first love…..
Samira Afrin Samia (nipa)
Part: 19+20
সামিহাঃ আমি দুপুরে গোসল করে খোলা চুলে নাচতে নাচতে ছাদে গেলাম। আহ সে কি গান গাইছি। এখন কোনো সিংগার যদি আমার গান শুনত আমি নিশ্চিত সাথে সাথে হার্ট এর্টাক করে মারা যেত।
দোলনায় বসে পা দুলাচ্ছি আর গান গাইছি। হঠাৎ করে ছাদের এক কোনায় চোখ গেল। হায় হায় এটা তো দেখি আমার বোবা ক্রাশ। ইসস কি লজ্জা কি লজ্জা এতক্ষণ বোবা ক্রাশ আমার গান শুনছিল।
আচ্ছা আমার বোবা ক্রাশের নামটাই তো জানি না।
দৌড়ে নিচে নেমে এলাম।।
ফুপ্পি ফুপ্পি।।। ফুপ্পি কই তুমি?
ফুপ্পিঃ হুম বল কি হয়ছে?
সামিহাঃ ফুপ্পি আমার বোবা ক্রাশ……
বলতে বলতে থেমে গেলাম। কি বলছি এসব?
ফুপ্পিঃ কি বললি ঠিক বুঝলাম না।
সামিহাঃ কিছু না ফুপ্পি এমনি। ফুপ্পিকে জিঙ্গেস করলে ফুপ্পি কি ভাববে?
এর থেকে ভালো নেংটি ইঁদুরটাকে জিঙ্গেস করি।
নেংটি ইঁদুর ওই নেংটি ইঁদু…..র….
এখন ওই আবিরটাকে নেংটি ইঁদুর বললে আমার কোনো কথাই শুনবে না।
আবির আবির। আবির ভাই কই তুই?
আবিরঃ আপু আমার কান টা মনে হয় গেছে। উল্টা পাল্টা কথা শুনছি।
আমি শুনলাম তুমি আমাকে আবির তো ডাকছ ই তার সাথে আবার ভাই ও ডাকছ।
সামিহাঃ হাতি কাঁদায় পড়লে চামচিকা ও লাথি দেয়। তুই তো একটা নেংটি ইঁদুর তুই তো আরো আগে দিবি।(মনে মনে…)
শুননা ভাই তোর সাথে কিছু কথা ছিল।
আবিরঃ আমাকে বলছ আপু?
সামিহাঃ(আর পারবো না অনেক হয়ছে)..
ওই কুত্তা এখানে তুই ছাড়া আর কেউ আছি কি?
আবিরঃ এই তো এখন মনে হচ্ছে তুমি আমার আপু।
এখন বলো কেন ডাকছিলে?
সামিহাঃ তোর ঐ বোবা ভাইটার নাম কি?
আবিরঃ কোন বোবা ভাই?
সামিহাঃ আরে ওই যে কম কথা বলে। আরে তোর ফুফাতো ভাই।
আবিরঃ ওহ তুমি আলিফ ভাইয়ার কথা বলছ।
সামিহাঃ তাহলে বোবাটার নাম আলিফ।দেখতে যেমন সুন্দর নামটা আরও বেশি সুন্দর। কিন্তু প্রব্লেম তো একটাই কথা কম বলে।
আলিফ এখনও ছাদে দাঁড়িয়ে আছে।।।।।
আলিফঃ মেয়েটা পাগল নাকি। সারাক্ষণ ছোট বাচ্চাদের মত ছুটাছুটি করে। এখানে যে বেড়াতে আসছে তা কেউ বলবে না। এমন ভাবে ছুটাছুটি করে মনে হয় এটা ওর নিজের বাড়ি।
মেয়েরা একটু লাজুক টাইপের থাকবে তা না এই মেয়ের তো কোনো লজ্জাই নাই।
বিকেলে……
সামিহাঃ ফুপ্পি গ্রামে ঘুরতে যাবো।তোমাদের গ্রামটা একবার ও ঘুরে দেখিনি।
ফুপ্পিঃ এখন তো তোর আঙ্কেল বাসায় নেই। আচ্ছা আমি আলিফ কে বলি তোদের গ্রামে ঘুরতে নিয়ে যেতে।
সামিহাঃ আমার মনে তো লাড্ডু ফুটছে। আজ ক্রাশের সাথে গ্রামে ঘুরতে যাবো এর থেকে ভালো আর কি হতে পারে।( মনে মনে….)
