শ্যামসুন্দর স্বপ্ন পর্ব-০৬

0
228

#শ্যামসুন্দর_স্বপ্ন
#পর্ব_৬
#নুশরাত_জাহান_মিষ্টি

রাজ ডাক্তার কামালের বাসার ভিতরে প্রবেশ করতেই থমকে গেলেন। রাজের চোখের সামনে কামালের রক্তাক্ত মৃতদেহ পড়ে আছে। তার পাশে ছুরি হাতে দাঁড়ানো সামিয়া।

রাজ ভিডিওটা দেখার পর সাহেরা মানসিক হাসপাতালে কর্মরত ডাক্তার নার্সদের খোঁজ নিতে শুরু করে। রাজের মস্তিষ্ক পূর্ব থেকে ধারনা করে নিয়েছিলো সাহেরা মানসিক হাসপাতালের কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ সবকিছু হচ্ছে। তাই সকলের ব্যপারে খোঁজ নেওয়া শুরু করলো। যখন শুনলো ডাক্তার কামাল দুদিন ধরে হাসপাতালে আসছে না, সাথে ফোনও বন্ধ তখনি সন্দেহ হয় রাজের। কিন্তু রাজ কিছুই করতে পারলো না, তার আসার পূর্বেই যা হওয়ার তা হয়ে গেলো। সামিয়া মাটিতে বসে পড়লো। রাজ সামনে এগিয়ে গেলো। কামালের মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়ে রাজ সামিয়াকে থানায় নিয়ে এলো।

সামিয়া নির্বাক হয়ে বসে আছে৷ রাজ বারবার তাকে প্রশ্ন করেই যাচ্ছে কিন্তু সামিয়া কোন উত্তর দিচ্ছে না।

রাজ সামিয়াকে নিজেকে সামলানোর সুযোগ দিলো। রাজ চুপচাপ সামিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। বেশ কিছুক্ষন নিরবতার পর সামিয়া বললো,“সালেহা রফিককে খুন করেছে, কামাল সালেহাকে আর আমি কামালকে। খুনি আমাদের সবার দূর্বলতাকে ব্যবহার করে আমাদের দিয়ে সব কাজ করিয়েছে।”

রাজ স্বাভাবিকভাবে বললো,“বুঝতে পেরেছি। এবার বলুন আপনার সাথে খুনি কিভাবে যোগাযোগ করেছে?”
“ফোন করেছিলো। তবে লাভ নেই, সে আগে থেকেই জানিয়ে দিয়েছে ঐ নাম্বার ট্রাক করে তাকে পাওয়া যাবে না। শুধু শুধু সময় নষ্ট হবে।”

“আপনাকে কিভাবে খুন করতে রাজি করিয়েছে?”
“সন্তানসহ আমাকে খুন করার হুমকি দিয়েছিলো। আমি যদি খুন না করতাম সে আমার সন্তানকে পৃথিবীর আলো দেখতে দিতো না।”
রাজ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,“আপনার সন্তান জন্ম নেওয়ার পর তার কি হবে? আপনি যে কারনেই খুন করুন না কেন, আপনি যে খুনি তা মিথ্যে নয়। আইনের চোখে আপনি অপরাধী।”
সামিয়া কান্না করে দিলো৷ রাজ নিরবে তাকিয়ে রইলো। সামিয়াকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা তার জানা নেই।
“নিজেকে সামলান মিসেস সামিয়া।”
সামিয়া মাথা নাড়ালো। রাজ পুনরায় জিজ্ঞেস করলো,“আপনাকে যে কল দিয়েছিলো সে মহিলা না পুরুষ?”
“পুরুষ ছিল।”
“আচ্ছা।”
রাজ সামিয়ার থেকে ফোন নাম্বারটি নিয়ে চলে গেলো৷ হোক না সময় নষ্ট তবুও একবার দেখতে দোষ কি? রাজ এটা ভেবে চলে গেলো।

