অতিরিক্ত চেয়েছি পূর্ণতায় পর্ব-০৮

0
292

#অতিরিক্ত_চেয়েছি_পূর্ণতায়
#লেখিকা_তামান্না(আল রাইয়ান)
#পর্ব_০৮

‘দোস্ত ইফতিয়াস পালায় গেছে।’
কথাটা সংক্ষিপ্ত হলেও এর বিস্ফোরণ ঘটে রাফিয়ার মনপ্রান্তে। কষে পড়ে ফোনটা মেঝেতে। রুজহান হেলেদুলে লেপটপের ব্যাগ নিয়ে তার নিজের রুমে যাচ্ছিল। যখন ঠাস করে শব্দ হলো থেমে যায় সে। ভ্রু কুঁচকে পিছু ঘুরে রাফিয়ার রুমের দিকে তাকায়। রুম ভেতর থেকে বন্ধ। বিধেয় স্বেচ্ছায় গিয়ে দরজার মধ্যে কড়া নাড়ে রুজহান। দরজায় কড়া ঘাতের ফলে নড়চড়ে উঠল রাফিয়া। ঢোক গিলে দরজাটা খুলে দেয়। রুজহান রুমের মধ্যে ঢুকে রাফিয়া বিহীন অন্য কাউকে না দেখে মেঝেতে ভাঙ্গা ফোনের দিকে তার নজর পড়ল। তার পাশ কেটে ফোনটা হাতে নিয়ে গাড় নয়নে রাফিয়ার চিন্তাভরা মুখশ্রীর দিকে তিক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলে রুজহান। শান্ত কণ্ঠে প্রশ্ন করে।

‘কি নিয়ে চিন্তা করছিস !’

রাফিয়া ঘাবড়ে গেল রুজহানের প্রশ্নে। আমতা ভাব নিয়ে বলে,
‘এমনি আম্মু ও বোনের কথা ভাবছিলাম। কতদিন হলো তাদের দেখি নাহ্!’

রুজহানের বিশ্বাস হলো কিনা বুঝা গেল না তার মুখশ্রীতে। সে স্বাভাবিক, শান্ত দৃষ্টিতে চেয়ে আছে। তপ্ত শ্বাস নিয়ে রাফিয়ার ভাঙ্গা ফোনটি হাতে নিয়ে রুম থেকে চলে যেতে নিলে ভড়কে উঠে রাফিয়া। রুজহানের পথ আঁটকে দাঁড়ায় সে। রুজহান মনে মনে বাঁকা হেসে আবেদনীয় দৃষ্টিতে চেয়ে বলে,

‘তোমার স্থানে আমি থাকলে ব্যাপারটা অন্যরকম ছিল। তবে তুমি আমার স্থানে বাহ্ ইভটিজিং করবে বুঝি জান! কেমনে করবে লাভ ইউ বলবে, না চু….মু (গলার স্বর টেনে) খাবে, না রুম…।’

‘মি.অসভ্য আপনার হাতে থাকা ফোন দিয়ে চলে যান। এত অভদ্রমার্কা কথা তো ভাবতে হবে না।’

