#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal
#পর্ব_16
গ্রাম থেকে বাড়ি ফিরেছে বেশ কয়েক মাস হল,এখন অনুর ভয় দূর হয়েছে অন্য পরিবেশ গিয়ে,, অনু এখন ক্লাস ইলেভেনে পড়ে,, সে এখন সবই বুঝতে শিখেছে, বিয়ে সংসার স্বামী ভালোবাসা, বড় হওয়ার সাথে সাথে তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনে দিনে,, অনু এখন অরিন্দমের থেকে দূরে দূরে থাকে তার যেন এখন বেশি বেশি লজ্জা করে কাছে যেতে, অরিন্দম এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ ক্ষেপে আছে,তার বউয়ের হঠাৎ করে এমন চেঞ্জ হয়ে যেতে দেখে সে বিরক্তিকর হয়ে আছে,,, সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না অনুর চেঞ্জ হয়ে যাওয়াকে নিয়ে,তার সেই ছোট বউ জোর করে জড়িয়ে ধরে আদর করতে বলা তাকে যখন তখন ভয়ঙ্কর কথা বলে ছোটোখাটো হার্ট অ্যাটাকে করিয়ে দেওয়া কামড় দেওয়া সবকিছুকে চরমভাবে মিস কচ্ছে অরিন্দম, কয়েকদিনে ও এতটা পরিবর্তন,,এখন ভাবছে গ্রামে না গেলেই হত, গ্রামে গিয়ে সবার সাথে মিশে বেশি বুঝতে শিখে গেছে, আর ক্লাসের মিলি-তিশা তো আছেই, অনু তার কাছে আসতে চায়না এটা দেখে তার মনের ভয় ও হচ্ছে অনুর মনে অন্য কেউ নেই-তো যার কারণে ওর কাছ থেকে দূরে থাকতে চায়?রাত্রে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে থাকতে চাইলেও অনু ওর কাছ থেকে সরে যেতে চায়,, এইসব নিয়ে অরিন্দম একটু কষ্ট পাচ্ছে, কিন্তু অনুর সেদিকে কোন খেয়ালই নেই ও যেন দিনে দিনে লজ্জায় মরে যাচ্ছে।।
_______________
অনু ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে বাইরের ঝিলের দিকে তাকিয়ে দেখছে আর পুরনো দিনের কথা মনে করছে, পুরনো দিন ঠিক নয়, তবুও এক দেড় বছর আগের, কিভাবে তার বরবাবুকে জোর করে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে শুরু করে ঘুমায় তাকে যখন তখন চমকে দেওয়া এই সব ভেবে ও নিজে নিজেই হেসে ওঠে,, আজও তার বরবাবু তার ওপর রাগ করে চলে গেছে, রোজ অফিসে যাওয়ার আগে ওকে জড়িয়ে ধরে মন ভরে আদর করে যাওয়া অরিন্দমের অভ্যাস, কিন্তু ইদানিং অনু ওর কাছ থেকে একটু দূরে থাকে, প্রতিদিন অরিন্দম ওকে জোর করে আদর করে তারপর যায়, কিন্তু আজকে অফিসে যাওয়ার সময় ও যখন অনুকে খুঁজছিল অনু তখন ওয়াশ রুমে ঢুকেছিল অরিন্দম অনেক বার করে বাইরে আসতে বলেছে কিন্তু অনু আসেনি তাই সে রাগ করে চেয়ারে একটা লাথি মেরে বেরিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে বেরিয়ে গেছে অনু তাকে রাগতে দেখে হেসে গড়াগড়ি খেয়েছে ওর খুব ভালো লাগে অরিন্দম কে এরকম জ্বালাতে!!
_______________
_________
মিলি ,তিশা অনুরাগ আর ও খুব ভালো ফ্রেন্ড হয়েছে, অনুরাগ এখনো নিজের মনের কথা অনুকে বলতে পারিনি,, অনু অনুরাগের সাথে কথা বলে সে বিষয়ে অরিন্দম কিছু জানেনা,অনুরাগ অনেক চেষ্টা করছে অনুর সাথে যে যায় সেটা ওর কে হয় জানা কিন্তু মিলি তিশা কেউ কিছু বলছে না!
