শ্রাবণের অশ্রুধারা পর্ব-১১

0
300

#শ্রাবণের_অশ্রুধারা
#পর্ব_১১
#কলমে_আসমা_মজুমদার_তিথি

হাসনাত বাড়ির ড্রয়িং রুমে চলছে পিনপতন নীরবতা । একটু আগেও বংশধর আসবে বলে যে খুশির বন্যা বয়ে গিয়েছিল এ পরিবারে সেখানে হঠাৎ একটা কথায় মুহূর্তেই সমস্ত আনন্দ মাটি করে দিল।
রহিমা বেগমের সাথে কথা বলার পরেই অনু তাদের বাড়িতে চলে আসে।ততক্ষণে তরুকে নিয়ে রহিমা বেগমও বাসায় চলে আসে।অনু এসেই তরুকে একের পর এক প্রশ্নের বাণ ছুঁড়ে মারে।কিন্তু নিরুপায় তরু নিশ্চুপ ভাবে শুধু সবটা শুনেই যাচ্ছিলো।এছাড়া তার যে এখন কিছুই করার নেই।সে যে তার ভাইয়ের কাছে প্রতিশ্রুতু বদ্ধ।চুপ থাকা ছাড়া সে আর কিছুই করতে পারবে না এখন।তখন পিছন থেকে অনুজ বলে উঠে আমি তোমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছি।তরুকে কিছু জিজ্ঞেস করে লাভ নেই।

কিছুক্ষণ আগে,
অনু এ বাড়িতে এসেই অনুজের কাছে যায়,

=তুই এটা কী করে করলি ভাইয়া।তুই যেমন আমার ভাই চারুও তেমন আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তুই ওকে কখনো কোন কষ্ট দিবি না বলেই ওকে তোর বউ করে এনেছি এ বাড়িতে।আর সেই তুই কিনা ওকে জীবনের সবচেয়ে বড় কষ্ট টা দিলি।
বোনের কথায় অনুজ কোন প্রতুত্তর করলো না।তখন অনু নিজেই আবার বলল,
=একটা বাচ্চাই তোর কাছে সব হলো ভাইয়া।ভালোবাসাটা কী কিচ্ছু না তোর কাছে?
এদিকে অনুর চেচামেচি শুনে রহিমা বেগমও এসে দাঁড়ালেন।মেয়ের এমন কথা শুনে অনুজের বদলে তিনিই বললেন,
=সন্তান না থাকলে এই ভালোবাসা পালোবাসাও এক সময় থাকে না অনু।স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে ভালোবাসা টিকিয়ে রাখতে পারে কেবল সন্তান।
মায়ের এ হেন কথা শুনে অনু তার দিকে তাকিয়ে বলে,
=আজ যদি আমি অক্ষম হতাম সন্তান ধারনে,আর নির্ভীকও যদি ভাইয়ার মতন এমনটাই করতো তখনও কী তুমি একই কথা বলতে মা?

=এসব তুই কী বলছিস অনু!

=আৎকে উঠছো কেনো মা,আমি তোমার মেয়ে বলে?আচ্ছা যাও আমার উদাহরণ টা বাদ দিলাম।এখন যদি ধরো চারুর বদলে ভাইয়ার এ সমস্যাটা থাকত তাহলে কী তুমি চারুকে বলতে ও যেনো ভাইয়াকে ডিভোর্স দিয়ে অন্য কাওকে বিয়ে করে?

=অনু শোন,,
মায়ের কথা শেষ না করতে দিয়েই অনু বলল,

=নাহ্ মা তুমি কখনো এটা বলতে না বরং চারুকে মানিয়ে নিতে বলতে,মেনে নিতে বলতে,কিন্তু চলে গিয়ে অন্য কারো সাথে সুখী হতে বলতে না।আমার আর ভাইয়ার সমস্যা হলে তুমি নির্ভীক/চারুকে বুঝাতে নিজের সাধ্যমত যাতে তারা সম্পর্ক টা টিকিয়ে রাখে কারণ আমরা তোমার সন্তান। চারুতো তোমার ছেলের বউ তাই তার সুখ-দুঃখে তোমার কিছুই এসে যায় না।
কিন্তু চারুও তো অন্য কারো মেয়ে মা,তারাও তো চায় চারু সুখী হোক,তাহলে তুমি একটা মা হয়ে অন্য একটা মায়ের আর্তচিৎকারের কারণ কেনো হলে?

