#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ৩২
ব্যালকনির রেলিংয়ে হাত রেখে দাড়িয়ে রয়েছি।পথ দেখে চলেছি সেই কাঙ্ক্ষিত মানুষটার।শুদ্ধর!ভর সন্ধ্যের আধারে ঘর নিমজ্জিত।নিভু নিভু দুটো মোম টেবিলে।ব্যালকনির গাছে আজই ফোটা টকটকে একটা লাল গোলাপ তার পাশেই রাখা।শুদ্ধর আসার সময় হয়েছে দেখেই মোমদুটো জ্বালিয়েছিলাম।কিন্তু মোম ফুরিয়ে আসছে,ওনার দেখা নেই।সময় যেনো কাটতেই চাইছে না।অস্থির লাগছে আমার।কখন শুদ্ধ আসবেন?কখন তাকে বলবো?ভালোবাসি তাকে!কখন ফুরোবে এই অপেক্ষার রোদ্দুরের উত্তাপ?কখন?
মোম নিভে গেলো।আরো অন্ধকার হয়ে আসলো ঘর।লাইট জ্বালাইনি বলে তাকাতেও পারছি না সেদিক।মোবাইলটা ঘরেই রাখা।ওটা এনে শুদ্ধকে ফোন লাগাবো,এক পা এগোনোর সাহস হচ্ছে না আমার।বাগানের লাইটগুলো জ্বলে উঠলো একে একে।ব্যালকনিটা আলোকিত হলো খানিকটা।গুটিগুটি পায়ে পা বাড়াতে লাগলাম রুমের দিকে।পানিতে ভরে উঠতে লাগলো আমার চোখ।
একটু এগোতেই কেউ দরজা খুলে রুমে ঢুকলো।সুইচ অন করে আলো ছড়িয়ে দিলো ঘরজুড়ে।উজ্জ্বল আলোয় সেই চেনা মুখ।শুদ্ধ!একছুটে গিয়ে জাপটে জরিয়ে ধরলাম তাকে।হাতের ব্যাগটা বিছানায় ছুড়ে মেরে উনি চুল মুঠো করে নিলেন আমার।শান্ত গলায় বললেন,
-কি হয়েছে সিয়া?ঘর অন্ধকার ছিলো কেনো এভাবে?আর ভয় পাচ্ছিস কেনো তুই?এইতো আমি এসে গেছি!
পিঠের শার্ট আরো জোরে খামচে ধরলাম তার।উনি ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে দেখার চেষ্টা করলেন খানিকটা।তারপর আমার চুলে চুমো দিয়ে বললেন,
-এমন করছিস কেনো সিয়া?কি হয়েছে?
হুশে ফিরলাম আমি।সত্যিই তো!এমনটা কেনো করছি আমি?তাকে ভালোবাসি বলার কথা,কাছে আসার কথা আমাদের।তাহলে এভাবে ভয় পাচ্ছি কেনো?এমন অজানা আশংকা কেনো?ওনাকে ছেড়ে চোখ তুলে তাকালাম আমি।শুদ্ধ আমার গালে হাত বললেন,
-একটু লেইট করেছি বলে এই অবস্থা?
….
-ওকে।আর হবে না এমন!পাক্কা!
তাকে ছেড়ে সরে দাড়ালাম।উনি পুরোঘরে একবার চোখ বুলিয়ে বললেন,
-টেবিলে ক্যান্ডেলস্ কেনো?
