অতিরিক্ত চেয়েছি পূর্ণতায় পর্ব-০৭

0
301

#অতিরিক্ত_চেয়েছি_পূর্ণতায়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৭

‘আপনি ইশিতার ভাই রাইট!’
‘কোনো নোংরা মেয়ের ভাই আমি নয়। আর আপনার কাছেও অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে ক্ষমা চাইছি বোনের করা অপকর্মের জন্য।’
কথার প্রেক্ষিতে চুপ থাকল রাফিয়া। ইশিতার ভাইকে বিয়ের দিন দেখেছিল সে। বিধেয় প্রথম প্রশ্নটি ইশিতার ভাই হিসেবে বলে ফেলল। রাফিয়ার নিশ্চুপ গম্ভীরতা দেখে ছেলেটি স্বেচ্ছায় গলা ঝেড়ে বলে,

‘বাই দ্যা ওয়ে আমি ইশরাক ফার্মেসী ডিপার্টমেন্টের ফোর্থ সেমিস্টার স্টুডেন্ট আপনি !’

‘রাফিয়া ইকোনমিক এন্ড ব্যাংকিং ডিপার্টমেন্টের সেকেন্ড সেমিস্টার স্টুডেন্ট। বাট আপনি আমাকে চিনলেন কেমনে!’

‘বিয়ের দিন আপনার উপর যে প্রেসার এন্ড ব্লেম ক্রিয়েট হয়ে ছিল। তা দেখে ছিলাম আমি।’

ইশরাকের কথা শুনে চমকে গেলেও মুখ ফিরিয়ে নেয় রাফিয়া। পূর্বের কথা সম্পর্কে সে ভাবতে অবাধ্য। তার চেহারার মলিনতা দেখে আন্দাজ করে ফেলল সে মনখারাপের দিকটি। বিধেয় আপসোসের স্বরে বলে,’সরি ইফ ইউ মাইন্ড ইন মাই ওয়ার্ড’স…।’

‘ইটস ওকে। আমি পাস্ট ভাবতে চাই না এবং ভুলেও গেছি। তাই আপনি বলুন যা বলার আছে!’

‘বাই দ্যা ওয়ে একই ভার্সিটির মধ্যে আমরা আছি। অপরিচিতের মত থাকলে দ্যাটস নোট লাইক এ গুড রিলেটিভনেস। সো বি ফ্রেন্ডলী। উই আর সেইম ভার্সিটি স্টুডেন্টস।’

বিনিময়ে রাফিয়া সূক্ষ্ণ হাসি দিয়ে চলে যেতে নিলে ‘শুনেন’ বলে পথ আঁটকে দাঁড় করায় তাকে ইশরাক। তার কথা শুনে কদম থামায় বিরক্তির সহিত রাফিয়া মুখ ভার করে পিছে মোড়ে। ইশরাক চওড়া হেসে বলে,

‘এখন থেকে আমরা যখন তখন দেখা করতে পারব!’

ইশরাকের কথা শুনে রাফিয়া বিরক্তির আক্ষেপে বিড়বিড় করে বলে, ‘দেখা যেন আর নাই হয়।’
‘আপনি কিছু বলছেন!’
‘নো হোয়াট ক্যান আই সেয়ে!’
‘ওহ চলেন একসাথে ক্যাফটেরিয়ায় বসি। অবশ্য এখানে রেস্টুরেন্ট নেই যে গোলাপের সহিত ফাস্ট ডে মিটলাইন বলে নিয়ে যাব। সো প্লিজ ম্যাডাম সিনিয়রের সঙ্গে ওয়ান কাপ কফি।’

মন না চেয়েও ভদ্রতার কাতিরে জোরপূর্বক যেতে রাজি নয় রাফিয়া। ক্যাফটেরিয়ায় এসে আহাম্মক বনে গেল সে। ইশরাকের বন্ধুবান্ধবগণ এক টেবিলে জোড় হয়ে বসে আছে। জোড়মিশ্রিত জনগণের মাঝে রাফিয়া যেন ক্ষুদ্র এক পিঁপড়ে হয়ে এলো। গলা খাকড়ি দিয়ে ইশরাককে বলে,

