ফেইরিটেল পর্ব-৩৮+৩৯ | গল্পেমহল ধারাবাহিক গল্প

0
717
ফেইরিটেল
গল্পেরমহল ধারাবাহিক গল্প

#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–38

আকাশে অর্ধবৃত্ত একটা চাঁদ উঠেছে।শান্তিময় হিমেল হাওয়া এলোমেলো করে দিচ্ছে মিরার হৃদ মাঝারটাকে৷ ইমানের যাওয়ার পানে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। আরো আধ ঘন্টা আগেই এ রাস্তা দিয়ে সে হেঁটে হেঁটে চলে গেছে। তবুও সেদিকে তাকিয়ে মিরা যেন ধ্যানে বসেছে৷ চোখের পলক ফেলার সময় বাদে সে বাকি সময়টুকু জুড়ে রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকে৷ উম্মাদ-উত্তাল বাতাসে তছনছ হচ্ছে গাছের পাতা। প্রবল স্রোতে বাতাস দৌঁড়ে আসায় গাছের পাতাগুলো এমনভাবে ঝরছে যেন রেইনফল না লিভ-ফল হচ্ছে৷ অন্যরকম একটা অনুভূতি অনুভব করছে সে। শুষ্ক পাতার দলগুলো হাওয়ায় হাওয়ায় উড়ে যাচ্ছে উদ্দেশ্যহীনভাবে৷ একসময় তার মনে হলো, পাতার মতো আমরা মানুষও যদি মন চাইলে সবটা ছিন্ন করে উড়ে হারিয়ে যেতে পারতাম!”

তখনই মেদেনীর বুক ভার করে এক ঝাক বৃষ্টি নেমে এলো। প্রথমে ঝিরিঝিরি এরপর ক্রমশ বাড়তে লাগলো। মিরা আকাশের দিকে তাকালো। যদিও অন্ধকারে কিছু দেখতে পেল না। কিন্তু চোখ খুলে রাখা যাচ্ছে না৷ মোটা মোটা বৃষ্টির ঝাটা সোজাসাপটা চোখে এসে লাগছে। সে চোখ নামিয়ে নিয়ে খানিকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজল৷ খুব আরাম লাগছে ভিজতে৷ মনে হচ্ছে বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে সব ক্লান্তি ধুয়ে যাচ্ছে৷ যতোক্ষণ বৃষ্টি পড়ল, সে ঠায় বাসার সামনের রোডে দাঁড়িয়ে থাকল৷ মাঝে দুজন পথিক তাকে পাশ কাটিয়ে গিয়েছে। দুজনেই তাকে দেখে মুচকি হেসেছে। একজন প্রশ্ন করে বসে, “তোমার কী অনেক দুঃখ ডিয়ার? কেমন উদাসীন লাগছে। প্লিজ একটু হাসো। ডোন্ট ক্রাই ডিয়ার৷ ”

মিরার তখন খেয়াল হলো সে কাদছিল। চোখ দিয়ে টপাটপ জল গড়াচ্ছিল তার৷ অথচ, অথচ ভদ্রমহিলা না বললে সে টেরও পেত না৷ কি আশ্চর্য! নিজের দু’চোখ কাদলো তাও মন টের পেল না? সে জানেও না কেন, কি জন্য কাদলো সে? ভদ্রমহিলার প্রশ্নের উত্তরে সে কিছুই বলতে পারেনি। সামান্য হেসেছে কেবল। প্যান্ট-শার্ট আর ছোট চুলেরই সেই মাঝবয়েসী মহিলা তাকে হাসতে দেখে দারুণ সুন্দর করে বলে, “তোমার হাসি যা মিষ্টি।”

উনি মিরার ভেজা গালে হাত বুলিয়ে দিয়ে চলে যান। অনাকাঙ্ক্ষিত একজনের স্নেহে কোমল মনটা ভিজে উঠে মিরার৷ সে সঙ্গে সঙ্গে বাসার দিকে ছুট লাগায়৷ বাসার দরজা বন্ধ ছিল। ভেতর থেকে লক করা। মিরা বেল বাজালে হাসনাহেনা দরজা খুলে দিয়ে মিরাকে কাকভেজা অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে যান৷ উনি বলে উঠে, “তুমি বৃষ্টির মধ্যে বাইরে ছিলে?”

–” জি আন্টি।”

–” আমি ভেবেছি তুমি দোতলায় আছ। এই ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাইরে কেন? বৃষ্টিতে কেন ভিজলে? সেদিন না জ্বর থেকে সারলে। এখন যদি ঠাণ্ডা লেগে যায় আবারো?”

