#সে_আমার_মায়াবতী
#লেখনিতে_ঈশা_ইসলাম
#পর্ব_৬
“সেই কখন থেকে ভেবেই চলেছি কে ছিলো লাইব্রেরি রুমে, এতটুকু বুঝতে পেরেছি তার উদ্দ্যেশ্য খারাপ নয়, কিন্তু কে ছিলো সে?
“আচ্ছা মায়া তোমার সাথে ওই হ্যান্ডসাম ছেলেটা কে ছিলো?
“তুবার কথায় আমার ধ্যান ফিরে পাই, আমিও উৎসক চোখে তাকাই ব্যপার টা জানার জন্য,
” আবির ভাই, তিনি আমার ফুপির ফুপির ছেলে, ( মুখটা মলিন করে)
” আমি বুঝতে পেরেছি মেয়েটা মন থেকে কস্টে আছে, তাই মুড ডাইভ্রার্ট করার জন্য বললাম
” বেশ তো তুবাও ফুপির ছেলের সাথে প্রেম আর তুমিও ফুপির ছেলের সাথে প্রেম আচ্ছা তোদের বিয়ে কবে খাবো বল তো,
” এই কথা বলাতে দুই জন একসাথে আমার দিকে চোখ পাকিয়ে তাকিয়ে থেকে বলল
” তাই না খুব শখ, খাওয়াচ্ছি তোকে বিয়ে ( এক সাথে)
“এই না বলেই শাড়ি তুলে দৌরাতে লাগলাম, এখন পুরোপুরি সন্ধা তাই কেউ নেই ভার্সিটি প্রাংগনে তাই আমার হালকা দৌরে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না
” একসময় দৌরাতে দৌরাতে হাপিয়ে গেলাম, ওরা এসেই আমাকে জরিয়ে ধরলো,আর বললো
” তোকে মারতে হলে আমাদের ফ্রেন্ড ঈশু কে কোথায় পাবো, ( বলেই দুই জন হেসে দিয়েছে)এর মাঝে তুবা হটাৎ বললো,,
” ঈশা অন্যদিন হলে তো ক্লাস শেষ না হতেই পালাই পালাই করতি আজ তো সন্ধা হয়ে এলো তুই যাবি না, নাহলে চল আমরা ফুচকা খেয়ে আসি ( উচ্ছাশিত কন্ঠে)
” তুবার কথা শুনেই মনে পরে গেলো সকালের ঘটনা, চোখের কোনে অশ্রুকনা ভির করলো, কারন সকালে, শাড়ি পরে বের হওয়ার সময় মাকে রান্না ঘরে দেখে হাসি মুখে কিছু বলার পূর্বে মা বললো
” আজকে তোমার বোন রাইসাকে দেখতে ছেলে সহ তার বাড়ির লোকজন আসবে, আশা করছি তুমি সন্ধার পর বাড়িতে আসবে কারন তারা সন্ধায় আসবে,
“” হটাৎ চোখ গেল রাইসার দিকে, দেখি রাইসা ফেস প্যক লাগিয়ে শসা খাচ্ছে, শসার বাকি অংশ মুখে পুরে নিয়ে বললো
” প্লিজ ঈশা অন্তত্য আজকে লেট করে আসিস, দেখা যাবে শেষে তোর জন্য আমার বিয়েটাই না ভেংগে যায়, দেখ ছেলে কোটিপতি, ডেশিং ছেলে খুজলেও পাওয়া যায় না, আর সেখানে ভাগ্য নিজে আমাকে ধরা দিয়েছে, প্লিজ তুই আসিস না, আসলে নিশ্চই ছেলের বাড়ির লোক যদি তোকে দেখে না করে দেয় বিয়েতে আর সবচেয়ে বড় কথা হলো যদি আমার বদলে তোকে পছন্দ করে, দেখ আজ একটা কথা বলি তুই শ্যমলা হলেও নজর কারা তাই প্লিজ আজ আসিস না,,