ফুপ্পিঃ আলিফ তুমি ওদেরকে একটু গ্রামটা ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে?
আলিফঃ ঠিক আছে মামি।
ফুপ্পিঃ সামিহা তোর আলিফ ভাইয়ার সাথে যা। আর বেশি দুষ্টুমি করবি না।
সামিহাঃ হায় হায় ফুপ্পি কি বললো এইটা। ভাইয়া???
আল্লাহ একথা শুনার আগে আমাকে তুলে নিলে না কেন?অবশেষে আমার ক্রাশকে ভাইয়া বানিয়ে দিল।(মনে মনে…)
আবিরঃ মুখ টিপে টিপে হাসছি। সামিহা আপুর ফেসটা যা হয়ছে দেখার মত।ইচ্ছে করছে একটা পিক তুলে রেখে দেই। আমাকে নেংটি ইঁদুর বললেই পিকটা আপুকে দেখাবো।
জান্নাতঃ সামিহা আলিফ ভাইয়ার সাথে গ্রাম দেখতে যাবি না।এখানে এভাবে হা করে দাঁড়িয়ে না থেকে চল।
সামিহাঃ আবির আর জান্নাত সেই মজা নিচ্ছে।
আলিফঃ চল সবাই।
সামিহাঃ গ্রাম ঘুরে ঘুরে দেখছি। গ্রামের মনোমুগ্ধকর প্রকৃতিক দৃশ্য পৃথিবীর কোথাও পাওয়া যাবে না। সরিষা খেত গুলো দেখতে অনেক সুন্দর। অনেক ভালো লাগছে।
বোবাটা কথা বলে না কেন?
ভাবছিলাম ক্রাশের সাথে একটু কথা বলবো। পটাতে চেষ্টা করবো কিন্তু এ তো কোনো কথাই বলে না।
আমরা সবাই হাটতে হাটতে গ্রামের একটা ছোট বাজারের ভেতর আসলাম। বাজারের এক কোনে একটা দোকানে চোখ যেতেই আমি দৌড়ে ওখানে চলে গেলাম।
জান্নাতঃকিরে এভাবে দৌড়ে চলে আসলি কেন?
সামিহাঃ দেখনা কত সুন্দর সুন্দর চুড়ি।
জান্নাতঃ নিবি নাকি।
সামিহাঃ চুড়ি নেওয়ার তো ইচ্ছে আছে কিন্তু আমি তো টাকা আনিনি।( মনে মনে..)
আবিরঃ আপু চুড়ি নিবা?
সামিহাঃ হুম।
আবিরঃ তাহলে হা করে দাঁড়িয়ে না থেকে যেটা ভালো লাগে ওটা নেও।
সামিহঃ আমার কাছে তো টাকা নাই।
আবিরঃ টাকা দিয়ে কি করবা?
সামিহাঃ ওই নেংটি ইঁদুর দোকানদার তোর শশুড় হয় নাকি আমাদের এমনিতেই টাকা ছাড়া চুড়ি দিয়ে দিবে?
আবিরঃ আরে আপু আলিফ ভাইয়া আছে তো। ভাইয়া টাকা দিবে।
কি ভাইয়া আপুকে চুড়ি কিনে দিবে না?
আলিফঃ আমি কোনো মেয়ের পেছনে এক টাকা ও খরচ করি না।
সামিহাঃ আমি ও কোনো ছেলের কাছ থেকে কিছু নেই না।
আবিরঃ ভাইয়া তুমি এতো কিপ্টা!
সামিহাঃ আরে আবির বুঝিস না কেন। তোর ভাইয়া নিজের গফের পিছনে মনে হয় অনেক টাকা খরচ করছিল। গফটা যখন ধোঁকা দিয়ে অন্য ছেলের সাথে চলে গেল। তখন থেকে আর মেয়েদের পিছনে টাকা খরচ করে না।
আলিফঃ আমার কোনো গফ নেই আর ছিল ও না।
মেয়েরা আমার জন্য পাগল ওরা আমাকে কি ধোঁকা দিবে।
সামিহাঃ আপনার মত ছেলের জন্য মেয়েরা পাগল হয়?