রুজহান চোখ ঘুরিয়ে বলে, ‘তো ফোন কি আমি না নিতে বলছি। নিতে পারলে নাও না হলে এটা আমার।’
রাফিয়া তার হাত থেকে ফোন ছুঁ মে’রে নিতে নিলে তৎক্ষণাৎ রুজহান সরে যায়। সে বেচারী ফোনটা তো পেল না বরং ফোনটা হারিয়ে ফেলল। দুঃখের চাইতে বেশি ভয়ের চটে থরথরে কাঁপুনি ধরে তার। সময় বিলম্ব না করে সে দৌড়ে রুজহানের রুমে গিয়ে ঠাসঠুস বারি দিতে থাকে। ঘরের আনাচেকানাচে এত জোরালো স্বর হওয়ায় দিবায়েত সাহেব হা করে রাফিয়ার দিকে চেয়ে রইল। আহাম্মকের মত সে ভয়ে রুজহানের দরজা ধাক্কাতে থাকে। কেননা ভীতিগ্রস্থ সে যদি কোনোভাবে তার রুজহান ভাই ফোনের মধ্যে নাবিলের কল রেকর্ডিং শুনে ফেলে তবে তান্ডব ঘটবে। ফলে সে দরজা ধাক্কানোতে এত ব্যস্ত যে পিছে তার ফুপা দাঁড়িয়ে আছে তাও জানতে অব্দি পারল না। দিবায়েত সাহেব ছেলের ও ছেলের হবু বউয়ের মধ্যকার ক্লেশ দ্বন্দ দেখে। পরিণয়ে ভাবে এই দ্বন্দ তারা নিজেরাই মিটে নিবে জানে। ফলে তিনি নিশ্চুপে বিদায় নেয়। দরজায় কড়া আঘাত শুনে ঠোঁটের কোণায় শয়তানি হাসি বজায় রাখে রুজহান। পরণে তার শুধু তোয়াল আছে। নিরবে দরজার ছিটকিনি খুলে রাফিয়ার ফোনসহ নিয়ে শাওয়ারে ঢুকে পড়ে। দরজার হ্যান্ডেল ঘুরাতেই উম্মুক্ত হলো রুজহান ভাইয়ের দরজা। যা দেখে হতদন্ত হয়ে রুমের মধ্যে তার ফোন খুঁজায় ব্যতিব্যস্ত হলো সে। শাওয়ারে শিষ বাজিয়ে আয়েশে শাওয়ার নিচ্ছে রুজহান।
অন্যত্রে রাফিয়া খুঁজতে খুঁজতে হয়রান প্রায়। তবুও নেতিয়ে পড়ল না। রুজহানের পুরু রুম তন্নতন্ন করে খুঁজতে উজার করে ফেলে। রুজহান নিজের কোমরে তোয়াল পেঁচিয়ে রেখে মাথা মুছতে থেকে ফোনটা তার কোমরের মধ্যে রেখে বের হলো। আকস্মিক দরজা খুলার শব্দে স্টাচু অর্থাৎ বেকুব বনে গেল রাফিয়া। জট করে সোফা থেকে দাঁড়িয়ে অর্ধনগ্ন রুজহান ভাইকে দেখে তার হৃদপিন্ড লজ্জার সহিত স্তদ্ধ হয়ে গেল। রুজহান আড়চোখে রাফিয়ার স্তদ্ধিত চেহারা দেখে মিটমিটিয়ে হাসে। কোনো রমণী রুমে আছে সে দিক পাত্তা না দিয়ে রুজহান কোমরের তোয়াল খুলতে নিলে চোখ ডিম্বাকৃতির হয়ে যায় রাফিয়ার। ভয়-লাজ লজ্জার ভীত্তিতে দিল এক আহামরী চিৎকার! রুজহান কানে হাত তুলো দিয়ে বলে,

‘কান পাকিয়ে কানপুরে পাঠিয়ে দিলে স্বামী পাবে না বউ!’

‘ইডিয়েট ননসেন্স আপনার বিবেক নেই এক মেয়ের সামনে এমন খোলামেলা আসতে। ছিঃ!’

রাফিয়ার মুখ ভেটকানো দেখে রুজহান ঠাট্টার স্বরে বলে, ‘খোলামখোল্লা বলেই হা করে চোখ দিয়ে গিলে খাচ্ছিস মহারাণী। আদব থাকলে মুখ ফিরিয়ে নিতি।’
নিজের বোকামিতে চুপছে যায় রাফিয়া। ঢোক গিলে বের হবার জন্য পা বাড়ালেই রুজহান তাকে ধরে দেওয়ালের সঙ্গে চেপে ধরে। অনুভূতির নমুনা প্রজাপতির ন্যায় উড়াল দিতে আরম্ভ হলো রাফিয়ার মনপ্রান্তে। আফিমের ন্যায় রুজহানের নেত্রপল্লবের দিকে কয়েক সেকেন্ডের বেশি চেয়ে তাকতে পারেনি সে। চোখ বুজে জোরসড়ো শ্বাস ছাড়ে। রুজহান কি ভেবে যেন রাফিয়াকে ছেড়ে দেয়। ফোনটা তার হাতে ধরিয়ে ঠুস করে বের করে ধড়াম করে দরজা বন্ধ করে দেয়। ইতিমধ্যে কি কান্ড ঘটল! আগাগোড়া রাফিয়ার মাথার উপর দিয়ে গেল যেনো! হা করে ভাঙ্গা ফোনের দিকে একবার চেয়ে দরজার দিকে তাকায়। মাথা চুলকে আনমনে বলে,
‘কি হলো এটা! ফোন পেলাম তবে বকশিশ পেলাম না।’

