#LoVe_Effect
#writer : Sintiha Eva
#part : 11
🍁🍁🍁
ভার্সিটির মাঠে শ্রাবনী সহ সবার সামনে কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছে ঝুমু ভার্সিটির মাঠে পা রাখার সাথে সাথে একটা মেয়ে এসে এভাবে কান ধরে সরি বলায় শ্রাবনী নীর দুজনই প্রচন্ড অবাক হয়। শ্রাবনী নীর একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে তখনই ঝুমু বলে উঠে
ঝুমুঃ প্লিজ আপু আমাকে মাফ করে দাও নয়তো মাহির ভাইয়া আমাকে ভার্সিটি থেকে T.C. দিয়ে বের করে দেবে
শ্রাবনীঃ মানে কিসের মাফ চাইছো তুৃমি আর কে তুমি
ঝুমুঃ আপু আসলে ভাইয়া কে আমিই সেদিন লেটার টা দিয়েছিলাম আর উনি আমি ভেবে তোমাকে মেরেছে আর তারপর দিন আসার পর মাহির ভাইয়া আমাকে প্রচুর বকে আর বলে উপস্থিত সবার সামনে তোমার কাছে মাফ চাইতে নয়তো আমাকে
শ্রাবনীঃ বুঝলাম ইট’স ওকে যাও তুমি আর তোমার মাহির ভাইয়া কে বলে দিও এতে তোমার কোনো দোষ নেই নিজের দোষ অন্যের উপর আর না চাপাতে
নীরঃ হুহহ নাটক করতে আসছে এখন যাও তো
ঝুমু মাথা নাড়িয়ে চলে যায় শ্রাবণী আর নীর নিজের ক্লাসে গিয়ে যে যার জায়গায় বসে পড়ে ইভা আর সিনথিয়া এসে শ্রাবণী দের সাথে আড্ডা শুরু করে দেয় হঠাৎ কোথাথেকে রুবি নামক একজন ক্লাসমেট এসে শ্রাবণী কে ঠেস মেরে বলে
রুবিঃ আজকাল কার মেয়েরা লাজ-লজ্জা সব খেয়ে ফেলেছে নয়তো ভার্সিটির বড় ভাইকে কেউ এসব প্রপোজ করে আবার সবার সামনে থাপ্পড় খেয়ে ধেয় ধেয় করে ভার্সিটি এসে নির্লজ্জ
রুবির ঠেস মারা কথা শুনে নীর রেগে কিছু বলতে নিলে শ্রাবনী নীরের হাত চেপে ইশারায় না করে নীর ও দমে যায় ইভা আর সিনথিয়া বিরক্তি নিয়ে রুবির দিকে তাকিয়ে বকতে বকতে নিজ-প্রতিপক্ষ জায়গায় গিয়ে বসে নীর কটমট দৃষ্টিতে রুবির দিকে তাকিয়ে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়
দ্বিতীয় ক্লাস শেষ করে দুইটা ক্লাস গ্যাপ দেওয়ায় নীর আর শ্রাবনী ক্লাস থেকে বেরিয়ে ক্যান্টিনের সামনে যায় শ্রাবনী আর নীর গিয়ে টেবিলে বসে কোক ওর্ডার করে দুজন খেতে খেতে গল্প করতে করতে ক্যান্টিন থেকে বেরিয়ে যায় হঠাৎ কারোর সাথে ধাক্কা লেগে শ্রাবনীর হাত থেকে কোক ছিটকে কিছুটা সামনে থাকা ব্যক্তির গায়ে পড়ে বোতল টা নিচে পড়ে যায়। সামনে থাকা মেয়ে অগ্নি দৃষ্টি নিয়ে শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে বলে
রুবিঃ ইউ স্টুপিড এটা কি করলি চোখ কি বাড়িতে রেখে আসিস নাকি সারাক্ষণ ছেলেদের দিকে চোখ থাকে বেয়াদব
শ্রাবনীঃ আরে আশ্চর্য আমি কি ইচ্ছে করে তোমাকে ধাক্কা দিয়েছি আর বিহেভিয়ার ঠিক করো
শ্রাবনীর কথায় রুবি শ্রাবনীকে ধাক্কা দিয়ে বলে
রুবিঃ এই বিহেভিয়ার ঠিক না করলে কি করবি মারবি আমাকে হা মার তাহলে কে রে তুই কি ভাবিস নিজেকে একেতেই সিনিয়র দের প্রপোজ করে মানুষের সামনে থাপ্পড় খাস আবার আসিস বড় বড় কথা বলতে
শ্রাবনী কিছু বলার আগে নীর রুবির হাত ধরে পেছন মুছড়ে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে হালকা চেচিয়ে বলে
নীরঃ ও নিজেকে কিছুই ভাবে না তুই নিজেকে কি ভাবিস এই ভার্সিটির লিডার ভাবিস নাকি লেডি ডন আর ওকে নির্লজ্জ বলার তুই কে রে ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারের কথা ভুলে গেছিস কলেজ ভর্তি মানুষের সামনে যখন তোকে সোয়াদ ভাইয়া পর পর তিন টা থাপ্পড় দিয়ে অপমান করেছিলো আর ওর চোখ সারাদিন ছেলেদের দিকে থাকে কিনা এটা তোর না জানলে ও চলবে কিন্তু তুই এটা জানিস তুই অত্যন্ত পরিমানের একটা বেয়াদব মেয়ে আর কানে যদি প্রবলেম থাকে পাশেই কানের ডক্টরের ক্লিনিক আছে গিয়ে কান টা ঠিক করে নিস সাজ্জাদ ভাইয়া সেদিন কি বলেছিলো শুনিস নি লেটার টা শ্রাবনী দেয়নি অন্যকেউ দিয়েছিলো তোকে যদি আর কোনো দিন আমার কিংবা শ্রাবনীর আশেপাশে ও দেখি না আই রিয়েলি কি*ল ইউ জাস্ট কি*ল ইউ রাবিস কোথাকার