এবার গুটিয়ে দাড়ালাম।শুদ্ধ এগিয়ে গিয়ে শেষ হওয়া মোমদুটো ছুইয়ে দিলেন।পাশের গোলাপ ধরতে গিয়েও থেমে গেলেন।মুচকি হেসে কিছু না বলে টাইটা টেনে খুলে ওয়াশরুমে ঢুকে গেলেন উনি।নিজেকে শক্ত করে নিলাম আমি।সরিয়ে রাখা বাকি মোমদুটো জ্বেলে রুমের লাইটস্ অফ করে দিলাম।ওয়াশরুমের দরজা খোলার শব্দে সেদিক তাকালাম।আবছা আলোয় দেখলাম,শুদ্ধ শুধু একটা ট্রাউজার পরে একদম খালি গায়ে বেরিয়ে এসেছেন ওয়াশরুম থেকে।কপালের হালকা ভেজা চুল,সিক্ত মুখ ছেড়ে আজও তোয়ালে দিয়ে ঘাড় মুছতে ব্যস্ত উনি।ঘর আবারো অন্ধকার দেখেই আমার দিক তাকালেন।
চোখ পরতেই তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলাম আমি।ওড়না আঙুলে প্যাচাতে লাগলাম।ঘাম ঝরতে শুরু করে দিয়েছে এবার।জর্জেটের ওড়নায় ঘাম মোছার বৃথা চেষ্টাও করলাম।শুদ্ধ মুচকি হেসে তোয়ালেটা বিছানায় ছুড়ে মারলেন।আমি একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম।কিন্তু সে লোক সোজা সুইচের কাছে গিয়ে লাইট জ্বালিয়ে দিলো আবারো।ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল নাড়তে নাড়তে “বোল দো না জারা”গানের হুইস্টলিং করতে লাগলেন শুদ্ধ।
কিছুটা রাগে কপাল কুচকে আসলো।কিন্তু গানের কথা ভেবে,হ্যাঁ,বলে দেবো!সত্যিই বলে দেবো!ভেবে নিজেকে সামলে নিলাম আবারো।গটগট করে গিয়ে লাইট অফ করে দিলাম রুমের।
শুদ্ধ আটকে গেছেন।ধীর পায়ে এগোলেন আমার দিকে।আমি নিচদিক তাকিয়ে দু পা পেছোলাম।উনি এগোচ্ছেনই।এবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে আমার।শুদ্ধ আমার একদম কাছে চলে এসে কাধের পাশ দিয়ে দেয়ালে হাত রাখলেন।লোকটা একদম খালি গায়ে।চোখ যতোদুর যায়,ফর্সা হাত,বুক নজরে আসছেই।উনি আমার দিকে অনেকটা ঝুকে বললেন,
-এসব কি ম্যাডাম?
-ও্ ওই,আসলে….
-কিছু বলবি?
ঘাড় নেড়ে হ্যাঁ বোঝালাম।উনি বাকা হেসেই বললেন,
-ওকে বল।
-শুদ্ধ,আসলে….
-হুম,আমি?আসলে?
-না মানে আমি…আসলে…
-হুম,তুই?আসলে?
নাহ্!এভাবে বলতে পারবো না আমি।একটা জোরে শ্বাস নিয়ে চোখ বুজে বলে দিলাম,
-আপনি এভাবে উদোম গায়ে ঘুরছেন কেনো?
-তো?বউয়ের সামনেই তো!
-সরে দাড়ান!আ্ আর শার্টটাও….
-পরছি।
উনি সরে গিয়ে টিশার্ট পরলেন।হাফ ছাড়লাম আমি।বুকে হাত দিয়ে হৃদপিন্ডের নড়াচড়া কয়েকশগুন বেশি জোরে অনুভব করলাম।কিছু বুঝে ওঠার আগেই শুদ্ধ অনেকটা দ্রুত এগিয়ে এসে আমার কোমড়ে দুহাত দিয়ে দেয়ালে আটকে দিলেন।চোখ তুলে তাকানোর আগেই বললেন,
-শার্ট পরেছি,সরে দাড়াতে পারবো না!এবার বল?
গলা শুকিয়ে গেছে আমার।কথা দলা বেধে আটকে যাচ্ছে শুধু।শুকনো ঢোক গিলে বলতে লাগলাম,
-শুদ্ধ!আমি….
উনি আচমকাই আমার গলায় নাক ডুবিয়েছেন।দেয়ালে মিশে গেলাম আরো।এমনিতেও বলতে পারছি না।উনি আরো এমন করলে পাগল হয়ে এখানেই আটকে থাকবো আমি।উনি কি বোঝেন না সেটা?কেনো করছেন তবে এমন?শুদ্ধ নেশালো কন্ঠে বললেন,
-বলনা সিয়া!সবটা বল?একবার বল?
-আ্ আমার একটু সময় লাগবে!
ফোন বেজে উঠলো শুদ্ধর।একপলক তাকালেন উনি ফোনের দিকে।তারপর আমার কোমড় ছেড়ে উনি বললেন,
-একটু সময়?ফাইন।
মুচকি হেসে সরে গিয়ে কল রিসিভ করলেন উনি।ফোনে কিছু না বলে শুনছিলেন শুধু।ততক্ষনে আমি গোলাপটা হাতে নিয়ে দাড়িয়েছি।শুদ্ধ চুপচাপ ওপাশের বলা কথাগুলো শুনে শক্ত গলায় বললেন,
-এসব কথা যেনো আর কেউ না জানে!
