#শ্রাবন_মেঘের_বর্ষন🍁
#লেখনীতে:#তানজিল_মীম
#পর্ব:১০
“হা হয়ে তাকিয়ে আছে তিহান নাফিয়ার দিকে’!!যেন সে কি জন্য ডেকেছিল নাফিয়াকে তা সে নিজেই ভুলে গেছে’!!
.
.
“আর অন্যদিকে ভয়ে কাচুমাচু হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি আমি তিহান ভাইয়ার থেকে কয়েক কদম দূরে’!!না জানি তিহান ভাইয়া কি শাস্তি দেয় আমায়’!!একটু মিন মিন কন্ঠে বলে উঠলাম আমি তিহান ভাইয়াকেঃ
—–“ভাইয়া ডেকে ছিলে আমায়…
“তিহান চুপ!
—–“কি হলো ভাইয়া কথা কেন বলছো না….
“তিহান চুপ!’
“এদিকে তিহানের কান্ড দেখে সিফাত,রিয়াসহ তার সকল বন্ধুরা সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে তার দিকে’!!হর্ঠাৎই রিয়া তিহানের কাঁধে হাত দিয়ে বললোঃ
—–“ওই কোথায় হারিয়ে গেলি তুই…
“রিয়ার কথা শুনে তিহান তার ভাবনার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসলো’!!তারপর রিয়ার দিকে তাকিয়ে বলে উঠল সেঃ
—–“হুম কি হয়েছে?
—–“আরে ভুলে গেলি নাকি ওই তো নাফিয়া এসেছে তুই নাকি কি বলবি ওকে…(রিয়া)
—–“ওহ আমি তো ভুলেই গেছিলাম…
“এই বলে তিহান উঠে দাঁড়ালো’!!তারপর নাফিয়ার দিকে তাকাতে তাকাতেই এগিয়ে গেল সে…
‘”
“এদিকে হুট করে তিহান ভাইয়াকে এগিয়ে আসতে দেখে ঘাবড়ে গেলাম আমি’!!
—–“হায় রে এখন কি হবে আমার…(মনে মনে)
“তিহান ভাইয়া আসতে আসতে একদম আমার সামনে এসে দাঁড়ালো’!!ভয়ে ভয়ে তাকিয়ে আছি আমি তিহান ভাইয়ার দিকে’!!তারপর সে কিছু বলার আগেই বলে উঠলাম আমিঃ
—–“বিশ্বাস কর ভাইয়া আমি কিছু করি নি,আমি তো এক কয়দিন ভার্সিটিতেই আসি নি সেটা তো তুমি জানো,যদি কেউ কিছু করে থাকে তাহলে ওই রাত্রি আর মিতু করেছে, ওরা বার বার আমার নাম নিয়ে তোমার সাথে আজে বাজে কাজ করে ফেলে আর আমি ফেসে যাই,বিশ্বাস কর আমি কিছু করি নি ভাইয়া, ট্যাস্ট মি….(উওেজিত কন্ঠে)
“নাফিয়ার বক বক শুনে তিহান রেগে যায়’!!আরে সে কি একবারও বলেছে নাকি নাফিয়া কোনো ভুলভাল কাজ করেছে’!!তিহান ধমকের স্বরে বলে উঠলঃ
—-“থাম তুই আমি তোকে একবারও বলেছি তুই কিছু করেছিস…
“তিহান ভাইয়ার ধমক শুনে আমার বকবকানি থামিয়ে দিলাম’!!তারপর একটু মিনমিন কন্ঠে অবাক হয়ে বলে উঠলাম আমিঃ
—–“কিছু করি নি তাহলে ডাকলে কেন তুমি..
—–“সেটাও তো বলবো…
—–“তাহলে বলছো না কেন?
——“তুই বলতে কোথায় দিচ্ছিস, তোর সামনে এসে দাঁড়াতেই তো বক বক শুরু করে দিলি…
——“আসলে আমি তো ভাবছিলাম…
——“কি ভাবছিলি তুই…
——“না কিছু না এখন বলো কি জন্য ডেকেছো আমায়…
——“পা এখন কেমন তোর….
“তিহান ভাইয়ার কথা শুনে চোখ বড় বড় হয়ে গেল আমার’!!ভাইয়া আমার পা কেমন আছে সেটা জানার জন্য ডেকেছে’!!আমি তো আজকে মহা খুশি!আমার ভাবনার মাঝখানে আবারো বলে উঠল ভাইয়াঃ
—–“কি হলো কথা বলছিস না কেন?পা কেমন আছে তোর…
——“হুম হা একটু ভালো…
—–“ঠিক মতো ঔষধ নিয়েছিলি তো…
—–“হুম ভাইয়া…
“আর কি বলবে বুঝতে পারছে না তিহান তাই চুপ করে রইলো সে’!!তিহান ভাইয়া চুপ হয়ে যাওয়াতে আমি বলে উঠলামঃ
——“এখন তাহলে আসি ভাইয়া…
——“হুম যা..
—–“ঠিক আছে..
