#ফারহানা_হাওলাদার_প্রকৃতি
#তীব্রস্রোত
#পর্ব ৭
.
.
সুপ্তি রুমে বসে বই পড়ছিল, সুপ্রিয়া তার শাশুড়ীর সাথে গল্প করছিল, হঠাৎ দরজায় কড়া নড়ে উঠল। সুপ্তি চেচিয়ে বলল।
…..দরজা খোলা আছে।
সুপ্তির কথা অনুসরণ করে তীব্র দরজা ঠেলে ভেতরে চলে আসলো।
…..কী বেয়াইন ব্যস্ত নাকি?
…..হ্যা একটু, কেনো কিছু বলবেন?
…..না তেমন কিছু নয় আসলে আপনার জন্য কিছু এনে ছিলাম।
……তাই, কী?
…..এই নিন।
……আইসক্রিম?
……হুম।
তীব্র দুটো আইসক্রিম দিলো সুপ্তির হাতে, এরপর বলল।
…..একটা আপনার, একটা ভাবীর।
…..আপু তো আন্টির রুমে আছে।
…..আসলে দিয়ে দিবেন।
…..ওকে।
…..তীব্র চলে গেল।
তীব্র হেঁসে রুম থেকে চলে গেল। সুপ্তি আইসক্রিম শেষ করে উঠে হাত পরিষ্কার করে তার বোন কে গিয়ে আইসক্রিম দিয়ে রুমে আসতেই তার চোখ পড়ল বিছানার উপরে সেখানে একটা বক্স রাখা ছিলো, সাথে একটা কিটক্যাট চকলেট। সুপ্তি এগিয়ে গিয়ে বক্সটা হাতে নিয়ে দেখল, তাতে সুপ্তির নাম লেখা ছিলো। তাই সুপ্তি বক্সটা খুলে দেখল, কিছু রঙবেরঙের কাচের চুরি বেশ লাগছে তার কাছে, যার জন্য নিজের অজান্তেই সুপ্তি হেঁসে উঠল। সে বুঝতে পারছে এটা তীব্রর ই কাজ।
রাতে খাবার শেষ করে সুপ্তি আর সুপ্রিয়া রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল।
পরদিন সকালে সুপ্তির ঘুম ভাঙল। ঘুম থেকে উঠে সে ছাদে চলে এলো, ছাদে এসে দেখল আজ স্রোত ছাদের কিনারা ঘেঁষে বসে নেই, সুপ্তির মনটা একটু খারাপ হলো, ভাবছে আজ সে একাই উঠেছে ঘুম থেকে? সুপ্তি একটু পা এগিয়ে সেই জায়গায় গিয়ে দাড় হলো, সেখানে যেতেই সুপ্তি চমকে উঠল, কারণ সেখানে কিছু একটা রাখা ছিলো একটা ছোট কাপড়ের টুকরো দিয়ে ঢেকে। সুপ্তি আস্তে করে কাপড়টা সরিয়ে দেখল দু-কাপ চায়ের সাথে একটা ছোট প্যাকেট রাখা যাতে শুধু “সুপ্তি” লেখা ছিলো, তাই সুপ্তি প্যাকেট-টা খুলে দেখল, তাতে খুব সুন্দর এক জোরা নুপুর রাখা ছিলো, যা দেখে সুপ্তি হেঁসে উঠল।
…..কেমন হয়েছে বেয়াইন সাহেবা?
…..(পেছনে তাকিয়ে) খুব সুন্দর ধন্যবাদ।
…..আপনার ভালো লাগছে তাতেই আমি খুশি।
…..কিন্তু হঠাৎ এত গিফট কেনো?
