শেষ পাতায় তুমি পর্ব-০৭

0
3648

#শেষ_পাতায়_তুমি(Revenge Story)
#ফাবিহা_নওশীন

|পর্ব-৭|

মেহের সেই সন্ধ্যা থেকে আর রুমে যায়নি। অজানা একটা ভয় জেকে বসেছে মনে। রাত বাড়ছে ফায়াজ যদি স্বামীর অধিকার দেখায়? কি করবে তখন? মেহেরের কিছুই করার থাকবে না। যতই রাত বাড়ছে ভয়টা ততই বাড়ছে। মেহের তাই ঠিক করেছে আজ আর রুমে যাবে না। টিভি ছেড়ে বসে আছে। টিভি ছেড়ে এমন ভাব করছে আজ ও সব চ্যানেল দেখে ছাড়বে। একের পর এক চ্যানেল পাল্টাতে লাগল। সারারাত মুভি দেখবে। মনোযোগ দিয়ে মুভি দেখার ভান করে থাকতে হবে। যাতে কেউ ড্রয়িংরুমে বসে থাকার জন্য সন্দেহ না করে।
মেহের তাই করছে। রাত ২টা বাজে। ও স্বস্থির নিশ্বাস নিল। অন্তত কোনো সার্ভেন্ট এসে কিছু জিজ্ঞেস করে নি। ফায়াজও খোজ নিতে আসে নি। পুরো বাড়ি নীরব নিস্তব্ধ। নিশ্চয়ই সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু মেহেরের এখন ভয় ভয় লাগছে। কেমন গা ঝিমঝিম করছে। মনে হচ্ছে পেছনে থেকে কেউ কাধে হাত রাখবে কিংবা সামনে দিয়ে কোনো ছায়া সু করে চলে যাবে।

একজন সার্ভেন্ট পেছনে থেকে জিজ্ঞেস করল,
“মেম!”

মেহের হটাৎ কারো গলার স্বর শুনে ভয়ে কেঁপে উঠল। পেছনে থেকে সার্ভেন্ট সেটা লক্ষ্য করেছে কি না জানা নেই। মেহের ঢোক গিলে পেছনে ঘুরে।
সার্ভেন্ট মেহেরকে বলল,
“মেম, রাত দুটো বাজে। আপনি ঘুমাতে যান নি?”

মেহের না জানার ভান করে বলল,
“দুইটা বেজে গেছে? ওহ নো! মুভি দেখতে দেখতে কখন দুইটা বেজে গেছে বুঝতে পারি নি। আমি যাচ্ছি।”

মেহের রিমুভ দিয়ে টিভি অফ করে অনিচ্ছা সত্ত্বেও কাদো কাদো হয়ে উপরে যাচ্ছে গাল ফুলিয়ে।

মেহের পা টিপে টিপে রুমে ঢুকে বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখে ফায়াজ হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে। মেহের স্বস্থির নিশ্বাস নিল। তারপর বিছানার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে রইল। ফায়াজের সাথে ঘুমাতে কেমন অস্বস্তি লাগছে। তাছাড়া ফায়াজ যদি রাগ করে? তাই মেহের সোফায় গিয়ে বসে পড়ল। ঘুমে ওর চোখ ভেঙে আসছে। ক্ষণে ক্ষণে চোখ লেগে আসছে। মেহের একটা কুশন নিয়ে কুশনের উপর মাথা রাখল। ঘাড় কাত করে কোনোরকমে শুয়ে পড়ল।
গভীর রাত হওয়ায় মুহুর্তেই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে গেল।

.

