তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-১২+১৩

0
3016

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_১২
–“বেলা ঘরওয়ালি ।বেলা মাই সুইটহার্ট । কোথায় গেলে। সাঁঝ চিৎকার করে ডেকে ওঠে।
–” হয়েছে টা কি এই ভাবে চিৎকার করছেন কেনো ষাঁড় এর মত যতো সব। বেলা রুমের মধ্যে ঢুকে বলে ওঠে।
–“কোথায় ছিলে তুমি। কখন থেকে ডেকে যাচ্ছি তোমাকে। সাঁঝ বলে বেলার দিকে এগিয়ে যায়।
–” সেটা আপনার না জানলে ও চলবে। কেনো ডেকেছেন বেলা মুখ ঘুরিয়ে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে আচমকা বেলার কোমর জড়িয়ে নিয়ে নিজের বুকের ওপর ফেলে। বেলা হকচকিয়ে সাঁঝ এর দিকে তাকাতে সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” বাঁধো । টাই । দুষ্টু হেসে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
–“কেনো আপনি পারেন না নাকি। বেলা বলে ওঠে।
.
–“উহু। মাথা নাড়িয়ে বলে ওঠে। আগে পারতাম এখন আর পারি না।
.
–“ঢং যতো সব। আমি পারব না। ছাড়ুন আমাকে। বেলা মুখ বেঁকিয়ে বলে ওঠে।
.
–“ওকে বেঁধনা । আমার তো খুব ভালো লাগছে এই ভাবে থাকতে। চোখ টিপে দুষ্টু হেসে বলে উঠে মুখ নামিয়ে বেলার গলায় মুখ ডুবায়।
.
. এদিকে বেলার দম যাওয়ার জোগাড়। নিশ্বাস নিতে পারছে না কাঁপা কাঁপি শুরু হয়ে গেছে। সাঁঝ এর এমন করাতে।
.
–” আ..আমি বেঁধে দিচ্ছি সরুন প্লিজ। বেলা কাঁপা গলায় বলে ওঠে।
.
.সাঁঝ সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। আর বেলা কে নিজের সাথে একদম মিশিয়ে নিয়ে মুখে দুষ্টু হাসি আর চোখের ইশারা করে বেলা কে টাই বাঁধতে।
.
–” দেখুন একদম মুচকি মুচকি হাসবেন না। বেলা বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কিছু না বলে মাথা নাড়ায়। কিন্তু তারপরও সেই এক কাজ করে তার সাথে দুষ্টামি। বেলার কোমরে ধরে থাকা হাত দিয়ে স্লাইড করতে থাকে। আর এদিকে বেলার প্রাণ যায় যায় অবস্থা। কেঁপে কেঁপে ওঠে বারবার।
.
–” হ..হয়ে গে..ছে ছাড়ুন আমাকে। বেলা কেঁপে কেঁপে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে আরো শক্ত করে ধরে উচু করে নিজের সমান সমান করে। বেলার কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঠোঁটে ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। এদিকে বেলার অবস্থা পুরো টাই টাই ফিস হয়ে গেছে। অসহায় হয়ে সাঁঝ এর টর্চার সহ্য করতে থাকে।
.
–“সাঁঝ। বেবি ।
.
. দিশার আওয়াজ আসতেই দুজন ছুটে আসে। আর সাথে সাথে দিশা ওদের রুমে ঢুকে যায়। সাঁঝ এর মুখে রাগ আর বিরক্তির ছাপ ফুটে আছে। আর বেলা তার মুখে কোনো ভাব দেখা যাচ্ছে না। দিশা একবার বেলার অগোছালো চুল আর ড্রেস এর দিকে তাকিয়ে নিয়ে। সাঁঝ কে গিয়ে এক হাত জড়িয়ে বলে ওঠে।
.
–“বেবি দেরি হয়ে যাচ্ছে আমাদের। ন্যাকা স্বরে বলে ওঠে।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে একবার ওদের দেখে নিয়ে তাচ্ছিল্য ভরা হাসি দিয়ে বেরিয়ে যায়।

——————–

–” এই যে শুনছেন। এই যে। সারা সেই কখন থেকে বেদ কে ডেকে যাচ্ছে। কিন্তু সেদিকে তার কোনো ধ্যান আদেও কিছু শুনতে পাচ্ছে কি না কে জানে।
.
–” আরে বাবা কোথায় হারিয়ে গেলেন আপনি বলুন তো। আচ্ছা আপনার কি চোখের ফিউশ কেটে গেছে যে এক জায়গাতে আপনার চোখ স্থির হয়ে গেছে। সারা বিরক্ত হয়ে বলে ওঠে।
.
–” হ্যাঁ তাই তো ভাই তুই কোথায় হারিয়ে গেলি বলত। নিশান তার পাশে বসা বেদ কে ধাক্কা দিয়ে বলে ওঠে।
.
–“ক..ক..কই না তো আমি এখানে আছি। হকচকিয়ে গিয়ে বলে ওঠে।
.
–“হ্যাঁ তাই তো তুই আর কোথায় যাবি। তুই এখন তোর সামনে দুটো চোখে প্রেমের সমুদ্রে ডুবে গেছিলি এতক্ষণ। ওম হাসতে হাসতে বলে ওঠে।
.
–“বলছিলাম যে আপনার চোখের ফিউশ ঠিক আছে তো এখন। বাঁকা হেসে বলে ওঠে বেলা।
.
