরুমে ডুকে পড়লো। ওয়াসিফের মেজাজ গেল খারাপ হয়ে। যে ওর নিশুকে শাড়ী পড়ানো শিখিয়েছে তাকে ওর সোডা দিয়ে ধুয়ে দিতে মন চাইলো। শুধু মাত্র তার কারণে নিশুর সাথে শাড়ী পড়ানোর নাম করে একটু রোম্যান্টিক মোমেন্ট বানাতে পারলো না।

_____________

যেহেতু হুট করেই বিয়েটা হয়ে যায় তাই ওয়াসিফ অফিসে ছুটি নিতে পারে নি। বের হতে হবে একটু পরই সাথে নিশাকেও ভার্সিটিতে ড্রপ করতে হবে। ওয়াসিফতো একবার বলতেও চাইলো যে আজ প্রথম দিন আজ নাহয় অফ দিক কিন্তু নিশার ভয়ংকর চাহনি দেখে বেচারা কিছুই বলতে পারলো না। নাস্তার টেবিলে বসেই নিশা সবার সাথে সুন্দর করে কথা বললো। ওয়াসিফের বড় দুই ভাই আসিফ আর ওয়ালিদ। দুজনই নিজের বোনের মতো আদর করলো নিশাকে। শশুরও যথেষ্ট ভালো। কিন্তু নিশার হালকা মানে খুবই সামান্য বিরক্ত লাগে বাচ্চাদের। প্রচন্ড দুষ্ট এরা। একটু আগেই হুরমুর করে দৌড়ে এসে ধাক্কা মারলো নিশাকে একটুর জন্য পরতে পরতে বেঁচেছে বেচারী। তার মধ্যে এতবড় জয়েন ফ্যামিলি। নিশারা তো মাত্র চারজন আর এখানে এত্তো এত্তো সদস্য। দাদী নামক ঘটকের সাথে এখনও দেখা হয়নি ওর। রেডি হতে রুমে ডুকলো নিশা। ওয়াসিফ ওয়াসরুমে। এমন সময় ফোন এলো নিশার। রাহামের নামটা ভেসে উঠলো তাতে। রিসিভ করতেই চিল্লাতে চিল্লাতে বললো,

— নিশাআআআআআ।

বিরক্ত হয়ে নিশা বললো,

— কি হয়েছে? গার্লফ্রেন্ড ফুস?

— এখন তো ভালো কথা বলা শিখ।

— আচ্ছা বল।

— জানিস আজও ও আমাকে তিন কাপ চা করে দিয়েছে।

নিশা আবারও মহা বিরক্ত হয়ে দাঁত চেপে বললো,

— ক্যান এককাপে তোর হয় না?

— আরে না না তেমন কিছু না। ও বললো, এককাপ আমার, এককাপ আম্মুর আর এককাপ আব্বুর। জাস্ট ইমেজিন ও আমাকে কত্তোটা ভালোবাসে।

— হু করলাম ইমেজিন। রাখ এবার। ভার্সিটিতে আয় কথা হবে।

— তুই আজ আসবি?

— না আসার কারণ?

কিছুটা রেগে বলতেই রাহাম কল কেটে দিলো। ওয়াসিফ বের হতেই দেখলো নিশালা ড্রেস বের করছে। পেছন থেকে জড়িয়ে ধরলো ওকে। নিশা কিছুটা চমকে গেল। পরক্ষণেই শ্যামলা চেহারাটা লজ্জায় লাল হয়ে গেল। ওয়াসিফ ওর কানে চুমু খেয়ে পেটে হাত বুলিয়ে নরম কন্ঠে বললো,

— শাড়ীতে তোমায় ভিষণ আমার আমার লাগে নিশু। একদম আমার ব্যাক্তিগত।

নিশা জড়ানো কন্ঠে বলে উঠলো,

— ছাড়ুন।

— উহু। আদর চাই আমার। বউ থাকতে কি না আমি আদরের অভাবে ভুগবো?

বলেই নিশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়েই ওকে ঘুরিয়ে দু’জনের ওষ্ঠ মিলিত করে দিলো ওয়াসিফ। ছাড়া পেতেই নিশা দৌড়ে ওয়াসরুমে ডুকে পড়লো। এই লোক একটা নিলজ্জ, বেহায়া। যখন তখন শুরু হয়ে যায় এর। একবারে রেডি হয়ে বের হলো। লং টপস সাথে প্যান্ট। উঁচু করে ঝুটি করা গলায় একটা ওরণা পেঁচানো। হালকা করে লিপস্টিক আর আই লাইনার দিয়ে নিজেকে সাজিয়ে ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ডাকলো,

— ওয়াসিফ।

ওয়াসিফ ফোনে কথা শেষ করে পেছনে তাকিয়ে একটা টাস্কি খেল। এই মেয়ে এত সুন্দর কেন? তার শ্যামবর্ণা নিশু। এগিয়ে এসে ওর কপালে চুমু খেয়ে বললো,

— রেডি?

— হু।

–শরীর খারাপ লাগছে?

— না।

— চলো।

বলে নিজের ব্যাগটা হাতে নিয়ে বের হলো ওয়াসিফ। হাজার হোক পুরুষ মানুষ ও। অনেক করে বলতে চাইলো, ” একটু মাথাটা ঢেকে রাখো নিশু, তোমার সুন্দর্য সুধু আমি দেখবো অন্য কেউ না।” কিন্তু বলতে পারলো না। নিশা এটা হয়তো ভাববে যে ওয়াসিফ প্রথম দিনই ওকে ডমিনেট করার চেষ্টা করছে। তাই আর কিছু না বলে মাকে বলে বের হলো। ওয়াসিফের মা এতে একটু নারাজ। আরে দুই ছেলেকে বিয়ে করিয়ে বউ এনেছেন তিনি৷ কিন্তু এ কেমন বউ? বিয়ের প্রথম সকালেই স্বামীর সাথে ভার্সিটি যাচ্ছে।

#চলবে…..