অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-১৬+১৭

0
431

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ১৬
,
হায়াত মুরাদ এর দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো –
হায়াতঃ অভিনন্দন মিঃ খান।
মুরাদ হায়াত এর পানে নিষ্পাপ বাচ্চাদের মতো তাকিয়ে আছে দেখে মনে হচ্ছে আজ যা হচ্ছে সেটা যে হবে এটা হায়াত আগে থেকে জানতো। মুরাদ ওর হাত বাড়িয়ে দিয়ে বললো –
মুরাদঃ ধন্যবাদ।
,
হঠাৎ করে মুরাদ ওর বাবা মার কাছে গিয়ে বলে উঠলো –
মুরাদঃ আমি যত তারাতাড়ি সম্ভব মাইশাকে বিয়ে করতে চাই।
বাবাঃ এখন আমরা না বললেও কি তুমি আমাদের কথার গুরুত্ব দিবে নাকি। তোমার যা মন চায় করো আমাদের কিছু বলবে নাহমুরাদ ওর বাবার দিকে ছলছল নয়নে তাকিয়ে উপরে চলে গেলো। মুরাদ কে এভাবে উপরে যেতে দেখে মাইশা ওর পিছে পিছে উপরে চলে গেলো। ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে একটা বাঁকা হাসি দিলো হায়াত।
,
খান বাড়ির আত্মীয় স্বজনরা এখন এক এক করে নিজের বাসস্থানে চলে যাচ্ছে। একটু খুশি এসেছিলো কিন্তু সেটাও এখন শোকের ছায়া হয়ে গেছে। মুরাদ এর বাবা চেয়ারে বসে মাথায় হাত আছেন। তখন তার গিন্নি ঘরে এলো। আর উনার পাশে বসে বলতে লাগলো-
মাঃ আমাদের পরিবারে কি খুশি আর ফিরে আসবে না।
বাবাঃ চিন্তা করো না সব ঠিক হয়ে যাবে।
কথাটা বলে নিজের স্ত্রী কে পরম আবেশে জড়িয়ে ধরলেন।
,
পরেরদিন,
,
ব্যাগ পত্র নিয়ে সকাল সকাল হাজির খান বাড়িতে হায়াত। এসেছে খুশির খেয়াল রাখতে। কারণ আজ সকালে খুশি ওকে ফোন দিয়ে খান বাড়িতে আসতে বলে। নিজের আদরের বোনের কথার উপর না করতে পারেনি।
,
হায়াত কে দেখে খুশি ওর কাছে এসে বললো-
খুশিঃ তুই চলে এসেছিস।
আবার ওর শাশুড়ী দিকে তাকিয়ে বলে-
খুশিঃ মা আমার ডেলিভারি পর্যন্ত আমি চাই হায়াত এখানে থাক। আপনাদের কোনো আপত্তি নেই তো।
ওর শাশুড়ী কিছু খন ভেবে বললো-
মাঃ নাহ। তুমি হায়াত কে রাখতে পারো।
হঠাৎ করে মাইশা বলে উঠলো —
মাইশা এমনিতে সামনে আমার আর মুরাদের বিয়ে ও থাকলে একটু কাজ করে দিবে তাহলে সার্ভেন্স টা কম লাগবে।
হায়াত নিজের চোখের চশমা খুলতে খুলতে বললো-
হায়াতঃ এমন কাউকে বিয়ে করছো যার একটা সার্ভেন্স রাখার ক্ষমতা নেই। হাসালে আমাকে।
হায়াত এর এমন কথা শুনে মাইশা রেগে টেবিল থেকে উঠে চলে গেলো।
আর খুশি ও হায়াত কে ওর রুমের দিকটাই নিয়ে যেতে লাগলো।
,
মাইশা রকম রেগে মুরাদ এর রুমে গেলো। গিয়ে দেখে ও মাত্র শাওয়ার নিয়ে এসেছে। মুরাদ কে দেখে মাইশার রাগ উদাও। ও পিছন থেকে মুরাদ কে জড়িয়ে ধরে বললো-
মাইশাঃ জান হায়াত কে আজকেই বাড়ি থেকে বের করে দিবে।
মুরাদ মাইশা কে ছাড়িয়ে বলে উঠলোঃ
মুরাদঃ হায়াত ভাবির গেস্ট সো আমি ওকে বের করতে পারবো না।
মাইশা রেগে বললো-
মাইশাঃ তাহলে যত তারাতাড়ি সম্ভব আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করো।
কথাটা বলে চলে গেলো মাইশা। মাইশার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে মুরাদ বাঁকা হাসি দিয়ে বলে উঠলো –
মুরাদঃ তোকে আবার কে বিয়ে করবে। জান আগে আগে দেখো হোতা হ্যাঁ কেয়া।
