#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal
#পর্ব_20(extra part)
পুরো রুমে আসবাসপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে,দেখেই বোঝা যাচ্ছে এখানে কোন প্রবল ঝড় উঠেছিল,, ফ্লোরে রক্তের বন্যা বয়ে যাচ্ছে,, তার মধ্যে অনুর সাদা শাড়িটা লাল হয়ে উঠেছে, বেড সিটেও রক্ত ভর্তি,খাটের নিচে এক কোনায় নিস্তেজ দেহের মত অরিন্দম মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে, চোখমুখ তার অসম্ভব রকম লাল হয়ে আছে, তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার মধ্যে একটা ঝড় বয়ে যাচ্ছে,কি থেকে কি হলো তার বোধগম্য তার মধ্যে যেনো বোঝার ক্ষমতা হয়ে উঠছে না,, তার দৃষ্টি ফ্লোরে পড়ে থাকা অনুর শাড়িটার দিকে,, অরিন্দমের চোখ থেকে টুপ করে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল, বুকটা তার হাহাকার করছে,, অনেক সাহস নিয়ে ব্যথাতুর দৃষ্টিতে বেডের এক কোনায় তাকালো,,, অনু চাদর মুড়ে গুটিসুটি হয়ে পাগলের মতো একটা কোণে বসে আছে,মাথার চুলগুলো ঘেটে মুখের চারিপাশে হয়ে গা ভর্তি হয়ে আছে, সিন্দুর কপালের লেপ্টে আছে কাজল লিপস্টিক সারা মুখে ভর্তি,,ডান কানের পাশ দিয়ে ঠোঁট পর্যন্ত চিরে রক্ত জমা পড়েছে, কপালে রক্ত শুকিয়ে গেছে,, তাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে তার ওপর কতটা ঝড় বয়ে গেছে বা এখনো যাচ্ছে,,,অনু চুপ করে বসে ফ্লোরে পড়ে থাকা বড়ো ফুলদানি টার দিকে তাকিয়ে আছে,, হয়তো ফুলদানি টাই ওর রক্ষাকবচ ছিল,, হ্যাঁ এই মুহূর্তে ওটাই সবচেয়ে আপন মনে হচ্ছে ওর,তখন বিশাল ওর ওপর পশুর মত আচরণ করতে গিয়ে ও দিশেহারা হয়ে কি করবে ভাবছিল তখন অরিন্দমের বলা কথা গুলো মনে পরে গেল,, তার বরবাবু তাকে বলেছিল,,
_______নিজেকে কখনো অসহায় ভাববেনা বউ, কেউ তোমার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে আসলে তুমি তোমার সবটা দিয়ে নিজেকে বাঁচাবে আশেপাশে যা পাবে তাই দিয়ে তাকে আঘাত করে নিজেকে রক্ষা করবে,অনু ও নিজেকে বাঁচাতে এদিক ওদিক তাকাতে থাকে তখনই পাশেই টেবিলের ওপরে বড় ফুলদানি চোখে পড়ে অনেক কষ্টে ডান হাত দিয়ে নেয়, বিশাল তখন ওর ঘাড়ে মুখ গুজে ছিল,, ফুলদানি নিয়ে বিশালের মাথায় নিজের সর্বশক্তি দিয়ে আঘাত করে,, বিশাল ব্যথা পেয়ে অনুকে ছেরে দিয়ে উঠে বসতেই অনু আবার বিশালের মাথায় ফুলের টব মারে বিশাল নিচে পড়ে যায় অনু নিচে নেমে আবার এবার বিশালের মাথায় সজরে সোজা ভাবে মারে বিশাল কিছু বুঝে ওঠার আগেই আহত হয়ে ফ্লোরে পরে যায় যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে সে,,, তার রক্তের বন্যায় ভেসে যাচ্ছে ফ্লোরে,,,
__________”অনু নিজের সতীত্ব রক্ষা করতে পেরেছে”,,,,, বাঁচাতে পেরেছে নিজেকে ঐ নর পশুর হাত