” এতক্ষনে আমার কাছে বিষয়টা ক্লিয়ার হলো, ঠোঁটের কোনায় তাচ্ছিল্যর হাসি ফুটে ওঠলো, আমি নিঃশ্বাস নিয়ে বললাম,
“মা চিন্তা করো না, আমি আসবো না, তুমি যদি বলো সারারাত ও বাহিরে কাটাতে আমি বিনা দ্বিধায় তাও পারবো মা
” কথাটা বলে এক মুহুর্ত দেরি না করে রিকশা নিয়ে ভার্সিটি চলে এসেছিলাম
( আশা করি আমার পাঠক / পাঠিকারা লাস্টের ২ লাইন পরবে))
দুপুরের ঘটনার পর আমরা প্লেন করলাম আজ মেলায় যাবো কারন শুনেছি ভার্সিটি থেকে একটু দুরেই মেলা হচ্ছে, তাই আজ যেহুত সময় আর আমরা একসাথেই আছি তাই ভাবলাম ঘুরে আসি।
” এই আমি না ফুচকা খাবো সবার আগে, যানো ছোট ভাইয়া এসব বাহিরের জিনিস খেতে দিলেও বড় ভাইয়া বলবে এসব নোংরা ভালো না,চল রেস্টুরেন্ট এ নিয়ে যাই, কিন্তু আমার তো ফুচকা খেতে এত্তত্ত ভালোবাসি,
” আমি এই কথা শুনে বললাম,
” তোমার ভাই তো একটা গম্ভির লাটসাহেব, এ্য আসছে রে বাহিরের জিনিস নোংরা, এই ওনার সাথে থাকো কিভাবে হ্যা, আল্লাহ জানে ওনার বউ কিভাবে থাকবে?
” আমার কথা শুনে মায়া তুবা চোখ ছোট ছোট করে বললো,
“ও তাই বুঝি, ( দু-জন একসাথে)
” হ্যা কিন্তু তোরা এই ভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
” পেয়ে গিয়েছি( দু-জন চিল্লিয়ে)
” কি পেয়েছিস এই খালি মাঠে?
” ভাবিইইইই
” এ্য ভাবি? কার ভাবি, কে ভাবি, আর হটাৎ করে এই ভাবি এলো কোথা থেকে
” সেটা পরে জানবে আগে চলো মেলায় যাই সন্ধা ৬ টা বাজতে চললো।
” মায়ায় কথায় আমরা প্রায় ২০ মিনিট এর পথ হেটে পারি দিয়ে অবশেষে মেলায় এলাম,যদিও মেলার পথ ১০ মিনিট এর কিন্তু এরা মনে হয় পাচঁশত ছবি তুলেছে, সাথে আমাকেও তুলিয়েছে।
মেলায় ঢুকেই আমরা সব স্টল ঘুরতে থাকলাম, তিন বান্ধবি তিন জনকেই চুড়ি কিনে পরিয়ে দিলাম, এখন আপাদত আমাদের তিনজনের দু-হাত ভর্তি কাঁচের চুড়ি, আমরা ঘুরে মেলার বাহিরে এসে ফুচকার দোকানে বসলাম, কারন ভিতরে অনেক ভির আর এমনিতেও এই দোকানে সামিয়া আপুর সাথে এসে অনেক বার ফুচকা খেয়েছি, তাই এসেই বললাম,
” মামা ৩ প্লেট ফুচকা দিবেন,!