,
হায়াত কে রুমে পৌঁছে দিয়ে খুশি চলে গেলো। খুশি চলে যেতে হায়াত বলে উঠলো-
হায়াতঃ, এবার দেখবেন মিঃ মুরাদ খান আমি আপনাকে কিভাবে পুড়াই। আপনার চোখে আমি আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি আর আমি সেটার ফায়দা উঠাবো। জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দিবো আপনাকে।
কথাটা বলে হায়াত হাসতে লাগলো। এই হায়াত আর আগের হায়াত এর মধ্যে কোনো মিল নেই এই হায়াত জেনো প্রতিশোধ এর নেশায় মেতে উঠেছে।
,
,
আজকে মাইশা অনেক খুশি কারন আজকে ওর আর মুরাদ এর বিয়ের তারিখ ঠিক করবে। এজন্য একটা পার্টি রেখেছে মুরাদ। এটা শুনে মাইশা সকাল থেকে নিজের সাজ গোজ নিয়ে ব্যাস্ত
,
,
,
চলবে,,,,,

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ১৭
,
আজকে মাইশা অনেক খুশি কারন আজকে মুরাদ আর ওর বিয়ের ডেট ফিক্স করা হবে। এতে সে সকাল থেকে সাজু গুজু করতে ব্যস্ত। আর অনেক আগে সবাইকে ইনভাইট করা শেষ। এসব দেখে হায়াত শুধু তাচ্ছিল্য হাসি হাসছে।
,
বাড়ি এখন ও ডেকোরেশন করা হয় নাই এজন্য মাইশা ডেকোরেশন লোকদের প্রতি প্রচুর বিরক্ত। সে অনেক ক্ষ ধরে লোক দের ঝারছে।
,
মাইশাঃ কি কাজ করেন হ্যাঁ আপনারা এখন ও কাজ শেষ করতে পারেন নাই একটু পর লোক জন আসা শুরু করে দিবে। আপনারা তারাতাড়ি কাজ শেষ করেন আমি রেডি হতে যাচ্ছি। এসে জেনো সব ঠিক ভাবে পাই।
,
একজন লোক বলে উঠলো-
আচ্ছা মেম।
,
মাইশা নিজের রুমে যেতে নিচ্ছিলো তখন তার সামনে হায়াত ওরে ও হায়াত কে দেখে বলে উঠলো-
মাইশাঃ একটু কাজ ও তো করতে পারো নাকি।
হায়াত একটা ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে বললো-
হায়াতঃ আমাকে এসব কাজ সোভা পায় না এসব কাজ তোমাকেই সোভা পায়। নিজের বিয়ে অথচ নিজে এমন কাজ করছে। আহ্ কি কষ্ট।
,
কথাটা বলে হায়াত হাসতে হাসতে চলে গেলো। আর মাইশা রাগে নিজের রুমে চলে গেলো। নিজের রুমের আয়নার সামনে দাড়িয়ে বলতে লাগলো-
মাইশাঃ আজ এমন সাজ দিবো মুরাদ কোনো পার্টির সকল ছেলে রা আমার দিকে তাকিয়ে থাকবে।
,
,
পার্টি অনেক আগে শুরু হয়ে গেছে। মুরাদ পড়েছে একটা কালো শার্ট তার উপর ওয়াইট ব্লেজার কালো প্যান্ট অনেক সুন্দর লাগছে ওকে। আর মাইশা একটা কালো শাড়ি পরেছে কিন্তু শাড়ি পড়ে লাভ কি তার শরীরে প্রতিটা ভাজ স্পষ্ট। সাথে হেভি মেকআপ। অনুষ্ঠানের সকল ছেলেরা ওর দিকে তাকিয়ে আছে। ওকে সুন্দর লাগছে এজন্য না। ওর শরীর এর আঙ্গ দেখছে। এসব দেখে মুরাদ অনেক বিরক্ত। ওগ মাইশাকে একটা কোনায় এনে বলে উঠলো-
,
মুরাদঃ এসব কি পড়েছো তুমি মাইশা আত্মীয় স্বজনরা কি বলবে হুম।
,
মাইশা এর অনেক টা কাছে এসে বলে উঠলো-
মাইশাঃ জান এমন করছো কেনো সবাই কে তো দেখাতে হবে মুরাদ খান এর বউ কত টা সুন্দর।
,
মুরাদঃ এজন্য এসব পোশাক। তুমি……
,