থেকে কিন্তু তবুও সে একটা শকড পেয়ে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে,বিশাল কে শেষবার মারার মুহূর্তে অরিন্দম ঘরে চলে আসে এসে এরকম অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে যায় অনুর কাছে এগিয়ে আসতে গেলে অনু নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে বেডের এক কোণে গুটিসুটি হয়ে বসে থাকে অরিন্দম অনেকটা শক এর মধ্যে ছিল বেশ কয়েক ঘণ্টা পর দ্বীপ কে ফোন করে দেয় । দ্বীপ পুলিশসহ এসে বিশাল কে নিয়ে যায়,বিশাল মনে হয় আর বাঁচবে না আর বাঁচলেও অরিন্দম বা পুলিশ ওকে ছাড়বে না।।
________________
অরিন্দম আস্তে আস্তে উঠে দাড়িয়ে অনুর দিকে তাকায়,, তারপর নিজেকে শক্ত করে খাটে বসে হাটুতে ভর দিয়ে অনুর দিকে এগিয়ে যায়,, কিন্তু অনু অরিন্দমকে দেখে যেনো ভয় পাচ্ছে সে একদম খাটের এক কোনে গুটিশুটি হয়ে গেল,,,অরিন্দম এগিয়ে গিয়ে অনুর মুখে হাত দিতে যাবে অনু নিজের মুখ সরিয়ে নিয়ে পাগলের মত হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকে,,
______আমার গায়ে হাত দেবে না আর।। আমাকে ওই লোকটা খুব খারাপ ভাবে ছুঁয়েছে, আমার সারা শরীরে ওই লোকটার ছোঁয়া,,, আমি আর তোমার যোগ্য নই, তুমি আমাকে ছুইয়ো না,, দূরে যাও আমার থেকে।
অরিন্দমের চোখ থেকে টপটপ করে জল পড়ছে, সে অনুর গালে জোর করে হাত দিয়ে বলল,
____প্লিজ বউ কিছু হয়নি তোমার তুমি শান্ত হো,
কিন্তু অনু নিজেকে ওর কাছে গুটিয়ে নিতে চাইছে, অরিন্দম অধৈর্য হয়ে চিৎকার করে একটা ধমক দেয় অনু কে,,,অনু চিৎকারে খানিকটা কেঁপে ওঠে তারপর নিজের সস্তায় হয়তো ফিরে এসে হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে অরিন্দম কে জরিয়ে ধরে,, অরিন্দম ওকে জড়িয়ে ধরে একহাতে আর এক হাত ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে থাকে,,
_____কিছু হয়নি বউ তোমার সব ঠিক আছে, তুমি প্লিজ চুপ করো, আমি এসে গেছি তোমার কাছে তোমার কেউ কিছু করতে পারবে না।।
অনু কাঁদতে কাঁদতে কি সব বলে যাচ্ছে, অরিন্দম অনেকটা সময় ওকে জড়িয়ে ধরে থাকে,,অনু হঠাৎ চুপ করে যায় ,অনুর কোনো রেসপন্স না পেয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখল ও সেন্সলেস হয়ে পড়ে আছে, অরিন্দম অনুর এমন অবস্থা দেখে চোখ থেকে টুপটুপ করে অশ্রু ঝরে পড়ে তারপর নিজেকে সামলে অনুকে পাঁজা কোলে করে নিয়ে উপরে রুমে চলে আসে ওকে শুইয়ে দিয়ে বলতে লাগলো,,
________ আমাকে ক্ষমা করে দাও বউ আজ আমার জন্য তোমার এমন অবস্থা হল, আমি যদি ওই দিন বিশালকে পুলিশের হাতে দিতাম তাহলে ও আজ এতটা সাহস পেত না, কিন্তু এইবার আমি ওকে ছাড়বো না ,যদি ও বেঁচে যায় তাহলে ও আমার হাতের মরবে, ওকে আমার হাত থেকে কেউ বাঁচাতে পারবে না হয় ও জেলে থাকবে না হয় আমার হাতে মরবে।।
অরিন্দম অনুর খত গুলো দেখে নিজেকে কেমন পাগল পাগল লাগছে তার অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে অনুর এমন অবস্থা দেখে, নিজেকে কোনো রকম সামলে তারপর ডাক্তার কে ফোন করে।।
