you are only my queen part-01

0
6177

#you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 1

আমি ঘুমিয়ে আছি কিন্তু ঘুমের মধ্যেই আমার মনে হলো কেউ আমার খুব কাছে বসে আছে।আমাকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে।
আমার কেমন জানি ফিল হতে লাগলো।আমি চোখ খুলে ফেললাম।উঠে গিয়ে লাইট জ্বালালাম।দেখলাম ঘরে কেউ নেই।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম ৩ঃ০০ বাজে।আর ঘুমাতে পারলাম না।
আমি আমার ল্যাপটপে vampire love story দেখতে লাগলাম।আমি vampire দের খুবই পছন্দ করি।এককথায় বলতে গেলে আমি একজন vampire লাভার।
কিন্তু আজ কেমন জানি ভালো লাগছে না।আমি গিয়ে বারান্দায় দাঁড়ালাম।
এই শীতের রাতে আমি বারান্দায় গিয়ে দাঁড়ালাম।কিন্তু আমার মনে হচ্ছে কেউ আমাকে দেখছে।এসব ভাবতে ভাবতে আজান দিয়ে দিল।আমি গিয়ে নামাজ পরে নিলাম।

আমি ফারিয়া সিদ্দিকী সৃষ্টি। আমি কিছুদিন আগে লন্ডন থেকে বাংলাদেশে এসে এখানে একটা নামকরা ভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি।আমার পরিবার বলতে আমার দুই ভাই আর আমি।
আমার দুই ভাই ছাড়া আর কেউ নেই।আমার মা বাবা ছোটবেলায়ই মারা গেছে।তারপরই আমার দুইভাই আমাকে নিয়ে লন্ডনে চলে যায়।আমার ভাইয়ারা লন্ডনে নামকরা বিজনেসম্যান।
আমি ওখানেই পড়াশুনা করতাম।
কিন্তু একটা খুবই জরুরি কাজে আমাকে বাংলাদেশে এসে এখানে ভর্তি হতে হলো।আমার ভাইয়ারা কিছুতেই আমাকে আসতে দিতে চায় নি।আমার ভাইয়াদের জান আমি।আমি ওদেরকে অনেক কস্টে রাজি করিয়েছি।তাও দিত না যদি না আমার সাথে আমার দুই ফ্রেন্ড না আসত।কিন্তু তারা বাংলাদেশে দেশে আসার আগের দিনই অসুস্থ হয়ে যায়।তাই আমাকে একা আসতে হলো ভাইয়াদের অনেক শর্ত নিয়ে।যাই হোক আমি দেখতে মাশাল্লাহ।😜😜
আমার উচ্চতা ৫” ৬।দেখতে একদম সাদা।আমি খুবই জেদি আর প্রতিবাদী,রাগিও বটে।ওজনও বেশি না। ৫০ কেজি😁।
আমি বাংলাদেশে একাই এসেছি।
এখানে আসার আগে ভাইয়ারা আমার জন্য একটা বাড়ি কিনে দিয়েছে।সেই বাড়িতে আমি একাই থাকি।আর বাড়ির চারপাশে বডিগার্ড।সার্ভেন্টেরও অভাব নেই বাড়িতে।

যাই হোক আমি এখন ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছি।
আজ আমার ভার্সিটির প্রথম দিন।ভাবলাম আজকে একটু সাদাসিধা সেজে যাওয়া যাক। তাই আমি একটা ঢিলাঢালা থ্রিপিস পরলাম।চুলগুলা বেনি করলাম আর চোখে ইয়া বড় একটা চশমা পরলাম।দেখলাম একদম বোকা বোকা লাগছে।নিজেকে দেখে নিজেই হেসে দিলাম।আমি রেডি।