…..আসলে কাল যখন রাস্তা দিয়ে আসছিলাম তখন সামনে পড়ল, ভাবলাম বেয়াইন কে তো কখনো কিছু দেওয়া হয়নি, আর নুপুর জোরা ও খুব সুন্দর ছিলো তাই নিয়ে এলাম।
……হুম সত্যি খুব সুন্দর।
রোজের মতো করেই কেটে গেল আজকের দিনটা সুপ্তির, তবে রোজের থেকে একটু ভালোই কাঁটল বলা যায় আজকের দিনটা।
খুব ভোরে ঘুম ভাঙল সুপ্তির সুপ্রিয়ার চিৎকার শুনে তড়িঘড়ি করে সুপ্তি ঘুম ঘুম চোখে উঠে বসে পড়ল, পাশে তাকিয়ে দেখল সুপ্রিয়া পাশে নেই তার, তাই বিছানা থেকে নেমে ওয়াশ রুমের দিকে ছুটে গিয়ে দেখল সুপ্রিয়া ফ্লোরে পড়ে আছে জ্ঞান হারিয়ে, সুপ্তি ছুটে গিয়ে সুপ্রিয়া কে ধরে কিছুক্ষণ ডাকাডাকি করল পানির ছিটে দিলো বাট জ্ঞান ফিরল না সুপ্রিয়ার। সুপ্তি কী করবে ভেবে পাচ্ছিল না। সুপ্তি তারাহুরো করে দরজার কাছে গিয়ে চিৎকার দিয়ে বলে উঠল।
…..তীব্র বেয়াই স্রোত বেয়াই প্লিজ তারাতাড়ি এই রুমে আসুন।
এই বলে সুপ্তি আবার তার বোনের কাছে ছুটে গেল, সুপ্তির হাত-পা থরথর করে কাঁপছিল, চোখ থেকে অনবরত পানি গড়িয়ে পড়ছিল, সুপ্তি প্রচুর ভয় পেয়ে গেল, সুপ্তি, সুপ্রিয়ার মাথা ধরে নিজের পায়ের উপর রাখল।
সুপ্তির আতঙ্ক ভরা চিৎকার শুনে ওরা দু’জন লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে এলো সুপ্রিয়ার রুমে, সেখানে এসে কাউকে দেখতে না পেয়ে, ওরা বের হতে নিলো, কিন্তু সুপ্তির কণ্ঠ শুনে আবার ঘুরে ওয়াশ রুমের দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখল, সুপ্তি সুপ্রিয়ার মাথা তার কোলে নিয়ে বসে বোন কে কান্নারত কণ্ঠে ডাকছিল, যা দেখে ওরা দু’জন ছুটে গিয়ে জিজ্ঞেস করে উঠল।
……কী হয়েছে ভাবীর?
…..জানি না, আমি ঘুমিয়ে ছিলাম আপুর চিৎকার শুনে উঠে এসে দেখলাম আপু অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছে ফ্লোরে। প্লিজ আপু কে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।
…..হ্যা তীব্র ভাবীর ডক্টর কে একটা ফোন দিয়ে বল।
…..স্রোত আগে তুই ভাবী কে নিয়ে চল, গাড়ীতে বসে ফোন দেওয়া যাবে।
…..হ্যা ঠিক আছে তবে তুই ধর ভাবীকে।
ওরা দু’জন মিলে সুপ্রিয়া কে ধরে নিয়ে এগিয়ে গেল, আর সুপ্তি নিজের ব্যাগটা কাঁধে নিয়ে সুপ্রিয়ার রিপোর্ট গুলো নিয়ে ওদের পেছন পেছন ছুটে চলেছে।
হসপিটালে এসে ভেতরে নিয়ে গেল ওরা সুপ্রিয়াকে, ডক্টর ফোন দিয়ে আগেই সব রেডি করে রেখেছিল, সুপ্রিয়া কে ওটিতে নিয়ে গেল কিছুক্ষণ পরে ডক্টর এসে ওটিতে ঢুকলো, ওরা তিন জন খুব টেনশন করছিল।
বেশ কিছুক্ষণ পরে ডক্টর বের হয়ে এসে ওদের জানালো। এখনি সুপ্রিয়ার সিজার করতে হবে, সুপ্রিয়ার হাসবেন্ড কে? ওরা জানালো ফারাবীর কথা, ডক্টর বাকি ফর্মালিটি গুলো পূরণ করে আসতে বলল ওদের। আর ওরা রাজি আছে কিনা জিজ্ঞেস করল। ওরা বলল যা ভালো হবে সুপ্রিয়ার জন্য ডক্টর জানো তাই করে। তাই ডক্টর আবার ওটির ভেতর চলে গেল। স্রোত গিয়ে বাকি ফর্মালিটি গুলো পূরণ করে আসলো।
সুপ্তি ওটির সামনে সিঁড়ির উপর মাথায় হাত রেখে বসে কান্না করছিল, যা দেখে #তীব্রস্রোত এগিয়ে গিয়ে সুপ্তির পাশে দাঁড়িয়ে বলে উঠল।
….. আপনি টেনশন করবে না প্লিজ ভাবী ঠিক হয়ে যাবে ইন’শা’আল্লাহ।
…..আমি সবাই কে কী জবাব দেবো? সবাই তো আমার উপর ভরসা করেই আপুকে রেখেছিলো আমার কাছে, আমি তো সবার ভরসা ভেঙে দিলাম।
…..আপনি এভাবে ভাবছেন কেনো? আপনার তো এখানে কোনো দোষ নেই।
…..আমারই তো সব দোষ, আমি যদি আপুর দিকে ঠিক ভাবে খেয়াল করতাম তবে তো আর এটা হতো না।
……দেখুন আপনি শুধু শুধু নিজেকে দোষারোপ করছেন, এটা মোটেই ঠিক নয়।
…..আমি জানি না সবাই কে আমি কী বলব? সবাই তো আমাকে এটাই জিজ্ঞেস করবে, কী করে আপু পড়ে গেল? তখন আমি কী বলব।
সুপ্তি হাতের মাঝে মুখ গুঁজেই কথা গুলো বলে উঠল। স্রোত আর তীব্র কিছুতেই সুপ্তিকে শান্ত করাতে পারছে না। সুপ্তি নিজের কান্না কিছুতেই থামাতে পারছেনা।
বেশ কিছুক্ষণ পরে নার্স বের হয়ে বলল।
…..এই মেডিসিন গুলো নিয়ে আসেন।
তীব্র ছুটে গিয়ে পাশের মেডিসিনের দোকান থেকে ওষুধ গুলো এনে দিলো।
নার্স কিছুক্ষণ পরে এসে ওষুধ গুলো নিয়ে গেলো আর বলে গেল।
……ওনার ব্লা”ড লাগবে। আপনারা ব্লা”ডের ব্যবস্থা করেন।
…..ভাবীর ব্লা”ড গ্রুপ কী?
