শেষ পাতায় তুমি পর্ব-০৬

0
3673

#শেষ_পাতায়_তুমি(Revenge story)
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-৬|

ভারী লেহেঙ্গা পড়ে মেহের ফায়াজের বিছানায় এখনো বসে আছে। লেহেঙ্গায় বসানো ছোট ছোট পাথরগুলোর খুচাচ্ছে শরীরে। গতকাল শাওয়ার করা হয় নি তাই শরীর কেমন লাগছে। ঘামানো শরীর চুলকাচ্ছে। শাওয়ার নেওয়া দরকার। ভালো ভাবে ফ্রেশ হয়ে হালকা পোশাক পড়তে পারলে ভালো হতো। মেহের বসে বসে ফায়াজের পুরো রুম খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। তখনই ফায়াজ রুমে ঢুকল। মেহের ফায়াজকে দেখে নড়ে-চড়ে চুপ করে বসে রইল। ফায়াজ আলমারি থেকে নিজের জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে গেল। মেহের মনে মনে ফায়াজকে গালি দিচ্ছে।
“নিজে ফ্রেশ হতে চলে গেল। আমাকে চোখে পড়ে না। আমি গতকাল থেকে এই ভারী লেহেঙ্গা পড়ে আছি। ফ্রেশ হব, ফ্রেশ হয়ে কি পড়ব সেদিকে কোনো খেয়াল নেই।”

ফায়াজ ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে এল। তারপর ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হচ্ছে। মেহের আড়চোখে সবটা দেখছে। ফায়াজকে দেখে মনে হচ্ছে ফায়াজ কোথায় বের হচ্ছে। আজ শুক্রবার ছুটির দিন কিন্তু তার ছুটি নেই।
ফায়াজ চুলটা ভালো করে ব্রাশ করে নিয়ে নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে। শার্টের কলার ঠিক করে ফোন নিয়ে মেহেরকে কিছু না বলে রুম থেকে বেরিয়ে গেল।

ফায়াজ যেতেই মেহের উঠে দাড়ালো। ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে একটা একটা করে গয়না খুলে ফেলল। ওড়না রেখে ওয়াশরুমে গেল মুখ ধুতে।

.

মাহির সারারাত ঘুম হয়নি। এদিকে ওর মা কাঁদছে মেহেরের জন্য। মাহি ভাবছে কি করবে, ফায়াজের বাড়িতে যাবে কি না। ফায়াজের বাড়িতে কখনো না গেলেও বাড়ির ঠিকানা আছে ওর কাছে।
মাহি আবার মেহেরের নাম্বারে ডায়েল করল। বারবার সুইসড অফ বলছে।
সকাল বেলায় বাবার সঙ্গে কথা বলেও লাভ হয়নি। তিনি মেহেরের ব্যাপারে একটা কথাও শুনতে চায় না।

মেহের নিজের ব্যাগটা খোজছে কিন্তু খোজে পাচ্ছে না। ব্যাগের ভেতরে মোবাইলটা আছে। মাহি আপুকে একটা ফোন করা দরকার। বাড়িতে কি হচ্ছে জানা প্রয়োজন। মেহেরের ব্যাগ কোথায় আছে কিছুই জানে না। মেহের রুম থেকে বের হলো। এই বাড়িতে নিশ্চয়ই ল্যান্ডলাইন আছে। মেহের পেয়েও গেল। তারপর দ্রুত মাহির নাম্বারে ডায়েল করল। মাহির ফোন বাজতেই দ্রুত রিসিভ করল।

“হ্যালো আপু? আমি মেহের বলছি।”

মাহি অস্থির হয়ে বলল,
“মেহের তুই কেমন আছিস? তোর ফোন অফ কেন? আমি গতকাল থেকে ফোন করছি। তুই ঠিক আছিস তো? আমাদের খুব টেনশন হচ্ছে। ফায়াজ তোর সাথে উলটা পালটা কিছু করে নি তো? তুই এখন কোথায়? কিছু তো বল।”