নীরের চোখমুখ দেখে শ্রাবণী ঘাবড়ে যায় শ্রাবণী নীরকে বার বার রুবিকে ছাড়তে বলছে কিন্তু শ্রাবনীর কথা নীরের কানেও পৌঁছাচ্ছে না রুবি আহতসুরে বলে উঠে
রুবিঃ নীর ছাড়ো লাগছে আমার
নীর তাচ্ছিল্যের সুরে বলে
নীরঃ তোকে কি আমি আদর করার জন্য ধরেছি কোন দেশের রাষ্ট্রপতি রে তুই যে শ্রাবনী কে এসব বলিস আজ অবধি আমিই ওর গায়ে কোনোদিন হাত তো দূরে থাক এভাবে কথা বলিনি আর তুই ওকে এসব ফালতু কথা বলে যাবি আর তোকে আমি সুরসুর করে ছেড়ে দেবো একটা কথা মাথায় রাখিস মুখ শুধু তোর আছে এমন না আল্লাহ মুখ সবাই কে দিয়েছে তাই তুই ভাবিস না তুই শুধু বলে যাবি আর আমরা বাধ্য মেয়ের মতো শুনবো। কথা আমরা ও বলতে পারি পার্থক্য একটায় তোর মতো এতো নিচে নামতে পারি না। ক্লাসে একবার বলেছিস কিন্তু কিছু বলিনি তাই বলে এবারও ছেড়ে দেবো এটা ভাবা টা তোর মস্তবড় ভুল ছিলো আমি তোকে আজ লাস্ট ওয়ার্ন করলাম আমার চোখের সামনে আসিস না তাহলে দেখবি তোর বারো বস্তা ময়দার নিচে যে গাল টা আবৃত আছে ওইটায় এই হাতে পাঁচ আঙ্গুলের চাপ বসে যাবে মাইন্ড ইট
নীর কথাগুলো বলে রুবিকে ঠাস করে ধাক্কা দিয়ে ছেড়ে দেয় রুবি পড়তে পড়তে বেঁচে যায় নীরের দিকে ভয়ার্ত চোখে তাকিয়ে প্রাণ বাঁচিয়ে পালায় উপস্থিত সবাই নীরের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে নীরের ফেস দেখে বুঝবার উপায় নেয় নীর এতো টা রাগি সবসময় নীর ভিতু ফেস নিয়েই থাকতো যার ফলস্বরূপ সবাই নীরকে সহজ-সরল ভাবতো কিন্তু এই ভিতু ফেসের আড়ালে যে এমন রূপ লুকিয়ে আছে এটা কারো ভাবনার ও বাইরে মাহির একটা শুকনো ঢোক গিলে শুভ আর আদিত্যর দিকে তাকায় বেচারা তিনজনের অবস্থায় নাজেহাল ওদের ভাগ্য ভালো নীর সেদিন ওদের ছেড়ে দিয়েছিলো সায়ন এসেছিলো শ্রাবনীকে নিয়ে যেতে আর নীর কে সরি বলতে ক্লাসে যাওয়ার পর ইভারা বলেছিলো শ্রাবনী আর নীর কঢ়্যান্টিনে গেছে তাই সায়ন ও ক্যান্টিনে যায় আর তখনই রুবির পুরো কথাগুলো না শুনলেও শেষ টুকু শুনে রেগে কিছু বলার আগেই নীর একশন শুরু করে নীরের রণচণ্ডী রূপ দেখে সায়ন ও কিছু টা ভয় পায় বেশি না এক্টু। সায়ন বুকে থু থু দিয়ে শ্রাবনীদের দিকে এগিয়ে যায় সায়ন কে দূর থেকে আসতে দেখে নীর শ্রাবনী কে বাই বলে চলে যেতে নিলে সায়ন দৌড়ে এসে নীরের পথ আটকে দাঁড়ায় নীর অন্যদিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে যায়। সায়ন আমতা আমতা করে বলে
সায়নঃ নীর তোমার সাথে আ আমার কিছু কথা আছে
নীর কাটকাট গলায় জবাব দেয়
নীরঃ আমার কিছু শোনার নেই অযথা সিনক্রিয়েট না করে শ্রাবণী তোর ভাইকে পথ ছাড়তে বল
সায়নঃ আ আমি তোমার সাথে কথা বলছি তুমি ওদিকে তাকিয়ে আছো কেনো
নীরঃ এজ মাই উইশ
সায়নঃ আচ্ছা আমার কথা টা শুনো
নীর এবার রেগে দাঁতে দাঁত চেপে বলে
নীরঃ কানে খাটো আপনি শুনেননি কি বলেছি নাকি বুঝেননি কোন টা সরুন সামনে থেকে
সায়নঃ আমার কথাটা শুনো
নীর বিরক্তি নিয়ে সায়নকে পাশ কাটিয়ে দ্রুত পায়ে চলে যায় সায়ন অসহায় দৃষ্টিতে নীরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে শ্রাবনীর দিকে তাকায় শ্রাবণী আলতো হেসে বলে
শ্রাবনীঃ রাগ কমতে দে তাহলেই হবে একেতেই তোর বিষয় টা নিয়ে রেগে ছিলো তারমধ্যে ওই রুবি মেয়ে টা আরো ঘি ঢেলেছে আগুন তো এখন দাউদাউ করে জ্বলবেই সো আমাদের এখন পানি হতে হবে আমার বেস্টু টা আমাকে কত্তো ভালোবাসে দেখেছিস ওকে কেউ কিছু বললে চুপচাপ সহ্য করে কিন্তু আমার সাথে কেউ খারাপ বিহেভ করলে মেডাম রুদ্রাণী রূপ ধারণ করে আর তোরা ওকে হুহহ
সায়নঃ আচ্ছা চল এখন বাড়িতে
শ্রাবনী আর সায়ন বাড়িতে চলে যায়