…..আপনারা জানেন না?
…..(সুপ্তি) জ্বি AB+ কিন্তু এত কম সময়ে এই গ্রুপের ব্লা”ড কোথায় পাবো আমরা?
……নার্স আপনি গিয়ে বলেন ব্লা”ড রেডি।
…..রেডি মানে?
…..হ্যা বেয়াইন আমার সেইম গ্রুপ, আপনি টেনশন করবেন না প্লিজ।
এরপর তীব্র নার্সের সাথে এগিয়ে গেল। সুপ্তি আর স্রোত এখনো দাঁড়িয়ে আছে।
তীব্র চলে আসতেই ওরা দু’জন এগিয়ে গেল।
…..কীরে ভাবীর সাথে দেখা হয়েছে তোর?
……নাহ আমাকে তো পাশের রুমে নিয়ে গিয়েছিল, ভাবী কে কোথাও দেখিনি।
ওরা আরও ৩০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পড়ে নার্স এসে একটা বাচ্চা দিয়ে বলে গেল।
……এই নিন মেয়ে হয়েছে আপনাদের।
…..আলহামদুলিল্লাহ।
……আপু কেমন আছে?
…..জ্বি ঠিক আছে উনি এখন, কিছুক্ষণের মধ্যে ওনাকে ক্যাবিনে সিফট করা হবে।
এই বলে নার্স চলে গেল। সুপ্তি বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সদ্য জন্মানো বাচ্চাটাকে একটা টাওয়ালে পেচিয়ে রাখা হয়েছে। নার্স বাচ্চাকে নিয়ে ক্যাবিনে চলে যেতে বলেছে, কিন্তু সুপ্তি এখান থেকে কীভাবে যাবে? তার এখান থেকে এখন এক পা ও নড়ার ইচ্ছে নেই তাই সে বাচ্চা নিয়েই বসে আছে। #তীব্রস্রোত তাকিয়ে দেখছে তাদের ভাইজি কে, মা’শা’আল্লাহ কতটা সুন্দর বাচ্চাটা দেখতে হয়েছে।
আরও ১০/১৫ মিনিট পড়ে সুপ্রিয়াকে ক্যাবিনে সিফট করা হলো। ওরা সবাই ক্যাবিনে গেল দেখল সুপ্রিয়া ঘুমিয়ে আছে। তাই তাকে আর ডিস্টার্ব না করে ওরা ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানলো এখন সুপ্রিয়া ঠিক আছে, যা শুনে ওদের কলিজায় পানি এলো।
এরপর সবাইকে ফোন দিয়ে একে একে জানালো ওরা। কিছুক্ষণ পরেই সবাই চলে এলো, সুপ্রিয়ার আব্বু আম্মু, শশুড় শাশুড়ী সবাই।
সবাই খুব খুশি হলো, কিন্তু রাগও করল তাদের না জানিয়েই কেনো নিয়ে আসা হলো সুপ্রিয়া কে? ওরা সব খুলে বলতেই সবাই অবাক হলো।
ফারাবী কে ভিডিও কল দিয়ে দেখানো হলো বাচ্চা কে, সে পারলে তো এখনি চলে আসতো, কিন্তু পারলো না এখনি সে আসতে।
সুপ্তি রইল সুপ্রিয়ার সাথে, রইল স্রোত ও। তীব্র তার মায়ের সাথে বাড়িতে গেল।
রাতে ওরা তিন জনই রইল হসপিটালে, পাশে আর একটা ক্যাবিন নিয়ে ওরা দুই ভাই সেখানে থাকলো, আর সুপ্তি সুপ্রিয়ার সাথে।
রাত প্রায় ১১টা ওরা ৪ জন বসে বসে গল্প করছিল, বাচ্চা কে রেখে ওদের দু ভাইয়ের যেতে ইচ্ছেই করছিল না।
রাত যখন ১২টা তখন সুপ্রিয়া জোর করে ওদের পাশের ক্যাবিনে পাঠালো।
সকাল সকাল ক্যাবিনের দরজা কেউ নক করে উঠল যার জন্য সুপ্তির আর সুপ্রিয়ার ঘুম ভেঙে গেল। তাই সুপ্তি ঘুম ঘুম চোখে উঠে গিয়ে দরজা খুলে দেখল ফারাবী দাঁড়িয়ে আছে। যা দেখে সুপ্তি ভালো করে চোখ মুছে আবার তাকালো।
……আপনি শিওর আমার দুলাভাই?
