#গোধুলী_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন
|পর্ব-১|
৫তলা একটা বাড়ির গেটের সামনে কালো রঙ্গের একটা গাড়ি এসে থামলো।
হাজারো কৌতুহল নিয়ে রীতি গাড়ি থেকে নামার জন্য পা বাড়ালো।
রীতির আগেই রীতির ১২বছরের ভাইটি গাড়ি থেকে এক প্রকার দৌড়ে নামলো।
রীতি গাড়ি থেকে নামতেই গেইটের ডানপাশে দেয়ালে টাইসের মধ্যে খোদাই করে লিখাটার উপর চোখ পড়লো।
“সুখ নীড়”
রীতি মুচকি হেসে লেখাটার উপর হাত বুলালো।
পেছনে রীতির মা বললো,
—–“কিরে চল।”
রীতি মায়ের দিকে ঘুরে স্নিগ্ধ হেসে মাথা নাড়ালো।গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই রীতির মনে হচ্ছে সে সত্যিই সুখ নীড়ে এসেছে।
বাড়ির সামনে বিশাল বড় ফুলের বাগান।রীতির মনের মাঝে শিহরণ বয়ে যাচ্ছে।এত সুন্দর বাগান দেখে চোখ,মন দুটোই জুড়িয়ে গেলো।রীতি বাড়ির ভিতরে যাওয়া বাদ দিয়ে বাগান দেখায় ব্যস্ত।
ও খেয়াল করে দেখলো সেখানে বাগানে কোনো বিদেশি অর্কিড নেই।সব দেশী ফুলের গাছ।
ডান পাশে বড় একটা বকুল গাছ।ফুলের সিজন এখানো হয়নি তাই ফুল শুণ্য।কিন্তু ফুল ফোটার সিজনে বকুল ফুলের ঘ্রাণ পাবে সেটা ভেবেই হৃদয় নাড়িয়ে গেলো।
একটা বেলী ফুলের গাছ হলে ভালো হতো।
—–“রীতি কি করছিস?আবার দাড়িয়ে গেলি কেনো?”
রীতি উচ্ছ্বসিত হয়ে বললো,
—–“মা দেখো কত সুন্দর বাগান।একদম আমাদের বাড়ির মতো।একটা বকুল গাছও আছে।”
রীতির মা মুচকি হেসে বললো,
—–“আমরা এখুনি চলে যাচ্ছিনা।থাকার জন্য এসেছি।অনেক সময় পাবি দেখার।এখন তাড়াতাড়ি আয়।বাড়িটা দেখতে হবে,জিনিসপত্র গোছাতে হবে।কত কাজ! তোমার আর কি,গিয়ে তো বই নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে।সব তো আমাকেই করতে হবে।উফফ কি মেয়ে হয়েছে আমার।”
রীতি গাল ফুলিয়ে মায়ের পেছনে পেছনে যাচ্ছে।ওর বাবা আর ভাই অলরেডি চলে গেছে ভেতরে।
রীতি নিজেদের বাড়ি রেখে এই ভাড়া বাড়িতে আসতে চায়নি।কিন্তু ওদের বাড়ির মতো এখানেও বিশাল বড় একটা বাগান আছে সেটা দেখে একটু হলেও ভালো লাগছে।
নিশ্চয়ই এই বাড়ির মালিক অনেক শৌখিন।নয়তো ঢাকা শহরে ভাড়া দেওয়ার জন্য তৈরি বাড়িতে এতো বড় বাগান খুব কমই দেখা যায়।
মায়ের পেছনে পেছনে সিড়ি বেয়ে তিনতলায় উঠে গেলো রীতি।
ঢাকার পাশ্ববর্তী এক মফস্বল শহরে ওর পরিবারের বসবাস।বাবা হাইস্কুলের ম্যাথের শিক্ষক ছিলেন।তারপর পদোন্নতি পেয়ে হেডমাস্টার হয়েছিলেন।৫বছর হেডমাস্টারের দায়িত্ব পালন করেছেন নিজের শহরের হাইস্কুলে।তারপর হটাৎ করে বদলী হয়ে যান।
