অনুর উপাখ্যান পর্ব : ৫

0
1901

গল্প : অনুর উপাখ্যান
পর্ব : ৫

— মামি হুনেন, আমার কোনো দোষ নাই । আমি ভর্তা নিয়া আসতাছি তখন বড় মামি আমারে ডাইক্কা কয় এইহানে খারা । পরে আমার তন ভর্তা নিয়া গরো গেছে । কতক্ষন পর আমার হাতে ভর্তা দিয়া কয় : নে এইবার নিয়া যা । আমি ভয়ে কিছু কইতে পারি নাই মামি ।

তার মানে বড় ভাবি ভর্তায় কেরোসিন মিশিয়েছে ! আমার মায়ের বয়সী একজন মানুষ আমার সাথে কি করে এমন করতে পারলো ? বড় ভাবির মনে কি একটুও রহম নেই ? নিপা আর আমি একই বয়সের । দু’জন একই বছর এস,এস,সি পাস করেছি । নিপার বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে ? হবে তো একদিন । ওর সাথে যদি এমন অন্যায় হয়, তখন ? আসলে আমি কি ? কেনো যদি, যদি করছি ! এভাবে চিন্তা করার মতো মানুষ এ বাড়িতে কে আছে ? কেউ নেই ! কাদের কাছে আমি মানবিক আচরণ আশা করছি ? যারা নাকি মানুষই না ।
ইস, এত খিদে পেয়েছে । কিন্তু কি খাব ? এত বার বমি হলো কিছু না খেলে তো বাচ্চার ক্ষতি হবে । আম্মু গো এত কষ্ট কেনো আমার ? দেখো তোমার মেয়ে কেমন কষ্ট পাচ্ছে ! আর পারছিনা, অনেক খারাপ লাগছে ।

— রিনা, রিনা তাড়াতাড়ি আসো তো ।

— জি মামি , কি অইছে ?

— তুমি হাত ভালো করে সাবান দিয়ে ধুয়ে একটা প্লেটে সাদা ভাত লবন দিয়ে ভালো করে চটকে পরে পানি দিয়ে মেখে নিয়ে আসো । সাথে একটা চামচ দিও ।

— কী কন মামি ! আমনে আমার মাখা ভাত খাইবেন ?

— কেনো খাবনা ? তুমি মানুষ না ? শুধু হাতটা ভালো করে ধুয়ে নিও । যাও দেরি করো না । অনেক খারাপ লাগছে ।

রিনার মাখা ভাত অমৃতের মতো লাগল ।আলহামদুলিল্লাহ । শরীর এখন একটু ভালো লাগছে । শাশুড়ি মা, লীমা প্রতিদিন নিচে বড় ভাবির ঘরে বসে গল্প করেন । ওখানেই সবার গোপন মিটিং বসে । শত্রু পক্ষ হলাম আমি । এতগুলো মানুষ যদি একজনের পিছনে লাগে তবে কীভাবে ভালো থাকা যায় ? মারুফ যদি আমাকে একটু ভালোবাসতো,একটু আগলে রাখতো, তবে কোনো চিন্তা ছিল না । কিন্তু, আমার ভাগ্যে তো সে সুখ নেই । আল্লাহ ছাড়া আর কেউ সাহায্যকারী নেই আমার ।

বিকেলে সীমা ও সুজন ভাই আসল । ওরা এই এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে । আমার বিয়ের আগে এ বাড়িতেই নাকি থাকত । ভায়ের বিয়ের সুবিধার্থে আলাদা বাসা নিয়েছে । তবে বাসা নেয়া আর না নেয়া সমান কথা । কারণ সাীমা এ বাড়িতেই পরে থাকে । সুজন ভাইকে কেনো জানি আমার পছন্দ না । হয়ত বিয়ের দিনের ঘটনার জন্য । না, আরও বিষয় আছে । তার রং তামাশা করা কথা আমার ভালো লাগে না । আমাদের পরিবারে বোনের জামাই মানে বড় ভাই এর মতো । তাকে সেভাবেই সম্মান করি । তার সাথে হাসি ঠাট্টা করি না আমরা । কিন্তু, সুজন ভাই ! সে খালি উল্টা পাল্টা কথা বলে । যেটা আমার কাছে নোংরা লাগে ।

— স্লামালাইকুম ভাবি । কেমন আছেন ? শইলডা ভালো তো আপনার ?