……সুপ্তি তোমার কোনো সন্দেহ আছে?
……হুম (মাথা নাড়িয়ে)
…..কী সন্দেহ?
…..আমার দুলাভাই তো এত জলদি আসার কথা না। কে আপনি?
……সুপ্তি আমি ফারাবী। তোমার এক মাত্র দুলাভাই।
……চিমটি কেটে দেখি?
…..চিমটি? তুমি কেনো কাঁটবে? চিমটি তো আমি কাঁটব তোমাকে। যেহেতু স্বপ্ন তুমি দেখছ আমি না শালিকা জী
…..এই না না আমাকে চিমটি কাঁটতে হবে না।
ফারাবী সুপ্তিকে চিমটি দিতে নিলো আর সুপ্তি ছুটে রুমের ভেতর চলে এলো। ফারাবীও এলো ভেতরে সুপ্রিয়া ফারাবী কে দেখে অনেক খুশি হয়ে গেল। সুপ্তি বলে উঠল।
…..আমি দেখি গিয়ে বেয়াই মশাইরা কী করছে?
…..ওরাও আছে হসপিটালে?
…..জ্বি দুলাভাই, আছে বলতে আছে, সারারাত আমাদের দুজন কে ঘুমাতে দেয়নি, রাত ১২টার সময় আপু জোর করে তাদের পাশের ক্যাবিনে পাঠালো, কিন্তু তারা কী করল, বাহিরে বাচ্চার কান্না শুনতে পেলেই এসে দরজায় খটখট শব্দ করা শুরু করে দিতো, এভাবে রাতে মনে হচ্ছে ৫ বার আসছে, তাই এখন তাদের ঘুম নষ্ট করার সময় হয়েছে। আমি গেলাম হ্যা।
এই বলে সুপ্তি বেরিয়ে গেল ক্যাবিন থেকে। সুপ্তি গিয়ে পাশের রুমের দরজা নক করে ওদের ঘুম ভাঙল।
…..কী গো বেয়াইন এত রাতে ডাকছেন কেনো কী হয়েছে?
……বেয়াই এখন রাত নেই সকাল হয়ে গেছে। তাই তারাতাড়ি উঠে খাবার নিয়ে আসেন, খুব ক্ষুধা পেয়েছে।
তীব্র হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখল মাত্র ৭ টা বাজে।
…..বেয়াইন রাতের শোধ তুলছেন? এত জলদি আপনার ঘুম ভাঙল কীভাবে?
…..ক্যাবিনে এসে দেখেন সারপ্রাইজ আছে।
…..আজ আবার কী সারপ্রাইজ দিবেন? কাল যে সারপ্রাইজ পেয়েছি আর সারপ্রাইজ পাওয়ার ইচ্ছে নেই, কতটা ভয়ংকর সেই সারপ্রাইজ।
…..আরে নাহ আজকের সারপ্রাইজ ভালো।
…..তবে ঠিক আছে আপনি যান আমরা আসছি।
সুপ্তি সেখান থেকে সরে গিয়ে একটু হাঁটাহাঁটি করছে, সুপ্তির মনে পড়ছে কাল কতটা ভয়াবহ সময় কাঁটলো তাদের যা মনে হতেই অন্তরআত্মা কেঁপে উঠছে সুপ্তির, যদি দুজনের একজনের কিছু হয়ে যেত? তবে কীভাবে নিজেকে ক্ষমা করত সুপ্তি?
এদিকে ওরা দু’জন ফ্রেশ হয়ে, সুপ্রিয়ার ক্যাবিনে এসে ভাইকে দেখে অনেক খুশি হয়ে গেল। সুপ্তিও রুমে এলো ওদের সাথে।
।
।
।
চলবে……..।
#ফারহানা_হাওলাদার_প্রকৃতি
#তীব্রস্রোত
#পর্ব ৮
.
.