___________________
__________
ঘড়িতে রাত নয়টা,
অরিন্দম অনেক আগে অফিস থেকে বাড়ি ফিরছে সে সোফায় বসে ল্যাপটপে কাজ করছে, অনু বইয়ের দিকে একবার করে তাকাচ্ছে আর অরিন্দমের দিকে তার বরবাবু যে তার উপর ভীষণ রেগে আছে, এখন তাকে যে রাগ ভাঙ্গাতে হবে,অনু একটু খুকখুক করে কেশে উঠে অরিন্দম কে বলল,
______”বরবাবু তোমার কি হয়েছে?”
অরিন্দম একবার ওর দিকে তাকিয়ে আবার ল্যাপটপ দিকে তাকিয়ে অভামানী সুরে বলল,,
______একজন এখন বড় হয়ে উঠেছে, আমার কাছে আসতে চায় না এখন করে, আমার থেকে পালিয়ে পালিয়ে বেড়ায়,,আমাকে আর ভালো আর কিছু বলার আগে অনু ওর সামনে এসে বসলো, তারপর ওর দু গালে হাত রেখে আদুরে গলায় বলল,,
______আমার বরটা রাগ করছে?আচ্ছা বাবা সরি, আর কোনদিন এরকম হবে না, তুমি প্লিজ রাগ করোনা!
অরিন্দম কিছু বললো না ল্যাপটপের স্ক্রিনে দিকে আবার তাকায়,অনু ল্যাপটপ টা ঠাস করে বন্ধ করে দিয়ে চোখ লাল করে বলল,,
_______ছাদে যাব আমাকে ছাদে নিয়ে চলো,
অরিন্দম ওর কথার তোয়াক্কা না করে বলল,
_______তুমি যাও আমাকে কেন লাগবে?
অনু উঠে দাঁড়িয়ে ভ্যাঁ ভ্যাঁ করে কেঁদে ওঠে বলল ,,
______যাবে না তো? তুমি আর আমাকে ভালোবাসো না।।
অরিন্দম আর যাই করুক অনুর চোখের জল সহ্য হয় না তার তাই উঠে দাঁড়িয়ে যত্ন করে অনুর চোখের জল মুছে দিয়ে বলল,
______যাব কিন্তু প্রমিস করো আজ যেমন করলে এরকম আর কোনদিন করবে না। অনু মুচকি হেসে মাথা নাড়ল,, তারপর অরিন্দম ওর হাত ধরে ছাদে নিয়ে গেল।।
_____________
ছাদে দোলনায় অরিন্দমের কোলে বসে অনু অরিন্দমের গলা জড়িয়ে ধরে আছে,, অরিন্দম আকাশের দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে,মন এখন ঠিক হয়ে গেছে,,, তার পুচকি বউ আগের মতো জেদ করছে,, তাছাড়া এটা ওর অভ্যাস হয়ে গেছে যখনই মন হয় দুজন এসে ছাদে বসে থাকে, অনেকটা সময় পর অনুর মাথায় একটা দুষ্ট বুদ্ধি আসলো অরিন্দম কে জ্বালানোর জন্য ওর ওই বোকা বোকা ফেস দেখতে অনুর ভালো লাগে, তাই অনু অরিন্দম কে বলল,,