— জি, ওয়াআলাইকুমুস সালাম । আলহামদুলিল্লাহ ভালো ।

— ভায়ে কই ? বাসায় নাই ?

— না, বাসায় নেই ফার্মে গেছে ।

— ইসস, আপনার মতো বউ রাইখ্খা ভায়ে বাইরে কেমনে যায় ? ঘর থাইক্কা তো বাইর হওয়ার কতা না ।

— সুজন ভাই, আপনি বসেন । আমি চা বানাতে বলি ।

রিনা কে চা নাস্তার কথা বলে শাশুড়ি মায়ের ঘরে বসলাম । লীমা , সীমা বসে আছে সেখানে ।ওদের সাথে কিছুক্ষন কথা বললাম । এর মধ্যে সুজন ভাই ও যোগ হলো আমাদের সাথে । আমি নাস্তা নিয়ে আসি বলে কিচেনে চলে গেলাম । চা নিয়ে সবাইকে ড্রয়িংরুমে খেতে ডাকলাম । শাশুড়ি মা চা পান করেন না । লীমা , সীমা আর সুজন ভাই আসল। আমার দিকে তাকিয়ে সুজন ভাই বলা শুরু করলেন :

— বউ একখান পাইছে আমাগো মারুফ ভাই । যেমন সুন্দর; তেমন ফিগার ! ভাগ্য লাগে এমন বউ পাইতে । বুঝছ সীমা ।

— সীমা তোমরা চা খাও । আমার শরীরটা খারাপ লাগছে । রেস্ট নিব একটু ।

— ভাবি তোমার চা কই ? তুমি খাইতানা চা ?

— না, আমি খাব না । তোমরা খাও ।

এই লোকটার এমন নোংরা ইঙ্গিত আমার সহ্য হয় না । শুধু ফিগার ফিগার করে । অসভ্য লোক । সেখান থেকে সরে আসতে পেরে একটু সস্তি পেলাম ।

রাতে সীমারা খেয়ে যাবে, তাই বুয়াকে রান্নার নির্দেশনা দিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়লাম । কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না । ঘুম ভাঙলে দেখি মারুফ এখনো আসে নি। আর সীমারা খেয়ে চলে গেছে । মারুফ এত দেরি করে কেনো রাতে ? বাহিরে এতক্ষন কী করে ? উঠে ফ্রেশ হয়ে মারুফের জন্য অপেক্ষা করছি । আজ একটু বেশি রাত করছে আসতে । মাঝে মাঝে দুপুরে বাসায় খেতে আসে ।আজ দুপুরে আসেনি । সামনের বারান্দায় গিয়ে দাড়িয়ে আছি । গলিতে রিক্সা থামল একটা । আমি দোয়া করছি যেনো সে হয় । হুম, মারুফ এসেছে । আজ দেখছি তার মুড অফ , চেহারা কেমন লাগছে যেনো । কোনো রকম চারটা ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ল । পাশে গিয়ে আমিও শুলাম । কেমন জানি একটা গন্ধ পাচ্ছি । কিসের গন্ধ এটা ? কোথা থেকে আসছে ? মারুফের একটু কাছে যেতেই বুঝলাম গন্ধ তার মুখ থেকে আসছে । এটা কিসের গন্ধ ?

— শোনেন , আপনার মুখে কিসের গন্ধ এটা ? কই ছিলেন এত রাত পর্যন্ত ?

— ব্র্যান্ডির গন্ধ । গুলশান গেছিলাম ।

— ঢাকা গেছেন ? গুলশানে কি ? আমাদের বাসায় গেছেন ?

— আরে নাহ, গুলশান বারে গেছিলাম ড্রিং করতে ।

— কী ! আপনি মদ খান ? বারে যান মদ খেতে !