মিরা মাথা নিচু করে ফেলে। আসলেই তো। সে তো অসুস্থতার কথা ভুলেই গিয়েছিল৷

আন্টি রাগী গলায় বলে উঠে, ” তোমাদের জেনারেশনের ছেলে-মেয়েদের কোন ঠিক-ঠিকানা নাই। যা মন চায় তাই করবে৷ সেটা ভালো না খারাপ ভাবার প্রয়োজনবোধ করো না৷”

–” সর‍্যি আন্টি।”

–” বাইরে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভেতরে আসো। পুরা বাসা আবার ক্লিন করতে হবে। তুমি এক্ষুনি হট শাওয়ার নিয়ে চুল শুকাবে৷”

তখনই মিরা একটা হাঁচি দিয়ে বসে৷ হাসনাহেনা এবার আরো রাগী চেহারা বানালেন। মিরার কী যেন হলো। সে তার দিকে তাকিয়ে হেসে উঠে৷ এতে হাসনাহেনা বিরক্ত হয়ে বলে, ” হাসবে না একদম। যাও দ্রুত যাও। এবার জ্বর আসলে কিন্তু তোমার খবর আছে৷”

মিরা ভেজা অবস্থায় দোতলার রুমে প্রবেশ করে। আজকে রুমটা কেমন শূন্য শূন্য হয়ে আছে৷ মনে হচ্ছে কী যেন নেই৷ কী যেন খালি৷ অবশ্য এতো সুন্দর রুমটার মালিক নেই। তার অনুপস্থিতি পুরা রুম জুড়ে ছড়িয়ে গেছে৷ রুমের বারান্দার উইন্ডচার্মটা মন খারাপ করে ঝুমঝুম আওয়াজ তুলে গান-বাজনা করা থামিয়ে দিয়েছে৷ পর্দাটা আনন্দে উড়াউড়ি করা বন্ধ করে দিয়েছে৷ অন্যথায় পর্দার উড়াউড়ির জন্য ওপাশের সবটা দেখা যায় এতে কতবার বিব্রত হতে হয়েছে দুজনকে। কালকের ঘটনা। ইমান তার সাইডে দাঁড়িয়ে গেঞ্জি খুলে ফেলেছে পাল্টাবে বলে, তখনই বাতাসের জন্য দু’রুমের পার্টিশন সরে যায়৷ পর্দার অবান্তর উড়াউড়ির জন্য। আর আজকে পর্দা এক জায়গায় স্থির। রুমে এখনো ছেলেটার গায়ের গন্ধ ভেসে বেড়াচ্ছে৷ মিরা বুক ফুলিয়ে শ্বাস নিল। এরপর ওয়াশরুমে শাওয়ার নিতে চলে যায়৷ ফ্রেস হয়ে এসে সে নিচে নেমে যায়। দোতলায় মন টিকছে না তার। এরচেয়ে আন্টিকে ডিনার তৈরিতে সাহায্যে করা যাক৷ উনি নিশ্চয়ই পুরা বাসা ক্লিন করে ফেলেছেন। স্বল্প দিনের পরিচয়ে মিরা বুঝে গেছে উনার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বাতিক আছে। সবকিছু সবসময় ক্লিন এন্ড নিড চাই৷ এধরণের মানুষ গুলোর ভারী কষ্ট৷

কিচেনে যেতেই হাসনাহেনার দেখা মিলল। উনি মিরাকে দেখে বলে, “ওইবার জ্বর আসলে তো ইমান তোমাকে কফি খাইয়েছিল। এখন কফি খাবে? গরম কফি খেলে ভালো লাগবে৷”

— আন্টি, এখন কফি খেলে ঘুম হবে না৷”

–” তাও ঠিক। সেদিনের মতো ভাত খেতে চেও না। আজ ইমান নেই বাসায়৷ তোমার জন্য এতোরাতে শপে যাওয়া সম্ভব হবে না। ও তো সেদিন ঝড়-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে গিয়েছিল।”

একথাটা আন্টি আগেও একবার বলেছেন৷ তবুও আজকে দ্বিতীয়বার শোনার পর মিরার লজ্জা লাগলো৷

সে পাশ ফিরে যেতে ধরলে আন্টি তাকে ডাকল৷ মিরা কিচেনের ভেতর ঢুকলে উনি স্যুপের বাটি ধরিয়ে দিয়ে বলে, ” স্যুপ খাও। দশটার দিকে ডিনার করবে৷ আর চুল শুকাও নি কেন?”

