অবশেষে তুমি আমার পর্ব-১৭+১৮

0
304

#অবশেষে তুমি আমার
#পর্ব:17+18
#লেখনিতে:রিদিকা আফরোজ রোজা

আভি চলো আজকে ঘুরবো আমরা দুইজন কাজ তো নেই আজকে। আভি বলে ওকে ডান চলো বলেই আভি আস্থা কে নিয়ে গাড়ি করে বের হয় । একটা সুন্দর জায়গা দেখতে পেয়ে নামে আভি আস্থা অনেক কাপাল কেউ বসে আছে জরিয়ে দরে আবার কেউ কিস করছে। আভি আর আস্থা ও গিয়ে এক পাশে বসে আস্থা আভির হাতের ভিতর হাত ডুকিয়ে কাঁধে মাথা দিয়ে গল্প করছে। আভির ফোন আসতে আভি বলে জান দুই মিনিট প্লিজ ওকে এখানে আমি ফোনটা রিসিভ করে আসছি। আস্থা মাথা নারাই। আভি কথা বলছে আর আস্থা ঘুরে ঘুরে চারপাশ দেখছে হঠাৎ চোখ যাই একটু দূরে একটা ছেলে আর একটা মেয়ে কিস করছে। ছেলেটার মুখ আস্থার দিখে আর মেয়েটা উল্টা দিখে। আস্থা বলে রিশাব এর মতো মনে হচ্ছে না কিন্তু রিশাব ও কোনো মেয়ের সাথে থাকবে কেনো দূর মেয়েটাকে কিস করে যাচ্ছে চারচে না। তখনি আভি এসে আস্থার চাওয়া লক্ষ্য করে চাই। আভি বলে আস্থা বেবি তোমার ও কি ইচ্ছা করছে নাকি অন্যর টা দেখো না চলো করি আমরা। আস্থা বলে তুমি ও না আভি কি যে বলো আমি ওদের দেখছি না আমি ছেলেটাকে দেখছি এটা রিশাব এর মতো দেখতে। আভি বলে রিশাব? আস্থা বলে চলো তো এগুই বলেই দুইজন এগিয়ে যেতে ছেলে টা মেয়েটা কে চারে আস্থা আর আভি তো অবাক আস্থা মনে মনে বলে রিশাব আর একটা মেয়ের সাথে তবুও আমার খারাপ লাগছে না কেনো। আভি বলে কি হলো আর ইউ ওকে। আস্থা বলে ইয়েস তবে এখন আর সব ঠিক থাকবে না যা বুজার বুজে গেছি আমি এবার চলো সামনে বলেই রিশাব দের কাছে যেতেই রিশাব আস্থা কে দেখে ভয় পেয়ে যাই। রিশাব তুতলে বলে আস্থা তুমি এখানে মানে। আস্থা বলে কেনো আশা করোনি আমি ও আশা করিনি এসব দেখবো। রিশাব বলে বিশ্বাস করো এসব কিছু না আমার এই মেয়ের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। আস্থা বলে তাই তাহলে এতো কোন আমি যা দেখছিলাম সব ভুল চিৎ মুখে থুথু দিতে ইচ্ছে করছে জানোয়ার আমি এতো বছর দরে তোকে পাগল এর মতো ভালোবেসেছি আর তুই কিনা আমাকে ঠকিয়ে গেলি ডেড ঠিক বলেছে তাহলে তুই ডেড এর থেকে দশ লাখ নিয়ে এই মেয়েকে নিয়ে ফুর্তি করছিস। রিশাব এবার বলে অনেক বলেছো হে এই মেয়ের সাথে আমার সম্পর্ক আছে ও আমার বউ বুজলে তোমার সাথে রিলেশন এর আগে থেকে আমার ওর সাথে রিলেশন আমি জাস্ট বড়লোকের মেয়ে বলে প্রেমের জালে ফাঁসিয়েছি টাকার জন্য। রিশাব এর কথা শুনে আস্থার কষ্ট লাগছে না তবে রাগ লাগছে ওর এটা ভেবে যে কি করে এই জানোয়ার টা কে ভালোবাসছিলো আর তার বাবার সাথে অন্যায় করেছিলো ভাবতে খারাপ লাগছে আস্থার। রিশাব বলে তোমার বাবার যখন দশ লাখ টাকা দিয়ে বললো তোমাকে চারতে হবে তখনি মনে মনে খুশি হয়েছিলাম যাক প্লান সফল। আর যদি না নিতাম তোমার বাবা ঠিক আমাকে মেরে দিতো আর তুমি কিছু দিন কষ্টে থাকতে এরপর বড়লোক ছেলে বিয়ে করে সুখে থাকতে আমার জীবন যেতো বলতে রিশাব এর দুই গালে টাস করে চর মেরে আস্থা বলে জানোয়ার তোর মতো একটা নিচু মাইন্ড এর ছেলেকে আমি ভালোবাসছি এটা ভেবে ঘৃনা লাগছে আমার তুই আমাকে নিয়ে কি ভাবতি আরে তোর মতো নিচু সবাই না বাবা ঠিক বলেছিলো তুই গরীব আর তোরা কোনো মানুষ এর কাতারে পরিস না সেটাই বাবা আমাকে বিয়ে দিয়ে ভালো করেছে অন্ত তো মতো নোংরা ছেলের হাত থেকে বেঁচেছি আমি। শুধু তোর জন্য আমি প্রথমে আভি কে মানিনি ওর মতো ভালো আর আর সৎ চরিএ এর একটা ছেলে যে কিনা আমার স্বামী তাকে তোর মতো জানোয়ার বিশ্বাসঘাতক এর জন্য প্রথমে মানি নি এটা ভেবে নিজের পৃতি ঘৃনা হচ্ছে। আমি যখন আভি কে ভালোবেসে পেলি তখন বার বার ভেবেছি হয়তো তোর সাথে অন্যায় করেছি আমি মাফ ছেয়ে নিবো। কিন্তু তুই তো এর আগে আমার সাথে প্রতারনা করেছিস। আস্থার কথা শেষ হতে রিশাব বলে তুমি ভাবলে কি করে বিয়ে হয়ে গেছে তোমার এরপর ও তোমাকে বিয়ে করবো সিরিয়াসলি আস্থা কি আছে তোমার মাঝে এই আভি তো সবটাই নিয়ে নিয়েছে শুধু তোমার এই রূপ টা আছে আর বাবার টাকা তুমি অস্বীকার করতে পারবে আভি বিয়ের প্রথম দিন তোমাকে ছেরে দেই নি। আস্থা এবার আরো জুরে রিশাব কে চর মেরে বলে জানোয়ার তর সাথে তুই আমার আভির তুলনা করছিস ও আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে আমার হাত অব্দি দরেনি তোর মতো সবাই না আল্লাহর রহমত এ হয়তো কোনো ভালো কাজ করেছিলাম তাই আভির মতো একজন স্বামী পেয়েছি বলেই আভি কে জরিয়ে দরে। আস্থা বলে আজকে তোকে বলে গেলাম যে যেটা করে সে তার ফল পাই তুই ও পাবি আমি অবিশ্বাস দিচ্ছি না তবে সময় মতো ঠিক তোর প্রাপ্য শ্বাস্তি পেয়ে যাবি বলেই আভি কে নিয়ে চলে যাই সারা রাস্তা কেনো কথা বলেনি আস্থা গাড়ি থেকে নেমে রুমে চলে যাই।

