অবশেষে তুমি আমার পর্ব-০৫+০৬

0
322

#অবশেষে তুমি আমার
# পর্ব :5+6
#লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

কেটে গেছে দুই দিন আজকে আভি আর আস্থার রিসিপশন বাড়িটা অনেক সুন্দর করে সাজানো হয়েছে গেস্ট আস্তে আস্তে আসছে এই দিখে আস্থা কি পরবে ভেবে পাচ্ছে না তখনি আভি রুমে এসে বলে কি হলো আস্থা বসে কেনো আছো তুমি লোক জন চলে আসছে আস্তে আস্তে । আস্থা বলে কি পরবো বুজতে পারছি না গাউন না লেহেংঙ্গা । আভি বলে এই রুম ভরা ড্রেস আস্থা একটা পরে নাও। আস্থা বলে বুজতে পারছি না এতো গুলো মাজে কোনটা পরবো । তখনি শান্তি চোধুরি আসে আর বলে দেখ তো এই কালো লেহেংঙ্গা টা কেমন? আস্থা ওয়াও মম এটা কে এনেছে। শান্তি চোধুরি বলে আমি অর্ডার করেছি এই নে এটা পরবি আর এই ডায়মন্ড সেট টা পরবি বুজলি আমি পার্লার এর লোক ভিতরে পাটিয়ে দিচ্ছি বলেই বেরিয়ে যাই শান্তি চোধুরি । আভি বলে নাও হয়ে গেলো এবার রেডি হও আমি আমার ড্রেস নিয়ে চলে যাচ্ছি বলেই আভি ড্রেস নিয়ে বেরিয়ে যাই আর পার্লার এর মেয়ে গুলো আসে আস্থা কে সাজাতে।

ব্লাক ড্রেস এ একদম ব্লাক কুইন লাগছে আস্থা কে মডেল দের মতো করে লেহেংঙ্গা উরনা দিয়েছে আস্থা একদম চিকন করে গলায় ডায়মন্ড এর নেকলেস যেটা গলার পুরা টা জুরে কানে দুল মাথায় টিকলি চুল গুলো খুলা হাতে ডায়মন্ড এর চুরি দুইটা গর্জিয়েস সাজ নিজেকে দেখে চিন্তে পারছে না আস্থা। পার্লার এর মেয়ে টা বলে মেম আপনাকে যা লাগছে পুরো পার্টি তাক লেগে যাবে আপনাকে দেখে আস্থা বলে ধন্যবাদ তোমাকে । তখনি আরশি আসে রুমে এসেই আস্থা কে দেখে বলে আপি কি লাগছে তোমাকে বিশ্বাস করো যদি ছেলে হতাম কসম ভাইয়ার কে দিতাম না বিয়ে করতে আমি করতাম । আস্থা বলে হয়েছে ননদিনি ডং চলো নিছে এরপর পার্লার এর মেয়ে আর আস্থা দুই সাইড দিয়ে আস্থা কে দরে নামাই। সিরিতে আসতেই পার্টির সবার চোখ আস্থার দিখে আভি তো এক নজরে থাকিয়ে আছে এমন পরীর মতো এটা যে তার বউ সে বিশ্বাস করতে পারছে না। পার্টির সবাই বলা বলি করছে চোধুরি বাড়ির বউ আসলে পরী একটা। আস্থা কে আভির পাশে দার করানো হয় আস্থা এবার আভি কে লক্ষ্য করে আভি দেখতে বিষন সুন্দর রিশাব আভির দারে কাছে ও যাই না আভি যেমন লম্বা তেমন সুন্দর সুদর্শন যুবক বলে যাকে প্রতিটা মেয়ে এই রকম বর খুঁজে আর আস্থা পেয়ে গেছে। আভি আস্থা কে উদ্দেশ্যে করে বলে কি দেখছো এই ভাবে আস্থা বেশি দেখো না প্রেমে পরে যাবে। আস্থা বলে বাজে কথা শুধু । আভি বলে তোমাকে যে কি লাগছে না পুরাই আগুন । আস্থা বলে আপনার মতো শিক্ষিতা ছেলের মুখে এই দরনের কথা মানাই না মিঃ আভি। এরপর আভির মা বাবা সবার সাথে আস্থার পরিচয় করিয়ে দেই । পার্টিতে আস্থার বাবা এসেছে কিন্তু একবার ও আস্থা যাই নি তার বাবার কাছে দূরে দূরে থেকেছে। আস্থা আর আভির ছবি তুলা হচ্ছে বিভিন্ন স্টাইলি এই ভাবে শেষ হয় রিসিপশান আস্থার বাবা ও চলে যাই আস্থা তার কাছে যাই না।