কিছুটা অবাক হয়েছি।কে এমন ফোন করেছিলো?কি এমন বললো ওনাকে যে একমুহুর্তেই গলার স্বর পাল্টে গেলো ওনার?কি এমন কথা যা অন্যকেউ জানলে তার সমস্যা?ধ্যাৎ!হবে হয়তো অফিসিয়াল কিছু!আমি এতোটা অভারথিংক কেনো করছি?কিন্তু শুদ্ধর চেহারায় অসহায়তা।গোলাপটা আবারো টেবিলে রেখে এগোলাম তারদিক।শুদ্ধ ফোন রেখে চুলগুলো উল্টে ধরে চোখ বন্ধ করে দাড়িয়ে।কিছুটা এগিয়ে দাড়াতেই উনি আমার দিক না ফিরে বললেন,
-টায়ার্ড লাগছে সিয়া!প্রচন্ড ক্লান্ত লাগছে।
এই পরিবেশটা একদমই চাইনি আমি আজ।তবুও ওনার সামনে দাড়িয়ে হাসিমুখে বললাম,
-বেশ।আপনি শুয়ে পরুন।আমি আপনার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
বিছানায় এসে বাচ্চাদের মতো আমার কোলে মাথা রেখে কোমড় জরিয়ে ধরে শুয়ে পরলেন উনি।আমি তার মাথায় হাত বুলাতে লাগলাম।আবারো এই মানুষটা কোনোভাবে কষ্ট পেয়েছে আজ।দুটো দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললাম,
-এখনো কষ্ট হচ্ছে আপনার শুদ্ধ?
-তুই কাছে থাকলে কষ্ট থাকে না আমার সিয়া।
….
-আচ্ছা সিয়া?তোর জানতে ইচ্ছে করে না?মাঝমধ্যে শুদ্ধ এতোটা অচেনা কেনো হয়ে যায়?কেনো তোর চেনাজানা শুদ্ধ হঠাৎ করেই অন্য শুদ্ধ হয়ে যায়?কেনো…
জানতাম।না বললেও সবটা বুঝে যান উনি।মৃদ্যু হেসে বললাম,
-জানতে ইচ্ছে করে শুদ্ধ।কোনো কোনো সময় আপনার এই গম্ভীরতা এতোটাই যন্ত্রনাদায়ক হয়ে ওঠে,বড্ড জানতে ইচ্ছে করে আমার।কিন্তু আমি এটাও জানি শুদ্ধ,আপনি আমার যতই অচেনা হয়ে যান না কেনো,আমাকে ঘিরে আপনার অনুভুতিগুলো কোনোদিন অচেনা হবে না আমার।তাছাড়া এই কথাগুলো তো আপনি বুঝেই যান।যখন এই কেনোর উত্তর দেওয়ার প্রয়োজনবোধ করবেন,অবশ্যই জানাবেন আমাকে।আমি জানি।তাই আর আলাদাভাবে আপনাকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে না।
শুদ্ধ আরো শক্ত করে কোমড় জরিয়ে ধরলেন আমার।কিছুটা সময় পর বললেন,
-একটা কথা বলবো?
-ক্লান্তি কেটে গেলে বলুন।
-পৃথিবীতে সম্পর্কগুলো ঠিক কি দিয়ে বিবেচনা করা উচিত সিয়া?
একটু বিস্ময়।প্রকাশ না করে বললাম,
-মন দিয়ে।
-তাহলে পৃথিবী রক্তের সম্পর্ককেই কেনো প্রাধান্য দেয়?হৃদয় দিয়ে গড়া সম্পর্কগুলো কি এতোটাই ঠুনকো?মুল্যহীন?
হুট করেই আয়ান ভাইয়ার কথা মনে পরলো আমার।কোনোভাবে শুদ্ধ কি আয়ান ভাইয়ার ব্যবহারে কষ্ট পেয়েছেন?বললাম,
-না শুদ্ধ!সম্পর্ক মানেই তো ভালোবাসা।আর ভালোবাসা মানেই তো আত্মিক বাধন।একজন ভাবলো,কেউ তার খুব কাছের,খুব আপন।কিন্তু তাকে ভালো না বাসতে পারলে,সে কোনোদিনও তার কাছের নয়,কোনোদিনও আপন নয় তার।আবার কারো সাথে কোনোদিন সেরকম কোনো সম্পর্ক ছিলোই না একজনের,তবুও যদি কেউ সেই মানুষটাকেই ভালোবেসে আপন করে নেয়,তার থেকে সার্থক সম্পর্ক আছে বলে আমার মনে হয় না।আমি তো এটুকোই জানি।
বেশ অনেকটা সময় চুপ রইলেন শুদ্ধ।আবারো বললেন,
-আচ্ছা সিয়া?যদি কখনো আমি তোর থেকে দুরে চলে যাই?কি করবি তুই?
দুরে যাওয়ার কথা শুনেই কলিজা মোচড় দিয়ে উঠলো আমার।হাত থেমে গেলো।টপটপ করে চোখ দিয়ে পানি পরতে লাগলো আমার।শুদ্ধ তাড়াতাড়ি উঠে বসে আমার চোখ মুছিয়ে গাল ধরে বললেন,
-আরে?বোকা মেয়ে!কাদছিস কেনো তুই?কাদিস না প্লিজ!