চিন্তিত মনেই সে চলে যায়। অথচ তার যাওয়ার কিঞ্চিৎ সময় পর রুজহান তড়িঘড়ি বেরিয়ে পড়ে। বাইকে বসে ফোনের মধ্যে নাবিলকে ইমাজেন্সি দেখা করতে বার্তা পাঠিয়ে দেয়।

____

মিসেস রহমানা পায়চারী করছে। নাহিরউদ্দীন সাহেবকে অন্য থানার পুলিশ অফিসার গ্রেফতার করতে এসেছে বাসায়। তিনি বহুবার নিজের বক্তব্য ব্যক্ত করার চেষ্টা করছে। তবুও অফিসার মানতে অবাধ্যতা প্রকাশ করে। মিসেস রহমানা ঠোঁট চেপে কান্না নিবারণের বৃথা প্রচেষ্টা করে। তথাপি নাহিরউদ্দীন সাহেবকে অফিসার হুমকিস্বরুপ বলে,

‘দেখুন আপনার ক্রিমিনাল ছেলে তার বউয়ের সঙ্গে পালিয়েছে। নিশ্চয় আপনি তাদের সহায়তা করেছেন। না হলে কেমনে এক চার্জফুল ক্রিমিনাল পলাতক হতে পারে। আপনাকে আমাদের সাথে থানায় যেতে হবে।’

‘অফিসার বিশ্বাস করুন আমার কোনো ধরনের হাত নেই। আর ছেলে সে অপরাধের আগে ছিল। অপরাধ করছে জানার পর থেকে তাকে ত্যাজ্য পুত্র করে দিয়েছি। তার সঙ্গে আমার কোনো ধরনের সম্পর্ক নেই।’

অফিসার ব্যঙ্গ হেসে দেয়। তার সঙ্গে থাকা কনস্টেবলকে ইশারা করে দেখিয়ে ব্যঙ্গত্ব কণ্ঠে আওড়ায়।

‘ঐ দেখ মিয়া সাহেব বলে কিছু করেনি। প্রথম প্রথম সব আসামীর আত্মীয় অস্বীকারই করে। ডান্ডার বা’রি খেলে ঠিকিই স্বীকার করতে বাধ্য হয়।’

নাহিরউদ্দীন সাহেব বোবার মত চেয়ে রইল। অফিসারের শেষের কথায় তার হৃদপিন্ড খন্ডবিখন্ড হয়ে পড়েছে। এক ছেলের কুকর্মের দ্বায়ে যে তিনি কি ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছে তা হারে হারে টের পাচ্ছে। এত বছর যে চোখ দিয়ে জল গড়ায়নি সেই চোখ দিয়ে টুপটুপ করে জল পড়ছে বৃদ্ধ মানুষটার। মিসেস রহমানা অসহায়,ভঙ্গুর মনের স্বামীর দিকে চেয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে দেয়। ছেলের কুকর্মের সাজা আল্লাহ দেবে বলে মেনে নেয়। অফিসারের কাছে ভিক্ষুক গলায় হাত পেতে বলে,

‘আমার স্বামী কিছু করেনি অফিসার। নালায়েক ছেলে মুখে কালি লুপে বউয়ের আঁচল ধরে পালিয়েছে। আমাদের দোষ দিয়েন না আল্লাহর দোহাই লাগি। সমাজে আমাদের মুখ নিম্নস্তরে কষে পড়বে অফিসার।’

অফিসারটি বেশ ভাব নিয়ে নাহিরউদ্দীনের বাহু ধরে মিসেস রহমানাকে বলে,

‘উদারচিত্ত আমি নয় আন্টি। আপনার স্বামীর দোষ না করলেও তিনি দোষী। কারণ তিনি যুবসমাজ নষ্টের মূলস্বরুপ এক ছেলেকে বড় করেছেন। আদবকায়দা খেয়েদেয়ে আপনাদের মাথানত করতে বাধ্য করেছে।’

