হয়তো তোরই জন্য পর্ব-০৩

0
2770

#হয়তো_তোরই_জন্য (The crazy lover)
#পার্ট_৩
#নিশাত_জাহান_নিশি

তমা এভাবেই বিড়বিড় করছে আর রেডি হচ্ছে। তবে ওর মনে অনেক অজানা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।

প্রায় দশ মিনিট পর তমা জায়ানের রেস্ট্রিকশন অনুযায়ী রেডি হয়ে নিলো। সাজ গোজ শেষে তমা কপালের মাঝখানে এক্টা কালো টিপ পড়ে নিলো। আরেক দফা আয়নাতে নিজেকে দেখে নিয়ে তমা কাবার্ডের ড্রয়ার থেকে ছোট পার্সটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো।

দরজায় পা রাখার সাথে সাথেই তমা সিঁড়ির কাছে এক্টা ব্ল্যাক স্যাডো দেখতে পেলো। তিনতলা থেকে দুতলায় করিডর দিয়ে আসা দুপুরের রোদের ঝলকে স্যাডো টা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। কেমন ভয়ংকর স্যাডো টা। মনে হচ্ছে টুপি পড়ে আছে। কোনো পুরুষের স্যাডো এটা। স্ট্যাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে স্যাডো টা, কোনো রকম নড়া চড়া করছে না। তবে স্যাডোটার হাতে বোতল জাতীয় কিছু এক্টা দেখা যাচ্ছে। তমা ভয় পেয়ে কাঁপা কাঁপা কন্ঠে চেঁচিয়ে বলে উঠল,,,,

—“কেকেকেকে ওখানে? ঐভাবে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো? প্লিজ সামনে এসে দাঁড়ান? কেনো আমাকে এইভাবে ভয় দেখাচ্ছেন? প্লিজ আমার মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ান।”

সাথে সাথেই স্যাডোটা সরে গেলো। ভয়ে তমার চোখ দিয়ে অঝড়ে পানি পড়ছে। বুকে হাত দিয়ে ঠিকভাবে শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করছে সে। নিজেকে কিছুটা শান্ত করে তমা তিন তলার সিঁড়ির দিকে পা বাঁড়াল। তমাদের বাড়িটা তিনতলা। দুই তলায় তমারা থাকে আর তিন তলায় তমার বড় চাচা। এক তলাটা সবাই নিজেদের মতো করে ইউজ করে। কোনো ভাগ বাটোয়ারা নেই। তমার আব্বুরা দুই ভাই। তাই তারা দুই ভাই ই তিন তলা বাড়িটাতে মিলেমিশে থাকে।

তমা বুকে হাত দিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে তিন তলায় উঠে গেলো। তমার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট। কারণ এই স্যাডোটাকেই তমা প্রতিরাতে দেখে। স্যাডোটা কিছুটা ঐ ছেলেটার মতো। যে ছেলেটাকে জায়ান সাত বছর আগে মেরেছিলো। প্রতি রাতে এই স্যাডোটা তমার চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায় তবে এই প্রথম স্যাডোটা দিনের বেলায় দেখা দিলো।

তিন তলায় উঠেই তমা এক নাগাড়ে শুকনো ঢোক গিলে শাড়ির আঁচলটা এক হাতে ধরে অন্য হাত দিয়ে বুকে হাত চেপে ভালো করে চোখ বুলিয়ে তিন তলাটা চেইক করে দেখল। কিন্তু কেউ নেই এখানে। পুরো তিন তলা ফাঁকা। তিন তলার প্রতিটা রুমে তালা ঝুলছে। তমার বড় চাচা, চাচী আর চাচাতো ভাই তাহাফ একদিন আগে ঢাকায় বেড়াতে গেছে। ফিরবে কাল। তাই পুরো তিন তলাটা ফাঁকা আর নিস্তব্ধ।

তমা বুকে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে মনের মধ্যে হাজারো কৌতুহল নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ছাঁদের দিকে হাঁটা ধরল। আচমকাই তমা ওর কাঁধে কারোর হাতের স্পর্শ পেয়ে আহ্ করে এক চিৎকার দিলো। চিৎকারের সাথে সাথেই তমা সেন্সলেস হয়ে ঐ ব্যক্তিটির বুকে লুটিয়ে পড়ল।