“আপু তুমি আমাকে বলতে দিলে তো বলব? রিলেক্স। আমি একদম ঠিক আছি। ফায়াজ আমাকে কিছু বলে নি। আমি এখন ওদের বাড়িতে আছি। ভালো আছি। বাড়ির খবর বল।”

মাহি কাঁদো কাঁদো হয়ে বলল,
“কি বলব? মা তো কেদেই যাচ্ছে। আর বাবাকে তো চিনিস। বাবা এখনো রেগে আছেন। কিছুই বলা যাচ্ছে না।”

মেহেরের গলা ধরে আসছে। ধরা গলায় বলল,
“মা-কে কাঁদতে না করো আমি ভালো আছি।”

“একটু কথা বল।”

মেহের কেদে দিয়ে বলল,
“সে শক্তি আমার নেই আপু। তুমি মা-কে দেখে রেখো। আমার জন্য টেনশন করতে না করো।”

মাহিও কাদছে।
“মেহের তুই চলে আয়। যদি বলিস আমি গিয়ে তোকে নিয়ে আসব। বাকিটা আমি ম্যানেজ করে নেব। ফায়াজকে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। আমি সবাইকে সবটা বলে,,

মেহের শক্ত গলায় বলল,
“একদম না আপু। আমি এমন একটা ছেলেকে বিয়ে করেছি যাকে আমি চিনি না। যার নামে ভালো কোনো রেকর্ড নেই। পুরো পরিবার ছেড়েছি। কেন? তোমার জন্য। আমার পরিবারের জন্য। এখন তুমি যদি কোনো ঝামেলা সৃষ্টি করো তবে তোমাকে আমি কোনো দিন বোন বলে স্বীকার করব না। তুমি আপাতত বিয়ে নিয়ে ভাবো। তোমার বিয়েটা যেন নির্বিঘ্নে হয়। তুমি আমাকে কথা দেও আপু, তুমি কোনো ঝামেলা করবে না। আমার সেক্রিফাইজ বিফলে যেতে দেবে না।”

মাহি কান্নার বেগ বাড়িয়ে বলল,
“তুই ওর সাথে থাকতে পারবি না মেহের। ও তোকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। ও খুব ভয়ংকর ছেলে।”

মেহের দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,
“সেটা নিয়ে তোমাকে ভাবতে হবে না। আমার ভাগ্যে যা আছে তাই হবে। তুমি প্লিজ তূর্জ ভাইয়াকে কিছু বলো না।”

“তবে তোকে একটা কথা দিতে হবে। তুই কোনো কিছু আমার কাছ থেকে লুকাবি না। আমার সাথে সবটা শেয়ার করবি।”

“আচ্ছা কথা দিলাম। এখন রাখি আপু। নিজের খেয়াল রেখো। আর বিয়েটা ভালো করে করো।”

“আচ্ছা, তুইও নিজের খেয়াল রাখিস। ভালো থাকিস। আমাকে ফোন করিস।”

মাহি গেল মেহেরের রুমে। ওর রুমে গিয়ে আলমারি খুলে ওর জিনিসপত্র গুছাতে লাগল।

মেহের ফোন রেখে দিল। তারপর পুরো বাড়িতে চক্কর দিল। বাড়িটা অনেক বড়। কিচেনে গিয়ে দেখল সার্ভেন্টরা রান্না করছে। একজন সার্ভেন্ট মেহেরকে দেখে বলল,
“মেম, আপনার কিছু চাই?”