রাজ নাম্বারটি নিয়ে লোকেশন ট্রাক করার চেষ্টা করলো। কিন্তু বিশেষ কোন লাভ হলো না। একজন মৃত ব্যক্তির নাম্বার এটা, আর লোকেশন কুমিল্লা দেখাচ্ছে। সেখান থেকেও খোঁজ নিয়েছে রাজ কিন্তু কোন লাভ হয়নি। মৃত ব্যক্তির পরিবার পরিজন সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

রাজ যখন ব্যস্ত নগরীতে খুনের রহস্য খুঁজতে ব্যস্ত তখনি রাজের জীবন ওলট-পালট করে দিতে তার বন্ধু শ্যামলের ফোন। ফোন তুলে ‘হ্যালো’ বলতেই ওপাশ থেকে শ্যামল খুব উদ্ধিগ্ন কন্ঠে বলে উঠলো,“তাড়াতাড়ি রুমে আয় রাজ।“
রাজ কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও নিজেকে সামলে বাসায় ফিরে গেলো। শ্যামলের জরুরি ডাক মানে বিশেষ কিছু ঘটেছে সেটা বুঝতে পারলো রাজ।

শ্যামল হলো রাজের বন্ধু, সাথে রুমমেট বলা চলে। দু’জনের মধ্যে সখ্যতা বেশ গাঢ়। রাজ পুলিশ অফিসার এবং শ্যামল একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে কাজ করে। বেশ কিছুদিন হলো অফিসের কাজে শহর থেকে বাহিরে ছিলো শ্যামল। আজই ফিরে এসেছে। ফিরে এসে চমকে গেলো। রাজ শ্যামলের কাছে চমকে যাওয়ার কারন জিজ্ঞেস করতেই শ্যামল রাজকে একটি সিডি দেখালো। রাজ ভ্রু কুচকে সিডিটার দিকে তাকিয়ে রইলো। শান্তকন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,“এটাতে কি আছে?”
শ্যামল সিডিটা চালু করলো রাজের সামনে। রাজের পুরো পৃথিবী থমকে গেলো। তার সামনে তার ‘প্রিয়’ হাত পা বাঁধা অবস্থায় ছটফট করছে, কিন্তু সে কিছু করতে পারছে না৷ তার তাকিয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার রইলো না। কেননা সে তো ভিডিওতে দেখছে, সরাসরি নয়। রাজ রেগে গিয়ে শ্যামলের কলার ধরে ফেললো। প্রচন্ড রাগে রাজ হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছে। রাজ রাগ নিয়েই বললো,“এসব কি হচ্ছে? আমার সাথে মজা করছো?”
“রাজ শান্ত হ। আমি কিছু জানি না। এটা তো আমি দরজার বাহিরে পেলাম।”
রাজ শ্যামলের কলার ছেড়ে দিলো। সাথে সাথে তার ফোনে একটা অচেনা নাম্বার থেকে মেসেজ আসলো। রাজ মেসেজটা পড়তে লাগলো। তাতে লেখা ছিলো,“দূর্বলতা খুব খারাপ জিনিস রাজ সাহেব।”
রাজ তৎক্ষনাৎ নাম্বারটায় কল দিলো কিন্তু কেউ রিসিভ করলো না। কল কেটে যেতেই আরো একটি মেসেজ এলো।
“কল করবেন না রাজ সাহেব। আমি সবসময় কাজে ব্যস্ত থাকি। কল করলে বিরক্ত হই।”
রাজ সাথে সাথে রিপ্লাই করল,“কি চাই তোমার?”
“যদি বলি আপনার সাথে খেলতে চাই?”
“কি রকম খেলা?”
“সামিয়ার সাথে যেমন খেললাম।”
রাজ থ মেরে বসে পড়লো। তারমানে এ আসল খুনি, যাকে রাজ খুঁজছে। কিন্তু তার সাথে রাজের কি শত্রুতা? সে রাজ কে ব্যবহার কেন করতে চাইছে? রাজ নিজেকে সামলে লিখলো,“আমার সাথে এসব করার মানে কি? আমি আপনার কি ক্ষতি করেছি?”
“কিছুই না। আসলে সত্যিটা হলো আমি নিজের হাতে কাউকে মারতে চাই না। সাহেরা হাসপাতালে যারা ছিলো তাদের সবাইকে আমার ব্যবহার করা শেষ। হয়েছে কি এখন তো আমার নতুন কাউকে দরকার, যাকে ব্যবহার করে আমি আমার কাজ করতে পারি। তাই আমি ভেবে দেখলাম আপনি যেহেতু আমাকে খুঁজছেন সেহেতু আমি আপনাকেই ব্যবহার করি। আমার মন কেন জানি না বলে উঠলো, এই খেলাটা খুব মজার হবে।”
রাজ রেগেমেগে লিখলো,“আপনার মাথায় সমস্যা আছে? কি ভুলভাল বকছেন?”
“ঠিকি বলেছেন আমার মাথায় সত্যি সমস্যা আছে। আপনার সাথে খেলতে না পারলে আমার মাথাটা বেশ যন্ত্রনা করবে। তাই আমি খেলতে চাই।”