বোবা কোথাকার।
আলিফঃ বোবা কাকে বললা?
সামিহাঃ আপনাকে।
আলিফঃ আমি বোবা না কিন্তু তোমার মত বাঁচাল ও না।
সামিহাঃ আমার সাথে একদম চাপা মারতে আসবেন না। আপনার মত বোবার জন্য কোন মেয়েটা পাগল হলো একটু দেখাবেন তো।
আলিফঃ তুমি ও তো আমার উপর ক্রাশ খাইছ।
সামিহাঃ আমি ক্রাশ খাবো আপনার উপর?
দরকার পড়লে না খেয়ে মারা যাবো পরেও আপনার উপর ক্রাশ খাবো না। কি আমার চেহারা। একদম বাদুড়ের মত লাগে।
আলিফঃ আমি বাদুড়ের মত তবুও ভালো। তোমার মত তেঁতুল গাছের ঝুলন্ত পেত্নীর মত না।
সামিহাঃ আপনি আমাকে পেত্নী বললেন?
আলিফঃ কেনো ভালো বলে ফেললাম নাকি? ওহহ তা তুমি কি নিজেকে পেত্নীর থেকে ও খারাপ ভাবো।
সামিহাঃ আমি আর এখানে থাকবো ই না। আমি আজই বাসায় চলে যাবো। চল জানু।
আবিরঃ ভাইয়া শুধু শুধু আপুর সাথে ঝগড়া করলে কেন? আপুকে এক জোড়া চুড়ি কিনে দিলে কি এমন হতো। এখন যদি আপু রাগ করে আমাদের বাসা থেকে চলে যায়।
সামিহাঃ ফুপ্পি ফুপ্পি…. ফু..পি…ই।।।।।।
আমি আজই বাসার চলে যাবো।তুমি বাবাইকে ফোন দিয়ে বলো এখানে এসে আমাকে নিয়ে যেতে।
ফুপ্পিঃ দুই দিন হলো আসলি আর আজই চলে যাওয়ার কথা বলছিস।তুই তো বলেছিলি এবার অনেক দিন থেকে তার পর যাবি।
সামিহাঃ আগে তো আর জানতাম না তোমার বাসায় ঐ বোবা বান্দরটা আছে। আগে জানলে আমি কখনও তোমাদের বাসায় আসতাম না। আমি কিছু জানি না। আমি আজই বাসায় যাবো।
ফুপ্পিঃ আবির তোর সামিহা আপুর আবার কি হলো?
আবিরঃ আলিফ ভাইয়ার সাথে ঝগড়া করছে।
ফুপ্পিঃ ওহ তাই তো মাথা গরম।
সামিহা আজ তো সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এখন তোর আব্বু কি করে তোকে নিতে আসবে। তুই বরং কাল চলে যাবি। তোর আঙ্কেল নিজে কাল তোকে দিয়ে আসবে।
সামিহাঃ আচ্ছা।।। কিন্তু কাল আর আমি থাকবো না।
উপরে চলে আসলাম।
আবিরঃ আম্মু কাল কি সত্যিই সামিহা আপু চলে যাবে?
আম্মুঃ আরে কাল সকালে ওর যাওয়ার কথা মনে থাকলে তো যাবে। রাগ কমে গেলে আর যাওয়ার নাম নিবে না।
সামিহাঃ রাতে ঘুমের মাঝে মনে হলো কেউ একজন আমার হাত ধরে আছে। হালকা করে চোখ খুলে ভালো করে কিছুই দেখতে পারলাম না শুধু এইটুকু বুঝতে পারছিলাম কেউ একজন আছে এখানে। আমি যেই চিৎকার দিতে যাবো ঠিক তখনই কেউ আমার মুখ চেপে ধরলো।
আলিফঃ একদম চিৎকার দিবে না। আমি একটা কাজ করতে আসছি। কাজটা হয়ে গেলেই চলে যাবো।
সামিহাঃ (এক ঝটকায় আমার মুখ থেকে আলিফের হাত সরিয়ে।)
আপনি এখানে কেন?
এতো রাতে এখানে কি কাজ করতে আসছেন?