— আসলে… আমি হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে চুল শুকাই না। আম্মু মানা করে। ফ্যানের বাতাসে শুকিয়ে যাবে৷”

হাসনাহেনা বলে উঠে, ” ঠাণ্ডা লাগলে কী করবে? তোমাদের জেনারেশন নিয়ে আমি হতাশ৷ কারো কথা শুনতে চাও না। মুরুব্বিদের কথাও শুনো না৷”

মিরা বুঝল আন্টির নিউ জেনারেশনের উপর বেজায় ক্ষোভ। নিশ্চয়ই এই ক্ষোভের উৎপত্তি তার পুত্রদের জন্য। তার গুনধর ছেলেরাই কারো কথা শুনে না৷ মর্জি মতো চলে। বিশেষ করে বড়জন!

হলরুমে বসে সে স্যুপ খাচ্ছে। তখন সাদ নিজের রুম থেকে বের হয়ে ফ্রিজ খুলে চকলেট বের করল। দুটো বিশাল বড় কিটক্যাট এনে সোফায় মিরার পাশে বসল৷ কিটক্যাট একটা নিজে নিল, আরেকটা মিরাকে দিল৷ মিরা ফ্রিজ খোলার সময় লক্ষ্য ফ্রিজের পুরা এক তাক ভর্তি চকলেট৷ এ বাসায় কোন বাচ্চা নাই। কার জন্য এতো এতো চকলেট?

সাদের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ হওয়ায় সে সরাসরি প্রশ্ন করে, ” এতো চকলেট কেন এনেছো?”

সাদ চকলেটে কামড় বসিয়ে বলে, ” আমি আনিনি। ভাই আজকে সকালে আনিয়েছে। শুধু চকলেট না। আইসক্রিম, প্রেস্ট্রি, চিপস, ডোনাট আরোও কিছু স্ন্যাকস। ভেবেছিলাম বাসায় ও আজ ছোটখাটো পার্টি দিচ্ছে৷ পরে দেখলাম ব্রাদার শহরের বাইরে যাচ্ছে। মেবি তোমার জন্য এনেছে৷

মিরা সবে চকলেটের প্যাকেট খুলেছে। সাদের কথায় সে হা হয়ে যায়। ইমান এনেছে চকলেট তাও তার জন্য! বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে। এমন সময় মিরার ম্যাসেঞ্জারে নোটিফিকেশন আসে৷ ইরার নক দিয়েছে৷ ইরার সঙ্গে দু’দিন কথা হয়নি তার। স্ক্রিনে ইরার আইডি ভেসে উঠে। সাদের চোখ এড়ালো না তা। সে বলে, “হু ইজ সি?”

–” আমার ছোট বোন। ”

–” মেহজাবিন ইরা নাম?”

— “ফেসবুক আইডি। ওর নাম আসলে ইরা জামান৷”

মিরা ফোন হাতে নিয়ে এক্সকিউজ মি বলে উঠে যায়। সাদের মাথায় আইডির নামটা পেরেক দিয়ে বাধাই করার মত ঢুকে গেল৷ প্রোফাইল পিকচারে লাল রঙের জামা পরা ছবি৷ সে ফোন বের করে ওই আইডি সার্চ করে। সঙ্গে সঙ্গে আইডিটা ভেসে উঠে। আইডেন্টিটিতে দেওয়া,লিভস ইন বাংলাদেশ৷ স্টাডিজ এট লিটল ফ্লাওয়ার হাই স্কুল। প্রোফাইল লক। তবে মিচুয়ালে মিরার আইডি৷ সে মিরার সঙ্গে এড নেই। ভুলে গিয়েছিল এড পাঠাতে৷ আসলে এদেশে ফেসবুক নিয়ে এতো হাইপ নেই। অবসরটা কাটাতে তারা ফেসবুকে কিছু সময় স্পেন্ড করে৷

ইরার সঙ্গে সে ম্যাসেঞ্জারে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলে৷ কত বোঝানোর চেষ্টা করল এক্সাম দেওয়ার জন্য কিন্তু ওর এক কথা৷ প্রিপারেশন ভালো না৷ সে এক্সাম দিবে না। মিরা হাল ছেড়ে দিল। কিছুক্ষণ টুকটাক কথা বলে সে ফোন টেবিলে রাখতেই ফোনটা বিকট শব্দে বেজে উঠল। স্ক্রিনে ইমান খান লেখা ভাসছে। ইনকামিং কল। কিন্তু ইমানের নাম্বার তো “ভাইরাস” নামে সেইভ ছিল?পরবর্তীতে মন পড়ল ওটা বাংলাদেশী নাম্বার। এটা আমেরিকান সিম থেকে কল আসছে। ট্রু-কলার অন জন্য নাম লেখা উঠেছে৷ সে ধরল না। একটানা বেজে যেতে থাকল।

মিরা বিরক্ত হয়ে ফোন রিসিভ করে কড়া গলায় বলে , ” কী চাই?”

ওপাশ থেকে কোন শব্দ ভেসে আসলো না।

মিরা আবারো বলে, ” বলুন কী চাই আপনার? কেন বিরক্ত করছেন?”