–“আরে না না ও তো এতক্ষণ সারা রা রা করছিলো না মনে মনে। রুহি বলে ওঠে।
.
–“এই তোরা বড্ড ঝিরঝির করছিস। এবার একটু চুপ কর। বেদ বলে ওঠে।
.
–” নিশান চুপ একদম একদম বড্ড ঝিরঝির করছিস। বলেই বেলা হেসে ওঠে।
.
.বাকিরা সবাই হাসছে। বেদ ওদের চুপ করাতে ব্যস্ত। আর সারা লজ্জা মাখা মুখে চুপ করে বসে আছে। বেদ একবার কোনা চোখে সারা কে দেখে নিয়ে মুচকি হাসি দিয়ে মাথা চুলকায়। আর বেদ এই রিয়্যাকশান দেখে আবার ও সবাই হেসে ওঠে। ওরা সবাই ইউনিভার্সিটি গার্ডেন বসে আছে।
.
. ওদের হাসি মজার মধ্যে বেলার ফোন বেজে ওঠে। ফোন হাতে নিতেই দেখে “জিন্দেগি” নাম থেকে কল আসছে। এখন সবার দৃষ্টি বেলার ফোনের দিকে যেখানে অ্যাটিটিউড নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে হট চকোলেট বয়। ডান হাত দিয়ে অর্ধেক গ্লাস খুলে আছে। বেলা সবার দিকে একবার দেখে নিয়ে ফোন কানে ধরে। আর সবাই মিট মিট করে হাসছে ।
.
–” সুইটহার্ট মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” তো আমি কি করব শুনি। খেতে ইচ্ছে হলে খেয়ে ফেলুন। আমার কাছে কেনো ফোন করেছেন। বেলা বলে ওঠে।
.
–“কি করব জান মিষ্টি টাই যে এখন আমার কাছে নেই। সাঁঝ বলে ওঠেন।
.
–” দেখুন আপনার ফালতু পায়তাড়ি আপনার কাছে রাখুন। বেলা সবার দিকে একবার দেখে বলে ওঠে।
.
. সবাই এখন বেলার দিকে তাকিয়ে মিট মিট করে হাসছে ।
.
–“একটু তো মিষ্টি করে কথা বলতে পারো জান। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“আসলে জন্মের সময়ে মা আমাকে মধু দেয়নি। করোলার জুস খাইয়ে ছিল তাই আমি তেতো। হয়েছে। বেলা ঝাঁজের সাথে বলে ওঠে।
.
–“ঠিক আছে এখন থেকে আমি তোমাকে মিষ্টি খাওয়াবো বেশি বেশি করে। আমার আদুরে মিষ্টি। তাহলে দেখবে তুমি মিষ্টি হয়ে গেছ। সাঁঝ হেসে বলে ওঠে।
.
.কথা টা শুনতে বেলা চোখ বন্ধ করে নেয়। কেমন একটা শিহরন বয়ে যায় তার শরীর থেকে।

–“কোথায় আছো সুইটহার্ট ।তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে এসো। আমি ফিরছি। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“আকাশের তলায় আর মাটির ওপরে আছি। বেলা মুখ ভেঙিয়ে বলে ওঠে।
.
–“উফফফফফ । এত কেনো জ্বালাও আমাকে। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” এই ফোন রাখুন তো আপনার সাথে বকবক করার কোনো ইচ্ছা আমার নেই। যতো সব। বলেই ফোন কেটে দেয় বেলা।
.
. এদিকে এতক্ষণ ধরে চেপে থাকা হাসি গুলো ফেটে বেরিয়ে আসে। সবাই হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছে।
.
–“জানো সারা তোমার মিষ্টি ভাবি এখন তোমার ভাই কে পাত্তা দেয় না। ঠিক তেমনই এক সময়ে তোমার মিষ্টি ভাবি তোমার ভাই বলতে পাগল ছিল। কত না কান্ড করেছিলো। বলে হেসে ওঠে বেদ।
.
. বেলা কোনো কথা বলে না ওদের কথার পরিপ্রেক্ষিতে। ওরা তার গল্প শোনাচ্ছে সারা কে। এখন সে নিজেই ভাবতে বসে। সত্যি তখন কতই না পাগল ছিল। কতই না পাগলামি করেছিলো একবার তার জিন্দেগি কে দেখার জন্য।

—————-

রাতের আঁধারে গাড়ি ছুটে চলেছে। শুনসান রাস্তা কেউ কোথাও নেই। শুধু কয়েক মিনিট পর পর তাদের পাশ কেটে চলে যাচ্ছে গাড়ি গুলো। তারা প্রোগ্রাম করে ফিরছে। পাঁচটা বাইক ছুটে চলেছে রাতের অন্ধকারে । বেলার গলায় ঝোলানো গিটার। মাথায় হেলমেট না থাকার ফলে পনিটৈইল করা চুল গুলো হাওয়া তে উড়ছে। বাকি গুলোতে ওম বেদ নিশান রুহি। এখন তাদের গন্তব্য করামাঙ্গলা ব্যাঙ্গালোর টপ নাম্বার ওয়ান রেসিডেন্সিয়াল এরিয়া। রওশন ম্যানসনের দিকে।
.
