সাত পাকে বাঁধা পর্ব-০৪

0
2729

#সাত_পাকে_বাঁধা
#পর্ব_০৪
#অধির_রায়

নিয়তিদের বাসায় এসে নির্বণ নিয়তির দিদি নিঝুমকে দেখে ভয় পেয়ে যায়।

এক সময় নির্বণ নিঝুমকে খুব ভালোবাসতো৷ নির্বণ নিঝুম বলতে পাগল ছিল৷ নিঝুমও নির্বণকে খুব ভালোবাসতো। হঠাৎ নিঝুম নির্বণের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে চলে যায় অন্য ছেলের সাথে৷

কিন্তু নিঝুম সেখানে বেশিদিন টিকে থাকতে পারেনি৷ ছেলেটি নিঝুমের দেহকে ভালোবেসে ছিল৷ নিঝুমের মনকে নয়৷ ছেলেটির উদ্দেশ্য সাধন হওয়ার পর নিঝুমকে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়৷ নিঝুম পতিতালয় থেকে একদিন সুযোগ বুঝে পালিয়ে আসে।

ভালোবাসা একটা পবিত্র বন্ধন। যা মনের আবেগ থেকে জেগে উঠে। ভালোবাসলে দূর থেকেও ভালোবাসার মানুষকে আগলে রাখা যায়৷ যদি কেউ তার দেহকে ভালোবাসে তাহলে সে ভালোবাসার কোন মূল্য থাকে না৷

[ আমাদের দেশে বর্তমানে এমন অনেক মেয়ে আছে যারা মিথ্যা ভালোবাসায় ফেঁসে যাচ্ছে। সকল আপিদের বলছি যে ছেলে তোমার মনকে নয় তোমার দেহকে ভালোবাসে তাকে বিশ্বাস করে দেহ দিবে না৷ নারীর সতিত্বই নারীর অমূল্য সম্পদ।দেহের বিনিময়ে ভালোবাসা টিকে থাকে না ]

— নিঝুম নিয়তির কাছে এসে কি রে আমার সাথে পরিচয় করিয়ে দিবি না৷

— দিদি ওর নাম,,

নির্বণ থামিয়ে দিয়ে

— তার কোন দরকার নেই নিঝুম। তুমি ভালো করেই জানো আমি কে? আমি তোমার ক্লাসম্যাট ছিলাম৷ চল নিয়তি যাওয়া যাক৷

নির্বণ আর নিয়তি এক পা সামনে বাড়াতেই নিঝুম নির্বণের হাত ধরে ফেলে।

— নিয়তি তুই রুমে যা। আমার কিছু কথা আছে নির্বণের সাথে?

নিয়তি প্রথমে নির্বণের চোখের দিকে তাকায়। নির্বণ চোখের ইশারায় যেতে বলে। নির্বণের সম্মতি পেয়ে নিয়তি চলে যায়।

নিঝুম নির্বণের হাত ধরে এক প্রকার টানতে টানতে ছাদে নিয়ে আসে।

— এসব কি? (নিঝুম)

— কোন গুলো?

— তুমি এখনও নিয়তিকে বাড়ি থেকে বের করে দাওনি কেন?

— নিয়তি কোন দোষ করে নাই যে তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিব৷

— তোমার ফোনে কিছু ভিডিও পাঠানো হয়েছে৷

ভিডিও এর কথা শুনে নির্বণ অবাক হয়ে যায়। ভিডিওর কথা নির্বণ কাউকে বলে নি৷ তাহলে নিঝুম জানল কিভাবে? তার মানে নিঝুম আমার সাথে সংসার করতে পারেনি তার জন্য এমন করেছে।

— তোমার ফোন দাও?

— ফোন দিয়ে কি করবে?

— আগে তুমি আমার কথার কোন অবাদ্য হওনি আজ কেন হচ্ছো?

— আগে আমি তোমাকে অন্ধের মতো ভা,, বলেই থেমে যায়।

— ভা কি?

— কিছু না৷

আমার বুঝতে আর বাকি নেই৷ ভিডিওগুলো তুমিই পাঠিয়েছো৷ আমি এখন নিশ্চিত নিয়তি কোন দোষ করেনি। নিয়তির সাথে আমি অনেক অন্যায় করেছি৷ আর ভিডিওটা এডিং করা এখন বুঝতে বাকি নেই। নির্বণ মনে মনে এসব বলছে৷

— ফোন দিতে বলেছি ফোন দাও?

— ফোন আমার কাছে নেই৷ ফোন নিয়তির কাছে?