______”বেবি ক্যান আই কিস ইওর লিপ্স?”
অরিন্দম চমকে উঠে চোখ বড় বড় করে অনুর দিকে দেখে, অনু মিটিমিটি হাসছে, অরিন্দম কিছুক্ষন পর বুঝতে পারলো নিশ্চয়ই টিভি থেকে এটা শিখে ওর সাথে অ্যাক্টিং করছে,, আর এই কথাটার মানে হয়তো জানেই না,, তাই অরিন্দম ও মাথা নেড়ে হ্যাঁ বলল,, ও বুঝতে পারছে ও আজ আবার কামড় খাবে আর একটা গালে,,অনু মুচকি হেসে অরিন্দমের মুখের কাছে ঝুকে গেল তার লাল ঠোঁট জোড়া এক দৃষ্টিতে দেখতে থাকে!! অনুকে অরিন্দমের ঠোঁট জোড়া বেশি বেশি করে টানে সবসময়,, তার কি হল সে নিজেও জানে না অরিন্দম লাল ঠোঁট জোড়া দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকে কিছুক্ষণ,, তারপর হঠাৎ করেই চোখ বুজে অরিন্দমের ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট হালকাভাবে স্পর্শ করে ফেলে,, অরিন্দম চমকে উঠে অনুর দিকে তাকায়,অনু ব্যাপারটা বুঝে চোখ খুলে ফ্যালফ্যাল করে অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে থাকে বেশ কিছুক্ষণ,,,, অরিন্দম যেন অবাক এর শেষ পর্যায়ে চলে গেছে, অনুর এবার ভীষণ লজ্জা পাচ্ছে সে উঠে আসছে নিলে অরিন্দম ওর হাত ধরে আবার কাছে টেনে নেয়,এক দৃষ্টিতে অনুর দিকে তাকিয়ে থাকে আর অনুর লজ্জায় মুখটা পুরো লাল হয়ে উঠেছে,অরিন্দম অনুর লজ্জা মাখা মুখটা দেখে যেন ঘোরের মধ্যে চলে যাচ্ছে,অনু অরিন্দম কে এমন ভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে, কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,,
________ বরবাবু আমাকে ছাড়ো আমি নিচে যাব,,,,, অরিন্দম অনুকে আরো কাছে টেনে নিয়ে কপালে কপাল ঠেকিয়ে বলল,
_____আমাকে বারবার এমন উতলা করতেই ভালো লাগে তোমার? আমার মাথা নষ্ট করে তুমি বারবার আমার কাছ থেকে পালাবে সেটা তো হয় না টিয়াপাখি বলে ওর মুখে ফু দেয়,,,,,,,,
___________অনু চোখজোড়া বন্ধ করে নেয় তার যেন অরিন্দমের এই মাতাল করা কন্ঠে প্রথমবার এক আলাদা শিহরণ বয়ে যাচ্ছে সারা শরীরে, তার সারা শরীর অসম্ভব রকমের কাঁপতে শুরু করে দিয়েছে ঠোঁট জোড়া বেশি কেঁপে কেঁপে উঠছে অরিন্দম যেন আরো বেশি মরিয়া হয়ে পাগলের মত ঠোঁট জোড়া দেখতে থাকে, তার কিছুক্ষণ পর ডান হাত দিয়ে অনুর মুখটা উঁচু করে,,অনু চোখ খিঁচে বন্ধ করে আছে ,, অরিন্দম অনুর থুতনি তে একটা গভীর ভাবে ঠোঁট বসিয়ে দেয়, অনু কেঁপে উঠে দুহাতে অরিন্দমের কাঁধ খামচে ধরে,,অরিন্দম যেন নিজের মধ্যে আর নেই সে কি করছে সে নিজেও জানে