. এখন এটাই তাদের প্রতিদিন এর কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সারাদিন ক্লাস করার পর বিকালে গিয়ে এস.আর ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ অফ কোম্পানির সামনে গিয়ে দাঁড়ানো। আর তারপর রাতের বেলা বাইক নিয়ে সাঁঝ এর বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকা সাঁঝ কে দেখা। যতক্ষণ না পর্যন্ত সাঁঝ রুমে গিয়ে লাইট অফ করে। আর তারপরে বেলা এক টুকরো একটা চিরকুট ছুড়ে দেয় সাঁঝ এর রুমে তারপর ফিরে আসে বেলা। আর বেলার এই পাগলামি তে সাথে থাকে তার চার বাহন।
.
.বাইক এসে দাঁড়ায় ঠিক রওশন ম্যানসনের সামনে। বাইক স্ট্যান্ড দিয়ে বাইক এর উপরে উঠে দাড়ায় বেলা। হ্যাঁ ওই তো দেখা পাচ্ছে বেলা তার জিন্দেগি তার সাঁঝ কে। রুমের মধ্যে পায়চারি করছে। কানে ফোন আর হাতে কফির মগ। বেলা মুগ্ধ হয়ে দেখছে সাঁঝ কে। লাইট এর উজ্জ্বল আলোতে তার মুখে ফুটে থাকে বিরক্তি ছাপ। কথা বলতে বলতে কখন কখন ভ্রু কুঁচকে ফেলা। নিচের ঠোঁট টা কামড়ে ধরা। আবার কখন হাত দিয়ে চুল পিছনে উল্টে দেয়া।
.
. বেলার হার্ট জোরে জোরে বিট করতে থাকে সাঁঝ এর এই ছোটো ছোটো কাজে। বেলা চটপট এক টুকরো কাগজে লিখে ফেলে।
.
. ❤️এই যে তুমি কি জানো তোমার ওই বাঁকা হাসি কারোর জান কেড়ে নিতে পারে। জানো যখন কথার মাঝে মাঝে হটাৎ করে তোমার ভ্রু কুঁচকে যায়। তখন ঠিক আমার হার্ট থেমে যাওয়ার জোগাড়। আর যখন তুমি হাত দিয়ে চুল গুলো কে পিছনে করো তখন তোমাকে পুরো হট চকোলেট লাগে। মনে হয় পুরো কামড়ে কুমড়ে খেয়ে ফেলি। জানো আমার চকলেট পছন্দ ছিল না। কিন্তু তোমাকে দেখার পর যে আমি সারাদিনে কত কত চকোলেট খাই তার হিসাব থাকে না। তোমার ওই গলায় থাকা তিল টা আমাকে নেশা লাগিয়ে দেয়। এত দিন জানতাম ছেলেরা মেয়েদের প্রতি এত টা নেশা গ্রস্থ হয়। কিন্তু দেখো আমি কেমন তোমার নেশায় নেশা গ্রস্থ হয়ে পড়েছি। দিন দিন আক্রান্ত হয়ে পড়ছি তোমার ভালোবাসাতে। তোমার ওই গভীর নীল চোখের মাঝে হারিয়ে যাচ্ছি গভীর ভাবে। তোমাকে একবেলা না দেখলে আমার দম আটকে আসে। তোমার আসক্তি পাগল করছে আমায় অতিরিক্ত ভাবে। তোমার নেশায় আসক্ত খুব বাজে ভাবে গভীর ভাবে পড়ে গেছি তোমার ভালোবাসায় জিন্দেগি ❤️
.
. বেলা কাগজে লিখে সেটা একটা পাথরে মুড়ে নিয়ে ছুড়ে দেয় সাঁঝ এর বারান্দায়। কিন্তু একি সাঁঝ কোথায় গেলো এক্ষুনি তো এখানে ছিল তাহলে কোথায় গেলো। বেলা বাইক এর ওপর দাঁড়িয়ে উকি ঝুকি মারতে লাগে।
.
. এদিকে চারজন বসে বসে অ্যাপি ফিজ খেয়ে যাচ্ছে বেলা কে হঠাৎ উকি ঝুকি মারতে দেখে বেদ বলে ওঠে।
.
–“ওই কি হল তোর ওইরকম করছিস কেনো।
.
–” আরে ইয়ার সামনে দেখ। ভয়ে ভয়ে বলে ওঠে নিশান।
.
. এদিকে ওরা চারজন চুপ চাপ হয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। বারবার বেলা কে টেনে নামাতে গেলেও বেলা নামছে না। সে এখনও উকি দিতে ব্যস্ত।
.
–“ধুর বাবা কোথায় হারিয়ে গেলো। বেলা বিরক্তি ভাবে বলে ওঠে।
.
–“কি হারিয়েছে।
.
–” আরে বাবা আমার মন আর আমার জিন্দেগি এখানে তো ছিল গেলো কোথা…। এটুকু বলেই বেলা চমকে ওঠে। হঠাৎ মনে হল সে তার সেই আকাঙ্ক্ষিত পুরুষালি ঝঙ্কারময় কন্ঠ শুনেছে। বেলা আসতে আসতে পিছনে মুড়ে তাকাতে দেখে তার সামনে তার হট চকলেট বয় সাঁঝ রওশন। বেলা তাড়াতাড়ি করে নিচে নামতে গিয়ে স্লিপ কেটে নিচে পড়ে।
.