সার্ভেন্টের মুখে মেম কথাটা শুনে ভরকে গেল মেহের। নিজেকে টিচার মনে হচ্ছে। ওর বাড়ির কাজের লোকেরা আপা বলে ডাকে আর এরা মেম বলে সম্বোধন করছে।

মেহের স্নিগ্ধ হেসে বলল,
“জ্বি না। কিছু চাই না আমার। এমনিতেই দেখছিলাম।”

“কিছু লাগলে জানাবেন। স্যার বলে গেছেন আপনার খেয়াল রাখতে।”

মেহের মনে মনে ভাবছে, “লাগবে তো অবশ্যই। আমার এখন একটা ড্রেস লাগবে। আপনাদের বলে লাভ হবে বলে মনে হচ্ছে না। এ বাড়িতে তো কোনো মেয়েও নেই যে তাকে বলব।”
মেহেরের খুব কান্না পাচ্ছে।

মন ভালো করার জন্য ড্রয়িংরুমে গিয়ে টিভি ছেড়ে কার্টুন দেখা শুরু করল।

কিছুক্ষণ পর কলিং বেল বাজতেই একজন সার্ভেন্ট দৌড়ে এসে দরজা খুলল। মেহের হা করে চেয়ে আছে। দৌড়ে দরজা খোলার কি হলো? আস্তেধীরে খুললে কি গর্দান যাবে? কি অদ্ভুত।

সার্ভেন্ট এসে মেহেরকে বলল,
“মেম আপনার সাথে কেউ একজন দেখা করতে চায়।”

মেহের বুঝতে পারছে না এখানে কে আসবে ওর সাথে দেখা করতে। তেমন কাউকে খুজে পেলো না। তারপর ভাবল মাহি কি না। মাহির কথা মাথায় আসতেই মেহের লাফিয়ে উঠল। দ্রুত দরজার সামনে গেল। বাইরে গিয়ে ওদের বাড়ির ড্রাইভারকে দেখতে পেল।

মেহেরকে দেখে সামনে এসে বলল,
“বড় আপা আপনার জিনিসপত্র পাঠিয়েছে।”

জিনিসপত্রের কথা শুনে মেহের খুশি হয়ে গেল। নিশ্চয়ই জামা কাপড় পাঠিয়েছে। ড্রাইভার গাড়ির ডিকি থেকে দুটো লাগেজ বের করল। উৎফুল্ল মনে মেহের সার্ভেন্টকে দিয়ে লাগেজ দুটো উপরে নিয়ে গেল। রুমে গিয়েই লাগেজ খুলে দেখল তাতে ওর জামা-কাপড়সহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, বই-খাতাও আছে।

মেহের মুচকি হেসে মিনমিন করে বলল,
“পৃথিবীতে এই একটা ব্যক্তি আমাকে খুব ভালো করে বুঝে। আমার সুবিধা-অসুবিধা, প্রয়োজন সবটা বুঝে। ধন্যবাদ আপু। তুমি সব সময় ভালো থাকো, হ্যাপি থাকো সেটাই চাই।”

মেহের দু-তিনটা জামা বের করে একটা মোবাইল ফোন পেল। মেহের ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল ওর আপুর ফোন। তাড়াহুড়ায় নতুন ফোন কেনা সম্ভব হয়নি তাই নিজেরটা দিয়ে দিয়েছে। মাহির দুটো ফোন তাই সমস্যা হবে না৷ মেহের মেসেজ পাঠিয়ে দিল, “থ্যাংকু এন্ড লাভ ইউ আপু”

মাহি ফোন হাতে বসে ছিল। মেহেরের ম্যাসেজ দেখে মুচকি হাসল। মেহের একটা ড্রেস নিয়ে দ্রুত ওয়াশরুমে ঢুকে গেল।

মেহের তোয়ালে দিয়ে ভেজা চুল মুছছে। এখন নিজেকে খুব হালকা লাগছে। এতক্ষণ মনে হয়েছিল শরীরে কয়েকশো ওজনের পাথর শরীরে লেপ্টে ছিল। ডাস্টবিনের সব ময়লা ওর শরীরে বাসা বেধেছিল। এখন ফ্রেশ লাগছে। মনে হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে।
মেহের এ-সব ভাবতে ভাবতেই ফায়াজ দরজা খোলে ভেতরে ঢুকল। মেহের দরজা খোলার শব্দ পেয়ে পেছনে ঘুরে ফায়াজকে দেখতে পেল। দ্রুত মাথায় তোয়ালে পেচাল। ফায়াজ অবাক দৃষ্টিতে মেহেরকে দেখছে। ওর গায়ের পোশাকের দিকে চেয়ে আছে। মনে প্রশ্ন জাগছে এখানে জামা পেল কোথায়।

ফায়াজের পেছনে পেছনে একজন সার্ভেন্ট কতগুলো ব্যাগ নিয়ে ভেতরে ঢুকে বলল,
“স্যার ব্যাগগুলো কোথায় রাখব?”

