অবশেষে তুমি আমার পর্ব-২১ এবং শেষ পর্ব

0
635

#অবশেষে তুমি আমার
#পর্ব:শেষ পর্বের ( প্রথম অংশ)
#লেখনিতে:রিদিকা আফরোজ রোজা

আভির কেয়ার আর ভালোবাসাই কেটে যাই আরো দুই এর বেশি। তবে আট মাস থেকে আস্থা আরো বেশি জ্বালিয়েছে আভি কে কখনো বাহিরে যাওয়ার আবদার রাত তিনটায় উঠে গল্প করার আবদার যখন তখন এটা ওটা খাওয়ার বাইনা আভি বিরক্ত না হয়ে হাসি মুখে সামলিয়ে নিয়েছে আর সারা দিন যে কতো বার রাগ ভাঙ্গাতে হয় আস্থার হিসেব নেই। দুই দিন পর আস্থার ডেলিভারি ডেট। রাতের বেলা দুইজন শুয়ে আছে আভি পিছন থেকে আস্থা কে দরতে গেলে বার বার চারিয়ে নেই। তবুও আভি দরতে যাই আস্থা এবার রেগে বলে বার বার হাত সরিয়ে দিচ্ছি তবুও কেনো ধরছো আমার ভালো লাগে না বলেই কেঁদে দেই। আস্থার কথায় একটু ও মন খারাপ হয়নি আভির কারন এটা দুই মাস দরে চলছে মুড সুইং। আভি উঠে আস্থা কে তুলে বসিয়ে আস্থার গালে হাত দিয়ে বলে কি হয়েছে জান খারাপ লাগছে? আস্থা আরো জুরে কেঁদে দেই আর বলে আমার বিষন কষ্ট হয় আভি আমি শুতে পারি না বসতে পারি না ঘুমাতে ও পারি না। আই এম সরি আমি এই ভাবে বলতে চাইনি কিন্তু কি করবো আমার খুব কষ্ট হয় আমার আসে পাশের কিছুই ভালো লাগে না। আমি আস্থার চোখের পানি মুছে দিয়ে আস্থার মাথা বুকে জরিয়ে দরে বলে তোমার ব্যবহার এ আমাকে একটু ও কষ্ট দেই না আস্থা আমি বুজতে পারছি তোমার কষ্ট টা তুমি যতো টা কষ্ট পাচ্ছো তার অর্ধেক ও আমার হয় না তাহলে কেনো বিরক্ত হবো বলো। আস্থা কিছু না বলে আভি কে জরিয়ে দরে কাঁদতে থাকে এই ভাবে না ঘুমিয়ে কেটে যাই দুইজন এর রাত।