তমাল পিছন থেকে তমার কাঁধে হাত রেখেছিলো। তমাকে রুমে খুঁজে না পেয়ে তমাল তিন তলার সিঁড়ি বেয়ে যেই না ছাঁদের দিকে উঠল অমনি সে তমাকে দেখতে পেয়ে তমার কাঁধে হাত রেখেছিলো। তমার রিয়েকশান দেখে তমাল বেকুব হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সে ভাবতে পারে নি তমা এতোটা ভয় পাবে।

তমাল ওর পাথর ভাব ছেড়ে তমাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে চোখে মুখে সহস্র আতঙ্ক নিয়ে তমার গালে চাপড় মারছে আর বলছে,,,,,,

—-“এই তমা। কি হলো তোর? চোখ খোল। আমি তোর ভাইয়া তমাল। চোখ খোল তমা। প্লিজ চোখ খুল।”

তমা নিথর হয়ে তমালের বুকে মিশে আছে। তমাল প্রচন্ড ভয় পেয়ে তমাকে কোলে তুলে দুতলায় গিয়ে তমার রুমে শুইয়ে দিলো। রুম থেকে বের হয়ে তমাল নিচ তলায় নেমে জোরে চিৎকার দিয়ে সোফায় বসে থাকা ওর আব্বু, আম্মুকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“প্লিজ তোমরা সবাই আমার সাথে উপরে চলো। তমা হঠাৎ সেন্সলেস হয়ে গেছে।”

কথাটা শোনার সাথে সাথেই তমার আম্মু আব্বু জোরে চিৎকার দিয়ে বলল,,,,

—-“কি হয়েছে তমার? তমা সেন্সলেস হয়ে গেছে মানে?”

—“একচুয়েলি দোষটা আমারই। আমার জন্যই তমা ভয় পেয়ে সেন্সলেস হয়ে গেছে। প্লিজ তোমরা আর কথা না বাড়িয়ে উপরে চলো।”

তমার আম্মু, আব্বু তমালকে ক্রস করে দুইতলায় হাঁটা ধরল। তমাল ও পিছু পিছু ছুটল। তমার রুমে ঢুকেই মিসেস আন্জুমান ডেস্কের উপর থেকে পানির পট টা নিয়ে তমার চোখে মুখে পানি ছিটাতে লাগল। বেশ অনেকক্ষন পানি ছিটানোর পর তমার সেন্স ফিরল। সবাই ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তমার দিকে তাকালো। তমা পিটপিট করে চোখ খুলে ওর আম্মু, আব্বু আর তমালের দিকে তাকালো। তমাকে দেখে বেশ স্বাভাবিক লাগছে। সে মুচকি হেসে শোয়া থেকে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“ভয় পেয়েছ তোমরা? আমি কিন্তু এক্টু ও ভয় পাই নি। কারণ এসব ঘটনা আমার সাথে রোজ ই ঘটে। তবে এই প্রথম ঘটনাটা দিনে ঘটেছে। হোস্টেলে সবসময় লিমা আমাকে সামলায়। আমাকে হুশে ফিরিয়ে আনে!”

তমার আম্মু কিছুটা হকচকিয়ে বলল,,,,,

—-“এই…তুই পাগল হয়ে গেলি নাকি? কি বলছিস এসব আবল তাবল? এসব ঘটনা রোজ ঘটে মানে?”

তমা মলিন হেসে বলল,,,,,

—-“ঐ যে স্যাডো! ঐ স্যাডোটা আমাকে প্রতিদিন রাতে তাড়া করে। ঘুমাতে দেয় না আমাকে। সারা রাত আমার আশে পাশে ঘুড়ে। বললে তো তোমরা বিশ্বাস করবে না তাই বলি না।”

হুট করেই তমাল হু হা করে হেসে বলল,,,,,

—-“বিশ্বাস করব কিভাবে শুনি? তুই তো এখনই প্রমান করে দিলি তুই কতোটা ভুল দেখিস। আরে বোকা ঐ স্যাডোটা তো আমি ছিলাম। আমিই তোর কাঁধে হাত রেখেছিলাম। সাথে সাথেই তুই সেন্সলেস হয়ে গেলি।”

তমা মলিন হেসে সবার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,

—“বলেছিলাম না? তোমরা কেউ বিশ্বাস করবে না। দেখো আমার কথাটা কেমন মিলে গেলো।”

মিসেস আন্জুমান প্রসঙ্গ ঘুড়িয়ে তমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলল,,,,,

—-“এখন শরীর কেমন লাগছে? যেতে পারবি তো বউ ভাতে?”

