Arranged Marraige part-13+15

0
384

#Ayesha
#ArrangedMarraige

পর্ব-13+14

ফাহাদ: ঠিক আছে যাও তাহলে
আমি: আপনি বাসায় আসবেন না?
ফাহাদ: না
আমি: কোথায় থাকবেন?
ফাহাদ: আমার বন্ধুর বাসা আছে ঐখানে থাকবো রাত টা, সকালে উঠে আবার চলে যেতে হবে, অফিসে অনেক কাজ জমে গেছে এই কিছুদিনে

আমি বাসায় যেতেই মায়ের হাজার প্রশ্ন, আমি এইসব পাত্তা নি দিয়ে নিজের রুমে চলে গেলাম, ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পরলাম, ঘুম ভাঙলো ফাহাদের ফোন, 8টা বেজে গেছে, এই কতদিনে আমার পড়ার খুব ক্ষতি হচ্ছে কোনোকিছু নিয়মের মধ্যে নেই।। মা ও কিছু বলছে না।।
আবার ফোন বাজলো

আমি: আসসালামু ওয়ালাইকুম
ফাহাদ: ওলাইকুম আসসালাম, এত দেরি কেন হয় ফোন ধরতে?
আমি: ঘুমিয়ে ছিলাম।
ফাহাদ: উঠ তাড়াতাড়ি, অনেক দেরি হয়ে গেছে, খাবার 3ঘণ্টা আগে ওষুধ খাবার কথা ছিল,ভুলে গেছ না?
আমি:হুমম
ফাহাদ: যা যা বলছি তা কর
আমি: কি?
ফাহাদ: ব্যাগ থেকে ডালিম বের কর, ধুয়ে খাও তারপর প্রেসক্রিপশন বের করে দেখ ঔষুদের পাশে নাম আছে, কখন কোনটা কত বার খাওয়া লাগবে দিয়া আছে,ঠিক থাক বুঝে ওষুধ গুলো খাও, না বুঝলে আমাকে জানিও
আমি: ঠিক আছে
ফাহাদ: যাও উঠ
আমি: হুমম যাচ্ছি (ফোনটা কেটে পাশে রেখে হাত মুখ ধুয়ে এসে ও যা যা বললো তাই করেছি)

আমি 10টা বাজে পড়ছি এমন সময় মা এসেছে।।

মা: আমাদের গ্রামে যেতে হবে
আমি: কেন
মা: তোর দাদার মৃত্যু বার্ষিকী নভেম্বরে 9তারিখ ভুলে গেলি? প্রতি বছর এই সময় যাই, তোর বাবা বলছে এইবার মাদ্রাসার সব ছাত্র দের খাওয়াবে তাই 2দিন আগেই যাওয়া লাগবে।।
আমি: মা আমার ডিসেম্বরে পরীক্ষা এখন কি দাদু বাড়ি গেলে পড়া হবে?
মা: কিচ্ছু করার নেই বাসায় তো তোকে একা রেখে যাওয়া যাবেনা, তোর বাবা বলছে ব্যাগ পত্র ঘুচিয়ে রাখতি সকাল 9টায় গাড়ি আসবে।।
আমি: ঠিক আছে।।

গ্রামে গেলে তো ভালই লাগে তবে পড়াশুনা টা হবেনা এই যা, বাসায় এসে রাত দিন এক করে পড়া শুরু করব।।

খাওয়া শেষ করে 12টা পর্যন্ত পরছি, শরীর দূর্বল লাগছিল তাই শুয়েই ঘুমিয়ে গেছি।।

কি সুন্দর রাস্তা ফাহাদ আমার হাত ধরে হাঁটছে, রাস্তা টা সমুদ্রের দিকে যাচ্ছে, আমরা হাট তে হাট তে সমুদ্রের তীরে চলে আসছি, হটাৎ ফাহাদ আমার হাত টা ছেড়ে দিল সে আসতে আসতে দূরের কুয়াশায় মিলিয়ে যাচ্ছে, আমি জোড়ে চিৎকার করে ডাকছি ফাহাদ আমাকে রেখে যাবেন না প্লিজ ফাহাদ,

আমার ঘুম ভেংগে গেল আমি ভয়ে গলা শুকিয়ে গেছে, ফ্যান চলছে তাও ঘামছি। আমি তাহলে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখেছি, বালিশের নিচ থেকে ফোন বের করে দেখি 7টা মিসড কল 2টা মেসেজ।।
মেসেজ গুলো ভিউ করলাম