‘আমার যাওয়া উচিৎ। আপনি আড্ডা দিন।’

রাফিয়া উত্তরের অপেক্ষা না করে চলে যেতে নিলে ইশরাক তার বন্ধুগণকে বলে,
‘এ রাফিয়া হলো আমাদের জুনিয়র ব্যাচের স্টুডেন্ট। তোরা তাকে হেল্প করিস।’

ছেলেমেয়ে বন্ধুবান্ধব রাফিয়ার সামনে এসে জোড় হয়ে দাঁড়িয়ে কুশল আদায় করতে ব্যস্ত হলো। সে বেচারী অভদ্রতাও দেখাতে পারছে না। তবে কোনো এক দিক থেকে তার ভালো লাগছে ! এতদিন ভার্সিটিতে নিঃসঙ্গ হয়ে থাকায় তার মনটাও নিরাশার ভোগান্তি হচ্ছিল। সঙ্গ পেয়ে সেও তৃপ্তি অনুভব করছে।

_____

নাবিল থানার আনাচেকানাচে উজার করে ইফতিয়াসের ফাইল খোঁজচ্ছে। তার কেবিনের বাহিরে কনস্টেবলগণ ঢোক গিলছে ভেতরে ঢুকতে। কারণ তান্ডব ঘটে গিয়েছে। ইশিতা অযুহাতের বিনিময়ে ইফতিয়াসকে নিয়ে থানা থেকে পালিয়েছে। ইশিতার দুঃসাহসিক কাজের কথা শুনে হতভম্ব হলো নাবিল। তন্নতন্ন করে তার কেবিনের মধ্যে ইফতিয়াসের উপর পড়া কড়া চার্জের ফাইলটি খুঁজছে। কিন্তু পাচ্ছে না। একনাগাড়ে তার দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যদি এর খবর তার বন্ধু রুজহানের কান অব্দি যায়। তবে এক বুলেটে তার বুক ঝাঁজরা করে দেবে। কনস্টেবলকে উচ্চস্বরে আওয়াজ দিয়ে ডাক লাগায়। ফলস্বরুপ সেই কনস্টেবল ভীত মনে দোয়ার সহিত ভেতরে এলো। যে ইশিতার কথায় জেল আসামীকে দেখা করার সুযোগ দিয়েছে। নাবিল চোখ গরম করে হাঁপাতে থেকে বলল।

‘শু’য়ো* লেজ ইফতিয়াস পালাইছে কেমনে! আর তোরাও একেকটা বলদ। মেয়ের ইমোশনাল কথায় তার নাগরের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দিয়েছিস বলদ কোথাকার!’

কনস্টেবল কাঁপা কাঁপা গলায় পূর্বের ঘটনা বলতে লাগল।

‘শুনেন স্যার প্লিজ আমার স্বামীর সঙ্গে একটু দেখা করার সুযোগ দিন। কিছুই করব না। শুধু কথা বলে বেরিয়ে যাব।’

‘না না ম্যাডাম। আসামীর সঙ্গে দেখা করতে স্পেশালি স্যারের অনুমতি লাগবে। স্যারের মুখের সাক্ষ ও আদেশ বিহীন আপনাকে দেখা করতে সুযোগ দেওয়া সম্ভব নয়।’

ইশিতার করুণ দশা উত্তেজনায় পরিণত হলো। ধপ করে কনস্টেবলের টেবিলের সামনে থাকা চেয়ারে বসে পড়ে। পেট চেপে ধরে কেঁদে উঠে। কনস্টেবল আসামীর স্ত্রীর কান্না দেখে হকচকিয়ে গেল। তিনি আশপাশে থাকা বাকি কনস্টেবলদের দৃষ্টিকোণ দেখে চুপসে যায়। ইশিতাকে শান্ত্বনার কণ্ঠে বলে,

‘আপ আপনি কেনো বুঝছেন না ম্যাডাম! স্যারের অনুমতি ছাড়া আপনাকে দেখা করতে দেওয়া যাবে না।’