অনুলেখার কথার কী উত্তর দিবেন তা বুঝতে পারছেন না রহিমা বেগম।কারণ অনু সত্যি উচিত কথাগুলো তার মুখের উপর বলেছে।কিন্তু রহিমা বেগম এমন এক ব্যাক্তিত্বের মানুষ যে কিনা যেভাবেই হোক নিজের কথা,নিজের যুক্তিকে উপরে রাখবেন,তাই তিনি বলেন,

=আমি তোদের মা,কখনো তোদের খারাপ চাইনি।আর এজন্যই অনুজকে দ্বিতীয় বিয়ের কথা বলেছি।

=তাইতো তুমি নিজে মরে যাওয়ার হুমকি দিয়ে চারুকে দিয়ে ভাইয়াকে বিয়ের জন্য রাজি করিয়েছো তাই না মা!
অনুর এ কথায় রহিমা বেগম চমকে গেলেন।এদিকে অনুজ বিস্ফোরিত চোখে মায়ের মুখের দিকে তাকালো।সে আগেই বুঝতে পেরেছিল চারু এমনি এমনি তাকে বিয়ের কথাটা বলেনি,এর পিছনে নিশ্চয়ই অন্য কোন কারণ আছে।কিন্তু সে কারণ টা যে এতোটা জঘন্য তা বুঝতে পারেনি অনুজ।রহিমা বেগম থতমত গলায় বলেন,

=এসব কি বলছিস তুতুই কে..কে বলেছে তোকে এসব।
ভয় পাচ্ছ কেনো মা, আমি সবটা জেনে তোমাকে ঘৃণা করবো এটা ভেবে!
বিদ্রুপের হাসি হেসে বলে অনু,
নাহ্ তুমি আমার জন্মদায়িনী মা,তোমাকে আমি ঘৃণা করতে পারিনা,কিন্তু তোমার এমন মানসিকতাকে আমি ধিক্কার জানাই মা।তুমি কী করে পারলে শুধু মাত্র একটা বাচ্চার জন্য চারুর সাজানো সংসারটা ভেঙে দিতে কী করে পারলে।একবার আমাকে চারুর জায়গায় বসিয়ে চিন্তা করোতো আমার সাথে এমনটা হলে তুমি কী করতে?

হঠাৎ চারুর জন্য রহিমা বেগমের একটা খারাপ লাগা তৈরি হলো মনে কোথাও। কিন্তু এখন চারুকে সমবেদনা দেয়া ছাড়া তার আর কিছুই করার নেই।যা হওয়ার তা হয়ে গেছে।নিয়তি কে কেউ বদলাতে পারে না।আর তরু এখন অনুজের সন্তানের মা হতে চলেছে,তাই তিনি চাইলেও চারুর সংসার চারুকে ফিরিয়ে দিতে পারবেন না।
অনু আবার অনুজকে বলল,
=আর তুই ভাইয়া চারু বলল আর নাচতে নাচতে পরেরদিন বিয়ে করে আনলি,তাও আবার কাকে? তারই ছোট বোনকে।তোদেরকে আমার নিজের লোক ভাবতেই কষ্ট হচ্ছে।
আর আমি কিনা তোদের জন্যই চারুকে বুঝিয়েছি,ওকে আবার সবটা ভেবে দেখতে বলেছি,হটকারিতায় কোন সিদ্ধান্ত নিতে বারণ করেছি এখন তো মনে হচ্ছে চারুই ঠিক করেছে আমাকেও না জানিয়ে উদাও হয়ে।

অনুর এ কথায় এবার অনুজ বসা থেকে উঠে অনুকে বলে,
=বোন তুই জানিস লতা কোথায়?আমাকে বল একবার আমি ওকে সবটা সত্যি বলব সবটা।

নাক সিটকে অনু বলে,
=কি সত্যি বলবি যে তরু তোর বাচ্চার মা হতে চলেছে,এটা আর তোকে কষ্ট করে বলতে হবে না।এ মহান কাজটাও আমাদের মা করে দিয়েছে।

=আমি কখন চারুকে এ কথা বললাম!
বিস্মিত হয়ে রহিমা বেগম বলল।

=সকালে আমি ভেবে তুমি চারুকেই সব কথা বলেছিলে।কারণ চারু এ বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার পরে আমি ওকে আমার বাসায় নিয়ে গিয়েছি।

=তার মানে লতা এতোদিন তোর কাছে ছিলো অনু।তাহলে আমাকে বলিসনি কেনো?