সন্ধ্যার বেলায় আভি কাজ করছে আস্থা বসে পড়ছে। আভি আস্থা কে উদ্দেশ্যে করে বলে তোমার উচিত হয়নি সবার সামনে এমন করা যতোই বাবার সাথে রাগ হোক তুমি তাই বলে একবার ও তার কাছে যাবে না ।একটা ছেলের জন্য তুমি তোমার বাবার সাথে রাগ করলে আচ্ছা তোমার বাবার 22 বছর এর ভালোবাসা বেশি না ওই ছেলের তিন বছর এর? তুমি তিন বছর এর ভালোবাসা বিশ্বাস করতে পারো আর 22 বছর এর ভালোবাসা কে বিশ্বাস করতে পারলে না ?তোমার বাবার ভালোবাসা কি এতো টাই টুকনো ছিলো আস্থা? সব কিছুর পিছনে কারন থাকে তোমাকে রিশাব এর সাথে বিয়ে না দেওয়ার পিছনে ও হয়তো কারন আছে তোমার বাবা যেহেতু বলেছে তোমার বাবার কাছ থেকে রিশাব টাকা নিয়েছে সেটা কি খোঁজ নেওয়া উচিত ছিলো না তোমার তা না করে রিশাব এর মুখের কথা বিশ্বাস করে নিলে তাহলে তোমার বাবার কথা কেনো বিশ্বাস করলে না? তোমার বাবার 22 বছর এর ভালোবাসা কি ভালোবাসা না ? নিজেকে একটু পশ্ন করে দেখো তো রিশাব যে ভারা বাসাই থাকে ও কি করে জায়গা বিক্রি করলো কোথা থেকে জায়গা পেলো। দরলাম জায়গা বিক্রি করলো দুই লাখ টা লন্ডন যেতে দশ লাখ লাগবে বাকি আট লাখ ওকে ওর বন্ধু রা দিয়েছে তুমি তো ওর বিষয়ে যানো ওর কি এমন কোনো বন্ধু আছে যে আট লাখ টাকা দিবে ? সেই সব কিছু না ভেবে এই ছেলের মুখের কথা বিশ্বাস করলে কিন্তু নিজের বাবার কথা বিশ্বাস করতে পারলে না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে ব্যালকনিতে চলে যাই ল্যাপটপ নিয়ে। আভি যেতে আস্থা ভাবতে থাকে আভির কোনো কথা ভুল না রিশাব তো ভারা থাকে ওর জায়গা কোথা থেকে আসলো আর ওর তো দুইটা বন্ধু তারা ও তো গরীব পরিবার এর ওরা তো ওকে টাকা দিতে পারবে না তাহলে বাবা যা বলেছে সেটাই কি সত্য আমি কি করবো কিছু বুজতে পারছি না রিশাব ও ফোন তুলছে না আমি কি করে যানবো এসব কে হেল্প করবে আমাকে আভি ওকে বলবো ইয়েস আভি কে বলতে হবে।

আস্থা ব্যালকনিতে গিয়ে আভির পাশে দারিয়ে বলে একটা কথা বলার আছে। আভি বলে কি বলো। আস্থা বলে আসলে একটা হেল্প লাগবে আমার। আভি বলে কিসের। আস্থা বলে রিশাব এর ব্যাপারে যানতে ও এতো টাকা কোথায় পেলো আমার যানা মতে ওর কোনো বন্ধু নেই এতো টাকা দিবে তাহলে কি বাবা সত্যি বলেছে আমাকে যানতে হবে কিন্তু কি করে খুঁজে বের করবো রিশাব তো দেশে না । আভি বলে চিন্তা করো না ও কোথায় আছে লন্ডন এর আমি টিক বের করবো আর আমাকে ভাবতে দাও কি করে সব জানবো ওকে এখন চলো ডিনার করে মেডিসিন নিবে বলেই আস্থা কে নিয়ে ডাইনিং এ যাই এরপর খেয়ে আস্থা কে মেডিসিন দেই এরপর পড়তে বসাই। পড়তে পড়তে রাত এগারো টা বেজে যাই আভি বলে আস্থা চলো ঘুমাবে রাত অনেক হয়েছে বলেই দুই জন শুয়ে পরে।
চলবে….