রাত বাজে আটটা বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে নীর পাশেই ধোয়া উঠা কফির কাপ দৃষ্টি আকাশের দিকে শূন্যে। নীর নিজের গালে হাত দিয়ে তাচ্ছিল্যের হাসে তখনই ওর মা রুমে এসে ওকে ডেকে নিয়ে যায় নীর ও বেশি কিছু না ভেবে নীরের মা’র পেছন পেছন চলে যায়। অন্যদিকে শ্রাবনী বাড়িতে আসার পর থেকে নীরকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে কিন্তু নীর ফোন রিসিভ ও করছে না কাটছে ও না শ্রাবনী ড্রয়িংরুমের সোফায় বসে নীরকে একের পর এক কল দিচ্ছে আীর বাকিরা শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে আছে এই প্রথম শ্রাবনী নীর ফোন না ধরায় কাঁদছে না অন্যদিন হলে কেঁদে কেটে বারো টা বাজাতো। আরেকবার কল দিতেই ওপাশ থেকে নীর ফোন রিসিভ করে বাজখাঁই গলায় বলে
নীরঃ সমস্যা কি এভাবে ফোন দিচ্ছিস কেনো
শ্রাবনীঃ তুই ফোন ধরছিস না কেনো
নীরঃ এজ মাই উইশ বাই দ্যা ওয়ে ফোন রাখ
শ্রাবনীঃ বেস্টু শোন
নীরঃ একদম না আর একটা কল দিলে নাম্বার ব্লকলিস্টে রেখে দেবো
শ্রাবনীঃ বেস্টু 🥺
নীরঃ শ্রাবণী এমনি মাথা গরম প্লিজ এখন কল দিস না বাই
নীর কল কেটে দেয় শ্রাবনী কাঁদো কাঁদো হয়ে অভির দিকে তাকায় সায়ন শ্রাবনী কে সান্ত্বনা দিয়ে বলে
সায়নঃ বনু হয়তো বিজি আছে তাই এমন করছে
শ্রাবনীঃ না ছোড়দা আমি জানি বেস্টু কেনো রেগে আছে
আয়াতঃ কেনো
শ্রাবনীঃ ওই যে ভার্সিটিতে রুবি যখন আমাকে কথা শুনাচ্ছিলো তখন চুপ করে ছিলাম কিছু বলিনি তাই
অভিঃ তো আবার ফোন দিয়ে সরি বলে দে
শ্রাবনীঃ যদি ফোন না রিসিভ করে
সায়নঃ রিসিভ না করলে বাড়ি থেকে উঠিয়ে আনবো
রিহিঃ সব জায়গায় গুন্ডামী গিরি দেখাতে হয় তোমাকে তাই না
সায়নঃ ক্রাশভাবী মানে
শ্রাবনীঃ ধ্যাত চুপ করো তোমরা আমি কল দেয়
শ্রাবনী নীরকে আবার কল দেয় পরপর কয়েকবার রিং হবার পর নীর কল রিসিভ করে কিছু বলার আগেই শ্রাবণী কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠে
শ্রাবনীঃ আম স সরি বেস্টু প্লিজ আমার সাথে কথা বল তুই কথা না বললে আমার খুউবব কষ্ট হয় তুই তো জানিস তাই না
নীরঃ চুপ একদম চুপ আর একফোঁটা পানি ফেললে তোকে আজ আমি খু*ন করে ফেলবো তোর কষ্ট হয় আমার কষ্ট হয়নি তখন যখন ওই ফালতু মেয়ে টা তোকে এভাবে কথা শুনাচ্ছিলো আমি কিছু বললে তো আমার বাপ শ্বশুর চৌদ্দ গুষ্টি শুদ্ধো উদ্ধার করিস তাহলে সকালে কিছু বলিস নি কেনো মুখে কি তালা লাগানো ছিলো। ওই মেয়ে টা এতোকিছু বললো তুই চুপ ছিলি কেনো অবলা নারী তুই কই আমার বেলায় তো এই অবলা রূপ থাকে না রুদ্রাণী হয়ে যাস তখন চুপ ছিলি কেনো এখন আসছে সরি বলতে আর কোন সাহসে সরি বলিস এক থাপ্পড়ে ডান পাশের কিডনি বাম পাশে পাঠিয়ে দেবো কুত্তী ( হালকা চেঁচিয়ে)
নীরের কথা শুনে শ্রাবণী এবার শব্দ করে কেঁদে দেয় আর কাঁদতে কাঁদতে বলে
শ্রাবনীঃ আমি কি করতাম শুধু শুধু ওর সাথে ঝগড়া করে কি লাভ হতো কথা বাড়তো
নীরঃ ফাইন আজকের পর থেকে আমার সাথে ও ঝগড়া করবি না
শ্রাবনীঃ তুই তো আমার দশ টা না পাঁচ টা না একটা মাত্র বেস্টু তোর সাথেই তো ঝগড়া করবো
নীরঃ না না এক কাজ কর তোর ওই রুবি না কি যেনো ওকে গিয়ে বেস্টু বানা
শ্রাবনীঃ নাহহহহ ( নাক ছিটকে)
নীরঃ এখন না কেনো ওর কথা তো আপনার কাছে রসগোল্লা মনে হয়
শ্রাবনীঃ ওহ বেস্টু কাল রসগোল্লা খাওয়াবো তোকে তাহলে আর রাগ করে থাকবি না তো
নীরঃ তোর রসগোল্লা তুই খা
শ্রাবনীঃ বেস্টু
নীরঃ কি
শ্রাবনীঃ আমি মিষ্টি খাইনা তো
নীরঃ হুহহহ ফোন দিলি কেনো না করেছিলাম না
শ্রাবনীঃ আমার ফোন আমার বেস্টু আমার হাত আমার মন আমি কল দিয়েছি তোর জামাইয়ের কি
নীরঃ রাইট এখন তাহলে আমার হাত আমার ফোন আমার ইচ্ছে ফোন কেটে দিলে তোর বাচ্চার বাপের কি
শ্রাবনীঃ বেস্টু রররররে
নীরঃ মরছে
শ্রাবনীঃ কবে মরলি বেস্টু আমাকে চল্লিশার দাওয়াত দিলো না তো আন্টি আচ্ছা তুই এখন কোন তেঁতুলগাছে আছিস আমাকে বল আম কাম ইন