“এই বলে দু’কদম পিছনে যেতেই আবারো বলে উঠল তিহান ভাইয়াঃ
—–“শোন…
—–“হুম বলো ভাইয়া…
——“আজকে রাতে বাড়িতে আসছিস তো…
“তিহান ভাইয়ার এবারের কথা শুনে আমি চরম প্রকার অবাক হয়ে বললামঃ
——“তোমাদের বাড়ি…
—–“হুম…
——“কেন?
——“না মানে রাত্রি তোকে কিছু বলে নি…
——“কই না তো, অবশ্য কিছু বলার সুযোগই তো পেলো না তার আগেই তো তুমি ডাক দিলে…
—–“ওহ তাহলে ওই বলবে আনে,যাস কিন্তু তোকে কিছু বলার আছে আমার…
——“কি বলবে তুমি…
——“সেটা না হয় বাড়ি গেলেই বলবো…
——“ঠিক আছে…
—–“হুম…
—–“এখন তাহলে যাই ভাইয়া…
—–“এখনই যাবি…
—–“তুমি কি বলছো বলো তো নার্ভাস নাকি তুমি…
—–“না নার্ভাস নই আর একটা কথা বলার ছিল..
——“ওহ, হুম বলো…
——“না থাক..
—–“থাকবে কেন?
——“এমনি থাকবে যা তুই…
“তিহান ভাইয়ার কাজ আর কথা শুনে আমি মুচকি হেঁসে বলে উঠলাম ভাইয়ার কানে কানেঃ
—–“ভাইয়া সামথিং সামথিং…
——“তোর মাথার থিং থিং যা তুই…
“ভাইয়ার কথা শুনে হাসতে হাসতে শেষ আমি’!!তারপর বললামঃ
——“ঠিক আছে যাচ্ছি ভাইয়া, আই এম ওয়েটিং ফর ইউ ভাইয়া…
“তিহানও হাসলো!হয়তো সে যেটা বলতে চাইছে সেটা নাফিয়া বুঝে গেছে’!!
!!
“এদিকে দূর থেকে রিয়া….!’
“তিহান আর নাফিয়ার কান্ড দেখে বেশ জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে,কি এমন কথা বলছে যেটা তাঁরা শুনতে পাচ্ছে না’!!তারওপর নাফিয়া তিহানের কানে কানে কিছু বলছে যেটা একদমই সহ্য হচ্ছে না রিয়ার’!!তার সাথে হাসাহাসি করছে দুজনে…
“এদিকে সিফাত এসে বললো রিয়াকেঃ
—–“ওরা দুজনে কি কথা বলছে বল তো…
—–“আমি কি করে জানবো…
—–“না সেটা নয়, যে তিহান নাফিয়াকে দেখলেই রাগারাগি করতো সেই তিহান আজকে হেঁসে কথা বলছে নাফিয়ার সাথে, নিশ্চয়ই ঢাল মে কুচ কালা হে…
——“কি বলতে চাইছিস বল তো তুই…
—–“এটাই বলতে চাইছি কোনোভাবে তিহান নাফিয়াকে ভালোটালো বেসে ফেললো নাকি…
“স্তব্ধ হয়ে গেল রিয়া’!!কিন্তু মনে মনে রেগে গেল সে প্রচুর’!!কারন সে তিহান কে সেই কলেজ লাইফ থেকে ভালোবাসে কিন্তু আজও বলতে পারে নি’!!
____
“এদিকে অনেকক্ষণ হাসাহাসি করে নাফিয়া চলে গেল’!!আর তিহান চলে আসলো ওর বন্ধুদের কাছে’!!তিহান ওদের সামনে আসতেই সিফাত ওর হাত জড়িয়ে ধরে বললঃ
—–“কি মামা কেস টা কি….
—–“কিসের কেস?
—–“হুম এখন ভাজা মাছটা উল্টিয়ে খেতে পারছো না বুঝি মামা…
—–“কি বলতে চাইছিস তুই…
—–“এটাই বলতে চাইছি যে ছেলে নাফিয়াকে দেখলেই রাগারাগি করে সেই ছেলে আজকে এত মিষ্টি করে কথা বললো কারন টা কি মামা…
—–“বুঝে গেছিস তুই….
“তারপর আর কি সব বন্ধুরা মিলে হাসাহাসি শুরু করে দিল…!”অন্যদিকে সবাই বিষয়টা নিয়ে হাসাহাসি করলেও খুশি হতে পারছে না রিয়া….
_____________________________
“ভার্সিটির গাছতলায় বসে আছে রাত্রি আর মিতু’!!অপেক্ষা করছে তারা কখন নাফিয়া আসবে আর তারা শুনবে কেন ডাকলো তিহান নাফিয়াকে…
.
.
