অবেলায় ভালোবাসি পর্ব-০২

0
564

#অবেলায়_ভালোবাসি
#মারিয়া_আক্তার
#পর্ব_০২

রৌদের তেজে তপ্ত ধরণী। এখন সময়টা গ্রীষ্মকাল হওয়ায় গরমের মাত্রাটা খুব বেশি। বৃষ্টিরও দেখা নেই অনেকদিন হলো। কাঁধে কলেজব্যাগ ঝুলিয়ে হাঁটছে তাহা আর লিসা। লিসা বকবক করছে। আজকে সাইকেল আনেনি তাহা। তাই দু’জনকে হেঁটে হেঁটেই বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।

“জানিস তাহা আমি না কালকে মোক্তার কাকার বাড়ির সামনে দিয়ে এসেছি। দেখলাম ওনার ছাদবাগানে অনেক সবজি, ফল ফলিয়েছেন। তার মধ্যে তোর প্রিয় কাঁচাপাঁকা টমেটোও আছে।”

তাহা হাঁটা থামিয়ে লিসার দিকে ভ্রুঁ কুঁচকে তাকায়।

“তুই দেখেছিস কিভাবে? ওনার ছাদবাগানের ফল বা সবজি কি নিচ থেকে দেখা যাবে নাকি?”

“আরে, দেখেছি বলেইতো বলছি। রাস্তা থেকে স্পষ্ট দেখা যায়। চল আজকে তোকে দেখাবো। টসটসে কাঁচাপাঁকা টমেটো। ভাবতেই আমার জিহ্বায় পানি চলে আসছে। চল আজকে চুরি করি।”

“ছাদে উঠবো কিভাবে? মোক্তার কাকাতো তোর জন্য ছাদের দরজা খুলে বসে আছে।”

একপ্রকার গা ছাড়া ভাব নিয়ে বলে তাহা। বিপরীতে লিসা কিছুক্ষণ ভাবে। হঠাৎ করে লাফিয়ে উঠে।

“আরে, মোক্তার কাকার বিল্ডিংয়ের পাশেইতো দেখলাম কয়েকটা সুপারি গাছ আছে। একটা বেয়ে উঠে গেলেই হলো।”

“ধরা খেলে? তখন সোজা বাসায় বিচার নিয়ে হাজির হবেন উনি। তখন?”

লিসা অবাক হওয়ার ভান করে বলে,

“তুই এসব নিয়ে কবে থেকে এত ভাবতে শুরু করেছিস? তুই এসব ভয় পাস? দিনে দু’বেলা তোর নামে বিচার যায় আন্টির কাছে। তুই সেসবে পরোয়া করেছিস কখনো? করিসনি তো? তাহলে আজ এসব নিয়ে ভাবছিস কেন?”

“আমি এসব নিয়ে ভাবছি না। আম্মুর কাছে কে গিয়ে কি বললো তাতে আমার কিছু যায় আসে না। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়।”

“কোথায় সমস্যা?”

“ছাদে উঠলাম। টমেটোও নিলাম। এবার এই টমেটোর জন্য মোক্তার হালদার পুরো গ্রাম এক করবেন। সমস্যা সেটাও না। সমস্যা হলো আফিয়ার ভাইটাকে নিয়ে। মোক্তার কাকার বাড়ির পিছনের বাড়িটাইতো আফিয়াদের বাড়ি। এখন আমাদের চুরি করার ঘটনাটা যদি ওই আহিরের কানে যায় বা উনি যদি দেখতে পান। তখনতো এটার জন্য আমাকে অনেক পঁচাবেন। আবার কোচিংয়ে আমাকে মাত করার একটা উপায়ও পেয়ে যাবেন। তা কি করে হতে দিই আমি। আমি তাহানিয়া ফেরদৌসি। এই প্রথম কেউ আমায় মেরেছে। তার শোধতো আমি নিবোই। তাকে আমায় পঁচানোর কোনো সুযোগ আমি দেবো না। আমি এত সহজে তাকে জিততে দেবো না।”

লিসা মাথায় হাত দিয়ে বলে,

“উনি আমাদের টিচার এখন। তুই পড়া পারিসনি তাই মারতেই পারে। এটা নিয়ে এতকিছু কেন ভাবছিস? আর উনি জানলেই বা কি? তুই কি কোনোকিছুর ধার ধারিস নাকি?”