আস্থা রুমে গিয়ে কাঁদতে থাকে। আভি এসে আস্থার কাঁধে হাত রেখে বলে আমি যানি তোমার কস্ট হচ্ছে রিশাব এর সাথে অন্য কাউকে দেখে তাই না কিছুটা নরম গলায় বলে কারন আভির মনে হচ্ছে আস্থার মনে এখনো কোথাও রিশাব আছে। কিন্তু আস্থার উত্তর শুনে আভির মুখে হাঁসি ফুটে উঠে। আস্থা বলে আমি রিশাব এর জন্য কষ্ট পাচ্ছি না আভি আমি কষ্ট পাচ্ছি এটা ভেবে আমি কি করে এই প্রতারক জানোয়ার টার জন্য পাপার সাথে খারাপ খারাপ ব্যবহার করেছি তোমাকে তোমার অধিকার দেই নি এটা ভেবে নিজের প্রতি রাগ আর ঘৃনা হচ্ছে আভি পাপা ঠিক বলতো আমি কখনো মানুষ চিন্তে পারি নি জীবনে ভুল মানুষ বেঁচে নিলাম। হয়তো এই কারনে লোকে বলে বাবা মা যা করে সন্তান এর ভালোর জন্য করে বাবার পছন্দের বলে হয় তো তুমি বেস্ট। কিছু কোন আভি কে জরিয়ে দরে কাঁদতে থাকে আস্থা। আভি বলে আস্থা জান পাখি শুনু তুমি বাবার সাথে কথা বলো সব ঠিক হয়ে যাবে। আস্থা কান্না মুচে বাবার নাম্বার এ ডায়াল করে আস্থার বাবা বলে মামুনি তুমি ঠিক আছো। আস্থা কান্না কন্ঠে বলে পাপা। আস্থা বাবা জিজ্ঞাসা করে কি হয়েছে আমার বাচ্চা টার কাঁদছো কেনো মা কেউ কিছু বলেছে একবার বলো পাপা কি শেষ করে দিবো থাকে। আস্থা বলে আই এম সরি পাপা এতো দিন তোমার সাথে অনেক অন্যায় করেছি মাফ করে দাও আমি রিশাব এর চরিএ জেনে গেছি পাপা ও আমার সাথে প্রতারনা করেছে আমি সত্যি মানুষ চিন্তে পারি নি পাপা বলেই ফোন কেটে দিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরে। আভি পাশে বসে আবার ও আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে কাদো জান কাঁদলে ভিতর টা হালকা হবে বলেই আস্থার মাথায় চুমু খাই আস্তা আরো টাইট করে জরিয়ে দরে আভি কে।
চলবে।