. পড়ে যাওয়ার ভয়ে বেলা চোখ মুখ কুঁচকে রাখে। কিন্তু সে কিছুক্ষণ পর অনুভব করে যে সে নিচে পড়েনি বরং সে কারোর বাহুডোরে আটকে আছে। যার বুকের বাম দিকে জোরে জোরে করাঘাত করে চলেছে তার হৃদয়। বেলা চোখ খুলে তাকাতে দেখে তার দিকে তাকিয়ে আছে সাঁঝ। বেলা ও ডুবে যায় সাঁঝ এর ওই গভীর নীল চোখের মাঝে। এদিকে ওদের থেকে একটু দূরে দাঁড়ানো ওম রুহি বেদ নিশান হা করে দেখছে ওদের দুজন কে। রুহি নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে ওদের নজর এড়িয়ে ভিডিও বানাতে থাকে। বেশ কিছুক্ষণ হয়ে গেছে কিন্তু এখনও ওদের দৃষ্টি একে অপরের দিকে।
.
–“বেলা বেবি তুই ঠিক আছিস তো। রুহি দুষ্টু হেসে বলে ওঠে।
.
. রুহির কথা কানে যেতে সাঁঝ তাড়াতাড়ি করে বেলা কে নিচে নামিয়ে দেয়। বেলা এখনও ঘোরের মধ্যে আছে। তার শরীর এখনও কাঁপছে। সে যেনো বিশ্বাস করতে পারছে না যে তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে সাঁঝ।
.
–” তো তোমরা এখানে কি করছো। আর তোমাদের কোথাও দেখেছি মনে হচ্ছে। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” হ্যাঁ ।মনে নেই সেই দিন ওই বৃষ্টির রাতে আপনার গাড়িতে লিফট দিয়েছিলেন। রুহি উত্তেজিত হয়ে বলে ওঠে।
.
–“ও হ্যাঁ হ্যাঁ মনে পড়েছে। খানিকক্ষণ ভাবার পর বলে ওঠে সাঁঝ। কোনা চোখে একবার তাকিয়ে দেখে বেলা এখনও তার দিকে তাকিয়ে আছে।
.
. বেদ বেলার হাতে চিমটি কাটতে বেলা ঘোর কেটে বেরোয়। আর এদিকে সাঁঝ বাঁকা হাসতে থাকে বেলার কাজ দেখে।
.
–” তো তোমরা এত রাতে আমার বাড়ির সামনে কি করছিলে। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” আপনাকে দেখছিলাম। বেলা আনমনে বলে ওঠে।
.
–“কি। সাঁঝ অবাক হয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলা নিজের ভুল বুঝতে পেরে চুপ করে যায়। বেদ তাড়াতাড়ি আবার ও বলে ওঠে।
.
–” আসলে আমরা প্রোগ্রাম থেকে বাড়ি ফিরছি। বেলার হাতে থেকে ঘড়ি টা পড়ে যেতেই আমরা দাঁড়িয়ে পড়ি।
.
. বেলা বেদ এর কথা শুনে চমকে ওঠে বেদ এর দিকে তাকায়। বেদ এর কথার মানে বুঝতে পেরে নিজের হাত পিছনে মুড়ে হাতের থেকে জ্যাকেট এর হাত কিছুটা গুটিয়ে নিয়ে ঘড়ি খুলে পাশে ঘাসের মাঝে ফেলে দেয়।
.
. এটা কারোর নজরে না পড়লে ও সাঁঝ এর নজরে ঠিক পড়ে যায়। কিন্তু ও না বোঝার ভান করে দাঁড়িয়ে থাকে স্বাভাবিক ভাবে। সাঁঝ ওদের সাথে থাকা গিটার দেখে বলে ওঠে।
.
–“তোমরা কি সিঙ্গার। আই মিন তোমরা মিউজিক প্লে করো। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” ইয়েস। চার জন একসাথে বলে ওঠে।
.
. আর বেলা এক দৃষ্টিতে সাঁঝ কে দেখতে থাকে। গিলে খেতে থাকে সাঁঝ কে।
.
–“তোমরা কি প্রফেশনাল। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” অ্যাকচুয়ালি গান টা প্রথম আমরা শখের বশে গাইতাম কিন্তু এখন আমরা গান গাই ছোটো ছোটো বাচ্চাদের জন্য। আমাদের একটা অনাথ আশ্রম আছে। যেটা আমরা আমাদের এই উপার্জন দিয়ে তৈরী করেছি। আর এখন গান টা ও ওদের জন্য গাই। বেদ হেসে বলে ওঠে।
.
–” ওয়াও ।খুব ভালো তো। তোমরা তো মনে হচ্ছে এখনও স্কুলে পড়। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–” হ্যাঁ ক্লাস ইলেভেন । নিশান বলে ওঠে।
.
–“এই বয়সে থেকে ও এত সুন্দর কাজ সত্যি খুব ভালো। আচ্ছা আমি কি তোমাদের কে একটু হেল্প করতে পারি। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
–“কি রকম হেল্প। ওম বলে ওঠে।
.
–” দেখ তোমরা যেহেতু একটা ভালো উদ্দেশ্য কাজ করছ। আর তার ওপরে তোমরা স্টুডেন্ট। তাই তোমরা কি এস.আর গ্রুপের হয়ে গান গাইতে পারবে। তোমরা এস আর গ্রুপে সিঙ্গার হিসাবে জয়েন করতে পারো। এবার তোমরা ভেবে দেখতে পারো। এটা আমার কার্ড। তোমরা ভেবে আমাকে জানিও। সাঁঝ বলে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ এর কথা শুনে সবার চোখ কপালে ওঠে। সবাই সবার মুখ চাওয়া চায়ি করতে থাকে।
.