#অবশেষে তুমি আমার
# পর্ব: 6
#লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

কেটে যাই এক মাস তবে এই এক মাসে আভি আর আস্থার মাজে কিছু পাল্টাই নি তবে আস্থার বাবার সাথে আভি তার সম্পর্ক ঠিক করে দিয়েছে। প্রতিদিন এর মতো রুটিন চলছে আভি আস্থা কে কলেজ এ দিয়ে আসা আবার বাসাই আনা সন্ধ্যা বেলায় পড়ানো সব একি ভাবে চলছে তবে আভি এই পর্যন্ত আস্থার অনেক খেয়াল রেখেছে যেটা আস্থার মনে আভির জন্য গভীর জায়গা তৈরি করে দিচ্ছে আজ কাল যেনো রিশাব এর কথা মনে ও হয় না আস্থার এই পরিবার এর ভালোবাসা আর আভির কেয়ার এ । রাত আটটা বাজে এখনো আসছে না আভি আস্থা মনে মনে ভাবে কি হলো আভির এতো রাত তো করে না এই দিখে ফোন ও বন্ধ আস্থা যেনো চিন্তাই পাগল হয়ে যাচ্ছে । আস্থা শান্তি চোধুরি কাছে গিয়ে বলে মম আভি ফোন দরছে না কখনো তো এতো দেরি করে না ডেডি আভি কোথায় তুমি কখোন এলে? আভির বাবা বলে আমি তো সন্ধ্যা বেলায় এলাম আভি তো আমার সাথে বের হয়েছে তাহলে কোথায় গেলো? আস্থা এবার ভয় পেয়ে যাই কেঁদে দেবার মতো অবস্থা তবে কেনো এমন হচ্ছে আস্থা বুঝতে পারছে না আস্থা ডয়িং রুমে পাইছারি করছে তখনি কলিং বেল বেজে উঠে খুলে দেখে আভি শার্টে রক্ত চুল এলো মেলো। আস্থা গাবরে গিয়ে বলে কি হয়েছে আভি আপনার শার্টে রক্ত আভি কিছু হয়েছে আপনার কোথায় ছিলে ফোন কেনো বন্ধ ছিলো আমি কতো গুলো ফোন দিয়েছি আমার চিন্তা হয়না । আস্থা এই রূপ দেখে আভি কথা বলতে ভুলে গেছে। আভি বলে আসলে আমার গাড়ির সামনে একটা লোক এসে পরে যাই বেশি ব্যথা পাই তাই উনাকে খুলে তুলে হসপিটালে নিয়েছি এটার জন্য শার্টে রক্ত লেগেছে আর উনার চিকিৎসার জন্য দেরি হলো আর ফোনটা পরে ভেঙ্গে যাই। আস্থা বলে কিইই এতো কিছু হয়ে গেলো আপনার কিছু হয়নি তো আভি কোথাও লাগেনি তো তখনি চোখ যাই আভির কপালে দিখে আস্থা বলে আভি কপালে কতো টা কেঁটে গেছে বলেই জল ভরা চোখে আভির দিখে থাকায় আভি যেনো আজ নতুন আস্থা কে দেখছে আস্থার চোখের পানি দেখে আভি অবাক তার জন্য আস্থার চোখে পানি এই দিখে আস্থা নিজে ও বুজতে পারছে না ও কি করছে কেনো করছে । আস্থা আভি কে টেনে রুমে নিয়ে কাটে বসিয়ে দেই এরপর যত্ন সহকারে জায়গা টা ক্লিন করছে আর ফু দিচ্ছে যাতে আভি ব্যথা না পাই। আভি শুধু আস্থা কে দেখে যাচ্ছে আভি এবার আহ বলে মৃদু চেঁচিয়ে উঠে আস্থা বলে sorry আভি আমি বুজতে পারি নি লেগে যাবে বেশি লেগেছে? আভি বলে আরে না আস্থা এবার আভির কপালে ওয়ান টাইম ব্যান্ডেজ লাগিয়ে দেই। আভি আস্থা কে পশ্ন করে তুমি আমাকে নিয়ে এতো কোনো ভাবছো আস্থা? আভির কথা শুনে আস্থা বলে আমি সেটা যানি না আভি কেনো ভাবছি উওর টা মিলাতে পারছি না। আভি মনে মনে বলে খুব তারা তারি তুমি তোমার উওর মেলাতে পারবে আস্থা খুব তারা তারি।