ফোনের ওপাশ থেকে এবার শোনা গেল, ” যা চাই তা দিতে পারবে না৷ আমি বিরক্ত করি?ওকে ফাইন৷ আর কোনদিন কল দিব না৷ আমার নাম্বার ব্লক লিস্টে ফেলে রাখো।”

সে ফোন কেটে দিল। মিরার ফোন রেখে কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে মৃদ্যু হাসল। মানুষের নাকি বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রতিদিন একটু একটু করে ম্যাচুরিটি বাড়ে৷ কিন্তু ছেলেটা এই থিউরি ভুল প্রমানিত করল। ও দিন দিন আরো ইমম্যাচুউর হচ্ছে। কোথায় যেন পড়েছে মানুষ প্রেমে পড়লে ইমম্যাচিউর হয়ে যায়৷ ইমান আবার কার প্রেমে পড়ল?

★★★

ইমানের রাগে গা কাঁপছে। তাকে এটিটিউট দেখানো হচ্ছে? তাকে প্রশ্ন করা হচ্ছে “কী চাই”! সাহস কত মেয়ের। এখন যদি ইমান বলে দিত, তোমাকে চাই-ই। তাহলে কি ওই মেয়ে নিজেকে সপে দিতে পারবে? নিশ্চয়ই পারবে না। তাহলে এতো দাপট দেখিয়ে কোন সাহসে বলে কী চাই।মনটাই তেতো হয়ে গেছে৷ তিক্ততায় ভরে উঠেছে ভেতরটা৷ একদম করলার মতো তিতা লাগছে। সে ওয়েটার ডাকিয়ে একদম স্ট্রং কফি অর্ডার দিল। বার বার বলে দিল তিতা যেন বেশি হয়৷ বিষে বিষ ক্ষয় হলে, আজ ইমান তিতায় তিতা ক্ষয় করবে৷ ওয়েটার কফি দিয়ে গেল। গরম কফি মুখে দিতেই তার মন চাইল ধুক করে সবটা ফেলে দিক৷ কিন্তু সে কফি খেল। এতো তিতা কফি সে জীবনেও খায়নি। নো সুগার, নো মিল্ক। ওলনি তিতা!

কফি শেষ করে সে লবিতে আসল। সে কিছুক্ষণ কাটিয়ে রুফটপে চলে গেল৷ কেমন ছটফট লাগছে। হুট করে মনে পড়ল, সোনালী আপু বলেছে সুপ্তি বেগমের নাকি শরীর খারাপ৷ সে কী ভেবে যেন সুপ্তি বেগমকে কল দিল। আমেরিকা আসার পর কথা হয়নি তাদের৷ আজই প্রথম ফোনে কথা বলবে। খুব উদ্ভট লাগে৷ অবশ্য সুপ্তি বেগমের প্রতি তার কোন রাগ নেই। বরং ওনাকে অসহায় লাগে এখন৷ আগে ভাবত উনিও ওনার স্বামীর মতো৷ কিন্তু রিসেন্টলি এ ধারনা বদলে গেছে৷

দুবার কল হতেই সুপ্তি বেগম ফোন রিসিভ করলেন৷

ইমান বলে, “কেমন আছেন?”

–” আছি বাবা আলহামদুলিল্লাহ। তুমি কেমন আছো? মিরা কি করছে?”

–” আমি ভালো আছি। কাজের জন্য নিউইয়র্কের বাইরে এসেছি৷ আপনি অসুস্থ এজন্য ফোন দিলাম। হুট করে কেন সিক হলেন? দুশ্চিন্তায়? দুই মেয়ের জন্য চিন্তা হয়?”

–” তোমাকে এগুলো কে বলেছে?”

–” কাউকে বলার লাগবে কেন? আমি তো বাচ্চা না যে বুঝব না। আপনি চিন্তা নিবেন না একদম । একদা আপনাকে মা বলে ডেকেছি। আমি মা শব্দটার মর্যাদা দিতে জানি। আমি আছি আপনার পাশে।”

সুপ্তি বেগমের গলা ধরে এলো বোধহয়। উনি বলে উঠে, ” তোমার জন্য অনেক দোয়া বাবা। তুমি কল দিয়ে খোঁজ দিয়েছো এটাই অনেক। মিরাকে ভালো রাখ। এটা ঠিকভাবে করলে আমার আর তোমার কাছে কিছু চাওয়ার নাই।”

–” আপনি ডাক্তার দেখিয়েছেন?”

