you are only my queen part-14

0
3858

you_are_only_my_queen
Faria Siddique
Part 14

সকালে

আমি উঠে দেখি রুদ্র নাই।আমার কালকের রাতের কথা ভেবেই ভয় হতে লাগলো।
আমি এসব ভাবছিলাম তখনই ভাইয়ারা এলো। তারা এসে আমার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
আমিঃকি হলো এভাবে কি দেখছো?
বড়ভাইয়াঃতুই আজকে এতো তারাতারি উঠে পরলি যে?
ছোটভাইয়াঃ শরীর ঠিক আছে তো?(কপালে হাত দিয়ে)।ওমা একি তোর তো জ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।(উত্তেজিত হয়ে)
বড়ভাইয়াঃকি বলছিস কি?(উত্তেজিত হয়ে)
বড়ভাইয়া ও আমার গায়ে হাত দিয়ে চেক করেই চিল্লিয়ে ছোটভাইয়াকে বলল
বড়ভাইয়াঃছোটু তারাতারি গাড়ি বের কর।টুকুকে হসপিটাল নিয়ে যেতে হবে..(চিল্লিয়ে)
ছোটভাইয়াঃআমি এক্ষুনি যাচ্ছি।(কান্নার সুরে)
এই বলে ভাইয়া তারাতারি নিচে চলে গেলো।
ভাইয়াদের চিল্লানি শুনে বিশাল আর ভাবিন ও আসলো।
বিশালঃকি হয়েছে জানুর?(বিচলিত সুরে)
বড়ভাইয়াঃজ্বরে গা পুড়ে যাচ্ছে।(কান্না করে)
আমিঃভাইয়া আমার কিছু হয় নাই।আমি রাত অব্দি ঠিক ছিলাম সকালের দিকে জ্বর টা আসছে মনে হয়।
ভাবিনঃতুই চুপ কর।একে তো নিজের খেয়াল রাখবে না তার ওপর আবার আমাদের কথাও শুনবে না।(রেগে)
ছোটভাইয়া এসে আমাকে কোলে করে গাড়িতে নিয়ে গেলো।
আমিঃভাইয়া আমি ঠিকাছি।আমার কিছু হয় নাই।
বড়ভাইয়াঃআমি তোমাকে চুপ করে থাকতে বলেছি।(রেগে)
বিশালঃসব সময় আমাদের চিন্তায় ফেলতে তোর খুব ভালো লাগে তাই না?(রেগে)
ছোটভাইয়াঃভাইয়া দেখ তো জ্বর বেড়েছে কিনা?
বড়ভাইয়াঃনা ছোটু।তুই তারাতারি গাড়ি চালা।বিশাল আমাদের লন্ডনের ডাক্তারকে একবার কল দে।আর বল লন্ডনের বেস্ট হসপিটালের ডাক্তারগুলাকে একসাথে কনফারেন্সে আসতে বল।
বিশালঃ আমি এক্ষুনি বলছি।
বড়ভাইয়াঃছোটু আমরা কোন হসপিটালে যাচ্ছি?সেটা ঢাকার নামকরা হসপিটাল তো?
ছোটভাইয়াঃহুম ভাইয়া।
ভাবিনঃভাইয়া জানুর জ্বর কিন্তু বেড়েই চলেছে।আর ও আস্তে আস্তে দূর্বল হয়ে পরছে।
বড়ভাইয়াঃটুকু এই টুকু একটু চোখটা খুলা রাখ বোনু।ছোটু তারাতারি চালা।(চিল্লিয়ে)