॥॥ঘুমিয়ে যেও না, বনুকে ফোন দিয়েছিলাম তখন বলল তুমি পড়ছো তাই ডিস্টার্ব করছিনা।।
12.05am

॥॥ এত গুলো ফোন করেছি ধর নি, তারমানে ঘুমিয়ে গেছ, একটু কথা বলে ঘুমালে কি হতো? কি আর করা আমার পুরা কপাল, রাতে ঘুম ভাঙলে এই অভাগার কথা মনে পরলে ফোন দিও
1.45am

আমি মেসেজ থেকে বের হয়ে ওর নাম্বারে কল দিলাম, 4টা বাজে। কল হতেই সাথে সাথেই ফোন রিসিভ করল,

আমি: মনে হলো আমার কলের অপেক্ষায় ছিলেন?
ফাহাদ: সব সময় থাকি দুর্ভাগ্য তুমি বুঝ না
আমি: ঘুমিয়ে গেছিলেন?
ফাহাদ: না, সকালে 6টায় ট্রেন এখন ঘুমালে যেতে পারতাম না।।
আমি: কি করছেন?
ফাহাদ: কার্ড খেলছিলাম
আমি: আপনি কার্ড খেলেন? আমি আপনাকে এমন কখন ভাবিনি আপনি এমন করতে পারলেন?
ফাহাদ: আরে গাঁধী এইসব সবাই খেলে
আমি: তারা খেলে খেলুক আপনার কেন খেলা লাগে? আপনার কি টাকা কম আছে নাকি যে কার্ড খেলে টাকা মেরে খাওয়া লাগবে?
ফাহাদ: কি যন্ত্রণায় পরলাম
আমি: হে হে এখন তো জেনে গেসি তাই যন্ত্রণাই মনে হবে, আমি কাল বাবাকে বলব এই ছেলে এইসব করে
ফাহাদ: তোমার বাবা ও খেলে আসছে পিচ্ছি, এইগুলা শুনলে তোমার বাবা তোমাকে বলদি উপাদি দিতে 1মিনিট ও ভাববে না।।
আমি: কাল গ্রামে যাবো
ফাহাদ: হুম জানি খাদিজা বলছিল
আমি: ঠিক আছে ঘুমাব রাখছি
ফাহাদ: ফোন করেই শুধু রাখছি রাখছি
আমি: হুমম বাই
ফাহাদ: বাই

আমি আবার ঘুমিয়ে পরলাম।।
সকালে মা ডেকে গেছে উঠিনি বুবু খাদিজা ও 2বার টহল দিয়ে গেছে আমি আমার মত ঘুমাচ্ছি, একটা ভয়ংকর পায়ের আওয়াজ, যার পায়ের আওয়াজে পুরা বাড়ি কেপে উঠে, আমি তারাতারি উঠে বিছানা রেডি করে নিলাম বাবা রুমে ঢুকছে

বাবা: তোমার মা বললো তোমার নাকি ঘুম শেষ হয় না?

আমার মা কে আর কি বলবো জানে বাবাকে ভয় পাই কি দরকার ছিল বাবার কানে এইসব ঢুকানোর

আমি: না বাবা পড়া শেষ করতে রাত হয়ে গেছিল তাই
বাবা: তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নাও গাড়ি চলে আসছে।।
বাবা চলে গেল।।

আমি হাফ ছেড়ে বাঁচলাম, বাবার সামনে গেলে আমার এক পা কবরে আর এক পা আগুনে থাকে, সবাই বলে আমার বাবা এমন আমার বাবা তেমন যা চাই তাই দেয়, বাবার কাছে নাকি কোন ছেলে প্রপোজ করছে কোন ছেলে কতদিন ঘুরেছে সব বলে, এমন অনেক ন্যাকা বান্ধুবিও ছিল যারা বলেছে বাবার সাথে রাতে ঘুমায়, বাপ্রে আমার সাথে এমন ঘটলে তো আমি ঘুমের মধ্যে স্টক করতাম।।।

মা: আয়শী তোর বাবাকে কি আবার ডাকা লাগবে?