তবে তিনি চেষ্টা করলে নিজের শহরেই থাকতে পারতেন।তিনি সেটা করেননি রীতির জন্য।রীতি অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।রোজ এক ঘন্টার বাস জার্নি করে ভার্সিটিতে আসে।তিনি মেয়েকে একা কোথাও থাকতে দিতে চান না আবার না তিনি চাকরীর জন্য এখানে আসতে পারবেন।এখন যখন আল্লাহ সেই সুযোগ করে দিয়েছে তাই তিনি মেয়ের কথা ভেবে এখানে চলে এলেন।বর্তমানে দেশের যে অবস্থা তাতে একটা মেয়ের বাসে করে আসা-যাওয়া ,এতো দূরের পথে একা জার্নি করা খুবই রিক্স।
আর এখান থেকে রিক্সা নিলে ১০-১২ মিনিটে ভার্সিটি পৌছে যাবে।
রীতি নিজেদের ফ্ল্যাট ভালো করে ঘুরে ঘুরে দেখে নিলো।পাশাপাশি তিনটা বেডরুম,ডাউনিং স্পেস,কিচেন সব কিছু দেখে নিলো।
জিনিসপত্র এখানে আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং জায়গা মতো সব ফার্নিচার সেট করা হয়ে গেছে।এখন শুধু গোছগাছ করে নিতে হবে।
রীতি নিজের রুমে গেলো।রুমের সাথে বারান্দা।বাথরুম এটাচ করা।সবচেয়ে ভালো রুমটা বাবা ওকেই দিয়েছে।বাবার আদরের রাজকন্যা বলে কথা।
ওর রুমে একটা বেড,একটা আলমারি,একটা ড্রেসিং টেবিল আর পড়ার টেবিলের সাথে লাগোয়া বুকসেল্ফ।বেশী আসবাবপত্র ওর পছন্দ না।রীতি মেঝেতে রাখা লাগেজ খোলে একে একে বইগুলো গুছিয়ে রাখলো।বই গুছানো শেষ করে রুম থেকে বাইরে গেলো।ওর মা কিচেন গোছাচ্ছে।
ওকে দেখে বললো,
—–“কিরে সব কাজ শেষ? এতো তাড়াতাড়ি? ”
রীতি ভ্রু উঁচিয়ে বললো,
—–“সব কাজ মানে?আমি কি সব করবো নাকি?আমি শুধু বই গুছিয়েছি।”
রীতির মা কপালে বিরক্তি ফুটিয়ে বললো,
—–“বেশ করেছো এখন বইয়ের উপর ঘুমিয়ে থাকো।রাতের বেলায় বইয়ের উপর ঘুমাবি।এই মেয়ে বিয়ে করে কি করে খাবে শ্বশুর বাড়ি গিয়ে?”
—–“মুখ দিয়ে খাবো আবার কি করে খাবো।”
রীতির মা কপালে হাত দিয়ে বললো,
—–“হায়রে কপাল!! পেটে শুধু বইয়ের বিদ্যা আছে।দুনিয়া দারি সম্পর্কে যদি একটু জ্ঞান থাকতো? শ্বশুর বাড়ি কাজ করলে খেতে দিবে না।”
—–“আমি তাদের সারাদিন রাত বই পড়ে শুনাবো।আর এর বদলে আমাকে খাবার দিবে।”
রীতির মা কাজ করতে করতে এমনিতেই হাপিয়ে গেছে।মেজাজও কিছুটা চটে আছে।ক্লান্ত শরীরে মেয়ের এসব উদ্ভট কথা একদম নিতে পারছেনা।
তাই বিরক্তি নিয়ে বললো,
—–“হ্যা তাই করিস।এখন যা তো আমার চোখের সামনে থেকে।আর গিয়ে নিজের জিনিসপত্র,নিজের রুম গুছিয়ে নে।তোর বাপ আমাকে কাজের জন্য পয়সা দেয়না।আমি দাসীবাঁদী নই।”
রীত মায়ের ধমকানি খেয়ে রুমে চলে গেলো।
তারপর নিজের জামাকাপড় আলমারি ভাজে ভাজে তুলে রাখলো।সব গুছিয়ে রুম পরিস্কার করে নিলো।
.