আলিফঃ তোমার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখো।
সামিহাঃ হাতের দিকে তাকিয়ে আমি তো অবাক। আমার দুই হাতেই চুড়ি পরানো আর এই চুড়ি গুলোই আমি আজ বাজারে দেখছিলাম।
এগুলো আমার হাতে কে পরালো?
আলিফঃ এখানে কি আমাকে ছাড়া আর কাউকে দেখতে পারছ?
সামিহাঃ মাথা নাড়িয়ে না সূচক উত্তর দিলাম।
আলিফঃ তাহলে তোমার বুঝে নেওয়া উচিত চুড়ি গুলো তোমার হাতে আমিই পড়াইছি।
সামিহাঃ আপনি আমার হাতে চুড়ি পড়ালেন কেন?
আলিফঃ আমার ইচ্ছে হয়ছে তাই পড়াইছি।
সামিহাঃ আপনার ইচ্ছে হলে হবে নাকি। এগুলো আমার হাত। আমার হাতের উপর আপনার ইচ্ছে চলবে না।
তখন তো বাজারে সবার সামনে এতো অপমান করলেন। এখন আবার চুড়ি পড়ানো হচ্ছে।।
যতসব ঢং।।।।
আলিফঃ উফফ জানু তুমি এতো কথা বলতে পারো?
সামিহাঃ আমি জানু না। আমি সামিহা। জানু ঐ যে ঘুমিয়ে আছে।
আলিফঃ স্টুপিড মেয়ে আমি তোমাকে ভালোবেসে জানু বলছি।
দেখো না সবাই সবার গফ কে কতো কিছু বলে ডাকে।
সামিহাঃ ওয়েট ওয়েট।।। এখানে আপনার গফ কে?
আলিফঃ তুমি। আবার কে?
সামিহাঃ মাথার তার ঠিক আছে। নাকি তিন চারটা ছিড়ে গেছে।
আমি আবার আপনার কোন জন্মের গফ ছিলাম।
আলিফঃ কোনো জন্মের ছিলে না।কিন্তু এই জন্মের হবে।
সামিহাঃ আমাকে একটা চিমটি কাটবেন প্লিজ।
আলিফঃ আমি তোমাকে চিমটি কাটবো কেন?
সামিহাঃ এত কথা না বলে যা বলছি তা করেন তো।
আলিফঃ আচ্ছা তুমি যখন বলছ তখন তো দিতেই হবে।
চলবে…..
first love….
Samira Afrin Samia (nipa)
Part: 20
সামিহাঃ আউ এতো জোরে চিমটি কাটলেন কেন?
আলিফঃ তুমিই তো চিমটি কাটতে বলছ।
সামিহাঃ আমি কি এতো জোরে চিমটি দিতে বলছি?
আলিফঃ আস্তে ও তো দিতে বলোনি।
হঠাৎ করে চিমটি দিতে বললা কেন?
সামিহাঃ আমি স্বপ্ন দেখছি নাকি তা জানার জন্য।
আপনি আমার হাতে চুড়ি পড়িয়ে দিলেন। আবার কত কথা ও বলছেন। তাই কেমন যেন স্বপ্ন স্বপ্ন মনে হচ্ছিল।
আলিফঃ আমি সত্যিই তোমার সামনে আছি এটা স্বপ্ন না সত্যি। আচ্ছা দাঁড়াও তোমাকে আর একটা প্রুভ দেই।
সামিহাঃ এটা কি করলেন আপনি?
আলিফঃ কি করলাম আমি?
সামিহাঃ আপনি আমার গালে কিস করলেন কেন?
আলিফঃ তুমিই তো বিশ্বাস করতে চাইছিলে না আমি সত্যি এখানে তোমার সামনে আছি। তাই তো…
সামিহাঃ তাই বলে…..
আচ্ছা হঠাৎ করে আপনার কি হলো বলুন তো। এসব কেন করছেন?
আলিফঃ কি করছি আমি?
সামিহাঃ আপনি জানেন না আপনি কি করছেন?
আমি কাল ই বাসায় চলে যাবো।
আলিফঃ কোথাও যাবে না তুমি। আমি যতদিন এখানে আছি। ততদিন তুমি ও এখানেই থাকবে।
সামিহাঃ judwaa 2 মুভি দেখছেন?