in hospital

হসপিটালে আনতে আনতে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই।ভাইয়ারা কান্না করে দিছে আমার এই অবস্থা দেখে।বিশাল আর ভাবিন ও কান্না করতাছে।বড়ভাইয়া আমাকে কোলে নিয়ে হসপিটালে ঢুকল আর চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে ডাক্তারকে ডাকতে লাগলো।
ভাইয়ার চিল্লানি শুনে সব ডাক্তাররা চলে এলো।
তারা এসে আমাকে একটা কেবিনে নিয়ে গেলো। নিয়ে আমাকে শুইয়ে দিল।বড়ভাইয়া,বিশাল আর ভাবিন আমার কাছে বসে আছে।
আর ছোটভাইয়া ডাক্তারের সাথে কথা বলতাছে।
ছোটভাইয়াঃএই হসপিটালের বেস্ট ডাক্তার কে?তাকে তারাতারি ডাকুন।(রেগে চিল্লিয়ে)
একজন ডাক্তারঃএখানের বেস্ট ডাক্তার হচ্ছে কথা খান।কিন্তু তিনি এখানে নেই।
এই কথা বলার সাথে সাথে ছোটভাইয়া ওই ডাক্তারের নাক বরাবর ঘুষি মারলো।তারপর কলার ধরে বলল
ছোটভাইয়াঃআমি না শুনতে অভ্যস্ত নই।তাই আরও মাইর খাবার আগেই ওই ডাক্তারকে নিয়ে আসুন আর ওনাকে বলবেন যে ফারহান আর ফারদিন সিদ্দিকী তাদের বোনকে নিয়ে এসেছে।আর যদি তারপরও না আসে তাহলে আমি বাধ্য হয়েই তাকে বাড়ী থেকে ধরে নিয়ে আসতে হবে।
সব ডাক্তাররা ভয়ে কিছু না বলে কথা খানকে কল করে সব খুলে বলল।তিনি আর একমুহূর্ত দেরি না করে হসপিটালে চলে এলো।
ভাইয়ারা,বিশাল আর ভাবিন আমার কাছে তখনও বসে ছিল।আমার জ্ঞান একটু আগেই ফিরেছে।
আমিঃকি হলো তোমরা সবাই কাদছো কেন?দেখ আমি একদম ঠিকাছি।
বড়ভাইয়াঃটুকু আমি কোন কথা শুনতে চাই না। (রাগি সুরে)
কথা আর রুশা তারাতারি হসপিটালে আসলো।
কথাঃদেখি দয়া করে আপনারা একটু রুমের বাইরে যান আমি পেশেন্টকে দেখবো।
ভাইয়ারাসহ সবাই রুমের বাইরে চলে গেলো। আমার দুইভাই রুমের বাইরে বসে কান্না করতে লাগলো।
মেহেকও চলে আসল।এসে রুশার কাছে শুনলো যে আমার ট্রিটমেন্ট চলছে।
রুশা আর মেহেক দুইজনই খেয়াল করল আমার দুইভাই দুইজায়গায় বসে কান্না করছে।
মেহেক বড়ভাইয়ার পাশে গিয়ে বসলো আর রুশা ছোটভাইয়া কাছে।
মেহেকের খুব খারাপ লাগলো বড়ভাইয়াকে এই অবস্থায় দেখে।
মেহেকঃপ্লিজ এভাবে কান্না করবেন না দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।(ভাইয়ার কাধে হাত রেখে)
ভাইয়া কিছু না বলে খুব শক্ত করে মেহেককে জড়িয়ে ধরল। মেহেক খুব অবাক হলেও কিছু বলল না।ভাইয়াকে শান্তনা দিতে লাগলো।
অন্য দিকে রুশা ভাইয়ার কাছে গিয়ে বসলো।
রুশাঃখুব ভালোবাসেন তাই না?
ছোটভাইয়াঃনিজের জানের থেকেও বেশি।জানো ও যখন ছোট ছিল তখন ও পানিতে ডুবে গিয়েছিলো। তারপর ঠিক হয়ে গেলেও ওর ব্রেনের মধ্যে কিছু পানি ডুকে যায়। ডাক্তার বলেছিল যে এটা সময়ের সাথে বুঝা যাবে যে ওর সব কিছু ঠিক আছে কিনা।তারপর থেকে আমি আর ভাইয়া কোনদিন ওর অযত্ন করি নি।কিন্তু দেখ আজ আমার বোন কি অবস্থায় আছে।
এসব বলেই আবার কান্না করতে লাগলো।
রুশা এসব শুনে খুবই অবাক হয়ে গেলো আর সে বুঝতে পারছে কার জন্য আমার এমন জ্বর আসলো।