‘তবে আপনার স্যারকেই কল দেন। বলেন আমি দেখা করব।’

‘সরি ম্যাডাম তাও পারা যাবে না। কারণ স্যার থানা থেকে বের হওয়ার সময় আদেশ দিয়ে গেছেন যে, পাঁচঘণ্টার আগে যেন কেউ উনাকে ডিস্টার্ব না করে। আইম রিয়ালী সরি ম্যাডাম।’

কনস্টেবলের কথায় আস্কারা পেয়ে ইশিতা আরো জোরে কাঁদতে থাকে। বিপাকে পড়ল কনস্টেবল। তিনি সকলের উজবুক দৃষ্টিও সইতে পারছে না। অন্যত্রে ইশিতা কান্নার মাঝে আড়চোখে কনস্টেবলের দোটানার চেহারা দেখে মনে ভাবে। ‘ডোজ কাজে লাগতেছে!’ ফলে সেও তার কান্না ক্রমান্বয়ে বাড়াতে লাগে। ফুঁপানো কণ্ঠে বলে,

‘আপনি এক গর্ভবতী মহিলাকে বারণ করছেন তার সন্তানের খবর পিতার কাছে পৌঁছাতে। আপনি কি মানুষ! আপনার নিজের সংসার আছে আঙ্কেল সেটাও একবার ভেবে দেখুন। আমার জায়গায় আপনি হলে কি করতেন! আমার কথা বাদই দেন আমার গর্ভে বেড়ে থাকা সন্তানের কথা ভেবে হলেও একবার দেখা করার সুযোগ দেন প্লিজ।’

টেবিলে মাথা রেখে কান্নার স্বর ভারি করতে লাগে ইশিতা। কনস্টেবল আবেগে গলে যায়। তার মনগহীনের দৃশ্যপটে তার সংসারের মায়াপড়ানের টান অনুভূত হয়। চোখের সুপ্ত জল মুছে সটান কণ্ঠে বলে,

‘শুনো মামুনি তোমাকে বিশমিনিট সময় দেব। এর মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যকার কথা আলাপ করে বেরিয়ে যাবেন।’

ইশিতা উৎফুল্ল হয়ে কনস্টেবলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশক গলায় বলে,

‘অনেক ধন্যবাদ আঙ্কেল প্লিজ তাড়াতাড়ি চলুন। আমার স্বামীকে তার পিতা হওয়ার সুখবরটা দিতে ছটপট সহ্য হচ্ছে না।’

কনস্টেবল এসে ইফতিয়াসের সঙ্গে কথা বলতে দিয়ে চলে যায়। ঠিক বিশমিনিট হলে সে নিজ দায়িত্বে ভেতরে গিয়ে চমকে গেল। আসামী ইফতিয়াসের কোনো চিহ্নই নেই জেলের মাঝে। ইফতিয়াস একটি চিরকুট পেলে গেছে। যেখানে লিখা ‘আইম লিভিং হাহা।’
এটুকু দুঃসাধ্য কথা লিখে স্বামী-স্ত্রী পালিয়েছে। কনস্টেবল তার কথার সমাপ্তি ঘটালে নাবিল চেঁচিয়ে বলে,

‘ইউ ফুল ইশিতা প্রেগন্যান্ট হবে কেমনে! বে’য়াদব মহিলার সঙ্গে মেলামেশা থাকলেও তাদের বেবি হওয়ার মত প্রসেসিং তারা নেইনি। জম্মবিরতিকরণ নিশ্চয় ইউজ করে ছিল। তোকে ফুল বানিয়ে আমার মুখের উপর এই ফুললেস চিরকুট মে’রে চলে গেল।’