“আমার থেকে কি চাই আপনার? আমাকে দিয়ে কি কাজ করাতে চান?”
বেশ কিছুক্ষন পর রাজের ফোনে মেসেজ আসলো,“আজ সারারাত আপনি ভাবুন আপনার দূর্বলতাটা ঠিক কতটা বড়? ভেবেচিন্তে দেখুন আপনার প্রিয় মানুষটার জন্য আপনি আমার দেওয়া নিকৃষ্ট কাজগুলো করতে সক্ষম কিনা?যদি সক্ষম হন তবে কাল সকালে আমাকে ছোট্ট করে লিখবেন আমি রাজি। তারপর আমি আপনাকে আপনার কাজ বুঝিয়ে দেবো। আর হ্যাঁ আমার নাম্বারটি ট্রাক করার বৃথা চেষ্টা দ্বিতীয়বার করবেন না। মনে রাখবেন আমি না চাইলে আমার কাছে পৌঁছানো অসম্ভব।”

রাজ হতভম্ব হয়ে গেলো। শ্যামল গিয়ে রাজের কাঁধে হাত রাখলো। রাজ ভাঙা কন্ঠে বললো,“আমার সততার জীবন বোধহয় শেষ হতে চললো।”
“রাজ?”
“তুই তো জানিস প্রিয় আমার জীবনে কি? আমি তার জন্য সবকিছু করতে পারি। তাকে আপন করার জন্য আমি কত কি না করেছি?”
শ্যামল নিজেকে গুটিয়ে নিলো। রাজকে নিজের মতো থাকতে দিয়ে শ্যামল চলে গেলো নিজের এক বন্ধুর বাসায়।

রাজ যেমন ছিলো তেমন অবস্থাই বিছানায় শুয়ে পড়লো। নিজের আঁখিযুগল বন্ধ করে বললো,“এক আকাশ সমান ভালোবাসা জমিয়েছি তোমার জন্য। তুমি ছাড়া মরুভূমি হৃদয়টা আমার। ভালোবাসি প্রিয়। যতটা ভালোবাসলে তোমাকে আপন করে পাওয়ার কথা ভাবা যায়, ঠিক ততটা ভালোবাসি।”