মিসেস রহমানা গলা ফাটিয়ে কেঁদে দেয়। অফিসার কান্নার স্বর কানে না তুলে অবাধ্যের সত্ত্বেও টেনে নিয়ে যায় নাহিরউদ্দীন সাহেবকে। তিনি নির্বোধ দৃষ্টিতে ঝুঁকার মত হয়ে অফিসারের পথ অনুসরণে এগিয়ে যায়। মিসেস রহমানা পিছু ছুটে ছাড়া পাওয়ার আক্ষেপে। তবে সেই আক্ষেপ আক্ষেপই রয়ে গেল। বাসার গেইটের সামনে প্রতিবেশিরা হা হুতাশ,ঠাট্টা মশকারী করছে ইফতিয়াসের পরিবারের উপর। কিছু মহিলা যারা অন্যের অশান্ত সংসার দেখে মজা পায় তাদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠে।

‘হাহ্ আমার ছেলেকে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে পড়িয়েছি। আর কোথায় প্রাইভেট ভার্সিটির স্টুডেন্ট ছিল ইফতিয়াস। সেখানকার নোংরা ছেলের সঙ্গে মিশেই মেয়েদের নিয়ে তামাশা করা শিখেছে। মাও কেমন দেখেও অদেখা করল।’

মিসেস রহমানা নিশ্চুপ হয়ে বাসার ভেতর গিয়ে দরজা আঁটকে দেয়।

____

‘ডুড আইম সরি তোকে বলিনি এবার ছাড় প্লিজ! ঘাড় ব্যথা হয়ে যাচ্ছে আহ্হহ।’
রুজহান নাবিলের ঘাড় বাঁকা করে ধরে রেখেছে। তার অপরাধ সে ইফতিয়াসের পালানোর খবর তাকে দেয়নি। ঘোর অপরাধ করল বদ’মাইশটা! ঘাঁড় বাঁকা তো না যেন ঘাঁড় ধাক্কিয়ে লা’থ দেওয়া উচিৎ। নাবিলের বলা কথা শুনে রুজহান চোয়াল শক্ত করে নাবিলকে ছেড়ে তার কলার চেপে ধরে বলে,

‘তুই এত বড় বলদ কেমনে হলিরে ডুড! ইফতিয়াস পলাতক হয়ে এত ঘণ্টা হয়ে গেল। আমাকে বলছিস মাত্র। আমাকে কি তোর মনে ধরেনি নাকি অন্য কাউকে জায়গা দিয়ে বসে আছিস সেখানে!’

থতমত খেল নাবিল। বন্ধুর গে’মার্কা কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে নাক ছিটকান দিয়ে বলে,

‘ছিঃ তোকে কেন মনে ধরবে! বউয়ের সঙ্গে কি আর সাধেই বিয়ে করে প্রেম করছি হে। যে তোরে নিয়ে রাতারাতি।’

ঠাস করে মৃদু চ’ড় লাগায় নাবিলের গালে রুজহান। বেচারা মুখ কাঁদোর মত করে বলে,’সরি মুখ ফসকে বের হইছে।’
‘তোর বেহুদা কথা শুনার টাইম নেই। ইশিতার ডিটেলস বের কর। ওর ব্যাপারে না জানা অব্দি কিছু করতে পারব না। রাফিয়ার পরম শত্রু বলে কথা।’

‘ইশিতার সঙ্গে ভাবীর শত্রুতা তো তখন ছিল যখন ইফতিয়াস ভাবীকে পছন্দের ফাঁদ পেতে রিলেশনে গেছিল। ইশিতা আসার পর তো ভাবীর সঙ্গে ইফতিয়াসের সামঞ্জ্যতা বিনষ্ট হয়। বিয়ে করে মেয়েটা কি দমেনি ভাবীর ক্ষতি করতে!’