–“ওকে তো এবার তোমরা বাড়ি ফিরে যাও অনেক রাত হয়েছে। এত রাতে বাইরে থাকা সেফ নয়। বাই। বলে সাঁঝ একবার বেলার দিকে তাকিয়ে নিয়ে গেট এর ভিতরে ঢুকে যায়।
.
. এদিকে সাঁঝ চলে যেতে বেলা চিৎকার করে লাফিয়ে ওঠে। বুকে হাত দিয়ে ঢোলে পড়ে ওদের গায়ে। আর বাকিরা ও বেলা কে ধরে নেই। আবার ও বেলার নাচানাচি শুরু হয়ে যায়। এতদিন সে দূর থেকে দেখে নিজের নেশা মেটাত। আর আজকে তার সামনে থেকে দেখেছে। সে তার কোলে ছিল এটা ভাবতে বেলার মধ্যে শিহরন শুরু হয়ে যায় তার এখন মিউজিক ছেড়ে আচ্ছা করে ডান্স দিতে ইচ্ছা করছে।
.
. বেলা বাইকে ওঠে একবার গেটের ভিতরে তাকিয়ে দেখে স্টার্ট দেয়। তার মন এখন পুরো নেশায় জর্জরিত হয়ে আছে। মনে মনে তার এখন ঈদ হচ্ছে।
.
. এদিকে তাদের এই অবস্থা দেখে যে কেউ বাঁকা হাসে সেটা ও প্রতিবার এর মত তাদের অজানা।

—————–

লাক্সজিউরি হোটেল রুমে বসে আছে সাঁঝ। আর তার ঠিক সামনে বসে আছে তানভী। মুখে চড়া মেকআপ। গায়ে খুবই ক্ষুদ্র পোশাক। যেটা তে তাকে আরো কমনীয় লাগছে। নিজেকে আরো কিছুটা এগিয়ে দিয়ে লাস্যময়ী ভাবে সাঁঝ এর দিকে ঝুঁকে বসে। তার উদ্দেশ্য এখন একটাই সাঁঝ কে সিডিউস করে তাকে তার দিকে টানা। তার মুখে ফুটে আছে এখন কামনা ভরা ইশারা।
.
. সাঁঝ তার দৃষ্টি তীক্ষ্ণ করে তার হাতে থাকা ওয়াইন এর গ্লাসের দিকে চেয়ে আছে। সে একবার ও চোখ তুলে তাকায় নি তানভীর দিকে। এসেছিল এখানে আহুজাদের সাথে ডিল ফাইনাল করতে। কিন্তু তানভী যে আহুজা গ্রুপ এর ডিরেক্টর হিসাবে মিটিং করতে আসবে সেটা জানা ছিল না।
.
. তানভী সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে দেখে সে তার হাতের গ্লাস এর দিকে তাকিয়ে আছে। তানভী খানিকটা বিরক্তি হয়ে উঠে দাঁড়ায়।
.
–“এবার আমিও দেখি তুমি কেমন করে চুপ করে থাকতে পারো। চোখের সামনে আমার মত সুন্দরী থাকতে তুমি কি ভাবে নিজের হাত গুটিয়ে নাও এটা তো হতে পারে না। তোমাকে আমার কাছে ধরা দিতেই হবে। মনে মনে বলে ওঠে তানভী।
.
. মুখে একটা কমনীয় হাসি টেনে রেখে সাঁঝ এর দিকে এগিয়ে যেতে লাগে ধীর পায়ে।
.
.
.
.💝💝💝
.
. চলবে…
.
#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_১৩
.. তানভী উঠে দাঁড়িয়ে আসতে এগোতে থাকে সাঁঝ এর দিকে। সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বাঁকা হেসে। তার ককটেইল ড্রেস এর আপার পোর্শান টা খুলে ফেলে। সাঁঝ পাশে গিয়ে বসে পড়ে। সাঁঝ এর ওপর ঝুঁকে পড়ে। তানভীর শরীর বলতে গেলে এখন পুরোই উন্মুক্ত হয়ে আছে। সাঁঝ কোনো কথা না বলে নিজের ফোন থেকে মেসেজ টাইপ করতে থাকে।
.
–“সাঁঝ ডিয়ার । আমাকে দেখ ।তোমার বউ এর থেকে কম সুন্দরী নয়। বরং তোমার বউ এর থেকে আমি বেশি অ্যাট্রাকটিভ। তানভী বলে ওঠে।
.
. এদিকে সাঁঝ কোনো কথা না বলে গ্লাস খালি করছে। তানভী উঠে সাঁঝ ওপর পড়তে নিলেই পিছন থেকে দুজন তানভী কে ধরে।
.
–” স্যার। আকাশ ধীর গলায় জিজ্ঞেস করে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে চোখের ইশারা করতে আকাশ এর সাথে আসা দুটো বডিগার্ড তানভী কে নিয়ে চলে যায়। আর সাঁঝ মাথা হেলিয়ে বসে চোখ বন্ধ করে নেয়। মুখে লেগে আছে বাঁকা হাসি। আকাশ তার বস কে চেনে। সাঁঝ এর সাথে এটা নতুন কিছু না। তাকে এইরকম সিচুয়েশন হার সময়ে সামলাতে হয়। প্রায় এইরকম মেয়েরা সাঁঝ কে নিজেদের রূপের মায়া দিয়ে সাঁঝ কে পেতে চেয়েছিলো। তাই আকাশ এর এগুলো সামলাতে সামলাতে আর অস্বস্তি বোধ হয় না। আর সে প্রথম প্রথম যখন এমন দেখত। তখন সে শুধু সাঁঝ কে দেখত। যে কিভাবে একটা মানুষ নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পারে। এত খোলা মেলা দেখে ও সাঁঝ এর মধ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখতে পেতো না।
.