নীরঃ হারামি একটা
শ্রাবনীঃ হিহিহি
নীরঃ ইচ্ছে করছে দাঁত ভেঙে হাতে ধরিয়ে দেয়
শ্রাবনীঃ এসে পড়
নীরঃ নাহ আচ্ছা বাদ দে খেয়েছিস
শ্রাবনীঃ নাহ এখন খাবো
নীরঃ আচ্ছা বাই খা গিয়ে আমিও খাবো প্রচুর ক্ষুদা লাগছে আম্মুউউউ খাবার দাও
শ্রাবনীঃ নিজে নিয়ে খেতে পারিস না অলসের ডিব্বা
নীরঃ ওরে আমার কাজের মেয়ে ছকিনা আপনি কোন দিনের পারদর্শী নারী শুনি তো
শ্রাবনীঃ এমা তুই জানিস না আমি সব পারি আমার রান্না খেলে কেউ জীবনে ভুলে না
নীরঃ তাহলে বুঝ কেমন রান্না করিস
শ্রাবনীঃ এই শোন আমি যদি রান্নার প্রতিযোগিতায় নাম দেয় তাহলে নোবেল পুরষ্কার পামু সো নো ইনসাল্ট মি
নীরঃ হ বইন তুই যেদিন নোবেল পাবি আমি নিজ দায়িত্বে সেদিন সুইসাইড করমু কারণ মানুষ তোরে পঁচা ডিম আলু ঢিল দিয়া মারবো এ দৃশ্য কিভাবে নিজ চক্ষুদ্বয়ে দেখিয়া নিজ চক্ষুদ্বয় কে সার্থক করি বল
শ্রাবনীঃ বেস্টু
নীরঃ কি
শ্রাবনীঃ ইনসাল্ট করিস কেনো
নীরঃ ওমা আমি তো প্রশংসায় করছি
আর কিছুক্ষণ কথা বলে শ্রাবনী আর নীর দুজনই খেতে চলে যায়
________________
ভার্সিটিতে আসতেই মাহির রা এসে শ্রাবণী দের সামনে দাঁড়ায় শ্রাবণী একপলক মাহিরের দিকে তাকিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে মাহির শ্রাবনীকে আটকে দিয়ে বলে
মাহিরঃ শ্রাবনী শুনো
শ্রাবনীঃ আমার জানামতে আপনি সিনিয়র আমি জুনিয়র আমার আপনার মাঝে কোনো কথা থাকতে পারে না
মাহিরঃ শ্রাবণী আম রিয়েলি সরি সেদিনের ঘটনার জন্য সত্যিই আমি দুঃখিত আমি বুঝতে পারিনি ওটা তুমি ছিলে ( অনুতপ্তের সুরে)
শ্রাবনীঃ পরে জানতে পেরেছিলেন তো আর আমি এমন কে যে এভাবে সরি বলছেন বাদ দেন মিস্টেক হয়েছে সো ওয়াট আপনি সিনিয়র এখন তো আমি চাইলেই আপনার থেকে রিভেঞ্জ নিতে পারি না তাই না
মাহিরঃ আম সরি প্লিজ মাফ করে দাও
শ্রাবনীঃ সরুন সামনে থেকে বেস্টু চল
শ্রাবনী নীরকে নিয়ে চলে যায় মাহির করুন দৃষ্টিতে শ্রাবনীর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে শুভ মাহিরের কাঁধে হাত দিয়ে বলে
শুভঃ সূর্যের তাপ অনেক একটু সময় যেতে দে কমে আসবে
মাহির কিছু না বলে চলে যায় পেছন পেছন আদিত্য রা ও যায়।
তিন ক্লাস শেষে নীর আর শ্রাবনী ক্লাস থেকে বেবিয়ে মাঠে পা রাখতেই একটা পাঁচ -ছয় বছরের বাচ্চা দৌড়ে এসে শ্রাবণীর হাতে একটা চিরকুট আর কিছু চকলেট গুঁজে আবার দৌড়ে চলে যায় শ্রাবণী বেক্কলের মতো বাচ্চার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।
নীরঃ এটা কি ছিলো
শ্রাবনীঃ আই না জানাজানি
নীরঃ চিরকুট টা খুলে দেখ কে লাভ লেটার পাঠালো তোর মতো হিটলার লেডি কে
শ্রাবনী নাক ফুলিয়ে নীরের দিকে চোখ ছোট ছোট করে তাকায় বিনিময়ে নীর দুইটা সিটি বাজিয়ে থেমে যায় শ্রাবণী চোখ-মুখ কুঁচকে বিড়বিড় করতে করতে চিঠি খুলে নীর শ্রাবনী দুজনই আহাম্মক বনে যায়। দু’জনের মুখটায় বেলুনের মতো চুপসে যায় চিঠিতে বড় বড় করে লেখা SORRY নীর শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে ভ্রু কুঁচকে বলে
নীরঃ কোন লাভার তোকে সরি বললো
শ্রাবনীঃ ওয়াট ডু ইউ মিন বাই দ্যাট কোননন লাভার ( ভ্রু নাচিয়ে)
নীরঃ আমি কিভাবে জানমু ইউ নো মুই হলাম দ্যা গ্রেট বাংলাদেশের একমাত্র সিঙ্গেল মাইয়া যে কিনা আজ অবধি কোনো ছেলেকে ভাই ছাড়া অন্য নজরে দেখেইনি
শ্রাবনীঃ হুহহ আমিও ওকে
নীরঃ লুচু মাইয়া
শ্রাবনীঃ তোকে আমি
নীরঃ বাদ দে আগে জানতে হবে এটা কে দিলো কিন্তু বাচ্চা টা তো চলে গেলো
শ্রাবনীঃ হুমমম এখন
নীরঃ আচ্ছা চল সামনে গিয়ে দেখি পাই কিনা