সকাল ১০ টার দিকে সুপ্তি বসে বসে বাবুর সাথে খেলা করছিল এমন সময় #তীব্রস্রোত এত এত বেলুন খেলনা নিয়ে ক্যাবিন রুমে প্রবেশ করল, যা দেখে সুপ্তি অবাক হয়ে বলে উঠল।
….. এগুলো কী?
…..বেয়াইন আপনি চোখে যে কম দেখেন তা তো জানতাম না?
…..আপনাকে কে বলল, আমি চোখে কম দেখি?
…..তবে এগুলো কী তা কীভাবে দেখতে পারছেন না?
…..আরে আমি কী এগুলো দেখতে পারছি না তা বলছি? আমি বলেছি এখানে কেনো এগুলো নিয়ে আসছেন? এটা হসপিটাল ডক্টর নার্স এসে দেখলেই রাগারাগি করবে।
…..ওহ তাই? কিন্তু আপনি তো এটাই জিজ্ঞেস করলেন এগুলো কী? তবে আমরা কীভাবে বুঝব?
…..হুম।
……আচ্ছা যাই হোক ভাবী এগুলো তোমার জন্য। (এক মুঠো সাদা গোলাপ দিয়ে।
…..ধন্যবাদ তোমাদের।
…..ধন্যবাদ তো তোমাকে দেয়া লাগে এত্ত সুন্দর একটা ভাইজি দেওয়ার জন্য।
…..বেয়াই মশাই এত্ত ছোট গিফট দিলে হবে না, বড় কিছু দিতে হবে।
……কাকে আপনাকে নাকি ভাবী কে? (তীব্র)
…..আমাকে? আমাকে কী গিফট দিবেন?
…..তা এখন বলব না অন্য এক সময় বলব।
…..তাই? আচ্ছা তবে আপনার ভাবী কে কী দিবেন?
…..তাও বলা যাবে না, তা সারপ্রাইজ আপনাদের দু-বোনের জন্য।
…..ওহ তাই, আচ্ছা সারপ্রাইজের অপেক্ষায় রইলাম।
…..হুম থাকেন।
সন্ধ্যায় সুপ্তি ফোনে কথা বলছিল হসপিটালের ক্যাবিনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে। এমন সময় স্রোত এসে সুপ্তির পেছনে দাঁড়িয়ে বলে উঠল।
……বেয়াইন কার সাথে এত কথা বলছেন? ফোনে আঁটকে থাকলে হবে? ভেতরে আসেন সবাই কত আনন্দ করছি আপনি না থাকলে আড্ডা জমে উঠে না।
…..এক মিনিট, আপনি যান আমি আসছি।
এই বলে সুপ্তি ফোন রেখে ক্যাবিনে চলে এলো। ক্যাবিনে এসে সুপ্রিয়ার পাশে বসে পড়ল। সবার সাথে আড্ডায় মেতে উঠল।
ওরা হসপিটালে ৩দিন থেকে বাসায় চলে এলো। বাসায় এসে সবার আনন্দ দ্বিগুণ বেরে গেল। দু-বাড়ির প্রথম নাতি বলে কথা। সবাই খুব আনন্দ করছে, কিন্তু সুপ্রিয়া ফলো করছে ফারাবী এসেছে থেকে তার মন কিছুটা খারাপ, কী হয়েছে তা সে বুঝতে পারছে না।
রাত তখন ৮ বেজে ১৫ মিনিট সবাই ড্রইং রুমে বসে আড্ডা দিচ্ছে, সুপ্রিয়া রুমে রেস্ট নিচ্ছিল, বাচ্চাও সবার কাছেই রয়েছে। সুপ্রিয়া খেয়াল করল ফারাবী বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। তাই সুপ্রিয়া আস্তে আস্তে বিছানা থেকে উঠে ধীরে ধীরে পা ফেলে বারান্দার দিকে উঁকি দিলো, সেখানে দাঁড়িয়ে ফারাবী সিগারেটের সাধ গ্রহণ করতে ব্যস্ত, সুপ্রিয়ার নাকে গন্ধ যেতেই সে কাঁসতে লাগল, যার জন্য ফারাবী সিগারেট বাহিরে ফেলে দিয়ে বলে উঠল।
……তুমি এই স্বাস্থ্য নিয়ে এখানে কী করছ? যাও রেস্ট নাও গিয়ে।
…..আমি ঠিক আছি, কিন্তু তোমার কী হয়েছে?
……আমার? কই কিছু না তো।
……তুমি খুশি হওনি মেয়ে হয়েছে দেখে?
…..হ্যা খুশি, তুমি যাও বেশি সময় দাঁড়িয়ে থাকলে তোমার কষ্ট হবে।
……কিন্তু আমার যে তোমার কাছে থাকতেই ভালো লাগছে।
…..ওকে তোমার যা ভালো লাগছে তাই করো তবে।
সুপ্রিয়া এসে ফারাবীর হাতের সাথে মাথা লাগিয়ে হাতটা ধরে দাঁড়িয়ে গেল।
……তোমার কী হয়েছে প্লিজ বলো না?