ফায়াজের ঘোর ভাঙলো সার্ভেন্টের কথা শুনে।
“বেডের উপরে রাখ।”

ফায়াজের বেডের উপরে চোখ যেতেই দেখল সেখানে কতগুলো জামাকাপড়, কসমেটিকস ছড়ানো ছিটানো। সার্ভেন্ট ব্যাগগুলো সেখানেই রাখছে একটার উপর আরেকটা।

মেহের কৌতূহল নিয়ে সার্ভেন্টকে বলল,
“এগুলো কি? এখানে রাখছেন কেন?”

সার্ভেন্ট ফায়াজের দিকে তাকাল। ফায়াজ সেদিকে পাত্তা না দিয়ে মেহেরকে বলল,
“তুমি জামাকাপড় পেলে কোথায়?”

মেহের খুশি খুশি মুখ করে বলল,
“আপু পাঠিয়েছে। আপু বুঝতে পেরেছে নতুন জায়গায় আমার সমস্যা হচ্ছে তাই,,”

মেহের কথা শেষ করার আগেই ফায়াজ সার্ভেন্টকে ধমক দিয়ে বলল,
“এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন?”

মেহের ধমক শুনে কেঁপে উঠল। সার্ভেন্ট মিনমিন করে বলল,
“সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে। আর হবে না।”

সার্ভেন্ট চলে যেতেই ফায়াজ বলল,
“তুমি এমন বস্তি কেন? ঘরটাকে কি করেছ? বিছানার এই অবস্থা কেন?”

মেহের ভয়ে আমতা আমতা করছে। তারপর বলল,
“স,,,স,,রি। আমি আসলে,,,”

ফায়াজ ধমক দিয়ে বলল,
“তুমি আসলে কি আমি জানতে চাই না। এখুনি এগুলো এখান থেকে সরাও।”

মেহের দ্রুত জামাকাপড় তুলে ভাজ না করে এলোমেলো ভাবে লাগেজে ঢুকাচ্ছে সেটা দেখে ফায়াজ বলল,
“এভাবে রাখছ কেন? মিনিমাম সেন্সটুকু নেই? কিভাবে জামাকাপড় রাখতে হয় জানো না? গুছিয়ে রাখ।”( ধমক দিয়ে)

মেহের ঢোক গিলে বলল,
“আমি কখনো এ-সব করি নি। আপু আমার সব গুছিয়ে রাখত।”

আপু,আপু শুনতে শুনতে ফায়াজের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে।
রাগ হচ্ছে প্রচুর। তাই মেহেরকে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“আপু, এই করেছে, সেই করেছে এ-সব না বলে নিজের সংসার নিজে গুছানোর চেষ্টা করো। তোমার আপু সারাজীবন তোমার সাথে থাকবে না, তোমার সংসার দেখবে না। ভবিষ্যতে তোমাকেই সব দেখতে হবে। এখন থেকে শিখতে শুরু কর।”

মেহের মাথা নাড়িয়ে সব এক এক করে ভাজ করছে। ফায়াজ সোফায় বসে ফোন টিপছে। মেহের সব গুছিয়ে রেখে বেডের উপরে রাখা ব্যাগগুলো তুলে বলল,
“এগুলো কোথায় রাখব?”