— হ খাই, তাতে কি অইছে ? প্যান প্যান কইরো না, ঘুমাইতে দাও । ঘুম ধরছে অনেক ।

আবার ও কষ্টের রাত, এক বুক শূন্যতা । আর কী কী জানবো লোকটা সম্পর্কে ? এমন লোক আমার স্বামী ? মুসলিম হয়ে হারাম কাজ করে !শেষ পর্যন্ত একটা মদখোর জুটলো কপালে !আজ সারাদিন এত খারাপ কেঁটেছে,অথচ লোকটা কিছুই জানে না । শরীরের খোঁজ তো নেয় ই না । তাকে নিয়ে যে বড় ভাবি এত বড় কথা বলেছে সেটা জিজ্ঞেস ও করতে পারলাম না । শুধু কষ্ট আর কষ্ট নিয়ে রাত পার করতে হয় । একটা বার, মাত্র একটা বার যদি সুযোগ পেতাম জীবনটা শুধরে নেয়ার ; তবে এ জীবনে কোনো দিন বিয়ে করতাম না । আম্মু আব্বুর সেবা করে জীবন পার করে দিতাম । আহারে আমার বাচ্চাটা একটু শান্তি পাচ্ছে না । সারাদিন এত চিন্তা করলে কীভাবে ভালো থাকবে ? না, আর টেনশন করব না । আমার বাবুটার কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমাব ।রাতের দোয়া গুলো পড়ে ঘুমের চেষ্টা করলাম ।

কে যেনো সুর করে ইনিয়ে বিনিয়ে কাঁদছে । অনু কান পেতে শুনার চেষ্টা করছে,কে কাঁদে এমন করে ? আস্তে আস্তে কান্নার শব্দ বাড়ছে । মারুফ উঠে বলছে কে কান্দে ?

— জানি না তো । এত সকালে কে আসল ?

— সীমা কানতাছে ! কি অইলো ওর ? দেহি শুইন্না আহি ।

মারুফ রুম থেকে বের হয়ে গেল । কী হয়েছে দেখার জন্য আমি ও উঠলাম । রুম থেকে বের হয়ে দেখি সবাই ড্রয়িং রুমে । আর সীমা আমার নামে মারুফের কাছে বিচার দিচ্ছে । আমি বাহিরে দাঁড়িয়ে শুনছি ।সুজন ভাই নাকি সীমাকে বকা দিয়েছে । কারণ, আমি তার সাথে গল্প করি নি । তাকে সময় দেই নি, সে খেতে বসলে আমি পাশে বসে খাওয়াই নি । শুনে মারুফের মাথায় খুন চড়ে গেল । ঘরে এসে অনুর গালে জোড়ে চড় বসিয়ে দিলো । অনুর অপরাধ সে তার বোনকে কাঁদিয়েছে । অনুর দুনিয়া যেনো থেমে গেল । মাত্র দু’মাস হয়েছে বিয়ের ! যে পুরুষ অসুস্হ বউকে বোনের কথায় মারতে পারে, সে কোনো মানুষের পর্যায়ই পরে না । এর সাথে সংসার করার কোনো মানেই হয় না । কিন্তু, আমার বাবু ? ওর কি হবে ? ও কখনো বাবার আদর পাবে না । মানুষ কি বলবে ? স্বামীর ভাত খেতে পারে নি ।সব দিক থেকেই যন্ত্রনা । কি করব আমি ? মানুষের তো বেঁচে থাকার জন্য একটা দিক থাকে । কিন্তু, আমার ? আমার তো কিছুই নেই ।না, আছে তো । আমার অনাগত সন্তান ! ওর জন্যই আমাকে বাঁচতে হবে । তবুও মন বাঁধ মানে না । প্রচুর কান্না পাচ্ছে । আহারে কান্নাতে ও আমার বাঁধা , বাবুর যে ক্ষতি হবে । ও আল্লাহ্ !

বোনকে আদর করে এক সাথে নিয়ে নাস্তা করে মারুফ চলে গেল বাহিরে । মা মেয়ের মুখে হাসি এখন । অনু না খেয়েই বিছানায় পড়ে আছে ।

— কই বউ উডো না । রান্দোন বারন কিছু করা লাগতো না ?

— শরীর ভালো না মা । আমার মসলার গন্ধে বমি আসে । কীভাবে রান্না করব মা ?