সিড়ি দিয়ে নিচে নামতে নামতে দেখলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে অবাক হয়ে।আমি একটু মুচকি হেসে রাহিম চাচাকে বললাম
আমিঃচাচা আমি আজকে গাড়ি ছাড়া যাব।
চাচাঃসাহেবরা শুনলে আমাগো চাকরি চইল্লা যাইবো।
আমিঃআহ চাচা আমি ভাইয়াদেরকে বুঝিয়ে বলবো।
চাচাকে আমি আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে খেয়ে বের হয়ে পরলাম।

আমি ভার্সিটির গেইটে দাঁড়িয়ে আছি।ডুকে কিছু দূর হাটার পর মাঠের মধ্য দিয়ে যাওয়ার সময় একদল ছেলেমেয়ে আমাকে ডাক দিল। আমি তাকালাম।
আমিঃমনে হচ্ছে র‍্যাগ খাব..(মনে মনে)
আমি ওদের কাছে গেলাম।দেখলাম ওরা দুইটা মেয়ে আর বাকি চারটি ছেলে।আমি সামনে যেতেই দেখলাম ওরা ওদের মতো কথা বলে যাচ্ছে।মনে হচ্ছে যেন ওরা আমাকে ডাকেই নি।আমিও আর কিছু বললাম না।
কিন্তু আমি এতক্ষন তাদের কথাবার্তা শুনে বুঝতে পারলাম মেয়ে দুইটার নাম নিলা আর রিধি।আর ছেলে গুলার নাম অনিল,সাদ,রাজ,আকাশ।
আমি ওদের সামনে দাঁড়িয়ে আছি পাক্কা ১০ মিনিট। এবার আমি বিরক্ত হয়ে বললাম
আমিঃদেখুন ভাইয়ারা আমার ক্লাস আছে কোন দরকার থাকলে বলতে পারেন।
আকাশঃএই মেয়ে ঠিক করে কথা বলো।সিনিয়রদের সাথে কিভাবে কথা বলতে হয় জানো না।
আমিঃও আচ্ছা সরি।
রিধিঃকিসের সরি?তোমাকে এখন এর জন্য শাস্তি পেতে হবে।
রিধির কথাতে বাকিরাও সম্মতি জানালো।
আমি অবাক হলাম না কারন আমি জানতাম এমনি হবে।
নিলাঃশাস্তি পাওয়ার আগে এটা বল যে তুমি এই ভার্সিটিতে ভর্তি হলে কিভাবে?দেখে তো মনে হচ্ছে গরিব ঘর থেকে উঠে এসেছো।
এই কথা বলেই সবাই হাসতে শুরু করলো।
রিধিঃতোমাকে কি শাস্তি দেওয়া যায় বল তো??
অনিলঃএই নাও এই গোলাপটা ধরো।একটু পরে দেখবা যে একটা ছেলে কালো কালারের বাইকে করে গেইট দিয়ে ডুকছে।তাকে গিয়ে প্রপোজ করবা।
রিধিঃআরে কি বলিস এই ভার্সিটির ক্রাশ বয়কে এই মেয়েটা প্রপোজ করবে!!!!!
সাদঃআরে এখানেই তো আমরা মজা পাব।
এই বলেই ওরা সবাই একটা শয়তানি হাসি দিল।
হঠাৎ দেখলাম একটা ছেলে কালো কালারের জ্যাকেট,কালো কালারের প্যান্ট, কালো কালারের শু পরে একটা কালো কালারের R1 চালিয়ে গেইট দিয়ে ডুকল।
রাজঃযাও গিয়ে সবার সামনে প্রপোজ কর।
আমি অসহায় ফেস করে ওদের দিকে তাকাই।
তারপর আস্তে আস্তে ছেলেটার দিকে এগিয়ে যাই।ছেলেটা বাইক থেকে নামতেই আমি তার সামনে গিয়ে দাঁড়াই।
আমিঃI love u..(চোখ বন্ধ করে)
চোখ খুলে দেখি ছেলেটা মাথার হেলমেট খুলে আমার দিকে অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে আছে।
ছেলেঃhow dare you??(চিল্লিয়ে)