ফায়াজ ফোনের দিকে চোখ রেখেই বলল,
“তোমার জন্য ও-সব।”

মেহের ব্যাগ খোলে দেখল তাতে বেশ কিছু জামাকাপড় আছে। মেহের সবগুলো এক এক করে দেখল। সাথে কিছু হিজাব আছে। মেহের আড়চোখে ফায়াজের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসল। যেমনই হোক স্বামীর কাছ থেকে পাওয়া প্রথম উপহার। আর ওর সাইড ব্যাগটাও সেখানে পেল। ব্যাগ দ্রুত খুলে দেখল ফোনটা সুইসড অফ হয়ে পড়ে আছে।

.

সন্ধ্যায় ফায়াজ বসে বসে কফি খাচ্ছে আর কারো সাথে ভিডিও চ্যাট করছে। মেহের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে। পরিস্কার আকাশে তারার মেলা। আকাশে মেঘ নেই আবার চাঁদও নেই। মেহের ভাবছে,
“ফায়াজ সংসারের কথা বলল, ভবিষ্যতে সংসার আমাকে সামলাতে হবে বলল। ও কি সারাজীবন আমাকে রাখবে? আমার সাথে সংসার করবে?”

মেহের রুমের ভেতরে ঢুকতেই চোখ গেল ফায়াজের দিকে। ল্যাপটপের স্কিনে একটা মেয়ের ছবি ভাসছে। মেয়েটার পড়নে ঢিলেঢালা টিশার্ট, বিনুনি করা এলোমেলো চুল৷ মনে হচ্ছে মাত্রই ঘুম থেকে উঠেছে। ঘুম ভেঙে ফ্রেশ হওয়ারও সুযোগ পায়নি। ভিডিও কলে বসে পড়েছে। মেহের ভ্রু কুচকে চেয়ে আছে মেয়েটার দিকে। নিজের অজান্তেই কয়েক পা বাড়িয়ে ল্যাপটপের সামনে চলে গেছে। ল্যাপটপের স্কিনের মেয়েটা মেহেরকে দেখে উৎফুল্ল হয়ে চোখে ম্যখে হাসি ফুটিয়ে হাত নাড়িয়ে হায় জানাচ্ছে। মেহের তখনও মুখ গম্ভীর করে ভেবেই চলেছে কে হতে পারে মেয়েটা। মেয়েটা মেহেরের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে ফায়াজের দিকে তাকিয়ে ইশারা করল।

ফায়াজ মেহেরের দিকে ঘুরে ফিসফিস করে দাতে দাত চেপে বলল,
“এমন বিহেভ করছ কেন? ও আমার বোন ফাইজা। ভালো ভাবে কথা বল।”

তারপর ফায়াজ আবার হাসি হাসি মুখ করে ফাইজার দিকে ঘুরে বলল,
“তোকে চিনতে পারে নি। তাই চুপ করে আছে।”

ফায়াজ তারপর মেহেরের দিকে ঘুরে কিছু ইশারা করল। মেহের মুচকি হেসে ফাইজাকে সালাম দিয়ে টুকটাক কথা বলল।

কথা শেষে মেহের ভাবছে ফায়াজকে একটা কথা জিজ্ঞেস করবে কিন্তু সাহস পাচ্ছে না।
অতঃপর জিজ্ঞেস করে ফেলল,
“আপনি না বললেন আপনার বাবা ছাড়া কেউ নেই ? তাহলে বোন এলো কোথায় থেকে?”

ফায়াজ মেহেরের দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে বলল,
“যেভাবে আসে সেভাবেই এসেছে। তোমার এ-সব নিয়ে মাথা ঘামানোর একদম দরকার নেই।”

মেহের মাথা নাড়িয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল। আর ভাবছে বোন আছে। বাবাও আছে। মা নেই? এরা থাকে কই? এই বাড়িতে তো থাকে না। ফায়াজ সকালেই বলল, আমার আবার পরিবার? বাবা থাকে কিন্তু তিনি এই মুহুর্তে কোথায় আছে জানে না। কেমন শোক আর ব্যথা ছিল সে দৃষ্টিতে। নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে। কিন্তু কি?

চলবে…..!