না, অরিন্দম দুহাতে অনুর কোমর চেপে ধরে,অনুর গলায় মুখ ডোবার,,, অরিন্দমের এমন লোমহর্ষক স্পর্শে অনু যেনো আরো পাগল হয়ে উঠছে, ও যেন আর সহ্য করতে পারছে, কাঁপা কাঁপা গলায় অনেক কষ্টে মিহি স্বরে বলল,
______আমাকে ছাড়ো প্লিজ,, আমার অসহ্য কষ্ট হচ্ছে আমি সইতে পারছিনা, অরিন্দম দুহাতে অনুর কোমরে স্লাইড করছে আর মাঝে মাঝে চেপে ধরে নেশাগ্রস্ত কন্ঠে বলল,
__________আজ তোমাকে ছাড়ছি না টিয়া পাখিখখ,,,,,,আজ তুমি এইভাবে বসে থাকবে আমার সাথে মিশে এইখানে , আমাকে বারবার বদ্ধ উন্মাদ করে তুমি কি পাও?কেন বারবার আমাকে তোমার কাছে এতটা টেনে নাও? আমার যে তোমায় আরো বেশি করে কাছে পাওয়ার বাসনা জাগে তখন, তোমার বয়সে অজুহাত দিয়ে বারবার তুমি আমাকে আটকে রাখো!! আজ তুমি আমাকে বদ্ধ উন্মাদ করে দিয়েছো ,আজ বড্ড বেশি ভুল কিছু করে ফেলতে মন চাইছে,,,,
________অনু যেন অরিন্দমের কথায় বারবার কেঁপে ওঠেছে সারা শরীরে শিহরন বয়ে যাচ্ছে তার সারা শরীর সিড়সিড় করে উঠল, সে এখন নিজের জালে নিজেই ফেঁসে গেছে,, অরিন্দম অনুকে আরো জোরে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে একটা কামড় বসিয়ে দেয়, অনু আর সহ্য করতে না পেরে অরিন্দমের ঘারে দু হাতে জড়িয়ে কানে ঠোঁট ছুঁয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,,,
_________প্লিজ যেতে দাওওও, অনুর ফিসফিসানি মাতাল করা কন্ঠে অরিন্দম যেনো আরো মরিয়া হয়ে উঠেছে সে নিজের দু’হাত অনুর কোমড়ে বিচরন করতে থাকে,অনু আর সহ্য করতে না পেরে অরিন্দমের ঘারে নুইয়ে পড়ে, ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,,আর অরিন্দম অনুর ঘারে সেই কুচকুচে কালো তিল দিকে নেশা ভরা চোখে তাকিয়ে থেকে বেশ কয়েকটা চুমু দিয়ে ঠোঁট ডুবিয়ে বলে,,,,
__________আজ তুমি আমার মত জ্বলবে,, আমার দহনে দহন হবে তুমিও টিয়াপাখি,,, প্লিজজজ ডোন্ট মুভ,, প্লিজ,,, তুমি একটা ও কথা বলবেনা টিয়াপাখি তাহলে আজ সর্বনাশ হয়ে যাবে আমি নিজেকে সামলাতে পারবো না আর,, অন্যায় কিছু করে ফেলতে বড্ড মন চাইছে,,আর যদি বেশি মুভ করো তখন তুমিও আমাকে আটকাতে পারবে না ।।
_______অনু যেনো নিজের মধ্যে নেই সে ও যেনো একটা ঘোরের মধ্যে আছে সে অরিন্দম কে দুহাতে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে অরিন্দমের গলায় চুমু দিয়ে অরিন্দমকে আঁকড়ে ধরে বসে থাকে,,,, আর অরিন্দম ও চুপ করে অনুর ঘারে মুখ ডুবিয়ে একবার করে চুমু দিতে থাকে!