উনি অপ্রতিভ গলায় বলে, “নাহ। সামান্য অসুস্থতা। সেরে যাবে৷”

–” কালকেই ডাক্তার দেখাবেন প্লিজ৷”

–” মিরার জন্য একটা জব খুজে দিতে পারবে?ও শুধু শুধু সময় নষ্ট করুক এটা আমি চাই না। পড়াশুনা শুরু করতে নাকি আরো মাস খানেক সময় লাগবে। এই সেসনে এডমিট হতে পারবে না?”

— না। নেক্সট সেমিস্টারে ভর্তি হতে হবে। মাঝামাঝিতে ভর্তি হওয়া ঝামেলা৷”

–” আচ্ছা, বাবা। তুমি কাজ কর৷ রাখি৷”

ইমান ফোন রাখার আগে বলে, ” আপনার ব্যাংক একাউন্ট থেকে কোন ম্যাসেজ যায়নি? একটু চেক করবেন। আর কোন সমস্যা হলে আমাকে জানাবেন৷”

★★★

ইরা চুপচাপ বসে আছে নিজের বিছানায়। ফোনের ওয়াইফাই অন থাকায় কুটুস করে নোটিফিকেশনের আওয়াজ আসল। সে ফোন হাতে নিয়ে দেখে “আবরার সাদ” নামের একটা আইডি থেকে রিকুয়েষ্ট এসেছে। ইরার বদ অভ্যাস হলো কেউ রিকুয়েষ্ট দিলে সেই আইডিতে গিয়ে স্পাই করা। সে ক্লিক করে প্রোফাইলে ঢুকে। ছেলে নিউইয়র্কে থাকে। বিদেশি এক ভার্সিটিতে পড়ে যার নাম প্রথম শুনল সে। ইরার বিশ্বাস হলো না৷ লুইচ্ছা ছেলেগুলো এসব আজগুবি দিয়ে রাখে। আসলে দেখা যাবে এই ছেলে গুলিস্তানে গামছা বেচে৷ সে রিকুয়েষ্ট এক্সসেপ্ট না করে ফোন রেখে দিল৷

চলবে৷

#ফেইরিটেল
#Arishan_Nur (ছদ্মনাম)
Part–39 (বোনাস)

আকাশ পরিষ্কার৷ আরামদায়ক ও প্রশান্তিকর প্রভাতের কিরণ উঁকি মারছে বারান্দার দরজার কোল ঘেঁষে। নাম না জানা নানারকমের পাখির কিচিরমিচির শব্দে চারপাশ মুখরিত। আজকাল ভোরে খুব শীত পরে৷ ঠাণ্ডায় জমে যাওয়ার মতো৷ উষ্ণ কম্বল মাস্ট নিতে হচ্ছে৷ মিরা চোখ খুলল৷ সে কালরাতে বেডে ঘুমিয়েছিল। এবং চোখ খোলার পর নিজের অবস্থান বেডেই পেল। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য গত তিনদিন ধরে মিরা স্লিপ ওয়াক করেনি। সে গতিকাল ডিভানে ঘুমিয়েছিল এবং ঘুম থেকে জাগ্রত হয়ে নিজেকে ডিভানেই পেয়েছে৷ আজও সেইম। বেডেই আছে সে। তবে কী তার স্লিপওয়াক ইমান থাকলেই কার্যকর? নিউইয়র্কের বুকে যে সামান্যটুকু রোদ, উষ্ণতা ছিল তাও ক্ষণে ক্ষণে বিলীন হয়ে যাচ্ছে৷ ধীরে ধীরে শীত নেমে পড়ছে। মিরা কোনদিন তুষারপাত দেখেনি৷ এবার তুষারপাত হলে কী দেখতে পারবে সে?

সে দ্রুত পদে পা ফেলে বারান্দায় গেল। তাদের বাসার সামনের গ্যারেজে কালো গাড়িটা কভার দিয়ে ঢাকা। ইমানের গাড়ি এটা। সে নেই আজ সাতদিন হতে চলল। মিরা ভেবেছিল দু-তিন দিনের মধ্যে ব্যাক করবে৷ কিন্তু আজ সপ্তম দিন৷ ইমানের কোন খবর নেই৷ ফোনও করেনি আর৷ কাউকে জিজ্ঞেস করতে তার ভারী অস্বস্তি হয়৷ সাদ ক’দিন ধরে বেশ ব্যস্ত৷ ভার্সিটির এসাইনমেন্ট দিয়েছে৷ সে গাল ফুলালো। কীজন্য এতো অভিমান হচ্ছে তার? কার উপর মিথ্যা মিথ্যা অভিমান করছে সে? যে ব্যক্তির উপর অভিমান করছে সে কী আদৌও অভিমান বুঝে? ওর নিশ্চয়ই মিরার ঠুনকো অভিমানে কিচ্ছু যায়-আসে না৷