রাজ ডুব দিলো তার এবং প্রিয়র জীবনের সেই সোনালি অধ্যায়ে,

“সময়টা তখন বর্ষাকাল। আকাশটা মেঘলা। যেকোন সময় বৃষ্টি শুরু হয়ে যেতে পারে। বাড়িতে কোন মেয়ে না থাকায় রাজের মা রাজকেই বললো,“ছাদ থেকে কাপড়গুলো তুলে আন তো বাবু৷ হাতে প্রচুর কাজ আমি যেতে পারবো না।”
“যাচ্ছি।”
বলে রাজ ছাদে চলে এলো। রাজ ছাদে আসতে আসতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। সাত তলা বিল্ডিং। রাজরা থাকে দু’তলায়। সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে উঠতে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো। রাজ উপরে উঠতে উঠতে মনেমনে বললো,“সালার আজই লিফট খারাপ হতে হলো।”
সিড়ি বেয়ে ছাদে আসতে আসতে বৃষ্টি প্রবল বেগে নামতে শুরু করলো। রাজ তাড়াতাড়ি করে ছাদে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো। রাজের ভাবনা ছিলো বৃষ্টি হলে চলে যাবে। তবে এখন তার মনে হচ্ছে এখানেই দাঁড়িয়ে থাকুক।তার সামনে নীল পরী দাঁড়িয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে।
রাজের সামনে বাড়িওয়ালার পাঁচ বছরে নাতি এবং সেই সাথে নীল রংয়ে সাজা এক তরুনী বৃষ্টি বিলাস করছে৷
হঠাৎ তরুনীর নজরে পড়লো রাজ। রাজকে থেকে তরুনী কিছু সময়ের জন্য থমকে দাঁড়ালো। পাঁচ বছরের বাচ্চা ছেলেটি তরুনীকে কানেকানে কিছু বললো। তরুনী সাথে সাথে এসে আমার হাত টেনে বৃষ্টির মধ্যে নিয়ে গেলো।
সাধারণত আমি বৃষ্টিতে ভেজা পছন্দ করি না। ছেলেটি হয়তো সেটাই বলেছে। সেজন্যই তরুনীর আমার কাছে আসা হয়তো।

তরুনীর সংকোচহীন রাজের হাত ধরায় বুঝলো মেয়েটা খুব চঞ্চল প্রকৃতির।
সেদিন অনেকটা সময় রাজ আর তরুনী বৃষ্টি বিলাস করেছিলো। সেটা ছিলো রাজের প্রথম বৃষ্টি বিলাস এবং প্রিয়র সাথে প্রথম দেখা।
পরে অবস্য জেনেছে ওটা রিংকু(বাচ্চা ছেলেটি) ফুপাতো বোন। তাদের বাড়িতে বেশ কয়েকদিন বেড়াতে এসেছি।

সেদিন প্রথম দেখার পর তিনদিন কেটে গেলো। প্রিয়র সাথে রাজের দেখা হয়নি। রাজ তো ঘর থেকেই বের হয়নি। কেননা বৃষ্টিতে ভিজে তার জ্বর হয়েছিলো। তিনদিন পর প্রিয় নিজেই এলো রাজের সাথে দেখা করতে।

প্রথম আলাপেই রাজের মায়ের সাথে বেশ সখ্যতা গড়ে ওঠে প্রিয়র। রাজের মায়ের থেকে খোঁজ নিয়ে প্রিয় রাজের ঘরে আসে।
রাজ তখন বিছানায় বসে ছিলো। জ্বরটা কিছুটা কমেছে৷ প্রিয় দরজার কাছে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো,“আসবো?“
রাজ দরজার পাশে প্রিয়কে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুশিতে পাগল হয়ে যেতে ইচ্ছে করলো। নিজেকে সামলে বললো,“আসুন।”
প্রিয় ঘরে ডুকেই সংকোচহীন বললো,“সরি। আমি জানতাম না বৃষ্টিতে ভিজলে আপনার এতটা জ্বর হবে। রিংকু বলেছিলো আপনি বৃষ্টি পছন্দ করেন না, তাই দুষ্টুমি করে….।”
“আমি বুঝতে পেরেছি। আপনার দুঃখিত হওয়ার কোন কারন নেই। আমি ঠিক আছি।”
“সত্যি ঠিক আছেন?”
“হু। আপনার বৃষ্টি খুব পছন্দের?”
“হ্যাঁ। বৃষ্টি যাদের পছন্দ নয় তাদের আমার অপছন্দ।”
“তাই। তাহলে আমি আপনার অপছন্দের হয়ে গেলাম?”
“না আসলে….।”
প্রিয়র ঘাবড়ানো মুখ দেখে সেদিন রাজ হেসে দিয়েছিলো। সেটা দেখে প্রিয় রেগে গিয়ে রাজকে একমনে কথা শুনিয়ে চলেছিলো। রাজ তখন মনেমনে বলছিলো,“কে বলবে এ আমার অপরিচিত।”