“তাও। আমি এখানে টমেটো চুরি করতে পারবো না। কাল কোচিংয়ে গিয়ে আমার সর্বপ্রথম আহিরের মারের শোধ তুলতে হবে।”

লিসা বুঝে গেছে এই মেয়েকে দিয়ে এখন টমেটো চুরি করানো যাবে না। কিন্তু তার যে টমেটো খেতে খুব ইচ্ছা করছে। টমেটো খাবে সে। ওই মোক্তার হালদারের বাগান থেকেই খাবে। কি টসটসে টমেটোগুলো। অনেক ভেবেচিন্তে একটা প্ল্যান তৈরি করলো লিসা।

“এই প্রথম তাহানিয়া ফেরদৌসিকে দেখলাম শত্রুর ভয়ে মুখ লুকাচ্ছে। ছিঃ তোকে এখন আমার বান্ধবী বলতেও লজ্জা লাগছে। ওই সামান্য আহির পাটওয়ারিকে তুই ভয় পাচ্ছিস? যাহ তোর দ্বারা কিচ্ছু হবে না। তোর ক্ষমতা দেখা হয়ে গেছে আমার।”

লিসার কথায় তাহার মাথা গরম হয়ে যায়। তার ক্ষমতা নিয়ে কিছু বললে সেটা সে ঠিক সহ্য করতে পারে না। ধুপধাপ পা ফেলে হেঁটে যায় মোক্তার হালদারের বাড়ির সামনে। বাড়িটি একতলা। এই বাড়ির ছাদেই মোক্তার হালদার হরেক রকমের শাকসবজি চাষ করেছেন। সাথে টবে বিভিন্ন রকমের ফল গাছও আছে। তাহা কাঁধের ব্যাগটা নিয়েই সুপারি গাছ বেয়ে বেয়ে অনায়াসেই ছাদে উঠে যায়। এসব তার বা হাতের খেল। রাস্তায় দাঁড়িয়ে লিসা হাসছে। তার প্ল্যান সফল হল। এবার টমেটো খাওয়া যাবে জমিয়ে। তাহা ছাদে উঠে চারদিকে তাকিয়ে দেখে কেউ আছে কিনা। না নেই। এই সুযোগে সে টমেটো ছিঁড়তে লাগল। গুণে গুণে দশটা টমেটো ছিঁড়েছে সে। সবগুলো ব্যাগে ঢুকাচ্ছে। শেষ টমেটোটায় যখনই হাত দেবে তখনই পিছন থেকে কেউ ডেকে উঠে।

“এই মেয়ে, কে তুমি? আর এভাবে ছাদে উঠে টমেটো ছিঁড়ছো কেন?”

কথাগুলো শুনে তাহা আস্তে আস্তে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকায়। তাকিয়ে যেন সে এক ধাক্কা খায়। তার পিছনে আহির দাঁড়িয়ে আছে। মোক্তার হালদারের ছাদে আহির কেন? প্রশ্নটা মনে মনে করে তাহা।

“কথা বলছো না কেন? এখানে কেন এসেছো তুমি? আর টমেটোই বা ছিঁড়ছো কার কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে?”

তাহা সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে দু’দন্ড ভাবে।

“আপনি নিজে অন্যের ছাদে কেন? আবার আমাকে প্রশ্ন করছেন? এটাতো আপনার বাড়ি নয়।”

“হোয়াট? নিজে চুরি করছো আবার আমাকে জিজ্ঞেস করছো আমি কেন এখানে? ওয়েট এক্ষুণি তোমার চুরি বের করছি আমি। মোক্তার কাকা! মোক্তার কাকা।”

আহির ছাদের দরজার কাছে গিয়ে মোক্তার হালদারকে হাঁক ছেড়ে ডাকে। মোক্তার হালদার হুড়োহুড়ি করে ছাদে উঠে আসেন।

“কি হইছে আহির? এমনে ডাকতাছো কেন? তোমারে না পাঠাইলাম আমার মালটা গাছটা দেখতা। তাইলে এমন চিল্লাইয়া আমারে ডাকলা কেন?”