“এমন সময় দৌড়ে ওদের সামনে আসলো নাফিয়া…
“এসেই মিতু আর রাত্রির হাত ধরে নাচানাচি শুরু করে দিল সে’!!নাফিয়ার এমন কাজে রাত্রি মিতু দুজনেই অবাক হয়ে বললোঃ
—–“ওই পাগল হয়ে গেলি নাকি তুই…. (রাত্রি)
—–“উড়ি দোস্ত আজকে আমি খুব খুশি…
——“কেন বল তো…(মিতু)
—–“তোগো এহন কমু না আগে সবটা শুনি তারপর…
—–“মানে..(রাত্রি)
——“আজকে তোদের বাড়িতে কি আছে দোস্ত…
“হুট করেই এই উওেজনার মাঝখানে নাফিয়ার এমন কথা শুনে চমকে উঠলো রাত্রি তারপর বলে উঠল সেঃ
—–“তার মানে তুই আজকের দিনটা ভুলে গেছিস….
“রাত্রির কথা শুনে নাফিয়া অবাক হয়ে বললোঃ
——“কি আছে আজকে…
——“তুই সত্যি ভুলে গেছিস নাফিয়া..(মিতু)
——“আমার সত্যি মনে নেই, বল না আজকে কি আছে?…
——“আমি তোর সাথে কোনো কথাই বলবো না যা…
“বলেই রাত্রি মুখ গোমড়া করে গিয়ে দাঁড়িয়ে পরলো গাড়ির সামনে’!!আমি তো চরম অবাক’!!কারন আমি সত্যি বুঝতে পারছি না আজকে কি আছে’!!আমি মিতুর সামনে দাঁড়িয়ে বললামঃ
—–“কি আছে আজকে?
—–“তোর সত্যি মনে নেই…
—–“বিশ্বাস কর আমার সত্যি মনে নেই…
—–“আজকে রাত্রির বার্থডে তুই ভুলে গেলি কি করে…..
“সাথে সাথে মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পরলো আমার’!!
—–“হায় রে আজকে রাত্রির পয়দা দিবস আর আমি ভুলে গেছি…
—–“এখন কি করবি…
——“সত্যি আমার মাথায় একদমই ছিল না বিষয়টা এখন কি করমু মিতু, রাত্রি তো রেগে আগুন হয়ে গেছে….
—–“আমি কি জানি…
“হর্ঠাৎই আশেপাশে তাকাতেই একটা সুন্দর ফুলগাছ দেখতে পেলাম আমি’!!সাথে সুন্দর সাদা রঙের ফুল’!!আমি একটা ছিঁড়ে চলে গেলাম রাত্রির সামনে তারপর ফুলটা ওর দিকে এগিয়ে দিয়ে বললামঃ
—–“সরি দোস্ত ভুল হয়ে গেছে এমন ভুল আর হবে না….
—–“আমি তোর কোনো কথা শুনতে চাই না কি করে ভুলে গেলি তুই…
——“আরে সরি বললাম তো এইবারের মতো মাফ করে দে…
——“একটা শর্তে মাফ করে দিতে পারি…
——“কি শর্ত…
——-“আজকের রাতের পার্টিতে তুই আর মিতু শাড়ি পড়ে আসবি….
——“কি আবার শাড়ি….
——-“হুম…
__________________________________________
______________________
“বিকাল_৫ঃ০০টা…..
“ব্লাক শাড়ি সাথে সুন্দর করে সেজেগুজে দাঁড়িয়ে আছি আমি মিতুদের বাসার নিচে’!!কারন আমি আর মিতু দুজন একসাথে যাবো রাত্রিদের বাড়িতে’!!আর যাওয়ার আগে শপিং এ যাবো রাত্রির জন্য গিফট কিনতে হবে না…
🍁
“একদম ফুড়ফুড়ে মেজাজে আছি আমি’!!সবচেয়ে বেশি এক্সাইটিং এ আছি তিহান ভাইয়া কিছু বলবে এটা শোনার জন্য’!!সকালে ভাইয়ার হাবভাব দেখে যা বুঝলাম ভাইয়া নিশ্চয়ই আমায় প্রপোজ করেবে…
——“যদি করে উফ ভাবতেই আনন্দ লাগছে আমার’!!কখন যাবো রাত্রিদের বাড়িতে!’এই মিতুর বাচ্চায় এখনো আসছে কেন?
“ভেবেই ফোনটা হাতে নিলাম আমি’!!উদ্দেশ্য হচ্ছে মিতুকে ফোন করা’!!কিন্তু ফোন করার আগেই চলে আসলো মিতু’!!আজকে ও শাড়ি পড়েছে লাল রঙের’!!ওকে দেখেই হেঁসে বলে উঠলাম আমিঃ
—–“উড়ে দোস্ত তোরে তো সেই দেখাচ্ছে….
—–“আর তোরেও আজকে সেই লাগছে, তিহান ভাইয়া তো তোকে দেখে পাগলই না হয়ে যায়…
——“যদি হয় তাইলে তোরে ললিপপ খাওয়ামু যা…
“হাসলো মিতু’!!তারপর বললো সেঃ
——“এখন তাহলে যাওয়া যাক ডারলিং…
মিতুর কথা শুনে আমিও হেঁসে বলে উঠলামঃ
——“ওকে ডারলিং….
“তারপর দুজন মিলে উঠে পরলো রিকশায়….
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
!
#চলবে………..
[ভুল-ত্রুটি ক্ষমার সাপেক্ষ’!!আর গল্প কেমন লাগছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবে’!!]
#TanjiL_Mim♥️