Three Gangsters Love Part-10

0
3516

#Three_Gangsters_Love.
#Sumaiya_Moni.
#Part_10.

পরা পর আরো তিন দিন রিমিদের সাথে মিট করে রুদ্র রা। রিমি,সিমি,নিধি ওদের মধ্যে তেমন কোনো খারাপি দেখেনি। না বুঝতে পেরেছে ওরা গ্যাংস্টার । রিমি,সিমি,নিধি দের কাছে ওদের তিনজনকে ভালো লাগে । ওরা ওদের তিন জনকে অনেক ভাবেই জ্বালিয়েছিল। বাট রুদ্র, শুভ্র,অভ্র কেয়ার করেনি। এই দিক থেকে ওদের
আরো বেশি ভালো লাগে। আজকে আলতাফ চৌধুরী সাব্বির ও ফাহিমকে নিয়ে ওদের সাথে সেই আগের ক্যাফেতে আসে রিমিদের সাথে কথা বলতে। আলতাফ চৌধুরী চুপ চাপ বসে আছে। সাব্বির,ফাহিম আজ অন্য টেবিলে বসেছে। রিমি,সিমি,নিধিও মুখে তালা মেরে বসে আছে। নিরবতা বিরাজ করতে ওদের মাঝে। রিমি নিরবতা ভেঙ্গে বলল,
-“দাদু! এভাবে চুপ থাকবে,নাকি কিছু বলবে?”

আলতাফ চৌধুরী হালকা কাশি দিয়ে বলে,
-“না মানে আমি বলছিলাম কী? তোমাদের কথা অনুজাই আমার নাতিদের সাথে তো অনেক দিন সময় কাঁটালে। এখন যদি বিয়ের তারিকটা ঠিক করি। তাহলে কী তোমাদের সমস্যা হবে?”

সাব্বির মনে মনে মুখ বাকিয়ে বলে,
-“ছ্যাঁ! পছন্দ হইছে কিনা না জিগাইয়া বিয়ের কথা বলতাছে বড়োই।”

-“ওহো! তার আগে একটা কথা বলো। আমার নাতিদের কী তোমাদের পছন্দ হয়েছে?” আলতাফ চৌধুরী প্রশ্ন করলেন।

রিমি,নিধি,সিমি চুপ করে আছেন। পছন্দ না হওয়ার কোনো কারণ ওদের কাছে নেই। ক্ষ্যাত! সেটা ঠিক আছে। বাট তা ছাড়া আর কোনো খারাপ দিক নেই ‌‌ওদের। এমনেতেও ওদের মতো এতিম মেয়েকে তার নাতি বউ বানাবে এটাই অনেক বড়।

-“কী হলো? কথা বলছো না যে? আমি কী হ্যাঁ ধরে নিবো।”

-“নিন দাদু ।” মাথা নত করে উত্তর দেয় রিমি।

-“আলহামদুলিলাহ! তাহলে বিয়ের তারিকটা ঠিক করে ফেলি? কী বলো?” খুশি মুডে বলেন আলতাফ চৌধুরী ।

-“আপনার ইচ্ছা দাদু। আমাদের কিছু বলার নেই।” সিমি মৃদ কন্ঠে বলে ।

-“ঠিক আছে। এই মাসের পাঁচ তারিকে তোমাদের বিয়ে হবে। তার আগের দিন গায়ে হলুদ। বিয়ের সব খরচ আমার। তোমাদের এক টাকাও খরচ করার দরকার নেই।”

-“বিয়েতে তো অনেক খরচ হবে? এত টাকা কোথায় পাবেন দাদু? ” কিছুটা অবাক কন্ঠে প্রশ্ন করল নিধি।

-“এটা নিয়ে টেনশন করিও না। তোমরা শুধু বিয়ের জন্য প্রস্তুত থেকো ব্যাস।”

-“জ্বী।”

আরো অনেকক্ষন কথা হয় তাদের মাঝে।তারপর ওরা বাসায় চলে আসে। তিন জনের মনের মধ্যে অদ্ভুত এক ফিলিংস কাজ করছে। ভাবতেও পারেনি ওদের বিয়ে হবে। ভেবেছে সারা জীবন এভাবেই খেটে-খুাটে খেতে হবে। বাসায় যাওয়ার আগে দোকান থেকে তিন প্যাকেট বিরিয়ানি নিয়ে যায়। আজ রাঁধতে পারবে না। শরীর খুব ক্লান্ত ওদের তাই।

থ্রি গ্যাংস্টার হাউস……

ফাহিম আজ প্রচুর খুশি। ভাইদের বিয়ে ঠিক হয়েছে। খুশি তো হবারি কথা। সাব্বির মোটামুটি খুশি। ড্রইংরুমে বসে আলতাফ চৌধুরী রুদ্র দের সাথে বিয়ের ব্যাপারে কথা বলছিল। ঠিক তখনি ফাহিন একটা তোয়ালে মাথায়া ঘোমটা দিয়ে গান গাইতে গাইতে ড্রইংরুমে যেতে লাগলো।

-“বিয়া সাজোনি সাজো কন্যা লো….বিয়া সাজোনি সাজো।”

-“ঐ খাড়া! এটা কোন ধরনের গান?” সাব্বির মুখ বাকিয়ে প্রশ্ন করে ।

-“এটা বিয়ার গান ভাই,বিয়ার গান। পছন্দ হয়নাই। আরেকটা গামু। ফয়েট! আজ ময়নার গায়ে হলুদ,কাল ময়নার বিয়া।বউ সাইজা যাইনো ময়না………।”

-“থাম,থাম। গান খাওয়া দরকার নেই তোর।”

-“ফয়েট করো না ভাই। গানটা তো শেষ করতে দিলানা।”

রুদ্র,শুভ্র,অভ্র এক সাথে ভ্রু কুঁচকে বলে,
-“ফয়েট!”

সাব্বির কপালে হাত রেখে বলে,
-“ওরে ভাই। আপনারা বুঝের নাই। ফাহিম্মা ওয়েট কইতে চাইছিল। ফয়েট কইয়া হালাইছে।”

রুদ্র,শুভ্র,অভ্র এক জন আরেক জনের দিকে তাকিয়ে হু হু করে হেসে দিল। আলতাফ চৌধুরীও হাসছে।

সাব্বির কপাল কুঁচকে ফাহিমের দিকে তাকায়।

রুদ্র হেসে হেসে বলে,
-“রিয়েলি ইংলিশ টা ভালোই হয়েছে।”

-“হ্যাঁ! ফয়েট।” বলেই হাসতে লাগলো অভ্র ।

ফাহিম দাঁত কেলিয়ে বলে,
-“ভাই আপনারা মজা পাইছেন?”

-“ইয়েস!”

শুনে ফাহিম আরো খুশি হয়। আলতাফ চৌধুরী বলেন,
-“এখন শোন! হাতে বেশি সময় নেই। রুদ্র,অভ্র,শুভ্র দের শেরওয়ানি,আর রিমি,সিমি,নিধি দের লেহেঙ্গা বানাতে দিতে হবে।”

-“দাদু এই দায়িত্ব আমি নেই । তুমি চিন্তা কইরো না।”

-“ঠিক আছে। কিন্তু এক রঙের বানাবি ওকে।”

-“ওকে দাদু।”

-“দাদু! মোরে কোনো দায়িত্ব দিবা না?” ফাহিম বলে।

-“তোকে কী দায়িত্ব দিবো। তোর কিছু করার দরকার নেই।”

-“ওয়া কও কী দাদু । মোরও তো ভাই । তুমি এই কথা কও কেমনে?”

-“মাইন্ড করিস না। কাজ করার জন্য অনেক মানুষ আছে। তুই শুধু সব কিছু ঠিক-ঠাক আছে কিনা সেটা দেখবি।”

-“আইচ্ছা দাদু।”

রুদ্র বলে,
-“দাদু,বিয়ে হবে কোথায়? আমাদের এই বাসায়?”

-“না! এই বাসায় বিয়ে হলে ওরা বুঝে যাবে। সিমি, নিধি যেই হোটেলে কাজ করে। সেই হোটেলে বিয়ে হবে।”

-“ওদের কী বলবে?”

-“বলবো হোটেলের ম্যানেজার আমাদের তিনটি বিয়ের উপলক্ষে কিছু টাকা ছাড় দিচ্ছে।আর ম্যানেজার সহ সবাইকে বলে দিতে হবে যে আমরা গ্যাংস্টার এই ব্যাপারটা লুকিয়ে রাখতে।”

-“কিন্তু দাদু! সত্যি কী লুকিয়ে রাখতে পারব। যদি ওরা জানতে পারে। কী হবে জানি না।” অভ্র বলে।

-“সেটাই তো ভাবছি। বাট লুকাতে তো হবেই। এ ছাড়া উপায় নেই।” আলতাফ চৌধুরী চিন্তিত স্বরে বলে।

রুদ্র,অভ্র,শুভ্র কিছুটা চিন্তিত হয়।
.
.
.
রিমি খুশি মুডে বলে,
-“আমার এক দিক থেকে খুবি ভালো লাগছে। বিয়ের পর আমরা এক সাথে,এক বাড়িতে থাকতে পারবো।”

-“হ্যাঁ! এটা তুই ঠিক বলেছিস রিমি ।” সিমি মুচকি হেসে বলে।

নিধি রিমি ও সিমির কাঁধে এক হাত রেখে বলে,
-“সত্যিই! ভাবতেও পারিনি । আমাদের কপালে এমনটা লেখা ছিল। তিন বান্ধবি থেকে,তিন জাল হয়ে যাব।”

-“তিন জাল!”বলেই সিমি,রিমি হাসতে লাগলো।

-“কিন্তু! ওদের মধ্যে বড় কে?নাকি তিন জনেই একি সমান?” রিমি বলে।

-“ওদের কে জিজ্ঞেস করি? কী বলিস।” নিধি বলে।

-“দাঁড়া আমি কল দিচ্ছি রাফিকে।” বলেই রিমি ফোন হাতে নিয়ে রাফিকে কল দিল।

ফোন বেজে ওঠার কারণে রুদ্র সবার থেকে দূরে সরে এসে ফোন রিসিভ করে। বলে,
-“জী বলুন?”

-“কী করছেন পল সাহেব?”

-“এইতো বসে দাদুর সাথে কথা বলছিলাম।”

-“ও আচ্ছা! তা পল সাহেব আপনাদের মধ্যে বড় কে?”

-“কেন?”

-“থাক বলার দরকার নাই।”ঝাড়ি দিয়ে বলে রিমি।

-“এই মাত্রই তো জিজ্ঞেস করলেন? এখন আবার বলছেন বলার দরকার নেই? হোয়াই।”

-“দরকার নেই ব্যাস! দরকার নেই। রাখি আমি ।” রেগে ফোন কেঁটে দিতে চাইলে রুদ্র বলে,

-“ওয়েট! ওয়েট! রাগার কী আছে ? আচ্ছা বলছি শুনুন। আমি বড়। তারপর ওমর। তারপর নীল।”

-“ও আচ্ছা রাখি।” বলেই ঠুস করে ফোন কেঁটে দেয় রিমি।

কান থেকে ফোন সরিয়ে রুদ্র রাগ কন্ট্রোল করছে। কথা শেষ করার আগেই ফোন কেঁটে দিয়েছে । রিমির উপর খুব রাগ হচ্ছে । সামনে পেলে কিছু একটা করেই ফেলতো। রাগ নিয়ে ড্রইংরুমে চলে আসে।
.
.
.
-“এই আমি তোদের বড়। আমাকে সম্মান দিয়ে কথা বলছি। আর বড় ভাবি বলে ডাকবি।” মুড নিয়ে বলে রিমি।

-“এহহ! আইছে। সর সর! ভুলেও কমু না।”সিমি বলে মুখ বাকিয়ে ।

-“আমিও না।” নিধি বলে ।

-“দেখ!”আঙুল তুলে বলে রিমি।

-“দেখি।” ঘার কাত করে বলে সিমি।

-“যাহ সর!” সিমিকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বলে ওঠে চলে যায় রিমি।

-“কই যাস?”

-“যাবি?”

-“না যামু না।” মাথা দুলিয়ে বলে নিধি।

-“বুঝতে পারছিস তাহলে হি হি হি।”

__________________________

বিপলপ তালুকদার ইজি চেয়ারে দুলছেন। একটু আগেই তার লোকদের মাধ্যমে জানতে পারে আলতাফ চৌধুরী তার নাতিদের বিয়ে ঠিক করেছে। রাগে মাথা গরম হয়ে আছে। নিজের ছেলে ও খাস লোক কে মেরে এখন বিয়ে করতে যাচ্ছে ওরা। ভাবতেই রাগে মাথায় আগুন ধরছে তার। মিনি টেবিলের উপর থেকে সেলফোনটা নিয়ে কাকে যেনো ফোন দিল।
.
.
.
সময় কেটে যাচ্ছে। সাব্বির ও ফাহিম রিমি,সিমি, নিধিকে নিয়ে শপিং মলে এসেছে বিয়ের মার্কেট করতে। মলের ভেতরে রিমি,সিমি,নিধি একটি জুয়েলারির দোকানে ঢুকে জুয়েলারি দেখছে। ফাহিম ওদের সাথে।আর সাব্বির দোকানের বাহিরে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে। ওর থেকে কিছুটা দূরে চার-পাঁচজন বডিগার্ড ছদ্মবেশে দাঁড়িয়ে আছে। প্রথমে ওরা জুয়েলারি কিনতে আসতে চায়নি। কারণ ওরা জানে রাফিরা মধ্যবৃত্ত পরিবারের। কিন্তু পরে আলতাফ চৌধুরীর কথা শুনে আসে। এক প্রকার জোর করে ওদের পাঠায়। রিমি,সিমি,নিধি একটা জুয়েলারি সেট ফাহিম কে পরিয়ে দেয়। জুয়েলারি পছন্দ করে ট্রাই করার জন্য ফাহিমকে পরায়। ফাহিম প্রথমে রাজি না হলেও । পরে ওরা জোর করে পরায়। শুধু কানেরটা বাদে আর সব কিছুই পরিয়েছে।

-“হয়ে গেছে। এবার দেখ আয়না দিয়ে তোকে কেমন লাগে ফাহিম। ” রিমি হেসে হেসে বলে।

ফাহিম আয়নার দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলিয়ে বলে,
-“আফা মোরে দেহি বিটিরফুল লাগে।”

সিমি কঁপাল বাজ করে বলে,
-“কী বিটিরফুল?”

-“হু আফা বিটিরফুল ।” কিছুটা লজ্জামিশ্রিত কন্ঠে বলে ফাহিম।

রিমি ফাহিমের দিকে আঙুল তুলে বলে,
-“ওয়েট,ওয়েট! তুই বলতে চাইছিস তোকে বিউটিফুল লাগছে।”

-“হ,হু।” ফাহিম মাথা দুলিয়ে উত্তর দেয়।

একজন আরেক জনার মুখের দিকে তাকিয়ে হাসতে হাসতে আরেক জনার গায়ের উপর পড়ছে। বিউটিফুল কে বিটিরফুল বানিয়ে দিয়েছে ফাহিম।

নিধি হাসির এক পর্যায় বলে,
-“সত্যিই তোকে বিটিরফুল লাগছে ফাহিম।”

এটা শুনে আরো হাসতে ওরা । সেখানের স্টাফ রাও মুখ টিপে হাসছে।

-“এমনে হাসেন ক্যা? মুই কী কইছি?”

-“তুই বিউটিফুলের জাগায় বিটিরফুল বলে…….।” বাকিটা বলার আগেই হাসতে লাগলো নিধি ।

ফাহিম করুন চোখে তাকায় ওদের দিকে।
বাহিরে দাঁড়িয়ে সাব্বির ভেতর থেকে ওদের হাসা-হাসি শুনে ভেতরে এসে বলে,
-“কী ব্যাপার? আপনারা এমন করে হাসতাছেন ক্যা?ফাহিম্মা তুই এগুলা পরছস কেন খোল? ”

সিমি হাসি থামিয়ে বলে,
-“ফাহিম বিউটিফুল না বলে বিটিরফুল বলেছে এটা শুনে।”

কথাটা শুনেই সাব্বির স্লো মোসনে ঘাড় ঘুরিয়ে ফাহিমের দিকে তাকায়। ফাহিম জোর করে হাসার চেষ্টা করছে । চেহারায় রাগ দেখতে পাচ্ছে ফাহিম । এত বার নিষেধ করার পরও ইংলিশ ওর বলাই লাগবে। এটা মনে করে রাগ হচ্ছে খুব । সাব্বির টেনে টেনে ফাহিমকে পড়ানো জুয়েলারি গুলো খুলতে লাগলো । ফাহিম মাথা নত করে দাঁড়িয়ে আছে। সাব্বির ফাহিমকে নিয়ে বাহিরে চলে আসে। রিমি,সিমি,নিধির জুয়েলারি পছন্দ হয়েছে । সিমি ওঠে দাঁড়িয়ে গেটের পাশের ডিসপ্লেতে সাজানো জুয়েলারি দেখতে লাগলো। হঠাৎ ওর চোখ যায় বাহিরে । সেদিনের সেই বডিওয়ালা লোক গুলোর সাথে কথা বলছে সাব্বির। লোকগুলোকে ওর চিনতে অসুবিধা হয়নি।সিমি ওদের দিকে তাকিয়ে আছে ।

-“ঐ লোকটার সাথে সাব্বিরের কী সম্পর্ক? সাব্বির কেন ঐ লোকটির সাথে কথা বলছে।” মনে মনে বলে সিমি।

সাব্বির কথা বলা শেষ করেই জুয়েলারি দোকানে ঢুকতে নিলে‌ সিমি অন্য দিকে ঘুরে দাঁড়ায়। সাব্বিরকে বুঝতে দেয় না। সাব্বির রিমি,নিধির সামনে এসে বলে,
-“আপনাদের কী জুয়েলারি পছন্দ হয়েছে? আমাদের যে বাসায় ফিরতে হবে।”

-“পছন্দ হয়ে গেছে।” রিমি বলে।

-“তাহলে চলুন। আপনাদের বাসায় পৌঁছে দেই।”

-“কিন্তু এগুলা?”

-” এগুলো পরে এসে নিয়ে যাব।”

-“আচ্ছা চল।”

সিমি সাব্বিরের দিকে সন্দেহ চোখে তাকিয়ে আছে । সাব্বিরকে প্রশ্ন করতে গিয়েও থেমে যায় সিমি। সাব্বির বাসায় পৌঁছে দেয় ওদের তিন জনকে।

বাসায় এসে সিমি ওদেরকে ব্যাপারটা খুলে বলে। ওরা তেমন আমলে নেয় না। হেসে উড়িয়ে দেয়। এটা,ওটা বলে বুঝ দেয় সিমিকে।
সিমিও মাথা থেকে জেড়ে ফেলে।
আস্তে আস্তে বিয়ের দিন ঘনিয়ে এলো। আজ ওদের গায়ে হলুদ । ওরা জানে এদের বিয়ে হোটেলে হবে। তাতে ওদের কোনো আপত্তি নেই। ৪০৫ নাম্বার রুমে বসে পার্লারের মেয়েরা ওদের সাজাচ্ছে। একটু পর ওদের গায়ে হলুদ । রুদ্র,শুভ্র,অভ্র ৪০০ নাম্বার রুমে আছে। ওরাও তৈরি হচ্ছে । সাজানো শেষ। পার্লারের মেয়েরা চলে যায়। একি রঙের শাড়ি,ফুলের জুয়েলারি । গর্জিয়াছ সাজ। বেশ সুন্দর লাগছে দেখতে ওদের তিন জনকে। রিমি আয়নাতে নিজেকে দেখতে দেখতে বলে,
-“খুব ভালোই সাজিয়েছে তাই না।”

হাতের চুড়ি ঠিক করতে করতে সিমি উত্তর দেয়,
-“হ্যাঁ! ঐ তিন বলদকেও পার্লারে সাজালে ভালো হতো।”

-“ঠিক বলেছিস । আমাদের সাথে মানাবে না যে।” নিধি বলে।

-“কিছুই করার নেই যে।”রিমি বলে।

তখনি দরজায় করাঘাত হয়। সিমি বলে,
-“কলিং বেল থাকতে দরজা ধাক্কাচ্ছে কে? কোন বলদের কাজ এটা?”

-“দাড়া আমি দেখছি ।” বলেই নিধি ওঠে দাঁড়িয়ে দরজা খুলে দিল।
দরজার অপর পাশে কেউ নেই। নিধি কপাল বাজ করে রুমের বাহিরে উঁকিঝুঁকি মারল। না! কাউকে দেখতে পাচ্ছে না । চড়ম বিরক্তি নিয়ে দরজা লাগাতে গেলে সামনে একটি ব্লু রঙের বাক্স দেখতে পায়। নিধি তৎক্ষণাত ওদের দু’জন কে ডাক দেয়,
-“রিমি,সিমি দেখে যা।”

-“কী?” বলেই রিমি হেঁটে গেটের সামনে আসল । সিমিও এসে দাঁড়ায়।

সিমি কঁপাল কুঁচকে বলে,
-“কী এটা?”

-“কিভাবে বলবো? কে যেনো এখানে রেখে গেছে।” নিধি বলে।

-“রাফি রা হয়তো?” রিমি বলে ।

-“হ্যাঁ! হতে পারে।” কারণ আমি নীলের হাতে এমন একটা ব্লু রঙের বাক্স দেখেছি । ” সিমি বলে।

-“তাহলে দেরি কিসের? ওঠিয়ে হাতে নে।‌ খুলে দেখি কী আছে ভেতরে ।” রিমি বলে।

-“মনে হয় আমাদের জন্য কোনো গিফট পাঠিয়েছে।” নিধি বাক্সটি ওঠিয়ে হাতে নিতে নিতে বলে। ভেতরে এসে রুমের দরজা লাগিয়ে দেয়। খাটের উপর বসে বাক্সটি খুলতে লাগলো নিধি।
.
.
.
.
.
.
.
.
Continue To…….