অসমাপ্ত ভালোবাসার শৃঙ্খচীল পর্ব-০৬

0
763

#অসমাপ্ত_ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ6
,
,
,
,
দিন ফুরাতে সময় লাগে না। দেখতে দেখতে সেকেন্ড ফুরায়ে মিনিট আসে মিনিট শেষ এ ঘন্টা। তেমনি দিন ফুরিয়ে আসে সপ্তাহ তারপরে মাস এই চক্রেই অতিবাহিত হয়ে যায় বছর।

সময় কেউ ধরে রাখতে না পারলেও ধরে রাখা যায় সৃতি বিশেষ করে খারাপ সৃতি গুলো যেগুলো মনে পড়লে চোখের কার্নিশ বেয়ে গরিয়ে পরে অশ্রু।

১ টা বছর পেরিয়ে গেছে তনু এখন সম্পূর্ণ সুস্থ।সিড়ি বেয়ে পড়ায় অনেক মাস ছিলো সে নিদ্রাচ্ছন্ন।চোখে তার মেলে দেখে নি এ সুন্দর পৃথিবী। আর না দেখেছে তার জন্য পাগল হওয়া সে ছেলেটার পাগলামী যা শুধু ছিলো তনুকে ঘীরে।

হ্যা অয়ন এর অজান্তেই অয়ন এর মনে বাসা বেধে ফেলেছিলো পিচ্চি রমনীটা তাই তো তাকে উঠতে না দেখে পাগলামী করতে কোন ত্রুটি রাখেনি।

ডাক্তার রা না পেরে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে ঘুম পারিয়ে রাখতো তাকে।ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে নিয়ে তনুর সমস্ত ভার নিজের কাধে নিয়েছিলো।পরিপূর্ণ স্বামি হিসেবে নিজেকে সে প্রুফ করেছে।

কিন্তু তনুর মনটা যে ভেংগে গেছিলো ভালোবাসার মানুষ টার মুখে নিজের জন্য এতো বাজে কথা শুনে।অচেনা অপ্রিয় মানুষের হাজারো অপমান হাজারো বাজে উক্তি কিছু মনে হয়না। সেগুলো যতোই খারাপ হোক না কেনো কিন্তু প্রিয় মানুষ গুলার ধমক ও যে মনের মাঝে জমা করে পাহাড় সমান অভিমান

জ্ঞান ফিরার পরে কাউকে কিছু না যানায়ে চলে আসে সে তারা বাবার বাসায়।অয়ন ডাক্তারদের সাথে আলোচনা করছিলো সে সুযোগ এই পালায় যায় তনু।।।।

____
জানালাই ঠেস দিয়ে বসে আছে তনু দৃষ্টি দূরে থাকা চাঁদের দিকে নিবদ্ধ।

তনুঃকেন করলেন অয়ন আমার সাথে এমন কি দোষ ছিলো আমার। সদ্য কিশোরী এক মেয়ের মনে বসন্তের হাওয়া লাগালেন আপনি। বাধ্য মেয়েকে সবার অবাধ্য করলেন আপনি।ভালোবাসার স্বপ্ন দেখালেন আপনি। আবার ভাংগলেন ও আপনি।এখানে শুরু থেকে শেষ অবদি তো শুধু আপনি বিরাজ মান এখানে আমি কই।(ঢুকরে কেদে উঠলো তনু)

দূরে আড়ালে দাঁড়িয়ে প্রিয়তমার চোখের পানি দেখে নিজেকে খুন করতে ইচ্ছা করছে অয়ন এর আজকে তার জন্য তার প্রিয়তমার চোখে পানি

অয়নঃসরি পিচ্চিটা আমি নিজের প্রতিশোধে এতোটা অন্ধ হয়ে গেছিলাম যে তোমার দিকটা ভেবেই দেখিনি।আমার জন্য তোমার চঞ্চলতা হারিয়েছে তাইনা আই প্রমিজ আমিই তোমাকে তোমার তুমি টা ফিরিয়ে দিবো