মিরা রুম ছেড়ে নিচে গেল। যথারীতি হাসনাহেনা নাস্তা বানাতে ব্যস্ত। উন্নত দেশেও যে হাসনাহেনা একদম পাক্কা গৃহিনী রুপে সেবা দিচ্ছে এটা দেখে ভারী অবাক লাগে। উনি দারুণ স্মার্ট। তবুও কেন জব করে না কে জানে? মিরা অবশ্য মাইনরোড সংলগ্ন একটা কফিশপে কাজ পেয়েছে৷ পার্ট টাইম জব। একদিন কাজও করেছে। তার ভালোই লেগেছে। তবে কথা বলার সময় সামান্য অসুবিধা হচ্ছে। তার একসেন্ট ভালো না। যার জন্য আমেরিকানদের তার ইংলিশ শুনে বুঝতে সামান্য কষ্ট হয়েছে৷

ব্লান্ডারের শব্দে তার ঘোর কাটে। তরমুজের জুস করা হচ্ছে। হাসনাহেনা তাকে দেখে বলে, ” টেস্ট করে দেখো তো সুগার লাগবে কীনা?”

মিরা এগিয়ে এসে চেকে দেখল। “একদম পারফেক্ট” বলে উঠে সে৷

আন্টি বলল,” তোমার আংকেলের সাথে কথা হলো। ওনার আসতে আরো তিনদিন লাগবে৷ ইমানের আব্বুর কথা বলছি৷”

–” আচ্ছা৷”

তার খুব বলতে ইচ্ছা করল, ইমান কবে ফিরবে এ সম্পর্কে তিনি কিছু জানেন কীনা৷ কোন এক কারণে বলতে পারল না। কথাগুলো গলায় দলা পাকিয়ে আটকে গেল৷

হাসনাহেনা বলে উঠে, “আজকে লাঞ্চে স্পেশাল ডিশ করব৷ তোমার সাহায্যে লাগবে। তুমি কী থাকবে? ”

–” জি থাকব, আন্টি। কিন্তু স্পেশাল ডিশ কেন?কেউ আসছে?”

–” সাদের খালামনি আসবে।”

মিরা অপ্রতিভ বনে গেল। এরপর হাসনাহেনা জুস জগে ঢালতে ঢালতে বলে,” আজকে সাটার ডে না?”

–” হ্যাঁ।”

–” ইমানেরও আজকে আসার কথা। এতোক্ষণে রওমা দিয়েছে মনে হয়।”

কথাটা শোনামাত্র মিরার চোখ জ্বলজ্বল করে উঠে৷ অপ্রতিভ ভাব মুছে সপ্রতিভভাব চোখে-মুখে ফুটে উঠে। এমন কিছু শোনার জন্য সে তীর্থের কাক হয়েছিল। তার কেমন আনন্দ-আনন্দ ভাব হচ্ছে৷ কিন্তু কেন? উফফ!

সে তরমুজের জুস নিয়ে সোফায় বসল। এবং মোবাইল অন করল। আশ্চর্য ইরাকে এখনো এক্টিভ দেখাচ্ছে। বাংলাদেশ এখনো রাত। মেয়েটার এক মাস বাদে বোর্ড এক্সাম আর সে ফেসবুক চালায়৷ ওহ ভালো কথা হলো আচমকা ইরা তার সিদ্ধান্ত বদলে ফেলেছে। এক্সাম না দেওয়ার ভুত তার ঘাড় থেকে সরেছে। সে নাকি এক মাস খুব পড়বে৷ এরপর এবছর এক্সাম দিয়ে পাশ করবে৷ এ সিদ্ধান্তে মিরা খুব খুশি। কিন্তু কী এমন হলো যে ইরা নিজের ডিসিশন চেঞ্জ করল। করেছে ভালো হয়েছে। ভাগ্যিস সময় থাকতে মেয়েটার টনক নড়েছে৷ মায়ের সঙ্গেও কথা হয়েছে। ডাক্তার কিছু মেডিসিন দিয়েছে। মেডিসিন রেগুলার নেওয়ায় সে বলতে গেলে সুস্থ এখন৷ সে ধীরে ধীরে নিউইয়র্কের লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। সামনের রোডের একটা মেয়ের সঙ্গে তার পরিচয়ও হয়েছে৷ মুসকান নাম৷ ইন্ডিয়ার লখনৌ থেকে এসেছে সে। তিনজন মিলে থাকে। ভারী মিষ্টি মেয়েটা৷ তার সঙ্গে সে কাল শপিং এ গিয়েছিল। এ বাসার সবার জন্য গিফট কিনেছে। ইমানের জন্যও কিনেছে৷ এবং ওর ক্রেডিট কার্ডের অনেকটা খরচ করে ফেলেছে এক প্রকার জেদ করে৷