শুধু রুশা না রুদ্রের মা বাবাও এবং দাদুভাই ও বুঝতে পেরেছিলো যে আমার এই অবস্থা শুধুমাত্র রুদ্রের জন্য। রুদ্র রাতে আমার ক্ষতগুলা ঠিক করে দিলেও আমার রাগ ঠিক করতে পারে নাই।আমি রাতে কিছু না বললেও রেগে ছিলাম ঠিকই।আর প্রচুর ভয়ও পেয়েছিলাম।কারন রুদ্র যখন আমার গাড়ে কামর দিতে গিয়েছিল তখন তার সরু দাতগুলা আমি দেখেছিলাম তখনই বুঝেছি
যে রুদ্র কোন মানুষ না।আমি তখন আর কিছু ভাবতে পারছিলাম না তাই রাতে অজ্ঞান হয়ে গেলাম।

কথা খান আমাকে দেখছিলেন।আমি সজ্ঞানেই ছিলাম।আমি হঠাৎ করেই বলে উঠলাম।
আমিঃরুদ্র কি মানুষ না আন্টি?
উনি আমার দিকে অবাক দৃস্টিতে তাকিয়ে আছে।
আমিঃআমি জানি রুদ্র মানুষ না কারন কালকে আমি রুদ্রের সরু দাতগুলা দেখেছি আর কোন মানুষের এমন দাত হতে পারে না।
কথাঃআজ না অন্য আরেকদিন তোমাকে সব বলবো আর আমি জানি যে তোমার এই অবস্থা রুদ্রই করেছে এটাও জানি।
আমিঃরুদ্র যদি মানুষ না হয় তাহলে তো আপনারাও মানুষ না তাই না?
কথাঃতুমি খুবই বুদ্ধিমতি।তাই আজ না তোমাকে আরেকদিন সব বলব।by the way তুমি কি রুদ্রকে খুব ভয় পাও?
আমিঃপাই না মানে।কালকের পর থেকে তো আরও বেশি করে ভয় পাই।
কথাঃআচ্ছা তুমি থাক আমি আসছি।
আমিঃআপনি গিয়ে আমার ভাইয়াদের বলবেন যে আমি একদম ঠিক আছি।আর তাদের একটু ভিতরে পাঠিয়ে দিবেন প্লিজ।
কথাঃতোমার জ্বর আর একটু পরেই কমে যাবে।
এই বলেই উনি বাইরে চলে গেলেন।
কথাঃমি.ফারদিন আপনার বোনের জ্বর একটু পরেই কমে যাবে।
বড়ভাইয়াঃওর হঠাৎ করে জ্বর আসলো কেন?
ছোটভাইয়াঃহুম।
কথাঃও মনে হয় রাতে বারান্দার দরজা খুলে শুয়ে ছিলো তাই ঠান্ডা লেগে জ্বর আসছে।চিন্তার কিছু নাই।
ছোটভাইয়াঃআমার বোনের কিছু হবে না তো?
কথাঃআপনাদের মতো ভাই থাকতে ওর আবার কিছু হতে পারে নাকি?(মুচকি হেসে)
এই বলেই কথা খান চলে গেলো।
ভাইয়ারা,বিশাল আর ভাবিন আমার কাছে আসলো।
ভাইয়ারাঃএতো কেয়ারলেস কেন তুই?(রেগে)
আমিঃসরি ভাইয়ারা।
বিশালঃরাখ তোর সরি।আচ্ছা ভাইয়া আমি কি লন্ডনের ডাক্তারগুলাকে কনফারেন্সে আসতে বলবো?
বড়ভাইয়াঃএখন না আমি আর ছোটু রাতে ওদের সাথে কনফারেন্সে যাবো।
ছোটভাইয়াঃমিস্টি এখন তুই একটু ঘুমা আমরা এখানে আছি।আর হা আজকের রাত তোকে এখানেই থাকতে হবে আমরাও থাকবো।আমি রহিম চাচাকে বলে দিয়েছি উনি আমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসবে।
আমিঃভাইয়া প্লিজ…….
বড়ভাইয়াঃটুকু তোকে আমি চুপ থাকতে বলেছি।
আমি আর কোন কথা বললাম না।কারন আমি জানি আমার কথা এরা চারজনের কেউই শুনবে না।
কিন্তু একটুপরে কি হলো বড়ভাইয়া আমাকে বাসায় নিয়ে এলো।
আমিঃভাইয়া আমাদের তো হসপিটালে থাকার কথা ছিলো।কিন্তু আমরা বাড়ী যাচ্ছি কেন?
বড়ভাইয়াঃকারন আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে তোর হসপিটালের গন্ধটা সহ্য হয় না।তাই তোকে তারাতারি বাসায় নিয়ে এলাম।আচ্ছা ছোটু টুকুর সব রিপোর্টগুলা লাগবে।আজকে আমি আর তুই লন্ডনের ডাক্তারগুলার সাথে কনফারেন্সে রিপোর্টগুলা নিয়া আলোচনা করবো।
ছোটভাইয়াঃওকে ভাইয়া।আমি সব রিপোর্ট গুছিয়ে রাখবো।
কথা বলতে বলতে আমরা বাসায় এসে পৌছে গেলাম।