আলিফঃ হুম।।। তুমি কি এখন মুভি দেখবে। হঠাৎ করে মুভির কথা জিঙ্গেস করলে যে?
সামিহাঃ আরে মুভি দেখবো না। এই মুভি আমি আগেও অনেক বার দেখছি।
আলিফঃ তাহলে???
সামিহারঃ judwaa 2 মুভির varun dhawan এর মতো কি আপনার ও কোনো যমজ ভাই আছে?
আলিফঃ নাতো।। কেন?
সামিহাঃ আমার তো মনে হচ্ছে আপনার জায়গায় আপনার যমজ ভাই এসে গেছে। এতো কথা বলছেন। আপনার ক্যারেকটার তো ফুল চ্যান্জ হয়ে গেছে।
ভাবছি এখন কি সত্যিই আপনি আমার সামনে আছেন?
আলিফঃ তোমার এতো কিছু ভাবতে হবে না। অনেক রাত হয়ছে এখন তুমি ঘুমিয়ে যাও।
গুড নাইট জানু।।।
সামিহাঃ আপনি আবার ও জানুর নাম নিলেন। আরে বললাম তো জানু ঘুমিয়ে আছে। আপনার জানু কে কিছু বলার থাকলে সকালে বইলেন। এখন এখান থেকে যান তো। আমি ঘুমাবো।
আলিফ কিছু বলার আগেই জানুটা ঘুমের ঘোরে বলতে শুরু করে দিল।।।।।।
জান্নাতঃ সামিহা ঘুমের মাঝে কার সাথে কথা বলছিস।আর আমাকেই বা ডাকছিস কেন?
সারা দিন তো তোর র্টচার সহ্য করি। রাতে তো একটু শান্তিতে ঘুমাতে দিবি।
সামিহাঃ সারা দিক আমি তোকে র্টচার করি?
ঘুমা তুই না করছে কে?
আলিফঃ আচ্ছা জান এখন আমি যাই। সকালে দেখা হবে।
সকালে….
সামিহাঃ আমি আর জানু ছাদে বসে গল্প করছি। হঠাৎ করে আলিফ আসলো।
আলিফঃ হাই জানু কি করো?
সামিহাঃ জানু তোকে কি জিঙ্গেস করছে আন্সার দে।
আলিফঃ আমি জান্নাত কে না তোমাকে জিঙ্গেস করছি।
সামিহাঃ আমার নাম সামিহা জানু না।
আলিফঃ ওর নাম ও জান্নাত জানু না।
সামিহাঃ আপনি তো মহা পেঁচি লোক।
জান্নাতঃ কি হচ্ছে এখানে?
সামিহাঃ কানা নাকি কানে কম শুনছ?দেখতে আর শুনতে পাচ্ছিস না কি হচ্ছে এখানে।
জান্নাতঃ দেখতে ও পাচ্ছি আর শুনতে ও পাচ্ছি কিন্তু কিছুই বুঝতে পারছি না।
সামিহাঃ বুঝবি কি করে মাথায় তো গোবর ছাড়া আর কিছুই নাই।
জান্নাতঃ যা আমার মাথায় না হয় গোবর তাই কিছুই বুঝতে পারছি না।কিন্তু তোর মাথায় তো গোবর নাই তো তোই ই একটু বুঝিয়ে দে।
আলিফঃ কারো কিছুই বুঝাতে হবে না আমি সব বুঝিয়ে দিচ্ছি।
আসলে আমি তোমার ফ্রেন্ড সামিহা কে ভালোবাসি।
সামিহাঃ (আমি আর জানু এক সাথে) কি……..?
আলিফঃ এতো অবাক হওয়ার কি আছে।
আমি সামিহা কে ভালোবাসি।
এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই।
সামিহাঃ ওই বোবা বান্দর। আমার জন্য আবার কবে থেকে তোর মনে ভালোবাসা উতলে উঠলো।
জান্নাতঃ সামিহা তোর কাছ থেকে আমি এটা আশা করিনি।এতো কিছু হয়ে গেল আর তুই আমাকে কিছুই বললি না।
সামিহাঃ আরে জানু কিছু হলে তো বলবো।
জান্নাতঃ কিছু না হলে আলিফ ভাইয়া কেন বললো ভাইয়া তোকে ভালোবাসে?