অফিসারের বকনিতে কনস্টেবলের মনটা নিমিত্তে বিষিয়ে গেল। মাথানত করে কান্না ধরে রাখার চেষ্টা করে তিনি। এতবছর ধরে এ থানায় কনস্টেবলের কাজ করে এসেছে। তবুও কোনো অভিযোগের মধ্যে ফেলেনি তার বড় অফিসারকে। অন্যসময় অভিযোগের মাত্রা শূন্য হলে আজ তিনি অভিযোগের সীমাই পেড়িয়ে দিল। নাবিল মাথায় হাত ধরে বসে রইল। পরক্ষণে নাক টানার শব্দে সে মুখ তুলে তাকায়। কনস্টেবলের চোখের পানি দেখে তার নিজের মধ্যে খারাপ লাগা অনুভূত হলো। মনে মনে নিজেকে ঝাড়ি দেয়। কনস্টেবলের কাঁধে হাত রেখে বলে,

‘শুনেন আঙ্কেল ক্ষমা করে দেবেন। রাগের মাথায় তুই-তোকারি করে ফেলেছি। আমার মোটেও আপনার সঙ্গে বে’য়াদবী করার ইচ্ছে ছিল না। আপনি বয়সে আমার সিনিয়র। কাজের পদে সবসময় আবেগী জিনিসটা আনবেন না। কঠোরটা থাকতেই হবে। আপনি সন্দেহের বশে যাচাই বাছাই না করেই আসামীর জন্য উপকার করবেন তা তো অভিযোগের মাঝে আপনার চাকরী বরখাস্ত করে দিতেও বাধ্য। এখন যাই হলো বাদ দিন। চলেন খোঁজ লাগায়। নাহলে উপরের পদ থেকে নোটিশ আসবে। এতে আপনারই সমস্যা হবে। আন্টিও আমার জ’ল্লা’দী বউয়ের মত দা নিয়ে মা’রার অপেক্ষায় থাকবে।’

ফিক করে হেসে দেয় কনস্টেবল। সে বুঝে গিয়েছে তার দায়িত্ব। সুতরাং ফুরফুরে মনে তার স্যারের কেবিন থেকে প্রস্থান করে। অথচ নাবিল দুশ্চিন্তায় ভাবান্তর হলো স্বামী-স্ত্রী দুজন কোথায় যেতে পারে!

____

ইশিতা গাড়ির মধ্যে ইফতিয়াসের হাত ধরে নিশ্চুপ বসে আছে। অন্যক্ষেত্রে সে শান্ত নয়নে জানালার বাহিরে চেয়ে আছে। জেল থেকে মুক্ত হওয়ার পর থেকে একবিন্দু পরিমাণ কথা অব্দি মুখে আনেনি মানুষটা! ইশিতার গোয়েন্দা লোকটি গাড়ি চালাচ্ছে। তারা শহর থেকে বের হওয়ার পথে। ইফতিয়াসের দিকে চেয়ে ইশিতা ভাবনাত ডুব দেয়।

কনস্টেবলকে বোকা বানিয়ে ইশিতা মনে মনে আওড়ায়।
‘ইফতিকে জেলবন্দি দেখে সহ্য হচ্ছে না আমার। আজ ভালো হলো অফিসার নাবিল বা রাফিয়া কেউই থানায় নেই। খোঁজ নিয়ে জেনে রাখছিলাম বলেই সুযোগ পাচ্ছি। খোদা জানে আর কবে সুবর্ণ সুযোগ পেতাম। যাই হোক টাকা তো গেল প্রচুর। নাবিলের পিছে গোয়েন্দা লাগিয়ে তার বের হবার খবর পেয়েই চলে আসছি। সেও তার কোনো এক গেস্টহাউজে গেছে রেস্ট করতে। জলদি আসা সম্ভব হবে না তার পক্ষে। এতক্ষণে আমার কাজ শেষ হয়ে যাবে।’
ভেবেই চোখের মিথ্যা কান্না হাতের তর্জনী আঙুল দিয়ে মুছে ফুঁ দিয়ে ফেলে দেয়। কনস্টেবলের পথ অনুসরণ করে ইফতিয়াসের জেলের কাছে এলো। ইফতিয়াস মাথা গুজে গম্ভীর ভাব নিয়ে হাটুমোড়ে ছিল। কারো পায়ের শব্দ পেয়ে চোখ খুলে তাকায়। বিবাহিত স্ত্রী ইশিতাকে দেখে সে গম্ভীর ভাবনার রেশ ধরে দাঁড়িয়ে যায়। কনস্টেবল এসে ইফতিয়াসকে বলে,