আজকে আস্থার ডেলিভারি ডেট আভি আস্থা কে রেডি করিয়ে আস্থার পাশে বসে আস্থার দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে চুমু খাই আর বলে একদম ভয় পাবে আমি পাশে আছি তো তাই না দেখবে বেবি আর তুমি একদম ঠিক থাকবে। আস্থা বলে আমি যে ভয় পাচ্ছি বুজলে কি করে? আভি বলে আমার বউ এর মুখ দেখে বুঝতে পেরেছি আমি এরপর আভি আস্থা কে নিয়ে বেরিয়ে যাই হসপিটালের উদ্দেশ্যে। হসপিটাল যেতে আস্থা কে স্টেকচার এ শুয়ে দেই কারপ ডক্টর রা সব রেডি করিয়ে রেখেছে। আস্থা আভির হাত দরে রাখে চারে না। আভি বলে ভয় পেও না আমি আছি তো জান বলেই আস্থার কপালে চুমু খেয়ে বলে আমার পিন্সেস কে নিয়ে তারা তারি আমার কাছে ফিরে আসবে। আভির কথা শুনে আস্থা জল ভরা চোখে থাকাই। আস্থার চোখের জল আর আস্থা কে হারানোর ভয় যেনো আভি কে ঘিরে দরেছে আভি হাঁসি মুখে থাকলে ও আস্থার সামনে আভির ভিতরে কি হচ্ছে সেটা আভি যানে। ডক্টর আস্থা কে নিয়ে যাই আস্তে আস্তে আভির হাত থেকে আস্থার হাত আলাদা হয়ে যাই যতো কোন আভি কে দেখা যাই ততো কোন আস্থা জল ভরা চোখে থাকিয়ে তাকে আস্থা কে ভিতরে নিতেই আভি আর চোখের জল দরে রাখতে পারেনি সাথে সাথে নিচে বসে কেঁদে দেই। আভির বাবা মা আর আস্থার বাবা আভির পিঠে হাত বুলিয়ে বলে উঠে কাঁদে না বাবা আস্থা আর তোমার বেবি ঠিক ফিরে আসবে অযতা চিন্তা করছো দেখো কতো কতো সিজার হচ্ছে সবাই তো সুস্থ আছে। আভি যতো দিন হায়াত আছে ততো দিন মানুষ মরে না তেমনি আস্থার যতো দিন হায়াত আস্থা ততো দিন বাঁচবে তুমি আমি সবাই হায়াত যতো দিন ততো দিন বাঁচবো তাই চিন্তা বাদ দাও দোয়া করো। দুই ঘন্টা দরে সবাই অপেক্ষা করছে ডক্টর বের হচ্ছে না। আভি এবার ভিতু কন্ঠে বলে ডেড ডক্টর কেনো বের হচ্ছে না ? আভির বাবা বলে একটু অপেক্ষা করো বের হবে ঠিক তখনি ডক্টর বের হয়ে আভি কে ডাকে। আভি দৌরে ডক্টর এর কাছে যাই দেখে ডক্টর এর খুলে তোয়ালে দিয়ে মুরানো একটা বাচ্চা। ডক্টর বলে congratulations মিঃ চৌধুরি আপনার মেয়ে হয়েছে। ডক্টর এর কথা যেনো আভির কানে যাই নি আভি বলে ডক্টর আমার আস্থা কেমন আছে ও ঠিক আছে?। ডক্টর বলে একদম ঠিক আছে চিন্তা করবেন না আসলে আপনার বেবি টা অনেক বড়ো এটা বের করতে অনেক সময় লেগে গেছে বেবির পজিশন ও ছিলো উল্টো তবে মিসেস চোধুরি সেন্স আসতে দেরি আছে উনি অনেকটাই দুর্বল হয়ে গেছে তাই ঘুমের ইনজেকশন দিয়েছি। আভি এবার বেবি কে খুলে নেই ভালো করে থাকিয়ে দেখে নিজের মেয়ে কে একদম সাদা ধবধবে চোখ দুটো বড়ো বড়ো গোলাপী ঠুঁট মোটা মোটা হাত পা একদম কিউট এর ডিব্বা আভি বেবির হাতে চুমু খেয়ে বুকের সাথে মিশিয়ে কেঁদে দেই আর বলে মম ডেড আমার বাচ্চা আমার পিন্সেস এরপর একে একে সবাই বেবি কে কুলে নেই। আভি দুই ঘন্টা দরে বসে আছে বেবি কে নিয়ে আস্থার কেবিন এ পাঁচ ঘন্টা হয়ে গেছে আস্থার সেন্স আসছে না এই দিখে বেবি কাঁদছে খাওয়ার জন্য । আভি বাবু কে খুলে নিয়ে বলে কাঁদে না পিন্সেস মা তো ঘুমোচ্ছে এখন ও উঠে না বেবির যে খিদে পেয়েছে তার মায়ের খেয়াল নেই । তোমার মাম্মী কে একদম মেরে দিবো কেনো আমার বাচ্চা টা কে কাঁদাচ্ছে। বেবি কি বুজতে পেরেছে কে যানে কান্না শেষ। একটু পর সেন্স আসে আস্থার আস্থা চেয়ে দেখে আভি বেবি কে নিয়ে হাঁটছে আর কথা বলছে আস্থা মুচকি হেসে বলে আভি । আস্থা ডাক শুনে আভি এসে আস্থার কাছে এসে বেবি কে পাশে রেখে আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে কখোন থেকে বেবি আর আমি অপেক্ষা করছি তোমার জন্য তোমার মেয়ে আমাকে জ্বালিয়ে পেলেছে খাবে বলে নাও আমাদের পিন্সেস কে খাইয়ে দাও। আস্থা বেবি কে খুলে তুলে চুমু খাই এরপর পিডিং করাই আর আভি আস্থা কে জরিয়ে দরে আছে এক হাতে আর এক হাতে বেবি কে আদর করছে। পিডিং শেষ হতেই আস্থা আভি আস্থার কপালে একটা চুমু দেই বাবুর কপালে একটা চুমু দেই। আভি আস্থা কে উদ্দেশ্যে করে বলে thank you dear আমাকে পিন্সেস গিফ্ট করার জন্য । আভির কথা শুনে আস্থা বলে তোমার ও ক্রেডিট আছে ও আসাতে।