দুজনেই একটা আলাদাই নেশার মধ্যে আছে,আজ তাদের ভালোবাসা প্রথম প্রকাশ ঘটেছে,,, তাদের সুপ্ত ভাবে কাছে আসা,, একে অপরের প্রতি চাওয়া-পাওয়া প্রথম প্রকাশ করা,, দুজনেই সুপ্ত বাসনা সাক্ষী হলো, বিশাল আকাশ তার মধ্যে গোল চাঁদ তার মধ্যে হাজারো তারা তাদের আলিঙ্গনের সাক্ষী হলো।।
#চলবে
#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal
#পর্ব_17
রাতের অন্ধকার এখনো কাটেনি,তার মধ্যে ভোরের আভায় মৃদু মৃদু আলো ফুটচ্ছে, একটু শীত শীত অনুভব হচ্ছে,,, সারারাত তারা ছাদে চড়ুই পাখির বাসার আকৃতি দোলনায় বসে ছিল একে অপরকে জড়িয়ে ধরে, হয়তো অনিদ্রা কেটেছে কারোর,,অনু অরিন্দমের বুকে মাথা রেখে তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে ঘুমাচ্ছে ,,, অরিন্দম অনুর মায়াভরা মুখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে কতক্ষন তা সে নিজেও জানে না,,, তারপর সে একটা মুচকি হেসে কপালে একটা চুমু এঁকে দিল,,, তারপর ওকে কোলে তুলে নিয়ে দাঁড়িয়ে নাকে নাক ঘষে আদুরে গলায় বলল,
___________তুমি আমার জীবন টিয়াপাখি,, যাকে অনেক ভাগ্য করে পেয়েছি,,, আমার পুচকি বউ,, সবসময় এভাবেই ভালোবেসে কাছে আগলে রাখবো,, নিজের থেকে বেশি ভালোবেসে যত্নে রাখবে তোমাকে।। তুমি আমার এজীবনে চরম প্রাপ্তি,, যাকে ভগবান শুধুমাত্র আমার ঝুলিতে দিয়েছে। আমার বেঁচে থাকার অস্তিত্ব তুমি।। নিজের মনে কথা বলে ওকে নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে নিচে এসে নিজের রুমে আসতে থাকলো,,,,,, রুমে এসে অনুকে সাবধানে শুইয়ে দিয়ে কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে ওর পাশে শুয়ে অনুর গালে হাত দিয়ে হালকা হেসে আবার বলল,,,
_______আমার পিচ্চি বউটাকে কাল একটু বেশি জ্বালিয়ে ফেলেছি,,, বউ তুমি এমন এমন এক এক সময় কাজ করে ফেলো যে আমি আউট অফ কন্ট্রোল হয়ে যাই,, কিন্তু নেক্সট টাইম থেকে এমন আর কিছু হবে না,,,,আমি তোমাকে সম্পূর্ণ সময় দেবো ফিজিক্যালি ও মেন্টালি বড় হয়ে ওঠার, আমারি তো বউ এত কিসের অধৈর্য হওয়া,, অপেক্ষা তো করাই যায়,,, তুমি পাশে থাকলেই হবে আমার আর কিছু চাই না,,, বলে মুচকি হেসে অনুকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়ে!!
_______________
পাখি কিচির মিচির শব্দে, কানে আসছে অনুর ঘুম ভাঙলো, চোখ কুঁচকে থাকে বেশ কিছুক্ষণ, রাতে ঘুম ভালো হয়,তাই হয়তো চোখ খুলতে ভালো লাগছে না,, ঘুম ভাঙ্গার অনেকটা সময় পর চোখ খুললো,চোখ খুলে নিজেকে নিজে রুমেই অরিন্দমের বুকে পায়,, মাথা তুলে অরিন্দমের দিকে একবার তাকিয়ে,,,,,কাল রাতের কথা মনে পড়ে লজ্জায় মিহিয়ে গেল,,,ওর এখন লজ্জায় মাটিতে মিশে যেতে ইচ্ছে করছে, আবার নিজের মনে মনে ভাবে, এত লজ্জার কি আছে আমার বর আমি আদর করতেই পারি, বলে অরিন্দমের বুকে বাঁহাত দিয়ে আঁকিবুকি কেটে মুচকি হেসে অরিন্দমের দিকে আবার তাকালো, অরিন্দমের ঘুমন্ত মুখটা দেখতে খুব ভালো লাগছে,, বুক থেকে একটু উঠে অরিন্দমের মুখে কাছে