— তুনি তোমার ফোন কোনদিন কাউকে ধরতে দাওনি শুধু আমি ছাড়া। আজ নিয়তিকে তুমি ফোন ধরার পারমিশন দিয়ে দিছ।

— হ্যাঁ দিয়েছি। কারণ নিয়তি হলো আমার অর্ধাঙ্গী। তার সাথে সাত পাক ঘুরার সময় কথা দিয়েছিলাম তার সব সমস্যা সমাধান করব।

— তাহলে ফুলসজ্জা করনি কেন?

— কে বলেছে? আমাদের মাঝে কোন দূরত্ব নেই৷

— কত সুন্দর গুছিয়ে মিথ্যা কথা বলতে পার? আমাকে তোমার কাঁচা খেলোয়াড় মনে হয়৷ তোমার সব খবর আমি রাখি।

— কিসের খবর?

— বোকারা সব সময় বোকা থেকেই যা।তাহলে দেখ।

নিঝুম তার ফোন বের করে নির্বণের সামনে দাঁড় করায়। নিঝুম নির্বণের রুমে ক্যামেরা লাগিয়ে রেখেছে৷ যার ফলে নিঝুন সব কিছু জানতে পারে৷ বাসর রাতে বেল্ট দিয়ে মারা৷ নিয়তিকে বেলকনিতে ফেলে আসা৷ সব দেখা যাচ্ছে।

— এসব কি? উঁচু স্বরে বলে।

— আস্তে কথা বলবি মিঃ নির্বণ চৌধুরী।

–তুমি আমাকে চোখ রাঙিয়ে তুই করে কথা বলছো?

— আবাক হবার কিছু নেই৷ তোকে আমি বলেছিলাম আমাকে বিয়ে করতে৷ কিন্তু কি করলি আমাকে তাড়িয়ে দিলি৷ বললি যে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে পারে। কাল সে আমার থেকে ভালো কাউকে পেলে ছেড়ে যাবে না তার কোন গ্যারেন্টি নেই।

আমি তোকে বলছি তুই আমাকে এখন ছেড়ে দিলেও আমি তোকে ছেড়ে দিব না। তোর জীবন আমি ছারখার করে দিব৷ এই জন্য তোর সাথে নিয়তির বিয়ে ঠিক করি৷

— তুমি এত নিচ জানা ছিল না৷

— আরে আমার কথা তো এখন শেষ হয়নি৷ জানার পর তুই মরতে চাইলেও পারবি না মরতে।

— তোকে ভিডিওগুলো আমিই পাঠিয়েছি৷ কেন জানিস?

— কেন? অবাক হয়ে নির্বণ বলে।

— যাতে তোর আর নিয়তির মাঝে কিছু না হয়৷ নিয়তিকে কিভাবে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে হবে সেটা আমার ভালো করে জানা আছে।

নির্বণ আর সহ্য করতে পারল না নিঝুমের কথা শুলো৷ নিঝুমের মুখের উপর ঠাসসস ঠাসসস করে দু্ই তিনটা চর বসিয়ে দিল। চর গুলো এমন ছিল যে নিঝুম ছিঁটকে পড়ে যায়৷ ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরতে শুরু করে।

–নিঝুম মাটি থেকে উঠে খুব বড় ভুল করলি দেখে যা এখন কি করি৷ তুই আজ নিয়তির জন্য আমার গায়ে হাত দিলি নিয়তিকে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখিস সেটা আমিও দেখবো।

নিঝুম এক মুহুর্ত আর না দাঁড়িয়ে হন হন করে চলে যায়।

নিয়তি জানতো তার দিদি কেমন। কিন্তু তার দিদি এমন একজন বের হবে তার নিয়তির জানা ছিল না৷ তার দিদির এমন স্বভাবের জন্য বিয়ের আগে নিয়তির বাবা নিয়তিকে মামার বাড়ি পাঠিয়ে দেয়৷

নিয়তি এতক্ষণ তাদের সব কথা শুনছিল আড়াল থেকে। নিয়তি নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছে না। তার বোন তাকে মেরে ফেলতে চায়৷ অবশ্য পারবে না কেন? যে ভালোবাসার মানুষকে ফেলে চলে যেতে পারে৷

নির্বণ ছাঁদে দোলনার রিলিং ধরে আকাশ প্রাণে চেয়ে আছে আছে৷ তার সামনে ভেসে আসছে নিঝুমের সাথে কাটানো দিনগুলো। হঠাৎ কাঁধে কারো হাতের ছোঁয়া পায়৷ চোখের জল মুছে পিছনে তাকিয়ে দেখে নিয়তি।

— নির্বণ মাথা নিচু করে তুমি? তুমি কখন আসলে এখানে?