তারপর থেকেই শুরু হয় বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব থেকে ভালোলাগা। একটা সময় পর রাজের মনে প্রিয়র জন্য গভীর ভালোবাসার জন্ম হয়। ভালোবাসাটা যে হঠাৎ অনুভব হয়েছে তা নয়। ধীরে ধীরে অনুভব হয়েছে।

প্রিয়র চলে যাবার দিন যত ঘনিয়ে এসেছিলো রাজের মনে ততই শূন্যতা বাসা বাঁধছিলো।

প্রিয়র চলে যাবার দিন রাজ প্রিয়কে আটকাতে মনের কথা বলে দেয়। একটা লাল গোলাপ প্রিয়র দিকে এগিয়ে দিয়ে বলেছিলো,“আমার রোদেলা আকাশে মেঘ হয়ে ফুটে উঠবে প্রিয়? ভালোবাসবে আমায়?”

প্রিয় উত্তর না দিয়ে সেদিন চলে গিয়েছিলো। যাবার পূর্বে রাজের জন্য নিজের ফোন নাম্বারটি রেখে যায়।

ধীরে ধীরে সম্পর্ক দিন-রাতের ফোন আলাপে গড়ে ওঠে। বলে রাখা ভালো সেদিনের পর কিন্তু রাজ আর দ্বিতীয়বার প্রিয়কে ভালোবাসার কথা বলেনি৷ কারন সে সময় নিয়েছিলো কিংবা সময় দিয়েছিলো প্রিয়কে।

ফোন আলাপের সম্পর্ক বাস্তবে আবার দেখা দিলো। প্রিয় আবার এসেছিলো নিজের মামা বাড়িতে। সেসময়ে প্রিয়র সাথে কিছু সুন্দর মূহুর্ত কাটায় রাজ।

এক মেঘলা দিনে রাজ দ্বিতীয়বার প্রিয়কে ভালোবাসার কথা বলেছিলো। সেদিন প্রিয় জবাব দিয়েছিলো। হয়তো জবাবটা ভালোবাসি ছিলো না তবে সম্মতির ছিলো। প্রিয় বলেছিলো,“পরিনতি বিহীন সম্পর্ক আমি গড়তে চাই না।”
“পরিনতি দেবো তো।”
“মুখে পরিনতি গড়া যায় না, সম্পর্ক পরিনতি পেতে পরিচয়ের প্রয়োজন হয় একটা।”
“তুমি কি আমার বেকারত্বের কথা বলছো?”
“হ্যাঁ।”
“যখন অপছন্দের বৃষ্টি পছন্দের হয়ে গেছে তখন বেকারত্ব ঘুচে যাবে।”
“সেদিন ভেবে দেখবো।”
“ভেবে দেখবে কেন? তুমি কি সেদিনও রাজি হবে না?”
“আমি সেদিন নিজের সম্পর্ক গড়বো যেদিন আমার পরী জীবনে এগিয়ে যাবে।”
“ওহ এই ব্যপার। সেটা তো তুমি আমায় আগেই বলেছিলো। তাহলে তো কোন সমস্যা নেই।”

“জীবন এত সহজ নয় রাজ। জীবনে এগিয়ে যাও আমার থেকে ভালো কিছু তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।”
“কিন্তু আমি শুধু আমার প্রিয়র অপেক্ষা করবো।”
“তবে তোমাকে ততদিন অপেক্ষা করতে হবে যতদিন আমার পরী জীবনকে গুছিয়ে না নেয়।”
“বললাম তো করবো।”
“শেষবারের মতো বলছি তুমি যতটা সহজ ভাবছো ততটা নয়। পরে কখনো এরকম মনে না হয় আমি আমার পরীর জন্য তোমাকে ঠকাচ্ছি।”
“উঁহু কখনো মনে হবে না।”
“দেখা যাক।”

এভাবেই প্রিয়র সাথে জীবন এগিয়ে যাচ্ছিলো রাজের। পরীর জীবনটা সুন্দরভাবে এগিয়ে গেছিলো। তাই তো রাজ ভেবেছিলো সামনেই তার এবং প্রিয়র পরিনয় সেড়ে নিবে।

এসব ভাবতে ভাবতেই রাজ ঘুমের দেশে পাড়ি জমালো।

চলবে,