ঝুকে গেল, তারপর কপাল থেকে ছোট ছোট চুল গুলো যত্নসহকারে সরিয়ে দেয়,,, ও জানে রোজ সকালে অরিন্দম ও যখন ঘুমায় ওকে মন ভরে আদর করে তারপরেই উঠে,, অনুর আজ মন হচ্ছে মন ভরে আদর করতে অরিন্দম কে,,, এই ভেবে চোখ বন্ধ করে একটা ছোট শ্বাস নিয়ে অরিন্দমের কপালে একটা চুমু দিয়ে,ওর দিকে তাকিয়ে দেখল উঠে গেলো কি-না,, চোখজোড়া বন্ধ তাই ও আবার দু গালে কিস করল তারপর এক দৃষ্টিতে অরিন্দমের লাল ঠোঁট জোড়া দিকে তাকিয়ে থাকে, অনু আবার অরিন্দম কে ভাল করে দেখল সে গভীর ঘুমের মত্ত তাই অনু ভাবলো হালকা ভাবে একটা ছোট কিস করলে ও বুঝবে না,, অনু চোখ বন্ধ করে একটা ঢোক গিলে অরিন্দমের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করতেই অরিন্দম অনুর ঠোঁট নিজের সাথে মিশিয়ে ধরে নেয় অনু চোখ বড় বড় করে অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে আছে, কিন্তু অরিন্দম চোখ বুজে ঘুমিয়ে আছে, অনু না পারছে সরতে আর না পারছে সে কিছু করতে,, কিছু না পেরে সে চুপ করেই থাকে,,, প্রায় অনেকটা সময় পর অরিন্দম অনুকে ছেড়ে দেয়, অনু ছাড়া পেয়ে আগের ন্যায় অরিন্দমের বুকের কাছে চলে আসে তারপর জোরে জোরে শ্বাস নিতে থাকে,,,, অরিন্দম কি জেগে আছে ভেবে আবার একবার তার দিকে তাকায় কিন্তু না সে ঘুমিয়ে আছে, অনু ভাবতে থাকে তার সাথে কি হলো?
___ আর ওই দিকে অরিন্দম মিটিমিটি হাসছে কারন সে অনেক আগেই ঘুম থেকে উঠে গেছে সে দেখতে চাইছিল তার বউ কি করে।
অনু একটু বেশি নড়াচড়া করতে অরিন্দম ঘুম ঘুম কন্ঠে বলল,,
______কি হলো বউ তুমি ইঁদুরের মত এত নড়াচড়া করছ কেনো?
অনু সামান্য চমকে উঠল অরিন্দমের ঘুম ভেঙে যাওয়া দেখে, সে তুতলিয়ে বলল,,
_____কোথায় নড়াচড়া করছি? উঠে যাব বলে তাই,, বলে ও উঠে আসতে নিলে অরিন্দম আবার কাছে টেনে নিয়ে ,
______আরেকটু শুয়ে থাকো একটু পরে উঠবে এখন তো সবে সকাল!!
অনুর যেন আরো লজ্জায় লাল নীল সবুজ হয়ে যাচ্ছে, তাই কোনরকমে উঠে খাট থেকে নিচে নেমে বলল,,
____ না আমার ঘুম আসছে না আমি ফ্রেস হবো বলে ওয়াশরুমে দিকে যেতে থাকে, অনুকে আরো লজ্জায় ফেলবে বলে অরিন্দম চেঁচিয়ে বলে,,
____বউ দাঁড়াও!
অনুও বাধ্য মেয়ের মত দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকাল,
অরিন্দম ওর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলল,,
____ তুমি কি কিচেনে গিয়েছিল?
অনু দু দিকে মাথা নেড়ে না বলল,,
অরিন্দম দুষ্টুমি করে বলে,
_____তাহলে মধুর এল কোথা থেকে?
অনু যেন অবাক হলো অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল,
_____সকাল সকাল মধু কোথায় পেলে তুমি?
অরিন্দম নিজের ঠোঁটে বৃদ্ধা আঙ্গুল দিয়ে বলল,,
_____ আমার ঠোঁটটা যেনো মধুর মত মিষ্টি হয়ে আছে!
কথাটা শুনে অনু চোখ বড় বড় করে অরিন্দমের দিকে তাকায় তারপর ও মানে বুঝতে পেরে লজ্জায় দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় অরিন্দম অনুর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে হেসে বলল,,