.সাঁঝ। চরিত্র টাই একদম আলাদা একদম ইউনিক। ইন্টারন্যাশনাল ট্রাক রেকর্ড। রওশন ফ্যামিলি এক নামে পরিচিত। আর শুধু তাই নয় যেমন ভয়ানক তেমনই আন্তরিক। সাঁঝ রওশন এখন বর্তমান রওশন ফ্যামিলির একমাত্র লিডার। নর্থ ইন্ডিয়ার নাম্বার ওয়ান রেপুটেটেড ফ্যামিলি। আর ইন্টারন্যাশনাল বিসনেজম্যান । নর্থ ইন্ডিয়ার সব কিছু চলে রওশন ফ্যামিলির কথা মত। আর চার বছর আগে সাঁঝ ব্যাঙ্গালোর আসে তার বিসনেজ ও ব্যাঙ্গালোর সিটির লিডার সিপ নিতে। সাঁঝ রওশন যেমন হট চকলেট। তেমন একজন রাগী বদ মেজাজ অ্যাটিটিউড আরোগেন্ট পার্সেন।সব সময়ে মেয়েদের থেকে দূরে থাকে। যখন কেউ তাকে ফুসলিয়ে ছলাকলা করে তাকে পেতে চায়। তখন সাঁঝ তাকে পুরো বরবাদ করে ছাড়ে। আর এই মেয়েদের ব্যাপার তো তার কাছে এখন মাথা যন্ত্রণা মত হয়ে গেছে।
.
–“বেলা । হুম বেলা একমাত্র বেলা কে দেখলেই তার নেশা লাগে। এক মাত্র বেলা কে দেখলে তার হার্টবিট বেড়ে যায়। এক মাত্র বেলার মুখের হাসি দেখলে সাঁঝ এর পৃথিবী থমকে যায়। এক মাত্র বেলা কে দেখলে তার শরীরে শিহরন জেগে যায়। বেলার পুরো টাই মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরোটাই তাকে নেশায় আসক্ত করে ফেলে। এক জনম ভোরে দেখলে ও যেনো তার তৃষ্ণা মিটবে না। একমাত্র বেলা যে পারে তাকে হিলিয়ে দিতে। হ্যাঁ বেলা শুধুমাত্র তার বেলা। তার স্ত্রী। যে শুধুমাত্র তার হ্যাঁ শুধু তাকে দেখলে তার দুনিয়া থেমে যায়। বেলার থেকে ও সুন্দরী সুন্দরী মেয়েরা তাকে পেতে চেয়েছিল কিন্তু সাঁঝ বেলার ওই টানা টানা কাজল কালো চোখের মাঝে ডুবে গেছিলো। আর উঠতেই পারেনি। দিন দিন আরো গভীর ভাবে ডুবে যেতে থাকে।
.
–“হুম বেলা ।শুধু তুমি আমার নেশা আসক্তি অতিরিক্ত। যা আমি চেয়ে ও কাটাতে পারি না। তুমি একমাত্র আমাকে নেশা লাগিয়ে দিতে পারো। অন্য কোনো মেয়ে তাদের কে পুরো নগ্ন অবস্থায় দেখলেও আমার মধ্যে কোনো উত্তেজনা সৃষ্টি হয়না। কিন্তু তোমার ওই লজ্জা মাখা হাসি মুখ দেখলেই আমার শিহরন বয়ে যায়। সাঁঝ মনে মনে বলে ওঠে।

—————–

বেলা মিউজিক রুম থেকে বের হয় তার প্র্যাক্টিস শেষ করে। রুমে এখনও রুহি ওম নিশান বেদ আর সারা রয়েছে। বেদ আর সারা একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। আর ওদের থেকে একটু দূরে বসে রুহি ওম নিশান ক্যান এর বোতলে চুমুক দিচ্ছে আর বেদ আর সারার শুভদৃষ্টি দেখতে থাকে।
.
. বেলা সিঁড়ির কাছে আসতেই হটাৎ করে পিছন থেকে তাকে কেউ কোলে তুলে নেয়। ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতে দেখে সাঁঝ তাকে কোলে নিয়েছে। সাঁঝ এর চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে আছে। চোখে রয়েছে ঘোর লাগা দৃষ্টি। সাঁঝ কোনো কথা না বলে সিঁড়ি বেয়ে রুমে চলে যায় বেলা কে নিয়ে। বেলা সাঁঝ এর মুখের দিকে দেখে আর কোনো কথা বলেনি।
.
. সাঁঝ বেলা কে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে বেলার ওপর ভর দিয়ে শুয়ে পড়ে। বেলা নাড়াচাড়া করছে। সাঁঝ এর কাছে থেকে সরে আসতে নিলে। সাঁঝ বেলার কানে কানে ফিসফিস করে বলে ওঠে।
.
–“আই নিড ইউ বেলা ব্যাডলি। প্লিজ ডোন্ট মুভ। অ্যান্ড স্টপ ফাইট।
.