সকাল গড়িয়ে দুপুর হতেই আন্টির ব্যস্ততা বেড়ে গেল। সাত-আট পদের রান্না করতে গিয়ে বেচারি হিমশিম খাচ্ছে। ইন্ডিয়ান তিনটা ডিশ করেছে৷ ইডলি, হারিয়ালি কাবাব, রেশমি কাবাব করেছেন৷ পাউ ভাজি বলে একটা নতুন আইটেম দেখল মিরা। বানানো খুব সহজ। নাকী আন্টি এক্সপার্ট বুঝতে পারছে না সে। আরোও একটা বিষয় হলো, আন্টি প্রচুর ইন্ডিয়ান ডিশ রান্না করেন। আর তার হাতের ইন্ডিয়ান ডিশ গুলোও খুব দারুণ হয়৷ এসবের পাশাপাশি পিজ্জা আর প্যানকেক করা হচ্ছে। সাদের কাজিন নাকি জন্ম থেকেই আমেরিকায় থাকে৷ ও মশলা খেতে পারে না৷ ইন্ডিয়ান বা দেশী ফুড ওর পছন্দ না৷ ওর জন্য আলাদা করে এসব করছে৷ মিরাও হাত লাগালো কাজে৷

দুপুরে মেহমানরা আসল। মাত্র দুজন। সাদের খালা আর ওর কাজিন৷ ওর কাজিনের চেহারায় বিদেশি বিদেশি ভাব আছে। দুপুর থেকে মিরার মধ্যে চাঞ্চল্য ভাব ফুটে উঠে। অস্থিরতা বিরাজমান মনের মধ্যিখানে। সবাই সঙ্গে লাঞ্চ করল। কিন্তু সে ঠিকমতো কিছু খেতে পারল না৷

একসময় আন্টি বলে উঠে, ” তোমার কী রান্না পছন্দ হয়নি?”

মিরা ভ্যাবাচেকা খেয়ে বলে, ” খুব মজা হয়েছে তো আন্টি।

–” ঠিকমতো খাচ্ছো না কেন তাহলে? আরো একটু রাইস নাও?”

— “না৷ না আন্টি পেট ভরে গেছে”

— “কিছুই তো খেলে না! ”

সে দ্রুত খাবার শেষ করে উঠে পরে৷ এরপর আন্টি তার বোনকে নিয়ে নিজের রুমে গেল। এবং হলরুমে তারা তিনজন বসল। হলরুম থেকে মিরা বহুবার সদর দরজার দিকে তাকিয়েছে। আনমনে, মনের অজান্তেই কারো অপেক্ষায় আছে সে। সাদ আর ওর কাজিন লিমন একসঙ্গে আড্ডা দিচ্ছে। বেশ জমেছে তাদের গসিপ। সাদ ওর ব্রেক আপের গল্প শুনালো৷ তবে মিরা খেয়াল করে লিমন কিছুক্ষণ পর পর তাকে দেখছে৷ বিষয়টা অস্বস্তিকর৷ বিকেল পাঁচটায় কফি খেতে খেতে সাদ মুভি ছাড়ল একটা৷ হলিউড একশন মুভি৷ আধঘন্টা মুভি দেখল মিরা। এরপর টিভির স্ক্রিনে রোমান্টিক সীন আসল। এতে আরেকদফা লজ্জা পায় সে। এখান থেকে উঠে চলে যেতে ইচ্ছা করছে৷ এমন সময় মেইন গেইট খুলে গেল। মিরার চোখ সবার আগে সেদিকে গেল। কালো শার্ট ইন করা কাউকে ঢুকতে দেখল। তার অবয়ব দেখে সে মুহুর্তের মধ্যে চিনে ফেলে৷ কাঙ্ক্ষিত চেহারাটা দেখলেই তার ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে।

ইমান দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করতেই সবার আগে মিরাকে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখল। এই সামান্য কারণে তার মন ভালো হয়ে গেল। জার্নি করে আসা ক্লান্তিরা ঘরছাড়া হলো। সে ভাব নিল যেন মিরাকে দেখেনি৷ মিরা উঠে দাঁড়ালো৷ নিশ্চয়ই তার কাছে আসবে৷ কথা বলবে৷ এক সপ্তাহ ছিল না সে৷ তাদের মধ্যে একটা কথা অব্দি হয়নি৷ আসুক। কথা বলুক তার সঙ্গে। কেমন আছো জিজ্ঞেস করলে সরাসরি বলবে মাথা ব্যথা৷ মাথা টিপে দাও৷

কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে মিরা কিচেনে গিয়ে সাদকে জিজ্ঞেস করে, “পপকর্ণ খাবে?”

