অনুভবে থাক যে তুমি পর্ব-০৪

0
2830

#অনুভবে_থাক_যে_তুমি
#লেখিকা_লায়লা_আঞ্জুমান_ইতি
#পর্ব_০৪

প্রিয় রিকশা ডাকলো,সুমাইয়া অবাক হয়ে বলল
সুমাইয়া — রিকশা কেন???
প্রিয় — ইচ্ছে করছে তাই
সুমাইয়া —,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

প্রিয় আর সুমাইয়া রিকশায় বসলো,তখন প্রিয় সুমাইয়াকে বলল
প্রিয়— সুমাইয়া
সুমাইয়া — হুম
প্রিয় — আজ এত শান্ত কেন তুমি
সুমাইয়া — এমনি
প্রিয় — কাল রাতের বিষয়টা নিয়ে রেগে আছ
সুমাইয়া — হুম
প্রিয় — সরি
সুমাইয়া —,,,,,,,,,,,ভার্সিটি এসে পড়েছি

বলেই রিকশা থেকে নেমে ভিতরে চলে গেল,প্রিয় রিকশা ভাড়াটা দিয়ে সুমাইয়া পিছনে গেল
প্রিয় — সুমাইয়া, এই দাড়াও
সুমাইয়া — বলুন
প্রিয় — এখনও রেগে আছ
সুমাইয়া — স্যার এটা বাড়ী না, আর আমি আপনার স্টুডেন্ট, আমি আশা করি আপনি তেমন ভাবেই ব্যবহার করবেন।
বলেই চলে গেল,প্রিয় জায়গায় দাড়িয়ে অবাক হয়ে বলল
প্রিয় — বাবা এই মেয়ে তো পুরোই আগুন,একে সামলাতে কষ্ট হবে
বলেই হেসে দিল।

অন্যদিকে,,,,,,,
ইতি — তুমি ওমন ভাবে তাকিয়ে আছ কেন
ফারদিন — ভাবছি তোকে কিভাবে শাস্তি দেব
ইতি — কি কিসের শাস্তি
ফারদিন — বলেছিলাম যে বৃষ্টিতে ভিজিস না, দেখলি তো জ্বর চলে আসলো
ইতি — তোমরা ও তো ভিজেছ কই তোমাদের তো কিছু হলো না
ফারদিন — তোর সব সময় বৃষ্টিতে ভিজলেই জ্বর আসে, তুই জেনেও ভিজেছিস
ইতি — আমার বৃষ্টি ভালো লাগে,তুমি তো জানো বৃষ্টি ভালোবাসি
ফারদিন —আমাকে ভালোবাসিস না
ইতি কিছুটা লাজুক হয়ে বলল
ইতি — চুপ কর তো
ফারদিন — ওরে আমার লজ্জা পতি, এভাবে লজ্জায় লাল হয়ে যাস না
ইতি– কেন
ফারদিন — নিজেকে সামলে রাখতে পারি না, ইচ্ছে করে খেয়ে ফেলতে
ইতি — কি খাবে
ফারদিন — তোকে
ইতি — ইশশশ এসেছে,
ফারদিন — ☺তোর এখন কেমন লাগছে
ইতি– এখন ভালো লাগছে,তুমি এখন কাজে যাও
ফারদিন — চুপ কর, দেখ কি একটা সময়, বাড়ীতে তুই আর আমি একদম একা, একা একা দুজন সময় কাটাতে পারব
ইতি — তুমি শুধু এসবই বলো

ফারদিন ইতির কপালে হাত দিয়ে দেখে
ফারদিন — জ্বর তো দেখছি এখন আর নেই
ইতি — হুম ভালো আছি এখন
ফারদিন — চল বারান্দায় যাই,একটু ওয়েট কর আমি চা বানিয়ে নিয়ে আসি
ইতি — তুমি চা বানাবে
ফারদিন — হুম, এইটুকু তো আমি পারি
ইতি — ঠিক আছে