. সাঁঝ এর এমন ফিসফিস করে বলে ওঠার জন্য বেলার শরীরে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। হার্ট বিট বেড়ে যায়।। সাঁঝ বেলার গলায় মুখ ডুবিয়ে লিক করতে থাকে। সাঁঝ এখন বেলার নেশায় ডুবে যেতে চায়। সে এখন বেলার স্পর্শ নিতে চায়। বেলা কেঁপে কেঁপে ওঠে সাঁঝ এর এমন স্পর্শে ।প্রতি টা স্পর্শ তার হাড় কাঁপিয়ে দিচ্ছে। দম আটকে আসছে। মনে হচ্ছে সাঁঝ এর এই আদর নামক অত্যাচারে মরে যাবে।
.
. সাঁঝ বেলার গলায় থেকে মুখ তুলে বেলার ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবিয়ে দেয়। শুষে নিতে থাকে বেলার রসালো ঠোঁট। আর নিজে ও নিস্বেঃশ হতে থাকে বেলার ঠোঁটের মাঝে। বেলার কাঁধের থেকে শাড়ির আঁচল সরিয়ে ফেলে গলায় মুখ ডুবিয়ে দেয়। আসতে আসতে নিচে নামতে থাকে। বুকের কাছে এসে সাঁঝ থেমে যায়। মুখ উঠিয়ে বেলা কে দেখে। যে এই মুহূর্তে চোখ মুখ খিঁচে বন্ধ করে রেখেছে। চোখের কোন থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। নিচের ঠোঁট টা কে দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে আছে।
.
. সাঁঝ বেলার অবস্থা আর এখনকার অবস্থা দেখে সাঁঝ বেলার ওপর থেকে উঠে ওয়াশরুমে চলে যায়। আর এদিকে বেলা বেড থেকে উঠে বসে। কিছুক্ষণ এক দৃষ্টিতে ওয়াশরুমের দিকে দেখে উঠে দাঁড়ায়। কাবার্ড থেকে সাঁঝ এর ড্রেস বের করতে গিয়ে পিছনের দিকে অসাবধানতায় হাতে শক্ত কিছু লাগে। বেলা ড্রেস সরিয়ে দেখতে পায় একটা ব্রাউন কালার এর ডায়েরি। দরজা খোলার আওয়াজ হতে বেলা সরে দাঁড়ায়। সাঁঝ বেরিয়ে রেডি হয়ে বেলার কপালে একটা চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
.
. সাঁঝ বেরিয়ে যেতেই বেলা ডায়েরি বের করে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়। দোলনায় বসে ডায়েরি পাতা উল্টাতে বেলার চোখ বড় বড় হয়ে যায়। বিস্ময় লাগা চোখে তাকিয়ে আছে বেলা ডায়েরি দিকে। যেখানে রয়েছে তার আর সাঁঝ এর ছবি । বেলা বাইক চালাচ্ছে আর তার কোমর জড়িয়ে বসে আছে সাঁঝ। পিছন থেকে পুরো বেলার সাথে লেগে বসে আছে সাঁঝ। মুখে ফুটে আছে মুচকি হাসি। আর বেলার অবস্থা পুরো মনে হচ্ছে কোনও চাঁদ পেয়ে গেছে হাতে।
.
. আবার ও বেলার চোখের সামনে পুরোনো সেই দৃশ্য ভেসে ওঠে।

——————–

এস আর গ্রুপে আজ প্রথম দিন ছিল বেলা বেদ ওম রুহি নিশান এর জন্য। তারা এখন এস আর গ্রুপে সিঙ্গার হিসাবে জয়েন করেছে। আজ এসেছিল তাদের প্রথম সং রেকর্ড করতে। অফিস থেকে বেরোতে বেলার চোখ যায় বেসমেন্ট এর দিকে সাঁঝ এর পার্কিং এ রাখা গাড়ি। বেলা হাতের ঘড়ির দিকে একবার দেখে নিয়ে বেদ নিশান ওদের দাঁড়াতে বলে বাঁকা হেসে এগিয়ে যায় সাঁঝ এর গাড়ির দিকে। অতি সন্তরপনে মাথার কাঁটা দিয়ে গাড়ির হাওয়ায় চাকা নেই করে দেয়।
.
.বেলা পার্কিং এর দিকে নিজের বাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মুখে ফুটে আছে বাঁকা হাসি। অফিসের গেটের দিকে একবার তাকাতে হাসি টা আরো বেড়ে যায়। সাঁঝ এগিয়ে আসছে পার্কিং এর দিকে।
.
–“স্যার গাড়ির হাওয়ায় চাকা নেই। না মানে চাকাতে হাওয়া নেই লিক হয়ে গেছে। আকাশ ভীতু মুখে বলে ওঠে।
.
. সাঁঝ কোনো কথা না বলে একবার বিরক্তিকর লুক দিয়ে এগিয়ে আসতে বেলা তার বাইক নিয়ে সাঁঝ এর সামনে এসে দাঁড়ায়। মুখে হাসি নিয়ে সাঁঝ এর দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে ।
.
–” আমি কিছু মনে করব না। আমি আপনাকে লিফট দিতে পারি। যদি আপনি চান তো। তাছাড়া আমার কাছে আপনার এটা পাওনা ছিল। আমাকে যে লিফট দিয়েছিলেন।
.