#আমাদের অসমাপ্ত ভালোবাসার_শৃঙ্খচীল কে সমাপ্ত হতে দিবোনা।।।

_______

অন্ধকারে রুমে হাতে বন্দুক নিয়ে বসে আছে অরণ্য তার পায়ের কাছেই রক্তাক্ত অবস্তায় পরে হাসছে ইফান মাহমুদ। অরণ্যের সবচেয়ে ক্লোজ ফ্রেন্ড

অরণ্যঃকেন করলি এমন(আহত শুরে)
ইফানঃতোর জীবনটা তছনছ করার জন্য(অট্রহাসিতে ফেটে পরে)
অরণ্যঃতুই তো আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলি যাকে আমি সব থেকে বেশি ভালোবেসেছি তাহলে কেনো(কাতর গলায়)
ইফানঃকারন তোর জন্য শুধু মাত্র তোর জন্য আমি যা চেয়েছি তা কোন দিন পাইনি আজ পর্যন্ত আমার হওয়া সব জিনিস তুই কেরে নিয়েছিস
প্রথমে আমার ফার্স্ট পজিশান তারপরে আমার ফ্যামিলি হ্যা আমার নিজের ফ্যামিলি যে কি না তোর নাম জপ করতে করতে মুখে ফ্যানা তুলে ফেলতো।ছোট খাটো জিনিস তো বাদ ই দিলাম। তারপরে জীবনে সর্বপ্রথম কাউকে ভালোবেসেছিলাম। কিন্তু এখানেও তুই এসে আমার কাছ থেকে তাকে কেড়ে নিলি।
অরণ্যঃতুই ভুলে যাচ্ছিস ইফান আমি আর তাহা একে অপরকে অনেক আগে থেকে ভালোবাসি ছোট বেলা থেকে।
ইফানঃআরে রাখ তোর ভালোবাসা। তোর জন্য সে সবার সামনে আমাকে অপমান করেছিলো।

৬ বছর পূর্বে কলেজ ক্যম্পাসে….

ইফান সবার সামনে তাহার ওর্ণা টেনে ধরে।সবার সামনে এমন করায় বিব্রত কর অবস্থায় পরে গেছিলো সে।দিক বেদিন না ভেবে থাপ্পড় মেরে দিয়েছিলো।কিন্তু ইফান তার পিছনে অরণ্যকে দাড়য়ে থাকতে দেখে মনে করে অরণ্যর ভয়ে তাহা এমনটা করে।সে দিনের পর থেকে নানা ভাবে ডিস্টার্ব করতে থাকে কখনো ফুল তো কখনো চকলেট
একদিন তাহা না পেরে ইফান কে ক্যম্পাসের মাঝখানে নিয়ে আসে। অরণ্য ছিলোনা সেদিন সে গেছিলো মিস্টার চৌধুরীর সাথে বিজনেস ট্রিপে।

তাহা ইফান কে সামনে এনে বলতে থাকে
ঃকি শুরু করেছেন আপনি হ্যা কোন যোগ্যতাই আপনি আমাকে ভালোবাসি বলতে আসেন।(সরি আমাকে এরকুম বিহেভ করতে হচ্ছে নাহলে আপনি যে সমস্ত সীমা অতিক্রম করে দিচ্ছেন এই সবের জন্য আপনার আর অরণ্যর মধ্যে ফাটল পরবে যা আমি চাইনা আমি নাহয় অপরাধী হয়)

মনে মনে কথা গুলো বলে উঠলো তাহা

ইফানঃএই সব কি বলছো তুমি নিশ্চয় তুমি এইসব অরণ্যের ভয়ে বলছো কিন্তু সে তো এখানে নেই তাহলে কিসের ভয়(তাহার বাহু স্পর্শ করতে যায়)

তাহা দ্রুত পিছে সরে আসে
ঃআমার কাছে টাকা পাওয়ার সব আছে আমি যেটা চাই সেটা কিনে নিতে পারি। যাকে চাই তাকে আমার সামনে ঝুকাতে পারি।এন্ড দা অরণ্য চৌধুরী আমার পাশে আছে আর আপনার মনে হয় আমি আপনাকে ভালোবাসবো