=ওকে আরও কষ্টের আগুনে পুড়িয়ে মারতে!

=অনু,

=চিৎকার করিস না ভাইয়া।যেটা সত্যি সেটাই বলেছি।ও একটা নারী,তোর স্ত্রী। যতই ও তোকে বিয়ে করতে বলুক না কেনো একজন স্ত্রী হয়ে ও তোকে তারই বোনের সাথে রাত কাটাতে দেখেও চুপ থাকবে এতোটাও আত্মসম্মানহীন চারু অন্তত নয়।তুই কী করে পারলি এটা করতে,আমিতো চারুকে বলেছিলাম চোখের দেখাটা সত্যি নাও হতে পারে কিন্তু তুই সেটাই সত্যি করে দিলি আজ।

=ভাইয়া কখনো আমার সাথে রাত কাটায়নি অনু আপু।
পিছন থেকে তরুর কথা শুনে ঘুরে তাকায় অনু।রহিমা বেগম তো অবাক হয়ে গেলো তরুর কথায়।

=রাত না কাটালে এ বাচ্চা এলো কোথা থেকে।নাকি কারো সাথপ নষ্টামি করে সেই দায় আমার ভাইয়ের উপরে চাপাচ্ছো!

=অনু,চিৎকার করে বলল অনুজ।
মুখ সামলে কথা বল।যেটা জানিস না সেটা নিয়ে কোন মন্তব্য করিস না।এতে তুই তরুকে নয় বরং নিজেকে ছোট করছিস।

=জানি না যখন জানা আমাদের। তাহলেই লেটা চুকে যায়।

অনুজ চুপ হয়ে যায়।
=কিরে বল,তাহলে বলার মতন কিছু নেই থাকলে তবেই না বলবি।ঘৃণা লাগে তোদের দেখলে আমার ছিহ্।

=আমি তরুকে বিয়ে করিনি।
মুহুর্তেই ঘরময় এ কথাটা যেনো বারবার প্রতিধ্বনিত হতে লাগলো,”আমি অনুকে বিয়ে করিনি”
রহিমা বেগমের কান দিয়ে যেনো গরম ধোঁয়া বের হচ্ছে, এতোক্ষণে মহসিন হাসনাতও এসে দাঁড়িয়েছেন দরজার পাশে।তার মুখভঙ্গি দেখে কিছুই বুঝা যাচ্ছে না।তরু নির্লিপ্ত হয়ে ঘরের এক কোনায় দাঁড়িয়ে আছে। অনুজ থম মেরে এখনো বসে আছে।আর অনুলেখা যেনো এমনটা শুনবে তাই আশা করেছিলো।সে শুধু সব সত্যি টা জানতেই এতোকিছু করলো এখানে এসে।কারণ তার ভাইয়ের প্রতি তার একুটু বিশ্বাস আছে সে কখনো চারুকে অন্তত ধোঁকা দিবে না,প্রতারণা করবেনা সামান্য একটা কারণে।

=তাহলে তরুর পেটের বাচ্চাটা কার ভাইয়া?

=ওর স্বামীর।

=তরুর আবার কবে বিয়ে হলো,

=তুষারকে চিনিস?

=কোন তুষার, আর এই তুষারের ভূমিকা কী এখানে?