আর কিছু বলতে পারলো না মুরাদ তার আগে বাড়ির সকল লাইট অফ হয়ে গেছে। মুরাদ অবাক হয়ে চার পাশে দেখছে। হঠাৎ করে সিঁড়ির দিকে লাইট জ্বলে উঠলো সবাই ওই দিকে তাকালো। একটা সুন্দর রমনী কালো লেহেঙ্গা পড়ে নামছে। কালো রঙের লেহেঙ্গার উপর সাদা স্টোন এর কাজ করা। হালকা মেকআপ। সাথে মেচিং জুয়েলারি। একদম অসাধারণ। মুরাদ তো মেয়েটার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে। শুধু মুরাদ না উপস্থিত সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে। কিন্তু শুধু একজন ই এসব দেখে জ্বলছে আর সে হলো মাইশা। ও মুরাদ এর কাছে গিয়ে বলে উঠলো নিজেকে কন্ট্রোল করো তা নাহলে এর ফল ভালো হবে না মুরাদ।
মুরাদ নিজেকে স্বাভাবিক করে নিলো।
,
হায়াত নিচে নেমে সবার সাথে পরিচয় হলো হঠাৎ করে মাহিম মাইক নিয়ে বলে উঠলো-
,
মাহিমঃ আজকে আমার ভাইর বিয়ের ডেট ফিক্স করা হবে। আর এজন্য আমাদের এই ছোট পার্টি অনুষ্ঠান। সাথে আরেকটা ধামাকা রয়েছে আর সেটা হলো। একটু আগে একটা মেয়ে কে নামতে দেখেছেন ও হচ্ছে আমার বোন আজকের ওর বিয়ের ও এনাউছমেন্ট করা হবে। ওর বিয়ে হবে আমার প্রান প্রিয় বন্ধুর সাথে।
,এই কথাটা শুনে মুরাদ অনেক টা অবাক হয়। ও হায়াত এর দিকপ তাকালে দেখে হায়াত হাসছে। এর পর সবাই দরজার দিকে তাকায় দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে একজন সুদর্শন যুবক ভিতরে ঢুলছে। মুরাদ এর থেকে দেখতে সুন্দর হ্যাঁ মুরাদ এর থেকেও সুন্দর দেখতে। ওয়াইট শার্ট কালো প্যান্ট। দেখতে অনেক অসাধারণ লাগছে। ছেলেটা এসে মাহিম কপ জড়িয়ে ধরে অতঃপর গিয়ে হায়াত কেও জড়িয়ে ধরে হায়াত কে জড়িয়ে ধরতেই মুরাদ এর জ্বলে উঠে। হায়াত ছেলে টাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিয়ে বলে উঠে-
হায়াতঃ কেমন আছো অভ্র।
অভ্রঃ ভালো তুমি। কেমন আছো।
হায়াতঃ ভালো।
,
আসুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক অভ্র সাথে হায়াত এর দেখা কিভাবে। আসলে হায়াত আমেরিকায় গিয়ে যেই খানে ডাক্তারি শিখতে ওই খান এর প্রফেসর এর ছেলে সেই সুভাতে অভ্র ভার্সিটির টিচার ছিলো। সেই সুভাতে ওদের অনেক ভালো বন্ধু গড়ে উঠে। আর অভ্র যখন দেশে ফিরে ওর সাথে সাথে হায়াত ও ফিরে। একদিন হায়াত অভ্র সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিলো তখন মাহিম ওদের কথা শুনে হায়াত এর কাছে আসে আর জানতে চাই কার সাথে কথা বলছে। ব্যস তখন থেকেই মাহিম ও জেনে যায় অভ্র তার বন্ধু। ওদের এই ক্লোজ দেখে মাহিম নিজে অভ্র সাথের হায়াত এর বিয়ে ঠিক করে। আর অভ্র হায়াত কে পছন্দ করায় রাজি হয়ে যায় আর ওর বাবার একটা কাজ থাকায় বাংলাদেশে আসতে পারেনি। এজন্য অভ্র নিজে এসেছে। আর অভ্র তার বাবা মার একমাত্র সন্তান। বাবা অজয় আহমেদ। মা অনিলা আহমেদ। এখন এই টুকু জেনে রাখুন।
,
,
মাইশা তো অভ্র দেখে পুরো ক্রাস খেয়ে গেছে। ও এক দৃষ্টিতে অভ্র এর দিকে তাকিয়ে আছে। আর মুরাদ এর অনেক রাগ লাগছে হায়াত কে এভাবে ধরায়। ও অভ্রর দিকে রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অতঃপর মাহিম আবার মাইক নিয়ে এনাউন্সমেন্ট করে-
,
মাহিমঃ আজকপ এতো বড় খুশির সংবাদ এতে একটু ডান্স তো হতেই হয় তাই না।
,
অতঃপর হায়াত এর সাথে অভ্র আর মুরাদ এর সাথে মাইশা ডান্স করতে শুরু করে। ডান্ড এর সাথে সাথে বক্স এর আলতো ভাবে বেজে চলেছে-
——–
Thume apna banane ka junun sarpe he kab se he
,
,
চলবে,,,,,,,