সাদিব রাত নটায় বাড়ি ফিরেছে।নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো।হাতে গিটার।অন্ধকারে গিটারে টুংটাং শব্দ তুলছে।
সব কাজ গুছিয়ে শাওয়ার নিয়ে রীতি বারান্দায় গিয়ে দাড়ালো।এক কাপ চা খেতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আলসেমি লাগছে চা বানাতে আর মাকে বললে তিনি দিবেন এক ধমক।সারাদিন কাজ করেছে।নয়তো রান্নায় তিনি ক্লান্ত হোন না।রান্নাবান্নায় শৌখিনতা তার আছে।নতুন বাড়িতে শিফট হওয়া চারটে খানি কথা না।
তাই অগত্যা চুপচাপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে।মাঝেমধ্যে মৃদু বাতাস এসে ওর এলোমেলো চুলগুলো ছুয়ে দিচ্ছে।
কানে হটাৎ টুংটাং শব্দ ভেসে আসছে।রীতি শব্দের উৎস খোজার চেষ্টা করছে।নিচ থেকে গিটারের মধুর সুর ভেসে আসছে।রীতি হাতে রাখা চশমাটা চোখে পড়ে একবার বাগানের আলোয় যতদূর দেখা যায় দেখে নিলো।আনাকে কানাচে সবটা দেখে নিলো কিন্তু কেউ নেই।
“খেতে আয়।বাবা বসে আছে।”
সাদিবের মা বারান্দার দরজায় দাড়িয়ে সাদিবকে বললো।
সাদিব গিটার থেকে আংগুল সরিয়ে বললো,
—–“তুমি যাও আমি আসছি।”
সাদিবের মা চলে গেলো।সাদিব বিছানার উপরে গিটার রেখে খেতে চলে গেলো।
রীতি গিটারের শব্দ না পেয়ে হতাশ হয়ে রুমে গেলো।
বাবা বাইরে থেকে খাবার এনেছে।রীতি আর রিমনের জন্য পিজ্জা এনেছে।
রীতি লাস্ট পিচ মুখে দিবে ওমন সময় রিমন ওর হাত থেকে পিজ্জার পিচটা নিয়ে দ্রুত মুখে পুরে নিলো।
রীতি ভ্রু কুচকে দাত খিটমিট করে চিতকার করে উঠলো,
—–“ফুটবল!!” (রিমন বলের মতো মোটা হওয়ায় রীতি ওকে ফুটবল বলে ডাকে)
রীতি উঠে দাড়িয়ে রিমনকে মারতে যাবে আর তখনই রিমন ভো দৌড়।
রীতি দৌড়াদৌড়ি করে শেষে রিমনকে ধরতে পেরেছে।তারপর দুই ভাইবোন মারামারি চিতকার চেচামেচি করছে ড্রয়িংরুমে।
রীতির মা ওদের চিতকার চেচামেচি শুনে ওদের ধমকাচ্ছে আর রীতির বাবাকে বলছে,
—–“তোমার ছেলেমেয়েকে সামলাও নয়তো আমি এক্ষুনি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো।এদের জ্বালা আর আমার সহ্য হয়না।”
রিমন কাদো কাদো হয়ে বললো,
—–“এই কানা তালগাছ আমাকে আগে মেরেছে।”
রীতির বাবা আফজাল হোসেন ধমকের সুরে বললো,
—–“কি শুরু করেছো তোমরা? চলো আমার সাথে।”
দুজনকে রীতির রুমে নিয়ে শান্ত গলায় বললো,
—–“মারামারি ঝগড়া যখন করবে নিজেদের রুমে করো মায়ের সামনে কেনো?সারাদিন কাজ করেছে মেজাজ চটে আছে।আর মেজাজ খারাপ করলে আর খাওয়া জুটবেনা।নেও এখানে দুজনে খুশি মতো ঝগড়া-মারামারি করো।”
তারপর তিনি চলে গেলেন।রীতি আর রিমন দুজনেই হা করে বাবার যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে।
ভেবেছিলো দুজনকে ইচ্ছে মতো বকে দিবে কিন্তু তিনি তো…
কেটে গেছে ৪-৫দিন।বাড়ির সব ঠিকঠাক করে গুছানো শেষ।এখন শান্তি মতো রীতি তার রুটিন অনুযায়ী লাইফ লিড করছে।
সকালে চা খেতে খেতে ক্লাসের
পড়াগুলো আরেকবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া,নাস্তা সেড়ে রেডি হয়ে ভার্সিটি যাওয়া,শেষ বিকেলে ছাদে গিয়ে বই পড়া,রাত জেগে পড়াশোনা করা।এই চলছে ওর লাইফ।
রীতি নিয়ম মতো আজো বিকেল বেলা ছাদে বসে বসে পড়ছিলো।
ছাদে মানুষ খুব কম,আসে তবে মাঝেমধ্যে অনেকেই দল বেধে আসে।তবে তাতে রীতির পড়ায় কোনো সমস্যা হয়না।কেননা ও এক কোনায় গিয়ে কানে হেডফোন গুঁজে পড়ে।
সন্ধ্যা নেমে আসছে।আকাশের লাল আভা মুছে গিয়ে আকাশ কালো হয়ে আসছে।অন্ধকার পুরো পৃথিবী রাজত্ব করার জন্য দল বেধে নামছে।
রীতি যথারীতি বই বন্ধ করে ওড়নাটা ভালো করে জড়িয়ে নিলো।তারপর গুটিগুটি পায়ে সিড়ি দিয়ে নামছে।
সাদিব থ্রি-কোয়াটার প্যান্ট পড়ে আকাশী কালার টি-শার্ট গায়ে ফোন টিপতে টিপতে ছাদে উঠছে।
রীতি নামার সময় হটাৎ সাদিবকে দেখলো।সাদিবকে দেখে ও অপলক সাদিবের দিকে চেয়ে আছে।যদিও সাদিবের পুরো মনোযোগ ফোনে আশেপাশে কি হচ্ছে ওর জানা নেই।
ফরসা,লম্বা,মাঝারি গড়নের খোচাখোচা দাড়ি ওয়ালা হ্যান্ডসাম সাদিবকে দেখে রীতি ঠাস করে প্রেমে পড়ে গেলো।
মানুষ ড্রেনে পড়ে,খাট থেকে পড়ে,উস্টা খেয়ে ঠাস করে পড়ে কিন্তু রীতি ঠাস করে প্রেমে পড়ে গেলো।
সাদিব রীতিকে পাশ কাটিয়ে যেতে যেতে একবার চোখ তুলে রীতির দিকে তাকালো ব্যাস রীতির হার্টবিট মিস হয়ে গেলো।
রীতি তাড়াতাড়ি চোখ সরিয়ে নিলো।
সাদিব ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে ওর কাজে ও চলে গেলো।
.