‘শুন তোর বউ আসছে কথা বলবে তোর সাথে। বিশমিনিট সময় কথা বলে নেহ।’

কনস্টেবল নিজের কথা শেষ করে চলে যায়। ইশিতাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে নিতে লাগল ইফতিয়াস। তবে তার এক কথা শুনে থমকে যায়।
‘পালিয়ে যাবে আমার সাথে! আপনাকে বের করার ফুলফিল প্ল্যানিং করে এসেছি।’

কথাগুলো সহজ হলেও এর পরিধি যেন উম্মাদ করে দেয় ইফতিয়াসকে। চোখ লালবর্ণ করে ইশিতার হাত ধরে কয়েক চুমু খেয়ে বলে,

‘সুযোগ করে দাও বউ। বের হয়ে প্রতিশোধ নেব।’

কথাটা যেন ইশিতার হৃদয়ের উৎফুল্লতা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ঠ। সে ইফতিয়াসের গালে সূক্ষ্ম হাতের ছোঁয়া দিয়ে বলে,
‘আপনাকে নিয়ে যেতেই এসেছি আমি। আপনাকে দপ্তরির পোশাক দেব সেটা পরে সোজা বাহিরে গিয়ে সাদা গাড়ির সামনে দাঁড়াবেন। ওইটায় আমার গোয়ান্দা লোক বসে আছে। আপনাকে দেখে ডাক দিলে ভেতরে ঢুকে যাইয়েন।’

জেলের মধ্যে বোকা কনস্টেবল ছাড়া অন্য কেউ না হওয়ায় ইশিতা নকল চাবি দিয়ে তালা খুলে ইফতিয়াসকে দপ্তরির পোশাক দেয়। সে পোশাক পরে ইশিতার আগে কনস্টেবলের সামনে দিয়ে চলে যায়। তিনি দেখেও বুঝতে পারল না যে দপ্তরির পোশাকে থাকা পুরুষটি জেল আসামী ইফতিয়াস। কনস্টেবল দপ্তরিকে দেখে বুঝল এই সে দপ্তরি যে ভেতরে গিয়ে ছিল জেলবন্দিকে খাবার দিতে। সেই বেরিয়ে গেল। ফলে গুরুত্ব দেয়নি তিনি। ইশিতা বিশমিনিট পর নিজেই বের হলো। কনস্টেবল দেখে মুচকি হাসি দেয়। বিনিময়ে ইশিতা বাঁকা হাসি দিয়ে বেরিয়ে পড়ে।
ইফতিয়াস ইশিতার কথা অনুযায়ী সাদা গাড়িতে বসে অপেক্ষা করে স্ত্রীর। সে এলে গাড়ি চালু করে ভাড়াটে গোয়েন্দাটা।
ভাবনার পরিচ্ছেদ ঘটিয়ে ইশিতা ঘুমানোর চেষ্টা করে গাড়ির সিটে মাথা হেলিয়ে দিয়ে। কেননা প্ল্যানিং করাটাও সহজ ছিল না তার পক্ষে। নকল চাবি বানাতে দেওয়া, দপ্তরির পোশাকের ব্যবস্থা, আসল দপ্তরিকে অজ্ঞান করে তার স্থানে ইফতিয়াসের পালানোর ব্যবস্থা করে দেওয়া ছিল জটিল বিষয়। অতএব রেস্ট প্রয়োজন তার মস্তিষ্কের। সুপ্ত ছায়ায় তার পাশে আছেই তো স্বামী হিসেবে ইফতিয়াস।
অন্যথায় ইফতিয়াস চলন্ত গাড়ির মধ্যে জানালার বাহিরে থাকিয়ে অনড় গলায় বিড়বিড় করে বলে,

‘শোধ আমি উঠাবই।’

চলবে….