ফারদিন গিয়ে চা বানিয়ে আনলো
ফারদিন — খেয়ে দেখ তো কেমন হয়েছে
ইতি খেয়ে বলল
ইতি — সব ঠিক আছে, কিন্তু মনে হয় তুমি চায়ে চিনি দিতে ভুলে গেছ
ফারদিন — ওওও এখনি দিয়ে আসি
ইতি — তুমি বারান্দায় যাও আমি দিয়ে নিয়ে আসি
ফারদিন — ঠিক আছে

ইতি চায়ে চিনি দিয়ে বারান্দায় গেল।
ইতি — এই নেও
ফারদিন — হুম
ফারদিন চা খেয়ে বলল
ফারদিন — চায়ে মিষ্টি কম
ইতি — এটা কি করে হতে পারে,আমি ঠিক মতো মিষ্টি দিয়েছি
ফারদিন — তুই খেয়ে দেখ
ইতি ফারদিনের চায়ের কাপটা থেকে চা খেয়ে বলল
ইতি — মিষ্টি ঠিকই তো আছে।
ফারদিন ইতির হাত থেকে চা টা নিয়ে খেয়ে বলল
ফারদিন — এখন মিষ্টি ঠিক আছে।
ইতি কিছুখন অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলো ফারদিনের দিকে।

অন্যদিকে,,,,,,,ভার্সিটি ছুটি হয়ে গেছে, সুমাইয়া বের হয়ে যাচ্ছে পিছন থেকে প্রিয় এসে বলল
প্রিয় — কোথায় যাচ্ছ
সুমাইয়া — বাড়ী
প্রিয় — পরে যাও
সুমাইয়া — কেন
প্রিয় — ফারদিন আর ইতি আজ একটু একা আছে, সময় কাটাচ্ছে ওদের বিরক্ত করার দরকার নেই।
সুমাইয়া — তাও ঠিক
প্রিয় — ফুচকা খেতে যাবে
সুমাইয়া — তুমি খাওয়াবে
প্রিয় — হুম
সুমাইয়া — ওকে চল

ওরা একটা ফুচকার দোকানে গেল,,,,তারপর ফুচকা ওডার দিল,সুমাইয়া খেয়েই যাচ্ছে খেয়েই যাচ্ছে
প্রিয় — ধিরে খাও কেউ কেড়ে নিয়ে যাবে না
সুমাইয়া — আমার এভাবেই খেতে ভালো লাগে
প্রিয় সামান্য হেসে বলল
প্রিয় — পাগলী
সুমাইয়া — আর তুমি পাগল
প্রিয় — ঠিক আছে ঠিক আছে

কিছুখন পর,,,, সুমাইয়া প্রিয়কে রাগানোর জন্য বলল
সুমাইয়া — ওয়াও, ও এম জি
প্রিয় — কি হয়েছে
সুমাইয়া — দেখ ওই ছেলেটাকে
প্রিয় — কোনটা সাদা শার্ট পড়া ছেলেটা
সুমাইয়া — হুম
প্রিয় — কি দেখবো
সুমাইয়া — ছেলেটা কত হ্যান্ডসাম তাই না
প্রিয় একটু রেগে বলল
প্রিয় — কোথায়, ওতো টাও হ্যান্ডসাম না
সুমাইয়া — ছেলেটার চুল গুলো দেখেছ, চোখ গুলো, আর বিশেষ করে ঠোঁট টা
বলার সাথে সাথে প্রিয় উঠে বাহিরে চলে আসলো,সুমাইয়া পিছনে গিয়ে বলল
সুমাইয়া — তুমি বের হয়ে আসলে কেন
প্রিয় — গরম লাগ ছিল
সুমাইয়া — এমন ঠান্ডা আবহাওয়াতেও গরম লাগ ছিল
প্রিয় — বাড়ী ফিরব

বলেই রিকশা ডাকলো,ওরা বাড়ী ফিরছে, সারাটা রাস্তায় প্রিয় একটা কথাও বলে নিই
বাড়ীতে গিয়ে কলিং বেল দিল,ফারদিন গিয়ে দরজা খুললো প্রিয় কোনো কথা না বলেই ভিতরে ঢুকে গেল।
ফারদিন — কিরে সুমু ওর কি হয়েছে
সুমাইয়া — আমি কি জানি,আপু কোথায়
ফারদিন — রুমে
সুমাইয়া — জ্বর কমেছে
ফারদিন — হুম যা গিয়ে কথা বল