আমি কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি।
ছেলেঃনিজেকে একবার আয়নায় দেখেছো?গাইয়া ভুত। আর তুমি এসেছো আমাকে মানে এই ভার্সিটির ক্রাশকে প্রপোজ করতে।তোমার সাহস তো কম না।
মাঠের সবাই আমাকে দেখে হাসতে লাগলো।
আর রিধিরা বসে বসে মজা নিতে লাগলো।
আমি জানতাম এমন কিছুই হবে।
তাই
আমি এবার কিছুটা দূরে গিয়ে ছেলেটাকে ভালো করে দেখতে লাগলাম।
ছেলেঃএই যে চশমাওয়ালা গাইয়া ভুত আমার মতো ছেলে আর দেখ নাই সেটা বুঝতে পারছি।কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তোমার মতো গাইয়া ভুত আমাদের এই ভার্সিটিতে এলো কিভাবে??
আমিঃশুনুন mr….whatever।।। আমি আপনাকে নিজের ইচ্ছাতে প্রপোজ করতে আসি নাই। ওই যে দেখছেন একদল ভেড়ার পাল বসে আছে (রিধিদের দেখিয়ে) ওরাই আমাকে বলেছিল আপনাকে প্রপোজ করতে।আর হে নিজেকে নিজে হিরো ভাবা বন্ধ করুন।
ছেলেটা আমার দিকে রক্তচক্ষু নিয়ে তাকিয়ে আছে।তার ফর্সা মুখ লাল রঙ ধারন করেছে।
ছেলেঃতোমার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার।
এই কথা বলেই ঠাস করে একটা থাপ্পর মারলো।আমি এইটার জন্য প্রস্তুত না থাকায় নিচে পরে গেলাম।
এই অবস্থা দেখে মাঠের সবাই হা করে দাঁড়িয়ে দেখতে লাগলো।
রিধিরা সবাই দৌড়ে এলো। কারন তারা ছেলেটার রাগ সম্পর্কে মনে হয় জানে।
রিধিঃcool রুদ্র।শান্ত হো।
আকাশঃরিধি তোরা রুদ্রকে নিয়ে যা।আমি দেখছি।
আমি এতক্ষন চুপ করে নিচে পরেছিলাম।আমি আমার রাগকে কন্ট্রোল করার চেস্টা করছিলাম।কিন্তু পারলাম না।
আমি এবার উঠে দাড়ালাম।আমি কিছু না বলে রুদ্রের সামনে গেলাম।গিয়ে মুচকি হাসলাম।আর তারপরই তার পাশে থাকা রিধি আর সাদকে ঠাস করে দুইটা থাপ্পর মারলাম।
আমিঃএই থাপ্পরগুলা হচ্ছে আমাকে র‍্যাগ দেয়ার জন্য।
রিধি আর সাদ আমার দিকে রাগিভাবে তাকিয়ে আছে। তারা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি আরও জোরে রুদ্রের গালে থাপ্পর লাগালাম।তারপর তাদের কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমি চলে আসলাম।
আসুন এবার রুদ্র সম্পর্কে মানে গল্পের হিরো সম্পর্কে কিছু জানা যাক।
(রুদ্র খান।বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে।তার একটা বোন আছে।উচ্চতা ৬” ২।গায়ের রঙ হলুদ সাদা।চাপদাড়ি আছে।চুলগুলা স্পাইক করা।সিক্সপেক বডি আছে।তার বাবা এই ভার্সিটির ট্রাস্টিবোর্ডের হেড।তার বাবার দেশে বিদেশে বিজনেসও আছে।বলতে গেলে নামকরা বিজনেসম্যান তার বাবা।তা রুদ্র সাহেব এই ভার্সিটিতে MBA কমপ্লিট করছে।)
আমি আমার ক্লাস এ চলে এসেছি।
রুদ্র এই ঘটনার পর নাকি বাসায় চলে যায়।

চলবে…….