তমা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,,,,,

—-“হুম। হোয়াই নট?”

কথাটা বলেই তমা বিছানা ছেড়ে উঠছে আর মনে মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,,

—-“আমি জানি আম্মু….প্রসঙ্গটা ঘুড়ানোর জন্যই তুমি বউভাতে যাওয়ার কথা তুলে দিলে। তোমরা কেউ বিশ্বাস ই করো না যে কেউ আমার আশে পাশে ঘুড়ে। ছায়ার মতো আমার পিছু তাড়া করে। বিশেষ করে রাতের বেলায়। আমি তার ভয়ংকর স্যাডোটা দেখতে পাই। ঠিক ঐ ছেলেটার মতো যে ছেলেটাকে জায়ান ভাইয়া মেরেছিলো। ছেলেটা এখন কোথায় গাঁ ঢাকা দিয়ে আছে আমি সঠিক জানি না বাট ছেলেটা আমার আশেপাশেই আছে। হয়তো আমার থেকে প্রতিশোধ নিতে চায়। এখন তো মনে হচ্ছে ঐ স্যাডোটাই ঐ সময় দরজা ধাকাচ্ছিলো।”

তমার মৌনতা দেখে তমার আব্বু মিঃ আফনান কড়া কন্ঠে তমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,

—-“কি ভাবছ তমা? তমাল তো স্বীকার ই করেছে যে ঐ সময় তমাল ই তোমাকে ভয় দেখিয়েছে। কেনো আবার এইসব নিয়ে ভাবছ? তোমার এসব ফালতু ভাবা ভাবির জন্য জয়ার বউ ভাতটা আজ মিস করে যাবো। আপু সেই কখন থেকে আমাকে ফোন করে যাচ্ছে। বার বারই এটা সেটা বলে আপুকে থামিয়ে রাখছি। মনে হয় না এইবার আর থামাতে পারব। সো প্লিজ কাম ফার্স্ট।”

তমা রাগ দেখিয়ে রুম থেকে বের হতে নিলেই দরজার হ্যান্ডেলে এক্টা ছেঁড়া শার্টের অংশ দেখতে পেলো। শার্টের কালারটা নীল কালার। তমা পিছনে ওর আম্মু, আব্বুর দিকে তাকিয়ে জলদি করে শার্টের ছেঁড়া অংশটা টান দিয়ে হাতে তুলে নিলো। সিঁড়ি থেকে হম্বি তম্বি করে নিচ তলায় নেমে তমা শার্টের ছেঁড়া অংশটা পার্সের ভিতর ঢুকিয়ে নিলো। তমার মন বলছে এটাই সেই স্যাডোটার শার্টের ছেঁড়া অংশ। হয়তো বা দৌঁড়ে পালাতে গিয়ে দরজার হ্যান্ডেলে শার্ট টা আটকে গিয়েছিলো। তমা গভীর ভাবে টেনশানে ডুবে গেলো। তমার পিছু পিছু ওর আম্মু, আব্বু আর তমাল ও হাঁটছে। বাড়ি থেকে বের হয়ে তমা সোজা গাড়িতে বসে পড়ল। মিসেস আন্জুমান তমার সাথে ব্যাক সিটে বসে পড়ল। মিঃ আফনান ড্রাইভিং সিটের পাশের সিটে বসে পড়ল। তমাল ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট করে দিলো।

অন্যদিকে,,,,,

জায়ান আকাশদের বাড়ির প্রায় কাছাকাছি চলে এসেছে। আর এক্টা গলি পাড় হলেই জায়ান গাড়ি নিয়ে আকাশদের গলিতে ঢুকে যাবে। জায়ান ড্রাইভ করছে আর মনে মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,,