এই দিখে রিশাব এর চোখে পানি আজকে হসপিটালে গিয়েছিলো ডক্টর বলেছে রিশাব কখনো বাবা হতে পারবে না। এটা শুনে যেনো রিশাব এর পায়ের তলার মাটি সরে যাই। রিশাব ভাবতে থাকে আস্থার সাথে কথা অন্যায় এর কথা আস্থার পবিএ ভালোবাসা কে সে ঠকিয়েছে যার জন্য আল্লাহ এতো বড়ো শ্বাস্তি দিলো কারো মন ভাঙ্গার যে এমন শ্বাস্তি রিশাব বুঝতেই পারেনি এই দিখে যার জন্য রিশাব এতো কিছু করেছে আস্থা কে ঠকিয়েছে সেই নিধি আজ রিশাব এর পাশে নেই। নিধি যখন যানতে পারলো এই কথা তখন রিশাব কে শান্ত না দেওয়ার বদলে রিশাব কে উদ্দেশ্যে করে বলে আমি তোমার সাথে থাকতে পারবো না রিশাব যার একটা সন্তান দেওয়ার যোগ্যতা নেই সেই পুরুষ এর সাথে আমি থাকতে পারবো না আমাকে ডিভোর্স দাও আমি আকাশ কে ভালোবাসি। রিশাব বলে কি? নিধি বলে ঠিক শুনেছো তাই ডিভোর্স দিয়ে দাও বলেই চলে যাই আকাশ এর সাথে। রিশাব নিচে বসে চিৎত্কার করে কেঁদে বলে দেখো আস্থা তোমার কথা ঠিক পাপ কখনো কাউকে চারে না আমি যেই অন্যায় টা তোমার সাথে করেছি সেই একি অন্যায় আমার সাথে হয়েছে হয়তো তোমার ও ঠিক এমনি লেগেছিলো যখন আমি তোমার সাথে প্রতারনা করি। রিশাব চোখের পানি মুছে বলে আমি আজকে বাংলাদেশে যাবো আস্থার কাছে মাফ চাইতে হবে যদি মাফ না চাই তাহলে নিজের কাছে অপরাধী হয়ে থাকবো। রাত দশটার ফ্লাইট এ বাংলাদেশে উদ্দেশ্যে রওনা দেই রিশাব

আরো দুই দিন আভি আস্থা কে থাকতে হবে হসপিটালে। তাই সবাই চলে গেছে আভি আর আস্থা বেবি কে শুয়ে দিয়ে দুই পাশে বসে আদর করছে তখনি চিনা পরিচিত কন্ঠ শুনে পিরে থাকাই দুইজন । রিশাব কে দেখে একে অপরের দিখে থাকাই আস্থা বলে তুমি কেনো এখানে এসেছো? রিশাব বলে আমি তোমার কাছে মাফ চাইতে এসেছি তোমাদের মাজে বাঁধা হয়ে দারাতে না আমার সেই যোগ্যতা ও নেই বলেই আস্থার পায়ের কাছে বসে বলে মাফ করে দিও আস্থা আল্লাহ আমার পাপের শ্বাস্তি দিয়ে দিয়েছে আমি তোমার সাথে যেটা করেছি নিধি ও আমার সাথে সেটাই করছে শুধু মাএ আমি বাবা হতে পারবো না বলে হয়তো তোমার সাথে প্রতারনা করার জন্য আল্লাহ এই শ্বাস্তি দিয়েছে।
চলবে….

#অবশেষে তুমি আমার
#লাস্ট পর্ব
#লেখনিতে:রিদিকা আফরোজ রোজা

আস্থা বলে কি হয়েছে তোমার? রিশাব বলে ডক্টর বলেছে আমি কখনো বাবা হতে পারবো না আর তাই নিধি আমাকে ছেরে চলে গেছে মানুষ বলে না পাপ বাপ কে ও চারে না আমি আমার পাপের শ্বাস্তি পেয়েছি আমাকে তুমি মাফ করে দাও বলেই আস্থার পায়ের কাছে বসে পরে। আস্থা আভির দিখে থাকাই আভি মাথা নারিয়ে বলে মাফ করে দিতে। আস্থা বলে উঠো রিশাব আমি আরো আগে তোমাকে মাফ করে দিয়েছি। আমি চেয়েছিলাম তুমি শ্বাস্তি পাও তবে এইরকম আমি চাইনি। রিশাব বলে ধন্যবাদ আসছি আমি। আভি রিশাব কে উদ্দেশ্যে করে বলে বলে কোথায় যাবে? রিশাব উওর দেই যেই কান থেকে এসেছি। আভি উঠে গিয়ে রিশাব কে জরিয়ে দরে বলে তুমি কোথো যাবে না আমাদের সাথে থাকবে । আর কে বলেছে তুমি বাবা হতে পারবে না আমাদের পিন্সেস এর বড়ো বাবা হবে তুমি পারবে না। আভির কথা শুনে রিশাব আভি কে জরিয়ে দরে বলে তোমার মতো মানুষ হয় না আভি নিজের স্ত্রী প্রাক্তন তাও তোমার স্ত্রী কে ঠকিয়েছে তার জন্য এতো টা ভাবলে। রিশাব বলে তুমি অন্যায় করেছো তার শ্বাস্তি পেয়েছি এখন অনুতপ্ত তাই তোমাকে ভুল বুজার কোনো কারন নেই তুমি আমাদের সাথে থাকবে ।