. সাঁঝ কিছুক্ষন কোনা চোখে বেলার দিকে তাকায়। সাঁঝ মুখে রহস্যময় একটা হাসি রেখে বেলার পিছনে উঠে বসে। এদিকে আকাশ বিস্ফোরিত চোখে তাকিয়ে আছে ওদের দিকে। আকাশ ভেবেছিল আজ হয়তো এই মেয়েটার রক্ষে নেই। এত টা বল্ড ভাবে সাঁঝ কে বলার জন্য। কিন্তু একি ওর সব ভাবনায় পানি ঢেলে দিয়ে সাঁঝ বেলার বাইক এর পিছনে উঠে বসে। সাঁঝ একবার আকাশ এর দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারা করে মাথায় হেলমেট পরে নেয়। নাহলে ওকে এই ভাবে বাইক রাইড করতে দেখলে তাও আবার কোনো মেয়ের পিছনে। তাহলে এটা কাল খবরে হেড লাইন হবে পুরো ইন্ডিয়াতে
.
. বেলা তো যেনো আকাশে উড়ছে এমন ভাব। বাইক জোরে পিক আপ নিতেই সাঁঝ বেলার দিকে ঝুঁকে এসে পড়ে সাথে সাথে হাত দুটো বেলার কোমর চেপে বসে শক্ত করে। আচমকা সাঁঝ এর হাত বেলার কোমরে চেপে বসতে বেলার নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যায় দম আটকে যাওয়ার জোগাড় হয়ে বসে শরীরে শিহরন বয়ে যায়। সাথে সাথে বাইক এর গতি আরো বাড়িয়ে দেয়। এবং আকা বাঁকা ভাবে সাঁঝ কে নিয়ে বাইক রাইড করতে থাকে।
.
. বেলা সাঁঝ এর বাড়ির সামনে এসে বাইক থামাতে। সাঁঝ বেলার কোমরে থেকে নিজের হাত সরিয়ে নেয়ার আচানাক বেলা নিজের নিজের কাঁধে হালকা ভেজা কোমল স্পর্শ পায়। সাথে সাথে বেলা কেঁপে ওঠে। তার শরীরে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সাঁঝ ভিতরে চলে যাওয়ার পর ও থমকে থাকে।
.
. ওখানে বেদ নিশান আর বাকিরা এসে ওকে নাড়াতে বেলার ঘোর কেটে যায়। মুখে ফুটে ওঠে একটা মিষ্টি হাসি। লজ্জার জন্য গাল গুলো লাল হয়ে যায়। সে বুঝতে পারে যে সাঁঝ এর নামার সময়ে অসাবধানতায় তার ঠোঁট বেলার কাঁধ ছুয়ে গেছে। বেলা ওদের চার জন কে অবাক করে দিয়ে বাইক এর ওপর বসেই নাচানাচি শুরু করে দেয়।
.
. বাইক নিয়ে টেনে বেরিয়ে যায় একবার সাঁঝ এর বারান্দায় দেখে নিয়ে। এবার যেনো বেলা বাইক চালাচ্ছে না বাইক নিয়ে খেলা শুরু করেছে। হেলে দুলে একে বেঁকে ছুটে চলেছে। কখন হাত ছেড়ে দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে তো কখন ও ফুল স্পিড তুলে।
.
. 🎶 উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা ও সড়িয়া
উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা লা~~🎶
.
. বেলা এবার খুব জোরে পিক আপ পাকিয়ে স্পিড তুলতে থাকে। ওর সাথে আছে ওর বন্ধু গুলো।
.
. 🎶করে যে দুরু দুরু দুরু দুরু মন আমার
করে যে দুরু দুরু মন আমার
হল যে শুরু শুরু শুরু শুরু দুজনে
চেনা পথ হারাবার 🎶
.
.
. 🎶উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা ও সড়িয়া
উলা লা লা আই লাভ ইউ মাই সড়িয়া
উলা লা লা লা লাআ~~🎶
.
. সারা রাস্তা বেলা গান গাইতে গাইতে আর পাগলামি করতে বাড়ি ফিরেছে। আর তার সাথে ছিল তার চার দোসর। সাঁঝ এর নেশায় মাতলামি করে পুরো রাস্তা জুড়ে। কখন বাইক থামিয়ে রাস্তার ওপর বসে পড়ে হাত পা ছিটিয়ে উঠে। তো কখন গড়াগড়ি খেতে লাগে রাস্তার মাঝে শুয়ে পড়ে। রাতের অন্ধকারে তার এই পাগলামি দেখার মত কেউ নেই বলে যেনো সে ভর পুর পাগলামি তে মেতে উঠেছে। আর পুরো রাস্তা জুড়ে তার কান্ড কাহিনী কেউ চোখের সামনে বসে দেখছে আর হাসছে। সেটা কেউ জানতে পারলো না।
.
. কোনো মেয়ে ও যে এত টা আসক্ত হতে পারে কোনো ছেলের প্রতি সেটা হয় তো তার বন্ধুরা জানতো না আর না জানতো সেই অজানা ব্যাক্তি। তারা বেলার করা পাগলামি তার করা প্রতি টা কাজ বলে দিচ্ছে সে কত ভয়ানক ভাবে সাঁঝ এর প্রতি নেশাগ্রস্ত হয়েছে। কত টা তার আসক্তি পাগল হয়ে আছে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন রি-চেক করা হয়নি। সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