সাদ বলে, “ইয়েস, ইয়েস।”

ইমানের চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। পপকর্ণ খাবে তারা! বাহ! ভালোই।

সাদ তাকে দেখে উল্লাসের সঙ্গে বলে, ” ব্রাদার নাইস টু মিট ইউ।”

ইমান কথা না বাড়িয়ে দোতলায় উঠে যায়৷ অসহ্য! সবকিছুই অসহ্য লাগছে তার৷

মিরা পপকর্ণ ভেযে আনে। লিমন আর তার মা একটু পর বিদায় নেয়৷

মিরা সাদকে বলে, ” আরো একটা মুভি দেখি সাদ৷ ”

–” আরেকটা?”

–” হ্যাঁ। কোন সমস্যা? ”

–” মুভি না দেখে চল ফ্রেন্ডস দেখি৷ মাই ফেভারিট। ”

–” ফ্রেন্ডস? আমি দেখিনি এটা।”

–” একবার দেখো ফ্যান হয়ে যাবে৷ আমি তো র‍্যাচেলের মতো গার্লফ্রেন্ড আর মনিকার মতো ওয়াইফ চাই৷”

মিরা শব্দ করে হাসল। এরপর টিভি দেখায় মনোযোগ দিল। ঘন্টা খানেক অতিক্রম হওয়ার পর ইমান নিচে নেমে এসে সাদকে ধমকে বলে, “পড়াশোনা নাই তোর? কখন থেকে টিভি দেখছিস? এগুলো স্টুডেন্টের নমুনা?”

সাদ হা হয়ে যায়। ভাইয়ার আবার কী হলো?

ইমান বলে, ” তোর চার্জারটা এনে দে৷ আমারটা কাজ করছে না৷”

সাদ উঠে তার রুমে গেলে ইমান দ্রুত হাসনাহেনার রুমের দরজা লক করে দিল৷ এরপর এক সেকেন্ডের মধ্যে মিরাকে সোফা থেকে কোলে তুলে দোতলায় উঠতে লাগে৷ মিরা হতভম্ব হয়ে চিৎকার করতে ভুলে গেল৷

দোতলায় আসতেই মিরা বলে, ” আপনি কী পাগল? আমাকে এভাবে কি*ডন্যা*প করে আনলেন কেন?”

ইমান তাকে বেডে বসিয়ে বলে, ” ফর ইউর কাইড ইনফরমেশন আমি তোমাকে কি*ডন্যা*প না৷ মহিলান্যাপ করেছি। ইউ আর নট এ কিড এনিমোর।”

মিরা চোখ ছোট করে বলে, “ইগনোর সহ্য হয় না?”

— “না হয় না। যাও আমার জন্য পপকর্ণ ভেজে আনো। গো।”

–” পারব না।”

ইমান মুখ ভোতা করে। মিরা কিছু মনে করার ভঙ্গিতে বলে, “আপনার জন্য গিফট এনেছি।”

–” গিফট? ফর এনি ওকেশন?”

–” না। এমনি।”

–” মিস করছিলে নাকি?”

–” মিস না ছাই করছিলাম। সবার জন্য এনেছি।”

বলে গিফট বক্স এনে তার সামনে রাখতেই ইমান খুশিমনে বক্স খুলে এবং সঙ্গে সঙ্গে তার হাসির অস্তিত্ব নাই হয়ে গেল৷ গিফট বক্সে একটা খেলনা সবুজ রঙের ব্যাঙ। সে নেড়েচেড়ে দেখল। ব্যাঙের গায়ে চাপ লাগায় হুট করে ওটার পেট থেকে লাল বাতি জ্বলে উঠে এবং গায়েবী আওয়াজে বলে উঠে, ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাং এ বি সি ডি ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাং।

ইমান হচকচিয়ে যায়। তার ফেস রিয়্যাকশন দেখে মিরা হাসতে হাসতে শেষ।

–” গিফট পছন্দ হলো?”

স্পষ্ট মজা নেওয়া হচ্ছে। ইমান দাঁতে দাঁত চেপে বলে, “খুব্বব। তুমি অনেক দূর অব্দি ভাবো৷ এখনই বাবুর জন্য খেলনা এনে রেখেছো। আমি যত্ন করে রাখছি। ফার্স্ট টয় ফর মাই বেবি আফটার ওল।”

মিরার মনে আচমকা এক দলা লজ্জা এসে হানা দিল। এই ছেলেটা এতো ইতর কেন? কাউকে লজ্জা দিতে তার জুড়ে নেই৷

ইমান বিজয়ে হাসি হেসে আবারো ব্যাটারি অন করে। ব্যাঙটা পুনরায় বলে উঠে,

ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাং এ বি সি ডি ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাং।

চলবে৷