— অসুখ, অসুখ আর অসুখ ! তোমার বাপে কোন আক্কলে এই অসুখ্খা মাইয়াডা বিয়া দিলো কও দেহি ? তোমার বাপের কি কোনো আক্কল নাই ?

তার মানে কি বুঝাচ্ছেন উনি ? আমার কিসের অসুখ ? কই বিয়ের আগে তো আমার কোনো অসুখ ছিল না । আর সহ্য করতে পারছি না । বাসায় যাব আমি । আম্মুর কাছে যাব ।কিন্তু, কীভাবে যাব ? এ সময় জার্নি করা ঠিক হবে না । এত দূরের পথ, বাবুর ক্ষতি হয় যদি ! সেই যে বউ ভাতের পর গিয়েছিলাম, আর যাওয়া হয়নি । ঢাকার ভিতরে হলে কত বার যেতে পারতাম ! আম্মু তো বলেছিলেন আব্বুকে পাঠাবেন নিতে । কিন্তু, আমিই তো যেতে চাইনি এভাবে । বললে ভাইয়া এসে ও নিয়ে যেতো। মাইক্রো ভাড়া করেই নিয়ে যেতো । কিন্তু,আমি কেনো যাই নি ? এত কষ্ট পাচ্ছি এখানে তাও যেতে চাই নি । কেনো ? কারণ ঐ যে আমি এখন একজন স্ত্রী । এই লোকটা যেমনই হোক, স্বামী তো । কোনো এক অদৃশ্য মায়া হয়তো আমাকে যেতে দেয় নি । এ মায়ার কারণ কি ? আমার কাছে সত্যি অজানা । কোনো অবিবাহিত মেয়ে এ মায়ার মানে বুঝবে না । যদি এ মায়া মূল কারণ না হতো তবে বছরের পর বছর নারীরা সব সহ্য করে সংসার করতে পারতো না ।

মারুফ দুপুরে খেতে আসবে । ফার্ম থেকে বড় লেয়ার মুরগী পাঠিয়েছে রান্না করার জন্য । বাধ্য হয়ে রান্না করতে গেলাম । বুয়াকে দিয়ে একটা ডিম ভাজিয়ে নাস্তা করে রান্না শুরু করলাম । আসলে এক প্রকার ভয়েই রান্না করতে এসেছি । কারণ মারুফ আসলেই শাশুড়ি মা বিচার দিবেন যে, উনার কথা শুনিনি । তাহলে আবার যদি মারুফ গায়ে হাত তুলে ? বুয়া সব কুটে রেডি করে দিলো । নাকে আঁচল চেপে কষ্ট করে মুরগী ভুনা, করল্লা ভাজি আর ডাল রান্না করলাম ।আর এ বাড়ির নিয়ম অনুযায়ী বারো মাস ফ্রিজে শুটকি ভর্তা থাকেই । সকালে এরা সবাই শুধু ভর্তা দিয়েই দিব্বি ভাত খেতে পারে । আমার জন্য যা কষ্টকর । তবুও কিছু করার নেই । আর মেয়েদের ডিকশনারিতে “পারি না” নামক কোনো শব্দ থাকতে নেই । থাকেলই আপনি হবেন অকর্মা, অলক্ষী, অপয়া আরও কত কী !

দুপুরে সবাই বেশ মজা করেই খাবার খেলো । এত কষ্ট করে রান্না করে ও শাশুড়ি মায়ের মুখে হাসি ফুটাতে পারি নি । উনি যখন কোনো বিষয়ে চুপ থাকেন, তখন আমার ভয় শুরু হয়ে যায় । এই বুঝি কোনে দোষ ধরবেন !