‘তেমনি মনে হচ্ছে রে ডুড! তোর ভাবীর সেদিনকার বেসমেন্টের দৃশ্য মনে হলেই রাগ দপদপ করে জ্বলে উঠে। তাকে ইচ্ছেকৃত বেসমেন্টে ফেলে দরজা আটঁকে চাবি গুম করে পালিয়ে ছিল কেউ। যে করেছে সে নিশ্চয় কারো কাছ থেকে সুপারি খেয়েছে। ঐদিন রাফিয়ার শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক ক্ষতি হতে পারতো। আল্লাহর রহমত তোর থানায় পালিত কুকুর পেয়ে ছিলাম। তার নাকে রাফিয়ার স্কার্ফের ঘ্রাণ শুকাতেই সে স্বেচ্ছায় দৌড় লাগায়। তার দৌড় দেখে আমি আশ্বস্ত হলাম এবার কোনো না কোনো ছুঁত পেয়ে যাবো। ঠিক ভাবনা সফল হলো। কুকুর রাফিয়ার পুরুনো ভার্সিটির পেছনের স্থানে গিয়ে একটা পুরুনো লোহার দরজা বা’রি দিয়ে ইশারা করে। আমি অনেক খুলার চেষ্টা করে। তাও খুলেনি। ব্যাপারটা এমন যে লোহার জিনিস পাথর বা সামান্য জিনিসে চটজলদি খুলে না। তাই তো ভার্সিটির স্টোর রুম থেকে ড্রিল মেশিন নিয়ে দরজাই গর্ত করে ভেঙ্গে দেয়। সমস্যা যদি সেখানেও থামতো তবে চিন্তামুক্ত হতাম। কিন্তু সমস্যা সেখানে থামেনি। মেডিক্যালে সেদিন ডাক্তারের ছন্দবেশে যে আসছিল সে নিশ্চিত কারো কথায় এসেছিল!’

‘তুই সিউর কেমনে!’

‘হাহ্ দেশের মানুষকে কি তুই কচুকলা ভাবছিস যে, সোজা থাকতে বললে সে সোজাই থাকবে! না রে ডুড ওদের সোজা থাকতে বললে তারা বাঁকা হয়ে বেঁকে যাবে।’

‘ডুড যদি কোনো ক্লু না পাই।’
‘তাহলে সোজা কাজি অফিস গিয়ে তোর ভাবীর ব্যবস্থা টাইড করে দেব। তোকে তো সাক্ষী স্বরুপ রাখবই। যেহেতু তুই বউয়ের জারি খাওয়ায় ওস্তাদ সেহেতু তোকে টিপসও দিয়ে দেব কেমনে বউ সামাল দিতে হয়।’

নাবিল রুজহানের খোঁচামার্কা কথা শুনে চোরা দৃষ্টিতে চোখ এপাশ ওপাশ দৃষ্টি বুলায়। সেও পাত্তাহীন বলে,

‘শোন ডিটেলস বের করে জানাবি। তার আগে একটু বউয়ের খোঁজ খবর নিয়ে আসি।’

শিষ বাজিয়ে প্রস্থান করতে নিলে ‘তুই কি হবু ভাবীকে পার্মানেন্ট ভাবী করে ফেলেছিস।’ পা থেমে যায় রুজহানের। ভাবান্তর দৃষ্টি ফেললেও সামনে কি হবে তা সেদিনই দেখা যাবে। মুখ না ঘুরিয়ে মৃদু হেসে বলে,’না এখনো করিনি কিন্তু করার পথে আছি।’
নাবিল শুনল কি শুনল না এর উপর ভিত্তি করে রুখে রইল না সে। স্টাইল করে হেঁটে বাইকে বসে শাঁ শাঁ করে নাবিলের পাশ কেটে চলে যায়। সে তাকিয়ে আহ্লাদীভরা নয়নে হেসে দেয়। তার বন্ধুর মনমাতানো প্রেমের বাহার! নাবিল নিজের জিপে উঠতে নিলে কনস্টেবলের কাছ থেকে ফোন এলো। সে রিসিভ করতেই শুনে।

‘স্যার আসামীর বউ তার ফোনের নাম্বার ওপেন রেখেছে। আপনি তাড়াতাড়ি থানায় আসুন।’

‘কি তোরা এখনি ফোনের লোকেশন ট্রাক কর। আজ তাদের খোঁজে বের করবই।’

সুখবর পেয়ে দিশেহারা হয়ে তৎক্ষণাৎ জিপে বসে থানার উদ্দেশ্য রওনা দেয় নাবিল।

চলবে….