আমি দৌড়ে বাথরুমে চলে গেলাম, গোসল করে নিয়েছি ঐখানে পুকুরে যেয়ে গোসল করা টা আমার মুঠেও ভালো লাগেনা।।

আমি নীল জামা, জামায় গোল্ডেন আর কমলা সুতায় কাজ করা আর নীল প্যান্ট কমলা ওরনা, আমি অরণার আঁচল ছেড়ে এক পাশে রেখে দিয়েছি আর আমার ছোট লাগেজে 4/5 টা জামা নিয়েছি ফাহাদের দিয়া জামা টাও নিয়েছি।।

গাড়ি চলে আসছে বড় মাইক্রো কার এটা আমার 3মামা আর আম্মুরা 2বোন মিলে কিনেছে, যে যার প্রয়োজন মত ব্যাবহার করে, আমরা গ্রামে গেলে বা ফ্যামেলি টুরে গেলে সবাই এই গাড়ি করেই যাই।।

গ্রামে যেতে 2ঘণ্টা লেগেছে 11.30 এ পৌঁছলাম,
বাড়ির সবাই দাড়িয়ে আছে বাড়ির সামনে গেইটে আমরা যেতে সবাই এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরলো।।

আমাদের বাড়িটা তেমন বড় না আবার ছোট বলাও যাবেনা, আমার আব্বুরা 2ভাই নেত্রকোনা, আর বাকি আছে একজন উনি আমার আব্বুর চাচাতো ভাই, বাড়িতেই থাকেন দেখা শুনা করেন বাড়ির সব। আমার দাদারা 3ভাই ছিল, আমার দাদার ছেলে আমার বাবা কাকা, আর এক দাদার ছেলে যেই কাকা বাড়িতে থাকেন উনি, আর এক দাদার 4ছেলে সবাই ঢাকা থেকে একজন ইঞ্জনিয়ার, আর 2জন প্রফেসর, আর জন ব্যাবসা করেন।। যেই কাকা ইঞ্জিনিয়ার উনি বাড়িতে একটা 2 তলা বাড়ি করেছেন ওইটা গ্রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যাবহার করা হয়, আমরা আমাদের ঘরে আসলাম, বুবু রা বুবুদের ঘরে, সব কিছুই রেডি করা।

আমার বাড়িতে থাকা কাকার বউকে সবাই বউমা ডাকি, বউমা রান্না করে রেখেছেন সবাইকে খাবার জন্য ডাকছে।। আমরা সবাই খাওয়া শেষ করে বাইরে চলে আসলাম, রাতে বার্বিকিউ হবে সেই সবের কাজ হচ্ছে বাড়িতে আমি, বুবু, খাদিজা, শাকিরা, সন্ধ্যা সবাই মিলে ঘুরতে বের হলাম।। ওরা আমাদের চাচাতো বোন।। সেই ঘুরা ঘুরি হয়েছে, হটাৎ করে এত হাঁটায় সবার পায়েই ব্যাথা করছে, বাড়ি যেতে যেতে মাগরিবের আযান পরছে।।

আমি রুমে গেলাম মা বললো 2তলায় পানির জগ গ্লাস রেখে আসতে
আমি: কিন্ত মা ঐখানে তো কেউ থাকেনা শুধু কেন জগ গ্লাস রাখব?
মা: তোকে আমি এখন এইসব বলতে পারবো না যা বলছি তা কর, প্রশ্ন করে আমার মাথাটা খাস না।। অনেক কাজ তোর বাবার কাজেই সব উল্টা পাল্টা, আগে থেকে জানালে তো আমি সব রেডি করে আসতাম।।

আমি জানি মার মাথা গরম আছে, এখন কিছু বললে মা মুখে কিছু বলবে না সব হাতে চলবে।। এই বয়সে এইসব করে ছোট হলে খাদিজা আমাকে সব সময় কথা শুনাবে।।
আর বাবা এমনি নাকের ডগায় দম থাকতে বলবে এ আসছে সে আসছে। আজ ও হয়ত এমন কাহিনী ঘটবে।।

চলবে

Ayesha Anjum
#ArrangedMarriage

পর্ব-14

আমি জানি মার মাথা গরম আছে, এখন কিছু বললে মা মুখে কিছু বলবে না সব হাতে চলবে।। এই বয়সে এইসব করে ছোট হলে খাদিজা আমাকে সব সময় কথা শুনাবে।।
আর বাবা এমনি নাকের ডগায় দম থাকতে বলবে এ আসছে সে আসছে। আজ ও হয়ত এমন কাহিনী ঘটবে।।

আমি জগ গ্লাস 2তলায় রেখে আসছি, 2তলায় তেমন কিছু নেই একটা বিছানা একটা আলমারি আর একটা বড় সাইজের টেবিল ঐখানে রাখা 4টা চেয়ার।।। রুম টা অনেক বড় পাশে আর একটা ছোট রুম ঐখানে একটা সিঙ্গেল এর থেকে সামান্য বড় খাট আর একটা সেলফ।।
আমার ফাফাত ভাইয়ের মার্চ মাসে বিয়ে হয়েছিল তখন 2 তলার 2 টা রুমে বড় সাইজের আয়না লাগানো হয়েছিল সাজার জন্য, তার পরে ওইগুলো আর খুলেনি।।

আমি 2তলা থেকে নেমে বুবুদের ঘরে চলে গেলাম, বুবু পিছন ফিরে একা বিছানায় বসা, তাদের ঘরে কেউ নেই। সবাই বার্বিকিউ এর আয়োজন নিয়ে ব্যাস্ত।।
আমি ওদের বাইরের গেইট টা হালকা করে লাগিয়ে ওর কাছে যাচ্ছি তখন বুঝা যাচ্ছে কেউ ফিস ফিস করে কথা বলছে আমি আর এক পা এগোতেই বুঝে গেলাম বুবু কারোর সাথে কথা বলছে কিন্ত কেন? বুবুর তো কারোর সাথে কিছু নেই তাহলে এভাবে কেন কথা বলছে, আমি দরজায় দাড়িয়ে ওর কথা শুনছি

বুবু: হে হে তুমি আসো। কোনো অসুবিধা নেই ও কিচ্ছু জানেনা।
বুবু: আরে পাগল নাকি, আচ্ছা সাবধানে আসো।।
বুবু: ঠিক আছে আমি ওকে পাঠাচ্ছি।
বুবু: ওকে আল্লাহ হাফেজ

আমি অবাক হচ্ছি বুবুর আবার কার সাথে কি চক্কর চলছে? আমাকে না করেই বুবু নিজেই এইসব করছে।।
আমি আস্তে করে বুবুর কাছে গেলাম, বুবু বলে ডাক দিতেই বুবু চমকে গেছে

বুবু: কিছু বলবি?
আমি: না, কি করছিলে?
বুবু: এইতো বসে আছি
আমি: (বুবু আমাকে মিথ্যা বলল, আমার মন টা খারাপ হয়ে গেল কারণ আমি তো কখনো কিছু লুকাইনি বুবু কেন লুকোল? বুবু কি আমাকে বিশ্বাস করে না?) হুমম
বুবু: চল বাইরে যাই দেখি বাকিরা কি করছে?
আমি: উঠ

আমরা বাইরে দাড়িয়ে আছি, একটা বড় টিনের ড্রাম এর মত কিছু একটা নিয়েছে এর মধ্যে তারের মত নেট বানিয়ে ড্রাম এর উপর দিয়েছে, এখানে মুরগের রান গুলো দিয়া হচ্ছে।। বুবু ফোন বের করে ছবি তুলছে, খাদিজাকে বলেছিলাম আব্বুর ফোন টা এনে দিতে হারামী আমার একটা কথাও শুনে।।

আমি: বুবু
বুবু: কি?
আমি: আমি কাজ করছি এমন পোজে কিছু ছবি তুলে দাও
বুবু: ছবি তুলে কি করবি? মানুষকে বলবি তুই কাজ করছিস? কেউ বিশ্বাস করবে?
আমি: উফফ বুবু সবাই কি কাজ করে? নিজের চোখে দেখার আগেই তো ক্যামেরার চোখে দেখে
বুবু: দাড়া ঠিক করে, বেশি ভাব নিবি আগুনের মধ্যে ফেলে দিব
আমি: ইচ্ছামত কিছু ছবি তুলে নিলাম।।

হটাৎ সায়েম 2টা ব্যাগ নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকলো, বাবা এগিয়ে গেল।।

বাবা: এসেছে?
সায়েম: হেঁ আসছে।।
বাবা: ঠিক আছে তুমি ব্যাগ গুলো উপরে রেখে আসো।।
সায়েম উপরে চলে গেল ব্যাগ নিয়ে।

বাবা আমার মাকে ডেকে বললো
বাবা: সখী তাড়াতাড়ি আসো, ওরা চলে আসছে।।
মার সাথে কাকী ও বের হলো।।

আমি: যেইভাবে সবাই দৌড়াচ্ছে মনে হচ্ছে জামাই আসছে।।
বুবু: ফিক করে হেসে দিল
আমি: ঠিকই তো কে এমন আসলো যে বাড়ির সবার দৌড়াদৌড়ি শুরু হয়ে গেল?
বুবু: তুই যা ফ্রেশ হয়ে নে
আমি: এখন আবার ফ্রেশ হবো কোন দুক্কে? নাকি আবার আগের বারের মত পত্র পক্ষের সামনে বসাবে?
বুবু: হতেও পারে, আবার হাসছে