রীত বই খোলে বসে আছে কিন্তু পড়ায় ওর মন নেই।কিছুতেই মন বসাতে পারছেনা।বারবার সাদিবের চেহারাটা ভেসে উঠছে।
রীতি নিজেকে নিজেই বিরবির করে বলছে,
“হাও দিস পসিবল!রীতি দ্যা গ্রেট নিরামিষ মার্কা মেয়ে প্রেমে পড়েছে?যার কিনা একমাত্র প্রেম বইয়ের সাথে।যার বাইরের দুনিয়া জিরো। ফ্রেন্ডরা শুনলে নির্ঘাত হাসতে হাসতে প্রাণ বিসর্জন দিবে।তাও এতো সুন্দর একটা ছেলের?এই ছেলে আমাকে জীবনেও পাত্তা দিবেনা।ওর নিশ্চয়ই ডজন খানেক প্রেমিকা আছে আর আমার মতো শ’খানেক ওর প্রেমে পড়ে মারা খেয়েছে।রীতি মাথায় থেকে সব ঝেড়ে ফেল।ওর সাথে আমার যায়না।চশমা পড়া ক্ষেত একটা মেয়ে।ওর মতো ধবধবে গায়ের রংও আমার নয়।উজ্জ্বল শ্যামলা তবুও চলে যেতো যদি আরেকটু স্মার্ট হতাম।
ধুরর ছাই কি ভাবছি আমি।উফফ মাথা থেকে এসব বের করতে হবে।নয়তো আমার পড়াশোনা সব শেষ।”
রীতি ড্রয়ার থেকে একটা খাতা বের করলো।তারপর পেজ উল্টে কিছু লিখতে গিয়ে থমকে গেলো।কি লিখবে?ওই ছেলের নামই তো জানেনা।
রীতি তাই লিখলো আননোন।তারপর সেটার উপর কলম দিয়ে ইচ্ছে মতো আকাঝুকি করলো।আননোন লিখাটা পুরোটা কাটার পরই শান্তি পেলো।
রীতি নিশ্বাস ছেড়ে বললো,
—–“আউট অফ মাই মাইন্ড।”
তারপর পড়ায় মন দিলো।
সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে পানি ভর্তি মগ হাতে বারান্দায় গেলো।দুইটা টপে বেলীফুলের গাছ লাগিয়েছে।সেগুলোতে পানি দিচ্ছে গুনগুন করতে করতে।
বেলী ফুল প্রচন্ড প্রিয় তাই গাছ কিনে এনে বারান্দায় টপ রেখেছে।রোজ সকাল বিকাল তাতে পানি দেওয়া ওর অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
তারপর চায়ের কাপ হাতে বারান্দায় এসে দাড়ালো।চারপাশটা দেখতে দেখতে জোরে নিশ্বাস নিয়ে কাপে চুমুক দিলো।বাম হাতে রাখা চশমাটা চোখে পড়ে নিলো।চা শেষ করে বই নিয়ে বসলো।
গেটের সামনে সেই কখন থেকে দাড়িয়ে আছে রীতি।মুখের উপর রোদটা বিরক্তিকর লাগছে।হাত দিয়ে রোদটা আড়াল করার চেষ্টা করছে।
একটা রিকশাও নেই রাস্তায়।এদিকে ক্লাসের সময় হয়ে গেছে।
তখনই গেইট দিয়ে একটা বাইক বের হলো।বাইকের শব্দে রীতি পেছনে দেখে একপাশে সরে দাড়ালো।
একটা মেয়ে বিরক্তি নিয়ে রাস্তার পাশে দাড়িয়ে আছে।আর এদিক সেদিক উকি দিচ্ছে সেটা সাদিবের চোখে পড়লেও কিছু জিজ্ঞেস করলো না।যদি ছ্যাচড়া ভাবে।
সাদিব সাদিবের মতো চলে গেলো।রীতির হটাৎ চোখ পড়লো বাইকারের দিকে।পেছনে থেকে দেখায় চিনতে পারলোনা কে সে।
রীতি মনে মনে বিরক্তি নিয়ে বললো,
—–“আজ যদি একটা বাইকার বিএফ থাকতো তবে অন্তত রাস্তায় এভাবে দাড়িয়ে রোদে পুড়তে হতোনা।”
চলবে…
#গোধুলী_বেলায়_প্রেম
#ফাবিহা_নওশীন
|পর্ব-২|
আজকে রীতির ভার্সিটিতে ক্লাস নেই।বসে বসে শান্তিমতো টিভি দেখছে।কারণ ওর গুনধর ভাই আসেপাশে নেই রিমোট নিয়ে কাড়াকাড়ি করার জন্য।
তখনই কলিং বেল বেজে উঠলো।রীতির মা কিচেন থেকে রীতিকে ডেকে বললো দেখতে কে এসেছে।রীতি টিভি অফ করে ওড়না নিয়ে দরজা খোলতে চলে গেলো।
দরজা খোলে দেখলো একটা ফর্সা করে মেয়ে হাসি হাসি মুখ করে দাঁড়িয়ে আছে।রীতি পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে নিলো।মেয়েটা অপরিচিত।তাই জিজ্ঞেস করলো,
—–“কাকে চাই?”