খাওয়া শেষ করে মারুফ ফার্মে চলে গেলো । সবাই যার যার রুমে রেস্ট নিচ্ছে । বুয়া কাজ শেষ করে চলে গেছেন । রিনা ভিডিওতে বাংলা মুভি দেখছে । শাবনূর ওর প্রিয় নায়িকা । ওর একটাই দাবি, কাজ শেষ হলে ওর সিনেমা দেখতে দিতে হবে ।

প্রতিদিনের মতো আজও মারুফ মায়ের সাথে গল্প করছে । আমি একবার গিয়ে পাশে বসলাম । দেখি আমি থাকলে কেউ তেমন কথা বলে না । তাই বাধ্য হয়ে চলে আসলাম ।গল্প শেষ করে মারুফ ঘরে আসলে সাহস করে বড় ভাবির কথা গুলো বললাম ।

— কী ? ভাবি তোমারে আমার নামে এগুলান কইছে ?

— হ্যাঁ, সবই তো বললেন ভাবি । আপনি তবে কেনো আমাকে বিয়ে করলেন ?

— কাছে আইয়্যো । তুমি বুঝনা ক্যান ভাবি তোমারে মিথ্যা কইছে । তুমি যে মুন্নার নামে সত্য কইছো, তাই তোমারে এগুলান কইছে ।ভাবি চায় তোমার আমার সংসার ভাঙ্গুক । এত বোকা ক্যা তুমি ?

— সত্যি বলছেন তো ? আপনার সাথে কারো রিলেশন ছিল না ? এখন ও নাই ?

— হ, সত্য কইলাম । কেউ কিছু কইলে আমারে কইবা । আমি দেখমুনে ।

রিনা সবাইকে খেতে ডাকল । সবাই একসাথে খেতে বসেছি । তরকারি শেষ করে শাশুড়ি মা ডাল প্লেটে নিয়েই কান্নার ভান শুরু করলেন ।

— এ গুলান খাওয়া যায় ? আমারে মারার চেষ্টা করতাছে । লবন খাওয়াইয়া মারবো আমারে ? মারুফ তুমি খাইয়্যা দ্যাহো ।

মারুফ ডাল মুখে দিয়ে ফেলে দিলো ।আমিও খেয়ে দেখলাম যে ডাল বিষের মতো লাগছে ।ভয়ে মনে হচ্ছে চিৎকার দেই । এখনই বুঝি মাইর শুরু করবে মারুফ । আমার বাবুটার কি হবে ? ও আল্লাহ আমাকে আপনি বাঁচান এই জালিমদের হাত থেকে । সবাই খাবার রেখে উঠে গেলো । হঠাৎ আমার মনে পড়ল যে দুপুরে তো ডালে লবন ছিল না ! এখন এত লবন তবে কি করে হলো ?

— প্লিজ আপনি আমার একটা কথা আগে শোনেন । আমি ডালে লবন দেই নি । আজকে দুপুরে যখন খেতে আসছিলেন তখন কি ডালে এত লবন ছিল ?

— কই, না তো । তখন তো মজা কইরাই খাইছি ।

— তার মানে কি বুঝতে পারছেন ? ডালে পরে লবন মিশানো হয়েছে ।

— তাই তো ! লবন পরেই দিছে । কিন্তু ক্যারা দিছে লবন ?

— আপনিই বলেন আমি নিজে রান্না করেছি, আবার নিজেই লবন দিয়ে কি আপনার হাতে মাইর খাব ?

— ঠিকই তো । তুমি লবন দিবা ক্যান ? তার মানে অন্য কেউ কাম ডা করছে ।

মারুফ ঘর থেকে বের হয়ে গেল । আলহামলিল্লাহ আল্লাহ্ আমাকে রক্ষা করলেন । মারুফের উঁচু গলা শুনে বের হলাম ঘর থেকে ।

— সবাই কই ? এদিকে আইয়্যো । এই যে মা, আমনে যে দুপুরে ভাত খাইলেন তহন কি ডাইলে এত লবন ছিল ?

— না ।

— লীমা তুই দুপুরে ডাইলে লবন পাইছোস ?

— না ভায়ে তখন ভালোই ছিল ।

— রিনা তুই ডাইল খাস নাই ? লবন ছিল ?

— না, মামা ডাইল তো অনেক মজা অইছিল , মামি রানছে যে তাই ।

— তয় এহন তোরাই ক, যে ভালো ডাইল সবাই দুপুরে খাইলাম, রাইতে হেই ডাইলে এত লবন কেডা দিলো ?

চলবে……

✍? নায়না দিনা