…..আমার কিছু হয়নি। আসলে নতুন মেহমানের জন্য ভাবনা বেড়েছে। তার জন্য কী করব না করব তাই ভাবছি।
…..সত্যি তো?
…..হ্যা বাবা সত্যি।
এরপর সুপ্রিয়া আরও কিছুক্ষণ এভাবেই দাঁড়িয়ে রইল ফারাবীর সাথে লেপ্টে। ফারাবী ও সুপ্রিয়ার মাথার সাথে নিজের মাথা লাগিয়ে দাঁড়িয়ে রইল।
সুপ্তি তার বাবা মায়ের সাথে চলে যেতে চাইছে, কিন্তু বাড়ির কেউ কোনো ভাবেই সুপ্তি কে যেতে দিতে চাইছে না। সুপ্তি অনেক করে সবাই কে বোঝাতে চেয়েছে কিন্তু সবার একই কথা বাচ্চার চুল না ফেলানো অব্দি সুপ্তি কোথাও যাবে না। তাই বাধ্য হয়েই সুপ্তির থেকে যেতে হলো।
সুপ্তির আব্বু আম্মু ডিনার করে চলে গেলেন, সুপ্তি গেস্ট রুমে গিয়ে শুয়ে পড়ল।
সুপ্তি ছাদের এক কোণ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে চোখ দুটো তার ওই নীল আকাশে বন্দী হয়ে আছে। হটাৎ কেউ ভাউ করে উঠল। সুপ্তি ভয় পেয়ে ঘুরে গিয়ে তার দিকে তাকালো, তাকিয়ে দেখল স্রোত ছিলো, সুপ্তি প্রচুর ভয় পেয়ে গিয়েছে, বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে সুপ্তির কপাল জুড়ে। যা দেখে স্রোত বিনয়ের সুরে বলে উঠল।
……স্যরি বেয়াইন আমি আসলে বুঝতে পারিনি আপনি এতটা ভয় পাবেন।
…..ইটস ওকে বেয়াই।
সুপ্তি নিজেকে কন্ট্রোল করে, স্রোতের উদ্দেশ্য বলে উঠল।
…..আপনি কিছু বলার ছিলো?
…..তেমন কিছু নয়, তবে চাইছিলাম ভাবীর জন্য একটা গিফট কিনবো কিন্তু কী কিনবো, বা কোথা থেকে কিনবো বুঝতে পারছি না। তাই আপনার সাহায্য চাইতে আসছিলাম।
……ওহ আচ্ছা। আপু কে শাড়ি দিতে পারেন।
…..নাহ এমন কিছু না। আসলে গহনার কথা জিজ্ঞেস করছিলাম।
…..ওহ ঠিক আছে, তবে কানের দুল দিতে পারেন, বা নুপুর দিতে পারেন।
……বাট ভাবীর জন্য কেমন ডিজাইন ভালো হবে বুঝবো কীভাবে? প্লিজ যদি আমার সাথে একটু যেতেন খুব ভালো হতো।
…..আমি? আসলে আমার একটু কাজ ছিলো। আর আপুও তো জিজ্ঞেস করবে কোথায় যাচ্ছি তখন?
……তখন আপনি বলবেন…….। ইশ রে সত্যি তো কী বলবেন?
….হ্যা তাই।
……আচ্ছা এখান থেকে এইভাবে বরং চলেন, তবে আর ভাবী কে কিছু বলতে হবে না।
…..বাসার ড্রেস পড়ে?
…..হ্যা তাতে কী হয়েছে?
…..কিন্তু মানুষ কী বলবে?
…..কিছু না আপনি চলেন তো।
…….এই না বেয়াই শুনুন আমার কথাটা।
কিন্তু স্রোত কোনো কথা না শুনে সুপ্তির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগল, সুপ্তির যাওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই কিন্তু এমন ভাবে স্রোত ওকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল যার জন্য না ও বলতে পারছে না সুপ্তি।
স্রোত সুপ্তি কে নিয়ে রাস্তায় চলে আসলো একটা রিকশা ডেকে সুপ্তিকে উঠতে বলল, সুপ্তির একই রিকশায় ওঠার ইচ্ছে নেই তাই সুপ্তি আমতাআমতা করছিল, যা দেখে স্রোত নিজেই আগে উঠে বসে পড়ল। এরপর সুপ্তিকে উঠতে বলছে, সুপ্তির কিছু করার ছিলো না, উঠে বসা ছাড়া, তাই চুপ করেই সুপ্তি উঠে বসে পড়ল, বাট মাঝে কিছুটা গ্যাপ রেখে, রিকশা চলতে শুরু করে দিলো। রিকশা চলছিল কিন্তু কিছুক্ষণ পরপর ঝাকি খাচ্ছে, যার জন্য সুপ্তি বার বার এগিয়ে যাচ্ছে স্রোতের দিকে।
একটা জুয়েলার্সের দোকানে এসে রিকশা থামলো। ওরা দু’জন নেমে দাঁড়ায়, ভাড়া মিটিয়ে দুজন দোকানে ভেতরে চলে গেল।
…..জ্বি কী লাগবে?