—–“আপু আমি আপনাদের পাশের ফ্ল্যাটের।তাই ভাবলাম পরিচিত হয়ে যাই।আসলে এতোদিন আমি মামা বাড়ি ছিলাম তাই আসতে পারিনি।বাড়িতে এসে জানতে পারলাম পাশের ফ্ল্যাটে নতুন ভাড়াটে এসেছে।আর আমার সমবয়সী কিংবা বড় হবে এমন একটা মেয়ে আছে।তাই চলে এলাম বন্ধুত্ব করতে।জানেন তো আগে যারা ছিলো এখানে তাদের একটা মেয়ে ছিলো ১৬বছরের আমার সাথে খুব ভাব ছিলো।চলে যাওয়ার পর অনেক কেদেছি।”
রীতি মেয়েটার কথা শুনে বুঝতে পারছে মেয়েটা খুবই চঞ্চল আর প্রচুর কথা বলে।
—–“আপু ভেতরে আসবো?”
রীতি তখনো দরজায় ঠায় দাঁড়িয়ে আছে।মেয়েটা বাইরে দাড়িয়েই বকবক করে যাচ্ছে।রীতি মুচকি হেসে দরজা থেকে সরে বললো,
—–“হ্যা,অবশ্যই আসুন।”
ভেতরে নিয়ে মেয়েটাকে বসতে দিলো।
তারপর কিচেনের কাছে গিয়ে মাকে বললো,
—–“মা পাশের ফ্ল্যাট থেকে কেউ এসেছে।এসো।”
—–“বসতে দে।বসে কথা বল।আমি আসছি।”
রীতি পাশে গিয়ে বসে বললো,
—–“মা আসছে।আসলে একটু কাজ করছিলো।”
মেয়েটা একটুও অস্বস্তিবোধ করছেনা।চট করে জিজ্ঞেস করলো,
—–“আপু আমার নাম দিয়া।আপনার নাম কি?”
রীতি মুচকি হেসে বললো,
—–“আমার নাম রীতি।অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ি।আসলে আমি একটু কম কথা বলি।চুপচাপ আছি বলে কিছু মনে করবেন না।”
মেয়েটা আরেকটু কাছে এসে বসে বললো,
—–“আমাকে তুমি করে বলবেন তুই বললেও সমস্যা নেই।আমি আপনার ছোট।অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের স্টুডেন্ট।তাই প্লিজ।”
রীতি হেসে মাথা নাড়িয়ে বললো,
—–“আচ্ছা তবে আমাকেও আপনি বলোনা তুমি করেই বলো।আপনি ডাকটা আমার ভালো লাগে না।”
রীতির মা রান্নাঘর থেকে চলে এসেছে।দিয়া রীতির মায়ের সঙ্গে গল্প জুড়ে দিয়েছে।যেনো কতকালের পরিচিত মেয়েটা খুব চটপটে।
রীতির মা একের পর এক খাবার এনে দিচ্ছেন।রান্না করা আর সেই রান্না পরিবেশন করা তার অন্যতম শখ।আর কেউ যদি সেই রান্না খেয়ে প্রসংশা করে তবে তো কথাই নেই।
রীতি খেয়াল করলো মেয়েটা শুধু কথাই প্রচুর বলে না খায়ও প্রচুর।
খাচ্ছে আর প্রসংশা করছে।এই মেয়ে রীতির জন্য না আসলেও খাওয়ার জন্য প্রতিদিন আসবে সেটা শিওর।
রীতি টুকটাক কথা বলে দিয়াকে নিজের রুমে নিয়ে গেলো রুম দেখাতে।দিয়া রুম ঘুরে ঘুরে দেখে বললো,
—–“আপু তুমি নিশ্চয়ই খুব পড়ুয়া?”