নিয়তি মনে মনে আমাকে ভুল বুঝে আপনি আমাকে অনেক শাস্তি দিয়েছেন তার ফল পাবেন এবার৷ আমার দাগগুলো এখন যায়নি৷ হাত পায়ে ব্যথার কারণে তেমন আগেট মতো হাসি খুশি থাকতে পারিনা৷ কিন্তু আমি কিছু এখন বলবো না৷ আপনাদের বাসায় যাওয়ার পর বলব?

— আপনি এভাবে আপসেট হয়ে আছেন কেন? খাবারের জন্য আপনাকে ডাকছে।

— আমার ক্ষুধা নেই৷

— বললেই হলো। আপনি দুপুরে তেমন কিছু খাননি৷ আচ্ছা আপি আপনাকে কিছু বলেছে?

— না কি বলবে? বহুদিন পর দেখা তাই দুই বন্ধু মিলে কিছু কথা বললাম।

সালা তাও তুই মিথ্যা কথা বলে যাচ্ছিস৷ তুই ভাবছিস আমি কিছু জানি না আমি সব জানি৷ এবার দেখ এই নিয়তি কি করতে পারে।(মনে মনে)

— কিন্তু দিদি কান্না করতে করতে চলে গেল।আমি সিঁড়ি দিয়ে আসার সময় দেখলাম।

— জানি না৷ এখান থেকে তো ভালোভাবে চলে গেছে। আমার মনে হয় তোমার দিদির কোন কিছু পরেছে৷

— আবারও মিথ্যা কথা৷ আমি আপনার পেট থেকে সত্য কথা বের করেই ছাড়ব?(মনে মনে) ওঁকে মা বাবা খাবার টেবিলে আপনার জন্য ওয়েট করতেছে৷

— ওঁকে যাওয়া যাক।

নির্বণ আগে আগে চলে যাচ্ছে। পিছু পিছু নিয়তি চলে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বণ কিছুতেই পিছু তাকাচ্ছে না৷ যা নিয়তির সহ্য হলো না৷ নিয়তি ইচ্ছা করেই পড়ে যায়।

— “আউচ”

পড়ে যাওয়ার শব্দে নির্বণ পিছনে ফিরে তাকায়৷ নিয়তি নিচু বসে পা ধরে বসে আসে৷ নির্বণ নিয়তির দিকে তেড়ে আসে।

— কিভাবে পড়লে? দেখে চলতে পার না৷

— আসলে খেয়াল ছিল না৷ হাত পায়ে ব্যথার জন্য তেমন হাঁটতে পারছি না।

— হাত পায়ে কিসের ব্যথা?

— না থাক। আপনার জানতে হবে না৷

— কি হয়েছে সেটা বলবে এখনই৷ তুমি নিশ্চয় জানো আমি ঘুরিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি না৷

— বেল্ট দিয়ে আঘাত পাওয়ার পরও কিভাবে ভালো থাকি৷ হাত পা জখম হয়ে আছে৷ আগে তেমন বুঝতে পারিনি৷ কিন্তু এখন বুঝতে পারছি অনেক ব্যথা লাগছে৷

নির্বণ আর কোন কথা না বাড়িয়ে নিয়তিকে কোলে তুলে নেয়।

— কি করছেন টা কি? নামান আমাকে?

— কোন কথা না বলে চুপ করে থাক?

— এটা আপনার বাড়ি নয়৷ এটা আমার বাড়ি৷ আমার বাড়ির লোকজন কি মনে করবে?

— আমি আমার বউকে কোলে নিয়েছি কে কি করবে? যে যায় বলুক আমার কোন যায় আসে না৷

— আপনি একটা অভদ্র লোক।

— আর একটা কথা বললে সেটা তুমি শুনতে পাও না৷ নাকি বুঝার চেষ্টা কর না৷ আর একটা কথা বললে সিঁড়ি থেকে ফেলে দিয়ে মেরে ফেলব৷

নিয়তি ভয় পেয়ে নির্বণের গলা জড়িয়ে ধরে৷ নির্বণ মুচকি হেঁসে নিয়তিকে কোলে নিয়ে এগিয়ে যায়।

জানি আমার অন্যায়ের কোন ক্ষমা হবে না৷ তবু্ও তোমার সাথে আমি যা অন্যায় করেছি ভালোবাসা দিয়ে সে অন্যায় শুধরিয়ে নিব৷ তোমার উপর কোন বিপদ আসতে দিব না৷ তুমি জান না তোমার দিদি নিঝুম কেমন মানুষ। তোমার দিদি তোমাকেও ছাড়তে চায় না৷ তোমাকে কেড়ে নিতে চায়৷ কিন্তু আমি তোমার কোন ক্ষতি হতে দিব না৷ শেষ নিঃশ্বাস অব্ধি তোমাকে রক্ষা করে যাব৷