ফায়াজের ঘুম ভাঙতেই দেখে বিছানা খালি। মেহের নেই। ফায়াজ ঘুমঘুম চোখে উঠে বসে। মেহেরকে খোজার জন্য পুরো রুমে চোখ বুলিয়ে দেখে মেহের সোফায় আধশোয়া হয়ে ঘুমিয়ে আছে। ফায়াজ আড়মোড়া ভেঙে ফ্রেশ হতে চলে গেল। মেহেরের ঘুম ভাঙতেই উঠে বসে। ঘাড় ব্যথা করছে। পিঠটাও ব্যথা করছে খুব। মেহের সোফা থেকে নেমে কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়াল।
বিছানার দিকে তাকিয়ে দেখে ফায়াজ নেই। ওয়াশরুম থেকে পানির শব্দ আসছে। মেহের হাই তুলতে তুলতে নিজের জামাকাপড় নিল। আজকে পরীক্ষা আছে। পড়াশোনা ছাড়াই পরীক্ষা দিতে যাবে আজ প্রথম বার।

ফায়াজ ফ্রেশ হয়ে বের হতেই মেহের ফ্রেশ হতে চলে গেল।

মেহেরকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে রেডি হতে দেখে ফায়াজ জিজ্ঞেস করল,
“রেডি হয়ে কোথায় যাচ্ছ?”

মেহের ফায়াজের দিকে অবাক হয়ে তাকাল। তারপর বলল,
“আমার পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি।”

ফায়াজ পকেটে ফোন রাখতে রাখতে বলল,
“তুমি কোথাও যাচ্ছ না। বাড়িতে থাকো চুপচাপ।”

মেহের ফায়াজের কথা শুনে রীতিমতো শকড।
“কিন্তু আমার পরীক্ষা? ”

ফায়াজ স্বাভাবিক ভাবেই বলল,
“দিতে হবে না।”

মেহের কাদো কাদো হয়ে বলল,
“আমি পড়াশোনা করব না? আমি পড়াশোনা করতে চাই। পরীক্ষা দিতে চাই।”

ফায়াজ মেহেরকে দিকে চোখ তুলে তাকাল। মেহের সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিল। ফায়াজ মেহেরের খুব কাছে গিয়ে দাঁড়াল। মেহেরের মুখের কাছে মুখ নিতেই মেহের ভয়ে শরীর খিচে চোখ বন্ধ করে নিল। ফায়াজ বলল,
“আমি বলেছি যাবে না। ব্যস যাবে না।”

তারপর ফায়াজ রুম থেকে ঝড়ের গতীতে বের হয়ে গেল। মেহের তখনও চোখ বন্ধ করে আছে। বন্ধ চোখ বেয়ে পানি পড়ছে।

মেহের মন খারাপ করে বসে আছে। চোখ দিয়ে অনবরত পানি পড়ছে। ফায়াজ ওর পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছে। ফায়াজ কি চায়? ওকে খাঁচায় বন্দী করে রাখবে? ওকে দম বন্ধ করে মেরে ফেলবে? এভাবে কষ্ট দেবে?

মেহেরের ফোন বেজে উঠল। মাহি ফোন করেছে। মাহির ফোন দেখে মেহেরের কান্নার পরিমাণ বেড়ে গেল। কাঁদতে কাঁদতে ফোন রিসিভ করে বলল,
“আপু ফায়াজ আমাকে পরীক্ষা দিতে দেয় নি। আমার পড়াশোনা বন্ধ করে দিয়েছে।”

মেহেরের এসব কথা শুনে মাহি ভিষণ রেগে গেল। ফায়াজ তাহলে মেহেরের উপর টর্চার করছে। মাহি মেহেরকে শান্তনা দিয়ে বলল,
“কাদিস না। আমি কথা বলব ফায়াজের সাথে। সব ঠিক হয়ে যাবে।”

মেহের কান্নার জন্য কথা বলতে পারছে না। ফোন কেটে দিল। কোলে ফোন রেখে কান্না করছে।

মাহি রেডি হয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিল। আজ ফায়াজের সাথে কথা বলবে।
মাহি ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকতেই ফায়াজকে দেখতে পেল। বরাবরের মতোই বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মেতে আছে। মাহি রাগে ফুসছে। ফায়াজের সামনে গিয়ে রুদ্রাণী মূর্তি ধারণ করল। ফায়াজ মাহিকে দেখে অদ্ভুৎ হাসি দিল। ও জানত মাহি আসবে। ফায়াজ মাহিকে দেখে তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে উঠে দাড়াল।

মাহি রাগে গজগজ করতে করতে বলল,
“এ-সব কি শুরু করেছ? মেহেরের সাথে এমন কেন করছ? ওর পড়াশোনা কেন বন্ধ করে দিয়েছ?”