—–“হ্যা বলতে পারো।”
—–“আমি সেটা তোমাকে দেখেই বুঝেছি।আর রুম দেখে কনফার্ম হলাম।চশমা পড়া মেয়েরা খুব পড়ুয়া হয়।তুমি দেখছি গল্প,উপন্যাস,কবিতাও পড়ো।”
—-“তুমি চাইলে মাঝেমধ্যে নিয়ে পড়তে পারো।”
—-“আমি নিজের বই ই পড়িনা।তবে পড়লে অবশ্যই নিবো।”
দিয়া বারান্দার দিকে গেলো।রীতিও পেছনে পেছনে গেলো।
দিয়া রীতির টপের গাছগুলো দেখছে।সেখানে কিছু গোলাপ আর বেলি ফুল ফুটেছে।নিচে থেকে শব্দ আসছে।রীতি নিচের দিকে উকি দিলো।
নিচে রিমন,ওর বয়সী আরো দুটো ছেলে,একটা ৪বছর বয়সী বাচ্চা ছেলে আর সাদিব ক্রিকেট খেলছে।আর চিল্লাচিল্লি করছে।
দিয়া পাশে গিয়ে দাড়ালো।
দিয়া একটা ছেলেকে দেখিয়ে বললো,
—–“ও আমার ভাই,দিহান।ক্লাস এইটে পড়ে।”
রীতির মাথায় চট করে উদয় হলো দিয়া তো এখানকার সবাইকে চিনে।অনেক বছর যাবত আছে।তাহলে নিশ্চয়ই ওই ছেলেটাকে চিনবে।
তাই কৌশলে জানার চেষ্টা করছে।
—-“ওটা আমার ভাই রিমন।বাকিদের চিনি না।”
—–“ওই যে লাল টিশার্ট পড়া ছেলেটা ওর নাম রকি।কালো শার্ট হিমেল,আর পিচ্ছিটা সাদিব ভাইয়ের বড় বোন মারিয়া আপুর ছেলে অভি।”
—–“আর সাদিব ভাইটা কে?”
—–“বাড়িওয়ালার ছেলে।ওই যে বড় ছেলেটা ওটাই সাদিব ভাই।”
বাড়িওয়ালার ছেলে এটা শুনে রীতির ছোটখাটো হার্ট অ্যাটাক হয়ে গেলো।শেষে বাড়িওয়ালার ছেলেকে দেখে ফিদা হয়েছে।
.
.
রীতি কানে হেডফোন গুঁজে নিলো।কেননা ছাদের ওপাশ থেকে হটাৎ খুব শব্দ আসছে।মনে হচ্ছে কয়েকজন মিলে আড্ডায় মেতে উঠেছে।
রীতি “তোমাকে”বইটায় গভীরভাবে ডুবে আছে কিন্তু চেচামেচির কারণে ব্যাঘাত ঘটেছে।তাই কানে হেডফোন গুঁজে নিলো তাতে কিছুটা হলেও রোধ হবে।
সাদিব নিজের ভাগিনাকে কোলে নিয়ে বিল্ডিংয়ের অন্য ছেলেদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে।সবাই চলে যাওয়ার পরেও সাদিব রয়ে গেলো ভাগিনার জন্য।
রীতি হেডফোন খোলে রেখেছে।
কিছুক্ষণ পরে গিটারের সুর ভেসে আসলো।রীতি কান খাড়া করে শুনছে।
সেদিন রাতেও শুনেছিলো।এই বিল্ডিংয়ে কেউ আছে যে গিটার বাজাতে পছন্দ করে।
তারপর কি মনে করে কানে আবারো হেডফোন গুঁজে নিলো।
সাদিব আপন মনে গিটার বাজাচ্ছে।আর ওর ভাগ্নে অভি একা একা এদিক সেদিক দৌড়ে খেলছে।হটাৎ রীতিকে ছাদের ওপাশে দেখে দাঁড়িয়ে গেলো।তারপর সাদিবের কাছে গিয়ে বললো,
—–“মামা এদিকে এসো,,।দেখো কে বসে আছে।”
সাদিব গিটার থামিয়ে দিয়ে বললো,
—–“কে আছে মামা?”
