তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় ২ পর্ব-৩৫+৩৬

0
650

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#সিজন_০২
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
৩৫.
মায়ানীড়ে আজ সবাই একসাথে হয়েছে শান্তা নিশান ওম জাকিয়া বেদ সারা সারিফ রুহি বেলা সাঁঝ। সাঁঝ আর বেলার সম্পর্কে জানার পর থেকেই প্রায় সময়ে এইভাবে সবাই একত্রিত হয়ে আড্ডা দেয় মায়ানীড়ে এসে। তবে অন্য দিনের তুলনায় আজকের আড্ডাটা আরো একটু বেশি জাঁকজমক। তাদের প্রজেক্টের কাজ কম্পিলিট হতে আর দুদিন বাকি এতবড় একটু প্রজেক্ট টানা কয়েকমাস দিয়ে কাজ করার পর সফল হতে চলেছে সেটা নিয়েই সবাই বেশ উত্তেজিত তাছাড়া সাঁঝ নিজেও কিছু বলতে চায় তাদের সেই নিয়ে সবাই আরো বেশি উৎসুক হয়ে আছে।

-“জিজ তুমি আসলে আমাদের কি সুখবর দিতে চাইছ সেটাতো বলো আর কত ওয়েট করাবে। শান্তা বলে ওঠে।

-” হ্যাঁ ঠিক তাই, ভাই তুমি কি বলতে চাইছ সেটা বলে ফেলো জলদি করে আর অপেক্ষা করতে পারছিনা আমরা। সারা বলে ওঠে।

-“হুম আমি অবশ্যই এটা বলব তবে তার আগে তোর কি উচিত নয় যে তোর কিছু কথা আমাকে বলার ছিল! সাঁঝ ভ্রু কুঁচকে বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনে সারা কিছুটা হকচকিয়ে যায় তার ভাই তাকে কি বলার কথা বলছে তারমানে ভাই কি এটা যেনো গেলো তার আর বেদের মধ্যে কিছু চলছে। সারা হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে থাকে।

-“বেদ তুমি কিছু বলতে চাও আমাকে!! না মানে তোমার কি মনে হচ্ছেনা যে এমন কিছু কথা রয়ে গেছে যেটা আমাকে বলা জরুরি? সাঁঝ বেদের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” ম্ মা মানে আ আস আসলে!! বেদ নিজেও কিছুটা হকচকিয়ে যায় সারার মত।

এদিকে সাঁঝের কথা শুনে আর সারা আর বেদকে এইভাবে চমকে যেতে দেখেই বেলা ভ্রু কুঁচকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে থাকে আর এদিকে সারা বুঝতে পারে তার ভাই সব কিছুই জেনে গেছে তার আর বেদের ব্যাপার বেদের অবস্থাও একদম একই,সাঁঝ ওদের দুজনের দিকে তাকায় ।

-“তোমার মা বাবা কে আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেবে প্রজেক্টের কাজ কম্পিলিট হয়ে গেলে দ্রুত কথাটা মনে থাকে যেনো, নাহলে আমার বোনের সাথে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম করার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাবে। সাঁঝ শীতল কন্ঠে বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনেতো এবার সবার কাছে সবটাই পরিস্কার হয়ে যায় যে এতক্ষণ কি কথা চলছিল বেদতো বিস্ময়ে হা হয়ে কোনো কথা বলতে না পেরে মাথা নেড়ে দেয় আর সারা লজ্জায় সাঁঝের কাঁধে মুখ গুঁজে দেয় জড়িয়ে ধরে, সাঁঝ সারার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় নিঃশব্দে হেসে যেটা কেউ বুঝতে না পারলেও বেলা ঠিকই লক্ষ করেছে বলতে গেলে সাঁঝের প্রতিটা কাজ প্রতিটা চাল চলন বেলা খুব করে জানে তার চেনা তাই বুঝতে অসুবিধা হয়নি।

-“বাহ সারু তুইতো দেখি ডুবে ডুবে পানি খাচ্ছিলি না মানে প্রেম করছিলিস হুম কি ব্যাপার হ্যাঁ আমাকেও একবার জানালিনা। সারিফ বলে ওঠে।