সামিহাঃ আরে শাঁকচুন্নি তা আমি কি করে বলবো? আমি নিজেই তো জানি না ওই বোবা বান্দরটা যে আমাকে ভালোবাসে।
ওই বোবা বান্দর তোই কবে থেকে আমাকে ভালোবাসিস?
তুই তো আমাকে এই দুদিন হলো দেখলি।এর মধ্যেই ভালোবেসে ফেললি।
আলিফঃ আর এক বার তুই করে বললে একটা থাপ্পড় দিব।
ভালোবাসতে কাউকে চিনা জানার প্রয়োজন হয় না। আমি তোমাকে প্রথম দেখাতেই ভালোবেসে ফেলছি।
যে দিন তুমি গ্রামে আসছিলে।।।।ঐ দিন হাটতে না পেরে রাস্তায় বসে গেছিলা ওখানেই তোমাকে প্রথম দেখছি। রাতে যখন তুমি ঘুমিয়ে ছিলে তখন ও আমি তোমার রুমে গেছিলাম। ঘুমিয়ে থাকলে যে তোমাকে কি মায়াবী লাগে তা বলে বুঝাতে পারবো না। যখন ডাইনিং টেবিলে বসে বুঝতে পারলাম তুমিও আমার প্রতি একটু দুব্যল তখন থেকেই তোমার সাথে এ্যাকটিং শুরু করে দিলাম।ঐ দিন যখন তুমি খোলা চুলে গান গেয়ে নাচতে নাচতে ছাদে গেছিলা তখন ইচ্ছে করছিলো তোমার সাথে কথা বলতে। তোমাকে একটু কাছ থেকে দেখতে।
সামিহাঃ তাহলে আপনি আমার সাথে এতোদিন এ্যাকটিং করছিলেন। আপনি ফাস্ট থেকেই আমাকে লাইক করতেন?
আলিফঃ হুম।।।।।
আমি তো তোমাকে ফাস্ট দেখাতেই ভালোবেসে ফেলছি। ফাস্ট দেখাতেই ফাস্ট লাভ।।।
সামিহাঃ কিন্তু আমার তো বফ আছে।
জান্নাতঃ কি তোর বফ ও আছে আর তা ও আমাকে বললি না। আমি থাকবো না। আমি এখনই এই ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে মারা যাবো।
সামিহাঃ আরে আমার শাঁকচুন্নি….
তোর এতো কষ্ট করতে হবে না। আস আমিই তোকে ছাদ থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই।
আলিফঃ তোমার বফ নেই এটা তো ক্লিয়ার হয়ে গেল।আর থাকলেও আমার কোনো প্রবলেম ছিল না। বিয়ের আগে মেয়েদের এমন দু-তিনটা বফ থাকেই।বিয়ের পর সব বফ পালিয়ে যাবে।
সামিহাঃ বিয়ের পর মানে?
আলিফঃ আমাদের বিয়ের পর তো আর তোমার বফ থাকবে না তাই না?
সামিহাঃ আমাদের বিয়ে?
আমি আপনাকে বিয়ে করবো কেন? আমি কখনও আপনার মত বোবা বান্দরকে বিয়ে করবো না।
জান্নাতঃ প্রথম দেখেই ক্রাশ খাইছস। এখন ক্রাশ এসে বিয়ের জন্য প্রপোজাল দিলে আর তুই ভাব নিচ্ছিস।
আলিফঃ ঠিক বলছো জান্নাত আপু।এতো দিন আমার পিছনে হাত ধুয়ে পড়ে ছিল আর এখন আমি ওকে ভালোবাসি এটা জানার পর ভাব নিচ্ছে।
সামিহাঃ তুই আধও আমার ফ্রেন্ড?
আমি তো ফাস্ট দেখাতেই ক্রাশ খাইছিলাম। আমার ক্রাশ যদি এ্যাকটিং করতে পারে তাহলে আমি পারবো না কেন?
চান্দু এতো দিন আমি তোমার পিছনে ঘুরছি এখন তুমি আমার পিছনে ঘুরো।
এভাবে ফুপ্পির বাসায় কিছু দিন কেটে গেল।।
কিছু দিন পরেই আমাদের রেজাল্ট দিবে তাই বাবাই আমাকে বাসায় চলে আসতে বললো।
আলিফঃ সামিহা তুমি সত্যিই চলে যাবে?