ফায়াজ ঘাড় কাত করে তারপর আবার সোজা করে বলল,
“স্বামী-স্ত্রীর ব্যাপারে তৃতীয় ব্যক্তির না ঢুকাই ভালো। সো স্টে এওয়ে ফ্রম দিস।”

মাহি তবুও দমে গেল না।
“তোমার স্ত্রী আমার বোন। আমার অধিকার আছে ওর ব্যাপারে কথা বলার।”

ফায়াজ মুচকি হেসে বলল,
“সেটা জাস্ট ওর ব্যাপারে। কিন্তু যখন ব্যাপারটা আমার আর ওর তখন বলতে পারো না। আমার স্ত্রী আমি যা খুশি বলব, যা খুশি করব। এই ব্যাপারে তুমি নাক না গলালেই পারো।”

মাহি রাগের পরিমাণ বাড়িয়ে বলল,
“তুমি যা খুশি তা করতে পারো না। তুমি রীতিমতো ওর উপর জুলুম করছ। যাকে বলে নারী নির্যাতন। দেশে আইন আছে।”

মাহির কথা শুনে ফায়াজ ফিক করে হাসতে শুরু করল। হাসতে হাসতে যেন গড়িয়ে পড়বে। মনে হচ্ছে মাহি খুব হাস্যকর একটা জোক বলেছে। মাহি অবাক হয়ে ফায়াজের দিকে চেয়ে আছে।

ফায়াজ হাসি থামিয়ে বলল,
“আইন? ইউ নো আমি এ-রকম আইন পকেটে রেখে ঘুরি। আইনের ভয় আমাকে দেখিও না। যা খুশি করে নেও ফায়াজের একটা চুলও বাকা করতে পারবে না। আর মেহের? ওর কথা তো ভাবো। বেচারি মেয়ে। আমি যদি ওর উপর জুলুম করি কে আসবে বাচাতে? আর মেহের কি মুখ খুলবে? একদম না। আমার লক্ষী বউ মেহের।” (শেষের কথাটা নেকা কন্ঠে বলল।)

মাহি ভয় পেয়ে গেল। ফায়াজ না ওর রাগ মেহেরের উপর তুলে। তাই মাহিও চুপ করে গেল।

মাহি ভার্সিটি থেকে বের হতেই তূর্জের ফোন।
মাহি মনমরা হয়ে ফোন রিসিভ করল।
তূর্জ অপর পাশ থেকে বলল,
“মাহি কি শুনছি এ-সব? মেহের নাকি বিয়ে করেছে?”

মাহি দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল,” হ্যাঁ।”

“কি বলছো এ-সব? কখন, কিভাবে আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না।”

মাহি কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেল।
তারপর বলল,
“জানি না। আমার এ-সব নিয়ে কথা বলতে ভালো লাগছে না।”

তূর্জ বুঝতে পারছে মাহির মন ভালো নেই। মেহের ওদের কত আদরের। মেহের হুট করে এমন একটা ঘটনা ঘটিয়ে সবার মনে দাগ কেটেছে। কিন্তু মেহেরের খবর নেওয়াটা জরুরী। কিন্তু কার মাধ্যমে নিবে? মাহি আপসেট। ওর কাছ থেকে পরবর্তীতে জেনে নিবে।

ফায়াজ বিকেল বেলায় বাড়ি ফিরল। বাড়িতে ঢুকতেই একজন সার্ভেন্ট ফায়াজকে বলল,
“স্যার, মেম সারাদিন কিছু খায় নি।”

ফায়াজ কথাটা শুনে কিছুটা অবাক হলেও স্বাভাবিক ভাবেই বলল,
“তো? আমি কি করব? ক্ষুধা পেলে নিশ্চয়ই খাবে।”
ফায়াজ হনহন করে সিড়ি বেয়ে উঠে গেল।