আমি কাদছিই।উনি জরিয়ে ধরলেন আমাকে।বললেন,
-আচ্ছা শোন,একটা সিক্রেট শেয়ার করি তোর সাথে!যদি কোনোদিন আমি হার্….
-শুদ্ধ!
-লেট মি ফিনিশ?না শুনলে পস্তাবি!শোন!যদি কোনোদিন তোর থেকে এতোটুকো দুর্….
-শুদ্ধ প্লিজ!
ফুপিয়ে আরো জোরে কেদে দিলাম আমি।উনি গাল ধরে চোখেমুখে অনেকবার ঠোট ছোয়ালেন আমার।বললেন,
-কাদছিস কেনো তুই শ্যামাপাখি?প্লিজ কাদিস না!তোর কান্না সহ্য হয়না কিন্তু আমার!তবে কি জানিস তো?জীবন বরই বিচিত্র!আমরা যা চাই,সবটা তেমনভাবে হয় না।সমাপ্তিটাতে কোনো না কোনোভাবে অসমাপ্তি রয়ে যায়।অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বদলে যায় সবটা।তাই যদি কোনোদিন,কোনোভাবে মনে হয়,আমাকে কোথাও হারিয়ে ফেলেছিস বা তোর থেকে দুরে সরে গেছি আমি,তোর স্বপ্নের আশেপাশে খুজে নিস আমাকে।পেয়ে যাবি।এটা শুদ্ধের প্রমিস তোর কাছে!তোর থেকে দুরে যাওয়া আমি কল্পনাও করতে পারি না।তোর বিশ্বাসে নিজেকে বিশ্বাস করি আমি।কিন্তু যদি কোনোভাবে,কোনোদিন তাতে ফাটল ধরে,তার জন্য পুরোপুরিভাবে তুই দায়ী থাকবি সিয়া!তুই!আর এজন্যই আমাকে কাছে টানার দায়িত্বও তোকে নিতে হবে সিয়া!পারবি না?সব সিচুয়েশনে আমাকে নিজের করে নিতে?পারবি না?এভাবেই আমার সব ক্লান্তিতে আমার আশ্রয় হতে?তোর গল্পের পরিশিষ্টে যে শুদ্ধ তোরই সিয়া!শুধুই তোর!এটুকো মানিস,দেখবি,কেউ আলাদা করতে পারবে না আমাদের।কেউ না!
আমার গল্পের পরিশিষ্টে সে আমার।কতোটা শান্তির ছিলো এই কথাটা তা আমিই জানি।কিন্তু তার আগের কথাগুলো?তার দুরে সরে যাওয়া,তা যে মৃত্যুসম আমার কাছে।তাহলে আমিই কেনো তার কারন হতে যাবো?আমি কেনো দায়ী হবো?কেনো বললেন উনি এরকম?কেনো বললেন?
#চলবে….
[ ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন ]
#তোর_নামের_রোদ্দুর-২
#লেখনিতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্বঃ৩৩
-এই হ্যাকিং,রোবারি,এসব নিয়ে কোনো আলোচনাই চাইছি না আমি আর।আয়ান যা করেছে,সেটা আমিই বুঝ্….
বলতে বলতেই পিছন ফিরলেন শুদ্ধ।কিন্তু আমাকে দেখে থেমে গেলেন উনি।অনেকটা অপ্রস্তুতও হয়ে গেছেন সেটা টের পেয়েছি আমি।আজ সকালটায় শুদ্ধর কপালে আমিই ঠোট ছুইয়েছি।ওনার তবুও ঘুম ভাঙে নিয়ে।কিছুক্ষন নিরবে চেয়ে রইলাম।কতোটা শান্ত,কতোটা নিস্পাপ ঘুমন্ত চেহারা।তবুও ওই চেহারার আড়ালে চাপা কষ্টের আনাগোনা।উঠে ফ্রেশ হয়ে শুদ্ধের জন্য একদম কফি বানিয়ে নিয়ে রুমে ঢুকলাম।এসে দেখি শুদ্ধ উঠে গেছেন।অন্যদিক ঘুরে ফোনে কথা বলছিলেন উনি।টি টেবিলে কফিটা রাখতে যাবো,শুদ্ধ ফোনে কথাটা বলে উঠলেন।আমাকে দেখে ফোন কান থেকে নামিয়ে ঠান্ডা আওয়াজে বললেন,
-কখন এসেছিস?
-দ্ দু সেকেন্ড আগে!
আর কিছু বললেন না উনি।কফিটা এগিয়ে দিয়ে বললাম,
-আপনার কফি।
নিশব্দে ওটা নিলেন শুদ্ধ।তারপর ফাইল আর কাগজপত্র গোছাতে লাগলেন উনি।তার উচ্চারন করা হ্যাকিং,রোবারি শব্দদুটো মাথায় জট পাকিয়ে দিচ্ছে।কিন্তু সে বিষয়ে শুদ্ধ বলতে চাননি আমাকে।তাই কথা বাড়াই নি আর আমিও।বেরিয়ে আসছিলাম রুম থেকে।উনি বললেন,
-তুই বিশ্বাস করিস আমাকে,তাইনা সিয়া?