-” ডুবে ডুবে প্রেম কি শুধু সারা করে গেছে সারিফ আর কেউ করেনি বলছিস? সাঁঝ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনে সারিফ হকচকিয়ে যায় এবার সাঁঝের কথার তীর যে তার দিকে ছুটে আসছে সেটা বুঝতে পারে সারিফ রুহি মাথা নিচু করে বসে যায় লজ্জায় তার গাল দুটো লাল হয়ে যায় বলতে গেলে তারা এখনও অফিসিয়াল ভাবে প্রেমিক প্রেমিকা নয় তবে তারা যে ডুবে ডুবে একে অপরের মাঝে ডুবে গেছে আর ডুবে ডুবে প্রেম করছে সেটা তারা নিজেরাও জানে তাই সাঁঝের একটু আগের সারার ব্যাপার আর এখন সারিফকে উদ্দেশ্য করে বলতে তার মুখ লাল হয়ে যায়।

-“রুহি তুমি মাথা কেনো নিচু করে নিলে! বাই এনি চান্স তোমার কি লজ্জা লাগছে! উম লাগতে পারে না লজ্জা না পাওয়ার কিছু নেই ডুবে ডুবে পানি খেলে লজ্জা তো লাগার কথা। সাঁঝ ফিচেল কন্ঠে বলে ওঠে।

বেলা সাঁঝের কথা শুনে চোখ ছোটো ছোটো করে সাঁঝের দিকে তাকায় এই লোক যে এমন ভাবে সবার সাথে কথা বলতে পারে ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছে বেলা এতদিন তার সাথে এইভাবে কথা বললেও সে কোনো দিন কখনো কারোর সাথে এইভাবে কথা বলতে দেখেনি তাই অবাক এর উপরে অবাক হয়ে যাচ্ছে গুরু গম্ভীর লোকের এমন ধারা কথা শুনে। তবে বেলা তার থেকেও বেশি অবাক হয়েছে বেদ সারা আর রুহি সারিফের কথা শুনে বেলা সারা আর বেদের উপর কিছুটা সন্দেহ করে থাকলেও সেটা যে সত্যি ছিল বুঝতে পারে। সাঁঝ বেলার দৃষ্টি দেখে বুঝতে পারে তার এইরকম আচরণ দেখেই বেলা অবাক হয়ে গেছে, তাই সাঁঝ বেলার দিকে একটু সরে বসে বেলার কোমরে হাত রেখে নিজের দিকে আলতো টেনে নেয়। বেলা সাঁঝের এই কর্ম কাণ্ডে অবাক চোখে সাঁঝের দিকে তাকালে দেখতে পায় সাঁঝ তার চোখের দিকে নেশাক্ত চোখে তাকিয়ে আছে এটা দেখেই বেলার সারা শরীরে শিহরন বয়ে সাথে সাথে অন্য দিকে চোখ সরিয়ে নেয় বাকিদের দিকে তাকায় দেখে একে অপরের দিকে তাকাতেই তারা ব্যস্ত এবার বুঝে বেলা সাঁঝ সবার এই অন্যমনস্কতার সুযোগ নিয়েছে।

-“একটা কথা কি জানোতো আমার সংস্পর্শে থাকা সবার ব্যাপারে সব ডিটেইলস আমার কাছে থাকে এমনকি আমার শত্রুদের পর্যন্ত। এটা নিশ্চয় তোর জানা উচিত সারিফ। সাঁঝ বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনেই সবাই সচকিত হয়ে সাঁঝের দিকে তাকায় আর সারিফতো মাথা চুলকাতে থাকে তার বুঝতে বাকি নেই তার ভাই সব কিছুই জানে, কিন্তু বাকিরা ওম জাকিয়া নিশান শান্তা ভ্রু কুঁচকে তাকায় সাঁঝের দিকে তার বলা কথার মানে বোঝার জন্যে সবার সব খবর তার কাছে আছে মানে? সাঁঝ সবার মুখের দিকে একবার তাকিয়ে দেখে নেয় সাথে তার মুখে ফুটে ওঠে বাঁকা হাসি।

-“তাই কে ডুবে ডুবে পানি খাচ্ছে আর কে হাবু ডুবু খাচ্ছে তার সব খবর কিন্তু আমার কাছে আছে। বাঁকা হেসে আবারো বলে ওঠে সাঁঝ।

সাঁঝের কথা শুনে এবার একে অপরের থেকে চোখ এড়িয়ে যায় তাদের সাঁঝের কথার মানে বুঝতে আর বাকি নেই তাদের সবার খবর যে সাঁঝ ইতি মধ্যে জানে সেটা বলার বাকি থাকেনা যতো তারা একে অপরের কাছে না স্বীকার করুক তারপরেও সাঁঝের চোখে থেকে ফাঁকি দিতে পারিনি। তাদের কি কপাল তারা আজ কোথায় সাঁঝের কথা জানতে চাইছিল সেখানে সাঁঝই তাদের সব কথা ফাঁস করে দিয়েছে। একটু আগেই তারা সাঁঝের কথা শোনার জন্যে যতোটা উত্তেজিত আর উৎসুক হয়েছিলো এখন তার কানাকড়িও বেঁচে নেই তাদের মধ্যে সব কিছু ফিঁকে হয়ে গিয়েই এখন চোখের আড়াল হতে চাইছে একে অপরের থেকে।