#অবশেষে তুমি আমার
#পর্ব:18
#লেখনিতে: রিদিকা আফরোজ রোজা

দশ দিন হলো লন্ডন এসেছে আস্থা আভি আজকে ফিরে যাবে। আভি রুমে এসে দেখে আস্থা চুপ চাপ বসে আছে। আভি আস্থার পাশে বসে আস্থা কে এক হাতে জরিয়ে দরে বলে কি হয়েছে আস্থা? আস্থা আভির দিখে ঘুরে বলে আজকে চলে যাবো একটু ভালো করে সময় ও কাটাতে পারলাম না। আভি আস্থার গালে হাত রেখে বলে যদি কাজ না পড়তো তাহলে তো যেতাম না তবে কথা দিলাম পরের বার অন্য জায়গাতে যাবো। আস্থা বলে সত্যি? আভি বলে তিন সত্যি জান। এরপর সন্ধ্যর ফ্লাইট এ বাংলাদেশে চলে আসে। আস্থার শ্বশুরি রান্না করছে আর ভাবছে আস্থা তো কখনো আমাকে সকালে ফোন না করে তাকে না তাহলে আজকে মেয়েটার কি হলো । আচমকা পিছন থেকে কেউ জরিয়ে দরে বলে সারপ্রাইজ মম। আভির মা ঘুরে আস্থা কে দেখে কপালে চুমু খেয়ে বলে আমার মেয়েটা কে কতো মিস করেছি। আস্থা বলে আমি ও মম তাই চলে এলাম তখনি আভি বলে আমাকে মিস করোনি মম? আভির মা আভির কপালে চুমু দিয়ে বলে করেছি তো সোনা দুই জন কে। তখনি উপর থেকে আরশি এসে আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে আপুনি আই মিস ইউ। আস্থা আরোশি কে জরিয়ে দরে বলে আই মিস ইউ টু সিস। আস্থা বলে মম ডেড কোথায়? আভির মা বলে উপরে আছে। আস্থা এক দৌরে আভির বাবার রুমে গিয়ে পিছন দিয়ে আভির বাবার চোখ দরে। আভির বাবা হেসে বলে আস্থা মামুনি । আস্থা চোখ ছেরে বলে ডেড কি করে বুজলে তুমি আমি তো শব্দ না করে এসেছি । আভির বাবা বলে আমি দেখেছি তোকে। আস্থা আভির বাবার গলা জরিয়ে দরে বলে মিস ইউ ডেড। আভির বাবা বলে মিস ইউ টু বাচ্চা। এরপর আস্থা তার শ্বশুর কে নিয়ে নিচে নামে সবাই এক সাথে খেতে বসে।