=তোদের ভার্সিটির সিনিয়র ছিলো এ তুষার,লতাকে কখনো হয়তো প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলো আর লতা তা প্রত্তাখ্যান করেছিলো।এবার মনে পড়ছে?
অনুজের এ কথা শুনে চমকে যায় তরু।তুষার চারুকে চেনে।কিন্তু চারুকে ভালোবাসলে তার সাথেই বা সম্পর্কে জড়ালো কেনো,আর বিয়েই বা করলো কেনো,বিয়ে করেও বা তাকে আবার ছুঁড়ে ফেলে দিলো কেনো।তাহলে এসব কিছুর সাথে কী চারুর কোন ভূমিকা আছে।নিজেকে আরও কঠিন কিছু শোনার জন্য প্রস্তুত করলো তরু।

অনু কিছুটা সময় নিয়ে ভাবলো।তারপর তার মনে হলো একবার একটা সিনিয়র চারুকে প্রপোজ করেছিলো, আর চারুও রাগের মাথায় ছেলেটাকে যা নয় তা বলে অপমান করে রিজেক্টও করেছিলো।কিন্তু ছেলেটার নাম তার তেমন মনে পড়ছেনা।

=সিনিয়র একটা ভাই প্রপোজ করেছিলো তবে তার নামটা আমি জানি না।ওনার নাম কী তাহলে তুষার ছিলো।কিন্তু হঠাৎ তুষার ভাইয়ের সাথে তরুর কী সম্পর্ক সেটা তো বুঝলাম না।

অনুজ তুষারের চারুকে প্রপোজ করার পর থেকে তরুকে হাত করে সেই অপমানের প্রতিশোধ নেয়ার সমস্ত কথা একে একে খুলে বলল।
সবটা শোনার পরে তরু যেনো বাক হারা হয়ে গেলো।যে তুষারকে সে নিজের সবটা দিয়ে ভালোবেসেছিলো সে তুষারের মনের কোনো তার জন্য ছিল কেবল এক রাশ ঘৃনা আর প্রতিশোধের আগুন।তুষার শুধুমাত্র তাকে ব্যবহার করে চারুকে কষ্ট দিতে চেয়েছে।আর সে কিনা বোকার মতন তুষারের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছিলো।চারদিকের সবকিছু যেনো থমকে গেলো তরুর কাছে।পুরো পৃথিবীটা তার কাছে বিষাক্ত মনে হতে লাগলো।তাকে কেই ভালোবাসেনি,সবাই যে যার স্বার্থের জন্যই কেবল তাকে ব্যবহার করেছে।একটা গাছকে পেঁচিয়ে যেমন বিভিন্ন লতা গাছ তাকে জড়িয়ে বাঁচে তেমনই তরুলতাও এতোদিন এর ওর কাছে সেই লতানো গাছই ছিলো।এ জীবনটা কেনো এতো বিষাক্ত তার।তার কী একটা স্বাভাবিক জীবন হতে পারত না।বাবা-মায়ের ভালোবাসার একটা মেয়ে,একজন পুরুষকে ভালোবাসাময় অর্ধাঙ্গিনী সেকি হতে পারতো না!

=চারুকে আগে কেনো সবটা বলিসনি ভাইয়া।
ওকে সবটা বললে কী ও তরুর জীবনটা গুছাতে সাহায্য করতো না?

=তাহলে তো তুষারের প্ল্যানটাই সাকসেস হতো।আমি চাইনি চারু আত্মগ্লানিতে ভুগুক।ও তো মরমে মরে যেতো তরুর জীবনে এই বিপর্যয়ের কথা জানলে।আমিতো ভেবেছিলাম তুষারকে খুঁজে বের করে তরুকে ওর হাতে তুলে দিবো ওকে বুঝাবো সব প্রতিহিংসা ভুলে গিয়ে নতুন করে সবটা শুরু করতে।কিন্তু তুষার আমার কোন কথাই শুনেনি উল্টো ও নিজের মনের ক্ষোভের কথা আমাকে বলে সেদিন রাতেই দেশের বাহিরে চলে গিয়েছিলো।প্রত্যক্ষভাবে না হোক পরোক্ষভাবে হলেও তরুর জীবনে এমন একটা পরিস্থিতির জন্য চারু কিছুটা হলেও দায়ী।আর ওর স্বামী হিসেবে ওর দায় আমার উপরেও বর্তায়।আমি শুধু চাইনি চারু কিংবা তরু কেউ কোন কষ্ট পাক।
তাই চারুর দায়িত্ব টা আমিই নিয়েছিলাম।
=সবটা নাহয় বুঝলাম,কিন্তু এই মিথ্যে বিয়ের নাটকটাই বা কেনো করেছিস চারু কাছে।