অন্যদিকে

রুদ্রকে আমার সম্পর্কে কিছুই জানানো হয় নি।সবাই ইচ্ছা করে জানায় নি।কারন আজকে রুদ্রের জন্যই আমার এই অবস্থা।
কথাঃফারিয়া জেনে গেছে যে রুদ্র মানুষ না।
সবাইঃকি বলছো এসব!!!!!!(অবাক হয়ে)
কথাঃহুম।আজকে ও আমাকে রুদ্র সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছে।
আরহামঃকি জিজ্ঞাসা করেছে?
তারপর কথা খান সব খুলে বলল।
রুশাঃআমি জানতাম ফারিয়া যেই মেয়ে ও ঠিকই বুঝে যাবে।
রুদ্রঃকি বুঝে যাবে??
সবাই পিছনে তাকিয়ে দেখে রুদ্র দাঁড়িয়ে আছে।
রুদ্রঃকে কি বুঝে যাবে?
আরহামঃবুঝে যাবে না বুঝে গেছে।
রুদ্রঃকে বুঝে গেছে আর কি বুঝে গেছে?
কথাঃফারিয়া এটা বুঝে গেছে যে তুই মানুষ না।
রুদ্র অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
নিহালঃকাল রাতে তুই কি করেছিস মেয়েটার সাথে!!তুই জানিস ওর আজকে জ্বর এসেছে।ওকে হসপিটালে নিয়ে যেতে ফহয়েছে।
রুদ্রঃকি বলছো এসব বাবা?(কান্নার সুরে)
রুশাঃহুম।এবার এটা চিন্তা কর ও তোকে মেনে নেয় কিনা।তুই জানিস ওর ভাইয়াদের কি অবস্থা হয়েছিলো।বিশাল আর ভাবিন যাদের জন্য তুই ফারিয়ার সাথে এমন করলি জানিস তারা নিজের বোনের চোখে দেখে আর তুই কিনা কালকে কোন কথা না শুনে মেয়েটার সাথে এমন করেছিস।
নিহালঃতুই এটা ঠিক করিস নাই।শুধুমাত্র নিজের রাগের কারনে আজকে তুই মেয়েটাকে এই অবস্থা করলি।
রুদ্র কিছু না বলে চোখ মুখ শক্ত করে উঠে দাড়ালো।
রুদ্রঃযাই হয়ে যাক ও কোনদিন ও আমার কাছ থেকে যেতে পারবে না।আমি যা ইচ্ছা করবো ওর সাথে কারন ও শুধুমাত্রই আমার কুইন।আমি ছাড়া আর কারোর কোন অধিকার নাই ওকে কস্ট দেওয়ার।ওকে কস্ট ও দিব আমি আদরও করবো আমি।আর হা আমি যা করেছি আমি জানি তা আমি ঠিক করি নাই কিন্তু আমি ছাড়া ওর ওপর আর কারোর অধিকার নাই।এই কথাটা সবাই মাথায় ঢুকিয়ে নেও।
এই বলে রুদ্র তার রুমে চলে যায়।
রুদ্রঃআজকে আমি তোমাকে আমার সম্পর্কে সব বলবো।কিন্তু তোমাকে আমার থেকে দূরে যেতে দিব না।#you_are_only_my_queen.তুমি কখনই আমা থেকে ছাড়া পাবে না।এই vampire king এর রাজ্যেই তোমাকে queen হয়ে থাকতে হবে।

চলবে…………..