ঃতোমার কাছে টাকা পাওয়ার এই সব ই তো সব তাহলে আমার ও একটা কথা শুনে রাখো

ঃহুম অবশ্যই কি বলবেন বলুন আমি তো আর বধির না

ঃযে টাকা পয়সার পাওয়ার দেখাছো। এই টাকা পয়সা দিয়ে হাজার নাম ডাক করতে পারলেও হাজার উচুতে পৌঁছে গেলেও তোমার কাছে একটা জিনিস কোন দিন ও হবো না

ঃতাই নাকি।তো কি সেটা

ঃতুমি আর যায় করো যাই পাও তুমি কোন দিন সত্যিকারের ভালোবাসা পাবা না মিলিয়ে নিও আমার কথা

তাহাঃযার কাছে অরণ্যের মতো একজন মানুষ আছে পাগলের মতো ভালোবাসার জন্য তার ভালোবাসার অভাব কোন দিন ও পরবে না

___

ইফান কথা গুলো বলছিলো আর অরণ্যের সামনে ভেসে উঠলো তাহার কান্না রত মুখটা

অরণ্যঃ মাফ করে দে ব্লাক রোজ আমি না বুঝে তোকে কতোটা হার্ট করে ফেলেছি আর তুই তুই তো আমাকে কতো আগে থেকেই ভালোবেসে এসেছিস আমার জন্য নিজেকে নিচু করতেও ভাবিসনি(মনে মনে)

ইফানঃসেদিন এর পর থেকে প্যানিং করা শুরু করলাম তোর চোখে বিভিন্ন ভাবে তাহাকে খারাপ ভাবে প্রেজেন্ট করানো শুরু করলাম।এন্ড ফাইনালি আমাকে হেল্প করলো তাহার চির শত্রু ইভা। সে তার দল নিয়ে তোর কানে পাঠালো যে তাহা তোকে ভালোবাসেনা সব একটা নাটক ছিলো বাজি জিতার।ব্যাস তুই বিশ্বাস করে নিলি

অরণ্যঃজানিস আজকে তোর প্রতিশোধ এর জন্য তাহা তার বাবাকে চিরতরের জন্য হারিয়েছে।আজকে তোর জন্য ওর মা ওর মুখ দেখতে চায়না ঘৃণা করে।

ইফানঃকি বলছিস এগুলো নিশ্চয় মজা করছিস (অবাক হয়ে)
অরণ্যঃনিজের উপর ঘৃণা হচ্ছে তোর মতো ছেলে কে নিজের বেস্ট ফ্রেন্ড ভেবেছি ছিঃ

অরণ্য সেখান থেকে চলে যায়।এইদিকে ইফান পাগলের।মতো বিলাপ করতে শুরু করে।

____

কোমরে কারো ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে কেপে উঠে তাহা।এই ১ টা বছরে খুব করে চেনা হয়ে গেছে স্পর্শ টা তার।কারন এই বছরে এই হাত টা হাজারো বার তাকে ছুয়েছে ভালোবাসায় ভরিয়ে দিয়েছে।

অরণ্য তাহার ফুলা পেটে হাত দিয়ে তার ঘাড়ে মুখ ডুবায়। ৭ মাসের প্রেগন্যান্ট সে।
তাহাঃ কি হয়েছে মন খারাপ কেনো
(অরণ্যের গালে হাত দিয়ে)
অরণ্যেঃমাফ করে দে আমাকে আমি এতো বছর তোকে বিনা দোষে ঘৃণা করেছি আমার জন্য আজকে তুই তোর পরিবারের থেকে দূরে
তাহাঃ কি হয়েছে সেটা তো বলবা।

অরণ্য সব কিছু বললো। তাহা সব শুনে কোন রিয়েক্ট করলোনা আলতো করে ভালোবাসার স্পর্শ একে দিলো অরণ্যের কপালে।।

চলবে!!!!
রি চেক করি নি ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার নজরে দেখবেন।।