সার্ভেন্ট অবাক হলো ফায়াজের কথা শুনে। ভেবেছিল স্ত্রীর না খেয়ে থাকার কথা শুনে বিচলিত হবে। নতুন বিয়ে করা বউয়ের প্রতি কারো এতটা অনিহা থাকতে পারে ফায়াজকে না দেখলে বুঝতে পারত না।

ফায়াজ রুমে গিয়ে দেখে মেহের বিছানায় ঘুমিয়ে আছে। ফায়াজ মেহেরের হাত ধরে টেনে তুলে ফেলল। আচমকা এভাবে টেনে তোলায় মেহের ঘাবড়ে যায়। সারা শরীর কাঁপছে। বুক ঢিপঢিপ করছে। কি হয়েছে বুঝতে পারছে না। সবটা বুঝতে কয়েক সেকেন্ড সময় লেগে গেল।
মেহের ফায়াজকে সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখল।

ফায়াজ মেহেরের হাত ধরে নামিয়ে সোজা করে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞেস করল,
“হু আই এম?”

মেহের ফ্যালফ্যাল করে ফায়াজের দিকে চেয়ে আছে। কি বলছে বুঝতে পারছে না। ফায়াজের কি স্মৃতি শক্তি লোপ পেয়েছে? নিজেকেই ভুলে গেছে?

ফায়াজ চোখ মুখ শক্ত করে বলল,
“কিছু জিজ্ঞেস করেছি আমি।”

মেহের আমতা আমতা করে বলল,
“আপনি ভুলে গেছেন আপনি কে?”

ফায়াজ চিতকার করে বলল,
“নো, আমি না তুমি ভুলে গেছো আমি কে? আমি ফায়াজ নওয়াজ খান। আমি তোমার হাসব্যান্ড। আর তুমি তোমার হাসব্যান্ডের বদনাম বোনকে বলে বেড়াচ্ছ?”

মেহের কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,
“না আসলে,, আমি,, ”

“শাট আপ!!!” ফায়াজের চিতকার পুরো রুমে বারি খাচ্ছে। মেহের কেঁদে দিল।

ফায়াজ মেহেরের দুবাহু চেপে ধরে বলল,
“এই মেয়ে, যদি আমাদের ভেতরকার কথা তোর বোনকে বলিস মেরে এখানেই পুঁতে দেব।”

মেহের কান্নারত অবস্থায় বলল,
“আর বলব না। কখনো বলব না।”

ফায়াজ মেহেরকে ছেড়ে দিয়ে বলল,
“এখন গিয়ে ভালো মেয়ের মতো খেয়ে নেও। আর হ্যাঁ চোখের পানি মুছে যাও।”

মেহের দ্রুত চোখের পানি মুছে খেতে চলে গেল।
ফায়াজ বাকা হাসল। বলবে তো তুমি অবশ্যই। বোনের কলিজা বোনকে না বলে থাকতে পারবে? আমি তো তাই চাই।

মেহের বেডের এক কোনায় চুপচাপ শুয়ে আছে। শরীর খারাপ লাগছে খুব। শরীর দূর্বল লাগছে। সারাদিন পর খাবার খেয়েছে। ফায়াজ বাড়িতে নেই। এই সুযোগে বেড়ে শুয়ে আছে। কখন চোখ লেগে গেছে, ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমিয়েছে জানা নেই।
রাতে ফায়াজ রুমে এসে মেহেরকে বেডে শুয়ে থাকতে দেখে বিরক্ত হলো। ফ্রেশ হয়ে নিজেও এক কোনায় শুয়ে পড়ল।

.