পিছন ফিরলাম।শুদ্ধ উত্তরের অপেক্ষায়।মৃদ্যু হেসে বললাম,
-আমার বিশ্বাস মানেই তো আপনি।
-ঠিক কতোটা বিশ্বাস করিস আমাকে?
-বিশ্বাস পরিমাপ করা যায়?
-যদি কোনোদিন তোকে পুরো পৃথিবী আর এই বিশ্বাসের মাঝে কোনো একটা বেছে নিতে হয়,তোর সিদ্ধান্ত কোনটা হবে সিয়া?
ধক করে উঠলো ভেতরটা আমার।তবুও নিজেকে সামলে তারদিক এগিয়ে গেলাম।তার চোখে চোখ রেখে শক্তভাবে বললাম,
-আপনার জন্য সব করতে শিখেছি আমি শুদ্ধ।সব করতে পারবো আপনার জন্য।তাহলে আপনাকেই কি করে বিকল্পে রাখবো বলুন?
শুদ্ধ শক্ত করে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।আলতোভাবে তার পিঠে হাত রাখলাম।নিজের অজান্তেই খামচে নিলাম তার মেরুন শার্টটা।এই বাহুডোরে থাকতে পারাটাই যে আমার জীবনের প্রাপ্তি।আর কিছুই চাইনা আমার।কিছুই না!
.
ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই খাওয়াতেই পুর্ন মনোযোগী।আমার ভেতরটা শুধু খচখচ করছে।কাল থেকে যেসব কথা শুনতে হচ্ছে আমাকে,তা যেনো কোনো ঝড়ের আভাস দিচ্ছে।যা সবটা এলোমেলো করে দেবে আমার।বারবার মনে হচ্ছে কোনোভাবে শুদ্ধ কোনো বিপদে জরিয়ে যাচ্ছেন।কিছু তো হয়েছে ওনার।কিন্তু কি?উনি তো কোনো খারাপ কাজে জরাবেন না।তবে কেউ কি ফাসাতে চাইছে ওনাকে?কেউ কোনো ক্ষতি চায় তার?কে?কেনো?
-মিস্টার রায়হানের ব্যাংক একাউন্ট পুরোটাই হ্যাক হয়ে গেছে শুদ্ধ!
আব্বুর কথায় ধ্যান ভাঙলো আমার।আবারো হ্যাকিং?শুদ্ধ খাওয়া থামিয়ে আবারো স্বাভাবিকভাবে খেতে লাগলেন।বললেন,
-শুনেছি।
-এটা জানো?ব্যাংক রোবাররা শুধুমাত্র তার একাউন্টই টার্গেট করে থেমে নেই।মিস্টার আসলাম,মিস্টার তৌহিদসহ আরো কয়েকজন বিখ্যাত ইন্ডাস্ট্রিয়ালিস্ট আর রাজনৈতিক নেতাদের একাউন্টও হ্যাক করার প্লান ছিলো ওদের।আর সবচেয়ে শকিং যেটা হলো,হ্যাকারদের ইউআরএল আমাদের অফিসেই ট্র্যাক হয়েছে।
শুদ্ধ খাওয়া থামিয়ে দিলেন এবার।আব্বুর দিকে তাকিয়ে বললেন,
-সো হোয়াট আব্বু?আমাদের অফিসে ট্র্যাক হওয়াটা আমাদের অফিসের কেউ সে কাজ করেছে তার কোনো এভিডেন্স নয়।অফিসে হাজারো ক্লায়েন্টস্ আসে,তাদের পিএ,নন অফিসিয়াল পিওনসহ,বিভিন্ন গ্রুপের ম্যানেজারস্,এমনকি ওনাররা পর্যন্ত বিজনেস ডিল করতে আসে।যদি কেউ অফিসে বসে এইসব করে থাকে তবে সেটা আমাদের দায় নয়।ঠিকমতো ইনভেস্টিকেট না করে এইসব রোবারিতে আজাদ গ্রুপের নাম জরাতে পারেন না ওনারা।
-এক্সাক্টলি।একারনেই মিডিয়া চুপ।পুলিশ ইনভেস্টিকেশন ছাড়া যদি কোনো এলিগেশনস্ আনে,তাদের দেখে নেবে এই আসাদুজ্জামান আজাদ।এটা ওরা জানে।তাই বিষয়টা এখনো আড়ালে।বাট শুদ্ধ,ওরা আমাদের কাছেও হেল্প চায়।সিটিজেন হিসেবে,যে অফিসের দিকে আঙুল উঠেছে সে অফিসটা আমাদের,আজাদ গ্রুপের ফাউন্ডার হিসেবে আমাদেরও উচিত ওদেরকে যতোদুর সম্ভব হেল্প করা তাইনা?তাই আমি সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ পাঠিয়ে দিয়েছি ওদের।
শুদ্ধ একটু ভ্রুকুচকে থেকে শান্তভাবে বললেন,
-ভালো করেছো।
-তোমার কাউকে সন্দেহ হয় শুদ্ধ?
শুদ্ধ চুপ করে গেলেন আবারো।আমি শুধু তার দিকে তাকিয়েই আছি।আম্মু বললো,
-এসব কথা এখন থাক না!খেতে দিন ছেলেটাকে।আর আপনিও খেয়ে নিন।যা হবার তা দেখা যাবে।পুলিশ তদন্ত করে অবশ্যই বের করবে আসল অপরাধীকে।তাছাড়া,সে যেই হোক,অফিসের কেউ,বা বাইরের,শাস্তি তো পাবেই।এ নিয়ে আপনারা এতো বেশি ডিস্টার্বড্ হবেন না!
আম্মুর কথা শেষে পরিবেশটা আরো ভারী হয়ে উঠলো।মাহি বললো,
-ফুপি,শুদ্ধ ভাইয়া আর ইনসিয়া ভাবির বাইরে কোথায় যাওয়া দরকার তাইনা?
মাথা নিচু করে রইলাম আমি।অপেক্ষা!শুদ্ধের মতামতের!আম্মু বললো,
-ঠিক বলেছিস মাহি!শুনছেন?ছেলেমেয়েদুটো বিয়ের পর থেকে সেই বাসাতেই রয়েছে।ওদের….
আব্বু বললেন,
-কোথায় যেতে চাও শুদ্ধ?ইনসু?তোর কি মত?
আমি কিছু বলার আগেই শুদ্ধ একদম স্বাভাবিকভাবে বললেন,
-মাস তিনেক পর ইউএসে সেটেল্টড্ হওয়ার প্লান আছে।
বিস্ফোরিত চোখে শুদ্ধের দিকে তাকালাম আমি।বাকি সবাইও অবাক চোখে তাকিয়ে তার দিকে।শুদ্ধ ওভাবেই খাওয়ায় ব্যস্ত।আম্মু বললো,
-মানে?
খাওয়া থামিয়ে শুদ্ধ মাথা তুলে বললেন,
-এক ফ্রেন্ডের ফিয়ন্সের।ও বলছিলো,ওর ফিয়ন্সে নাকি ইউএস যাচ্ছে,স্টাডির জন্য।আর এসব কথা ওই ফ্রেন্ড আজই জানলো।ও ইনস্ট্যান্টলি ডিসাইড করে ফেলেছে ওর সাথে যাওয়ার।ইনফ্যাক্ট,বিয়েটাও করে ফেলবে,এজ সুন এজ পসিবল।
শ্বাস ফেললাম আমি।শুদ্ধ যদি আগের কথার সাথে এই ফ্রেন্ডের ফিয়ন্সে জুরে না দিতো,দম আটকে মরে যেতাম।মাহি বললো,
-ওই ভাইয়ার ফ্যামিলি?
-সবাই মিলেই যাচ্ছে।
বিষয়টা ভাবতেও ভালো লাগছিলো।কোনোভাবে এমনটা কি আমার সাথেও হতে পারতো?হয়তো পারতো।শুদ্ধ কতো ভালোবাসেন আমাকে।আম্মু,আব্বুও।কিন্তু আমি আমার জন্য শুধুশুধু কেনো সবাইকে…
শুদ্ধ বললেন,
-হাহ!ব্যাপারটা ওয়াইরড্ তাইনা?যারা লাইফটাইম একসাথে থাকার প্লান করছে,তাদের মধ্যে ক্ষনিকের বিচ্ছেদের কতো ভয়!এই আজব জিনিসটাই ভালোবাসা!
-হুউউউম।তা শুদ্ধ ভাইয়া?কোথায় যেতে চাচ্ছো বউকে নিয়ে?বললে না?
-অফিসিয়াল এতোসব ঝামেলার মধ্যে বেরোতে চাচ্ছি না কোথাও।সিয়া?তুই কি….
-ন্ না।আমারো কোথাও যাওয়ার ইচ্ছে নেই।
কথা এ অবদিই থামলো।কিন্তু সবার দিকে তাকিয়ে একটু অদ্ভুত লাগছিলো।শুদ্ধ বাদে মুচকি মুচকি হাসছে সবাই।কিন্তু কেনো?কি এমন কথা হলো এখানে?আমার হাসি আসছে না কেনো তবে?
__________
অফিসের জন্য বেরিয়ে গেছেন শুদ্ধ।বইখাতা কিছুক্ষন ঊল্টেপাল্টে বিদ্যানদী ভাব ধরে বেরিয়ে এলাম রুম থেকে।সোজা মাহির রুম।কিছুক্ষন একথা সেকথা বলতেই ফোন বেজে উঠলো আমার।আননোন নাম্বার।কেটে গেলো কয়েকবার।আবারো কল আসলো।মাহি বললো,
-রিসিভ করো।হয়তো কারো আর্জেন্ট!
কিছুটা সময় নিয়ে রিসিভ করে সালাম দিলাম।ওপাশে পুরুষালি কন্ঠ।সালামের উত্তর নিয়ে বললেন,
-কেমন আছো ইনসিয়া?
-জ্বী,আলহামদুলিল্লাহ ভালো।আপনি…
-আয়ান চৌধুরী।
অপ্রস্তুত হয়ে পরলাম আমি।এই লোকটা আমার নাম্বার কোথায় পেলো?আমাকে কেনো কল করেছে?
-হ্যালো?
-জ্ জ্বী ভাইয়া।বলুন।
-ফ্রি আছো?
-জ্ জ্বী মানে….
-একটা গল্প শুনবে?
কপাল কুচকে আসলো আমার।গল্প শুনাতে ফোন করেছেন উনি আমাকে?জোরপুর্বক হেসে বললাম,
-ক্ কিসের?
-একজনের জীবনের গল্প।
-আসলে,ভাইয়া….
-প্লিজ!অল্প একটু সময় নেবো!
ভালো লাগছিলো না তার কথা শুনতে।কিন্তু ফোনটা কেটে দিলে বিষয়টা বাজে দেখাবে।পাশে মাহি অতিআগ্রহ নিয়ে বসে।শুনেছে হয়তো আয়ান চৌধুরীর গলা।এখন কথা না বললে যদি শুদ্ধ জানতে পারেন কোনোভাবে,কষ্ট পাবেন উনি।আয়ান বলতে তো সে আবার…বললাম,
-জ্ জ্বী ঠিক আছে।বলুন।
-ভাইয়ু জানিস?ছেলেটা একদম আলাদা।সবার থেকে আলাদা।হাজারজনের মধ্যেও চোখ পরে যাবে তারদিকে।শত মানুষের ভীড়েও তার হাসিটা চোখে পরবে তোর।জানিস,ছেলেটা কেমন যেনো।সামনে আসলে সাথে করে কিছু ম্যাজিকাল মোমেন্টস্ নিয়ে আসে।যখন সে সামনে আসে,ভেতরে এক অদ্ভুত সুখ অনুভুত হয়।চারপাশ আনন্দে আন্দোলিত হতে শুরু করে।প্রথমবার যখন তাকে দেখেছিলাম,তার গাড়ি রাস্তার কাদায় জরিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো আমাকে।কিন্তু তার কথা,ব্যবহার,সেদিনই ভালোবাসায় জরিয়ে দিয়েছিলো আমার মনকে।
যখন সে কথা বলে,বাকা হেসে আমায় চাদ সওদাগর বলে ডাকে,প্রতিবার,প্রতিবার জানিস তো ভাইয়ু?আমার মনে হয় আমি হয়তো সত্যিই তার মনের সওদাগর হয়ে উঠেছি।যখন এসে শাষনের মতো করে বলবে,এইযে সওদাগর,বিদেশ থেকে কি সওদা করেছো হুম?এইসব লেইট নাইট পার্টির সংস্কৃতি?এইসব হাজারটা বন্ধুবান্ধবী বানানো?এগুলো কিন্তু এদেশে নট আলাউড!তখন আমার মনে হতো জানিস ভাইয়ু,মনে হতো,এই শাষনটার জন্য আজীবন সবটা সওদা করতে রাজি আমি।সবটা!জানিস ভাইয়ু?সে মানুষটা কিন্তু….
শেষ হয়নি তার বলা।কান থেকে নামিয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে রইলাম ফোনের দিকে।হুট করে একটা মেয়ের আওয়াজে এতোগুলো কথা শুনে অবাক হলাম।তবে এটা বুঝতে সমস্যা হলো না কথাগুলোতে কারো জন্য অনেকটা ভালোলাগার বসবাস।
-কি বুঝলে ইনসিয়া?
-ক্ কে ইনি?
-আমার বোন।মুনিয়া।
-ওনার….