……কানের দুল দেখান।
……ম্যাডামের জন্য?
……আপনি দেখান তো আগে।
…..জ্বি এটা দেখুন ম্যাডাম কে ভারি মানাবে।
দোকানিরা কানের দুল নামিয়ে দিলো, যা দেখে স্রোত সুপ্তিকে চয়েজ করতে বলল, সুপ্তি এক জোরা কানের দুল চয়েজ করল, যা প্যাকেট করিয়ে নিয়ে ওরা বেরিয়ে পড়ল।
…..বেয়াইন কী খাবেন বলেন?
…..জ্বি না বেয়াই কিছু নয়, বাসায় চলেন দেরি হচ্ছে।
…..আরে আপনি প্রথম আমার সাথে এসেছেন এভাবে চলে গেলে হয় বলেন? চলেন কিছু খেয়ে যাবেন।
……না বেয়াই প্লিজ চলেন আমার কাজ রয়েছে বাসায়।
…..আরে কাজ তো রোজই করেন, আজ না হয় বেয়াইর সাথে একটু সময় কাঁটান।
এই বলে স্রোত সুপ্তির হাত ধরতে চাইল বাট সুপ্তি হাত সরিয়ে নিয়ে বলে উঠল।
…..ওকে চলেন।
সুপ্তি চারিদিকে একবার চোখ বুলিয়ে নিয়ে স্রোতের পিছু পিছু হাঁটতে শুরু করে দিলো। স্রোত একটা রেস্টুরেন্টে গিয়ে চেয়ার টেনে সুপ্তি কে বসতে বলল, সুপ্তি বসে যেতেই স্রোত গিয়ে কফির অর্ডার করল।
কফি চলে আসতেই সুপ্তি কফি হাতে নিয়ে ঠোঁট চুবিয়ে দিলো। বারবার সুপ্তি এদিক সেদিক ঘুরে ঘুরে দেখছে। যা দেখে স্রোত বলে উঠল।
…..বেয়াইন আপনার কী সমস্যা হচ্ছে কোনো?
…..কোথায় নাতো। কিন্তু কেনো?
……না আপনি তারাহুরো করছেন এজন্য।
……আমি তো আপনাকে বলছি আমার কিছু জরুরি কাজ আছে, তাই বাসায় তারাতাড়ি ফেরাটা জরুরি। আপনি বাসা থেকে ও জোর করে নিয়ে আসলেন আবার এখনো, বাট প্লিজ একটু তারাতাড়ি শেষ করেন কফি।
এই বলে সুপ্তি কফির কাপে আবার চুমুক দিলো। সুপ্তি একটু পরপরই হাত ঘড়িটা দেখছে। স্রোত কফি খাওয়া রেখে সুপ্তি কে ফলো করছে, সুপ্তি কফি শেষ করে উঠে দাঁড়িয়ে গেল। যা দেখে স্রোত বলে উঠল।
…..আর একটু বসা যায় না?
……দেখুন আমার ফোনটাও বাসায় রয়ে গেছে, প্লিজ আপনার কাজ থাকলে আপনি থাকেন আমি তবে চলে যাচ্ছি।
……(উঠে দাঁড়িয়ে) না না আমার আর কোনো কাজ নেই, ঠিক আছে চলেন।
এরপর সুপ্তি হাঁটতে শুরু করে দিলো স্রোতের জন্য অপেক্ষা না করেই, স্রোত বিল মিটিয়ে এসে রিকশায় উঠে বসে পড়ল। সুপ্তির খুব বিরক্তি লাগছে, কোনো ভাবে যদি তার আব্বু বা অন্য কেউ সুপ্তিকে এভাবে স্রোতের সাথে দেখে ফেলে তবে কী হবে? তাই সুপ্তি খুব ভয়ে আছে। তার মধ্যে ফোনটাও বাসায় রয়ে গেছে। কী যে ঝামেলার মধ্যে সুপ্তি আঁটকে গেছে সুপ্তি নিজেই বুঝতে পারছে না।
কিছুক্ষণ পরে ওরা বাসায় এসে পৌঁছালো। দরজা দিয়ে বাড়ির ভেতর ঢুকতেই দেখল সুপ্তির আম্মু বসার রুমে বসে আছে। যা দেখে সুপ্তি সেখানেই দাঁড়িয়ে গেল। সুপ্তি যা ভয় পাচ্ছিল তাই হলো। সুপ্তির এবার ভয় এবার সত্যি হয়ে গেল। তাই সুপ্তি আস্তে আস্তে সোফার কাছে এগিয়ে এলো।
…..সুপ্তি তুই কোথাও গিয়েছিলি নাকি?