মোক্তার হালদার আহিরের দিকে তাকিয়ে প্রশ্নগুলো করে চোখ ঘুরিয়ে পাশে তাকান। তার ছাদে জলজ্যান্ত তাহা’কে দেখে উনি স্তম্ভিত হন।

“এই মাইয়্যা! তুমি আমাগো চেয়ারম্যানের মাইয়্যাডায় না? তুমি আমার ছাদে কি করতাছো? আর ছাদে উঠছোই বা কেমনে?”

“চাচা, আমি আপনাকে এজন্যই ডেকেছি। আমি ছাদে এসে দেখি এই মেয়েটা আপনার টমেটো গাছ থেকে টমেটো ছিঁড়ছে।”

আহিরের কথা শুনে মোক্তার হালদার আৎকে উঠেন। ওনার স্বাদের টমেটো। এখান থেকে একটা টমেটোও উনি ওনার বউকে ছিঁড়তে দেন না। সেখানে এই মেয়েটা ওনার টমেটো ছিঁড়ে নিয়ে যাচ্ছে।

“এই মাইয়্যা, তুমি কার কাছ থেইকা কইয়্যা টমেটো ছিঁড়ছো?”

তাহা মোক্তার হালদারের দিকে কোনো কোনো ভ্রুক্ষেপ ছাড়াই তাকিয়ে আছে। যেন সে চুরি করছে সেটা স্বাভাবিক এবং মোক্তার হালদারের কথাগুলোও স্বাভাবিক।

“খাঁড়াও আহির। আমি এহণি এর মা’র কাছে গিয়া কইতাছি। আমার বাগান থেকে টমেটো চুরি করা। আর এই মাইয়্যা ছাদে উঠছো কেমনে তুমি?”

আহির মোক্তার হালদারকে একমিনিট দাঁড়াতে বলে ছাদের কার্ণিশে দাঁড়িয়ে রাস্তায় উঁকি দেয়। সেখানে লিসাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে কিছুটা আন্দাজ করে সে। লিসার চোখেমুখে ভয় বিদ্যমান। বারেবারে উপরের দিকে পা’দুটো উঁচু করে তাকাচ্ছে। আহিরকে দেখেই সোজা হয়ে যায়। আর ক্যাবলামার্কা হাসি দেয়। লিসা বুঝে যায় তাহা ধরা পড়ে গেছে। তাহা ধরা পড়লে কোনো সমস্যা নেই। কারণ তাহা দু’বেলা এসবের সম্মুখীন হয়। কিন্তু এখন যদি তাহার সাথে সাথে লিসাও ফেঁসে যায়, তাহলে লিসার কপালে দুঃখ আছে। এখানকার স্থানীয় হাই-স্কুলের হ্যাডমাষ্টারের মেয়ে সে। অনেক সম্মানীয় ব্যক্তি তার বাবা। যদি মোক্তার হালদার এই চুরির জন্য তার বাবার কাছে বিচার দেন, তাহলে লিসার রক্ষা নেই। বাবা এমনিতেই তাহা’কে পছন্দ করে না। এখন যদি জানে তাহা’র সাথে সেও টমেটো চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে তাহলে বাবা লিসাকে মেরেই ফেলবেন। যদিও চুরি করার জন্য সে তাহা’কে বলেছে তাহা নিজে যায়নি। এটা শুনলেতো বাড়ি ছাড়া করবে। লিসা এসব ভেবে সর্বশক্তি দিয়ে দৌঁড় মারে। বেঁচে থাকলে কাল তাহা’র সাথে দেখা হবে। আহির লিসার দৌঁড়ে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। এত বড় মেয়ে এভাবে দৌঁড়াচ্ছে?