—-“তমার কিছু কিছু কথা আমার বেশ ঘটকা লাগছে। তমার কথা অনুযায়ী রোজ রাতে তমা কাউকে দেখে বা ফিল করে। সে কেউ টাই হলো শাফিন। তমা শাফিনের কথা নিজের মুখে বলেছে।তমার বিবরণ অনুযায়ী মনে হচ্ছে তমা সত্যি সত্যিই শাফিনকে দেখে। না হয় কেউ তার ভয়ের বিবরণ এতো ভালোভাবে এক্সপ্লেইন করতে পারে না। শাফিন মানে আমি যাকে সাত বছর আগে মেরেছিলাম সে। আমার হিসেব অনুযায়ী ছেলেটা এখন পঙ্গু অবস্থায় আছে। ওর পক্ষে কিছুতেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় মুভ করা সম্ভব না। তাহলে কে হতে পারে সেই লোক? শাফিন নাকি অন্য কেউ? তবে কি কেউ একজন আছে যে আমার তমুকে তাড়া করছে? আমাকে খুঁজে বের করতে হবে সেই মানুষটাকে। প্রথমত শাফিনকে আমার খুঁজে বের করতে হবে। এরপর যদি ফলাফল মিলাতে না পারি তাহলে অন্য রাস্তা খুঁজতে হবে। তবে কিছুতেই আমাকে পথভ্রষ্ট হলে চলবে না। আমার আর তমার মাঝখানে অদৃশ্য শএুর অভাব নেই।”

জায়ান মনে মনে এসব কথা ভাবছে আর ড্রাইভিং করছে। হুট করেই কোথা থেকে এক্টা বড় লরী জায়ানের গাড়ির সামনে ধেঁয়ে আসতে লাগল। দুপুর টাইম তাই রাস্তাটা বেশ ফাঁকা। বড় কোনো গাড়ির আনাগোনা নেই। রাস্তায় কয়েকটা রিকশা চলছে আর জায়ানের গাড়িটা এর মাঝেই এক্টা বড় লরী সাংঘাতিক স্পিডে জায়ানের গাড়ির দিকে ক্রমশ এগিয়ে আসছে। গাড়িটার উদ্দেশ্যই যেনো জায়ানের গাড়িসহ জায়ানকে পিষিয়ে দেওয়া।

জায়ান প্রানপনে চেষ্টা করে গাড়িটা ডান পাশে ঘুড়িয়ে নিতে নিলেই লরীর ড্রাইভারটা ও লরীটা ডান পাশে ঘুরিয়ে আবার জায়ানের মুখোমুখি হয়ে গেলো। জায়ান চোখে মুখে আতঙ্ক নিয়ে ভালো করে লরীটার দিকে তাকালো। ড্রাইভারটার মুখে মাস্ক বাঁধা। চোখে ক্ষোভের অগ্নি জ্বলছে। ড্রাইভারটা যেই না লরী দিয়ে জায়ানের গাড়িটাকে চাপা মারতে যাবে অমনি জায়ান ওর গাড়িটা সামান্য পিছনে হটিয়ে লরীটাকে ক্রস করে বাম পাশ দিয়ে গাড়ি ঘুড়িয়ে ছুটে চলল সামনের দিকে। এক্টু সামনে যেতেই জায়ান নিজেকে সেইফ করে বুকে হাত দিয়ে এক সাথে কয়েকটা দম ফেলে হাত দিয়ে কপালে লেগে থাকা ঘাম গুলো মুছে গাড়িটা থামিয়ে দিলো। গাড়ি থেকে নেমেই জায়ান সামনের দিকে তাকিয়ে দেখল পুরো রাস্তা ফাঁকা। লরীটার ছায়া অব্দি নেই।

জায়ান উওেজিত হয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে বলল,,,,,

—-“মাদার** সাহস থাকলে আমার সামনে এসে মোকাবিলা কর। এভাবে ভীরুদের মতো হাতিয়ার নিয়ে আমার সাথে লাগতে আসিস না। তুই যেই না হোস না কেনো আমি তোকে ঠিক টেনে বের করব। তুই যেই গর্তেই লুকিয়ে থাকিস না কেনো আমি তোর লেজ টেনে বের করব। তোর চোখ আমি চিনে রেখেছি। দ্বিতীয়বার দেখা হলে আমি তোকে ছাড় দেবো না। তোর জান আমি নিয়ে ছাড়ব।”