— একি নিয়তি তোর লজ্জা বলতে কিছু নেই৷ তুই বাবা মায়ের সামনে তুই নির্বণের কোলে উঠে আছিস (নিঝুম)

— আসলে নিয়তির শরীরটা তেমন ভালো না৷ তার হাঁটতে একটু কষ্ট হচ্ছিল তাই নিয়তিকে এভাবে নিয়ে আসা। নির্বণ নিয়তিকে কোলে থেকে নামিয়ে এই কথা বলে

— নিয়তি তোমার কি হয়েছে? (নিয়তির মা)

— মা তেমন কিছু না শুধু ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু উনি আমার কোন কথা না শুনেই আমার সাথে এমন করেছে। (নিয়তি)

— ওঁকে খেয়ে নাও৷ সারা রাত ভর ফোন চালাতে ঘুম না এসে পারে বল সোনা। (নিয়তির মা)

— আজ থেকে নিয়তির ফোন ইউজ করা বন্ধ। নির্বণ তুমি খেয়াল রাখবে যেন নিয়তি ফোন ইউজ করতে না পারে।

— ওঁকে বাবা।

🍃

খাবারের সময় নিয়তির বাবা নির্বণকে একে একে অনেক প্রশ্ন করে যাচ্ছে। কিন্তু নির্বণ মুখ ফুটিয়ে তেমন কিছু বলছে না৷ শুধু হ্যাঁ হুম করে যাচ্ছে। নির্বণ জলদি খাবার শেষ করে নিয়তির রুমে চলে আসে৷

আরে আগে জানলে বিয়েই করতাম না৷ এত প্রশ্ন কেউ করে। মেয়ের বাবা হয়েছে তাই বলে মাথা কিনে নিয়েছে৷

কোন বাবাই তার মেয়েকে খারাপ ছেলের হাতে তুলে দিতে চায় না৷ যদিও মেয়ের ভুলে মেয়ে খারাপ ছেলের সাথে চলে যায়৷ বাবা কিন্তু সেই ছেলেকে ভালো পথে নিয়ে আসার অনেক চেষ্টা করে। তেমনি নিয়তির বাবা নির্বণকে তার বিষয়ে কিছু প্রশ্ন করেছে৷ যদিও বিয়ের আগে সব জানত তাও প্রশ্ন করেছে।

নিয়তি রুমে এসে দেখে নির্বণ রুমের মাঝে পায়েচারী করছে৷ আর বিরবির করে কথা বলছে৷ নিয়তির ধারণা নির্বণ তার দিদি নিঝুমের বাজে স্বভাব নিয়ে কথা বলছে৷ নিয়তি রুমে প্রবেশ করে

— এভাবে পায়েচারী করছেন কেন?

— খাবার হজম করছি৷

— তাহলে মুখ থেকে কিসের বুলি বের হচ্ছে৷

— কিছু না৷ অনেক রাত হয়েছে তুমি শুয়ে পড়তে পার।

— আপনি কোথায় ঘুম আসবেন৷

— আমি সোফায় ঘুমাতে পারব।

— আমি কাউকে অবিশ্বাস করে তাকে রমের বাহিরে বা সোফায় ঘুমাতে দিতে চায় না৷ এটা তো চৌধুরী ভিলা না৷ এটা মমতা ভিলা। সবার মাঝে মমতা কাজ করে।

— এই মেয়ে কি বলতে চাও? উঁচু গলায় বলে।

— আপনার বেড ছোট হতে পারে কিন্তু আমার বেড অনেক বড় শেয়ার করতে পারেন। যদি সমস্যা হয় তাহলে চলে যাচ্ছি৷

— কোথায় যাবে? আর আমাকে অপমান করা হচ্ছে।

— গেস্ট রুমে। আপনাকে অপমান করা হচ্ছে না৷ ভুল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যে অন্যের কথায় নিজের বিয়ে করা বউকে অপমান করতে পারে। তাকে কিছু বলতে চায়না।

নির্বণ নিজের ভুল বুঝতে পেয়ে বেডে শুয়ে

— কোথাও যেতে হবে না৷ এখানেই তুমি ঘুম আসবে৷ আমাদের রুমের বিষয় যেন বাহিরে না যায়।

🍁
নির্বণ দক্ষিণ মেরু নিয়তি উত্তর মেরুতে শুয়ে আছে। মাঝ খানে অনারাসে ভারতবর্ষ জায়গা করে নিয়ে পাবে৷ মানে ভারত বর্ষের সকলেই থাকতে পারবে।

সকাল বেলা একে অপরকে আষ্টেপৃষ্টে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে।

চলবে,,,,