=ওকে বুঝাতে চেয়েছিলাম আমি অন্য কাওকে বিয়ে করলে ও মেনে নিতে পারবে না।একটা সন্তানের জন্য নিজেদের ভালোবাসা বিসর্জন না দিয়ে বরং সে ভালোবাসা দিয়েই একটদ এতিম বাচ্চাকে মানুষ করে নিজের সন্তান করে নেয়া যায়।কিন্তু তার আগেই সবটা ওলট-পালট হয়ে গেলো।কিন্তু চারু হঠাৎ কেনো আমাকে ছেড়ে চলে গেলো আমি সেটাই বুঝছি না।

=কারণ সেদিন রাতে তুই চারুকে ছেড়ে চলে যাওয়ার পর পরেরদিন সকালে তোর আর তরুর অবস্থা দেখে ও মেনে নিতে পারেনি।কোনো মেয়েই হয়তো পারবে না।

=তরুকে যেদিন বাসায় এনেছিলাম সেদিন আমি রাতে বাসাতেই ছিলাম না।সারারাত এলাকার মসজিদে ছিলাম।
তারপর আবার কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
=আর সেদিন রাতে তরুর অবস্থা খুব খারাপ ছিলো।বমি করে পুরো ঘর ভাসিয়ে ফেলেছিলো।ও শেষ পর্যন্ত টিকতে না পেরেই আমাকে রাত ৪টায় ফোন দিয়েছিলো।চারুকে না বলেই আমি তরু ফোন দিয়েছে বলে ওর কাছে চলে এসেছিলাম।কিন্তু এতে ওর চলে যাওয়ার কী মানে!
তাছাড়া আমিতো ভোরেই তরুকে ঘুমের ঔষধ খাইয়ে আমাদের রুমে চলে গিয়েছিলাম। ওকে বারান্দায় দেখেছিলাম।গায়ে বমির ভ্যপশা গন্ধ লাগছিলো তাই ভেবেছি গোসল করে এসে ওকে তরুর কথা বলবো।কিন্তু এসেই দেখি ও নেই কোথাও।
অনু বুঝে যায় সেদিন কী হয়েছিল। তরু বমি করায় গোসল করেছিলো,আর ওর সারারাত ঘুম হয়নি বলে অনুজ ঘুমের ঔষুধ খাইয়েছিলো।আর নিজেও গোসল করে নিয়েছিল গন্ধ নিবারনের জন্য। আর এই পুরো ঘটনাকে চারু অন্য দৃষ্টিতে দেখেছিলো।
অবশ্য চারুর এই দৃষ্টিতে দেখাটাও কোন অংশে ভুল ছিলো না তাও বুঝতে পারছে অনু।আসলে পরিস্থিতিটাই এমন ছিলো যে চারু এমনটা বুঝে নিয়েছে।কিন্তু এখন এসব জেনেও কিছু করতে পারবে না অনু কারণ যাকে সব সত্যিটা বললে সব ঠিক হয়ে যেতো সে মানুষটাই তো নেই আজ।একটা ভুল-বোঝাবুঝি আর একটা মিথ্যা কথায় পুরো একটা সাজানো সংসার ভেঙে গেলো আজ।নিজেকে কেমন অসহায় লাগছে অনুর সে যদি আরি আগে অনুজের সাথে কথা বলতো তাহলে হয়ত আজ চারু এক বুক অভিমান নিয়ে হারিয়ে যেতো না।

ধপ করে ফ্লোরে কিছু পরার শব্দ শুনে নিচে তাকালো সবাই।তরু জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে আছে।মেয়েটা একের পর এক মানসিক আঘাত নিতে না পেরে আবার জ্ঞান হারালো।অনু আর অনুজ ছুটে গেলো তরুকে উঠাতে।মহসিন হাসনাত এম্বুলেন্সের খবর দিলো।রহিমা বেগম এখনো আগের মতন থম মেরে দাঁড়িয়ে আছে।কি হচ্ছে না হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছেন না তিনি ।

চলবে,,,,