” ঝাল দিয়ে,
” আম্মারা একটু বহো আমি এক্ষন দিতাছি,
” আচ্ছা মামা
“এর মাঝেই আমি বলে উঠলাম,
” শোন আমার ছবি গুলো কার ফোনে
“ঈশা আমার ফোনে,, আমি বাসায় গিয়ে তোমাকে সেন্ড করে দিবো, ওকে
” ওকে,
” এর মাঝেই আমাদের ফুচকা চলে এলো, আমরা খাওওয়া শেষ করতেই বিল নিয়ে যুদ্ধ লেগে গেলো, আমি বলছি আমি দিবো, মায়া, তুবা বলছে ওরা দিবে, এর মাঝেই একটা হাত এসে পাচঁশত টাকার নোট ধরিয়ে দিলো দোকানি মামার হাতে, আমরা তাকিয়ে দেখলাম তুহিন ভাইয়া
” এই এই আপনি এখানে কি করছেন আর টাকা টা আপনি কেন দিলেন,
” বারে শালিরা এসেছে খাওয়াবো না, আর এমনিতেও ওরা তোমার ফ্রেন্ড মানে আমার বোন,
” ভাইয়ার কথা শুনে আমি আর মায়া মুচকি হাসলাম
” ম্যডাম এবার কি বাড়িতে যাবেন নাকি তুলে নিয়ে যাবো,,
” এই আমি আপনার সাথে যাবো কেন?
” আচ্ছা তুমি বলো তো এখানে কিন্তু লোকজন কম নেই আর লাইটিং মমম হ্যা এখন যদি আমি ভুল করে লিপ কিস করে বসি তুমি কি রাগ করবে ( ইনোসেন্ট ফেস করে)
” অসভ্য
” বলেই তুবা মুখ ঢেকে নিলো আর আমরা দাড়িয়ে মুখ টিপে হাসছি,,
” আচ্চা বায় শালিকারা বলেই জিজু বাইক স্টার্ট দেয়ার সময় দোকানি বলে উঠে
” স্যার আমার কাছে ভাংতি নাই!
” ওটা আপনি রেখে দেন মামা, আর আপনার আম্মাদের সাথে আমাকেও বাবা বললে খুশি হবো, ( মুচকি হেসে)
” আল্লাহ আপনাগোরে সুখি রাহুক
” আমার সুখ সন্ধানি সাথে থাকলে আমি আজিবন সুখি,।
” তুহিন ভাইয়ার কথায় তুবা মুচকি হেসে পেছন থেকে কাধে হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে, আমরাও মুচকি হেসে বিদায় দিলাম,
” এর মধ্যেই দেখলাম গাড়ির পাশে সকালের সেই আবির নামের লোকটা দাঁড়িয়ে এক দৃস্টি তে মায়ার দিকে তাকিয়ে আছে, আমিও বুঝলাম ব্যপারটা,
হুট করেই লোকটা এসে মায়ার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় বলে উঠলো
” শালিকা আমার বউ কে নিয়ে গেলাম, বউ আমার বড্য অভিমানি,এই পুরুষ টা যে তার দহনে জ্বলে যাচ্ছে সেটা কি সে জানে,
” আমি হেসে দিয়ে ওদের কে বেস্ট ওফ লাইক জানালাম,,
“এর মধ্যেই শুনলাম মায়া হাত ছাড়াতে বলছে কিন্তু আবির ভাই না শুনে কোলে নিয়ে গাড়িতে চড়িয়ে দিলো।
” আমি দাঁড়িয়ে থেকে কি করবো হাটা শুরু করলাম, এখন কেমন শুন্য শুন্য লাগছে, আসলে এতক্ষন ওদের সাথে থেকে ভুলেই গিয়েছিলাম আমার ও বাড়ি আছে, কিন্তু মানুষ গুলো খুব কম,
——————————
” এখন বাজে রাত ১০ টা কিন্তু আমি বসে আছি মিঃ চৌধুরীর গাড়িতে, আরাভ চৌধুরীর সাথে তার পাশের সিটে বসে আছি, একটা ফোন কল আমাকে আজ ওনার কাছে নিয়ে এসেছে নাকি ভাগ্যের খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে, কি হচ্ছে আমার সাথে!!
চলবে।