নীর আর শ্রাবনী আরেকটু সামনে এগুতেই দুজন সিনিয়র ভাই এসে শ্রাবণী কে সরি বলে যায় নীর আহাম্মকের মতো ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে আর শ্রাবনীর তো সব মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ নীরের ভার্সিটির ছাঁদের দিকে চোখ যেতেই চোখ ছানাবড়া শ্রাবনী কে আলতো ধাক্কা দেয় শ্রাবনী বিরক্তি নিয়ে বলে
শ্রাবনীঃ ধাক্কাচ্ছিস কেনো
নীরঃ ছাঁদের দিকে তাকা
শ্রাবনীঃ কি দেখবো কি আছে ছাদেররররর
শ্রাবনীর কথা মাঝপথেই আঁটকে যায় ভার্সিটির ছাঁদের উপর একটা ওয়াইট বোর্ডে বড় বড় করে লেখা SORRY SHRABONI শ্রাবণী হা করে ওয়াইট বোর্ডের দিকে তাকিয়ে আছে নীর শ্রাবনীর হা অফ করে মিনমিনে গলায় বলে
নীরঃ হা অফ কর নয়তো ডাস্টবিনের সব মশা-মাছি ঢুকে পড়বে তারপর ডিরেক্টলি পেটে গিয়ে হা ডু ডু খেলবে পরে কাতুকুতু পাবি
শ্রাবনী কটমট দৃষ্টিতে নীরের দিকে তাকায় নীর ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ থাকার ভান ধরে তখনই সাজ্জাদ দৌড়ে এসে বলে
সাজ্জাদঃ ভা, আব শ্রাবণী বোন একটু লেক পাড়ের ওদিকে যাও তো
শ্রাবনীঃ কেনো
সাজ্জাদঃ আহা যাও না প্লিজ প্লিজ যাও
শ্রাবনীঃ আচ্ছা যাচ্ছি
সাজ্জাদ মুচকি হেসে চলে যায় শ্রাবণী আর নীর লেক পাড়ের উদ্দেশ্য পা বাড়ায় কিছুক্ষণ হেঁটে লেক পাড়ের কাছে আসতেই চারপাশে গাছের সাথে বোর্ড ঝুলিয়ে SORRY SHRABONI লেখা দেখে দুজনই অবাক হয় নীর আর শ্রাবনী আরেকটু কাছে এগুতেই ৮৮০ ভোল্টেজের শক খায় মাহির কানে হাত দিয়ে ইনোসেন্ট ফেস নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বুকের মধ্যে বোর্ডে লেখা SORRY পাশেই আদিত্য আর শুভ দাঁড়িয়ে আছে দু’জনের হাতে বোর্ড তাতে সরি লেখা এসব দেখে শ্রাবণীর মাথা ঘুরছে শ্রাবনী অবিশ্বাস্য চোখে মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে নীর তো চোখের পলক ফেলতেই ভুলে গেছে।
শ্রাবনীঃ এসবের মানে কি
শুভঃ ভা আব শ্রাবণী প্লিজ বোন ওকে মাফ করে দাও নয়তো আমার আর রাহার বিয়ে এ জীবনে হবে না
নীরঃ মানে
আদিত্যঃ প্লিজ বোন ফর্গিভ হি প্লিজ বোন উই আর রিয়েলি সরি আর একটু পর আমার পা দুটো হাঁটু থেকে ছিঁড়ে যাবে দেড় ঘন্টা ধরে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি প্লিজ এই অসহায় বান্দাদের মাফ করে দাও
মাহিরঃ আমি সত্যি অনুতপ্ত প্লিজ সরি মাফ করো
নীর ঠোঁট চেপে হেসে সবার দিকে তাকায়,
নীরঃ ওয়েট ভাইয়ারা জাস্ট ওয়ান পিক নতুন প্রজন্মের জন্য
নীর ফোন বের করে ফটাফট কয়েক টা পিক তুলে নেয় শুভ অগ্নিদৃষ্টিতে নীরের দিকে তাকায় পিক তোলা শেষে শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে বলে
নীরঃ এবার ক্ষমা করে দে বেচারা তোর জন্য কত কিছু করলো
মাহিরঃ প্লিজজজ আর এমন ভুল হবে না
শ্রাবনী কিছুক্ষণ ভেবে মুচকি হেসে বলে উঠে
শ্রাবনীঃ ওকে ডান আপনাকে ক্ষমা করবো বাট আমার একটা সত্য আছে
মাহিরঃ কি সত্য বলো আমি রাজি
শ্রাবনীঃ আগামী চব্বিশ ঘণ্টা আমার কথানুযায়ী আপনাকে চলতে হবে
মাহির কোনো কিছু না ভেবে হুমম বলে দেয় শ্রাবনী শয়তানি হেসে বলে
শ্রাবনীঃ ওকে দিলাম মাফ করে
শ্রাবনীর কথায় মাহির রা তিনজন কান ছেড়ে দাঁড়ায় শুভ আর আদিত্য ঠুসসস করে বসে পড়ে মাহির হাঁটুতে ভর দিয়ে শ্রাবনীর দিকে তাকায় শ্রাবণী নীর ওদের দিকেই তাকিয়ে আছে।
চলবে,,,
#LoVe_Effect
#writer : Sintiha Eva
#part : 12
🍁🍁🍁
মাত্র ক্যাম্পাসে এসে বসতেই মাহিরের ফোন আবার বেজে উঠে মাহিরের এখন ইচ্ছে করছে নিজের মাথা নিজে ফাটাতে কেনো শ্রাবনীর রাগ ভাঙাতে গিয়ে ওর সত্বে রাজি হয়েছিলো আর ভোর থেকে শ্রাবনীর সত্ব স্টার্ট করেছে মাহির অতীতের স্মৃতির ফিরে যায়