আভির বাবা জিজ্ঞাসা করে কার জন্য কি আনবে। আরশি বলে আমার জন্য একটা নিউ আই ফোন ডেড। আভির বাবা আস্থা কে বলে তোমার জন্য কি মামুনি। আস্থা বলে আমার জন্য নিউ ল্যাপটপ ডেড তোমার ছেলের টা নতুন আমার টা পুরোনো আমার হিংসা হয় ওর টা দেখে। আভির বাবা বলে ওকে মামুনি নিয়ে আসবো বলেই খাওয়া শেষ করে বেরিয়ে পরে। আভি ও খাওয়া শেষ করে রুমে গিয়ে আস্থার কপালে চুমু খেয়ে জরিয়ে দরে বিদায় নিয়ে অফিস এ যাই। আস্থা আভির কপালে চুমু খেয়ে বলে সাবধানে যাবে গিয়ে ফোন করবে। আভি মাথা নারিয়ে চলে যাই। রাতের বেলায় আভির বাবা আর আভি আসে। আভির বাবা ডয়িং রুমে বসে আরশি আর আস্থা কে ডাকে দুইজন দুই পাশে বসে। আভির বাবা দুইজন এর হাতে দুইটা চকলেট এর বক্স দরিয়ে দেই এরপর আস্থার ল্যাপটপ আর আরশির ফোন দেই দুই জন খুশি হয়ে আভির বাবা কে জরিয়ে দরে এটা দেখে আভি আর আর আভির মা হাসে। এরপর আভির বাবা দুইটা ডায়মন্ড গলার সেট বের করে দুই জন কে দেই সেম ডিজাইন। আস্থা বলে ডেড এটা তো সেই গলার সেট যেটা আমি আর আরোশি তোমার ফোনে দেখেছি বলেছিলাম সুন্দর আর তুমি নিয়ে এলে। আভির বাবা বলে আমার মেয়েরা কিছু পছন্দ করেছে সেটা না দেই কি করে। দুইজন আবার জরিয়ে দরে বলে লাভ ইউ ডেড। এরপর সবাই ডিনার করে যার যার রুমে যাই। আস্থা রুমে ডুকে আভির সাথে কথা না বলে শুয়ে পরে। আভি বুজতে পারে তার বউ এর অভিমান হয়েছে আজকে ফোন না দেওয়াতে। আভি আস্থার পিছনে শুয়ে আস্থা কে জরিয়ে দরে তখনি আস্থা বলে একদম ছুবে না আমাকে। আভি বলে সরি বউ। আস্থা বলে লাগবে না সরো সারা দিন যেই ভাবে ছিলে এখন ও কথা না বলে সেই ভাবে থাকবে। আভি এবার বলে জান আজকে বেশি কাজ ছিলো বিশ্বাস করো লন্ডন এ থাকার জন্য এই কানের কাজ মিস হয়েছে তাই সুজুক পাই নি। আস্থা অভিমান করে বলে বিয়ের এক বছর ও হয়নি এখনি ভুলে গেলে বাসাই বউ আছে ও আমি তো পুরোনো হয়ে গেছি কান্না জরানো কন্ঠে আস্থা বলে। আভি এবার জোর করে আস্থা কে তার দিখে ঘুরিয়ে দেখে আস্থার চোখে জল। আভি আস্থার চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে কপালে চুমু খেয়ে নিজের বুকের সাথে আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে সরি বউ সত্যি অনেক কাজ ছিলো আমি আজকে সারা দিন এক বিন্দু পানি খাওয়ার সুজুগ পাই নি। আর তুমি বলছো তুমি পুরোনো হয়ে গেছো না জান আমার কাছে আমার আস্থা সারাজীবন এক রকম থাকবে। আজকের জন্য সরি আর হবে না তবুও কেঁদো না প্লিজ কথা দিলাম আর এই ভুল করবো না। আস্থা বলে মনে থাকে যেনো। আভি বলে মনে থাকবে বউ। আস্থা এবার আভির বুক থেকে মুখ তুলে বলে সারা দিন খাও নি কেনো আমি না তোমাকে বলেছি ঠিক সময় খেতে কাজ পরে করবে আমার কথা কেনো শুনোনা কালকে থেকে তো অফিসে যাচ্ছি দেখবো কি করে অনিয়ম করো তুমি। আভি মুচকি হেসে বলে আর অনিয়ম হবে না মেডাম আপনি যা বলবেন আপনার এই অধম বর তাই করবে তবুও আপনার মুখে হাসি দেখতে চাই। আপনার মুখের হাঁসির জন্য নিজের জীবন ও দিতে রাজি। আস্থা বলে তোমার জীবনের বিনিময়ে কোনো হাঁসি আমার চাই না এরপর আরো কিছু কোন গল্প করে দুইজনে ঘুমিয়ে পরে।
চলবে…..