—–“চশমা পড়া।”
সাদিব গিটার রেখে অভির হাত ধরে ছাদের কোনার দিকে গেলো।
একটা মেয়ে একটা টুলের উপরে বসে বই পড়ছে।কানে আবার হেডফোন গুজা।অচেনা লাগছে মেয়েটাকে।এর আগে দেখেনি।এই বিল্ডিংয়ের সবাইকে ও চিনে।
সাদিব সামনে গিয়ে দাড়ালো।কিন্তু রীতি বইয়ের মধ্যে এমন ভাবে ডুবে আছে কে ওর সামনে সেটা খেয়াল করে নি।
সাদিব চুটকি বাজিয়ে বললো,
—–“এই চাশমিশ!”
রীতির তখন চোখে পড়লো সামনে থাকা মানুষটাকে।সাদিবকে দেখে ওর চোখ ছানাবড়া।বুক ঢিপঢিপ করছে।ওর ক্রাশ বয় ওর সামনে এসে দাড়িয়েছে।তাও নিজ থেকে কথা বলছে।নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছেনা।কিভাবে রিয়েক্ট করবে বুঝতে পারছেনা।
রীতি কান থেকে হেডফোন খোলে নিলো দ্রুত।
তারপর কাচুমাচু করে বললো,
—–“জ্বি…।”
সাদিব ভ্রু কুচকে বললো,
—–“কানে হেডফোন গুঁজে পড়া দেখানো হচ্ছে? ফাকিবাজ মেয়ে।”
রীতি ফোন দেখিয়ে বললো,
—-“ফোনে কোনো সং অন করা নেই।আমি ফাকিবাজি করছিনা আর না পড়া দেখাচ্ছি।”
সাদিব সবটা দেখলো।কিন্তু রীতি এমন কেনো করেছে সেটা ওর জানার ইচ্ছে হলো।
—–“তাহলে কানে হেডফোন কেনো?”
—–“আসলে কেউ গিটার বাজাচ্ছিলো।আমার ডিস্টার্ব হচ্ছিলো তাই।”
সাদিব মনে মনে ইনসাল্ট ফিল করলো।কেউ ওর গিটারের সাউন্ডকে ডিস্টার্ব মনে করছে।
—–“কি বললে?আমার গিটারের সুর তোমাকে ডিস্টার্ব করছিলো? ”
রীতি চোখ বড়বড় করে নিলো সাদিবের কথা শুনে।সাদিব গিটার বাজাচ্ছিলো আর ও সেটাকে ডিস্টার্ব বলছে।রীতি চোখমুখ কুচকে বললো,
—–“সরি আমি বুঝতে পারিনি আপনি বাজাচ্ছিলেন।”
সাদিব অবাক হয়ে বললো,
—-“তুমি যদি জানতে আমি বাজাচ্ছিলাম তাহলে ডিস্টার্ব ফিল করতে না?”
—–“না আসলে তা নয়।”
রীতি দাড়িয়ে গেলো আর ওর কোলের উপর থেকে ঠাস করে বই পড়ে গেলো নিচে।ওর কোলের উপর যে বই ছিলো সেটাই ভুলে গিয়েছিলো ভাগ্যিস ফোনটা হাতে ছিলো।নয়তো ফোনের মানচিত্র পাল্টে যেতো।
রীতি নিচু হয়ে বইটা তুলতে পারছেনা কারণ ওর চুলের খোপাটা ঢিলে মনে হচ্ছে।মনে হচ্ছে এখুনি খোলে যাবে।রীতির দুই হাত বন্দী।ফোন আর হেডফোন টুলের উপরে রাখতে যাবে তখনই চুল খোলে গেলো।ওর কোমড় অবধি লম্বা চুল ছড়িয়ে পড়লো পিঠ,কোমড়ে।রীতি দুঃখে চোখ বন্ধ করে নিলো।সাদিব রীতির কান্ড দেখছে।
রীতি ফোন আর হেডফোন রেখে তাড়াতাড়ি চুল খোপা করে নিলো।
তারপর বই তুলে সরি বললো।সাদিব রীতির পা থেকে মাথা পর্যন্ত চোখ বুলিয়ে নিলো।
—–“নাম কি?কয় তলায় থাকো?”
রীতি আমতা আমতা করে বললো,
—–“রীতি।দুতলার ২নাম্বার ফ্ল্যাটের নতুন ভাড়াটিয়া।”
—–“রিমন তোমার ভাই?”
রীতি ভয়ে ভয়ে মাথা নাড়িয়ে হ্যা বললো।
সাদিব মুচকি হেসে চলে গেলো।ও রীতিকে আর অপ্রস্তুত করতে চায়না।মেয়েটা অস্বস্তি ফিল করছে বুঝতে পারছে।
সাদিব যেতেই রীতি নিজেকে মনে মনে হাজারো গালি দিচ্ছে।প্রথমবার ক্রাশের এতো সামনে,প্রথম কথা হচ্ছে ওদের।কিন্তু নিজেকে গোছালো হিসেবে নয় অগোছালো ভাবে উপস্থিত করেছে।এখুনি এসব হওয়ার ছিলো? ছিহ!নিজের উপর প্রচুর রাগ হচ্ছে।ছেলেটা কি ভাববে ওকে।নিশ্চয়ই ক্ষেত ভাববে।
.