________________
ডক্টর ওকে চেকআপ করে গেছে প্রায় 20 মিনিট হলো, অনু মেন্টালি খুব শক পেয়েছে, তাই এখন ও অস্বাভাবিক আচরণ একটু বেশি করবে, একটুতেই ভয় পাবে, একদম চুপচাপ হয়ে যাবে,, সময়ের সাথে সাথে ওকে স্বাভাবিক করে তুলতে অরিন্দম কে অনেক পরিশ্রম করতে হবে,।।
প্রায় অনেকক্ষণ পর অনু আস্তে আস্তে চোখ খুললো, অরিন্দম ওর পাশে বসে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে আছে, ও অরিন্দমের দিকে একবার তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিল,,, অরিন্দম ওকে চোখ খুলতে দেখে ওকে জড়িয়ে ধরতে অনু দু হাতে চাদর খামচে ধরে শক্ত গলায় বলল,,,
_____আমাকে প্লিজ ছাড়ো, একা থাকতে দাও আমাকে, আমার কারো ছোঁয়া সহ্য হচ্ছে না, প্লিজ দূরে থাকো আমার থেকে প্লিজ।।
অরিন্দম কথাটা শুনে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো,,ও অনুকে ছেড়ে অনুর দিকে চোখ ছলছল করে তাকালো।অনুর ওর ছোঁয়া অসহ্য লাগছে?
অনু ওর দৃষ্টি উপেক্ষা করে পাশ ফিরে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে পড়ে,
অরিন্দম চোখে একরাশ জল নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়, রুমের বাইরে এসে দরজা আটকে দরজায় হেলান দিয়ে হাঁটুতে মুখ গুঁজে চোখের জল ছাড়তে থাকে,,, ও কি করে সব ঠিক করবে, অনুকে কি করে সামলাবে, নিজেকে অপরাধী লাগছে,, অনুকে এই মানসিক চাপ থেকে ও কি করে বার করবে, আদেও কি এতো সহজে স্বাভাবিক করতে পারবে?
___________________
_________
সারারাত অনু চোখের জলে বালিশ ভিজেছে,আর অরিন্দম বাইরে, ভোরবেলা অরিন্দম রুমে ঢুকে অনুকে পিছনদিক থেকে জড়িয়ে ধরে,,, অনু দূরে সরে যেতে নিলে অরিন্দম জোর করে ওর ঘারে মুখ গুজে ভাঙা গলায় বলতে থাকে,
_________প্লিজ বউ আমাকে নিজের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিও না,,, আমি পারবো না তোমার থেকে দূরে থাকতে, আমার উপর এতটা নির্দয় হইও না, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে বউ প্লিজ, বলে ফুঁফিয়ে কেঁদে ওঠে,,, অরিন্দম কে কাঁদতে দেখে অনুর বুকটা কেঁপে উঠলো, কিন্তু অনুর ও যে খুব কষ্ট হচ্ছে ওর এত সহজে স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব নয়, কিন্তু ও অরিন্দম আকুতি ভরা কন্ঠে ওকে আর নিজের কাছ থেকে সরালো না,,সেও নিঃশব্দে বালিশ ভেজাতে থাকে।।
__________________
#চলবে
#হবে_কি_আমার💞
#writer_Ruhi_mondal
#পর্ব_21
Waqt ne hai Kiya humpe kaisa sitam..
tum bhi bazaar Ho barbaad hain hum..