ফারদিন আর সুমাইয়া ওখানে গিয়ে দেখে প্রিয়ও আছে।
ফারদিন — কিরে তুই তখন কিছু বললি না কেন
প্রিয় — এমনি, আমি রুমে গেলাম
বলেই প্রিয় চলে গেল,
সুমাইয়া — আপু আমি একটু আসছি
ইতি — ঠিক আছে

সুমাইয়া চলে গেল।
ফারদিন — ওদের আবার কি হলো
ইতি — কি জানি

অন্যদিকে,,,,,,প্রিয় রুমে গিয়ে রেগে শার্ট খুলছে, ওখানে সুমাইয়া গিয়ে বলল
সুমাইয়া — আমি এখানে
প্রিয় সুমাইয়াকে দেখে তাড়াতাড়ি শার্ট পড়ে নিল।
প্রিয় ভাড়ী কন্ঠে বলল,,,
প্রিয় — কি হয়েছে
সুমাইয়া — না মানে, তোমার কি হয়েছে
প্রিয় — আমার আবার কি হবে
সুমাইয়া — মুখ ওমন পেঁচার মতো করে রেখেছ কেন
প্রিয় — শেষ বলা এখন যাও
সুমাইয়া — আরে বাবা এত রাগ কেন

প্রিয় আর কিছু না বলে, গিয়ে সুমাইয়াকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল
সুমাইয়া — ক,কক,কি করছ
প্রিয় — এত সাহস পাও কোথার থেকে
সুমাইয়া — আআআআ,আমি কি করলাম
প্রিয় — নেক্সট টাইম যদি কোনো ছেলের দিকে তাকাতে দেখি আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না, বুঝেছ
সুমাইয়া ঢোগ গিলে বলল
সুমাইয়া — ওরে বাবা আমি তো মজা করে ছিলাম, তুমি এত সিরিয়াসলি নিবা কে জান তো
প্রিয় — মজা ছিল
সুমাইয়া মাথা নাড়িয়ে বলল হ্যা।এবার প্রিয় হেসে বলল
প্রিয় — ঠিক আছে।
সুমাইয়া — শোনো
প্রিয় — হুম
সুমাইয়া — আমাকে এখন ছাড়বে, আমার কেমন যেন লাগছে
প্রিয়র খেয়াল হতেই সুমাইয়াকে ছেড়ে দিল।সুমাইয়া ছাড়া পেয়ে আর এক মিনিট ও দাড়ালো না
এক দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেল।আর প্রিয় জায়গায় দাড়িয়ে মুচকি হাসলো।

সন্ধ্যার দিকে,,,,,,,,,
ফারদিন — সবাই শুনে নেও মা বাবা আজ আসবে না
ইতি — কি
সুমাইয়া — খাব কি
ইতি — আমি গিয়ে কিছু রান্না করি
ফারদিন — এই তুই উঠবি না,তোর শরীর ভালো না
ইতি — ঠিক আছি আমি
প্রিয় — ও ঠিক বলেছে তুমি রেস্ট নেও
ইতি — তাহলে খাবার কে বানাবে
সুমাইয়া — আমি পারব না
ফারদিন — তুই রাধলে কেউ মুখেও দিতে পারবে না
সুমাইয়া — কি😠😠😠
প্রিয় — আমি আর ফারদিন রাঁধব
সুমাইয়া আর ইতি অবাক হয়ে বলল কি???
ফারদিন — এত অবাক হওয়ার কি আছে, আঙ্গুল চাটতে থাকি তুই
সুমাইয়া — দেখি কি মহাভারত জয় করে ফেল
ফারদিন — দেখিস, প্রিয়
প্রিয় — হুম
ফারদিন — ফলো মিই

চলবে,,,,,,,

ভুলক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন