অদ্ভুদ ভালোবাসা পর্ব-১৪+১৫

0
434

#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ১৪
,
দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে মাইশা। মাইশা কে দেখে হায়াত বিরক্ত হলেও তা মুখে প্রকাশ করে না। মাইশা একটা হাসি দিয়ে বললো-
,
মাইশাঃ কি অবস্থা মিসেস হায়াত। উফ্ সরি মিস হায়াত। আসলে কি বলতো আমি ভুলেই গেছিলাম যে তুমার তো অনেক আগেই ডিভোর্স হয়ে গেছে।
,
হায়াতঃ আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো। তা আমার কাছে কেনো এসেছেন মেন্টালিটি থেকে বুঝি আপনি অনেক দূর্বল।
,
মাইশাঃ মাইন্ড ইউর লেংগয়েজ হায়াত।
,
হায়াতঃ হুশ!! এইখানে এভাবে কথা বলতে পারেন না এটা হসপিটাল কোনো মাছের বাজার না।
,
মাইশাঃ ওহ্ তোমাকে যেই খবর টা দিতে এসেছি। কয়েকদিন পর আমার আর মুরাদের বিয়ে সো তোমাকে আগেই invite করলাম।
,
হায়াতঃ ওহ্ তার মানে এখনো বিয়ে হয় নাই। আমি তো ভেবেছিলাম দেশে ফিরে আপনাদের বিয়ে দেখতেই পাবো না। কিন্তু না কপালে আপনাদের বিয়েটা দেখার সৌভাগ্য আছে।
,
মাইশাঃ হুম টাইম মতো কার্ড ও পেয়ে যাবে। আর বলো তো আমার মুরাদ বেবির সাথে তোমার থার্ড ক্লাস মেয়েকে মানায় না এজন্য তোমাকে ডিভোর্স দিয়েছিলো।
,
হায়াগঃ আই নো। যার সাথে যার মানায়। ওর সাথে তো আপনার মানায় এজন্য তো এখন ও বিয়ে করতে পারলেন। সো সেড। বাই দা ওয়ে আমি এখন পেশেন্ট দেখতে হবে। আপনার কাছে টাইম ওয়েস্ট করার সময় নাই।
,
কথাটা বলে হায়াত রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। হায়াত এর কথা শুনে মাইশা রাগে ফুসফুস করতে বললো-
,
মাইশাঃ দেখো নিবো তোমাকে। অনেক ডানা বের হয়েছে তাই না তোমার এই ডানা যদি না কেটেছি তাহলে আমার নাম ও মাইশা না।
,
কথাটা বলে মাইশা ও রাগে ফুসফুস করতে বেরিয়ে গেলো রুম থেকে।
,
অপরদিকে হায়াত কাজ করছে। এর মধ্যে একজন নার্স এসে বললো-
,
নার্সঃ ম্যাম! আপনার সাথে আমাদের হসপিটালের মালিক দেখা করতে এসেছে।
,
হায়াতঃ ওহ ওকে। তুমি যাও আমি আসছি।
,
কথাটা শুনা মাত্রই নার্স টা চলে গেলো। হায়াত ও বেশি না ভেবে চলে গেলো হসপিটালের মালিক এর সাথে দেখা করতে। একটা কথা ওকে খুব ভাবাচ্ছে। ও যতো দূর শুনেছে এই হসপিটালের মালিক কারোর সাথেই দেখা করে না তাহলে ওর সাথে দেখা করতে আসছে। এসব ভাবতে ভাবতে একটা রুমে এসে দাড়ালো। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে যাকে দেখলো তাকে দেখার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলো না ও অবাক হয়ে লোক টার দিকে তাকিয়ে আছে।
,
মাহিম বসে বসে অফিসের কাজ করছে তখনি ওর সামনে খুশি এসে দাড়ালো। মাহিম ভ্রু জোড়া কুচকে ওর দিকে তাকালো। খুশি এবার অনেক টা খুশি হয়ে বললো-
,
খুশিঃ আপনার জন্য একটা সারপ্রাইজ আছে।
,
মাহিম কি সারপ্রাইজ ( অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করলো)
,
খুশিঃ আগে চোখ বন্ধ করুন।
,
মাহিম ও খুশির কথায় চোখ বন্ধ করে নিলো।
অতঃপর খুশি মহিের হাত টা নিজের পেটের উপর রেখে বললো-
,
খুশিঃ আপনি বাবা হবেন।
,
মাহিমঃ কি আবার বলো তো কি হবো।
,
খুশিঃ আপনি বাবা হবেন। আপনাকে বাবা বলে ডাকার মতো কেউ আসবে।
,
কথাটা শুনা মাত্রই মাহম খুশিকে জড়িয়ে ধরলো। ওর চোখ থেকে পানি পড়ছে। আজ সত্যি বুঝতে পারছে বাবা হওয়া কতরা আনন্দ দায়ক। একটা নতুন সদস্য পারে পরিবারে খুশির আমেজ নিয়ে আসতে।
,
এদিকে,,,, ,,
,
চলবে,,,,,,,,
,
#অদ্ভুদ_ভালোবাসা
#সুমাইয়া_সুমু
পার্টঃ১৫
,
মুরাদ আর হায়াত সামনা সামনি দাড়িয়ে আছে। হায়াত মুরাদ এর দিকে বিস্ময় চাহনিতে তাকিয়ে আছে। এই হসপিটালের মালিক আর কেউ না সয়ং মুরাদ খান। ভাবতেই অবাক লাগছে। এসব ভাবনার মাঝেই মুরাদ হায়াত এর দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললো–
,
মুরাদঃ হ্যালো মিস সানা হায়াত?
,
মুরাদ এর কথায় ঘোর কেটে গেলো। হায়াত ও হাত বারিয়ে দিয়ে বললো-
হায়াতঃ হ্যালো মিঃখান।
,
মুরাদঃ আসুন আসে কথা বলি। সিট।
,
হায়াত বসতে বসতে বললো-
হায়াতঃ তা মিঃখান আমি যতো দূর শুনেছি আপনি কারোর সাথে সহজে দেখা করেন না তা আমার সাথে হঠাৎ দেখা করতে এলেন কেনো?
,
মুরাদঃ দেখতে এলাম নতুন ডক্টর নিজের কাজ ঠিক মতো করে নাকি?
,
হায়াতঃ আপনার কি এখনো সন্দেহ আছে?(ভ্রু কুঁচকে বললো)
,
মুরাদঃ নাহ।(আলতো হেসে বললো)
,
হায়াতঃ তা আপনার কি দেখা শেষ মিঃ খান।
না মানে আমার অনেক পেশেন্ট পড়ে আছে তাদের দেখতে হবে।
,
কথাটা শুনে মুরাদ এর মন টা খারাপ হয়ে গেলো। মুরাদ মুখ ছোট করে বললে-
,
মুরাদঃ আচ্ছা আপনি যেতে পারেন।
,
কথাটা বলে মুরাদ উঠে চলে গেলো। হায়াত ওর যাওয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। হায়াত মনে মনে বললো-
,
হায়াতঃ আপনি তো আমার না তাহলে বার বার কাছে এসে মায়া কোনো বাড়ান। আরো কষ্ট দিতে চান বুঝি। কিন্তু আমার কষ্ট পাওয়া তো ওই দিন মরে গেছে যেদিন আপনার পাঠানো ডিভোর্স পেপারে সাইন করেছি।
কথাটা গুলো ভাবার সময় হায়াত এর দুচোখ ভরে দু ফোঁটা জল করিয়ে পড়লো। হায়াত সেটা মুছে নিজের কেবিনের দিকে চলে গেলো।

আজ খান পরিবারে খুশির আমেজ পড়ে গেছে। পরিবারে নতুন সদস্য আসবে। এটা শুনা মাত্রই জেনো সবার মুখে কত বছর পর হাসি ফুটলো। মাহিম তো অলরেডি পাগলামো শুরু করে দিয়েছে। বাবুর জন্য এটা কিনতে হবে ওটা কিনতে হবে। মাহিম এর পাগলামো দেখে খুশি মাহিম কে জড়িয়ে ধরে বলে উঠে–
,
খুশিঃ আজ কত বছর পর আমাদের এই পরিবারে খুশি আমেজ বসেছে। আপনিও কত বছর পর আজ প্রান খুলে হাসছেন। সত্যি আমি অনেক ভাগ্যবতি আপনার মতো একটা স্বামী পেয়ে।
,
মাহিম আলতো করে খুশি কে জড়িয়ে ধরে বলে–
মাহিমঃ আমি তো ওই দিন থেকেই খুশি যেই দিন তোমার এই #অদ্ভুদ_ভালোবাসায় নিজেকে জড়িয়ে ফেলেছিলাম। অনেক ভালোবাসি তোমায় খুশি। কখনো ছেড়ে যাবে না তো?
,
খুশিঃ নিজের শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত আপনার সাথে কাটাতে চাই। এবং নিজের নিশ্বাস ও আপনার বুকে ত্যাগ করতে চাই। ভালোবাসি মাহিম অনেক বেশি ভালোবাসি।
,
আজ খান পরিবারে অনেক বড় একটা অনুষ্ঠান এরেন্জ করা হয়েছে নতুন সদস্য আসার উপলক্ষে। আজ কত বছর পর খান বাড়ি টা সাজানো হচ্ছে। এসব দেখে আজ মুরাদ এর মা এবং বাবার চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছে। আজ কত বছর পর তাদের সন্তান রা খুশি হয়েছে। আজ তারাও অনেক খুশি দাদা-দাদীমা হবে। একজোড়া ছোট ছোট হাত এসে ওদের হাত ধরবে। নতুন করে উনাদের সব কিছু শেখাবে। এসব ভেবে উনাদের মন জুড়িয়ে যাচ্ছে।
,
কিন্তু কে যানতো এই খুশি টাও বেশি ক্ষন স্থায়ী ও থাকবে না। আবার কালো অন্ধকার নেমে আসবে উনাদের পরিবারে। কারন কোথা থেকে মুরাদ এসে পার্টি ভরতি সকল লোকের সামনে বলে উঠলোঃ
,
মুরাদঃ আমি মাইশা কে বিয়ে করতে চাই তাও যতো তারাতাড়ি সম্ভব।
,
মুরাদ এর হুঠ করে এমন কথা শুনে বাড়ির সবাই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে মুরাদ এর দিকে। কিন্তু শুধু একটা মানুষের মধ্যে কোনো ভাবান্তর নেই আর সে হলো হায়াত। হায়াত এক দৃষ্টিতে মুরাদ এর দিকে তাকিয়ে আছে। যেনো আজ এমন কিছু হবে এটা সে জানতো।।
,
মাহিম মুখ কালো করে দাড়িয়ে আছে কারন ও চেয়েছিলো মুরাদ আর হায়াত এর সম্পর্ক ঠিক করতে। আজ অফিসে যা যা হয়েছে ও সব শুনছে। এসব শুনে ওর মনে হয়েছিলো যে মুরাদ হয়তো সত্যি হায়াত কে ভালোবাসে। না মাহিম এর কিছু মাথায় ঢুকছে না মুরাদ এর সাথে আলাদা ভাবে কথা বলতেই হবে। হঠাৎ করে হায়াত এর কাছে এসে ওর দিকে হাত বারিয়ে দিয়ে বললো-,,,,,,,,
,
চলবে,,,,,,,,,,
,