Jaane kis raste mujhko Le jayega..
bedisha ye mere drgmagate kadam ..
saath deti parchaaiya.
aur meherbaan ho rahe gham…
Tere bin ab na lenge ek bhi dam..
tujhe kitna chaahein aur Ham…
Tere saath Ho jaayenge khatm..
tujhe kitna chaahein aur hum.
ছাদের মাঝখানে গোল হয়ে বসে আছে সবাই, সবাই মানে অরিন্দম, অনু, পায়েল, দ্বীপ, আর দু একটা ফ্রেন্ড,, সেই ঘটনার পর কেটে গেছে এক সপ্তাহ, এই এক সপ্তাহের অনুকে কিছুতেই স্বাভাবিক করতে পারেনি অরিন্দম, অনু কেমন ঝিম মেরে গেছে, চুপ করেই সারাক্ষণ উদাসীন হয়ে বসে থাকে,অরিন্দম ওর সাথে কথা বলতে চাইলেও ও কিছু বলে না, অরিন্দম ওকে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়,চুল বেঁধে দেয়,,ওর যাবতীয় কাজ করে দেয় ওর একটু হাসি মুখ দেখবে বলে, কিন্তু অনু কোনো কিছুই রিয়েক্ট করে না। অনু ওয়াশরুমে ঢুকলে শাওয়ারের জল ছেড়ে দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকে, অরিন্দম অনেক কষ্টে ধাক্কাধাক্কি পর ও বাইরে বার হয়। এই নিয়ে চার দিন খুব জ্বর ছিল অনুর, অরিন্দম অনুকে এমন অবস্থায় দেখে আরোও ভেঙে পড়ছে ওর যেনো অনুর থেকে বেশি কষ্ট হচ্ছে, সেই প্রাণবন্ত দুষ্টুমি ভরা মেয়েটা হঠাৎ এমন শান্ত হয়ে গেলে যে কেউই কষ্ট পাবে, অনুর মাইন্ড চেঞ্জ করার জন্য দ্বীপকে আর পায়েলকে ওদের বাড়ি আসতে বলেছে,সবার কাছে থাকলে হয়তো একটু খুশি হবে ও, কিন্তু তাও অনু কারো সাথে কথা বলছে না চুপ করেই বসে আছে,অরিন্দম ওর দিকে তাকিয়ে চোখে একরাশ জল নিয়ে গানটা শেষ করল, অনুর চোখেও জল ওর ও ভীষণ কষ্ট হচ্ছে অরিন্দম কে কষ্ট পেতে দেখে কিন্তু ও কি করবে এত সহজে কি সবকিছু ভুলে যাওয়া সম্ভব?
অরিন্দম অনু গালে হাত রেখে জড়ানো কণ্ঠে বলল,,
_________প্লিজ বউ এবার তো ওসব কথা থেকে বেরিয়ে এসো ,,, একটু বোঝার চেষ্টা করো যা হয়েছে তাতে…. অনু হু হু করে কেঁদে ওঠে অরিন্দম এ কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে দৌড়ে সিড়ি বেয়ে নিচে নিজের রুমে চলে যায়।অরিন্দম আশাহত হয়ে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
পায়েল উঠে দাঁড়িয়ে বলল,,,
______অরি তুই এমন ভেঙ্গে পরিস না, আমি ওকে বোঝাবার চেষ্টা করছি, তুই প্লিজ নিজেকে স্ট্রং রাখ।।
_______________
পায়েল রুমে এসে দেখল অনু বালিশে মুখ গুজে শুয়ে আছে, পায়েল ওর পাশে গিয়ে বসে,,, অনুর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে অনু মাথা তুলে তাকায় তারপর উঠে বসে,,পায়েল মলিন কন্ঠে বলল,,