“এই মেয়ে তুমি কিভাবে ছাদে উঠেছো বলো?”

আহিরের প্রশ্নে তাহা চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। সে এপর্যায়ে একেবারে নিশ্চুপ হয়ে আছে। আড়চোখে একবার রাস্তার দিকে উঁকি দিয়ে দেখে লিসা আছে কিনা? না লিসা নেই। তা দেখে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তাহা।

“তুমি কি জিগাও এরে? এই মাইয়্যা চলো তোমার মা’র ধারে। আইজ তোমার বিচার হইবো। আহির বাবা তুমিও একটু চলোতো।এই মাইয়্যা আগে যাও।”

তাহাকে ধমকে লোকটা বলে উঠেন। তাহা নির্বাক থাকে কিয়ৎক্ষণ। তারপর হেলতে দুলতে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নেমে যায়। আহির আর মোক্তার হালদার পিছন পিছন আসেন।

___________

“আমায় তুই শান্তি দিবি না, তাই না? আমায় শান্তিতে বাঁচতে দিবি না তুই। আমি মরলে শান্তি হবে তোর?”

“আম্মু এসব ইমোশনাল ড্রামা বন্ধ করোতো।”

“চুপ। আর একটা কথাও না।”

তাহা’কে ধমকে উঠে সোনিয়া বেগম। সোনিয়া বেগম কি বলবেন বুঝতে পারছেন না। ওনার মেয়েটার কিছুদিন পর আঠারো বছর হবে। তাই এই মেয়ের মধ্যে কোনো পরিবর্তন নেই। প্রত্যেকদিন ওনার মেয়ের নামে নালিশ আসবে। আজকে ওখানে মারামারি করেছে, কালকে ওখানে কারো সাথে বেয়াদবি করেছে। কি করবেন তিনি এই মেয়েকে নিয়ে? আজকে মোক্তার হালদারের সাথে আহিরও এসেছে ওনার মেয়ের নামে নালিশ নিয়ে। ছিঃ কি ভাবছে আহির ওনাদের সম্পর্কে? আহির ওনার আত্মীয় হয়। কখনো তাহা’দের ঘরে আসেনি সে। আজ আসলো তাও কেন? তাহা’র নামে নালিশ নিয়ে।

“ভাবি, আপনি আপনার মেয়েকে ভালো করে বুঝিয়ে দিন। ও যদি আর একদিনও আমার বাগানে চুরি করতে না যায়। তাহলে কিন্তু এর ফল সেদিন ভালো হবে না। আজ ছেড়ে দিলাম। চেয়ারম্যানের মেয়ে বলে কিন্তু সেদিন ছেড়ে দেবো না।”

মোক্তার হালদার কথাটা বলে তাহা’র দিকে রাগীদৃষ্টিতে তাকান। তাহা তা দেখে একটা ডো’ন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে মুখটা ঘুরিয়ে নেয়।

“ওর হয়ে আমি ক্ষমা চাচ্ছি ভাইজান। আর কখনো ও এমন করবে না। আজকে ওর এমন হাল করবো, যে ভবিষ্যৎে এসব কিছু করার আগে আজকের কথা ভাববে।”

সোনিয়া বেগম কথাটা বলে তাহা’র হাত ধরে টানতে লাগলেন। ঘরে নিয়ে তাহা’র ব্যবস্থা করবেন আজ। তার আগেই আহির ‘কাকিমা’ বলে ডেকে উঠে। সোনিয়া বেগম দাঁড়িয়ে গিয়ে তাহা’র হাতটা ধরে রেখে বলে,

“বলো বাবা। কিছু বলবে?”

আহির খানিকিটা ইতস্তত করে বলে,

“তাহা ছাদে কিভাবে উঠলো, সেটা জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু কিছু বলেনি। আপনি একটু জিজ্ঞেস করে দেখুনতো।”

তাহা রোষানল দৃষ্টিতে তাকায় আহিরের দিকে। শোধ নেওয়ার ছিল একটার, কিন্তু এখন দুইটার শোধ নিবে সে।

“কিরে, বল কিভাবে ছাদে উঠেছিস?”