আস্থা আভিকে টাওয়াল আর টাউজার দেই আভি নিয়ে ওয়াশ রোমে ডুকে । ওয়াশ রুম থেকে বেরিয়ে যেই মাথা মুছতে যাবে ওমনি আভি মৃদু চিৎত্কার করে । আস্থা বলে কি বয়েছে আভি বলেই আভির হাতের দিখে নজর যাই অনেক টাই কাটা যার জন্য মাথা মুছতে অসুবিধা হচ্ছে । আস্থা বলে আমি এতো কেয়ারলেস কি করে হলাম এতো বড়ো জখম চোখে পরলো না আমার বলেই আভির হাত থেকে টাওয়াল টা নিয়ে আভির মাথা মুছিয়ে দেই এরপর হাতে ক্লিন করে ব্যান্ডেজ করে দেই। আস্থা বলে এবার খেয়ে মেডিসিন নিতে হবে না হলে জ্বর আসবে। আভি বলে খেতে পারবো হাত কেঁটে গেছে মম কে ডাক দাও। আস্থা বলে না থাক মম এর প্রেশার বেরেছে আমি আনছি খাবার বলেই নিচে থেকে খাবার এনে আভির সামনে বসে বলে আমি খাইয়ে দেই আপনাকে? আস্থার কথা শুনে আভি যেনো আকাশ থেকে পরেছে। আভি বলে সিরিয়াসলি তুমি খাইয়ে দিবে আমাকে? আস্থা বলে কেনো খাওয়াতে পারি না সব কিছু মজা কেনো মনে করেন ।আপনি যেমন আমার কেয়ার করেন আপনার বেলায় ও তো উচিত আমার করা আজকে তো আমার হাত কাটলে আপনি ও খাইয়ে দিতেন তাই না তাহলে আমি কেনো দায়িত্ব পালন করবো না বলেই আভির মুখে খাবার তুলে দেই আভি খেতে থাকে আর বলে এক বছর এই কষ্ট টা তোমাকে করতে হবে এরপর মুক্তি ।তোমার খুব বিরক্ত লাগে এসব অভিনয় করতে তাই না আস্থা? আভির কথা শুনে আস্থা মন টা নিমেষে খারাপ হয়ে যাই আভি তাকে ভুল বুজছে আস্থা মন থেকে আভির বাবা মা কে ভালোবেসে আর আভির প্রতি কিসের টান আস্তা যানেনা । আস্থা বলে উঠে আভি আপনার মনে হয় আমাকে দেখে আমি অভিনয় করছি? আভি বলে একদম না বুজা যাই তুমি সত্য এই বাড়ির বউ অভিনয় মুটেও বুজা যাই না। আভি কথা শুনে আস্থা আর কিছু বললো না আভিকে খাইয়ে মেডিসিন দিলো এরপর আভি শুয়ে পরে।

রুমে ঘুমিয়ে আছে আভি আর ব্যালকনিতে দারিয়ে আছে আস্থা আর ভাবছে ওর কেনো আভির জন্য এতো টান আজকে যা করলো সেটা তো অভিনয় না মন থেকে ।আভির প্রতি তার কিসের টান আর আভি কনট্যাক্ট এর কথা বললে কেনো তার খারাপ লাগে সেটা বুজতে পারে না আস্থা।

সকাল বেলা সবাই ডয়িং রুমে বসে আছে তখনি আভি বলে ডেড আমাকে লন্ডন যেতে হবে এক সপ্তাহের জন্য নিউ ডিল টা ফাইনাল করতে হবে। আভির বাবা বলে ও তা যাও কবে যাচ্ছো । আভি বলে কালকে সকালে যাবো । আভির কথা শুনে আস্থা মন টা খারাপ হয়ে যাই সাত দিন আভি থাকবে না আস্থা একবার আভির দিখে থাকিয়ে রোমে ডুকে ব্যালকনিত চলে যাই। আভি পিছনে যাই গিয়ে আস্থার পাশে দারিয়ে বলে কি হয়েছে এই ভাবে চলে এলে? আস্থা বলে আপনি সত্য লন্ডন যাচ্ছেন আভি কালকে? আভি বলে মিথ্যা হবে কেনো ডিল টা ফাইনাল করবো তবে 15 দিন ও লাগতে পারে কাজ শেষ করতে। আস্থা বলে ও । আভি বলে তোমার তো ভালো হেপি কাপল এর অভিনয় করতে হবে না আর এই পনেরো দিন শান্তি তে থাকবে। আভি কথা শুনে আস্থা চোখে জলে ভরে যাই। আস্থা বলে আমাকে মিস করবেন না এই কথা বলতে আস্থার দিখে থাকিয়ে দেখে আভি আস্থার চোখ জলে ভরা । আস্থা চোখে জল দেখে আভির ভিতরে যেনো জ্বলে যাচ্ছে । আভি বলে কি হয়েছে আস্থা আর ইউ ওকে শরির খারাপ তোমার আমাকে বলো? কিছু না বলে আস্থা আভি কে জরিয়ে দরে কেঁদে দেই আভি অবাক আস্থার এমন কান্ডে।
চলবে।