-“প্রজেক্টের কাজ কম্পিলিট হয়ে যাওয়ার পরই আমি কিন্তু এই ডুবে ডুবে চলতে থাকা প্রেমের অফিসিয়ালি ভাবে ভেসে ভেসে প্রেম দেখতে চাই মানে এইযে আমাদের মত বিয়ের পরের প্রেম কাহিনী দেখতে চাই কথাটা যেনো মনে থাকে। সাঁঝ বলে ওঠে।

সাঁঝের কথা শুনে বেলার সাঁঝের হাতে চিমটি বসিয়ে দেয় আর বাকিরা মুখ লুকিয়ে নেয় সাঁঝের এইরকম কথা যেনো তারা বিশ্বাস করতে পারছেনা রাগী গম্ভীর লোক কিনা এইভাবে তাদের সাথে মজা নিচ্ছে, সবার ভাব ভঙ্গি দেখে বেলার দিকে তাকিয়ে ইশারায় বাকিদের দেখায় বেলা সাঁঝের চোখের দিকে তাকিয়ে নিয়ে বাকিদের দিকে এতক্ষণ সে নিজেও ওদের পর্যবেক্ষণ করছিলো আর এখনতো ওদের মুখের অবস্থা দেখে তারও আর বোঝার বাকি নেই কিছু যে এখানে থাকা প্রত্যেকেই ডুবে ডুবে জল খাচ্ছে মানে প্রেম করে যাচ্ছে। কয়েকমাস আগেই এরা নিজেরাই তার উপর চড়াও হয়েছিলো তার আর সাঁঝের খবর কাউকে জানায়নি বলে আর এখন সেই তারাই এই অবস্থায় তাহলে এখন বেলার এদের সাথে কি করা উচিৎ?

চলবে…?

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#সিজন_০২
#সাবিয়া_সাবু_সুলতানা
৩৬.

-“সাঁঝ তোমার সাথে দিশার বিয়ের ব্যাপারটা এবার সেরে ফেলতে চাইছি। সামাদ সাহেব সাঁঝের দিকে তাকিয়ে নম্র ভাবে বলে ওঠে।

বাড়িতে হঠাৎ করেই বোমা পড়ার মত বিস্ফোরণ করে গেছে সামাদ সাহেবের এই কথা শুনে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে আছে সারা সারিফ তাদের বাবার, তাদের বাবা যে এইরকম একটা কথা ভাবছে আর সেটা বলতেও পারে স্বয়ং সাঁঝকে ভেবেই অবাক লাগছে তাদের! তবে সাঁঝ একদম কুল অ্যাটিটিউড নিয়ে বসে আছে তাকে দেখে মনে হয়না সে এই মুহূর্তে তার বাবার বলা কোনো কথা শুনতে পেয়েছে বলে। সামাদ সাহেব নিজেও কিছুটা আতঙ্কে আছে সাঁঝের প্রতিক্রিয়া কি হবে এই নিয়ে তিনি যথেষ্ট সাহস যুগিয়ে সাঁঝকে কথাটা বলেছে, আর এখন এই সাঁঝের এমন চুপ করে থাকাটা আরো বেশি আতঙ্কজনক মাঝে মাঝে তিনি নিজেও ভেবে পাননা যাকে দেখলে সবাই আগে ভয় পেতো এখন সেই কিনা তার ছেলেকে ভয় ব্যাপারটা ভীষণ হাস্যকর হলেও একদম সত্যি কথা। ড্রইং রুমে সারা সারিফ সাঁঝ একদিকে বসে আছে আর তার সামনে সামাদ সাহেব তার পাশেই মিসেস দোলা মির্জা আর একদম সাঁঝের সোজাসুজি ভাবে বসে আছে দিশা যে এখন বেহায়ার মত করে তাকিয়ে আছে সাঁঝের দিকে। দিশার এই বেহায়ার মত নির্লজ্জ ভাব আচরণ দেখলেই সারা রেগে যায় এর এই কাজের জন্যে কত অপমানিত হয় তারপরে আচরণের কোনো পরিবর্তন আসেনা যেই কি সেই কথায় আছে না স্বভাব যায়না মলে দিশারও সেই অবস্থা। সারা সারিফ ভ্রু কুঁচকে তার বাবার দিকে একবার দেখেতো আরেকবার তেরছা নজরে দোলা মির্জার দিকে তাকিয়ে দেখছে। সামাদ সাহেবের পাশে বসে দোলা মির্জা খুশি খুশি হয়ে তাকিয়ে আছে।

-” অনেক আগের থেকেই তোমার আর দিশার বিয়ের ব্যাপারে কথা বলা হয়েছিল আর এখন যেহেতু তোমাদের বিয়ের বয়েস হয়ে গেছে তাই আর দেরি করে লাভ নেই বিয়ে নিয়ে। সামাদ সাহেব ঢোক গিলে গলা ভিজিয়ে নিয়ে বলে ওঠে তার ছেলে ও মেয়ের তাকানো দেখে।

-” অনেক আগের থেকে কথা হয়েছিলো! মানেটা কি ড্যাড! এটা কোনো কথা হলো তোমরা আগের থেকে ঠিক করে রেখেছ সেটা যে তাদের পছন্দ হবে তার তো কোনো মানে নেই তাইনা? সারা বলে ওঠে।

-” আর তাছাড়া তোমরা যখন ঠিকই করে রেখেছিলে তাহলে আগেই সেই কথা বলে দিতে হয় তাহলে তারা ছোটো থেকে এটা জেনেই তো বড় হতে পারে যে তাদের বিয়ের ঠিক হয়ে আছে তাহলে অন্য কাউকে পছন্দ করতে পারবেনা বা কারোর কথা ভাববেওনা না হলে হঠাৎ করে বিয়ে ঠিক বললে তো হয়না। সারিফ বলে ওঠে।

-“হ্যাঁ একদম, এটা তো আগেই তুমি ভাইকে বলে দিতে পারতে যে দিশার সাথে বিয়ের কথা হয়ে আছে, এখন যদি ভাই অন্য কাউকে পছন্দ করে থাকে বা ভালোবাসে তাহলে কি হবে? সারা রেগে বলে ওঠে।

-” আসলে বিয়ের কথা বলতে দোলা আমাকে বলেছিলো যাতে দিশার সাথে সাঁঝের বিয়ে হয় তাহলে আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে তাই আমিও বলে রেখেছিলাম। সামাদ সাহেব নিজের উক্তি বলে ওঠেন।

-” তোমাকে কে বললো ওরা একে অপরকে পছন্দ করেনা আমার দিশা তো সাঁঝকে পাগলের মত ভালোবাসে। দোলা মির্জা মুখ বাঁকা করে সারার দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” আপনার দিশা পাগলের মত ভালোবাসলেতো হবেনা আমার ভাইকেও আপনার দিশাকে পাগলের মত নাহলেও ভালো মানুষের মত এট্টু এট্টু ভালোবাসলে তবু কথা ছিল তাইনা! সারা বিদ্রুপ করে বলে ওঠে।

-” আরে সাঁঝ বাবা কি কখনো বলেছে দিশাকে ভালো লাগেনা? শুধু দিশাইতো একটু বেশি জ্বালাতন করে সাঁঝ বাবাকে তাই একটু বিরক্ত থাকে। দোলা মির্জা তাড়াতাড়ি করে নকল হাসি টেনে বলে ওঠে।

-” হ্যাঁ দেশলাই কাঠির কাজই তো জ্বলে ওঠে। সারা দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।

-“সাঁঝের যদি কোনো পছন্দ থাকে বা কাউকে ভালোবাসে তাহলে আমি কোনো জোর করবো না কারণ আমার কথার থেকেও বেশি জরুরি তোমাদের ভালো থাকা। সামাদ সাহেব শান্ত হয়ে বসে থাকা সাঁঝের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।

-” ভাইয়ের কোনো পছন্দ না থাকলেও আমার আছে, আমি ভাইয়ের জন্যে মেয়ে দেখে রেখেছি যদি বিয়ে হয় তাহলে সেই মেয়ের সাথে হবে। সারা কঠিন চাহনি দিয়ে বলে ওঠে সাঁঝকে চুপ করে থাকতে দেখে।

-” এটা কেমন কথা সারা সাঁঝ বাবার পছন্দ থাকলে তবু কথা ছিল কিন্তু তোমার পছন্দ কেন যখন আগের থেকেই ওদের বিয়ের কথা ঠিক হয়ে আছে। দোলা মির্জা বলে ওঠে।