_______এমন ভাবে কাঁদছো কেন?
অনু কিছু বললো না।
কিছুক্ষণ পর পায়েল আবার বলল,,
________দেখো অনু তোমার সাথে যা অঘটন ঘটতে যাচ্ছিল তা কোনো সাধারণ ঘটনা নয়,,তোমাকে সান্ত্বনা দেওয়ার মত আমি এখন ভাষা খুজে পাচ্ছি না,,,,,কিন্তু আমি তবুও বলব যা হয়েছে তার মধ্যে তোমার তো কোন দোষ নেই?আর ওই পশুটা তোমার সাথে যা করতে চেয়েছিল তাতে তো সে সফল হয়নি,, তার ফল সে ভোগ করছে সারাজীবন তাকে ওই হসপিটালে বেডেই মরার মত পড়ে থাকতে হবে ব্রেইন কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে তার,,,, তুমি তোমার সবটা দিয়ে নিজের সম্মান রক্ষা করেছ, তোমার সাহসীকতার পরিচয় দিয়েছ, নিজেকে দূর্বল ভাবোনি ওই পরিস্থিতিতে উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়েছ,, এমন অনেক মেয়েদের সাথে হয়েছে যারা ওই মুহূর্তে নিজের বুদ্ধি কাজে লাগায় না,, ভেঙে পড়ে, নিজেকে দুর্বল প্রমাণ করে, অপর পাশের ব্যক্তিকে সফল হতে দেয়, কিন্তু তুমি,,, তুমি একটা স্ট্রং মেয়ের পরিচয় দিয়েছ,,,, তোমার সম্মানের কোনো ক্ষতি হতে দাওনি ,,, তাহলে কেন তুমি নিজেকে এমন ভাবে গুটিয়ে নিচ্ছো?কেন অরিন্দম কে এত দূরে সরিয়ে দিচ্ছো?মানছি এতটা সহজ নয় এসব ভোলা,, কিন্তু তবুও তুমি নিজেকে আর ও স্ট্রং করো,,
___________তুমি কি অরিন্দমের কষ্টটা বুঝতে পারছ না? ও তোমার সাথে তোমার কষ্টের থেকে বেশি কষ্ট পাচ্ছে,, তোমার অবহেলায়,,, প্লিজ এবার বোঝার চেষ্টা করো যা দুর্ঘটনা ঘটার ঘটে গেছে সেটাকে মনে রেখো ভবিষ্যতে আঁচ ফেলো না অতীত নিয়ে কেউ বাঁচে না,,, আর তোমার সাথে এমন কিছু হয়নি যাতে তুমি নিজেকে ওর থেকে আলাদা করে নেবে,,,ও তোমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে, ওর ভালবাসার কারণে না হয় তুমি সবটা ভোলার চেষ্টা করো।।
অনু জল ভরা চোখে পায়েলের দিকে তাকিয়ে আছে, ওর কি বলা উচিত কি করা উচিত নিজেও জানেনা,,, ও সত্যিই ওর সাথে যা ঘটেছে শুধু ও কেনো যে কোনো মেয়ের সাথে এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে সে একদম চুপ হয়ে যাওয়াটা স্বাভাবিক, কিন্তু ও এটাও ভাবছে অরিন্দম সত্যিই খুব কষ্ট পাচ্ছে ওর জন্য,অন্তত অরিন্দমের খুশির জন্য ওকে স্ট্রং হয়ে আগের মত থাকতে হবে।।
অনু কিছু বলল না পায়েল কে জড়িয়ে ধরে নিঃশব্দে অশ্রু বিসর্জন করতে লাগলো।।