_______”আমার পুচকি বউ দিন যেন আরো বড় হয়ে যাচ্ছে!”
________________
ঘড়িতে সকাল 10:30,,
অরিন্দম কে আর সকালে উঠে রান্না করতে হয় না, ও বাড়িতে একটা রান্নার মাসিমা রেখেছে,যে সকালে রান্না করে দিয়ে যায় আবার বিকালে এসে রাতের রান্না করে দিয়ে যায় আর অনু যেদিন ক্লাসে যায় না সেইদিন অনুর সাথে সারাদিন থাকে অরিন্দম না আসা পর্যন্ত, অরিন্দম অনুকে একা রাখতে ভয় পায় বাড়িতে,তাই বিশেষ করে একটা লোক প্রয়োজন ছিল অনেক কষ্টে একজনকে পেয়েছে এখন তার সাথে থেকে ভয় কম পায় অনু।।।
________________
অরিন্দম অফিস যাবে আর অনু ক্লাসে, অরিন্দম আজ ইচ্ছে করে এভাবে জ্বালাবে বলে অনুকে দিয়ে শার্টের বোতাম লাগাচ্ছে, অনুকে এমন লজ্জা পেতে দেখতে ওর মাঝেমাঝে খুব ভালো লাগে,, অনু যত্নসহকারে ওর শার্টের বোতামগুলো লাগিয়ে দিচ্ছে, অরিন্দম অনুর মুখে একটা ফু দিয়ে বলল,
_______বউ তুমি আজ এত ঘেমে যাচ্ছ কেন,এসি তো চলছে আর আমার এত গরম হচ্ছে না তুমি এমন ঘেমে যাচ্ছে কেন?
অনু ভালো করেই বুঝতে পারছ অরিন্দম ওকে ইচ্ছা করে লজ্জায় ফেলতে এসব কথা বলছে, তাই সে কিছু না বলে চুপচাপ বোতাম লাগিয়ে দিয়ে সরে আসতে নিলে অরিন্দম আবার কাছে টেনে নেয়,অনু ভ্যাবাচেকা খেয়ে গিয়ে অরিন্দমের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে, তারপর বলে,,
____ কি হল তোমার এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছো কেন? দেরি হচ্ছে তো।
অরিন্দম দুষ্টুমি হেসে বলে,,,
________বউ আমার না খুব মধু খেতে ইচ্ছে করছে,
অনু চোখ বড় বড় করে অরিন্দমের দিকে তাকায়, ও ভাল করেই বুঝতে পারছে অরিন্দম কেনো এমন করছে,অনু এবার ভাবছে সকালে ওমন না করলেই হত,,,, তারপর অনু তুতলিয়ে বলে,,
________ ওকে মধু খেতে ইচ্ছে করছে নিচে চলো এক শিশি মধু দেবো সব খেয়ে অফিসে চলে যাবে।।
অরিন্দম অনুর নাকে নাক ঘষে বলল,,
________ বউ আমার না খুব মধুর ভান্ডারে ডুব দিতে ইচ্ছে করছে,,,,, বলে অনুর ঠোঁটের ঠিক পাশেই একটা গভীর ভাবে কিস করে,অনু সঙ্গে সঙ্গে কেঁপে উঠে অরিন্দমের -শার্ট ঘামচে ধরে,,
তারপর কাঁপা কাঁপা গলায় বলে,
_________”বরবাবু তুমি দিনদিন না খুব অসভ্য হয়ে যাচ্ছ!”
অরিন্দম হালকা হেসে অনুকে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে তিলটায় ঠোঁট ছুঁয়ে বলে,,
_________”আর তুমি দিনদিন মিষ্টি আর সুন্দরী হয়ে যাচ্ছো!”
অনু লজ্জামাখা হাসি দিয়ে অরিন্দমের বুকে মুখ গুঁজে জড়িয়ে ধরে…
অরিন্দম অনুকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে বলল,,
_______”ভালোবাসি বউ!”
#চলবে