ভোর ছয়টায় মাহিরের আরামের ঘুম ভেঙে শ্রাবনী ফোন দিয়ে বলে ওর এখন পার্কে গিয়ে মর্নিং ওয়ার্ক করতে ইচ্ছে হচ্ছে তাই ১০ মিনিটে যেনো শ্রাবনীদের বাড়ির ডানপাশের পার্কে এসে হাজির হয় মাহির পারবে না বললে হুমকি দিয়ে সত্বের কথা মনে করিয়ে দেয় বেচারা নিরুপায় হয়ে বাধ্য হয়ে এতো সকাল সকাল ঘুম ছেড়ে শ্রাবনীর দেওয়া ঠিকানায় চলে আসে কিন্তু পনেরো মিনিট অতিক্রান্ত হওয়ার পরও শ্রাবনীকে আসতে না দেখে মাহির শ্রাবনীকে ফোন দেয় প্রথমবার রিং হয়ে কেটে যায় মাহির বিরক্তি নিয়ে আবার ফোন দেয় তিন বার বাজতেই শ্রাবনী ফোন ধরে বলে
শ্রাবনীঃ আর ২০ মিনিট ওয়েট করুন আমি আসছি
মাহির ও উপায় না পেয়ে বলদের মতো দাঁড়িয়ে থাকে কিন্তু বিশ মিনিটের জায়গায় এক ঘন্টা পার হয়ে যায় শ্রাবণীর পাত্তা না পেয়ে মাহির আবার কল দেয় এবার ফোন সুইচ অফ পেয়ে মাহির রাগে নিজের চুল খামছে নিজেকে গালি দিতে থাকে। আরো ৩০ মিনিটের মতো ওয়েট করে মাহির বাড়িতে গিয়ে সোজা বেডে সুয়ে ঘুমের দেশে পাড়ি দেয় হঠাৎ ফোনের শব্দে ধড়ফড়িয়ে উঠে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে সকাল নয়টা দেখে চমকে যায় এতো বেলা অবধি কিভাবে ঘুমালো মাহির ভাবনারমাঝেই আবার রিং বেজে উঠে মাহির ফোন হাতে নিয়ে শ্রাবনীর নাম্বার দেখে রাগে গজগজ ফোন রিসিভ করে কিছু বলার আগেই ওপাশ থেকে গুরুগম্ভীর গলায় বলে উঠে
শ্রাবনীঃ আপনাকে ওয়েট করতে বললাম তাহলে চলে গিয়েছিলেন কেনো নাকি আসেনই নি না এসে আমাকে বলেছেন এসেছেন
মাহিরঃ ওয়াট পাক্কা আড়াই ঘন্টার মতো দাঁড়িয়ে ছিলাম আপনার তো আসার নামই ছিলো না
শ্রাবনীঃ আসলে আমি সাজুগুজু করতে করতে ড্রেসিংটেবিলের উপর ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম
মাহিরঃ কিহ ড্রেসিংটেবিল
শ্রাবনীঃ হুমম অবাক হবার কি আছে বাই দ্যা ওয়ে ফাস্ট পরীক্ষায় আপনার নাম্বার লাড্ডু মানে জিরো মানে শূন্য এখন তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আসুন আমাকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাবেন
মাহিরঃ তুমি কি আমার জিএফ তোমাকে নিয়ে আমি রেস্টুরেন্টে যাবো
শ্রাবনীঃ বেশি কথা বলা আমি পছন্দ করি না আর শুনুন কোনো গাড়ি বাইক আনবেন না রিকশায় যাবো আন্ডারস্ট্যান্ড
মাহিরঃ হুমম বেটার আন্ডারস্ট্যান্ড এটা ও বুঝলাম আমার ইজ্জতের দফারফা করতে চাইছো ( বিড়বিড় করে)
শ্রাবনীঃ গুড কাম কুইক
ফোন কেটে মাহির রেডি হয়ে তাড়াতাড়ি চলে যায় কিন্তু এবারও শ্রাবণী বিশ মিনিট লেট করে আসে মাহির কটমট দৃষ্টিতে শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে রিকশা দাঁড় করিয়ে উঠে পড়ে শ্রাবনী ও উঠে পড়ে রিকশা এসে একটা বড় রেস্টুরেন্টের সামনে থামে শ্রাবনী নেমে দাঁড়ায় মাহির ভাড়া মিটিয়ে ভেতরে গিয়ে দুজন একসাথে টেবিলে বসে ওয়েটার এসে মেনুকার্ড দিতে চাইলে শ্রাবনী বাঁধা দিয়ে বলে
শ্রাবনীঃ হুহহ মেনুকার্ড লাগবে না রেস্টুরেন্টে যতপ্রকার আইটেম আছে সব নিয়ে আসুন
শ্রাবনীর কথা শুনে মাহির আর ওয়েটার হা করে শ্রাবণীর দিকে তাকায় ওদের এভাবে তাকাতে দেখে শ্রাবণী ভ্রু কুঁচকে বলে,,
শ্রাবনীঃ আই নো আম লুকিং গুলুমুলু নজর দেন কেনো আর আপনি তাড়াতাড়ি যান আমার ক্লাস আছে
ওয়েটার শুকনো ঢোক গিলে মাহিরের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করে
ওয়েটারঃ আপনার কি মেনু আনবো স্যার
মাহিরঃ ঠান্ডা পানি হবে
ওয়েটারঃ জ্বি
মাহিরঃ একবোতল পানি আর কিছু না