-যাকে এতোটা ভালোবেসেছিলো,সে ওকে রিফিউজ করেছে ইনসিয়া।তবুও মুন বিশ্বাস করতো,একদিন সে ঠিক তার ভালোবাসা বুঝবে।কিন্তু তা হয়নি।আমার বোনের এতো ভালোবাসাকে ফিরিয়ে দিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে সে ইনসিয়া!বিয়ে করে নিয়েছে!তার বিয়ের দিনই বোন আমার সুইসাইড এটেমপ্ট করে।মেন্টাল ট্রমাটা এতো বেশি ছিলো ওর,আমার ফুলের মতো ফুটফুটে বোন এখন মেন্টাল এসাইলামে।শুনতে পাচ্ছো তুমি ইনসিয়া?মুনিয়া এখন একজন মানসিক রোগী!সারাদিন শুধু সেই ছেলেটাকে নিয়ে এভাবেই বলতে থাকে।বলার কোনো শেষ নেই ওর।সেই ছেলের বিয়ে হয়েছে,ও…ও এটাও মানতে পারে না।শুনতে চায় না।বলা যায়,কানেই তোলে না।এখনো বিশ্বাস ওর,সে ফিরবে।ওর কাছেই ফিরবে।
কি দোষ ছিলো ওর বলো ইনসিয়া?কি দোষ ছিলো?শুধু ভালোবেসেছিলো।অনেকটা ভালোবেসেছিলো।তার ফল এভাবে ভোগ করতে হচ্ছে ওকে।আমি ভাই হয়ে কি করে সবটা মেনে নেবো বলো?কি করে?কি করে দেখবো নিজের বোনকে এভাবে কুড়ে কুড়ে মরতে?বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই যাকে কোনোদিন কোনোকিছুর অভাব অনুভব করতে দেই নি।কি করে তার জীবনে এতোবড় অভাব রাখি আমি বলো?ভালোবাসার অভাব রাখি কি করে?বলো ইনসিয়া?বলো?
কি বলা উচিত আমার কিছুই বুঝে উঠছিলাম না।আয়ান আবারো বললেন,
-আমি ভেবে নিয়েছি জানোতো ইনসিয়া।সেই ছেলেকে যে করেই হোক,আমি ফিরিয়ে দেবো ওর জীবনে।যে করেই হোক!
এবার কোনো অজানা ভয় হতে লাগলো আমার মনে।একটা শুকনো ঢোক গিলে বললাম,
-ছ্ ছেলেটা ক্ কে?
-জানলে কি করবে?ওকে মুনিয়ার জীবনে ফিরিয়ে দেবে?তুমি পারবে ইনসিয়া!প্লিজ ফিরিয়ে দাও ওকে।ছেলেটা শ্….
বাকিটা শোনার সাহস ছিলো না আমার।চেচিয়ে বলে উঠলাম,
-মুনিয়ার ভালোবাসাটা একপাক্ষিক ছিলো ভাইয়া।আর সে মানুষটাও বিবাহিত!তার বউ আছে,সংসার আছে।সে তার জীবনে…
আমার কথা শেষ করতে না দিয়ে এবার আয়ান ভাইয়া চেচিয়ে উঠলেন।বললেন,
-ও!তাহলে তোমাকে বলার মানে সেই একই দাড়ালো?তুমিও এটাই বলবে?আমার বোনের দিকটা তুমিও ভাববে না!বেশ!ভাবতে হবে না কাউকে!আমিই ভেবে নেবো!এন্ড ইয়েস,যেভাবে ভেবেছি,সবটা ঠিক সেভাবেই হবে।দেখে নিও!জাস্ট ওয়েট,এন্ড ওয়াচ্!
ফোনটা কেটে গেলো।একছুটে রুমে চলে আসলাম আমি।ভয় করছে।শুদ্ধকে নিয়ে প্রচন্ড ভয় করছে আমার।বারবার মনে হতে লাগলো,যদি মুনিয়ার বলা সেই ছেলেটা শুদ্ধ হয়ে থাকে?কি করবে তবে এই আয়ান চৌধুরী?এ কারনেই কি শুদ্ধর প্রতি তার ব্যবহারের ধরন এমন?শুদ্ধ কেনো তবে এখনো এভাবে বিহেভ করেন ওনার সাথে?সবটা কি আড়ালে ওনার?নাকি পুরোটাই জানেন?আর ঠিক কি কি রহস্য আছে শুদ্ধর মাঝে?তার এই রহস্যর বেড়াজালে কোনোভাবে আমাদের সম্পর্কটা…
না।শুদ্ধকে এই মুখোশধারী বন্ধুর থেকে সাবধান করতে হবে আমাকে।এই লোক পাগল হয়ে গেছে তার বোনের মতোই।যে কারো,যে কোনো কিছু করে দিতে পারে।আর যাই হোক,কোনোভাবে আমার আর শুদ্ধের সম্পর্কে কোনো আঁচ আসতে দেবো না আমি।কোনোভাবে,কোনো ক্ষতি হতে দেবো না শুদ্ধর!কিছুতেই না!
#চলবে….