জায়ান কথাগুলো বলেই রাগে ফুসতে ফুসতে শার্টের হাতা জোড়া ফোল্ড করতে করতে গাড়ির ভিতর ঢুকে জানালা দিয়ে থুথু ফেলে নিজেকে কিছুটা কন্ট্রোল করে গাড়ি ছেড়ে দিলো।

লরীর ড্রাইভারটা এলোমেলো ভাবে ড্রাইভিং করছে আর মৃদ্যু চিৎকার দিয়ে বলছে,,,,,

—-“আজ দুজনেই আমার হাত থেকে বেঁচে গেলি। খুব পাকাপোক্ত প্ল্যান করে আজ তমার বাড়ি গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম এডিস দিয়ে তমার অহংকারী রূপটা জ্বালিয়ে খাঁক করে দেবো। বাট হলো না এর আগেই তুই চলে এলি। নেক্সট টাইম যা ও আবার তিন তলায় উঠে তমার গায়ে এডিস ছুড়তে যাবো তার আগেই তমাল চলে এলো। বারংবার তমা আমার হাত থেকে বেঁচে গেলো। তুই একদম ঠিক করিস নি জায়ান…. তমার লাইফে আবার ব্যাক করে। তমা না তোর হবে না আমার হবে। শুধুমাএ তোর জন্য আমাকে তমার ক্ষতি করতে হবে। সাত বছর আগে থেকে তুই আমার পিছে লেগে আছিস। ইতালি যাওয়ার আগে তুই ঠিক তমাকে তোর করে নিলি। আমার হতে দিলি না তমাকে। তাই আমি ও ভেবে নিয়েছি প্রতিরাতে ভয় দেখিয়ে তমাকে তিলেতিলে মারব। কিছুটা সফল ও হয়েছি। বিভিন্ন ভাবে আমি তমার থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। আর পড়ে রইলি তুই। তোর কথা না হয় বাদই দিলাম। কারণ, তোকে তো আমি রাস্তায় পিষে মারব। আজ তুই আমার হাত থেকে বেঁচে গেলি বাট নেক্সট টাইম বাঁচবি না।”

লোকটা কথাগুলো বলছে আর রাগে জিদে চোখ দিয়ে পানি ফেলছে।

ঐদিকে, প্রায় পাঁচ মিনিট পর জায়ান আকাশদের বাড়ির সামনে পৌঁছে গেলো। আকাশদের বাড়ির গেইটটা সাদা অর্কিড ফুলে মোড়ানো। বেশ দারুনভাবে সাজানো গেইটটা। আকাশদের বাড়ির বিশাল বাগানে বউভাতের স্টেইজ করা হয়েছে। চারিদিকে ফুল আর বেলুনের সমারোহ। পুরো বাড়ি জুড়ে মেহমান গিজগিজ করছে।

জায়ান আর দেরি না করে হম্বিতম্বি হয়ে গাড়ি থেকে নেমে সোজা বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলো। বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথেই কোথা থেকে জায়ানের আম্মু, আব্বু এসে জায়ানকে ঝাপটে ধরল। নীল শাড়ি পড়ে জয়া দারুনভাবে সাজগোজ করে স্টেইজে বসে ছিলো। জায়ানকে দেখা মাএই জয়া স্টেইজ থেকে উঠে এসে জায়ানকে জড়িয়ে ধরে জায়ানের পিছনের চুলগুলো টানতে লাগল। জায়ান মলিন হেসে এদিক সেদিক তাকিয়ে জয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,

—-“আকাশকে দেখছি না আকাশ কোথায়?”

জয়া মুখটা কালো করে বলল,,,,

—-“প্রায় এক ঘন্টা হলো আকাশ বাড়ি থেকে বের হয়েছে। বাট এখনো ফিরে নি।”

#চলবে,,,,,,,,,