সাঁঝকে চুপ চাপ হয়ে বসে থাকতে দেখে সামাদ সাহেব কিছুটা বিচলিত হয়ে পড়েন এতগুলো কথা হলো অথচ সাঁঝ কোনো কথাই বললো না আর না কোনো প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে একদম শান্ত হয়ে বসে আছে যেটা তার স্বভাব বিরুদ্ধে। এদিকে সারাও রাগে ফায়ার হয়ে যাচ্ছে সাঁঝকে কোনো কথা বলতে না দেখে।

-” সাঁঝ তোমার কি কোনো পছন্দ আছে? থাকলে আমাকে জানিয়ে দিও নাহলে দিশার সাথে বিয়ে নিয়ে তোমার কি রায় সেটাও জানিয়েও আমি শুধু আমার কথা বলেছি বাকি সিদ্ধান্ত তোমার হাতে। সাঁঝের কোটে বল ঠেলে দিয়ে বলে ওঠে।

সামাদ সাহেবের কথা শুনে সাঁঝের মুখে বাঁকা হাসি ফুটে ওঠে, সামাদ সাহেবের কথার এই মানে দাঁড়ায় যে আমি আমার সিদ্ধান্ত আমার কথার দাম সব কিছুই তোমার হাতে দিয়ে দিয়েছি এবার তুমি ঠিক করবে তুমি কি করবে তবে এতে আমার কোনো বাধা নেই, তিনি ঠিক সরাসরি না বললেও ঘুরিয়ে ঠিক যা বলেছে সেই কথার এই মানে দাঁড়ায়।

-” আমার কোনো পছন্দ নেই, আপনার কোনো চিন্তা করতে হবেনা এই নিয়ে আমি কালকে পার্টিতে নিজেই বিয়ের ব্যাপারে কথা বলবো। সাঁঝ একদম শান্ত ভঙ্গিতে বলে ওঠে ফোন চাপতে চাপতে।

-” আমি বলেছিলাম না যে সাঁঝ বাবার কোনো পছন্দ থাকতেই পারেনা। দোলা মির্জা খুশিতে বলে ওঠে।

সাঁঝের বলা কথা শুনে সারা রাগে অগ্নি শর্মা হয়ে তাকিয়ে আছে সাঁঝের দিকে তার মাথায় আসছে না তার ভাই কি করে বলতে পারলো যে তার কোনো পছন্দ নেই, বেলা যে তার বউ তার ভালোবাসার প্রেমিকা বউ সেটা কি তার ভুলেই মেরে দিয়েছে নাকি দিশার নাটকে মজে গেছে কি চলছে তার ভাইয়ের আর কি বলবে বিয়ের ব্যাপারে কালকে পার্টিতে? সারা নিজের মনে ভেবে যাচ্ছে।

-“কালকেই আমার একটা বড় প্রজেক্ট শেষ হতে চলেছে তাই বড় করে পার্টি হবে সেটাতো জানেন আপনারা তাছাড়াও আরো একটা বড় সারপ্রাইজ আপনাদের সবার জন্যে অপেক্ষা করছে আর আমার বিয়ের ব্যাপারে কথা মানে বুঝতেই পারছেন কতটা গ্র্যান্ড হওয়া উচিৎ পার্টিটা আর কেমন হতে চলেছে তাই চিন্তার কোনো কারণ নেই কালকেই আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো। সাঁঝ বাঁকা হেসে বলে ওঠে ।

সাঁঝের কথা শুনে সারা রাগী চোখে তাকিয়ে আছে আর সারিফ হতভম্ব হয়ে বসে আছে দোলা মির্জা আর দিশাতো পারেনা এই মুহূর্তে তাদের খুশির জাহির করতে লুঙ্গি ডান্স দিয়ে দেয়। আর সামাদ সাহেব তীক্ষ্ণ চোখে সাঁঝের দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা চালায় কি চলছে তার ছেলের মাথায় তাহলে কি তার ছেলে দিশাকে বিয়ে করতে রাজি আছে? তাহলে কি তার কথায় রাজি হয়ে গেছে সাঁঝ ভাবতে থাকে সামাদ সাহেব। সাঁঝ সবার মুখের দিকে একবার করে তাকিয়ে নিয়ে ফোন হাতে নিয়ে উঠে চলে যায় আর পিছনে ফেলে যায় সবাইকে রাগী আর হতভম্ব করে দিয়ে। কি হতে চলেছে তাহলে কালকে পার্টিতে? আর কি চলছে সাঁঝের মনে?

চলবে…?

ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন..। নিজেদের মতামত জানাবেন ।