আস্থা মনে মনে বলে এতো ভালো কেনো তুমি আভি সবার দোষ তুমি সহজে মাফ করে দাও তোমার মতো স্বামী পেয়ে আমি ভিষন গর্বিত আভি। আভি রিশাব এর খুলে তাদের মেয়েকে দেই রিশাব বাবু কে জরিয়ে দরে কেঁদে দেই।

কেটে যাই পাঁচ বছর পাল্টে গেছে অনেক কিছু আভির বাবা মা মারা গেছে। আরশির বিয়ে হয়ে গেছে তার ও একটা ছেলে আছে। আভি আস্থার মেয়ে আইরার পাঁচ বছর বয়স। আস্থা আবার কনসিভ করেছে। তবে বদলাই নি রিশাব এর জীবন ।রিশাব বাবা হতে পারবে না ফলে আর দ্বিতীয় বিয়ে করে নি । রিশাব এর বেঁচে থাকা এখন শুধু আইরা কে ঘিরে। অতীত নিয়ে ভাবছে রিশাব তখনি আয়রা পাপা বলে ডাকতে অতীত থেকে ফিরে আসে রিশাব। আইরা কমরে হাত দিয়ে আঙ্গুল তুলে বলে পাপা তুমি তো খুবি পচা অফিস থেকে এসেছো ফ্রেশ হও নি জীবানু আছে শরির এ। আইরার কথি শুনে রিশাব হেসে আইরা কে কুলে নিয়ে বলে ওরে আমার পাকা বুড়ি মা টা এতো বুজো। আইরা বলে তো না বুজে কি করবো তুমি তো কিছু বুজোনা। এখন গিয়ে ফ্রেশ হও আমি নিছে যাচ্ছি বাবা এসে গেছে মনে হয় বলেই রিশাব এর গালে চুমু দিয়ে দৌরে চলে যাই।

আভি আসতে আইরা দরজা খুলে দিতেই আভি আইরা কে কুলে নিয়ে বলে গুড ইভিনিং পিন্সেস মাম্মী আজকে কি কি করেছে তোমার সাথে? আইরা এবার নালিশ করতে থাকে তার মায়ের নামে। আভি বলে দারাও তোমার মাম্মীর বিচার করছি তুমি তোমার পাপার রুমে যাও। আভি রুমে ডুকতে আস্থা প্রতিদিন এর মতো আভি কে জরিয়ে দরে বলে আই মিস ইউ আভি। আভি ও আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে আই মিস ইউ টু জান । আস্থা আভির গলা জরিয়ে দরে বলে ফ্রেশ হয়ে আসো যাও একটা গুড নিউজ আছে। আভি বলে তার আগে এনার্জি দাও। আস্থা আভির কপালে চুমু খাই আভি হেসে ওয়াশ রোমে ডুকে যাই । রিশাব ফ্রেশ হয়ে বের হয়ে আইরা কে নিয়ে ডিনার করে আইরা কে বিছানাতে শুয়ে দিয়ে আদ শুয়া হয়ে আইরার মাথায় হাত বুলিয়ে দেই আইরা ঘুমিয়ে যাই। রিশাব আইরার কপালে চুমু খেয়ে বলে তুইআমার পৃথীবি আমার বেঁচে থাকার অক্সিজেন পিন্সেস বাবা না হতে পারার শূন্যতা তুই আমাকে ভুলিয়ে দিয়েছিস আমার পৃথীবিতে শুধু তুই থাকবি পিন্সেস বলেই আইরা কে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পরে।

আভি আর আস্থা বসে আছে দোলনাতে। আস্থা আভির কাঁধে মাথা রেখে চাঁদ দেখছে। কিছু কোন নিরব থেকে আস্থা বলে এটা দেখো তো বলেই একটা রিপোর্ট এগিয়ে দেই। আভি রিপোর্ট টা খুলে পড়তে ওর মুখে হাসি ফুটে উঠে। আভি বলে এটা সত্যি আস্থা আমি আবার বাবা হবো আস্থা বলে ইয়েস। আভি আস্থা কে জরিয়ে দরে বলে আই লাভ ইউ জান তুমি আবার ও আমাকে আরেটা বেস্ট গিফ্ট দিলে বলে আস্থার কপালে চুমু খেয়ে বুকে জরিয়ে নেই…..

সমাপ্ত