সামিহাঃ হুম বাবাই বলছে। আর আমি তো এখানে সব সময় থাকতে পারবো না। আমাকে কলেজে এডমিশন নিতে হবে।
আলিফঃ ঢাকা গিয়ে তুমি আমাকে ভুলে যাবে না তো?
সামিহাঃ ঢাকা কেন এই পৃথিবী থেকে চলে গেলেও আমি তোমাকে ভুলব না। আর তুমিও তো ঢাকা যাবে।
আলিফঃ আমার বাসা তো তোমার বাসা থেকে অনেক দূরে।
সামিহাঃ দূরে থাক তো কি আমরা মাঝে মাঝে দেখা করবো।
আমরা ঢাকা এসে গেলাম। রেজাল্ট দিয়ে দিছে। আমি আর জান্নাত একই কলেজে এডমিশন নিলাম।
আমার আর আলিফের রিলেশন ভালোই চলছে।
কয়েক দিন পর…..
আমি আর আলিফ একটা পার্কে দেখা করতে আসছি।
;; আচ্ছা আলিফ তোমার ফেমিলি থেকে কি আমাকে মেনে নিবে?
আলিফঃ কেন নিবে না।আমার বাবা মা তো ওনাদের ছেলের জন্য তোমার মতই একটা পেত্নী বউমা চায়।
সামিহাঃ পেত্নী বউমা?
তুমি আবার ও আমাকে পেত্নী বললা।যাও তোমার সাথে কোনো কথা নাই। (এটা বলেই উঠে আসতে লাগলাম)
আলিফঃ জানে মান আমাকে ছেড়ে যেও না। তোমার মত পেত্নীটাকে ছাড়া যে আমি বাঁচব না। তোমাকে ছাড়া আমি নিশ্বাস না নিতে পেরে মারা যাবো।
সামিহাঃ আমি দৌঁড়ে আলিফের কাছে এসে। (ওর মুখে হাত দিয়ে) আর একবার মারা যাওয়ার কথা বললে আমি নিজেই তোমাকে গলা টিপে মেরে ফেলব।
আলিফঃ জান আর কিছুক্ষণ এভাবে আমার দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে থাকলে আমি এমনিতেই মারা যাবো।
সামিহাঃ আলিফ আবার?
কয়েক মাস পর আলিফ ওর বাসায় আমাদের রিলেশনের কথা বলে দেয়। ওর ফেমিলির সবাই মেনে নেয়। আমিও বাবাই কে সব কিছু বলে দেই।বাবাই ফাস্টে না মানলে ও একমাত্র মেয়ের আবদার ও সুখের কথা ভেবে বাবাইও সব মেনে নেয়।
অবশেষে আজ আলিফ প্রথম বার আমাদের বাসায় আসবে বাবাইয়ের সাথে দেখা করতে। আমি আর বাবাই আলিফের জন্য ওয়েট করতেছি।
জান্নাতঃ কিরে এমন করছিস কেন?
সামিহাঃ টেনশনে আমার হাত পা ঠান্ডা হয়ে গেল। আর তুই জিঙ্গেস করছিস এমন করছি কেন?
জান্নাতঃ আরে এতো টেনশন নিস না। দেখবি আঙ্কেল ঠিকই আলিফ ভাইয়া কে পছন্দ করবে।
সামিহাঃ হুম জানু তাই যেন হয়।
কখন আসবে আলিফ……?
আজ আমার অনেক নার্ভাস লাগছে। বাবাই আলিফ কে মেনে নিছে পরে ও…..
তানভীরঃ কি হলো জান্নাত থেমে গেলে কেন? পরে কি হয়েছে বলো।
আলিফ কি আসছিল সামিহাদের বাসায়???
সিয়াতঃ জান্নাত আমার কিছু রিলেটিভ তোমার সাথে দেখা করতে চাচ্ছে। একটু নিচে আসো।
জান্নাতঃ হুম আসছি।
তানভীরঃ জান্নাত পরে কি হলো বলে যাও প্লিজ।
জান্নাতঃ ভাইয়া আজ না। পরে কোনো একদিন আমি আপনার বাসায় আসবো পরেই না হয় বাকিটুকু বলবো।
চলবে…..