মায়ের কথার বিপরীতে তাহা চুপ করে থাকে। সোনিয়া বেগম ঠাস করে তাহার গালে থাপ্পড় মারেন। আজকে মেয়ে সমস্ত সীমা ছাড়িয়ে গেছে। তাহা’কে থাপ্পড় মারতে দেখে আহির মাথা নিচু করে ফেলে। এত বড় মেয়েকে থাপ্পড় মারাটা উচিৎ হয়নি সোনিয়া বেগমের। তাহা ছলছল চোখে মায়ের দিকে তাকায়। কিন্তু নিশ্চুপ থাকে সে। সোনিয়া বেগম এবার তাহা’কে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বলেন,

“কথা বলছিস না কেন? কিভাবে ছাদে উঠেছিস তুই?”

তাহা আস্তে আস্তে করে বলে,

”সুপারি গাছ বেয়ে।”

তাহা’র জবাব শুনে আহিরের চোখ রসগোল্লার ন্যায় হয়ে যায়। এটা মেয়ে না অন্যকিছু? সোনিয়া বেগম মাথাটা নিচু করে ফেলেন। এই মেয়ের জন্য ওনার মানইজ্জত কোনোটাই থাকবে না।

”দেখছো আম্মু, তুমি না সবসময় বলো আমি যাতে তাহা’র মত হই। ওর মত ভালো মনের হই। ওর কাহিনী দেখেছোতো? ওর মত হলে আমিও অন্যের গাছ থেকে টমেটো চুরি করতাম, আমিও সুপারি গাছ বেয়ে অন্যের ছাদে উঠতাম।”

খানিকটা মুখ বাকিয়ে কথাটা বলে সাথী। সম্পর্কে সে তাহা’র সৎবোন। অবশ্য মেয়েটার সাথে তাহা’র রক্তের কোনো সম্পর্ক নেই। তাহা’র বাবা যেই মহিলাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তার আগের ঘরের সন্তান সাথী। মেয়েটা তাহা’কে সবসময় এটা ওটা বলে খোঁচাবে। আবার তাহা’কে সে প্রচণ্ড হিংসাও করে বটে।

“সাথী, ঘরে যাও। তোমাকে এখানে কথা বলতে বলা হয়নি। যাও।”

সাথী মুখ ঘুরিয়ে চলে যায় রুমে। আফসানা বেগম তাহা’র দিকে এগিয়ে আসেন। উনি সম্পর্কে তাহা’র সৎমা। মানুষটাকে তাহা বিন্দুমাত্র পছন্দ করে না। কিন্তু তাও তিনি তাহা’র কাছে আসবেন। তাহা’র হাতটা ধরে বলেন,

“আহির ও আর এমন করবে না। বয়সতো বেশি হয়নি তাই ঠিক ভুল বুঝতে শেখেনি এখনো। আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে। এমনিতে কিন্তু আমাদের তাহা’র মনটা অনেক ভালো। আপা তুই ঘরে যা। আমি তাহা’কে আমার সঙ্গে নিয়ে যাই। এখনতো মেয়েটাকে ঘরে নিয়ে মারবি। চল তাহা, আমার সঙ্গে চল।”

তাহা ওনার কাছ থেকে নিজের হাতটা সরিয়ে নেয়। বিদ্রুপাত্মক হেসে বলে,

“আমার মা আমায় মারবে, তাতে বাহিরের লোকের এত আদিখ্যেতা দেখানোর প্রয়োজন নেই।”

তাহা দপাদপ পা ফেলে নিজের রুমে চলে যায়। আফসানা বেগম ম্লান হাসে ওর যাওয়ার দিকে তাকিয়ে। মেয়েটা ওনায় কত ঘৃণা করে। আহির তাহা’র যাওয়ার দিকে ঘৃণার দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা যথেষ্ট বেয়াদব। বড়দের সাথে কি করে কথা বলতে হয়, সেসবের কোনো আদব-কায়দা নেই এই মেয়ের মধ্যে।

চলবে,,,ইনশাআল্লাহ