সকাল সকাল মেহেরের রেওয়াজ করার অভ্যাস। মন ভালো করার এবং সময় কাটানোর এখন একমাত্র উৎস গান। মাহি হারমোনিয়াম দিয়ে পাঠিয়েছে।
মেহের ঘুম থেকে উঠে হারমোনিয়াম নিয়ে বসেছে। হারমোনিয়ামের শব্দে ফায়াজের ঘুম ভেঙে যায়। বিরক্তি নিয়ে ঘুমঘুম চোখে তাকায়। তারপর চোখ মুখ কুচকে বিরবির করে বলল,
“হোয়াট দ্যা,,,,!”

তারপর মনে পড়ল মেহের গান গায়। এ বাড়িতে হারমোনিয়াম বাজানোর মতো কেউ নেই ও ছাড়া। রাগে ফায়াজের গায়ে আগুন জ্বলছে। মেহেরের সামনে গিয়ে দাড়াল। মেহের ফায়াজের দিকে তাকিয়ে ভয় পেয়ে গেল। ফায়াজের চোখগুলো অসম্ভব লাল হয়ে আছে। সাথে নাকটাও। লাল আভা ছড়িয়ে পড়েছে নাকের আশেপাশে।
ফায়াজ মেহেরের হারমোনিয়ামে হাত রাখবে ঠিক তখনই মেহের দু’হাতে হারমোনিয়াম আগলে ধরে বলল,

“প্লিজ এটা ভাঙবেন না। এটা আমার জন্য শুধু একটা হারমোনিয়াম না। হারমোনিয়াম হলে নতুন একটা কিনে নিতাম৷ এটা আমার জন্য ভালোবাসাস্বরুপ। অনেক অনুভূতি জড়িয়ে আছে এটার সাথে। হারমোনিয়ামটা অনেক পুরনো। যখন আমি প্রথম গান শিখি মামা আমাকে হারমোনিয়ামটা কিনে দেন। মামার দেওয়া উপহার। এরপর আমি আর নতুন হারমোনিয়াম কিনি নি। আজো এটা দিয়েই গান গাই। প্লিজ এটা ভাঙবেন না। তাহলে আমার খুব কষ্ট হবে।”

ফায়াজের কেন জানি মায়া হলো। তাই হারমোনিয়ামে হাত দিল না। তবে কড়াভাবে নিষেধ করল হারমোনিয়াম বাজাতে।
“তোমার বোন এই গান দিয়ে আমার জীবনটা শেষ করেছে। এ-সব আমার সামনে একদম বাজাবে না। নেক্সট টাইম বাজালে আর আস্ত থাকবে না।”

মেহের শায় দিল। ফায়াজ যেতেই ভাবতে লাগল।
“কি করব আমি? গান গাইবে না, ভার্সিটিতে যাবে না। তাহলে কি করব আমি সারাদিন? কি করে টাইম পাস করব?”

.

কয়েক দিন পরের কথা। ফায়াজ আর মেহের ব্রেকফাস্ট করছে। মেহের ফায়াজের কফি এগিয়ে দিচ্ছে। ফায়াজ বলে দিয়েছে খাবার সার্ভ যেন মেহের করে আর সার্ভ করার সময় কোনো সার্ভেন্ট যেন না থাকে। মেহের ফায়াজকে কফি এগিয়ে দিতেই ফায়াজ বলল,
“রেডি হয়ে নেও ভার্সিটিতে যাবে।”

ভার্সিটিতে যাওয়ার কথা শুনে খুশিতে মেহের লাফিয়ে উঠল। উচ্ছ্বাসিত হয়ে বলল,
“কি আমি ভার্সিটিতে যাব?”
মেহেরের হাতে থাকা কফিটা হাত থেকে ঠাস করে পড়ে গেল। ফায়াজ চোখ পাকিয়ে মেহেরের দিকে তাকাল। মেহের ভয়ে চুপসে গেল। ভাবছে না জানি ফায়াজ এখন কি করবে।

ফায়াজ ধমক দিয়ে বলল,
“দাঁড়িয়ে আছো কেন? আরেক কাপ কফি দেও। আমার তাড়া আছে।”

মেহের মুচকি হেসে আরেক কাপ কফি ঢালতে ব্যস্ত হয়ে গেল।

চলবে….?