আমি আমার মত ঘরে চলে আসলাম, আমার তো সারাদিনই মনে ছিল না ফাহাদ এর কথা, ওষুধ ও খাইনি, আনাড় গুলো ও আনতে ভুলে গেছি।। আমার খুব খিদে পাচ্ছিল।। আমি ডাইনিংয়ে যেয়ে দেখি 5/6টা বোল রাখা, সব গুলো ঢাকনি দিয়ে ঢেকে রাখা। আমি একটা ঢাকনা সরালাম দেখি দুধে সেমাই ডুবানো, আর একটা খুলে দেখি আলুর চপ বানানো। পর পর সব গুলো ঢাকনি খুলে দেখি চিপস ভাজা সমূচা, বড়া বানানো। রান্না ঘরে যাওয়ার আগেই পুলাও এর মিষ্টি গন্ধ নাকে আসছে, আমি রান্না করা সব খাবার খুলে দেখি, বাহ খুব আয়োজন হয়েছে নিশ্চয়ই কোনো নামি দামি মানুষ আসছে।।

আমি টিভিটা অন করে বিছানায় গুটিসুটি হয়ে বসলাম, পায়ের উপর বালিশ রাখলাম এর উপর প্লেট টা রাখলাম, প্লেটে করে 2টা সমুচা, 4টা বড়া আর একটা চপ নিয়েছি, এইগুলো আমার খুব পছন্দ।। সারাদিন দিলে সারাদিনই খেতে পারবো।।
আমি টিভিতে জবা দেখছি, এই এক জাতীয় নাটক বললেই চলে কত লীলা খেলা যে চলছে যারা দেখে তারা ভালই জানে, কাজের মেয়ে ব্যারিস্টার ভাবা যায়?
ভাগ্যিস আমার আম্মাজান এইসব দেখে না, দেখলে সারাদিন ভাঙ্গা রেডিও ওর মত বাজত।
তবে আমি উল্টা মা দেখে না তাই মায়ের কাজ টা আমি করে দেই।।

এর মধ্যে মায়ের ডাক বাইরে থেকে ডেকে ডেকে আসছে।।
মা: আয়েশা আয়েশা

আমি চুপ করেই আছি, এখন যদি কথা বলি তাহলে বাড়ির সবার সামনে মা আমার নাক কাটতে ভাববে না, তাই যা বলার ঘরে এসেই বলুক হজম করে নিব।

মা: আয়েশা (ঘরে চলে আসছে)
আমি: মা আসতে বাড়িতে না মেহমান এসেছে
মা: তোর কি সেই খেয়াল আছে?
আমি: আমার এইসব মেহমান মুটেও ভালো লাগেনা। সামনে যাওয়া জিজ্ঞেস করা অসহ্যকর।
মা: কয়বার ডাকা লাগে কানে কি তুলো দেয়া?
আমি: সেই তো ঘরে আসা লাগল তাহলে বাইরে থেকে কেন ডাকা লাগে?
মা: তোর মত বদ মেয়ে থাকতে কি কোন মার শান্তি আছে?
আমি: মা আমাকে একদম বকা দিবেনা আমি এখন আর ছোট নেই
মা: আচ্ছা তোমার আব্বাকে ডাকি তাহলে শুনাই এইসব?
আমি: উফফ মা কি বলবে তারাতারি বল আমি সিরিয়াল দেখছি।
মা: এইসব শয়তান বান্দর দেখেই ওদের মত হচ্ছিস
আমি: তুমি কি আমাকে বকা দিয়ার জন্য এনেছ?
মা: তোকে মুনা রেডি হতে বলেছিল হোস নি কেন?
আমি: এখন রাতে কি জন্য রেডি হবো, কোনো মহাপুরুষের সামনে নিবা?
মা: খাবার গুলো রেখে যেতে পারলাম না গিলতে বসে গেছিস, তুই কিন্ত এখন অতিরিক্ত কথা বলিস আয়শি, মাথা এমনি গরম তুই উল্টা পাল্টা বললে তোর কপালে দুঃখ আছে
আমি: মা তুমি যাও তোমার মেহমানদের খাতির আত্তি কর
মা: তারাতারি রেডি হ
আমি: পারবো না
মা: খাদিজা তোর বাবাকে ডেকে দে তো
আমি রাগে গজগজ করতে করতে ওয়াসরুম চলে গেলাম

চলবে