___________
বাইরে মুষলধারে বৃষ্টি নেমেছে, এই বৃষ্টি অনু একদিন খুব পছন্দের ছিল, কিন্তু এই বৃষ্টি ওর জীবনে কাল!! সেই দিনের সাক্ষী!বৃষ্টির কারণে অরিন্দম বাড়িতে ফিরতে পারিনি সেদিন তাড়াতাড়ি,,আর বিশাল অরিন্দম কে অফিসে দেখে সুযোগ নিয়েছিল!! বৃষ্টি হলেই ওর এখন খারাপ অনুভূতি হয়,,, বর্ষণ যে সবার জন্য সুখের হয় না, তা অনু এখন ভালভাবেই বুঝতে পারছে,,,, পুরো রুম অন্ধকার করে ব্যালকনির কাঁচের কাছে দাঁড়িয়ে বাইরের দিকেই তাকিয়ে আছে, আকাশ থেকে যেমন ঝরে পড়ছে বৃষ্টির ফোঁটা, ওর চোখ থেকেও বৃষ্টির ফোঁটার মতো অশ্রু ঝরে পড়ছে,, অরিন্দম নিচে দ্বীপ দের কে বিদায় দিতে গেছে ওদের থাকতে বলছি কিন্তু ওরা কেউ থাকেনি এই বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ওরা বেরিয়ে পড়েছে। অরিন্দম নিচের সব কাজ করে ওপরে এসে দেখে পুরো রুমের অন্ধকার ও ভিতরে ঢুকে লাইট অন করতে যাবে ব্যালকনির কাঁচের কাছে দেখল অনু দাঁড়িয়ে আছে,, অনুকে এমন ভাবে দেখে ও করুন দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে দরজায় ঠেস দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ,, ওর বুকের ভিতর অসহ্য যন্ত্রণা হচ্ছে যেটা কাউকে বোঝাতে পারবে না,,,, একপা দুপা করে এগিয়ে গিয়ে অনুর পাশে দাঁড়ালো, তারপর অনুর দিকে তাকিয়ে দেখল সেই তার চোখে জল যা সব থেকে বেশি কষ্ট দেয় অরিন্দম কে, অরিন্দম অনুকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিল,,, অনু জলভরা চোখে ওর দিকে তাকিয়ে আছে,,,, অরিন্দম যত্নসহকারে ওর চোখে জল মুছে দিতে লাগল,,বাইরের বিদুৎতের ছটায় হালকা আলোয় অনু আবেশি দৃষ্টিতে অরিন্দমের দিকে তাকিয়ে থেকে মিনতির সুরে বলল,,
______”বরবাবু আমার মধু ভান্ডারে হানা দেবে! প্লিজ?”
অরিন্দম চমকে উঠে অনুর দিকে তাকাল!! এই সাতদিনে অনু আজ প্রথম কথা বলল ওর সাথে,, অনুকে কথা বলতে দেখে ওর ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠল,আর চোখের কোণে জল।
অনু আবার বলল,,
_____________”প্লিজ!”
অরিন্দম অনুর আকুতি ভরা কন্ঠে ওর কথা ফেলতে পারলো না।অনুর গালে দুহাত দিয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বুঝিয়ে ওকে নিজের কাছে নিয়ে আসে তারপর ওর মুখে সামনে ঝুঁকে যায়,,, অনু আবেশে চোখ বন্ধ করে নেয় , অরিন্দম অনেকটা সময় নিয়ে গভীরভাবে স্পর্শ করে,অনুর চোখ থেকে তরতরিয়ে জল গড়িয়ে পড়তে লাগলো।
__________
অরিন্দম অনুর চোখের জল মুছে দিতে অনু অরিন্দম কে জড়িয়ে ধরে জড়ানো গলায় বলল,,
______ বরবাবু তুমি আমাকে কখনো অবিশ্বাস করবেনা তো? আমাকে সবসময় এভাবেই ভালোবাসবে তো?
অরিন্দম ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর ঘাড়ে মুখ গুজে ভাঙ্গা গলায় বলল,
____ আমি নিজেকে অবিশ্বাস করতে পারি বউ কিন্তু তোমাকে নয়, আর ভালোবাসার কথা বলছো? তুমি আমার কাছে ভালোবাসার থেকে অনেক বেশি কিছু,, আমার বেঁচে থাকার অস্তিত্ব তুমি, ভালোবাসি তোমাকে বউ,, নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি।
#চলবে