…..হ্যা না মানে আম্মু আমি আসলে।
…..এত আমতাআমতা কেনো করছিস?
…..না ওই আসলে আম্মু আমি আপুর জন্য এক…..।
…..আরে মাওই যে কখন আসছেন?
…..হ্যা এই তো এখনি এলাম, তোমরা এক সাথে কোথাও গিয়ে ছিলে বুঝি?
……হ্যা মাওই একটু কেনা কাটা করতে বের হয়েছিলাম।
…..তাই? তবে শপিং ব্যাগ কোথায়?
…..না মানে জুয়েলার্সের দোকানে গিয়েছিলাম।
…..জুয়েলার্সের দোকানে? কী এমন কিনতে গিয়েছিলে যে সুপ্তির সাথে যেতে হলো?
……আম্মু থাকনা হয়ত……।
……তুমি চুপ করো সুপ্রিয়া, আমি সুপ্তিকে প্রশ্ন করেছি ওকেই উত্তর দিতে দাও।
……আম্মু আসলে।
…..ঠিক আছে আমি তোমার সাথে পরে কথা বলছি, এখন যাও বাহির থেকে আসছো ফ্রেশ হয়ে আসো গিয়ে।
……সুপ্তি তোর ফোনে কে জানো বারবার ফোন দিচ্ছিল।
…..জ্বি আপু।
সুপ্তি তার মায়ের দিকে তাকিয়ে, তারাহুরো করে রুমে চলে গেল।
সন্ধ্যায় সুপ্তি গেস্ট রুমে গেল কিছু কাজ ছিলো তাই, সে রুমে ঢুকে দরজা আটকাতে নিবে ঠিক তখনই দেখল দরজার সামনে সুপ্তির আম্মু দাঁড়িয়ে আছে।
……আম্মু তুমি কিছু বলবে?
……হুম।
সুপ্তির আম্মু রুমে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিলো। সুপ্তি বুঝতে পারছে তার মা নিশ্চয়ই কিছু জিজ্ঞেস করবে স্রোতের বিষয়, তাই সুপ্তি ভয়ে ভয়ে গিয়ে বিছানার এক কোণায় দাঁড়িয়ে রইল। সুপ্তির আম্মু বিছানায় গিয়ে বসে সুপ্তিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল।
…..দাঁড়িয়ে আছিস কেনো বস এখানে।
……জ্বি আম্মু।
সুপ্তি গিয়ে তার আম্মুর পাশে বসে পড়ল। কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থেকে সুপ্তির আম্মু বলে উঠল।
……আশা করছি সুপ্রিয়া যেই ভুল করেছে তুমি তা পুনরাবৃত্তি করবে না। তবে তোমার আব্বু হয়ত এবার আর সহ্য করতে পারবে না। তুমি সবই জানো, তোমাকে নিশ্চয়ই নতুন করে সব মনে করিয়ে দিতে হবে না?
……না আম্মু, আম্মু আমি ওনার সাথে যেতে চাইনি, উনি জোর করেই নিয়ে গেছে।
……কাউকে জোর করে কেউ কিছু করতে পারে না। তোমার ও ইচ্ছে ছিলো কিছুটা হলেও, তাই সে তোমাকে নিয়ে যেতে পেরেছে। যাই হোক, তোমাকে কিন্তু এখানে আমরা রাখতাম না, শুধু আজাদ ভাইয়ের কথা ভেবেই তোমাকে এখানে রাখা হয়েছে, তাই তুমি যা করবে বুঝে শুনে করো। আমরা তোমার সাথে কখনোই জোর করিনি, না আগে না এখন, কিন্তু যা করবে ভেবে নিবে একবার ভালো করে।
সুপ্তি নিচের দিকে তাকিয়ে বসে আছে আর কোনো কথা সে বলল না। তার মায়ের কথা শেষ হতেই সে বিছানা থেকে উঠে দাঁড়িয়ে গেল, এরপর রুম থেকে বের হয়ে চলে গেল। সুপ্তি নিজেকে শান্ত করে এক গ্লাস পানি পান করে চুপ করে বসে পড়ল। সে বুঝে ছিলো তার মা হয়ত তাকে বকবে রাগারাগি করবে, বাট না তার মা তাকে শুধু বুঝিয়ে চলে গেল।
।
।
।
চলবে…..।