ওয়েটার চলে যায় মাহির শ্রাবনীর দিকে তাকিয়ে আছে আর শ্রাবনী চারদিকে চোখ বুলাতে ব্যস্ত কিছুক্ষণের মধ্যে একে একে সব খাবার এসে হাজির হয় শ্রাবনী খাওয়া শুরু করে শ্রাবনীর খাওয়া দেখে মাহির বোতলের পানি খাচ্ছে আর শ্রাবনীর দিকে তাকাচ্ছে নূন্যতম এখানে বিশ টা আইটেম আছেই তার উপর এতো ওয়েলি শ্রাবনীর খাওয়া দেখে মাহিরের পেট ভরে যায়। একঘন্টায় খাওয়া শেষ করে ওয়েটার কে দিয়ে কোক আর আইসক্রিম ওর্ডার করে এবার মাহির পারছে না মাটির ভেতরে ঢুকে যেতে ওয়েটার এসে ওর্ডার করা জিনিস দিয়ে যেতেই শ্রাবনী ওগুলো খেয়ে একটা তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে মাহির চোখ-মুখ কুঁচকে নেয় ওয়েটার এসে বিলের কাগজ দিয়ে যায় মাহির বিলের কাগজে বিল দেখে মাথায় হাত ১০৮৫০ টাকার খাবার একলা এই মেয়ে টা খেয়েছে মাহির চোখ-মুখ কচলে আবার বিল দেখে কাঁদো কাঁদো মুখ করে শ্রাবণীর দিকে তাকায় শ্রাবণী একটা মুচকি হাসি উপহার দেয় মাহির শ্রাবনী কে ওয়েট করিয়ে বিল পেমেন্ট করতে যায় বিল দিয়ে মাহিরা বেরিয়ে পড়ে। হঠাৎ রাস্তার পাশে ফুসকার দোকান দেখে শ্রাবণী চেঁচিয়ে রিকশা থামাতে বলে রিকশা থামতেই শ্রাবনী দৌড়ে ফুসকার দোকানে চলে যায় পেছন পেছন মাহির ও আসে মাহির বিরক্তি নিয়ে বলে
মাহিরঃ এখানে আসলে কেনো
শ্রাবনীঃ আরে ফুসকা খাবো
মাহিরঃ তোমার পেট এখনো খালি আছে
শ্রাবনীঃ কি বলেন এতোটুকু খাবারে পেট ভরে নাকি কতটুকুই খেলাম আর ফুসকার জন্য পেট অলওয়েজ খালি
প্রতিত্তোরে মাহির অবিশ্বাস্যের শ্বাস ত্যাগ করে ফুসকা খাওয়া শেষে দুজন আজ একসাথেই ভার্সিটি আসে বাট গেটের সামনে এসে দুজনই আলাদা হয়ে যায় মাহির হাঁপাতে হাঁপাতে শুভদের পাশে বসে। ফোনের শব্দে মাহির অতীত থেকে বাস্তবে ফিরে ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে শ্রাবনী গম্ভীর হয়ে বলে,,,
শ্রাবনীঃ এতোক্ষণ রিসিভ করলেন না কেনো
মাহিরঃ স্মৃতিচারণ করেছিলাম
শ্রাবনীঃ মানে
মাহিরঃ কিছু না ফোন কেনো দিলে আবার
শ্রাবনীঃ ওহ আমাদের এখানে আসুন
মাহিরঃ কোথায়
শ্রাবনীঃ আরে বটগাছের তলায় আসুন
মাহিরঃ কেনো
শ্রাবনীঃ আসবেন নাকি ছো
মাহিরঃ আচ্ছা আসছি
মাহির বিড়বিড় করতে করতে ফোন কেটে দেয় মাহিরের ফেস দেখে আদিত্য আর শুভ হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার অবস্থা মাহির অগ্নি দৃষ্টিতে ওদের দিকে তাকাতেই ওরা অবুঝ বাচ্চার মতো ভান ধরে মাহির বিরক্তি নিয়ে উঠে চলে যায় পেছন পেছন ওরা ও আসে
নীরঃ ওই তো মাহিরররর আসছে
শ্রাবনীঃ ওয়াট
নীরঃ বললাম মাহির ভাইয়া আসছে
শ্রাবনী সন্দিহান দৃষ্টিতে নীরের দিকে তাকায় নীর একটা বোকা হাসি হাসে মাহির ওদের সামনে এসে ক্লান্ত গলায় বলে
মাহিরঃ আবার কি
শ্রাবনীঃ আজ আমি শপিংয়ে যাবো আমার সাথে যাবেন না না টাকা আমিই দেবো আপনি জাস্ট আমার ব্যাগ গুলো ক্যারি করবেন
মাহিরঃ ওয়াট আমি কি তোমার বডিগার্ড
নীরঃ আহা ভাইয়া এমন একটা লেডির বডিগার্ড হতে কে না চাই বলুন
মাহিরঃ হুহ ও এক রাতে ওর জামাইকে ফকির বানিয়ে ছাড়বে যেই পরিমাণ খায় আজ আমি আর একটু হলেই হার্ট অ্যাটাক করতাম আমার তো ওই বেচারার জন্য আফসোস হচ্ছে না জানি তার কি হাল হয় একে বিয়ে করার পর
আদিত্যঃ এতোই যখন ওই ছেলের জন্য দরদ তুই করে নে
মাহিরঃ পাগল আমি একদিন ও হয়নি মাত্র তিন ঘন্টায় আমার বারো হাজার টাকা শেষ করে দিয়েছে বাকি জীবনে দেখা যাবে টাকা না থাকলে খাবারের অভাবে আমাকেই খেয়ে ফেলবে
শ্রাবনীঃ কিহহহ
নীরঃ এহেম এহেম সাইলেন্ট গাইস নো ঝগড়া
শ্রাবনীঃ ওই যে ওখান থেকে হাওয়ায় মিঠাই নিয়ে আসুন এই নেন টাকা
মাহিরঃ পারবো না
শ্রাবনীঃ কি বললেন
মাহিরঃ যাচ্ছি
মাহির টাকা নিয়ে চলে যায় আদিত্য নীর শুভ ফিক করে হেসে দেয় শ্রাবনী দুষ্টু হেসে বিড়বিড়িয়ে বলে
শ্রাবনীঃ ইহাকে বলে যেমন কর্ম তেমন ফল আমার দশ হাজার টাকার রিভেঞ্জ নিলাম আহ কি শান্তি ভাবতেই গর্ব হচ্ছে আমি আমার টাকার উপর হওয়া অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে পেরেছি
মাহির শ্রাবনীর হাতে হাওয়ায় মিঠাই দিয়ে গাল ফুলিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে তখনই ওখানে ইভা আর সিনথিয়া আসে ইভা অবাকের সুরে বলে
ইভাঃ এখানে কেইস টা কি মামা-মামী রা
নীর সুর টেনে বলে
নীরঃ পিরিতি কাঠালের আঠা এ আঠা লাগলে পরে ছাড়ে না