.
রীতি ক্যাম্পাসে ওর বান্ধবী রাইসার সাথে গল্প করছে।
রাইসা হুট করে উচ্ছাসিত হয়ে বললো,
—–“রীতি দেখ….!!”
রীতি রাইসার ইশারা করা আংগুল বরাবর দেখে লাফিয়ে উঠলো।
—-“ইনি এখানে?হাও দিস পসিবল? ”
রাইসা অবাক হয়ে বললো,
—–“মানে কি?উনি সেই মামা যিনি ফুচকা বিক্রি করেন।এতোদিন উনি আসেনি তাতে তোর জান বের হয়ে যাচ্ছিলো আর এখন উচ্ছাস প্রকাশ না করে এমন বিহেব করছিস?”
রীতি ভালো করে চেয়ে দেখলো হ্যা সেই ফুচকা বিক্রি করা মামা এসেছে।আর তার পাশে সাদিব কারো সাথে দাঁড়িয়ে কথা বলছে।রীতি সাদিবকে দেখে লাফিয়ে উঠেছিলো ফুচকাওয়ালাকে দেখেই নি।চোখেই পড়েনি।
—–“আসলে রাইসা,আমি ওই ছেলেকে দেখছিলাম ফুচকাওয়ালা মামাকে না।”
রাইসা অবাক হয়ে বললো,
—–“রীতি তুই ঠিক আছিস তো?শরীর ভালো? আমার বান্ধবী কি বলছে ও ছেলে দেখছে?”
রীতি রাগী ফেস করে বললো,
—–“মার খাবি?মেরে ভর্তা বানিয়ে দেবো।ওই ছেলেটাকে আমি চিনি।”
—–“কে ছেলেটা?”
—–“বাড়িওয়ালার ছেলে।”
—–“তো?”
—–“তো কি কিছুই না।”
—–“কিছু তো অবশ্যই আছে।নয়তো এভাবে লাফিয়ে উঠতি না।এই বল না বল না প্লিজ প্লিজ।”
রাইসার জোরাজোরিতে রীতি ছাদের ঘটনা বললো।
—-“উনাকে আমাদের ভার্সিটিতে দেখে অবাক হয়েছি এই যা আর কিছু না।”
—-“বেইবি এখানে একা তুমি না আরো অনেকেই পড়ে।বুঝেছো?”
—–“হ্যা বুঝেছি।(কিন্তু কোন ইয়ারের স্টুডেন্ট সেটাই তো জানিনা।)”
.
সাদিব এই দুপুর বেলা রোদের মধ্যে বাগানের মাটি খুড়ে গাছ লাগাতে ব্যস্ত।ঘামে গা যেনো নেয়ে উঠেছে।কপালে মাটি লেগে আছে।
শাওয়ার নিয়ে রীতি বারান্দায় চুল ঝাড়ছে।নিচের দিকে চোখ যেতেই রীতি দেখে যে ওর বারান্দা বরাবর সাদিব কোনো একটা গাছ লাগাচ্ছে কিন্তু কি গাছ সেটা উপর থেকে বুঝা যাচ্ছেনা।
রীতি চমশা নিয়ে এলো তাতেও বুঝতে পারছেনা কিন্তু এই মুহুর্তে ওর জানা চাই এটা কি গাছ।
তাই রিমনকে ডাকলো।
রিমন বারান্দায় আসতেই রীতি জিজ্ঞেস করলো,
—–“কি গাছ লাগাচ্ছে রে?দেখ তো।”
রিমন না দেখেই বললো,
—-“বেলী ফুল গাছ”
রীতি ভ্রু কুচকে বললো,
—-“ওই না দেখেই বলছিস?”
—–“আপু দেখেছি ওটা বেলি গাছ।নিচে গিয়ে দেখতে পারো বিশ্বাস না হলে।”
—-“আমি তো দেখতে পারছিনা।তুই কি করে দেখছিস?”
—-“কারণ আমি তোমার মতো কানা নই।হুহ।”
রিমন বিরক্তি নিয়ে চলে গেলো। কিন্তু রীতির মনে প্রশ্ন রয়েই গেলো।রিমন কিছু লুকাচ্ছে।।
তারপর রীতি নিচে দেখছে।
“যতই ভাবি এই ছেলের প্রেমে পড়বোনা কিন্তু এই ছেলে একের পর এক যা করছে তাতে প্রেমে পড়তে বাধ্য হচ্ছি।উফফ,ভিষণ ভাবে প্রেমে পড়ে যাচ্ছি।”
চলবে…..