সিনথিয়াঃ মানে
নীরঃ লাভ কেইস আন্টি
নীরের কথা শুনে সবার মুখটা হা হয়ে যায় নীর ঠোঁট চেপে হেঁসে দেয়
ইভাঃ রিয়েলি এই তেলজল মিশেছে
মাহিরঃ ধ্যাত তোমরা কি ওদের মতো পাগল নাকি
আদিত্যঃ গাড়ি চলে না চলে না চলেনা রে গাড়ি চলে না
শুভঃ প্রেম কি বুঝিনি আগে তো খুজিনি আজ কি হলোরে মাহিরের শ্রাবনী তো ছিলো বেশ লুকিয়ে বিনদেশ
নীরঃ এটেশন গাইস এদিকে দুইজোড়া চোখে আগুন জ্বলছে থেমে যান নয়তো ওই আগুনে নিজেদের আত্মাহুতি দিতে হবে
নীরের কথায় সবাই সহমত পোষণ করে আবার শব্দ করে হেঁসে দেয় শ্রাবনী আর মাহির ওদের দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকায়
____________________________
চারদিকে উৎসব মুখর পরিবেশ লাল-নীল রঙিন আলোয় আলোকিত শ্রাবনীদের বাড়ি ড্রয়িংরুমে গেস্টে পূর্ণ শ্রাবনী রেডি হয়ে সবার মাঝে গাল ফুলিয়ে আসে পেছন পেছন সায়নরা ও আসে সকাল থেকে নীর কে কল দেওয়া হচ্ছে কিন্তু ফোন রিসিভ করছে না আর শ্রাবনী জেদ ধরেছে নীর না আসলে শ্রাবনী বার্থডে’র কেক কাটবে না। শ্রাবনী ড্রয়িংরুমের কোণায় একটা সোফায় বসে সায়ন রা একে অপরের মুখ চাওয়াচাওয়ি করে শ্রাবণীর কাছে গিয়ে বসে শ্রাবনী সায়নের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে তাকায়
সায়নঃ যাক বাবা আমি কি করলাম আমার সাথে কথা বলছিস না কেনো
শ্রাবনীঃ ছোড়দা তুই খুব ভালো করেই জানিস বেস্টু কেনো আজ আসেনি বা আসবে না
সায়নঃ আরে আমি বলেছি বলে ওকে শুনতে হবে
শ্রাবনীঃ তুই বলেছিস বলে শুনেছে এটা তোর ভুল ধারণা ওর আত্মসম্মানে আঘাত করে এখন এমন ভান করছিস কিছুই জানিস না
সায়নঃ ওকে ভুল যখন আমি করেছি সংশোধন ও না আমিই করি
সায়ন চলে যায় শ্রাবণী সায়নের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভেংচি কাটে
অভিঃ বুড়ি একটু হাসবি তো নাকি
শ্রাবনীঃ না আমি হাসবো না কাঁদবো না খাবো না ঘুমাবো না কিচ্ছু করবো না না না না
আয়াতঃ বড়দা ওদিকে আয় গেস্ট রা কি ভাবছে এর মেজাজ ঠিক হলে চলে আসবে
স্লো মিউজিকে চারদিকে মানুষের সমাগম আরো বেড়ে গেছে কিছুক্ষণ আগেই জানভি,তিয়াস,রিয়া আর বিহান এসে পার্টিতে এড হয়েছে সবাই শ্রাবনীকে উইশ করে সায়ন কোথায় জিজ্ঞেস করলে কেউই বলতে পারলো না এদিকে শ্রাবনী ও মুখ টা চুপসে যাওয়া বেলুনের মতো করে বসে আছে হঠাৎ শ্রাবনীর চোখ সদর দরজার দিকে যেতেই মাহির শুভ আর আদিত্য কে দেখে মেজাজ আরো বিগড়ে যায় তবুও নিজেকে সংযত রেখে বসে থাকে
শুভঃ হেই লিটল গার্ল হ্যাপি বার্থডে
শ্রাবনীঃ ধন্যবাদ ( জোরপূর্বক হেসে)
আদিত্যঃ হ্যাপি বার্থ ডে
শ্রাবনীঃ ধন্যবাদ ধনিয়াপাতা
শুভঃ কি রে উইশ কর ( মাহিরকে ধাক্কা দিয়ে)
মাহির কিছু না বলে অন্যদিকে চলে যায় সায়ন মাহিরের ফ্যামিলির সাথে পূর্বপরিচিত হওয়ায় মাহিরের মা-বাবা ও এসেছে মাহিরের পেছন পেছন শুভ আর আদিত্য ও চলে যায়
আদিত্যঃ উইশ করলি না
মাহিরঃ এমনি
শুভঃ কি রে ভাই শ্রাবনীর ওই বাঘিনী বেস্টু কোথায়
আদিত্যঃ তাই তো সারাদিন তো আঠার মতো লেগে থাকে দুজন দুজনের সাথে
মাহিরঃ আহ চুপ করবি হয়তো এখনো আসেনি
আয়াতঃ আরে মাহির তোমরা কেমন আছো
মাহিরঃ ভালো ভাইয়া আপনারা
আয়াতঃ হুমম ভালো আচ্ছা এনজয় করো আমি ওদিকটায় যাচ্ছি
শুভরা হেঁসে সম্মতি দেয় সবাই যে যার মতো গল্প করে যাচ্ছে জানভিরা অনেকবার সায়নকে কল দেয় কিন্তু ওপাশ থেকে কল রিসিভ করে না হঠাৎ শ্রাবনীর চোখ সদর দরজার দিকে যেতেই শ্রাবনী বসা থেকে দাঁড়িয়ে যায় সবার দৃষ্টি দরজার দিকে নিবন্ধ হয়ে যায় তিয়াসদের মুখটা অটোমেটিক হা হয়ে যায় শ্রাবণী মুখে হাত দিয়ে সামনে তাকিয়ে আছে মাহিরা গিয়ে শ্রাবনীর পাশে দাঁড়ায় সবার চোখে-মুখে বিস্ময়ের চাপ স্পষ্ট।
চলবে,,,,
(ভুলক্রটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ)